রহস্যময়ী লেডি কিলার পর্ব-১৩+১৪

0
251

#রহস্যময়ী_লেডি_কিলার
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_১৩

–“অবনী লোক টার দিকে এভাবে তেড়ে যেতেই লোকটা মুহূর্তের মধ্যে সামনের দিকে দৌড় দিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। যেটা দেখে আমার গা পুরোপুরি শিউরে উঠেছে! আমি বেকুবের মতন চুপচাপ চোখ বড় বড় করে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছি! ঠিক সেই সময় অবনী ফিরে এসে পিছন থেকে আমায় জড়িয়ে ধরে আমার ঘাড়ে চুমু খেতে আরম্ভ করলো! কি সব বিস্ময়কর ব্যাপার স্যাপার ঘটছে আমার সাথে! এসব দেখে মনে হচ্ছে যেনো এখুনি নিজের হুঁশ জ্ঞান হারিয়ে বসবো। কিন্তু নাহ, তার আগে অবনী থেকে কিছু বিষয় জেনে নেওয়ার দরকার আমার। তাই অবনীকে নিজের শরীর থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে জিজ্ঞাস করলাম, অবনী কাহিনী টা একটু বলবে? তুমি সেই লোক টাকে এভাবে ধাওয়া করলে কেন? আর তাছাড়া তুমি তো এই সময়ে বাসায় থাকার কথা। কিন্তু তুমি এই অবস্থানে কি করছো?

–দেখুন কাহিনী কিছুই না। আমার ভালো লাগছিলো না। তাই আপনার সাথে কথা বলার জন্য আবার ফিরে এসেছি। কিন্তু এসে দেখি সেই লোকটা আপনার পথ আঁটকে আপনার সাথে কি সব ফুসুরফুসুর করছিলো। তাই তাকে ধাওয়া করেছি।

–অবনী আমি কিন্তু দুধের বাচ্চা না। তোমায় নিয়ে আজ বের হয়েছি পর্যন্ত কিন্তু অনেক কিছুই ঘটছে।
শুরুতে গাড়ি দুমড়ে মুচড়ে আপনা-আপনি চুরমাচুর হয়ে গেছে। এখন আবার বাসায় যাওয়ায় বদলে অদ্ভুত ভাবে ফিরে সেই লোকটার পিছনে ছুটেছো। যে কিনা আমাদের চোখের সামনে দৌড় দিয়ে হুট করেই অদৃশ্য হয়ে গেছে। আর তার চাইতেও বড় কথা আমি এখনো এখানে আছি, তুমি সেই খবর জানলে কি করে?

–দেখুন আপনি আমাকে সন্দেহ করা বন্ধ করুন। আমি আগেই বলেছি যে গাড়ি কি ভাবে ভেঙ্গে
চুরমাচুর হয়েছে সেটা আমি জানি না! তার উপরে এই লোকটা আপনার পথ আঁটকে আপনার সাথে ফুসুরফুসুর করছিলো, তাই তাকে ধাওয়া করেছি। আর তার একমাত্র কারন আমি আপনার সাথে আরো কিছুটা সময় কাটাতে চাই।

–অবনী আচ্ছা যাও তোমায় সন্দেহ করলাম না। কিন্তু এটা বলো যে তোমার হাতটা পুড়েছে কি করে?

–কেন এটা তো আগেই বলেছি আপনাকে। রান্না করতে গিয়ে গ্যাসের চুলোর আগুনে হাত পুড়িয়ে ফেলেছি।

–তাহলে ডক্টর যে বললো তোমার হাত গ্যাসের আগুনে পুড়েনি? হাত পুড়েছে অন্য কোনো ভাবে।

–ওমাহ ডক্টর কি করে এতোটা কনফিডেন্স নিয়ে বলতে পারে এই কথা! সিনক্রিয়েট কি উনার সাথে হয়েছে না আমার সাথে? যে উনি এতোটা কনফিডেন্স নিয়ে বলছে আমার হাত অন্য কোনো ভাবে পুড়েছে।

–সিনক্রিয়েট তোমার সাথে হলেও তিনি অনেক কিছুই আঁচ করতে পেরেছে। কারন তোমার হাতের অবস্থা অনেক বেগতিক। তোমার হাতে যে ভাবে করে জখম হয়েছে। সেটা হতে আগুনের অনেক উত্তাপ থাকা প্রয়োজন। যেটা কিনা গ্যাসের চুলোতে নেই। আর থাকলেও গ্যাসের চুলোয় আগুনের সেই উত্তাপ তৈরী হতে মিনিট পাঁচেক সময় লাগবে। তাহলে তুমি অবশ্যই এতোটা সময় ধরে আগুনের উপরে হাত দিয়ে বসে ছিলে না? বা তোমার সাথে সিনক্রিয়েট হলে সেটা এতোটা সময় ধরে হয়নি? তাহলে বলো কি ভাবে হয়েছে এমনটা?

