শেষ ভালোবাসা পর্বঃ০২

0
4570

শেষ_ভালোবাসা
লেখা: মেঘপরী
পর্ব : ২
.
এতো সকালে এখানে কেনো..
আন্টি আসলে রুমে থাকতে ভালো লাগছে না। তাই একটু আপনার কাছে হেল্প করতে এলাম।
-আন্টি বলছো কেনো আমি তোমার শাশুড়ী। আর শাশুড়ী তো মায়েরই মতন।আমাকে তুমি মা বলে ডেকো।
-আচ্ছা মা…
-অত্র কি ঘুম থেকে উঠেছে?
-জ্বি না মা, এখনও ঘুমাচ্ছে,
-তুমি যাও অত্রকে ডেকে তুলে বলো ফ্রেশ হয়ে নিচে আসতে, সবাই একসাথে ব্রেকফাস্ট করে নাও,

কিছুক্ষণের মধ্যে সবাই বউ দেখতে আসবে তোমাকে তো আবার রেডি হতে হবে তাড়াতাড়ি যাও
-আচ্ছা মা ঠিক আছে,
তারপর আভা রুমে এসে দেখে অত্র ফ্রেশ হয়ে সোফায় বসে কারো সাথে ফোনে কথা বলছে,
– কারো যদি ফোনে কথা বলা শেষ হয়ে থাকে তাহলে নিচে চলে যাক মা তাকে ব্রেকফাস্ট করার জন্য ডাকছে।
-hay you আমার একটা নাম আছে,
i am অত্র, অত্র আহমেদ
-আপাতত আমি কারো নাম জানার জন্য ইন্টারেস্টেড নই,
এটা বলার সাথে সাথে অত্র উঠে আভার গাল শক্ত করে চেপে ধরে বলে…
– হাউ ডেয়ার ইউ সে দেট, আমার সাথে এভাবে কথা বলার সাহস হয় কি করে তোমার?
আভা ঝারি মেরে অত্রের হাত সরিয়ে বলে
-এখানে সাহস দেখানোর মতো কিছু বলিনি যেটা ঠিক সেটাই বলেছি,
আর একটা কথা ভালো করে মাথায় ঢুকিয়ে নিন, ভুল করেও কথায় কথায় আমাকে টাচ করার মতো দুঃসাহস দেখাতে যাবেন না, এর পরিনাম কিন্তু ভালো হবে না, মাইন্ড ইট মিষ্টার অত্র আহমেদ।

এটা বলে আভা সোজা নিচে বলে যায়,
আর এদিকে অত্র অবাক দৃষ্টিতে আভার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলতে থাকে,

-এ কেমন মেয়েরে বাবা, ভেবেছিলাম আমি তাকে ইগনোর করবো এখন তো দেখচ্ছি উল্টো সে আমাকে ইগনোর করছে শুধু ইগনোর নয় রীতিমত অপমান…নাহ এর জন্য ওকে একটা উচিত শিক্ষা দিতে হবে। হবেইই???

তারপর অত্র নিচে চলে যায় ব্রেকফাস্ট করতে, তারপর আভার দিকে এক নজর তাকিয়ে একটা চেয়ার টেনে বসে পরে,তারপর পাশ থেকে অত্রের ছোট বোন আদ্রিতা বলে,
-কি রে ভাইয়া এরকম টমেটোর মতো লাল হয়ে আছিস কেনো, মনে হচ্ছে যেকোনো সময় ফেটে যাবি,???
-চুপ একটাও কথা না বলে চুপচাপ খা না হলে টমেটোর মতো তোকে ফাটাবো, সব সময় ফাজলামি,
অত্রের আম্মু এই আদ্রিতা তাড়াতাড়ি চুপ খেয়ে নে তোর ভাবিকে তো সাজাতে নাকি,
-কি বলো আম্মু আমার ভাবি এমনই যে সুন্দরী তাকে যদি আরো সাজাই তাহলে তো লোকের নজর লেগে যাবে, এটা শুনে অত্রের আব্বু আম্মু দুজনই হেঁসে ওঠে,
তারপর অত্রের আব্বু আভাকে বলে
-কিরে মা এখানে তোর কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো?
-না বাবা,
-দেখ একদম লজ্জা পাবি না এটা এখন তোরই বাড়ি, তাই যেভাবে সুবিধা হয় সে ভাবে থাকবি,
-ঠিক আছে বাবা,

