শৈবলিনী পর্ব-৫৩ এবং শেষ পর্ব

0
796

#শৈবলিনী—৫৩ (অন্তিত অংশ)
#লেখিকা-মেহরুমা নূর

★অফিস থেকে আজ অনেকটা জলদি জলদি চলে এসেছে আদ্র। কারণ অমালিয়া আজ ওকে ফোন করেছিল। বলেছিল কি যেন কথা বলবে। সেই খুশিতে আদ্র যতদ্রুত সম্ভব চলে এসেছে। অমালিয়া ওর সাথে কথা বলবে এটা ভাবতেই ওর খুশিতে লাফাতে ইচ্ছে করছে। খুশিমনে বাসায় ফিরে নিজের রুমে এসে দেখলো অমালিয়া বিছানায় আনমনা হয়ে বসে আছে। আদ্র মুচকি হেঁসে ওর সামনে এগিয়ে গিয়ে বলল,
–কি যেন বলবে বললে। বলো এখন।

অমালিয়া আদ্রর দিকে তাকিয়ে নরম সুরে বলল,
–বলবো,আগে ফ্রেশ হয়ে এসে শান্ত হয়ে বসো।

–আচ্ছা। আমি এখুনি ফ্রেশ হয়ে আসছি।

আদ্র প্রফুল্লিত মনে ফ্রেশ হতে গেল। আজ যেন ভালো কিছু হতে চলেছে এমনটাই আশা তার। কিছু সময়ের মাঝেই ফ্রেশ হয়ে এসে অমালিয়ার সামনে এসে দাঁড়াল সে। অমালিয়া বসতে বলল আদ্রকে। আদ্র যেন আরও একধাপ আনন্দিত হয়ে অমালিয়ার থেকে এক হাত দূরত্ব বজায় রেখে বসলো। অমালিয়া কিছুটা থমথমে কন্ঠে বলল,
–দেখ আদ্র আমি অনেক ভেবে দেখলাম আমাদের বিষয়ে। আর অনেক ভেবে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি আমি। এভাবে আসলে আমি আর পারছিনা। আমি ক্লান্ত।আমার প্রতিটি ভুলের মতো এই বিয়ে করার সিদ্ধান্তটাও ভুল ছিলো। ভেবেছিলাম তোমাকে কষ্ট দিয়ে হয়তো আমার নিজের কষ্ট কমবে। মনের প্রশান্তি পাবো। কিন্তু এমন কিছুই হলোনা। বরং উল্টো আমাদের জন্য আরও অনেকের জীবনে প্রভাব ফেললো। দেখ এভাবে আমি চলতে পারছিনা। তাই আমাদের দুজনের ভালোর জন্য আমি এই সম্পর্কটাকে আলাদা করতে চাই।। আমি আলাদা হতে চাই আদ্র। এতে আমরা দুজনই ভালো থাকবো। আমি ডিভোর্স ফাইল করতে চাই আদ্র।

আদ্রর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। তার হাসিখুশি মুখটা আতঙ্কের কালো আঁধারে ছেয়ে গেল। হৃদপিণ্ড কেঁপে উঠল তার। আদ্র ব্যাথিত কন্ঠে বলে উঠলো,
–কি বলছ এসব অমালিয়া! প্লিজ এমন করোনা। তুমি চাইলে আমাকে অন্য যেকোনো শাস্তি দাও। আমি কিচ্ছু বলবোনা তোমাকে। তবুও প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেওনা।

অমালিয়া ধরা গলায় বলল,
–প্লিজ আদ্র। বোঝার চেষ্টা করো। এটাই আমাদের জন্য ভালো হবে। তুমিও রাজি হয়ে যাও প্লিজ।

আদ্র এবার আরও ভেঙে পড়লো। সে অমালিয়ার সামনে নিচে হাঁটু গেড়ে বসে অমালিয়ার দুই হাত ধরে কান্নাজড়িত কন্ঠে অনুনয়ের সুরে বলতে লাগলো,
–প্লিজ লিয়া,এমন করোনা। তুমি আমাকে যে শাস্তি দেবে আমি মাথা পেতে নেবো। কখনো প্রতিবাদ করবোনা। আর কখনো তোমার কাছে মাফও চাইবোনা। তুমি সারাজীবন আমাকে শাস্তি দিয়ে যাও। শুধু আমাকে ছেড়ে যেওনা প্লিজ। তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবোনা আমি। অনেক ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে। তোমাকে ছাড়া শেষ হয়ে যাবো আমি। প্লিজ যেওনা আমাকে ছেড়ে। প্লিজ প্লজ প্লিজ….