–দেখুন ডক্টরের সেই ভুলভাল কথা শুনে আমার উপরে রিয়েক্ট করিয়েন না। কারন সে একজন ডক্টর। উত্তাপ মাপবার কোনো যন্ত্র নয়, যে সে আমার হাতের অবস্থা দেখেই একদম সচ্ছলতার সাথে বলে দিবে, এই হাত পাঁচ মিনিট ৩ সেকেন্ড আগুনের উপরে ছিলো। তাই উনার কথা শুনে রিয়েক্ট না করার অনুরোধ করবো।

–অবনী তোমার কথা বিশ্বাস করবো না উনার টা বিশ্বাস করবো বলো? তিনি খামোখা মিথ্যা কেন বলবেন? আর তাছাড়া তোমার হাত দেখে কিন্তু আমারো মনে হচ্ছে না যে এটা গ্যাসের চুলোয় রান্না করতে গিয়ে হয়েছে।

–মহাশয় আপনাকে আর বুঝাবার সামর্থ্য নেই আমার। তবে এটুকু বলছি আমার হাত গ্যাসের চুলোর আগুনেই পুড়েছে। এবার বিশ্বাস করা আর না করা আপনার ব্যাপার৷ আমি বাসায় চলে গেলাম।

–এই এই বাসায় যাবে কেন? তুমি না আমার সাথে আরো কিছুটা সময় কাটাতে চাও।

–প্রিয় সেই পরিস্থিতিটা নেই আর বর্তমানে। কারন আমি আপনার রাগ সহ্য করতে রাজি আছি। আমি আপনার হাতে কোষে থাপ্পড় খেতে রাজি আছি। আমি আপনার কথায় পুতুলের মতন নাচতে রাজি আছি। কিন্তু আমাকে নিয়ে আপনার তৈরী হওয়া ভুল চিন্তা ভাবনাকে সম্মতি জানাতে রাজি নই।

–আচ্ছা যাও আমি তোমার কথা বিশ্বাস করেছি। এবার দেখি রাগটা কমিয়ে ফেলো।

–আমার রাগ হয়নি। হয়েছে মন খারাপ।

–আচ্ছা দেখি আমি সেটাকে ভালো করে দিচ্ছি।
এটা বলেই মেয়েটাকে এবার নিজেই কাছে টেনে নিলাম। তারপর একাধিক বার তার কপালে আর তার ঠোঁটে স্পর্শ করেছি। মেয়েটা আমার স্পর্শে শিউরে উঠছে। কিন্তু তাতে আমার কিছুই আসে যায় না। কারন কোনো মানুষের মধ্যে যখন কোনো কিছুর নৈশাক্ততা ভর করে, তখন সে এক প্রকারের উন্মাদ হয়ে যায়। যার ফলে সে নিজের শরীরের উপর থেকে পরিপূর্ণ কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে। যেই কন্ট্রোল তার উন্মাদতা না কমলে ফিরে আসে না। আর তাছাড়া কোনো মানুষ ও চাইলে সেই উন্মাদকে কন্ট্রোলে আনতে পারে না। সেখানে অবনী তো নিজেই আমাকে সাড়া দিচ্ছে। তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই। অনেক লম্বা সময় অবনীকে নিজের কাছে জিম্মি করে রেখেছি। তারপর অবনীকে ছেড়ে দিয়ে রিক্সায় তুলে দিব, এমন সময় দেখি আমাদের দু’জনের রিক্সা ওয়ালা মামা আমাদের দিকেই তাকিয়ে আছে। যেটা দেখে আমি রিক্সা ওয়ালা মামাকে জিজ্ঞাস করলাম, মামা আপনারা দাঁড়িয়ে আছেন যে?
তখন দু’জনেই উত্তর দিলো তাঁদের ভাড়া নাকি আমরা কেউ পরিশোধ করিনি। তাই অবনীকে তার আগের রিক্সাটাতে তুলে দিয়ে অধিক পরিমাণে ভাড়া প্রদান করলাম রিক্সা ওয়ালাকে। আর আমিও আমার ঠিক করা রিক্সায় উঠে অবনী থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে এই রিক্সা ওয়ালাকেও ভালো পরিমাণে একটা এমাউন্ট দিলাম। পরে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় আসতেই রাজ এসে আমায় বললো,

–ভাই আপনি গিয়ে আগে ফ্রেশ হয়ে নিন। তারপর জরুরী কিছু কথা আছে।

–আচ্ছা কিছুক্ষণ পর রুমে চলে আসিস তুই।

–আচ্ছা ভাই।

–নিচ থেকে রুমে উঠে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। কিছুক্ষণ পর রাজ রুমের দরজার সামনে এসে বললো,

–ভাই আসবো?