এটা শুনে অত্র মনে মনে বলে, বাবা তোমারও না মাথা খারাপ সমস্যাকেই জিজ্ঞেস করছো তার কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না, যত সব আদিক্ষেতা???

খাওয়া দাওয়া শেষ করে যে যার রুমে চলে যায় রেস্ট করার জন্য,
তার কিছুক্ষণ পরে আদ্রিতার সব বান্ধবীরা চলে আসে তাদের সবাইকে নিয়ে আদ্রিতা অত্রের রুমে চলে যায়, গিয়ে দেখে আভা বেডের উপর বসে আছে আর অত্র বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে, আদ্রিতা অত্রের কাছে গিয়ে বলে
-ভাইয়া এখন তুই বাইরে যা আমাদের ভাবির সাথে কাজ আছে,
-তোদের কাজ তোরা কর, আমি কেনো বাইরে যাবো? আমি আমার রুম ছেড়ে কোথাও যেতে পারবো না,
– রুম ছেড়ে যেতে পারবি না নাকি বউ কে রেখে যেতে পারবি না কোনটা বলতো?
– দেখ একদম আমার সাথে ফাজলামি করবি না???
-তুই একদিনেই বউ পাগল হয়ে গেছিস সেটাতে কোনো দোষ নেই, আর আমি বললেই দোষ???
– ধুর থাক তোরা আমি চলে যাচ্ছি রুম থেকে,এটা বলে অত্র রেগে রুম থেকে বেড় হয়ে যায়,
আর এটা দেখে ওরা সবাই হাসতে থাকে,
তারপর সবাই মিলে আভার সাথে গল্প শুরু করে, গল্প করতে করতে দুপুর হয়ে যায়।

সারা বাড়ি ভর্তি মেহমান..
দুপুরবেলা পার্লারের লোক এসে আভাকে সাজানো শুরু করলো..
আভার বাসা থেকে আভার আম্মু আব্বু ভাই ভাবি সকলেই এসেছে…
আভা বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে.. সবার খুব আদরের..
বৌভাতের অনুষ্ঠান শুরু।
আভাকে একটা বেগুনি রঙের শাড়ি পরানো হয়েছে অত্র আভাকে দেখে চোখই ফেরাতে পারছে না। অঅসম্ভব সুন্দর লাগছে আভাকে। কিন্তু তাতে আমার কি??।
অত্রর সব বন্ধুরা এসে অত্রকে কনগ্রেস করছে আর আভার এতো এতো প্রশংসা করছে।
-হেই ডুড কি যে বলিস না ওই মেয়ে কখনো আমার আফরার মতো হতে পারবে না।
এটা শুনে সিয়াম বলল দোস্ত তুই যানিস না আফরার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। তোর বিয়ের খবর শুনেই ও ওর ফ্যামিলির পছন্দ করা ছেলেকে হ্যা বলে দিয়েছে।
-কি বলছিস তুই। না এটা কখনো হতে পারে না।
-আমার ইমিডিয়েটলি আফরার সাথে কথা বলতে হবে।
-দোস্ত আজ তোর বৌভাত এখন এটা করা তোর ঠিক হবে না.. অনুষ্ঠান মিটে গেলে নাহয় যা করার করিস।
-আমার আর এক মূহুর্ত লেট করা যাবে না।
বলেই অত্র কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।
এদিকে আভা ওর বাবা মা কে দেখে একটুও কান্না করে নি বরং তাদের কাছে গিয়ে বলছে তোমাদের কোনো অসুবিধা হয় নি তো এসেছো খেয়েছো এখন বাসায় চলে যাও
চলবে…….