শান্তি সমাবেশ পর্ব-০৩

0
437

#শান্তি_সমাবেশ
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ৩

ভয়ে এক কোণা’য় গুটিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মৃত্তিকা। ওর আত্মাটা ভয়ে যে যেকোনো সময় বেরিয়ে যেতে পারে সেটা খুবই ভালোই উপলব্ধি করতে পারলো সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সুঠাম দেহের মানব। অথচ সে আছে পুরো শান্ত মেজাজে। উপভোগ করছে সে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রমণীর এরূপ ভীতু রুপ দেখতে। নিজের উপর মাঝেমধ্য ভীষণ অবাক হয় পূর্ণ। সে এমন ছিলো না। ভীতু, কাপুরষ, অল্প কথায় কান্না করা মানুষ তার ভীষণ অপছন্দের। মানুষ হবে সোচ্চার। উদ্যমী। ভয় পেয়ে দমে থাকা মানুষ তার রুচির বাইরে। অথচ পরিস্থিতি আজ ভীষণ উল্টো। অবশ্য এভাবে বলাটা ভুল। শুধুমাত্র তার মৃত্ত’র ক্ষেত্রে পরিস্থিতিটা ভিন্ন। এমন ভয় ভয় তার পছন্দের। ভীষণ পছন্দের এই নারীর শ্যামারঙা মূর্তি যেটা বর্তমানে গুটিয়ে আছে বেঞ্চের কোণায়। ভয় পেয়েছে সে। কাকে? এই পূর্ণ’কে। ঠোঁটের কিণায় লেগে থাকা অদৃশ্য হাসিটা মুহূর্তেই উবিয়ে দিলো পূর্ণ। এটা সে কাউকে দেখাতে চায় না। বিশেষ করে মৃত্তিকা’কে।

পূর্ণ হাতে থাকা হকিটা সাইডে ফেললো। সেটা পড়েই শব্দ করলো ভীষণ ভাবে। ভীতু মৃত্তিকা চিৎকার করে উঠতেই পূর্ণ পা বাড়ালো ওর দিকে। পূর্ণ’কে আসতে দেখেই জানে থাকা পানিটুকু ও যেন শুকিয়ে কাঠ হলো মৃত্তিকা’র। চৌচির হলো তার হাহাকার করা বুক। এ কার চক্করে পরলো মৃত্তিকা? কোন জালে আটকা পড়লো সে? এত জঞ্জাল থেকে নিজেকে কিভাবে বের করে আনবে মৃত্তিকা? সবেই তো তার অন্তরের অন্তস্তলে কিছু ভালোবাসা’র বীজ বুনেছিলো সে। সেগুলো কি তাহলে অঙ্কুরেই বিনষ্ট হবে?

মৃত্তিকা’কে এত ভাবনার মাঝে ডুবে থাকতে দেখে গা ঝাঁকালো পূর্ণ। বলিষ্ঠ হাতের লম্বা লম্বা আঙুলগুলো একেকটার ভাজে আটকালো। পরপরই মৃদু মৃদু শব্দ তুলে সেগুলো ফুটালো। ও জানে এটা বাজে অভ্যাস তবুও ছাড়তে পারে না। ঘাড় এদিক ওদিক নাড়িয়ে বিরসতার সুর তুলে বললো,

— এভাবে ভয় পাওয়ার মানে কি মৃত্ত? আমি কি আপনাকে কিছু করেছি? মেরে’ছি নাকি বকেছি?

মৃত্তিকা যেন হতভম্ব হয়ে গেলো। আজ শ্যামলা বলে হয়তো এই চেহারাতে তার কান্নার দাগ দেখা যাচ্ছে না। ফর্সা হলে হয়তো পূর্ণ বুঝতে পারতো যখন কান্নার ফলে তার নাক লাল হতো। গাল ফুলতো। ওর তো হিচকি বাদে কিছুই শুনা যাচ্ছে না তাই হয়তো পূর্ণ বুঝতে পারছে না।
গম্ভীর স্বরে আদেশ শুনা গেলো,

— উঠুন ওখান থেকে। নোংরা জায়গা সেটা।

মৃত্তিকা শুনলো। উঠতে চাইলো। পারলো না। আবারও চেষ্টা করলো। পূর্ণ তো উল্টো ঘুরে আছে নাহলে বুঝতো যে মৃত্তিকা চেষ্টা করছে উঠার কিন্তু পারছে না। মৃত্তিকা’র সাড়া শব্দ না পেয়ে এবার ধমকে উঠলো পূর্ণ,

— উঠতে বলেছি না?