অমালিয়ারও অনেক কান্না পাচ্ছে। সে নিজেকে অনেক কষ্টে সামলে নিয়ে বলল,
–দেখ আদ্র আমার দ্বারা এসব সম্ভব না। আমি অনেক চেষ্টা করে দেখেছি। আমাদের মাঝে স্বাভাবিক স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক করা আমার পক্ষে সম্ভব না। সত্যি বলতে তুমি মানুষ টা খারাপ না। হ্যাঁ তুমিই আমার জীবনের এই অবস্থার কারণ। তবুও এতদিনে আমি এতটুকু বুঝতে পেরেছি তুমি মনথেকে খারাপ না। দেখ আমি হয়তো তোমাকে মাফ করেও দিতে পারবো, হয়তো কোনো একসময় তোমাকে ভালোও বেসে ফেলতে পারবো। কিন্তু তোমাকে আমি স্বামী হিসেবে কখনোই গ্রহণ করতে পারবোনা। কখনো তোমাকে সেই অধিকার দিতে পারবোনা। কারণ সেই বিষাক্ত ঘটনাটা সবসময় আমার চোখের সামনে ভাসবে। আমি চাইলেও কখনো সেসব ভুলতে পারবোনা। তাই বলছি দুজন দুজনার আলাদা পথ বেছে নিলেই ভালো হবে। এই বন্ধনে আঁটকে থেকে কেউই ভালো থাকবোনা।

–আমি ভালো থাকবো লিয়া। অনেক ভালো থাকবো। আমার কোনোকিছু চাইনা। স্বামীর অধিকারও চাইনা। তুমি যেভাবে চাইবে সেভাবেই থাকবো আমরা। তবুও আমাকে ছেড়ে যেওনা। আমি সারাজীবন এইভাবে খুশিখুশি থাকতে পারবো। শুধু আমাকে আলাদা করোনা প্লিজ। শুধু এই শাস্তি বাদে আর যা খুশি দাও। প্লিজ লিয়া..
আদ্র অমালিয়ার দুই হাতে মাথা ঠেকিয়ে করুন সুরে কাঁদতে লাগলো। অমালিয়ার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। সে থাকতে না পেরে উঠে চলে গেল ওখান থেকে। আদ্র আরও ভেঙে পড়লো। হঠাৎ যেন তার পৃথিবী শেষ হয়ে গেল মনে হচ্ছে। তার করা ভুলের মাশুল এভাবে দিতে হবে তা স্বপ্নেও ভাবেনি সে। এরচেয়ে তো ফাঁ,সির দড়িতে ঝুলে যাওয়াই ভালো ছিলো। অমালিয়া বিনা জীবিত থেকে কি লাভ?
__

হন্তদন্ত হয়ে আদিত্যর বাড়িতে এলো আবির। আন্নির জন্য মনটা কেমন অশান্ত হয়ে যাচ্ছিল তার। তাই শেষমেশ থাকতে না পেরে চলেই এলো। এসেই এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে দেখলো আন্নিকে কোথাও দেখা যায় কিনা। মেয়েটার কিছু হলো এই চিন্তায় মাথা ঘুরছে তার। কিন্তু কোথাও দেখতে পেল না আহানাকে। নূর রান্নাঘরে কিছু দরকারে এসেছিল। আবিরের এই উঁকি ঝুঁকি তারও চোখে পড়লো। বুঝতে পারলো আবির কাকে খুঁজছে। আবিরের অস্থিরতা, দেখেই বোঝা যাচ্ছে। নূর কিছু একটা ভেবে এগিয়ে গেল আবিরের সামনে। গলা খাঁকারি দিয়ে আবিরের উদ্দেশ্যে বলল,
–কাউকে খুঁজছেন আবির ভাই?

