শেষ প্রান্তের মায়া পর্ব-০১

0
286

#শেষ_প্রান্তের_মায়া
#সূচনা_পর্ব
#বোরহানা_আক্তার_রেশমী

প্রথম যেদিন আমার স্বামীকে অপরিচিত একটা মেয়ের সাথে আবাসিক হোটেলে ঢুকতে দেখেছিলাম সেদিন ভীষণ রকম অবাক হয়েছিলাম। চোখের দেখার ভুল ভেবে বার বার চোখ ডলতে শুরু করলাম। কিন্তু চোখের দেখার ভুল ছিলো না আসলেই সে আমার স্বামী তন্ময়ই ছিলো৷ আমি অবিশ্বাস্য চোখে শুধু তাকিয়েই ছিলাম কিন্তু কিছু বলতে পারিনি৷ আজ আবারও একটি নি’ষিদ্ধ প’ল্লীর সামনে তন্ময়কে দেখলাম। চোখ ছলছল করে উঠলো। সেদিন কিছু না বললেও আজ চুপ থাকতে পারলাম না। ব্যাগ থেকে ফোন বের করে তার নাম্বারে ডায়াল করলাম। সে রিসিভ করে গলা পরিষ্কার করে হাসি হাসি মুখে বললো,

‘হ্যাঁ মায়া বলো!’

আমি এপাশে গাছের আড়াল থেকে তার দিকে তাকিয়েই প্রশ্ন করলাম, ‘কোথায় আপনি?’

‘আমি! আমি তো অফিসেই। এই যে দেখো না বস কতগুলো ফাইল ধরিয়ে দিয়ে গেলো৷’

কি সুন্দর সাজানো গোছানো মিথ্যে! রাগটা আর দমাতে পারলাম না। চোখ মুখ শক্ত করে বলেই ফেললাম, ‘আজকাল আপনার অফিস বুঝি নি’ষিদ্ধ প’ল্লী আর আবাসিক হোটেলে!’

চমকে ওঠে সে। ভীত দৃষ্টিতে এদিক ওদিক তাকিয়ে নজর বুলায়। আমি তাচ্ছিল্যের সুরে হেঁসে বললাম, ‘খুঁজছেন আমাকে? বাম দিকে তাকান।’

বলেই গাছের আড়াল থেকে বের হলাম। সে ছুটে আসলো আমার কাছে। শক্ত করে হাত চেপে ধরে আড়ালে নিয়ে আসলো। ঘৃ’ণায় গা গুলিয়ে আসলো আমার। হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে বললাম,

‘আপনার এই নোং’রা হাত দিয়ে খবরদার আমাকে ছুবেন না। ছাড়ুন বলছি!’

উনি ভ’য়ং’কর দৃষ্টিতে তাকালেন আমার দিকে। হাত আরো শক্ত করে চেপে ধরলেন। ব্যাথায় আর্তনাদ করে উঠলাম। তাতে সে বিশেষ একটা পাত্তা দিলো না। আরো শক্ত করে চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বললেন, ‘আমাকে ফলো করিস? এত্তো সাহস বেড়েছে তোর! চল তোর সাহস আজ এক এক করে শেষ করতেছি।’

আঁতকে উঠলাম। রাগ করে কত বড় ভুল করে বসলাম তা এখন টের পাচ্ছি। আমি কি করে ভুলে গেলাম এরা মানুষ নয়! প’শুরও হয়তো মায়া দয়া থাকে কিন্তু এদের মধ্যে তার ছিটেফোঁটাও নেই। তন্ময় হাত ধরে টেনে নিজের গাড়িতে বসালো৷ গাড়ি সাই সাই করে ছুটে চলার সাথে সাথে ভয়ে আমার আত্মা শুকিয়ে আসতেছিলো। আজ আমার কি হবে!