–আরেহ আয়। ভিতরে প্রবেশ করার জন্য তোর আবার অনুমতি লাগে নাকি।

–না ভাই লাগে না। তবে তাও অনুমতি নিয়ে ঢুকলাম। কারন আপনি বাহির থেকে এসেছেন। কোনো কাজ ও তো থাকতে পারে আপনার। বা রেস্ট ও করতে পারেন।

–আরে নাহ তেমন কিছুই নেই।
আচ্ছা বল কি বলবি।

–ভাই মিনিস্টার সাহেব ফোন করে জানিয়েছে, আজ নাকি শহরের অনেক কয়টা বড় বড় শপিংমলে হনুমান গুলা ধ্বংস বিদ্রূপ চালিয়েছে। তারা নাকি শপিংমলকে ভেঙ্গে চুরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। সরকারের স্পেশাল ফোর্স নাকি তাঁদেরকে আঁটকাতে গেলে হনুমান গুলা তাঁদের ও নাকি নাজেহাল বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। তাই মিনিস্টার সাহেব ফোন করে আপনার কাছে সাহায্য চেয়েছে। তিনি বলছেন যদি সম্ভব হয় আপনাকে কিছু করতে। দরকার হয় আপনার সাহায্যের জন্য দেশের সব চাইতে শক্তিশালী ফোর্স মোতায়ন করবেন। তবে তিনাদের একার পক্ষে নাকি এসব কিছুকে সামলানো দুঃসাধ্যের ব্যাপার।

–কখন ফোন করেছে তোকে?

–ভাই কিছুক্ষণ আগে। আর ঘটনা ঘটেছে দুপুরের দিকে।

–আচ্ছা ঠিক আছে তুই আবার ফোন করে বল, যে লোকজনের প্রয়োজন নেই। আমি আমার মতন করে দেখবো। অবশ্য আমরা নিজেরাও তো এদের পিছু নিয়েছি। কিন্তু হাত লাগছে না একটাও।

–আচ্ছা ভাই বলে দিচ্ছি। কিন্তু আর একটা বলা বাকি আছে।

–ভাই মিনিস্টার সাহেব কথা বলা শেষ করে শপিংমলের সামনের একটা সিসিটিভি ফুটেজ মেইল করে পাঠিয়েছে। যেটাতে কিনা একটা মেয়েকে অনেক কয়বার শপিংমলের সামনে ঘুরঘুর করতে দেখা গেছে। মেয়েটা নাকি প্রথমে শপিংমলের সামনে অনেকটা সময় ধরে ঘুরঘুর করেছে। তারপর পরবর্তীতে ঘুরা বাদ দিয়ে রেখে চুপচাপ শপিংমলের ভিতরে প্রবেশ করে। আর তার কিছুক্ষণ পর একজন মেয়ে আর কয়েকজন ছেলে মিলে সেই শপিংমল টাতেই ঢুকে। যাদের মুখ মাস্ক দিয়ে ঢাকা ছিলো। তারা শপিংমলে ঢুকার পরেই নাকি এই অবস্থা হয়েছে। তবে অবাক করা কান্ড হচ্ছে ধ্বংস বিদ্রূপ চালানোর পর হনুমান গুলা নিজের নিজের ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে শপিংমল থেকে বেরিয়েছে। কিন্তু সেই প্রথমের মেয়েটাকে আর শপিংমল থেকে বের হতে দেখা যায়নি। কিন্তু সিসিটিভিতে তার ফুটেজে ক্যাপচার হয়ে গেছে। কারন সে মুখ খোলা অবস্থায় ছিলো। তাই সেই মেয়েটার উপরেও সন্দেহ করছে সবাই।

–কে সেই মেয়ে? চিনিস কি তাকে?

–ভাই আমি চিনতাম না। মুজাহিদ আমায় চিনিয়েছে।

–মানে কি?

–ভাই আপনি নিজেই দেখুন। এই যে ফোনের মধ্যে পুরো ফুটেজটা আছে।

–রাজের কথায় মিনিস্টার সাহেবের পাঠানো সিসিটিভি ফুটেজ টা দেখতে আরম্ভ করলাম। সিসিটিভি ফুটেজটা দেখার মাঝ পথেই আমার মাথা ঘুরতে আরম্ভ করেছে! কারন যেই মেয়েটা শপিংমলের সামনে ঘুরঘুর করেছে। এবং শপিংমলে ঢোকার পর আর বেরোয়নি। সে আর কেউ না। সে হলো অবনী। যেটা দেখার পর যেনো আমি আর নিজের মধ্যে নেই! শপিংমলের ভিতরে জানোয়ার গুলা ধ্বংসলিলা চালিয়েছে। শপিংমলকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুরো তসনস করে দিয়েছে। কিন্তু অবনী শপিংমলের ভিতর থেকে আর বের হয়নি। অবনীর বিষয়টা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছিলাম, তখনি হুট করে আরেকটা কথা মনে পড়লো। ঐ যে ডক্টর বলেছে অবনীর হাত গ্যাসের চুলোয় পুড়েনি। যেটাতে কিনা আমিও বিশ্বাসী। তার মানে অবনীর হাতে হয়তো এই ধ্বংসযজ্ঞের আগুন লেগেছে। আর তাছাড়া সে যেহেতু জীবিত, তার মানে সে কোনো না কোনো ভাবে এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে মানুষের নজর এড়িয়ে বেরিয়েছে। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে অবনী আমায় মিথ্যা কেন বললো। সে আমায় সত্যিটা বললেই হতো, যে শপিংমলের ধ্বংসযজ্ঞের আগুনে তার হাত পুড়েছে। নাহ এই প্রশ্নের জওয়াব আমি আগামীকাল অবনীর কাছ থেকে নিব। তাছাড়া তার কাছ থেকে এটাও জানার আছে, যে সে ঐ শপিংমলের সামনে ঘুরঘুর করছিলো কেন। এমনিতেই সন্দেহের সৃষ্টি হয়ে আছে মেয়েটাকে নিয়ে মনের মধ্যে। তার উপরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পাকাপোক্ত ভাবে মনে হচ্ছে তার ভিতর কোনো একটা ঘাবলা আছে। নাহ আগামীকালটা হোক। এই রাজ তুই চলে যা। আগামীকাল দেখছি এই বিষয়টা আমি। তবে শোন মিনিস্টার সাহেবকে ফোন করলে এটাও একটু জানিয়ে দিবি, যে তিনি যেনো এই সিসিটিভি ফুটেজ পাবলিক না করে।

