শান্তি সমাবেশ পর্ব-০৪

0
407

#শান্তি_সমাবেশ
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ৪

নিজের উন্মুক্ত কোমড়ে পুরুষালী হাতের বাজে স্পর্শ অনুভব করলো মৃত্তিকা। মুহূর্তেই যেন সর্বাঙ্গ ঘিনঘিন করে উঠলো। শরীরের র*ক্ত সঞ্চালন বাড়লো চক্রবৃদ্ধি হারে। চারপাশে মানুষ গিজগিজ করছে। এত ভীরের মাঝে যে কেউ ই এই আচরণ করতে পারে। কোন মতে পেছনে ঘুরলেও তেমন কাউকে সন্দেহ করে উঠতে পারলো না। সবাই সবার মতে এখানে। ভয়ে বড়সড় ঢোক গিললো মৃত্তিকা। এটা যে ইচ্ছাকৃত ছিল সেটা ওর নারী মন জানে। ভালো ভাবেই বুঝে এটা ভুলবশত ছিলো না। আবারও সামনে মনোযোগ দিলো ও। আজকে ফাংশন ভার্সিটিতে। ফাংশন বলতে “শাপা ডে”। “শাপা” ডে মানে হলো শাড়ী- পাঞ্জাবি দিবস। ভার্সিটিতে না উঠলে কোনদিন ও মৃত্তিকা জানতে পারতো না যে এমনও দিবস থাকে। সবার মতো মৃত্তিকা ও শাড়ী পড়েছে আজ। যথেষ্ট ভদ্রভাবে শরীর ঢেকে পরেছে সে তবুও হয়তো এত ধাক্কা ধাক্কাতি কোন দিক দিয়ে একটু স্থানচ্যুত হয়েছে। লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে সেখানে কোন এক বাজে পুরুষের। সামনেই স্টেজে গান চলছে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনপ্রিয় একজন শিল্পী এসেছে। মৃত্তিকা’র ও তাকে অনেক পছন্দ। মনোযোগ দিয়ে যখন সে গান শুনছিলো তখনই এমন স্পর্শ পেলো। মৃত্তিকা টেনেটুনে ঠিক করলো শাড়ী।
ওর ভাবনার মাঝেই কেউ আবারও একই কাজ করলো। এবার ছাড়লো না বরং বিচরণ ঘটালো ওর কোমড় থেকে পেটে। মৃত্তিকা হাত ছিটকে সরিয়ে তারাতাড়ি ঘুরলো। হাত-পা রীতিমতো কাঁপছে ওর। কাজল ভরা চোখদুটো তখন পানিতে ডুবা। বুকের ভিতর হচ্ছে ধ্রীম ধ্রীম শব্দ। ওর পেছনে কোন ছেলেই নেই। সবই মেয়ে। ছেলে যারা তারা ওর সাইডে অথচ হাতটা ছিলো পেছন থেকে। তাহলে কে? আর এক মুহুর্ত ও সেখানে দাঁড়ালো না মৃত্তিকা। ভীর ঠেলে বেরিয়ে গেল ও। পেছনে ভেসে আসা প্রিয় শিল্পী’র কন্ঠে নিজের প্রিয় গানটাও ওকে টানে ওখানে দাঁড় করিয়ে রাখতে অক্ষম হলো। সব সুরই যেন তেঁতো লাগলো ওর কর্ণধারে। অস্থির হয়ে ছুঁটলো মৃত্তিকা। হাত চেপে রাখা কোমড়ে। জ্বলছে সেখানটায়। নখ ডেবেছে । একসময় ভীর ঠেলে বেরিয়ে নিজের ডিপার্টমেন্টের ভেতরে চলে গেল সে। পেছনে তখনও শিল্পী সুর তুলে গেয়ে যাচ্ছেন,

” স্বপ্নের বালুকায় কেউ কি পা লুকায়,
যদি না থাকে ভেজা মন”
.
ওয়াসরুমে ঢুকেই দরজা লক করলো মৃত্তিকা। কোমড় থেকে শাড়ী সরালো। লাল দাগ পড়েছে সেখানটায়। ট্যাব ছেড়ে রুমাল ভিজিয়ে তা চিপড়ে কোমড়ের দিকটা ডলতে লাগলো। এতে সেই বাজে স্পর্শ মুছলো কি না বুঝা গেলো না কিন্তু জ্বলুনি বাড়লো কয়েকগুণ। নিমিষেই নিজের সাজ লেপ্টে ফেললো সে। কেঁদে উঠলো শব্দ করে। দরজায় তখন লাগাতার উজ্জ্বল বাড়ি মারছে। বারবার বলছে,

— মৃত্তিকা? মৃত্তিকা, ভেতরে আছিস? এই মৃত্তিকা? কথা বল?