গাড়ি বাড়ির সামনে দাঁড়াতেই উনি আমাকে টেনে নিয়ে আসলেন বাড়ির মধ্যে৷ লিভিং রুমে সবাই বসে থাকা স্বত্বেও কেউ কিছু বললেন না। উল্টো সবাই মজাই নিলেন। তন্ময় রুমে এনে ঠা’স করে নিচে ফেলে দিলেন। কোমড় থেকে বেল্ট খুলে আ’ঘাত করতে থাকলো পুরো শরীরে। একেকটা আ’ঘাতে আমার শরীর জ্ব’লে যাচ্ছে। চিৎকারে ভেসে যাচ্ছিলো পুরো বাড়ি অথচ বাড়ির ১০ সদস্যের একজনও এগিয়ে আসলো না। মা’রতে মা’রতে ক্লান্ত হয়ে যখন সে চলে গেলো তখন আমার আধ’ম’রা অবস্থা। জ্ঞান হারানোর আগে মিটমিট করে যতক্ষণ চেয়ে ছিলাম দেখলাম দরজার বাহিরে দাঁড়ানো আমার শ্বাশুড়ি আর ছোট ‘জা’ আমাকে দেখছে আর হাসছে। দুর থেকে বড় ‘জা’ অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

জ্ঞান ফিরার পর দেখলাম পুরো শরীর ব্যাথায় নড়াতে পারছি না। যেখানে যেভাবে পড়েছিলাম সেখানে সেভাবেই পড়ে আছি। ভীষণ গলাা শুকিয়ে গেছে। অনেক কষ্টে উঠে দেয়ালের সাথে ঠেস দিয়ে বসলাম। উঠে গিয়ে যে পানি নিয়ে খাবো সে অবস্থা টুকুও বুঝি আমার নেই। এদিকে তেষ্টায় আমার জান যায় যায় অবস্থা। পানির দিকে চেয়ে হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে গেলাম কোনোরকমে। ঠিক সেসময়ই কেউ একজন পানির গ্লাস নিয়ে আমার সামনে এগিয়ে দিলেন। পিটপিট করে তাকিয়ে দেখলাম বড় ‘জা’। উনি অসহায় ভাবে ইশারা করলেন পানির গ্লাস নিতে। আমি পানির গ্লাস নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে নিলাম। এক গ্লাসে যেনো তৃপ্তি মিটলো না। বিছানার সাথে হেলান দিয়ে শরীর ছেড়ে বসলাম। বড় ভাবি আগলে নিলেন আমাকে। ক্রন্দনরত গলায় বললেন,

‘তোর কি নিজের জন্য মায়া হয় না রে মায়া?’

অদ্ভুত রকম ভাবে হাসি পেলো। বড় ভাবির দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘আমরা হলাম শেষ প্রান্তের মায়া ভাবি। আমাদের নিজেদের জন্য মায়া থাকতে নেই গো।’

‘এখানে এভাবে থাকলে ম’রে যাবি বোন।’

‘এখান থেকে চলে গেলেও মৃ’ত্যু নিশ্চিত।’

ভাবি জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন। উনার জড়িয়ে ধরার ফলে ক্ষ’ত গুলোতো ব্যাথা পেলাম। মুখ থেকে নিজের অজান্তেই আর্তনাদ বেরিয়ে আসলো। ভাবি তড়িঘড়ি করে ছেড়ে দিলেন। চোখের পানি কোনরকমে মুছে মলম হাতে নিয়ে ধীরে ধীরে ক্ষ’ত জায়গায় লাগিয়ে দিলেন। আপনমনে আওড়ালাম,

‘বাহিরের ক্ষ’ত তো এই মলমে সেড়ে যাবে ভাবি। কিন্তু ভেতরের ক্ষ’ত! তা কিভাবে সাড়বে? কবে সাড়বে? আদৌও কি এই মায়ার ক্ষ’ত সেড়ে যাওয়ার মতো!’

