শত ডানার প্রজাপতি পর্ব-১৯+২০

0
5350

#শত_ ডানার_ প্রজাপতি
#urme prema (sajiana monir )

পার্ট : ১৯

অগ্নি ধপ করে উনার বিছানায় আমাকে ফেলে । আমি বিছানায় শুয়ে উনার দিকে ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে । উনার চোখে মুখে রাগ স্পষ্ট ।উনি আমার কাছে এসে আমার সামনে বসে আমার মাথা টিকলি খুলছিলেন । এমন সময় হ্ঠাৎ নিজের দুহাতে উনার গলা পেঁচিয়ে ধরে । উনার বুকে নিজের মাথা ছোঁয়াই।আদো আদো গলায় বলি ,

– “কেন এমন করেন বলুন তো? কেন বার বার রেগে যান ? আমাকে কি একটু আদর করা যায় না ? বলুন যায় না কি ? ”

উনি অন্যদিকে তাকিয়ে আমার হাত উনার গলা থেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বললেন,

– “হুর তুমি এখন তোমার মাঝে নেই । নেশা পুরোপুরি চড়ে গেছে । একটু ঘুমাও আমরা সকালে কথা বলবো কেমন ? ”

অগ্নির এমন কথায় আমার খুব অভিমান হয় । আমি রেগে ছোট ছোট চোখ করে অগ্নির দিকে তাকিয়ে বললাম,

– আমার কোনো নেশা টেশা হয় নি । আমি তো একটু জুস গিলেছি । আ’ম এবসুলেটলি ফাইন । এসব আপনার আমার থেকে দূরে যাবার বাহানা । আমি বুঝি সব । সব বুঝি !
কিন্তু আজ তো আমি আপনাকে নিজের থেকে পালাতে দিবোনা । একদমই দিবো না । ”

– “হুর ঐটা জুস ছিলো না । ঐটা কাসিস অরেঞ্জ । একপ্রকার নেশা জাতিয় ড্রিংক্স ।
এখন একটু ঘুমানোর চেষ্টা করো প্লিজ ”

আমি ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে বলি,

– “উহু একদম না । আমি একটুও ঘুমাবো না । একটুও না ! ”

অগ্নি তখনো নিরোত্তর। আমার কি হলো জানিনা হুট করে নিজের গায়ের থেকে উড়না ছুঁড়ে নিচে ফেলে দেই । লেহেঙ্গার টপস শর্ট হওয়ায় পেটটা দৃশ্যমান । অগ্নি কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে সাথে সাথে অন্যদিকে নিজের চোখ ফিরিয়ে নেয় ।অন্যদিকে তাকিয়ে বড় নিশ্বাস ফেলতে ফেলতে বললেন,

– “হুর উড়না টা পড়ো ”

আমি ভাবলেশহীন ভাবে উত্তর দেই ,

– “উহু পড়বো না । এটা পচা । আমি একদম পড়বোনা । খুব গরম লাগে ! ”

অগ্নি কয়েক সেকেন্ড ছোট ছোট শ্বাস নিয়ে বেড থেকে নেমে উড়নাটা আমার গায়ে জড়িয়ে দেয় । অগ্নি গায়ে জড়িয়ে দেওয়ার কয়েক মুহূর্ত পরে আমি আবার তা নিচে ফেলে দিয়ে হাসতে লাগি । অগ্নি আমার দিকে করুন চোখে তাকিয়ে ।
আমি সে দিকে খেয়াল না দিয়ে অগ্নির গলা আবার পেঁচিয়ে ধরি । বুকে মাথা রেখে বাঁ পাশে আঙ্গুল দিয়ে আঁকিঝুঁকি করতে করতে বলি,

– “আপনাকে অনেক কথা বলার আছে । অনেকককক কথা ! ”

উনি আমার পিঠে আলতো করে হাত রেখে বললেন,

– “হুম বলুন শুনছি ”

আমি মাথা উঁচু করে উনার দিকে মায়া চোখ করে তাকিয়ে বলি,

– “জানেন আপনাকে আমার কতটা ভালোলাগে ? এই যে এতো গুলো ভালোলাগে। আর আজকে এই হলুদ পাঞ্জাবি তে তো মাশাল্লা !
আপনার কথা ,আপনার মিটমিট করে হাসি ,আপনার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আমার কত ভালোলাগে ? এই যে আপনার ঠোঁটের নিচে কালো তিলটা আমাকে কতটা টানে আপনি জানেন ? আমি জানি আপনি জানেন না এসব । কেন জানতে চান না ? কেন আমার দিকে একটু ভালো করে তাকান না ? আমি কি সুন্দর না ? ”

অগ্নি আমার কথায় হেসে দেয় । আলতো করে আমার এক গালে নিজের হাত রেখে আমার চোখে চোখ রেখে মাতাল গলায় বললেন ,