–ঠিক আছে ভাই আমি বলে দিচ্ছি।
এখন আমি নিচে চলে গেলাম।

–ঠিক আছে যা।
রাজ নিচে চলে গেলো। আর আমি রুমে বসে বসে পহর গুনছি রাতটা পেরোবার। অবশ্যই আমি চাইলে অবনীকে ফোন করে জিজ্ঞাস করতে পারি এই বিষয়ে। কিন্তু আমি সেটা করবো না। কারন সকাল হলে এই সিসিটিভি ফুটেজটা সঙ্গে করে নিয়ে তাকে জেরা করবো। তখন সে কোনো কারনে অস্বীকার করলে এই ফুটেজ টা দেখাবো। অবনী থেকে সমস্ত কিছু জানবো বলে আগামীকালের প্রতীক্ষা করতে লাগলাম। দেখতে দেখতে রাত পেরিয়ে গেছে। আমি রাতের বেলায় যথারীতি ঘুমিয়ে সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে পড়েছি। তারপর ঘুম থেকে উঠে সোজা কলেজে চলে গেলাম। কলেজে গিয়ে দেখি অবনী আগ থেকেই আমার জন্য দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। কলেজে পৌঁছে সোজা অবনীকে টেনে নিয়ে কলেজের এক সাইডে চলে আসলাম। তারপর অবনীকে সমস্ত কিছু নিয়ে প্রশ্ন করলাম। অবনী তুমি গতকাল শপিংমলের সামনে ঘুরঘুর করছিলে কেন? আর তোমার হাত পুড়েছে কি ভাবে?

–কই আমি তো শপিংমলের সামনে যাইনি। আর হাত পুড়ে যাওয়ার কাহিনী কয়বার বলবো আপনাকে?

–অবনীর মুখে মিথ্যা কথা শুনে ঠাসস করে তার গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলাম। তারপর তাকে গেঁজিয়ে বললাম, তুই কাকে বাটপারি শিখাচ্ছিস? তুই কি ভেবেছিস, আমি না দেখে বা না জেনে তোর কাছে এই প্রশ্ন করছি? আমি সমস্ত কিছুর প্রমাণ পেয়েই তোর কাছে এসে জিজ্ঞাস করছি। তুই গেছিস কি যাসনি, সেটার ভিডিও আমার কাছে আছে। তাই এবার চটাচট মুখ খুলে উত্তর দে সেখানে কেন গিয়েছিলি?

–একটা কাজে গিয়েছিলাম।

–তার মানে তোর হাতটাও শপিংমলে লাগা আগুনের দ্বারা পুড়েছে?

–নাহ শপিংমল থেকে আমার হাতে আগুন লাগে নি।

–অবনীর মুখে মিথ্যা কথা শুনে আবারো তার অন্য গালে ঠাসস করে একটা লাগিয়ে দিয়ে বললাম, তুই এখনো মিথ্যা কথা বলছিস কোন সাহসে?
.
আকাশের কথায় অবনীর চেয়ারার রং হুট করেই পরিবর্তন হয়ে যায়। যার কারনে সে আকাশের উপরে উল্টো গেঁজিয়ে বলে,

–গতকাল যে বীর সাজতে গিয়ে ড্রয়িডের লোকজনের সাথে ফাইট করেছিস। তখন ড্রয়িডের লোকজন তোর উপরে আগুন ছুঁড়ে মারে। আর তুই বাঁচার জন্য নিজের হাত সামনে এগিয়ে দিয়েছিস। যার ফলে বেঁচেও গেছিস। কিন্তু তাঁদের নিক্ষেপ করা সেই আগুন আমার হাতে এসে লেগেছে। তোর উপরে করা সমস্ত আক্রমণ আমার শরীরের উপরে ঝড় উঠিয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে আমার শরীর তোর দেহরক্ষা করেছে গতকাল। কিন্তু তুই এখন এসে কিনা আমায় থাপ্পড় মারছিস? তোর মধ্যে কি মানবতা বলতে কিছু নেই রে?
.
আকাশ অবনীর মুখে এই সমস্ত কথা শুনে বাকরূদ্ধ হয়ে যায়! সে যে অবনীর কথার বিপরীতে কোনো সাউন্ড করবে, সেটা সে করতে পারছে না!
এক কথায় বলতে গেলে অবনীর কথায় আকাশের সমস্ত দুনিয়াদারী যেনো উলট-পালট হয়ে গেছে। “অন্যদিকে অবনী এসব বলা শেষ করে নিজের মুখ নিজেই হাত দিয়ে চেপে ধরে। কারন সে রাগের মাথায় এতোটা সময় নিজের অজান্তেই নিজের অপ্রিয় সত্য গুলা আকাশের কাছে বলে বসেছে….