ভাবি শুনতে পেলো কি না জানি না। মলম লাগানো শেষে গালে আলতো হাত দিয়ে বললেন, ‘পালিয়ে যা মায়া। এই প’শু গুলোর হাতে নিষ্পাপ প্রাণটা হারাস না।’

ভাবি চলো গেলো। আমি নিজের জীবনের হিসাব মিলাতে শুরু করলাম। আমার যখন বিয়ে হয় তখন আমার বয়স ছিলো সবে ১৬। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ায় বাবা মা পড়াশোনা করাতে পারবে না বলে বিয়ে দিয়ে দিলেন এক বড়লোক পরিবারে। বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়ির লোকজন সুন্দর করে বলেছিলেন, ‘আমাদের শুধু সুন্দরী বউমা দরকার। দরিদ্র হলেও সমস্যা নাই।’
বোকা বাবা মা কথাগুলো বিশ্বাস করে নিলেন। মেয়ের সুখ হবে ভেবে ঠেলে দিলেন এক দো’যখে। এখানে আসার পর এমন ১ টা দিন নেই যেদিন আমার খো’টা শুনতে হয়নি। বাপের বাড়ি থেকে যৌ’তুক দেয়নি এ নিয়ে তাদের কত শত অভিযোগ! শ্বাশুড়ি সব সময় খোঁ’টা দেয় এ নিয়ে। বড় ‘জা’ বোনের মতো ভালোবাসলেও ছোট ‘জা’ আমাকে অপছন্দের শীর্ষে রেখেছে। প্রথমে বুঝতাম না তার এতো কেন রাগ আমার ওপর! পরে জেনেছিলাম আমার ওপর তার ২ টা কারণে রাগ। ১) তার ভালোবাসার মানুষ আমার স্বামী। ২) কোথাও গেলে লোকজন তাকে ছেড়ে আমার প্রশংসা করতো বেশি। আমি এই ২ টা কারণ দেখেই ভীষণ অবাক হয়েছিলাম। সে মডার্ণ আমি একদম সাধারণ তারপরও লোকজন তাকে রেখে আমার প্রশংসা করলে আমি কি করতে পারি! আর অতীতে তার সাথে আমার স্বামীর কি ছিলো না ছিলো তা তো আমার জানা নাই। অতীত তো অতীতই হয়। এখন তো সে আমার স্বামীরই ছোট ভাইয়ের বউ। বিয়ের ৪ বছর হয়ে গেছে তবুও আমার বাচ্চা নেই বলে হাজারটা কথা শুনতে হয়। সব মুখ বুজে হজম করে নেয়া ছাড়া কোনো উপায় নাই। ৪ বছরে ২ বার বাপের বাড়ি গেছি। আব্বা আর আম্মাকে বলেছিলাম আমার করুণ পরিণতির কথা। তারা আমাকে বলেছিলো, ‘বিয়া যহন হইয়া গেছে সহ্য কর মা। সব কিছু ঠিক হইয়া যাইবো। সময় লাগবো তয় দেহোস সব ঠিক হইয়া যাইবো। দুঃখের পরই তো সুখ আসে।’

আমি ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রয়েছিলাম। সেদিন বুঝে গেছিলাম আমাকে বাঁচানোর মতো কেউ নেই। তবুও মনে হতো এটা তো আমারই সংসার। থাক না! কিন্তু স্বামীর পর’কীয়া একদম ভেতর থেকে ভেঙে দিয়েছিলো আমাকে। এতো বড়লোক মানুষেরা ঠিক কতটা নিচ তা যদি কেউ জানতো হয়তো এদের মুখে থুথু দিতেও লোকেরা ঘৃ’ণা বোধ করতো।