মৃত্তিকা কেঁদেই যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আজ প্রথম পরলো সে। বাবা কোনদিন ওকে ফুলের আঁচড় ও লাগতে দেন নি। সবসময় সামলে রেখেছেন তার বুকে। এতটাই প্রিসিয়াস তার বাবা’র রাজকন্যা। সবার কাছে কালো নামধারী কন্যা বাবা’র কাছে ছিলো রাজকন্যা। এখনও আছে। সেই রাজকন্যা’র গায়েই কি না লেগেছে বাজে স্পর্শ? মুখ দিয়ে অস্পষ্ট স্বরে মৃত্তিকা বললো, “বাবা”।
ডেকেই কেঁদে ফেললো। কখনো এমন পরিস্থিতিতে পরে নি সে। সেখানে পরপর দু দুবার এমন হওয়াতে মেয়েটা এখন ভরসার স্বরে কাউকে ডাকতে বা বলতেও পারছে না।
এদিকে উজ্জ্বল ডেকেই যাচ্ছে। মৃত্তিকা ও সাড়া দিচ্ছে না। অবশেষে সে বেরিয়ে এলো। বাইরে হিমু সহ দুই তিনজন দাঁড়ানো। উজ্জ্বল ওদের দিকে তাকিয়ে বললো,

— আজকে খবর আছে শালা’র।

— মৃত্তিকা বের হয় নি?

হিমুর এহেন প্রশ্নে মেজাজ চটে গেল উজ্জ্বলের। হিমুর দেহের ঢোলা পাঞ্জাবি’র কলারটা আলতো করে চেপে বললো,

— হিমুর বাচ্চা জীবনে প্রথম লেডিস ওয়াসরুমে ডুকসি এই মৃত্তিকার জন্য। শালী বের হোক একবার। দেখ কি করি?

পাশ থেকে একজন বললো,

— আজকে খবর করে ছাড়বে ওদের। কোথায় হাত দিসে তা হাড়ে হাড়ে টের পাবে।

হিমু নিজের কলার ছাড়িয়ে বললো,

— হাড্ডি দিয়ে ডুগডুগি বাজাবে আজ।

__________________

ভরা মাঠের মধ্যে একজনকে হকি স্টিল নিয়ে অনবরত আঘাত করে যাচ্ছে পূর্ণ। কেউ চেয়েও থামাতে পারল না তাকে। ওখানে যাওয়া মানে নিজের কপালে মঙ্গলবার বাদে শনি রবি সব ডাকা। সেচ্ছায় মাইর কে ই বা খেতে চাইবে? পূর্ণ নিজেও থামছে না। শরীরে যেন তার অসুর ভর করেছে। চোখ দিয়ে ঝরছে আগুন। পারলে সে যে সামনের জনকে জ্বালিয়ে ভস্ম করে দিলো তা সবাই টের পাচ্ছে। ছেলেটা পূর্ণ’র কাছে বারবার ছাড় চাইছে। পাষাণ পূর্ণ থামলো না। থামালো না তার হাত। ছেলেটার চিৎকার যেন সবার কান ভেদ করে মস্তিষ্কে আঘাত হানছে। ছেলেটা বারবার ছাড় চাইছে। মাফ চাইছে। পূর্ণ বুঝি থামে?
পূর্ণ ভয়ংকর ভাবে গর্জে উঠে বিশ্রী ভাষায় কয়েকটা গালি দিলো। কান থেকে র*ক্ত ঝরার মতো গালি। কে বলবে এত সুন্দর সুশ্রী সুদর্শন ছেলের মাধুর্যময় মুখ দিয়ে এমন বিশ্রী গালি ও বের হয়?
ছেলেটা পূর্ণ’র পা ধরে কেঁদে উঠলো,

— পূর্ণ ভাই, ভাই ছেড়ে দেন। কসম আর করব না। ভাই…..