হঠাৎ নূরের প্রশ্নে থতমত খেয়ে গেল আবির। অপ্রস্তুত কন্ঠে বলল,
–না মানে ওই আদিকে খুঁজছিলাম। ও নেই বাসায়?

–না ও-তো অফিসে।

আবির জোরপূর্বক হেঁসে বলল,
–ও আচ্ছা। তা সব ঠিক ঠাক আছেতো? মানে বাসার সব ভালো আছেতো না?

নূর ভালোই বুঝতে পারছে আবির বাসার সবার উছিলায় কার ভালোর কথা জানতে চাইছে? তাই সেও কৌশল করে বলল,
–হ্যাঁ এমনিতেতো সব ঠিকই আছে। শুধু ওই আন্নিটা…
নূরের বাক্য শেষ হওয়ার আগেই আবির ভীতিগ্রস্ত হয়ে বলে উঠলো,
–আন্নি? কি হয়েছে আন্নির? ঠিক আছে তো ও?

নূর নিজের হাসি আঁটকে রেখে দুঃখী চেহারা করে বলল,
–ঠিক আর কই থাকলো! বেচারি কাল থেকে জ্বরে প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। খাবারের একটা দানাও মুখে দেয়নি। নাজানি মেয়েটার কি হবে? আমারতো খুব চিন্তা হচ্ছে। নাজানি কখন গুরুতর হয়ে যায় ওর অবস্থা।

গলা শুঁকিয়ে মরুভূমি হয়ে এলো হঠাৎ আবিরের। গলার ভেতর সব যেন আঁটকে গলা চিপে ধরছে। কোনোকিছু না ভেবেই আবির সোজা দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেল। পেছন থেকে চেপে রাখাটা হাসিটা এবার মুক্ত করলো নূর। মিথ্যে বলার জন্য সরি আবির ভাইয়া।জ্বরতো হালকা এসেছিল তবে তেমন গুরুতর কিছু হয়নি। তবে এই ছোট্ট মিথ্যেই হয়তো আপনাকে সত্যির পথ দেখাবে।
আবির দৌড়ে আহানার রুমে এসে দেখলো আহানা কাঁথা মুড়ি দিয়ে কাত হয়ে ঘুমিয়ে আছে। মুখটা কেমন শুকিয়ে গেছে। বুকের ভেতর হু হু করে উঠলো আবিরের। এই মেয়েটা আবিরের জন্য কি তা কেবল আবিরই জানে। জীবনের কাছ থেকে নিজের জন্য কোনোকিছু চাওয়া অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছে আবির। তবুও কখনো হাত দুটো দোয়ার জন্য তুললে সেই সব দোয়াতেই শুধু আহানাই থাকে। অনুভূতির শুরু থেকে শেষ শুধু এই মেয়েটাতেই। যার গভীরতা আবির নিজেও কখনো মাপতে যায়নি। হয়তো নিজেও ব্যার্থ হয়ে যেত। আবির ধীর পায়ে এগিয়ে আহানার বেডের সামনে টুলেট উপর বসলো আবির৷ মায়াময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আহানার মুখপানে। হাত বাড়িয়ে ছুঁতে চাইলো আহানার মুখটা। তখনই আলতো করে চোখ মেলে তাকালো আহানা। তড়িৎ গতিতে হাত সরিয়ে নিলো আবির। সোজা হয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো সে। আহানা আবিরকে দেখে হাসিমুখে বলল,
–আপনি? এখানে? আমার জন্য এসেছেন?

আবির নিজেকে পুরনো রুপে কনভার্ট করে বলে উঠলো,
–হ্যাঁ আর কি করার ছিলো। শুনলাম নাকি একেবারে জ্বরে টরে নাকি মরে টরে ভুত হয়ে যাচ্ছিস। তাই ভাবলাম দেখা করে আসি। মৃ,ত্যু সম্মুখীন ব্যাক্তির কাছ থেকে নাকি মাফসাফ নিতে হয়। তাই আসলাম আরকি।

আহানা কপাল কুঁচকে বলল,
–কে বলল আমি জ্বরে মরে যাচ্ছি?