-“হুর তোমার নিজের ও জানা নেই তুমি কতোটা সুন্দরী । মাথায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মত সুন্দরী । যার থেকে চোখ সড়ানো বড্ড দায় । সকাল বেলা যখন আমার সামনে ভেজা চুলে দাড়াও । চুলের পানি গুলো যখন তোমার পিঠ ছুঁয়ে দেয় সেই দৃশ্য আমাকে কতটা অগোছালো করে দেয় তোমার কোনো আইডিয়া আছে ? মাঝে মাঝে মনে হয় তুমি আমার সেই কত আগের চেনা । কত পুরনো সম্পর্ক তোমার সাথে । তোমার ঠোঁটের হাসিতে এক অদ্ভুত শক্তি আছে নিমিষেই সামনে থাকা মানুষের সব মন খারাপ উদাও করে স্নিগ্ধতায় ভরে দেওয়ার শক্তি । ”

আমি উনার কথায় মজে গিয়েছি । দিন দুনিয়া আমার কোনো কিছুর কোনো খেয়াল নেই । আজ ইচ্ছে করছে নিজেকে উনার সামনে বিলীন করে দেই । যদি এতে শাস্তি স্বরূপ আমার মৃত্যুও হয় তাই সই । এই একরাতের জন্য আমি শতবার মৃত্যু স্বাদ ভোগ করতে রাজি । আচমকাই আমার কি হলো জানা নেই হুট করে উনার ওষ্ঠ জোড়া নিজের ওষ্ঠ এর মাঝে নিয়ে নেই।প্রথম কয়েক সেকেন্ড উনি থম মেরে থাকে । হয়তো বুঝে উঠতে পারছিলো না কি হচ্ছে । কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই উনি সাড়া দেয় । আমি আস্তে আস্তে উনার মাঝে নিজেকে বিলীন করে দিচ্ছিলাম । দুজন এক হয়ে যাচ্ছিলাম । সত্যিকার অর্থে উনার স্ত্রীর মর্যাদা পাচ্ছিলাম । আজ যেন আমার ভালোবাসা সত্যিকার অর্থে পূর্নতা পাচ্ছিলো । ভালোবাসার এক নতুন সাগরে ভেসে যাচ্ছিলাম ।

সকালের মিষ্টি রোদের দুষ্টু আলো মুখের উপর পড়তেই আমার ঘুম ভাঙে । মাথা প্রচন্ড রকম ব্যথা করছিলো । মাথায় দু হাতে চাপ দিয়ে ধরে উঠে বসি । পুরো মাথা ভ্যানিস হয়ে আছে । কিছু সময় থম মেরে বসে থাকার পর রাতের কথা পুরোপুরি মনে আসে । আমি পাশে চোখ তাকিয়ে দেখি অগ্নি নেই । সারারুমে চোখ বুলিয়ে দেখি রুমের আসবাবপত্র ফুলদানী ভাঙা । এসব কে করেছে? অগ্নি ? কিন্তু কেন? আর সে কই ? তাড়াতাড়ি করে বিছানা থেকে নেমে অগ্নিকে খুঁজতে লাগি । ওয়াশরুমে নেই, রুমে নেই ,তবে কি বারান্দার দিকটায় আছে ?
আমি আর কিছু চিন্তা না করেই বারান্দার দিকে দ্রুত পায়ে যাই । আমি যা ভেবেছিলাম তাই । হ্যা অগ্নি দাড়ানো ।আমি ঝট করে ছুটে যেয়ে অগ্নিকে পিছন থেকে শার্ট খামচে গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরি । বড় বড় শ্বাস ফেলতে লাগি । ভয় হচ্ছিলো ভেবেছিলাম উনি আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে । আমি কান্না জড়িত গলায় বলি ,

– “আই লাভ ইউ । আই লাভ ইউ । আমি আপনাকে ভালোবাসি । আপনি বুঝেন না ? কেন বার বার আমার কাছে এসে এভাবে ছেড়ে চলে যান ? ”

বলেই আরো শক্ত করে উনাকে জড়িয়ে ধরি । অগ্নির কোনো সাড়া শব্দ নেই । বেশ কিছু সময় কেটে যায় । আমি অগ্নির হাত ধরতেই টের পাই হাতটা ভেজা ভেজা । আমি নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি রক্ত ।আমি তাড়াতাড়ি করে উনাকে টেনে বিছানায় বসাই ।পুরো রুমে মেডিসিনের বক্স খুঁজতে লাগি । ড্রেসিংটেবিলের শেষ নিচের ড্রয়ারে পাই । মেডিসিন এনে উনার পায়ে সামনে হাটু গেরে বসি । হাত অনেকটা কেটে গেছে । মনে হচ্ছে কাচের কোনো কিছু শক্ত করে চেপে ধরেছিলো । হাতে এখনো ছোট ছোট কাচের টুকরা লেগে আছে ।খুব সাবধানতার সাথে তা পরিষ্কার করে । হাতে ব্যান্ডেজ করে দিতে লাগি । হঠাৎ ই উনি শীতল কন্ঠে বললেন ,