কথাটা বলেই ঘুরে তাকাতেই কিছুটা আন্দাজ করতে পারলো। ভয়ংকর ভাবে বিক্ষোভে ভরা মেজাজ শান্ত হলো কিছুটা। এই নারী হবে মৃত্যু’র কারণ। ওকে ধ্বংস করে শান্ত হবে এই বিধ্বংসী নারী। শ্যামরঙা চেহারাটার কি হাল করেছে সে? কেঁদে লেপ্টে ফেলেছে সারাটা মুখ। আজ পূর্ণ’র হঠাৎ মনে হচ্ছে এমনকি বিশ্বাস হচ্ছে কান্না সুন্দর। এতটাই সুন্দর! মন চাইছে তার মৃত্ত কাঁদুক। আরো কাঁদুক। ওর এই কান্নার ফলে ফুটন্ত চেহারা দেখুক পূর্ণ। এই সৌন্দর্য যে শুধুমাত্র পূর্ণ’র হক। ওর একার হক। জন্মজন্মান্তরের হক। এগিয়ে এসে হাত বাড়ালো পূর্ণ কিন্তু তা ধরলো না মৃত্তিকা। বেঞ্জে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ালো। পা মোচকেছে হয়তো। মচকাবেই তো যেই ভয়টা পেয়েছে আজ বেঁচে যে আছে এই ঢের।

সকালে~

ভার্সিটিতে এসেই মৃত্তিকা জানতে পারে আজ কোন ক্লাস হবে না। ক্যাম্পাস ভরা। মৃত্তিকা’কে নিজের ক্লাসমেট দের কাছে চলে এলো। তারাও জানালো কিছু জানে না এই বিষয়ে। অবশেষে পাতলা চিকন গড়নের একজন ছেলে দৌড়ে এসে ওদের সামনে হাঁপাতে লাগলো। এটা হলো ওদের ক্লাসের ছেলে সিআর। ছেলেটা প্রচন্ড মেধাবী কিন্তু শারীরিক গড়নের কারণে হেনস্তা হয় সবার কাছে। ছেলেটাকে দেখতেই মায়া হলো মৃত্তিকা’র। দৌড়ে আসার দরুন তার পরণের ঢোলা শার্টা ঘামে লেপ্টে আছে চিকন দেহে। এতসবের মধ্যে ওকে আরো উত্ত্যক্ত করে ওর নামের জন্য। “হিমু” অথচ হুমায়ুন আহমেদ এর এই হিমু চরিত্রের সাথে কোন মিলই নেই এই ছেলেটার। এ নিয়েই যতসব হাসি-হাসি সবার। মৃত্তিকা পানি সাধতেই ছেলেটা সোজা হয়ে দাড়ালো। পরণের হাই পাওয়ারের চশমাটা ঢেলে ঠিক করে ভাব নেয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু লাভ হলো না। ওর এই ভাব নেয়া দেখেই সবাই আরেকদফা হাসলো। উজ্জ্বল নামের ছেলেটা হিমুর কাঁধে হাত রেখে মশকরা’র স্বরে বলে উঠলো,

— কিরে হিমু তোর রুপা কই?