ঘন্টা খানেকের মতো ওভাবে শুয়ে থাকতেই নিচ থেকে ডাক পড়লো। শ্বাশুড়ি মা রান্না করার জন্য ডাকছেন। আমি জানি নিজে না রান্না করলে আজ আর খাওয়ার জুটবে না কপালে। কথাটা মনে আসতেই চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসে। আব্বা আম্মা মনে করে না জানি তাদের মেয়ে কত সুখে আছে! আমার মতো এই সুখ যেনো কোনো মেয়ের কপালে না হয়। আমি ধীরে ধীরে উঠে নিজেকে সামলে নিলাম। মলম লাগানো আর ওষুধ খাওয়ার ফলে ব্যাথাটা যথেষ্ট কমে গেছে। শাড়ির আঁচল ঠিক করে রেলিং ধরে ধরে নিচে আসলাম। শ্বাশুড়ি আমাকে দেখেই কড়া কন্ঠে বললেন,

‘কতবার ডাকতে হয় নবাবজাদিকে! একবার ডাকলে কি কানে যায় না?’

আমি কথা বাড়ালাম না। আমরা মেয়েরা আসলে যতই বলি ‘অ’ন্যায়ের বিরুদ্ধে প্র’তিবাদ করবো’ কিন্তু নিজেরা কিছু পরিস্থিতিতে পড়লে আর প্র’তিবাদ করা হয়ে ওঠে না। অ’ন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেই আবার শরীর ক্ষ’ত হবে কিন্তু এই প’শু গুলো কখনোই পাল্টাবে না। তার থেকে যেমন সহ্য করে আসতেছি করতে থাকি। আল্লাহ কখনো না কখনো তো আমার মুখের দিকে চাইবে! কখনো না কখনো তো আমাকে এই ন’র’ক থেকে রেহায় দেবে! না জানি কত বড় পাপ করে জন্মেছিলাম তাই তো এত বড় শা’স্তি পাচ্ছি। নিজের ভাবনার মাঝেই রান্নাঘরে ঢুকলাম। শ্বাশুড়ি মা নিজের মতো কয়েকটা কথা শুনিয়ে নিজের রুমের দিকে চলে গেলেন। বড় ভাবি রান্না করছিলেন। আমাকে দেখে চেপে ধরে বললেন,

‘এই শরীর নিয়ে আসলি কেন? আমি করে দিতাম তো সব।’

আনমনে উত্তর দিলাম, ‘শুধু শুধু অ’শান্তি করে কি লাভ বলো ভাবি? এই মা’ইর খাওয়া পু’ড়ে যাওয়া শরীরে না খেয়ে থাকলে কষ্টটা আমারই হবে। তার থেকে নাহয় কষ্ট করে কাজই করলাম। পেটে দুটো ভাত পড়লেই হবে।’

ভাবি কিছু বললেন না। জানি তার কাছে বলার মতো কিছু নেই তাই বললেন না। আমি আলতো করে শাড়ির আঁচল কোমড়ে পেঁচিয়ে নিয়ে কাজ করতে শুরু করলাম। কেবল পেয়াজ কুঁচি করতে শুরু করেছি সে সময় আমার ছোট জা হাজির হলেন। আমার দিকে তাকিয়ে মুখ বাকিয়ে বললেন,

‘মা’ইর খেয়েছেন তা আবার সবাইকে দেখিয়ে কেন বেড়াচ্ছেন ভাবি! বলি এভাবে শাড়ি তুলে সবাইকে দেখালেই বুঝি আপনার ব্যা’থা সেড়ে যাবে!’

ওর কথা শুনে ইচ্ছে করলো ঠা’স করে কয়েকটা থা’প্প’ড় বসিয়ে দেই। কিন্তু দাঁতে দাঁত চেপে তা সহ্য করলাম। নিজের মতো পেয়াজ কাটতে শুরু করলাম। পাশ থেকে বড় ভাবি ঠেস দিয়ে ছোট জা’য়ের উদ্দেশ্যে বললেন,

‘ওর শাড়ি পেচানো নিয়ে এতো সমস্যা হলে কাজ গুলো তুমি করলেই তো পারো রিতু। সারাদিন পায়ের ওপর পা তুলে বসে বসে না খেয়ে খে’টে খেলেও পারো। আর ওর ব্যা’থা নিয়ে এতো মাথাা না ঘামিয়ে নিজের চরকায় তেল দাও।’

