শুক্লপক্ষের পরিশেষে পর্ব-০৭

0
206

#শুক্লপক্ষের_পরিশেষে
#লেখনীতে_নবনীতা_শেখ
|৭|
[কঠোরভাবে প্রাপ্তমনস্কদের জন্য]

মানুষ অভ্যেসের দাস। কথাটা লোকসমাজে ভীষণ প্রচলিত। অভ্যেসের বদৌলতে মানুষ চাইতে চাইতে সব পেয়ে যাওয়া সত্ত্বেও চাওয়ার শেষ দেখতে পায় না। অভ্যেসের আরও একটি ভয়ংকর উদাহরণ আছে। উদাহরণটি স্বয়ং প্রিয়শ্রী মর্তুজা।

সে দিনকে দিন মানসিক অবসন্নতায় মরে যাচ্ছে। কেমন যেন গুমরে থাকে। শ্রেয়ানের অনুপস্থিতে সবটা বিষ লাগে। আবার এই যখন শ্রেয়ান কল দিয়ে বলে ওঠে,
-“কী করছ, সোনা? জানো না, কত মিস করছি!”

প্রিয় তখন গলে জল। আজও বরাবরের মতো সপ্তাহ খানেকের যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা ছিল। প্রিয় এই সপ্তাহটা আয়নায় নিজেকে দেখতে ভুলে গেছে, নিজের প্রতি মেয়েটার উদাসীনতা বাড়ছে বই কমছে না। সে আগের মতো বিলাসিনী হয়ে ঘোরে না। কেমন একটা চুপসে থাকে সর্বদা।
আজ আর সে কাঁদেনি। জড়োসড়ো হয়ে দেয়ালে মাথা ঠেকে বিছানায় বসে আছে। মাঝে মাঝে পুরোনো কথা ভাবছে। আবার কখনও ভাবছে, এখনই শ্রেয়ান কল দেবে। কল দিয়ে স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় বলবে,
-“প্রিয়শ্রী, কেমন আছ? শরীর ঠিক আছে?”

তারপর প্রিয় গাল ফুলিয়ে বলবে,
-“উহ! আসছে মহারাজ অধম প্রজার খোঁজ নিতে। দরকার নেই। দূর হন।”

আদতেই কি দরকার নেই? প্রিয়র কতটা প্রয়োজন তাকে, তার একাংশ যদি সে বুঝত, তবে শ্বাস ফেলতে গেলেও কেবল প্রিয়কেই ভাবত। অবুঝ ছেলে, বুঝবে না। দিনের একাংশ ভার্সিটি, আর রাতের বাকি অংশ প্রিয়র এসব আজগুবি কল্পনা করেই কাটে।

আজও স্বভাববশত যখন ভাবছিল, তখনই শ্রেয়ানের কল এলো। প্রিয় শ্রেয়ানকে মুখস্ত করে ফেলেছে। সে কখন, কী বলতে পারে—সব প্রিয়র নখদর্পনে। কেবল মাঝে মধ্যে শ্রেয়ান লাগামছাড়া হয়ে যায়। আর তখন প্রিয়র এই দুনিয়া অসহ্য হয়ে ওঠে, এই দুনিয়ার আলো সহ্য হয় না, বাতাস সহ্য হয় না, মানুষ সহ্য হয় না। এক পর্যায়ে গিয়ে মনের সুপ্ত কোণে ইচ্ছা জাগে, এই দুনিয়ার অক্সিজেন নষ্ট করা উচিত হচ্ছে না।

প্রিয় শ্রেয়ানের এমন হুটহাট দূরত্ব বাড়িয়ে, আচমকা আবার কাছে টেনে নেওয়াতেও অভ্যস্ত। তবুও সে উত্তেজিত হলো। আলগোছে ফোন নিয়ে কল রিসিভ করল। ওপাশে শ্রেয়ান গভীর শ্বাস ফেলে বলল,

-“আই মিসড ইউ, সোনা.. খুব বেশিই! দেখা করব। কাল ফ্রি আছ?”