– “স্যরি হুর । কাল রাতে যা কিছু হয়েছে সবকিছুর জন্য স্যরি । কাল আমিও কিছুটা ড্রাংক ছিলাম । নেশার ঘোরে তোমার সাথে এই ভুল করে ফেলেছি । ”

উনার কথায় আমি স্থব্দ হয়ে বসে আছি । কি বলবো ? কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না । উনি আবার বলতে শুরু করলেন ,

– “আমি বারবার তোমার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছি । যতবার তোমার কাছে আসি আমার প্রথম ভালোবাসার কথা স্বরণ হয়। আমি কোথাও তোমাকে খুঁজে পাইনা বার বার আমার ভালোবাসার কথা মনে পড়ে । গতরাতেও তাই হয়েছে । আমি তোমাকে ঠকাতে চাই না হুর। কিন্তু সত্যি তো এটাই যে আমি তোমাকে ভালোবাসি না । তোমার প্রতি জাস্ট আমার এট্রাকশন আছে । তুমি ভালোবাসা ডিজার্ভ করো । যা আমি কোনো দিন তোমাকে দিতে পারবোনা ।
কিন্তু হ্যা আমি তোমাকে ঠকাতে পারবো না । আমার ভুলের মুষল আমি দিবো ।তোমার প্রাপ্য অধিকার আমি তোমাকে দিবো । কিন্তু কখনো ভালোবাসতে পারবো না । ”

আমি ভাবলেশহীন ভাবে উনার দিকে তাকিয়ে আছি । উনার চোখে জল চোখ মুখ লাল হয়ে আছে । চোখে মুখে স্পষ্ট অপরাধবোধ । উনি মাথা নিচু করে বসে আছে । আমি শীতল কন্ঠে বললাম ,

– “আপনি বলছেন আপনি আমাকে ভালোবাসেন না । হুম আমি মানলাম । আমি তো আপনার থেকে দূরে ছিলাম । তাহলে কেন আমাকে নিজের মায়ায় ফেললেন ? কেন আমার এতো কেয়ার করলেন ? কেন আমাকে ভালোবাসতে বাদ্ধ করলেন ? বলুন ? ”

উনি এখনো চুপ করে আছে ।উনার কোনো উত্তর নেই । আমি কান্না করতে করতে বলি ,

– “জানি আপনার কাছে কোনো উত্তর নেই । আর না থাকবে । আসলে ভুল আমার ছিলো যে আমি আবার কাউকে ভালোবাসার অপরাধ করেছি।আমার বুঝা উচিত ছিলো ভালোবাসা আমার জন্য নয় ।আপনি বলছেন আমাকে ভালোবাসেন না । হুম মানলাম নেই আমার জন্য ভালোবাসা । তাহলে কেন বারবার আমার উপর নিজের অধিকার খাটাতে আসেন ? এটারও উত্তর নেই তাই তো ?
আপনি স্ত্রীর অধিকার দিয়ে কি আমার উপর দয়া করতে চাইছেন ? আমাকে কি আভরিন ভেবেছেন ?
চাইনা আপনার কোনো অধিকার আর না কোনো দয়া।ছোট থেকে শুধু মানুষের দয়ার উপর বেঁচে এসেছি ।আমি আর চাইনা কারো দয়া।হ্যা ,কিছুদিনের জন্য নিজের অবস্থান আর বাস্তবতা ভুলে গিয়েছিলাম । কিন্তু এখন বেশ বুঝতে পারছি ।সবকিছু আমার সামনে স্পর্শ । আজ এখনি এই মুহূর্তে আমি ভুলে যাচ্ছি আমি আপনাকে ভালোবাসতাম । কাল রাতে আমাদের মধ্যে কিছু হয়েছিলো । আর আমাদের মাঝে কোনো সম্পর্ক ছিলো । কন্ট্রাক্ট অনুযায়ী আপনার সাথে একবছর থাকবো । কিন্তু আমাদের মাঝে কোনো প্রকার সম্পর্ক থাকবেনা । একই ছাদের নিচে অপরিচীতদের মত থাকবো । ”

উনার চুপ করে আছে । আমি ছোট নিশ্বাস ছেড়ে বলি,

– “জানেন এই মুহূর্তে আমার আপনাকে কি করতে ইচ্ছে করছে ? আপনাকে খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে । না হয় নিজের শরীর কুচিকুচি করে কেটে ফেলতে ইচ্ছে করছে । ”