–নূর ভাবি বললো।

আহানা বুঝতে পারলো নূর ওর ব্যাপারে মিথ্যে বলেছে আবিরকে। আর কেন বলেছে তাও বুঝতে পারছে। আহানা ভাবীর প্ল্যানকে সফল করার উদ্দেশ্যে অসুস্থ হওয়ার ভঙ্গিতে কাতর কন্ঠে বলল,
–হ্যাঁ মরেতো যাবোই। এতো অবহেলা আর নিতে পারছিনা আমি। বেঁচে থাকার ইচ্ছে হয়না। আপনার জন্য তো খুশির সংবাদ। আপনাকে আর কেউ জ্বালাবে না রোজ রোজ৷

চোয়াল শক্ত হয়ে এলো হঠাৎ আবিরের।সে মনে মনে কিছু একটা ভেবে বাঁকা হেঁসে বলল,
–তুই তো ননির পুতুল রে আন্নি। এইটুকুতেই অক্কা পেতে চলেছিস। তাতে আবার আমাকে বিয়ে করতে চাস? তোর এই ছটাক খানিক শরীরে আমার বাচ্চাগুলোকে কীভাবে আনবি? তুই তো প্রসেসিং-এই শেষ হয়ে যাবি।

চমকিত নজরে তাকালো আহানা। চোখে মুখে তার এক খুশির ঝলক ভেসে উঠলো। আহানা উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলল,
–কি বললেন আপনি? তবে কি আপনি আমাকে বিয়ে করতে রাজি?

আবির দায়সারা ভাব দেখিয়ে বলল,
–হ্যাঁ, আর কি করার। এখন আমার জন্য একটা মেয়ে মরে টরে যাচ্ছে তাই ভাবলাম যাক, মেয়েটার উপর দয়া করে দেয়। তুই তো জানিস কারোর দুঃখ সইতে পারিনা আমি। এমনিতেও নারী সেবায় সমসময় নিজেকে রাখি আমি। যা তুইও কি মনে রাখবি। তোর মনকামনাও আজ পূর্ণ করে দিলাম।

আহানা খুশিতে আবেগে আপ্লূত হয়ে পড়লো। খুশিতে উচ্ছ্বসিত হয়ে সে হঠাৎ উঠে গিয়ে আবিরকে জড়িয়ে ধরে বলল,
–থ্যাংক ইউ,থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ সো মাচ আবির ভাই।

আহানার আলিঙ্গনে আবির থমকে গেল। তবে নিজেকে সামলে নিয়ে বলে উঠলো,
–হ্যাঁ ঠিক আছে, ঠিক আছে। কিন্তু মনে রাখিস আমি কিন্তু তোকে ভালো টালো বাসিনা। ওসব আমার দ্বারা হবে না। আর তুইও কানের কাছে বারবার ভালোবাসার গান গাবি না।

আহানা রাগলো না আবিরের কথায়। কারণ সে জানে এগুলো আবির মজা করে বলছে। আসলে সে অনেক ভালোবাসে আহানাকে।তাই আহানাও আবিরকে ছেড়ে মজা করে বলে উঠলো,
–আচ্ছা? তাহলে যে বাচ্চার কথা বললেন! ভালোবাসা না থাকলে বাচ্চা কীভাবে আসবে?

আবির আকাশ থেকে পড়ার মতো ভঙ্গি করে বলল,
–ওমা? বাচ্চা হওয়ার সাথে ভালোবাসার কি সম্পর্ক হলো? কোন বইতে লেখা আছে বাচ্চা হওয়ানোর জন্য ভালোবাসা লাগে? আজপর্যন্ত কোনো সাইন্স, কোনো বিজ্ঞানী এটা বলতে পেরেছে যে বাচ্চার জন্য ভালোবাসা লাগে? আজব কথাবার্তা বলিস তুইও!