ফুঁসে উঠলো ছোট জা। মুহুর্তেই চেঁচামেচি শুরু হয়ে গেলো লিভিং রুমে। আমি ভয়ে আঁতকে উঠলাম। কারণ এবার প্রত্যেকটা দো’ষ আমার ওপর আসবে। আরো একবার হয়তো মা’ইর খেতে হবে। বড় ভাবি ছোট জা’য়ের কাজে বিরক্ত হলেন। এরমধ্যেই শ্বাশুড়ি দৌড়ে আসলেন ছোট জা রিতুর কাছে। ব্যস্ত গলায় বললেন,

‘কি হয়ছে রিতু? চিল্লাও কেন মা?’

আমি এক পলক তাকালাম শ্বাশুড়ির মুখের দিকে। এই মানুষটার খাওয়া থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত আমাকে টিপে দিতে হয় অথচ কখনোই তিনি এতো মধুর করে মা ডাকেননি আমায়। দীর্ঘশ্বাস ফেলে সামনে তাকালাম। ততক্ষণে আমার নামে যা তা বলে দিয়েছে রিতু। বড় ভাবি কিছু বলতে গেলে আমি হাত দিয়ে আটকে দিলাম। মাথা দুপাশে নাড়িয়ে ‘না’ বুঝালাম। বড় ভাবি ফিসফিস করে বললেন,

‘আমি কিছু বলবো না কেন মায়া? তোর তো কোনো দো’ষ নেই।’

‘ভাবি আমার মা’ইর খাওয়ার অভ্যাস আছে। তুমি প্লিজ চুপ করে থাকো। আমি চাই না কোনোভাবেই তুমি মা’ইর খাও। তোমার ২ টা ছেলে মেয়ে আছে ওর জন্য হলেও সুস্থ থাকতে হবে।’

আমার কথা শেষ হতে না হতেই শ্বাশুড়ি দৌড়ে আসলেন আমার কাছে। চুলের খোঁপা শক্ত করে ধরে যা তা ভাষায় গা’লি দিলেন। ব্যা’থায় আর্তনাদ করে উঠলাম। তবুও মহিলার মন গললো না। চুল ছেড়ে রান্নাঘর থেকে গরম খু’ন্তি এনে বসিয়ে দিলেন আমার নরম হাতে। গগণ বিদারী চিৎকার দিলাম। ছাড়ার জন্য আকুতি মিনতি করেও লাভ হলো না। বড় ভাবি ছুটে এসে হাত ছাড়িয়ে নিলে শ্বাশুড়ি তার দিকে ভ’য়ং’কর দৃষ্টিতে তাকালেন। আমি ছুটে বেসিনে গিয়ে হাতে পানি দিতে শুরু করলাম। হাত জ্ব’লে যাচ্ছে। চোখের পানির বাঁধ মানছে না। এমন না এটা আজ প্রথম! এমন হাজার বার হয়েছে এর আগে। যত যায় হোক মেয়ে মানুষ তো সহ্য করে নিতে হয়। শরীরের ব্যাথা আর হাতের জ্ব’লনে মনে হচ্ছিলো জান বেড়িয়ে যাবে। বার বার মনে মনে আওড়াচ্ছিলাম,

‘এতো কষ্টের থেকে আমাকে তুমি মে’রে ফেলো আল্লাহ। এ ব্যা’থা আর সহ্য করতে পারতেছি না।’

এ আর্তনাদ আমার আল্লাহর দরবার পর্যন্ত হয়তো পৌছাননি। তাই তো তিনি আমাকে এ কষ্ট থেকে মুক্তি দেওয়ার বদলে দিলেন আরেক য’ন্ত্রণা। তখনো জানতাম না এই ক্ষ’ত গুলোর থেকেও আমার জন্য ভ’য়ং’কর কিছু অপেক্ষা করছে।

চলবে..
(আসসালামু আলাইকুম। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)