উনি মাথা নিচু করে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললেন ,

– “আমাকে খুন করে দেও এতে হয়তো কিছুটা শান্তি পাবো । আমি পারছিনা এই অপরাদবোধ নিয়ে বাচঁতে ।তোমার চেয়ে অনেক বেশি অশান্তি তে আমি আছি । আমাকে খুন করে মুক্তি দেও । ”

আমি আর কোনো কথা বললাম না । উনি এখনো মাথা নত করে বসে আছে । আমি সেখান থেকে উঠে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়াই । এই লোকে চেহারা দেখার মত ইচ্ছে আমার মাঝে নেই।ওয়াশরুমের দরজায় দাড়িয়ে বললাম,

– “আজ নিজের থেকে আমাকে দূরে ঠেলে দিয়েছেন । কিন্তু একদিন এমন সময় আসবে যেদিন আপনি আমাকে খুঁজবেন। কিন্তু তখন আর আমি আপনার থাকবো না । আপনার থেকে অনেক দূরে চলে যাবো । ”

বুক ফেটে কান্না আসছে । শাওয়ার ছেড়ে ফ্লোরে বসে চিৎকার করে কান্না করি ।এমনটাই কি আমার সাথে হওয়ার ছিলো ? আমার জীবনে কি ভালোবাসা পাবার কোনো অধিকার নেই ? আমার জীবনে ভালোবাসা সবচেয়ে বড় অভিশাপ । নিজের ভাগ্যের উপর তাচ্ছিল্যের হাসি আসছে ।আমাদের স্বামী স্ত্রীর পবিত্র সম্পর্কটা অগ্নির কাছে ছেলেখেলা ! তার মনে আমার জন্য কোনো অনুভূতি নেই ভালোবাসা নেই । এখনো উনার সবটা জুড়ে উনার প্রথম ভালোবাসা রয়েছে ।
সিদ্ধান্ত নিলাম আমি আর কোনো দিন উনার দিকে ফিরে তাকাবো না । যেমন সবার জন্য ভালোবাসা নয় । তেমনি আমার জন্যও না ।

চলবে ….❤️

#শত_ ডানার_ প্রজাপতি
#urme prema (sajiana monir )
পার্ট : ২০

আজ ইয়াশা আপুর বিয়ে । মা ঢাকা থেকে ভোর সকালে পৌছিয়েছে ।
নাস্তার টেবিলে মায়ের সাথে দেখা । মাকে দেখে মনে হচ্ছে কিছুটা অসুস্থ । মাকে জিগ্যেস করলে মা বললেন তেমন কিছুনা কাজের স্ট্রেসে এমন দেখাচ্ছে ।
সবাই বারবার জিগ্যেস করছিলো আমার চোখ মুখ এমন লাল কেন ,কি হয়েছে ? ঠিক মত ঘুম হয়নি । এই বাহানা দিয়ে সবাইকে কাটিয়ে দেই । সকালের নাস্তার টেবিলে অগ্নিকে দেখা যায় না । আমিও কোনো খোঁজ নেই না । আর নিবোই বা কেন ? সে আমার কে হয় ?
দুপুরের মেকআপ আর্টিস্টরা বাড়িতে আসেন । বাড়ির সব মেয়েরা সাজগোজ করছে । মা আমাকে আর আপুকে জোড় করে পাঠালেন । মায়ের সামনে আমার কোনো বাহানা কাজ করলো না । অবশেষে ইচ্ছা না থাকার শর্তেও সাজতে হয় । ব্লাশ পিংক কালারের গ্রাউন পরে ভারী মেকআপ করে কার্টুন সেজে দাড়িয়ে আছি ভ্যানুর এক কর্নারে । সবাই বার বার একই প্রশ্ন করে যাচ্ছে । অগ্নি কোথায় ? অগ্নি কোথায় ? প্রত্যেক বারই মৌন থেকেছি । সবসময় মৌনতা মানে সম্মতি নয় । কখনো কখনো মৌনতা মানে “জানিনা “ও হয় ।
মা অগ্নির জন্য খুব টেনশন করছেন । যদিও আমার অগ্নিকে নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই । কিন্তু মায়ের চিন্তিত চেহারা দেখে দোয়া করছি যেন সহিসালামতে বাড়ি ফিরে আসে । আমার দোয়া খুব তাড়াতাড়ি ই কবুল হলো । দরজার দিকে চোখ যেতেই দেখি অগ্নি কাচের দরজার বাহিরে দাড়িয়ে কারো সাথে ফোনে কথা বলছে । কালো স্যুটে এসেছে ।চুল গুলো স্টাইল করে ব্রাশ করা । চোখে সানগ্লাস ।অন্যসময় হলে হয়তো আমি উনার এই চার্মিং লুকের উপর গলে যেতাম কিন্তু এই মুহূর্তে আমার উনাকে জাস্ট অসয্য লাগছে । আজ সকালের পর তো উনার চেহারা দেখাটাও আমার জন্য জুলুম হয়ে যাচ্ছে । কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি আমি আর উনার পিছু নিবো না । আমি আর কষ্ট পাবো না । কোনো একজনের জন্য কারো জীবন থেমে থাকে না । আমি আগের মত হাসবো ,খেলবো ,গাইবো । কিন্তু বুকের কোথাও সেই ক্ষতটা ছেদ করে উঠে । আমি উনার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেই ।
আপুর পাশে যেয়ে বসি । আপু আয়েশ করে আইসক্রিম খাচ্ছে । এই পর্যন্ত দুটো হয়ে গেছে । তিন নাম্বারটা চলছে । আপু আর দিকে একটা আইসক্রিম এগিয়ে বললেন ,