চলবে…..

গল্পের ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।

#রহস্যনয়ী_লেডি_কিলার
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_১৪

“আকাশের উপরে করা সমস্ত আক্রমণ অবনীর শরীরে ঝড় উঠিয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে অবনী
আকাশের দেহরক্ষা করেছে। আকাশ অবনীর মুখে এই সমস্ত কথা শুনে বাকরূদ্ধ হয়ে যায়! সে যে অবনীর কথার বিপরীতে কোনো সাউন্ড করবে, সেটা সে করতে পারছে না! অবনীর কথায় আকাশের সমস্ত দুনিয়াদারী যেনো উলট-পালট হয়ে গেছে। “অন্যদিকে অবনী এসব বলা শেষ করে নিজের মুখে নিজেই হাত দিয়ে চেপে ধরে। কারন সে রাগের মাথায় এতোটা সময় নিজের অজান্তেই নিজের অপ্রিয় সত্য গুলা আকাশের কাছে বলে বসেছে! অবনী কি করবে ভেবে উঠতে পারছে না! তাই সে চুপচাপ কেটে পড়ার প্ল্যান করে আকাশের সামনে থেকে। চিন্তা-ভাবনা মতন অবনী আকাশকে রেখে হাঁটা দেয় চলে যাওয়ার জন্য। তখনি আকাশ পিছন থেকে গিয়ে অবনীর হাত চেপে ধরে। তারপর অবনীকে বলে,

–এই অবনী চোরের মতন পালিয়ে কই যাচ্ছো তুমি?

–না মানে আসলে ক্লাসে যাচ্ছিলাম।

–আজ তোমার ক্লাসে যেতে হবে না। আজ তুমি আমার সামনে তোমার সমস্ত রহস্যের উদঘাটন করবে। তো এবার সোজাসুজি উত্তর দাও তুমি কে? আর তুমি আমার দেহ রক্ষা করেছো কি ভাবে?

–নাহ আপনাকে এসব বলা যাবে না। কারন আপনাকে এসব বললে আপনি আমাকে ছেড়ে চলে যাবেন। আমি আপনাকে হারাতে চাই না।

–অবনী তুমি নিজের অজান্তেই আমাকে তোমার রহস্য সম্পর্কে কিছুটা জানিয়ে দিয়েছো। আর বাকি টুকুও সুন্দর ভাবে জানিয়ে দাও। কারন আমি নাছোড়বান্দা। আমি এতো সহজে তোমায় ছাড়ছি না। তোমার ভিতর থেকে সমস্ত সত্যি আজ আমি জেনেই ছাড়বো। আর বাকি রইলো ছেড়ে যাওয়ার কথা। তুমি যদি সৎ পথে চলে থাকো, তাহলে আমি লিখিত দিচ্ছি, যে আমি তোমার আছি। আর তোমারই থাকবো।

–আমার না খুব ভয় করছে।

–অবনী ভয়ের কিছুই নেই। আমি তোমায় ছাড়ছি না। সেটা কিন্তু আগেই বলে দিয়েছি। তাই এবার সোজাসুজি তোমার ভিতর থেকে সমস্ত সত্যি উগলে বের করো।

–প্রিয় আমি সাধারণ কোনো মানুষ না। আমার মধ্যে সুপারন্যাচারাল কিছু শক্তি রয়েছে। আর সেই সুপারন্যাচারাল শক্তির মাধ্যমেই আমি গতকাল আপনাকে বাঁচিয়েছি। আপনাকে সেই প্রথম যেদিন আমি জড়িয়ে ধরি, সেদিন এই আপনার শরীরে আমার শক্তির প্রয়োগ করেছি। আর সেই শক্তিটা এমন যে, আপনাকে কেউ কখনো আঘাত করলে, সেই আঘাত এসে আমার শরীরে লাগবে। কারন আপনার শরীরে আমার দেহের রক্ষাকবচ আছে। আমার দেহের যেই রক্ষাকবচটা ছিলো, সেটা সেদিন আপনাকে আলিঙ্গন করার সময় আপনার শরীরে আপনার অজান্তেই পড়িয়ে দিয়েছি। যার কারনে গতকাল যখন ড্রয়িডের লোকজন আপনার উপরে আগুন নিক্ষেপ করে, তখন সেই আগুন এসে আমার হাতে লাগে। আর আপনি আগুন থেকে বাঁচার জন্য আপনার হাত সামনে এগিয়ে দিয়েছিলেন। যাতে করে কিনা সেই আগুন আপনার বলদে আমার হাতকে পুড়িয়েছে।

–কিহহহহ‌!