— কু*ত্তার বাচ্চা কোথায় হাত দিয়েছিস তুই? তোর হাত ভেঙে ফেলব আমি।

বলেই সজোরে আঘাত করলো ছেলেটার হাতে। ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠলো ছেলেটা। হঠাৎ দৌড়ে এসে কেউ একজন পূর্ণ’র বাহু আঁকড়ে ধরে আঁকুতি করে বললো,

— ও..ওনাকে ছেড়ে দিন।

মাফা ঘুরিয়ে একদফা দেখলো পূর্ণ। মৃত্তিকা এসেছে। তার মৃত্ত। কত সুন্দর চেহারাটা কেমন হয়ে আছে। কেঁদেছে তার মৃত্ত। এই ছেলের জন্য। ভয় পেয়েছে তার মৃত্ত। পূর্ণ বাদে অন্য কাউকে তার মৃত্ত ভয় পাবে এটা কিভাবে মেনে নিবে সে? বিশ্রী এক গালি দিয়ে ছেলেটার পেটে আঘাত করে বললো,

— নেক্সট জানে মে’রে দিব। তোর বাপ’দের বলিস আমার নাম।

কথাটা বলেই মৃত্তিকা’র হাত চেপে ধরলো। হাটা দিলো সামনের দিকে। মৃত্তিকা পূর্ণ’র মুখে গালি শুনেই ওর কান ঝাঁ ঝাঁ করছে। এখনও যেন কানকে বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না যে এমন বিশ্রী গালি পূর্ণ ভাই দিতে পারে। পরক্ষণেই ওর মন বলে উঠলো, কেন পারে না? অবশ্যই পারে? যারা রাজনৈতি করে তারা তো গালি পারবেই? এক লাইন কথা বলায় তারা তিনটা গালি দিবে এটাই স্বাভাবিক তাই না? একা একাই কথাগুলো ভেবে কুল পাচ্ছে না মৃত্তিকা। ধ্যান ভাঙলো যখন দেখলো পূর্ণ ওর হাত ছেড়েছে। মাঝেমধ্যে অবাক হয় মৃত্তিকা পূর্ণ’র উপর। কখনো প্রয়োজনহীনা স্পর্শ করে নি সে মৃত্তিকা’কে। যখনই স্পর্শ করে তখনই মাফ চেয়ে নেয়। এই যে মৃত্তিকা’র অচেতন মন বলছে পূর্ণ ভাই এখন মাফ চাইবে ওর হাত ধরার জন্য। হলো ও তাই। শুনা গেলো তার পুরুষনালী কথা,

— আমি দুঃখীত মৃত্ত। ইচ্ছে করে হাত ধরি নি। আপনি কি রেগে আছেন?

……………

মৃত্তিকা’কে চুপ থাকতে দেখে কিছুটা ঘাবড়ালো পূর্ণ। অল্পতে ঘাবড়ে যাওয়া পূর্ণ’র চরিত্রে নেই অথচ আজ ঘাবড়েছে সে। আতঙ্ক ভরা কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,

— মৃত্ত আমার, কথা বলুন। অনেক ব্যাথা লেগেছে?

মৃত্তিকা কোন কথা বলছে না। হঠাৎ এমন কান্ড করলো সে চোখ ফাটা হলো পূর্ণ’র। মৃত্তিকা নিজের কোমড়ের দিক থেকে শাড়ীর আঁচল সরিয়ে দিলো। দৃশ্যমান হলো তার চিকন কোমড়। মোটা নখ গেঁধেছে সেখানে। শ্যামলা চামড়া’য় র*ক্ত জমাট বুঝা যাচ্ছে। মৃত্তিকা যে এহেন আচরণ করে বসবে তা বুঝতে পারে নি পূর্ণ। যা দেখার সে দেখেছে নিয়েছে। সেকেন্ডের ব্যবধানে সরিয়ে নিলো চোখ। নিজের একান্ত করে চাওড়া নারীর দেহে আঘাত। তা ও কি না পূর্ণ বাদে অন্য পুরুষের দেয়া আঘাত! এটা মানবে পূর্ণ? সেটা কি সম্ভব? অধর কামড়ে কিছু চিন্তা করে নিলো সে। অতঃপর শান্ত কন্ঠে আদর মিশালো। শুনা গেলো এই প্রথম পূর্ণ’র এত আদুরে গলা,