– “এই নে এটা খেয়ে মাথা ঠান্ডা কর ! ”

আমি আপুর কথায় ভ্রু কুঁচকিয়ে বলি,

-“কই আপু আমার মাথা তো ঠান্ডাই আছে । ”

– “তাই বুঝি ? চেহারায় এমন রাগী ভাব কেন ? এই যে বোচা নাকটাও ফুলিয়ে রেখেছিস ! ”

আপুর সাথে ছোট থেকেই আমার হার্ট টু হার্ট কানেকশন রয়েছে । জানিনা কিভাবে আমার মন খারাপ থাকলে ঠিক টের পেয়ে যায় । আপুর কথাকে এড়ানোর জন্য কৃত্রিম হেসে বললাম,

– “আজ আমার নাকটা বোচা বলে এই ভাবে আমার মজা নিচ্ছো আপু ? নট ফেয়ার আপু !
তুমি জানো না ? ইফ ইউর নোস ইজ বোচা দেন ইউ আর সুন্দরী ! ”

– “আচ্ছা শুনি কোন বইয়ে লিখা আছে ? ”

– “ওহ আপু এটা ও জানো না ? ফেসবুকে ! ”

আপু আমার কান টেনে দিয়ে বললেন ,

– “আচ্ছা বড় বোনের সাথে দুষ্টামি করা হচ্ছে ? তাই না দাড়া মজা বুঝাচ্ছি ফাজিল মেয়ে । ”

আমি আপু থেকে নিজেকে ছাড়ানোর প্রচেষ্টা করতে করতে বলি ,

– “ও আপু স্যরি আর করবো না ।

আপু আমার কান ছেড়ে বললেন ,

– “হুম এবার বল কি হয়েছে ? একদম মিথ্যা বলার চেষ্টা করবি না । আমি জানি তুই কোনো কিছু নিয়ে আপসেট । ”

আমি আপুকে কিছু বুঝতে না দিয়ে বললাম ,

– “না আপুনি তেমন কিছুনা ।”

– “পাক্কা ? ”

– “একদম ”

আপুর বোধহয় আমার কথায় খুব একটা বিশ্বাস হয়নি ।সন্দিহান চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । কিছু মুখে কিছু বললো না । আপু আর আমি গল্প করছিলাম । হঠাৎ ই আবির ভাইয়া সামনে এসে আপুর দিকে তাকিয়ে অবাক চোখে বললেন ,

– “হায় মাবুদ ‌ ! হিয়া তুমি এখানো আইসক্রিম খাচ্ছো ? ”

আপু ছোট ছোট চোখ করে হাসির রেখা টেনে বললেন ,

– “মাত্রই তো দুটা খেয়েছি । ”

ভাইয়া আপুর হাত থেকে আইসক্রিম টেনে ফেলে দিয়ে বললেন ,

– “গলা বসে যাবে । এক সাপ্তাহের জন্য আইসক্রিম টোটালি অফ । ”

আপু বাচ্চাদের মত কাদো কাদো চেহারা করে বললেন,

– “আবির এটা ঠিক করছো না । ”

ভাইয়া দাঁত হেসে বললেন ,

– “এটাই ঠিক । ”

আপু কাদো কাদো চেহারা করে আমার দিকে তাকিয়ে অভিযোগ করলেন,

-“দেখ না হুর তোর ভাইয়া আমাকে আইসক্রিম খেতে দিচ্ছে না । এটা কি ঠিক করছে ? বল ? ”

আমি ভাইয়ার পাশে দাড়িয়ে দাঁত বের করে হেসে বললাম,

– “একদম ঠিক ! আপু আমি তো ভাইয়ার পক্ষে । তোমার অভিযোগ গ্রান্টেড না । আমি চাই না আমার সুইট আপু আর আমার ভবিষ্যৎ ভাগ্নেভাগ্নির কোনো ক্ষতি হোক । ”