–কি বলেন? ভালোবাসা ছাড়া বাচ্চা কিভাবে হবে?

–তুই তো ভারী বদমাশ রে আন্নি। ইন্ডাইরেক্টলি আমাকে তুই ডেমো দেখাতে বলছিস? ছিঃ ছিঃ কত্তবড় বেশরম তুই! বিয়ের কথা বলতে না বলতেই বাচ্চা হওয়ার প্রসেসিং দেখাতে বলছিস? আমারতো এখন তোর সামনে থাকতেই ভয় লাগছে। নাজানি কখন আমার ইজ্জতে হাত মেরে দিস।

এবার রাগতে বাধ্য হলো আহানা। দাঁত কিড়মিড় করে বলল,
–আপনার ইজ্জতে হাত মারছি আমি? দাঁড়ান দেখাচ্ছি মজা।
বলেই পাশের বালিশ টা উঠিয়ে আবিরকে মারতে লাগলো আহানা। আবির হেঁসে দিলো। হাসতেই হাসতেই নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে লাগলো সে।
__

শুঁকনো কাপড় কাপড় তুলতে ছাঁদে এসেছিল নূর।তখনই ওর ফোনে একটা ম্যাসেজ এলো। নূর দেখলো আদিত্যর ম্যাসেজ। সেখানে লেখা আছে, “আমার সুন্দরী বউটা, বিকালে একটু এই অধমের জন্য আরেকটু সুন্দর করে সেজে তৈরি থেক। আজ তোমাকে নিয়ে বাইরে যাবো। আজকের সন্ধ্যা হবে তোমার নামে।” ম্যাসেজ দেখে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠলো নূরের। হঠাৎ কারোর কান্নার আওয়াজ কানে এলো তার। নূর ভ্রু কুঁচকে এদিক ওদিক খুঁজতে লাগলো কান্নার উৎস। ছাঁদের ওন্যপাশে এসে দেখলো আদ্র ছাঁদের এক কোণায় নিচে বসে মাথার চুল টেনে ধরে কাঁদছে। নূর একটু ঘাবড়ে গেল। সে এগিয়ে গিয়ে আদ্রর উদ্দেশ্যে চিন্তিত সুরে বলল,
–আদ্র? কি হয়েছে? এভাবে কাঁদছ কেন?

আদ্র মাথা তুলে তাকালো নূরের দিকে। হঠাৎ সে এগিয়ে গিয়ে নূরের পা জড়িয়ে ধরলো। হতভম্ব হয়ে গেল নূর। নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে সে বলতে লাগলো,
–আদ্র কি করছ? পা ছাড়ো।
আদ্র ছাড়লোনা। নূরের পা জড়িয়ে করুন সুরে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
–ভাবি প্লিজ মেরে ফেলুন আমাকে। আমি আপনাদের সবার অপরাধী। প্লিজ মেরে ফেলুন আমাকে। আমি এই বোঝা নিয়ে আর বাঁচতে পারছিনা। অমালিয়াকে ছাড়া বেঁচে থেকে কি করবো আমি? প্লিজ মেরে ফেলুন আমাকে।

–আচ্ছা, আচ্ছা আগে পা ছাড়ো। আর শান্ত হয়ে বলো কি হয়েছে?

আদ্র নূরের পা ছেড়ে দিয়ে একটু শান্ত হয়ে নূরকে অমালিয়ার বলা কথাগুলো বললো।তারপর সে নূরকে মিনতির সুরে বলল,
–ভাবি লিয়াকে ছাড়া আমি বাঁচব না ভাবি। তারচেয়ে বরং আমাকে মেরেই ফেলুন।

নূর আদ্রকে আস্বস্ত করে বলল,
–আচ্ছা, আমি কথা বলবো অমালিয়ার সাথে। তুমি শান্ত হও। আর এসব উল্টো পাল্টা কথা বলা বাদ দাও। মরে যাওয়া কোনো কিছুর সলিউশন হলে দুনিয়াতে আর কোনো মানুষই বাঁচত না। যাও নিচে যাও।

আদ্র মাথা ঝাকিয়ে নূরের কথা মেনে চলে গেল। নূরও নিচে এসে অমালিয়ার রুমে এলো। নূরকে দেখে অমালিয়া খুশিতে আপ্লূত হয়ে বলল,
–আপু তুমি? আমার কাছে এসেছ?