— আমার পূর্ণময়ী, নিজেকে আবৃত্ত করে নিন। আপনাকে দেয়া আঘাতের কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে তাকে দিয়েছি আমি। কথা বলুন আপনি। আমার জন্য এই কষ্ট পেলেন আপনি। মাফ করবেন না মৃত্ত?

— রাগ করে নেই আমি।

— অনেক কষ্ট হচ্ছে?

— না।

— নিজেকে শক্ত রাখা শিখুন মৃত্ত। আমি বাদে অন্য কারো জন্য ভয় আপনার মনে থাকুক সেটা পছন্দ না।

মৃত্তিকা চমকালো। ভরকালো। একটু আগেই কে আদর লাগিয়ে কথা বললো? নরম গলায় কে তার হালহকিকত জিজ্ঞেস করলো? এখন ধমকাচ্ছে। কড়া চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। মৃত্তিকা ভেবে কুল পায় না। দিশা হারায় বারবার। এই সিনিয়র ভাই এমন কেন? এই বরফ তো এই পানি। অদ্ভুত মানুষ।
_________________

এক ক্লান্ত বিকেলের শারদী’য় বাতাস বয়ে চলছে। পরিশ্রান্ত সকল মানুষ এক টুকরো সুখ খুঁজতে হাজির হয়েছে ব্যাস্ত শহরের প্রাণকেন্দ্রে। অবশ্য এটা ছত্র-ছাত্রীদের জন্য বলা বাহুল্য। ক্লাস টাইম শেষ হতেই বন্ধু আর প্রিয় জনের সাথে আড্ডায় মেতে উঠে তারা। কেউ আবার ব্যাগ কাঁধে ছুটে লাইব্রেরিতে। হিমু আবার এই দলের লোক৷ সে ছুটলো লাইব্রেরি’র দিকে। নোট সব আজই টুকেছে সে এখন রিভাইস দিবে। পকেট থেকে রুমালটা বের করে ক্লান্তিতে ভরা কপালটা মুছে নিলো৷ বুকে বই হাতে কলম তুলে কোণায় একটা সিটে গিয়ে মুখ গুজলো বইতে। সময় গড়ালো। ঘন্টা পার হলো। হিমু খেয়াল করলো কেউ ওর দিকে গভীর দৃষ্টি’তে তাকিয়ে। এতক্ষণ খেয়াল করে নি সে। হঠাৎ চোখ তুলে তাকাতেই দেখলো রুপা। হিমু’র রুপা? মনে মনেই হাসল হিমু। চোখে চোখ পড়তেই হিমু সালাম দিলো। রুপালী পায়ের উপর পা তুলে আঙুলের ইশারায় কাছে ডাকতেই হিমু উঠে গেলো। ঢোক গিললো। ওর হাজার জল্পনা কল্পনা যাই থাকুক না কেন শত কথার এক কথা হলো সিনিয়র আপু রুপা। না জানি এখন কি করে। তার মধ্যে শুনা গিয়েছে রুপা ও রাজনীতি’তে জড়িত। সবাই বলে এমন মেয়ে ভালো না কিন্তু হিমু’র মন মানে না। মানুষ পাত্র ভেদে খারাপ ভালো হয় না। যে খারাপ সে সব পেশাতেই খারাপ। যে ভালো সে সব জায়গাতেই ভালো।
রুপার সামনে দাঁড়াতেই রুপা বিরক্ত হওয়া কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,

— কি এমন হাবার মতো তাকিয়ে আছো কেন?

থতমত খেলো হিমু। কোনমতে বললো,

— সরি।

— কি সরি?

— সরি আ..আপু।

— হু গুড। নাম?