না, কাল ফ্রি নেই। কাল ফুপির ছেলের আকিকার অনুষ্ঠান, সবাইকে যেতে হবে। প্রিয় তবুও না ভেবে বলে উঠল,
-“হ্যাঁ, কখন দেখা করব?”

-“কাল ভার্সিটিতে যাওয়া লাগবে না৷ সকালের দিকে রোডের মাথায় দাঁড়িয়ো। পিক করে নেব।”

প্রিয় ইতবাচকতা প্রকাশ করল তাতে। শ্রেয়ান কিছুটা চুপ থেকে বলল,
-“কোনো অভিযোগ জমেছে একসপ্তাহে?”

প্রিয়র অকপটে স্বীকারোক্তি,
-“হুঁ, জমেছে।”
-“বলতে থাকো।”
-“তুমি কি আমায় আর পছন্দ করো না?”
-“এমন ভাবার কারণ?”
-“আগের মতো ইমপর্টেন্স পাই না তোমার কাছে।”

শ্রেয়ান গম্ভীর গলায় হেসে উঠল। কী বিকট শব্দ! প্রিয়র গা কেঁপে উঠল। শ্রেয়ান হাসতে হাসতে সোফায় গা এলিয়ে দিলো। সেন্টার টেবিল থেকে গাড়ির কী-রিং উঠিয়ে হাতের তর্জনী দ্বারা ঘোরাতে ঘোরাতে বলল,
-“তুমি কি ভাবছ, আমি পালটে যাচ্ছি?”

প্রিয় গাল ফুলিয়ে বলল,
-“যাচ্ছ না?”
-“ভয় হচ্ছে?”
-“অস্বাভাবিক?”
-“লিসেন, প্রিয়শ্রী! ত্যাড়া কথা আমার সামনে বলতে আসবে না, কারণ আমি মানুষটা তোমার কল্পনার চেয়েও ত্যাড়া। আর রইলো ইম্পর্টেন্স দেওয়ার, সেটা আমি শুরু থেকেই দিচ্ছি। কখনও কম, কখনও বেশি। এমন না যে, তোমাকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে আমি রোজ টিপিকাল রোডসাইড রোমিও সেজে তোমায় এন্টারটেইন করব।”

শ্রেয়ান থামল, তর্জনীতে ঘুরতে থাকা কী-রিংটাও হাতের সাথে সাথে থেমে গেছে। সে চোখ দুটো অকস্মাৎ খুলে সিলিংয়ে নিবদ্ধ করে ফেলে আবারও বলতে লাগল,
-“তুমি আমার, তোমাকে হারানোর ভয় নেই। আমি তোমাকে এতটা ভালোবেসেছি যে, আমার থেকে দু’কদম দূরে যেতে গেলেও তোমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসবে। সেই ভালোবাসার জোরে আমার গোটা ইহজনম তুমি আমার। ব্যাপারটা সুন্দর না?”

প্রিয়র বলতে ইচ্ছে করল, “যেই ভালোবাসা ফুলের মালা হয়ে গলায় জড়িয়ে ফাঁসির দড়ি সেজে চেপে ধরে, সেই ভালোবাসা আমি কখনই চাইনি, বিশ্বাস করো।”
কিন্তু জড়ত্ব আর অজানা শঙ্কায় প্রিয় তা বলতে পারল না।

চুপ হয়ে শ্রেয়ানের কথা শুনতে লাগল। সবটা বলা শেষে প্রিয় বলল,
-“আর বদলে যাওয়া?”
-“মানুষ প্রতিনিয়ত বদলায়। এ বিষয়ে অভিযোগ রেখো না। নিজেকে দেখো, তুমি কি আগে এমন ছিলে?”

প্রিয় ফুঁপিয়ে উঠল,
-“এই আমিকে ভালো লাগে না তোমার, শ্রেয়ান? কীভাবে ভালো লাগবে, বলো। আমি তাই করব।”
-“হুশশশ! তোমাকে আমার এভাবেই চাই। এই যে, যেমনটা আছ!”
-“কেমন আছি?”
-“বুঝতে পারছ না?”
-“তুমি বোঝাবে, শ্রেয়ান?”