নূর অমালিয়ার পাশে বসে শান্ত সুরে বলল,
–হ্যাঁ, তোর সাথে কিছু বলতে চাই।

–হ্যাঁ, বলনা আপু। আমি কবে থেকে তোমার কথা শোনার অপেক্ষায় বসে আছি। যা খুশি বলো।

–দেখ, তোর ব্যাপারে কোনো কিছু বলতে চাচ্ছিলাম না আমি। কিন্তু সবসময় নিজের চাওয়া প্রাধান্য দেওয়া যায় না। প্রয়োজনে অনেক সময় অন্যের চাওয়াকেও প্রাধান্য দিতে হয়। দেখ তুই সবসময়ই ভুল ডিসিশন নিয়েছিস।আর আজ তুই আরও একটা বড় ভুল ডিসিশন নিচ্ছিস। হ্যাঁ প্রথমে আমিও এই বিয়ের বিরুদ্ধে ছিলাম। কারণ আমার কাছে তখন সেটা বেঠিক সিদ্ধান্ত ছিলো। কিন্তু তুই তখন শুনলিনা। এখন বিয়েটা যখন হয়েই গেছে সেটাকে এইভাবে ভেঙে ফেলাটা আরও বড় ভুল।এতে সবকিছু আরও বেগতিক হয়ে যাবে। মা এমনিতেই অসুস্থ তারওপর এসব জানলে তাকে এবার বাঁচান যাবে? আর যে সমাজের মুখ ঠেকাতে এই বিয়ে করলি সেই সমাজ কি তোকে রেহায় দিবে? জীবন আরও দূর্বিষহ হয়ে যাবে। দেখ মানছি আদ্রকে মেনে নেওয়া তোরজন্য সহজ না। তবে অন্তত চেষ্টাতো করে দেখতে পারিস। জানি সবকিছু ভোলা এতো সহজ না। কিন্তু অন্তত প্রচেষ্টাতো করতে পারিস। আদ্র ছেলেটা খারাপ না। হ্যাঁ, সে যে অন্যায় করেছে তা অমানবিক। তবে একজন ব্যাক্তি যখন নিজের অপরাধের অনুশোচনায় ভোগে তখন সেটা শাস্তির চেয়েও বেশি কষ্ট দেয় তাকে।তুই যেমন পরিবারের কথা অমান্য করে বেপরোয়া হয়ে গিয়েছিলি। আদ্ররও ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়েছে। অগাধ স্বাধীনতা,টাকা আর খারাপ সঙ্গ পেয়ে আদ্র পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ছেলেটার চোখে আমি অনুশোচনা দেখেছি। আর তোরজন্য ভালোবাসাও দেখেছি। নাহলে একটা প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে এভাবে আমার পা ধরে শুধু তোকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে কাঁদত না। আমি বলছিনা তুই আদ্রকে মাফ করে দিয়ে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করে নে। তবে অন্তত সহচর হওয়ার প্রচেষ্টা তো করতে পারিস। নতুন স্মৃতি তৈরি করে পুরান স্মৃতিকে ঢেকে ফেলার চেষ্টাতো করতে পারিস। দেখ তোকে বোঝানোর চেষ্টা করতি পারি। তোকে জোর করার অধিকার নেই আমার। কারণ এটা একান্তই তোর ওপর। ভেবে দেখিস আমার কথা। পারলে এবার অন্তত আমার কথাটা বোঝার চেষ্টা করিস।