–হুমম।

–অবনী এসব কি ধরনের কথাবার্তা বলছো তুমি?
এটা কি কোনো মুভি চলছে নাকি, যে যেমন ইচ্ছে হয় কাহিনী বানিয়ে দিলে?

–বিশ্বাস করুন আমি যা বলেছি সব সত্যি বলেছি।
আমার একটা কথাও মিথ্যা নয়।

–আচ্ছা যাও তোমার কথা সত্যি সেটা মেনে নিলাম। কিন্তু তুমি আগে এটা বলো যে তুমি আসলে কে? আর তোমার মধ্যে এই ধরনের অলৌকিক শক্তি এসেছে কি করে?

–আমি কে সেটা আমি নিজেও জানি না! আর আমার শরীরে এই অলৌকিক শক্তি এসেছে কি করে, সেটাও আমি বলতে পারবো না!

–অবনী তুমি যদি কিছু নাই জানো, তাহলে তোমার কথা কিসের পরিপ্রেক্ষিত বিশ্বাস করবো বলো?

–আচ্ছা আমার কথা আপনার বিশ্বাস করতে হবে না। কিন্তু গতকাল যে আপনি ড্রয়িডে গিয়ে অদ্ভুত রকমের লোকজনকে দেখেছেন। যারা আধ্যাত্মিক শক্তির মাধ্যমে আপনার উপরে আক্রমণ করেছে। তাছাড়া ফরেস্ট কলোনী পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে।
তার উপরে আবার গতকাল শহরের অনেক কয়টা বড় বড় শপিংমলকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে তসনস করে দিয়েছে। আপনার এতো কিছুর পরেও কি বিশ্বাস হচ্ছে না, যে মুভি ছাড়াও বাস্তব জীবনে এমন অলৌকিক ঘটনা ঘটতে পারে?

–হুম এখন কিছুটা বিশ্বাস হচ্ছে। কারন আমার সাথেও অদ্ভুত কিছু কান্ড ঘটেছে। যেসব কিছুকে আমি এতোটা সিরিয়াস ভাবে নেই নি। কিন্তু এখন তোমার কথা শুনে সিরিয়াস ভাবে নিয়েছি অনেকটা।

–আচ্ছা আপনার সেই কিছুটা বিশ্বাসকেও আমি পুরোপুরি বিশ্বাসে পরিবর্তন করে দিচ্ছি। দেখুন আপনি হয়তো প্রথম দিন আমার সাথে পার্কে দেখা করার পর একটা মেয়েকে দেখেছিলেন। যে কিনা হুট করেই গায়েব হয়ে গিয়েছিলো আপনার চোখের সামনে থেকে। যার কারনে আপনি আমায় রেখে তাকে দেখার জন্য কিছুটা সামনে এগিয়ে গেলে আমিও কিছুটা সময়ের জন্য আপনার চোখের সামনে থেকে উধাও হয়ে যাই। সত্যি বলতে সেই মেয়েটা আমার একটা ক্লোন। যে কিনা আমার কমান্ডে চলে। আর আমি সেদিন আপনাকে একটা মিথ্যা কথা বলেছিলাম, যে আমি গাছের পিছনে লুকিয়ে পড়েছিলাম আপনাকে পরিক্ষা করার জন্য। আসলে আমার সেই কথাটা মিথ্যা ছিলো। আমি সত্যিকারত্বে অদৃশ্য হয়ে আমার ক্লোন টাকে তার সঠিক স্থানে রেখে আসার জন্য কয়েক সেকেন্ড আপনার চোখের সামনে থেকে অদৃশ্য হয়ে ছিলাম।

–তার মানে তোমার কাছে টেলিপোড বা অদৃশ্য হওয়ার ও শক্তি আছে। আর গতকাল গাড়িটা ভেঙ্গে চুরমার হওয়ার পিছনেও কোনো না কোনো ভাবে তোমার হাত আছে?

–হুম আমার কাছে অদৃশ্য হওয়ার শক্তি আছে। আর গতকাল আমিই আমার অলৌকিক শক্তির মাধ্যমে হাতের ইশারা করে সেই গাড়িটা ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছি।

–অবনীর কথা শুনে মনে হচ্ছে এখুনি আমি মাথা ঘুরে জমিনে পড়ে যাবো! কারন এতো গুলো ঝাঁটকা কেউ কখনোই এক সাথে নিতে পারবে না। মাথা ভো ভো করে ঘুরতে আরম্ভ করেছে। তখনি অবনী আবার আমায় বলে উঠলো,