হিমু মুখটা কালো করে ছোট্ট করে বললো,

— আসে নি আজ।

সবাই হাসলো আরেকদফা। হিমু পছন্দ করে একজনকে। তাও কি না সিনিয়র। মানা যায় এসব? সবচেয়ে বড় সড় আশ্চর্য হলো ঐ সিনিয়র আপুর নাম রুপালী যাকে সংক্ষিপ্ত করে ডাকে তার ফ্রেন্ডটা রুপা। হিমুর মনটা কেন জানি বারবার বলে এটাই তার রুপা। হিমুর রুপা। বয়স তো একটা সংখ্যা তাই না। তাহলে হিমু কেন ভয় পাবে? ভালো সে পড়াশোনায়। একদিন ভালো চাকরি করবে। সবাই যেখানে ওকে নিয়ে এত মজা করে সেখানে রুপা ওর এই চিকন হাত ধরে হাটবে। অনেক বড় হবে তাদের পথ চলা। কথা গুলো ভাবতেই মনে মনে হাসলো হিমু। হিসেব কষেছে সে তার ভবিষ্যতের। তার রুপা’র সাথে। ওর এতশত চিন্তার মাঝেই উজ্জ্বল ছেলেটা বলে উঠলো,

— কিরে দুই ছটাক মাংসে গড়া সিআর আজকে ক্লাস নেই আগে জানাবি না?

হিমু হঠাৎ কিছু মনে করার মতো চমকালো যেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলতে এসে ভুলে গিয়েছিলো। সহাস্যে বুলি ছড়ালো সে,

— ক্লাস আজ সব ডিপার্টমেন্টেই অফ। আর এই মৃত্তিকা, তুই সোজা বাসায় যা এখন। ভার্সিটিতে থাকা নিষিদ্ধ আপাতত তোর জন্য। আর আশে পাশে ও থাকা ও নিষেধ।

মৃত্তিকা সহ বাকি সবাই ওর দিকে তাকালো। সবার চোখে মুখে অসংখ্য প্রশ্ন সেটা বুঝেই হিমু কিছুটা আতঙ্কের স্বরে বললো,

— ঐদিকে হাতাহাতি লেগেছে। মানে মারামারি লেগেছে। দুই দল একসাথে। আমাদের ভার্সিটির সাথে অন্যটার। চারজনের মাথা ফেটেছে। একজনের অবস্থা অনেক খারাপ। সে আমাদের ভার্সিটির। তাই আবার লাগালাগি’র সম্ভবণা আছে। এবার বড় কিছু হতে পারে তাই সব বন্ধ। আর এই মৃত্তিকা বইন তুই বাড়ি যা তো। পূ…..

বলতে গিয়ে জিহবায় কামড় কাটলো হিমু। নাম বলা যাবে না। এই চিকন শরীরে যদি একটা হকির বাড়ি লাগে তাহলে মেরুদণ্ড আর সোজা হবে না। ওরা যেহেতু প্রথম বর্ষের তাই কেউ ই রাজনৈতিক কাজে জড়িত না। কয়েকজন আবার হাতা গুটিয়ে ঐদিকেই যেতে লাগলো। প্রথম প্রথম থেকেই এসবে চামচামি করলেই পরে বড় নেতা হওয়া যাবে। ওদের যেতে দেখেই হিমু টিপকুনি কেটে বললো,

— দোস্ত ফ্যাকাল্টি বাদে যারে পাবি তারেই পিটাবি তাহলেই নেতা হতে পারবি।

উজ্জ্বল গা কাঁপিয়ে হাসলো। হিমুর উপর একহাতের ভর দিয়ে বললো,

— আগে চারবছর প্যাঁদানী খেতে হবে তারপর প্যাঁদাইতে পারবে।

ওর কথায় হাসির রোল পরলো। কেউ কেউ ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করে ফেললো। কেউ বাড়ী যাওয়ার জন্য ফিরে যাচ্ছে। মৃত্তিকা তখনও দাঁড়িয়ে রইলো। সবাই যেতেই হিমুর সামনে এসে দাঁড়ালো মৃত্তিকা। কঁপালে চিন্তার ভাঁচ ফেলে বললো,

— এই হিমু সত্যি করে বল তোকে কে বলেছে এসব?

— কে বলবে? শুনলাম।

— রুপালি আপুর সাথে এফবিতে এড আছে আমার। তোর নামে গুণগান গাইব তার কাছে।

হিমুর মনের বাগানে পুষ্প ফুটলো। দাঁড়িহীন গালে হাত বুলালো নিজেই। মনে মনে ভাবলো অনেককিছু। খুশি যে হয়েছে তা তার চেহারা দেখেই বুঝা যাচ্ছে। মৃত্তিকা সুযোগের সৎ ব্যাবহার করলো। হিমু ও মনে মনে রুপার নামের লাড্ডু খেলো একা একা। একনাগাড়ে বলে উঠলো,

— পূর্ণ ভাই বলেছে। তিনি ই তো আমাকে জানালো নাহলে এত পেটের খবর কি আমি জানি? এবার বল কখন জানাবি রুপাকে?