আপু মুখ ভেংচি দিয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নেয় আমি আর আবির ভাইয়া আপুর গোমড়া চেহারা দেখে হাসছি । হঠাৎ আবির ভাইয়া অগ্নিকে এদিকে ডাকে । অগ্নিকে দেখেই মুখের হাসি গায়েব হয়ে যায় । আমি অন্যদিকে তাকাই । অগ্নি আমার দিকে একবারের জন্য তাকাচ্ছে না । হয়তো লজ্জা আর অপরাদবোধ উনার মাঝে কাজ করছে । আমিও উনার সামনে বেশি সময় উনার সামনে দাড়ালাম না । কোনো এক বাহানা দিয়ে চলে আসলাম । সত্যি বলতে উনার সামনে দাড়িয়ে থাকার মত সাহস আর শক্তি আমার মাঝে নাই ।

____________________________

গতকাল ইয়াশা আপুর রিসেপশন শেষ হয়েছে ।তাই আজ সকাল সকাল ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি । নানুজান খুব করে বলছিলো আর কয়েকটা দিন থাকতে । কোনো রকম নানুজানকে বুঝিয়ে ভুলিয়ে এসেছি । এখানে থাকার মত আমার কোনো ইচ্ছে নেই । বারবার অগ্নির সম্মখীন হতে হয় । যা আমার একদম ভালো লাগছে না ।
অলস মস্তিষ্ক শয়তানের আড্ডাখানা । ঢাকায় ফিরবো ভার্সিটি ক্লাস সবকিছু তে ব্যস্ত হয়ে পড়বো কোনো রকম আজে বাজে চিন্তা মাথায় আসবে না। আস্তে আস্তে সব স্বাভাবিক হবে । অগ্নিকে ভুলতে সুবিধা হবে !
এগুলো ভেবেই এক দীর্ঘতম নিশ্বাস নেই ।

মা ফ্লাইটে ঢাকায় ব্যাক করেছে । আর আমরা গাড়ি তে রওনা দিয়েছি ।
গাড়ি তে ইচ্ছে করে আপুর সাথে পিছনে বসেছি । আবির ভাইয়া আর অগ্নি সামনে বসেছে । পিছনে বসার জন্য বাহানা দেখিয়েছি শরীর খারাপ । আপুও আপত্তি করেনি । আজ কাল খুব বাহানাবাজ হয়ে গেছি । সবাইকে এটা ওটা বাহানায় কাটিয়ে দেই । আমার জীবনটাই কেমন জানো রঙ হীন সাদা কালো হয়ে গেছে । চারদিকে শুধু বিষাদগ্রস্ত আধারময় ।
সত্যি চিটাগাং আমার জীবনে নতুন মোড় নিয়ে এসেছে । এখানে আসার আগে একবুক আশা নিয়ে এসেছিলাম । ভালোবাসা নিয়ে এসেছিলাম ।আর ফিরছি ভাঙা হৃদয় আর অজস্র কষ্ট নিয়ে । নিজের জীবনের দিকে তাকালে তাচ্ছিল্যের হাসি আসে ।

বাড়িতে ফিরতে রাত আটটা বেজে যায় । রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে বেডে নিজের গা এলিয়ে দেই । বড্ড ক্লান্ত লাগছে । কিছুসময় পর রুমে কারো আসার শব্দ পাই । আমি জানি অগ্নি এসেছে । ইচ্ছে করে চোখ বুঝে রাখি ।উনি ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে চলে যায় ।এই সুযোগে আমি তাড়াতাড়ি করে সোফায় নিজের বিছানা পেতে নেই । নানুজানের পড়ানো বালা জোড়া আর নোস পিন কাঠের বাক্সে রেখে । বিছানার পাশে ছোট টেবিলে উপর রাখি । অগ্নি আসার আগেই তাড়াতাড়ি করে লাইট অফ করে সোফায় শুয়ে পড়ি ।
এসব কেন করছি ? রাগে ? ভয়ে ?
উহু ,এই দুটোর একটাও না । এসব আমি চক্ষু লজ্জায় করছি । একজন মানুষের নৈতিকতার অনেকটা অংশ জুড়ে আছে চক্ষু লজ্জা । এই চক্ষু লজ্জা মানুষকে যেমন অন্যায় করতে বাঁধা দেয় ।তেমনি মনের বিভিন্ন দ্বিধাদ্বন্দ্বতে ফেলে ।
অগ্নির নামের কোনো জিনিস আমার চাইনা । আর না চাই অগ্নির নামের সাথে জুড়ে থাকতে । উনার সাথে চোখাচোখি হয়ে আমি চক্ষুলজ্জায় পড়তে চাই না ।
বেশ কিছুসময় পর ওয়াশরুমের দরজা খুলার শব্দ কানে আসে । আমি আরো শক্ত করে চোখ চেপে থাকি । উনি রুমে এসে বেশ কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে শীতল গলায় বললেন ,