–আপনি প্লিজ আমার কথাবার্তা শুনে ঘাবড়ে যাবেন না। দেখুন আমি আপনার কোনো ক্ষতিই করবো না। আর করতে চাইলেও সেটা কখনো পারবো না। কারন আমি আপনাকে ভালোবাসি। আপনার ক্ষতি করা কখনোই আমার কল্পনায় আসবে না। বরং আমার সমস্ত শক্তি দ্বারা সব সময় আপনাকে সুরক্ষায় রাখবো। আমি থাকতে কেউ আপনার শরীরে কখনো একটা নখের আঁচড় ও দিতে পারবে না।

–অবনী আমি অনেক শকট তোমার কথাবার্তা শুনে! তবে এক দিকে আমার জন্য ভালোই হয়েছে। কারন আমি সেই সকল আধ্যাত্মিক মানুষের পিছনে লেগেছি, যাদের কাছে আধ্যাত্মিক শক্তি রয়েছে। কারন তারা দেশের ক্ষতি করছে। তার উপরে বিশেষ করে আমার সেই মেয়েটাকেও প্রয়োজন। যার হাত কিনা ভয়ঙ্কর দৈত্যাকার ছুরিতে পরিবর্তন হয়। কারন সে আমার ছোট রাজকে মারার জন্য পিছু নিয়েছে। এবং অনেক কয়টা মানুষকেও খুন করেছে। এক কথায় বলতে গেলে লেডি কিলার। আমি সেই মেয়ে সহ বাকি সবাইকে খুঁজে বের করে পায়ের নিচে কুচলে ফেলতে চাই।

–দেখুন বাকিরা খারাপ হলেও হতে পারে। কিন্তু আমার মনে হয় সেই মেয়েটা খারাপ না।

–সেটা তুমি কি করে জানো, যে সে খারাপ না?

–নাহ এমনিতেই মনে হচ্ছে আরকি।

–অবনী সেই মেয়েটা আমার ছোট ভাই রাজকে ধাওয়া করার পাশাপাশি কয়েকজনকে খুন ও করেছে। তার মানে সে নিতান্তই একজন খুনি। আর খুনি কখনো ভালো হতে পারে না।

–ওহ আচ্ছা….

–হুম।
আচ্ছা অবনী তুমি এবার ক্লাসে চলে যাও। কারন আমি কিছুটা সময় একা থাকতে চাই। তোমার বিষয়ে জেনে আমি পাগল হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছি। আর শুনো ক্লাস তো শুরু হয়ে গেছে। ক্লাসে যাওয়ার পর স্যার কিছু জিজ্ঞাস করলে বলিও তুমি এতোটা সময় আমার কাছে ছিলে।

–নাহ আমি ক্লাসে যাবো না। আমি আপনার সাথেই থাকবো।

–অবনী কথার অমান্য করিও না। এমনিতেই তোমার এতোসব কিছু আমি নিবার মতন পরিস্থিতে ছিলাম না। তার উপরে তুমি আমার কাছে থেকে আর মাথা বিগড়ে দিও না। না হয় কিন্তু দেখা যাবে তোমার আর আমার সম্পর্কে একটা ফাটল চলে এসেছে।

–এই না,না আমি চলে যাচ্ছি।

–হুম যাও। আর স্যার জিজ্ঞাস করলে আমার কথা টাই বলিও। আর সব চাইতে ইম্পরট্যান্ট কথা হচ্ছে নিজের হাতের খেয়াল রেখো।