শিকারীর ন্যায় জ্বলজ্বলে চোখদুটো আলগোছে এঁকে নিল প্রিয়র সবচেয়ে আবেদনময়ী সেই রূপটি। মাসখানেক আগে শেষ দেখায় প্রিয়র কান্নামাখা মুখে বলে ওঠা, “আমার দুনিয়া তুমি, আমার সব তুমি। যেই মুহূর্তে তুমি আমার পাশে থাকবে না শ্রেয়ান, আমি সত্যি আর বাঁচব না। শ্রেয়ান, ভালোবাসি। যেভাবে বলবে, সেভাবে হয়েই থাকব। তবুও আমায় ছেড়ো না। আমি মরেই যাব..”

সেই অনুরোধগুলো শ্রেয়ানের কত যে ভালো লেগেছিল! প্রায়শই সে রূপটা ভেবে ওঠে সে। খুব ইচ্ছে করে তখন মেয়েটাকে বুকে পিষে ফেলতে। ইচ্ছে করে, মেয়েটার সর্বাঙ্গে গভীর থেকে গভীরভাবে ক্ষত করে ফেলতে। কী ভয়ানক ইচ্ছে! ভাবতে ভাবতেই শরীর গরম হয়ে যেতে লাগল শ্রেয়ানের। পরনের কালো শার্টটির বুকের কাছের দুটো বোতাম অন্যহাত দিয়ে ধীরক্রমে খুলে ফেলে। অনাবৃত হয় শক্ত পুরুষটার জিম করা টানটান বুকটা।
ঠিক সেই মুহূর্তে শ্রেয়ানের নিশ্চুপতায় প্রিয় বলে উঠল,
-“তোমাকে ছাড়া জীবনটা মৃত মৃত লাগে। আই কান্ট স্টপ লাভিং ইউ, আই কান্ট লিভ মাই লাইফ উইদাউট ইউ..”

শ্রেয়ান সূক্ষ্মভাবে হেসে উঠল,
-“আর ঠিক এভাবেই আমার তোমাকে চাই।”

প্রিয় পিটপিট করে রুমে জ্বলতে থাকা জিরো পাওয়ারের লাইটের আলো অনুসরণ করে বিপরীত দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকে। এরই মধ্যে শ্রেয়ান উঠে দাঁড়িয়েছে। ঘড়ির ছোটো কাটাটা বারোটার ঘর ছুঁতেই পেন্ডুলামটি মৃদু শব্দে তৃতীয় প্রহরের জানান দিলো।
শ্রেয়ান একটু আগেই এই শহরটিতে, তার এই অ্যাপার্টমেন্টে ফিরেছে। অফিস থেকে কিছুদিনের ছুটি নিয়ে এসেছে, এই কিছুদিন সে প্রিয়র সাথে কাটাবে। মেয়েটাকে অনেকদিন কাছ থেকে দেখা হয় না, তৃষ্ণা পাচ্ছে প্রচণ্ড। শ্রেয়ান প্রিয়র সাথে কথা বলতে বলতে লিফটে উঠল, তখন প্রিয় জানতে চাইল,
-“আওয়াজ এমন শোনাচ্ছে? কিচেনে তুমি? নাকি ওয়াশরুমে?”

শ্রেয়ান নিঃশব্দে হাসল। কিছু বলল না। প্রিয় আবার বলতে লাগল,
-“ভাল্লাগে না, শ্রেয়ান। কেমন যেন লাগে।”

কেমন যে লাগে, তা প্রিয়র জানা নেই। বিষয়টা হতে অবগত শ্রেয়ান নিজেও। হালকা স্বরে শুধাল,
-“কেমন লাগে?”
-“কেমন অদ্ভুত।”
-“মন কী চায়?”
-“বুঝতে পারছি না।”
-“বোঝার চেষ্টা করো।”
-“করছি, তাও পারছি ন..”
-“নেগেটিভ অ্যান্সার চাইছি না, লাভ। জাস্ট স্যে, ইউ নিড শ্রেয়ান।”
-“হু, আই নিড ইউ।”
-“টেক মাই নেম।”
-“আই..”
-“উঁমহু..ডোন্ট স্টপ!”
-“আই নিড ইউ, শ্রেয়ান.. ব্যাডলি নিড ইউ!”
-“আসছি। আমার তৃষ্ণা মেটাতে একটুখানি কার্পণ্য করলেই আজ তুমি শেষ, প্রিয়শ্রী!”