– “তোমার সোফায় ঘুমাতে হবেনা তুমি বেডে ঘুমাও । আমি সোফায় ঘুমাচ্ছি । ”

আচ্ছা উনি কি করে জানলো আমি এখনো জেগে আছি ? অগ্নির কথায় আমি কোনো উত্তর দেই না ।অগ্নি আরো কিছুক্ষণ আমার দিকে উত্তরের আশায় তাকিয়ে থাকে । আমার কোনো জবাব না পেয়ে । উনি বিছানার দিকে এগিয়ে যায় ।কিছুক্ষণ পর ঝাঁঝালো গলায় বললেন ,

– “এটা কি ? এগুলো নানুজান তোমাকে দিয়েছিলো । এগুলো খুলে এখানে কেন রেখেছো ? ”

আমি এবারো কোনো উত্তর দেই না । উনি কিছুক্ষণ আমার উত্তরের আশা করে । কিন্তু কোনো উত্তর না পেয়ে রাগী গলায় বললেন ,

– “আমি কিছু জিগ্যেস করছি হুর ! ”

– “হুরররর ! আই ওয়ান্ট এন্সার । ”

আমি চোখ খুলে খুব স্বাভাবিক কন্ঠে উত্তর দেই ,

– “এগুলো নানুজান তার নাতবউয়ের জন্য রেখেছে । যা আমি না । এগুলো আমাকে বার বার স্বরণ করিয়ে দেয় আমি নানুজানকে ঠকাচ্ছি । তাই আমি গহনা ফিরিয়ে দিচ্ছি । এতো বোজ আমি রাখতে পারবো না । ”

উনি রেগে বললেন ,

– “এগুলো কি আমি পড়বো ? ”

– “আপনি পড়বেন নাকি আপনার ভবিষ্যৎ স্ত্রী কে দিবেন সেটা আপনার একান্ত নিজেস্ব ব্যাপার । ”

অন্যদিকে পাশ ফিরে চোখ বন্ধ করে নেই । কিছুক্ষন পর বিকট এক আওয়াজ কানে আসে । উনি কি গহনার বক্স মাটিতে আছাড় মেরেছে ? মারুক তাতে আমার কি ? উনার যা ইচ্ছে করুক আমার উনাকে নিয়ে কোনো প্রকার মাথা ব্যথা নেই ।

________________________

অগ্নির ঘুম ভাঙার আগেই ভার্সিটির জন্য রেডি হয়ে নেই । বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মায়ের সামনে পড়ি । মায়ের বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মখীন হতে হয় । মাকে মিথ্যা বললাম যে আমার আজ একটু তাড়াতাড়ি যেতে হবে।ইম্পরট্যান্ট ক্লাস আছে । মাও আর বাধা দিলো না ।
ভার্সিটি তে পৌছাই নয়টায় । এখনো ক্লাস শুরু হতে আরো দুই ঘন্টা বাকি । এতো সময় একা বসে কি করবো ?
আচমকাই মাথায় এক বুদ্ধি আটকে । দ্রুত ব্যাগ থেকে ফোন বের করে শেফা কে আসতে বলি ।শেফার বাড়ি ভার্সিটির পাশে হওয়ায় সে বিশ মিনিটে চলে আসে । আমাকে দেখতেই হুট করে মাঠে সবার সামনে জড়িয়ে ধরে । এই মেয়ের এটা অনেক আগের অভ্যাস । আমাকে যেখানে দেখবে এভাবে জড়িয়ে ধরবে ।দুজন ক্যান্টিনের দিকে যাই।সেখানে হাউসফুল ।ক্যাম্পাসের ছেলেদের আড্ডা । তাই বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয় । দুজন লাইব্রেরি দিকে যাই । পুরো লাইব্রেরি ফাঁকা । কেউ নেই । আমি আর শেফা এক কোনায় বসে পড়ি । দুজন এটা ঐটা বিভিন্ন আলাপ করি । কয়েকদিন দেখা হয়নি শেফার সাথে কিন্তু মনে হচ্ছে কত কাল পর দেখা হচ্ছে । হঠাৎ শেফার ফোনটা বাজে । ফোন হাতে নিয়ে চেক করতেই শেফা লাফিয়ে উঠে । উল্লাসিত স্বরে বলছে ,

– “উফফফ বেঁচে আছে ,বেঁচে আছে ! ”

লাইব্রেরিয়ান ধমকের স্বরে চুপ করতে বললেন । শেফা চুপ হয়ে যায় । আমি চাপা ধমকের স্বরে শেফাকে বললাম ,