— আগে বল উনি ও ওখানে?

— হ রে বইন। নেতা মানুষ তো। সবার আগে থাকে। দেখলাম হাতে হকি স্টিল নিয়ে চেয়ারে বসা। ভাই যে স্টাইল ওনার। মেয়ে হলে আমি প্রোপোস৷ করতাম।

মৃত্তিকা তখন তত কিছু ভাবলো না। তখনই শুনা গেলো গেঙ্জাম লেগেছে। সবাই দৌড়ে ডুকে যাচ্ছে ডিপার্টমেন্টের ভেতর। হিমু ও ছুটলো। ডাকলেও নড়লো না মৃত্তিকা। ও ছুটলো উল্টো পথে। পূর্ণ ভাইয়ের যদি কিছু হয়? বোকা নারী বুঝলো না তখন পরিস্থিতি। দেখলো না আশেপাশের অবস্থা। ছুটলো উন্মাদ হয়ে। দিকশূন্য দুর্বোধ্যতাতেই তার পথ চলা। কখন যে রাস্তায় এলো নিজেও বুঝে নি। পরিস্থিতি তখন অনেক খারাপ। দেখেই বুঝা যাচ্ছে এখানে কেউ কাউকে দেখছে না। আঘাত পাল্টাঘাত চলছে। মৃত্তিকা যেন হুসে ফিরলো। কোথায় এলো এটা? পূর্ণ’কেই বা কোথায় পাবে? এখন তো মনে হচ্ছে নিজেই বাঁচবে না। মাঝ পথে যখন ও হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো তখনই কেউ একজন ওকে পেছন থেকে ঝাপ্টে নিলো। সামনে এসে দাঁড়িয়ে গেলো আরো দুইজন ছেলে। একপ্রকার শূন্যো তুলে ব্যারিকেট এর ভেতর নিয়ে এলো ওকে। মৃত্তিকা’র তখন ভয়ে আত্মায় কাঁপন ধরেছিলো। সেই কাঁপন বেড়ছিলো যখন দেখেছিলো পেছন থেকে ওকে শূন্যো তুলা মানবটা আর কেউ নয় স্বয়ং পূর্ণ ভাই। পূর্ণ’র কপাল বেয়ে ঝরছিলো র*ক্তের স্রোত। বিচলিত হলো মৃত্তিকা। নিজের হাত দিয়ে চেপে ধরলো পূর্ণ’র কপাল। রঞ্জিত হলো ওর শ্যামলা হাত কিন্তু থামলো না র*ক্ত ঝরা। পূর্ণ তখন ও ঠান্ডা মেজাজে দাঁড়িয়ে ছিলো যখনই মৃত্তিকা মুখ খুলে কিছু বলবে তখনই নজর যায় পূর্ণ’র চোখে। লাল হয়ে ছিলো সেই চোখ। মনে হচ্ছিলো র*ক্ত ছিটকে বেরিয়ে আসবে যেকোন সময়। ভয়ে ভয়ে হাত নামিয়ে নিলো মৃত্তিকা কিন্তু তার আগেই শক্ত হাতের চাপ পরলো ওর দূর্বল হাতে। পেছন থেকেই একহাতে হকি আর একহাতে মৃত্তিকা’কে ধরে টেনে নিয়ে একটা ক্লাসে ডুকে পড়লো পূর্ণ। তখনই হোচট খেয়েছে কয়েকটা। পূর্ণ’র বড় বড় পায়ের ধাপ মিলাতে পারে নাকি মৃত্তিকা? ক্লাসে ডুকেই কিছুটা ছুড়ে মারে ওকে পূর্ণ। ছিটকে গিয়ে পরেলো মৃত্তিকা বেঞ্চের কোণায়। গর্জন করেছিলো পূর্ণ। মৃত্তিকা’র দিকে ভয়ংকর চাহনি দিয়ে বলেছিলো,