হুট করেই শ্রেয়ানের মুখে এমন কথা আর তার পরপরই গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার আওয়াজ পেতেই প্রিয়র গা জড়িয়ে এলো। অদ্ভুত শিরশিরানিতে শরীর হিম ধরে গেল। কাঁপছে হাত, কাঁপছে ঠোঁট, কাঁপছে বিচলিত মনটা। এপাশে প্রিয়র চুপ হয়ে যাওয়াটা শ্রেয়ানের সহ্য হলো না। স্টেয়ারিং ঘুরিয়ে বলল,
-“চুপ কেন?”

প্রিয় নিজেকে সামলে নিল ত্বরিতে, তবুও ঠোঁটে এসে লেগে থাকা জড়ত্বের দোহাই দিয়ে প্রিয় মনে মনে বলে উঠল,
-“আই নিড ইউ, শ্রেয়ান। বাট আমার অনুমানে সবুজ টিক ফেলে এখন আমার সামনে চলে এসো না। মেয়ে হৃদয় বড়ো দূর্বল, ঝাঁপিয়ে পড়তে দু’বার ভাবব না। যদি সর্বনাশ হয়ে যায়? শ্রেয়ান, তুমি এসো না।”

প্রিয় এসব বলতে পারল না। তবে জ্বড়ত্ব কাটাতে অন্য হাত দিয়ে কানে ফোন চেপে রাখা হাতটি খামচিয়ে উঠল জোরেশোরে। এবার যেন ঘোর কাটল।ব্যথাটা সয়ে আসতেই হাত সরিয়ে নিয়ে শুধাল,
-“তুমি কোথায়?”

বাঁকা হাসিটা শ্রেয়ানের ওষ্ঠকোণে। ততক্ষণে সে প্রিয়র বাড়ির রাস্তায় এসে পড়েছে। প্রিয়র ধ্যান ভাঙল গাড়ির পর পর দু’বার দেওয়া হর্নটাতে। শ্রেয়ান যতবার এখানে এসেছে, নিজের উপস্থিতি জানাতে দু’বার হর্ন বাজাত। প্রিয় তড়িঘড়ি করে জানালার সামনে গেল। শ্রেয়ান ততক্ষণে ড্রাইভিং সিট থেকে নেমে গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছে।

কালো শার্ট ইন করে পরা, বুকের কাছের ২-৩টে বোতাম খোলা, স্লিভস কনুই অবধি ফোল্ড করা, একহাতে কানে ফোন গোঁজা, অন্য হাত পকেটে, এলোমেলো চুল, আর ঠোঁটের কোণটা কেমন অদ্ভুত ছড়ানো। চোখের দৃষ্টিতে আফিম, শিরশিরানো দৃষ্টিটা প্রিয়র আন্দাজে এক জায়গাতে থেমে নেই। ক্রমাগত প্রিয়র কপাল, চোখ, নাক, ঠোঁট, থুতনি, গলা, বুক, পেট.. যতটা ওপাশ থেকে দেখা যায়, সবটাতেই বুলিয়ে নিচ্ছে। প্রিয়র বুক কেঁপে উঠল, কেঁপে উঠল সামান্য বাহ্যিকতাও। শ্রেয়ানের চাহনি এতটাই সূক্ষ্ম ছিল যে রুমের ভেতরের জিরো পাওয়ারের লাইট আর বাইরের ল্যাম্পপোস্টের মৃদু আলোয় আবছাভাবে প্রিয়র শরীরি অবয়বে অণুমাত্র কাঁপুনিও নজর এড়ায়নি।

প্রিয় বলে উঠল,
-“হঠাৎ এলে?”
-“দেখতে ইচ্ছে করছিল।”

প্রিয় বেঁচে গেল, দেখেই চলে যাবে বলে। পরমুহূর্তেই শ্রেয়ান বলে উঠল,
-“আর..”