– “কি হয়েছে এমন ইঁদুরের মত চেঁ চেঁ কেন করছিস ? কে বেঁচে আছে ? ”

– “আরে ইয়ার আর বলিসনা এক পাগলের সাথে রিলেশনে আছি । কথায় কথায় শুধু সুইসাইডের হুমকি দেয় । কাল রাতে ফোন রিসিভ করতে লেট হয়েছে বলে হুমকি দিয়েছিলো । তারপর আর মেসেঞ্জারে দেখা যায় না । তাই ভয়ে ছিলাম যদি সত্যি সত্যি সুসাইড করে নেয় !
এখন দেখি আবার মেসেজ দিয়েছে । তার মানে বেঁচে আছে । যাক বাবা টেনশন থেকে মুক্তি পেলাম । ”

– “এটা তোর কয় নাম্বার বয়ফ্রেন্ড যেন ? ”

– “ওয়েট গুনে বলছি । উমমমম ! এক ,দুই ,চার পাঁচ ।ও হে পাঁচ নাম্বার । পাঁচ নাম্বার বয়ফ্রেন্ড । ”

– “লাইক সিরিয়াসলি ? কেমনে পারিস তুই এসব ? মানে কেমনে বল একবার ! ”

– “ট্যালেন্ট বুঝলি ট্যালেন্ট । যা সবার ভিতর নেই । ”

– “আহায়য় ! ট্যালেন্ট ? কারো মন নিয়ে খেলা ট্যালেন্ট ? ”

– “চিল ইয়ার এতো সিরিয়াস হচ্ছিস কেন ? তারাও মন প্রাণ দিয়ে কাউকে ভালোবাসেনা । টাইম পাস ই করে আমার মত । ”

– “এর জন্যই এবার সাইকোর পাল্লায় পড়েছিস । কথায় আছেনা চোরের দশ দিন গৃ্হস্থের একদিন । ”

– “প্লিজ তুই তো এভাবে বলিস না। আমাকে বুঝার মত তুই ছাড়া কে আছে বল ? ”

– “হয়েছে আর বাটার লাগাতে হবে না । যা ক্যান্টিন থেকে কফি নিয়ে আয়। মাথাটা খুব ধরছে । ”

– “আচ্ছা যাচ্ছি মেডাম । ”

শেফা কথা শেষ করে কফি আনতে যায় । আমি মন দিয়ে নোট তৈরি করছি ।কিছুসময় পর কেউ আমার সামনে এসে বসে । আমি মাথা নিচু করে আড়চোখে তাকিয়ে দেখি অগ্নি । খুব রেগে আছে । রাগে নাক ফুলছে।বার বার হাত কচলাচ্ছে । আমি দেখেও না দেখার ভান করে বসে রইলাম । অগ্নি গম্ভীর গলায় বললেন,

– “লাইব্রেরি তে ক্লাস ইম্পরট্যান্ট ক্লাস হচ্ছে ? টিচার কই ? দেখছি না তো । ”

আমি জানি উনি রাগে আর ক্ষোভে এসব বলছে । আমি চুপ করে আছি । উনি আবার বললেন ,

– “আমার সাথে ভার্সিটি তে আসলে আমি নিশ্চিত তোমাকে গুম করে ফেলতাম না !
এসবের কারণ কি ? ”

আমি এবারো চুপ । উনি টেবিলে জোড়ে বারি মেরে বললেন ,

– “কথা কানে যাচ্ছেনা ? আমি জানতে চাইছি এসবের কারণ কি ? ”

আমি খাতার দিকে চোখ রেখে শান্ত স্বরে বললাম ,

– “সকাল সকাল আপনার মুখ দর্শনের আমার কোনো ইচ্ছে নেই । আর তাছাড়া কন্ট্রাক্ট পেপারসে এমন কোনো শর্ত ছিলো না । তো আমি সবকিছুতে আপনাকে কৈফিয়ত দিতেও বাধ্য নই । ”

উনি বেশ কিছুক্ষণ শান্ত থেকে হুট করে আমার সামনের সব বই খাতা টেবিল থেকে ফেলে দেয় । আমার খুব রাগ উঠে। কিন্তু নিজেকে স্বাভাবিক রাখলাম । বই খাতা গুলো তুলে গুছিয়ে খুব স্বাভাবিক স্বরে বললাম,

– “আপনার মত অসভ্য লোক থেকে এরচেয়ে ভালো কিছু আশা করা যায় না । ”

কথাটা শেষ করে এক সেকেন্ড ও সেখানে দাড়াই না । দ্রুত পায়ে চলে আসি । উনার সাথে ঝামেলা করার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা নেই ।

চলবে…❤️

প্লিজ সবাই সবার মতামত জানাবেন ।ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টি তে দেখবেন 😊😊😊।