— আপনার কলিজা’র পাটা অনেক বড় হয়ে গিয়েছে মৃত্ত। এই পূর্ণ’র হাত অনেক বড়। আপনার কলিজা খাঁমচে ছিড়ার সাধ্য এই পূর্ণ’র আছে।

সেই একটা কথাই মৃত্তিকা’র জান ঘায়েল করার জন্য যথেষ্ট ছিলো। সেই থেকেই মেয়েটা ভয়ে আছে। মুখ ফুটে কিছু বলতে পারে নি আর। আসলে কি বলবে তা ই বুঝে উঠতে পারে নি ও।
.
বর্তমানে~

মৃত্তিকা উঠে দাঁড়িয়ে আছে। পূর্ণ শান্ত স্বরে শুধালো,

— কলেজ থেকে রাজনীতি করি আমি। আমার দেহে আঘাত খুব কমই লেগেছে মৃত্ত। আপনার জন্য আজ কেউ সাহস করলো আমাকে আঘাত করার। আমি না থাকলে এই আঘাতটা আপনার লাগলো। আমি খবর পাঠিয়েছিলাম তবুও অবাধ্য হলেন। বড্ড আবাধ্য আপনি মৃত্ত। আমার একদম অপছন্দ এই গুন। আগেই সতর্ক করেছিলাম কিন্তু কথা শুনলেন আপনি? উল্টো হাজির হলেন সেখানে?

মৃত্তিকা নিজের বোকামিতে নিজেকে গালি দিলো। নতুন নতুন প্রেম তার। আবেগে সামলে উঠতে পারে নি। সবচেয়ে বড় কথা হলো সামনের জন হলো পূর্ণ ভাই যে কিনা হকি হাতে ঘুরে। আর মৃত্তিকা কিনা তাকে বাঁচাতে এই শরীর নিয়ে গিয়েছিলো? ভাবা যায়? এত কেন বোঁকা সে? মৃত্তিকা’কে চুপ থাকতে দেখে পূর্ণ এগিয়ে এলো ওর কাছে। অনেকটা কাছে। কানের সামনে মুখ নিলো। কান ছুঁই ছুঁই পূর্ণ’র ঠোঁট। মৃত্তিকা’র শরীর দুলে উঠলো। পূর্ণ রাশভারি গলায় বললো,

— আমার পূর্ণময়ী,আগে নিজেকে ঠিক করুন তারপর এই পূর্ণ’কে বাঁচাতে এগিয়ে যাবেন।

বলেই সরে গেল অথচ জমে গেলো মৃত্তিকা। পূর্ণ’র সাথে কোনমতে বের হলো সেখান থেকে। মারামারি থেমেছে। পূর্ণ আজ প্রথম মৃত্তিকা’কে ওর বাড়িতে নামিয়ে দিলো নিজের গাড়িতে। মাঝ রাস্তায় ফার্মেসি থেকে কাঁপলে ব্যান্ডেজ লাগিয়েছে মৃত্তিকা’র ছোট্ট আবদারে। মেয়েটা যে এত ভয় পায় আল্লাহ মালুম সংসার কিভাবে করবে ওর সাথে? মৃত্তিকা’র বাসার সামনে আসতেই পূর্ণ গম্ভীর কণ্ঠে বললো,

— আল্লাহ হাফেজ।

মৃত্তিকা’র ধ্যান ভাঙলো। গাড়ি থেকে নেমে সালাম জানিয়ে সোজা বাড়িতে ডুকে পড়লো। পেছনে রয়ে গেল পূর্ণ। তুষের আগুন জ্বলে উঠলো তার হৃদয়ে। থেমে থেমে জ্বলতেই থাকে। এই নারীর শ্যামারঙা দেহ। ভীতু মন। শান্ত রুপ। সবই তাকে মহিত করে। কাছে টানে। চলে গেল তার পূর্ণময়ী অথচ রেখে গেলো অনলে পুড়া এক প্রেমিক’কে।

#চলবে…..