— হিমু।

হঠাৎ হেসে উঠলো রুপা। গমগমে গলায় বললো,

— আমার নাম জানো?

— জ্বি। রুপা।

— ভুল। রুপালী হবে। নেক্সট থেকে জানি মনে থাকে। অনেক পড়েছে এখন আউট হও। আর হ্যাঁ এই সিট আমার। আর জানি না দেখি। যাও।

প্রথম দিকে ভালোভাবে বললেও পরেরগুলো বললো ধমকের সুরে। হিমু’র চিকন শরীরে’র ভিতরে ছোট্ট বুকটা তখন ধুকপুক করছিলো। কোনমতে বইখাতা হাতে তুলে সালাম জানিয়ে বেরিয়ে গেল। এই সিনিয়র আপুর সাথে কিভাবে কৃষ্ণলীলা চালাবে সে? শুরুতেই তো পারলে ওকে থাপ্পড়িয়ে দিতো৷ ইশ! কি বেইজ্জতি টা ই না হলো।
.
হাত খোঁপা করা কোঁকড়ানো চুলগুলো উড়ে যাচ্ছে অনবরত। খোঁপা’টা ঢোলা হয়ে গিয়েছে। পূর্ণ’র সামনে চুল খুলে ঠিকও করতে পারছে না। কি একটা অবস্থা। মানলো মৃত্তিকা যে সে শ্যামা। ততটা সুন্দর না৷ তাই বলে কি পাগল হয়ে থাকবে এত সুন্দর পূর্ণ ভাই’য়ের সামনে? একটু গুছিয়ে থাকা তো মন্দ না। কিন্তু এখন নিজেকে কিভাবে গুছাবে সে? পূর্ণ ভাই তাকে ওভাবেই নিয়ে এসেছে। আপাতত তারা একটা বাগানের মতো জায়গায় বসে আছে। আশে পাশে মানুষ আছে। নির্জন জায়গায় পূর্ণ ওকে কখনো নিয়ে যায় না৷

পূর্ণ মৃত্তিকার হাবভাব খেয়াল করলো। নিজ থেকেই বললো,

— চুলগুলো ভালো ভাবে বেঁধে নিন মৃত্ত। এখন তেমন কিছু বলছি না। বিয়েটা হোক। তখন অধিকার থাকবে আমার। হিজাব পড়িয়ে রাখব।

অনুমতি পেয়ে চুল বাঁধতে গিয়ে পূর্ণ’র অধিকার আর বিয়ে’র কথা শুনে হাত ফস্কে চুল ছড়িয়ে গেলো। শরৎ এর আগমনী বাতাসে দুলিয়ে নিলো তার চুলগুলো। কে বলে সোজা সিল্কি চুলেই পুরুষ গলে৷ পূর্ণ তো তার পূর্ণময়ীর এই কোঁকড়া অগোছালো অবাধ্য চুলের প্রেমে পড়ে। একবার না বরং বারবার পড়ে। এই তো এখনই মন চাইছে তার মৃত্ত’র চুলে নাক ডুবাতে। নিশ্চিত কোন এক আবেশিত ঘ্রাণ আছে তাতে। মৃত্তিকা চুল বেঁধে ই দেখলো পূর্ণ তার দিকেই ঘায়েল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মৃদু শব্দে মৃত্তিকা জিজ্ঞেস করলো,

— কিছু বলবেন?

— আমার পাপ করতে মন চাইছে মৃত্ত। একটু পাপ করি? পাপের বিনাশের শাস্তিটা কি খুব কঠিন হবে?

পূর্ণ’র এহেন আবদারে শরীর শিউরে উঠলো মৃত্তিকা’র। কিসের পাপ করতে চায় পূর্ণ? তবে কি পূর্ণ বাকিদের মতো? মৃত্তিকা’র নারী দেহেই কি তার সুখ নিহিত? মৃত্তিকা’র চোখ জুড়ে তখন ভয়। তাহলে কি সব রাজনীতি’র সাথে জড়িত পুরুষই নারী লোভী? নিজের আসল রুপ কি আজ পূর্ণ দেখিয়ে দিবে?

#চলবে….