যেই ভয়টা পাচ্ছে, তা না হোক, না হোক, না হোক! কিন্তু আজ যেন সবকিছুই প্রিয়র বিরুদ্ধে। শ্রেয়ানও তাই বলে উঠল,
-“আর ছুঁতে ইচ্ছে করছে। নিচে এসো ফাস্ট।”

শ্রেয়ান কল কেটে দিলো প্রিয়র হ্যাঁ/না জবাব শোনার আগেই। প্রিয়র কোনো নেগেটিভ জবাব সে মেনে নিতে পারে না, তাই সেই রাস্তাই রাখে না। এই যে, বাড়ি থেকেই যদি বলে আসত—দেখা করবে। প্রিয় তখন আসতে চাইত না। এত সুন্দর মেজাজটা তখন খারাপ হয়ে যেত না? তাই তো এসেই বলল। প্রিয়শ্রীর ওপর বিশ্বাস না থাকলেও, নিজের ভালোবাসার ওপর খুব বিশ্বাস আছে। প্রিয় না এসে থাকতেই পারবে না।

প্রিয় যাবে না, যাবে না করেও দশ মিনিট সময় নিল। অতঃপর যেরকম আছে, সেরকমভাবেই নিচে নামল। শ্রেয়ান এ অবধি হাত ধরা আর জড়িয়ে ধরাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। হাত ধরাটা সবসময়ের জন্য হলেও জড়িয়ে ধরাটা হয়েছিল বিশেষ ক’বার। ক’বার? উম.. ৩-৪?

প্রিয় এখন এক্সট্রা চাবি রাখে নিজের কাছে। খুব গোপনে দরজা খুলে বেরিয়ে গেল। রোড ক্রস করে শ্রেয়ানের গাড়ি দেখতে পেলেও, শ্রেয়ানকে দেখতে পাচ্ছে না। ঠিক তখনই শ্রেয়ান ফ্রন্ট সিটের দরজা খুলে দিলো। প্রিয় ইতস্তত করতে করতে ভেতরে ঢুকে গেল। সে তাকাচ্ছে না শ্রেয়ানের দিকে, দরজা আটকিয়ে সিটবেল্ট লাগানোর আগেই শ্রেয়ান একহাতে প্রিয়র কোমর ধরে নিজের দিকে টেনে নিল। নিঃশ্বাসের উষ্ণ স্পর্শ প্রিয়র গায়ে কাটা দিয়ে উঠল, বুকের ওঠা-নামার গতি অস্বাভাবিক। শ্রেয়ানের দৃষ্টি প্রিয়র সর্বত্র এলোমেলো।
ততক্ষণে অন্য হাত উঠে এসেছে প্রিয়র গলায়। বুড়ো আঙ্গুল গালে ও বাকিগুলো কানের পিঠে। প্রিয় স্তব্ধ বনে গেল শ্রেয়ানের এমন আচরণে। কিছু বলতে গেলেই শ্রেয়ান বৃদ্ধাঙ্গুলটা দিয়ে ওর ঠোঁটের কোণা চেপে ধরল। প্রিয় কেঁপে উঠল। ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তাকাল শ্রেয়ানের চোখের দিকে। শ্রেয়ানের চোখ তখন প্রিয়র ঠোঁটের ওপর বিক্ষিপ্ত। তার যে তৃষ্ণা পাচ্ছে। প্রিয়র মনও আর বাধা মানতে চাইছে না। তবুও একটা জায়গায় গিয়ে প্রিয় আটকে যাচ্ছে। এমন কিছু চাইছে না। মনকে বোঝাতে ব্যর্থ হওয়ার আগেই পুনরায় শ্রেয়ানকে আটকাতে বলে উঠল,
-“আমি প্রস্তুত ন..”
-“হুশশশ…”

প্রিয়র গা খুব গভীরভাবে আরও একবার কেঁপে উঠল। শ্রেয়ান সেই ঠোঁটে অস্থির নজরের সাথে বৃদ্ধাঙ্গুল স্লাইড করতে করতে বলে উঠল,
-“প্লিজ.. একটা চুমু খাব.. একটা..”

চলবে…