–হুম।

–অবনী ক্লাসে চলে গেলো। আমি এখনো সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছি। আমি যেই আকাশের আসল পরিচয় জানলে কিনা মানুষ থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে বলে, এই আকাশ বা রবার্ট কোনো মানুষ না। সে মানুষরূপী আস্তো একটা দানব। আজ সেই আকাশকেই কিনা অন্যকেউ এসে তার আসল পরিচয় বলে মাথা ঘুরিয়ে দিচ্ছে। নাহ এর একটা বিহিত করতে হবে। অবনী যদি সত্যিকারত্বে আমায় ভালোবেসে থাকে, তাহলে তার হাত আমি কখনোই ছাড়বো না। তবে যদি দুই নাম্বারি কোনো চিন্তা-ভাবনা তার মাথার মধ্যে থাকে, তাহলে তাকেও বাকিদের মতন করে পায়ের নিচে কুচলে মারবো। তবে যাক আগে দেখি তার আসল মতিগতি কি। কারন সে তো তার বিষয়ে সত্যিটা বলেই দিয়েছে। তাই এখন অবনীর বিষয়টা এক সাইডে রেখে বাকিদের একটা ব্যবস্থা করা উচিৎ। আর আমি সেটাই করবো। কিন্তু এখন এসব চিন্তা-ভাবনা বাদ দিয়ে রেখে কলেজের বাহির থেকে ঘুরে আসি। তাহলে মাথার উত্ত্যক্ততা হয়তো কিছুটা কমবে। চিন্তা-ভাবনা মতন কলেজের বাহিরে চলে আসলাম। তারপর বাহিরে এসে কলেজের পাশের একটা দোকান থেকে সিগারেটের অর্ডার করলাম। আপনারা আবার ভাবিয়েন না সিগারেট খাওয়াটা আমার নিত্যদিনের একটা রুটিন। আসলে এটা আমি মাঝেমধ্যে খেয়ে থাকি। মাথার মধ্যে যখন অতিরিক্ত প্রেশার থাকে তখন সিগারেট ধরাই। যেমন কি একটু আগে অবনী তার বিষয়ে বলে আমার মাথা অকেজো করে দিয়েছে। তাই এখন সিগারেট টা প্রয়োজন। না হয় মাথা ঠিক হবে না। দোকানদার সিগারেট এগিয়ে দিলো। আমি দোকানদারের হাত থেকে সিগারেটটা নিয়ে গ্যাসলাইট দিয়ে জ্বালানোর জন্য গ্যাসলাটের ট্রিগারে চাপ দিলাম, তখনি দোকানের ভিতর থেকে কেউ একজন আমার দিকে আগুন নিক্ষেপ করলো। আর সাথে সাথে আমার হাতের গ্যাসলাইট টা ফুটে দোকানের সামানা-পাতিতে আগুন ধরে গেলো। দেখতে দেখতে সেই আগুন মুহুর্তের মধ্যেই সমস্ত দোকানকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে। দোকানে যারা যারা উপস্থিত ছিলো, সবাই দৌড়ে দোকান থেকে বেরিয়ে গেছে। দোকানদার মামাও দৌড়ে দোকান থেকে বেরিয়ে গেছে। কিন্তু আমি চুপচাপ সেভাবেই দাঁড়িয়ে আছি। দোকানের ভিতরে জ্বলজ্বল করে আগুন জ্বলছে। আর আমি আগুনের ভিতরে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু আমার শরীরকে আগুন স্পর্শও করতে পারছে না। আমি অদ্ভুত দৃষ্টিভঙ্গিতে এদিক- সেদিক তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি। তখনি দেখি আমার থেকে কিছুটা দূরে মানব আকৃতির সেই আগুনের গোলাটা তার আসল রূপে দাঁড়িয়ে আছে। মানে হলো আগুনে জর্জরিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। যাকে দেখে আমার বুঝতে বাকি নেই, যে এই জানোয়ারটাই আমার দিকে আগুন নিক্ষেপ করেছে। যার কারনে পুরো দোকান মুহুর্তের মধ্যেই জ্বলেপুড়ে রাখ হয়ে গেছে। জানোয়ারটাকে দেখে আমার মাথা ঠিক হওয়ার বদলে আরো বিগড়ে গেছে। যার কারনে সেই মানুষ আকৃতির আগুনের গোলাটার দিকে তেড়ে গেলাম। কিন্তু সে আমার তেড়ে যাওয়া দেখে দোকান থেকে দৌড় দিয়ে বেরিয়ে খোলা জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আমিও তার পিছু পিছু দোকান থেকে বেরিয়ে খোলা জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালাম। খোলা জায়গায় গিয়ে দাঁড়াতেই দেখি গতকাল ড্রয়িডের মধ্যে যাদের সাথে আমার লড়াই হয়েছে, তারা সবাই একত্রে হয়ে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আশেপাশের মানুষজন সবাই এই দৃশ্য দেখে আমাদের কাছ থেকে অনেকটা দূরে সরে গেছে। “কিন্তু আমার মাঝে ভয়ভীতি বলতে কিছুই কাজ করছে না। কারন আমার ভিতরে তাঁদেরকে মারার রেষ বহু আগ থেকেই জন্মে আছে। যার দরুন আমি তাঁদের দিকে চাক্ষুষ নজরে তাকিয়ে আছে। ঠিক সেই সময় তারা সকলেই মিলে এক সাথে নিজের অলৌকিক শক্তির প্রয়োগ করে আমার উপরে হামলা করে বসলো। আর আমি আগের ন্যায় বাঁচার জন্য হাত এগিয়ে দিলাম।
এর মধ্যেই অবনী হুট করে কোথা থেকে যেনো আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে তাঁদেরকে উদ্দেশ্য করে চেঁচিয়ে বলে,

–তোদের বুকেরপাটা কতো বড় দেখি তোরা আমার সামনে উনার গায়ে হাত লাগিয়ে দেখা। আজ তোদের মৃত্যু মনে কর নিশ্চিত।
.
অবনীর হুমকিতে কারোর কানের পোকাও নড়ে না। বরং তারা আরো তীব্র গতিতে তেড়ে আসে আকাশকে মারা জন্য। যেটা দেখে অবনীর পায়ের রক্ত মাথায় উঠে যায়। যার কারনে অবনী তার পুড়ে যাওয়া হাতটা আগলে না রেখে মাটির দিকে সোজা করে। আর পরক্ষণেই সেটা দৈত্যাকার একটা ছুরিতে পরিণত হয়। যেটা দেখে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সবার চোখ বড় বড় হয়ে যায়! বিশেষ করে আকাশের! কারন সে নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারছে না, যে তার সামনে কুখ্যাত লেডি কিলার নিজের বাস্তবিক রূপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে…..

চলবে….

গল্পের ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।