বাইরে গার্ডেন এরিয়ায় বেঞ্চের উপর উদাস মনে বসে আছে আদ্র। হঠাৎ যেন সবকিছু শূন্য মনে হচ্ছে ওর। অমালিয়াকে বিনা এই জীবন কীভাবে বয়ে বেড়াবে সে? হয়তো এটাই ওর পাপের প্রাপ্য শাস্তি ছিলো। যা ওকে আজীবন কাটতে হবে। ভাবনার মাঝেই হঠাৎ পাশে কারোর বসার আভাস পেল আদ্র। পাশে তাকিয়ে দেখলো অমালিয়া বসে আছে। একটু অবাক হলো আদ্র। হতবিহ্বল চোখে তাকিয়ে রইলো সে। তার বিস্ময়ের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়ে অমালিয়া বলে উঠলো,
–কখনো সন্ধ্যার আকাশ তাকিয়ে দেখেছ? আজ অনেক দেখতে ইচ্ছে করছে। নিয়ে যাবে আমাকে? আজকের রাত রাস্তায় গন্তব্যহীন হাঁটতে ইচ্ছে করছে। হাঁটবে আমার সাথে?

আদ্র অমালিয়ার কথার মর্ম কিছু বুঝতে না পেরে হতবুদ্ধির মতো তাকিয়ে রইলো অমালিয়ার পানে। অমালিয়া তা দেখে বলল,
–এভাবে কি দেখছ? আপু বলেছে সহচর হওয়ার প্রচেষ্টা করতে। সেটাই তো করছি। এখন কি যাবে নাকি আমি একাই যাবো?

বলেই উঠে সামনে অগ্রসর হলো অমালিয়া। আদ্রর যেন এখনো বিশ্বাসই হচ্ছে না। তারমানে অমালিয়া ওকে আরেকটা সুযোগ দিবে। খুশিতে যেন এখুনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে সে। তবে অমালিয়াকে চলে যেতে দেখে নিজেকে সামলে নিয়ে তড়িঘড়ি করে অমালিয়ার পাশে গিয়ে বলল,
–না না, একা কেন যাবে? আমি যাচ্ছিতো তোমার সাথে। শুধু সন্ধ্যার আকাশ কেন, তোমার সাথে তো আমাবস্যার রাত দেখতেও রাজি।
আদ্রর কথায় হাসি পেল অমালিয়ার।অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে মুচকি হাসলো সে। হাসলো আদ্রও। তার যে এখন খুশির দিন এসেছে।
___

নূর হন্তদন্ত হয়ে এসেছে ওর মায়ের বাড়িতে। মিছরি হঠাৎ ফোন করে বলল,মা নাকি হঠাৎ অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ইভানও বাড়িতে নেই। তাই নূর থাকতে না পেরে ছুটে এসেছে। এসেই সে দ্রুত ওর মাকে নিয়ে হসপিটালে যায়। ডাক্তার দেখিয়ে লতিকা বেগম একটু সুস্থ হলে তাকে বাসায় নিয়ে আসে। বাসায় এসে লতিকা বেগমকে কিছু খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দিয়ে ঘুম পারিয়ে দেয় নূর। এসব করতে করতে প্রায় রাত আট টা বেজে যায়। ততক্ষণে ইভানও চলে আসে বাসায়। ইভান নূরকে জিজ্ঞেস করে সে কখন এসেছে। আদিত্যকে জানিয়েছে কিনা। ইভানের কথায় বুকের ভেতর ধুক করে উঠলো নূরের। মনে পড়ে আদিত্যর ম্যাসেজের কথা। আজতো আদিত্য ওকে নিয়ে বাইরে যেতে চেয়েছিল। ওকে তৈরি থাকতে বলেছিল আদিত্য। কিন্তু আমিতো এখানে এসে সেসব ভুলেই গেছি।মায়ের চিন্তায় সেই কথা মাথা থেকেই বেরিয়ে গেছে নূরের। নূর তড়িঘড়ি ফোন বের করে দেখলো আদিত্যর শতখানেক মিসকল উঠে আছে। চাপ লেগে কখন সাইলেন্ট মোডে চলে গেছে ফোন তা খেয়ালই করেনি। নূর দ্রুত আদিত্যর নাম্বারে ফোন ব্যাক করলো। কিন্তু ফোন রিসিভ হচ্ছে না। মন ভারী হয়ে আসছে নূরের। খারাপ লাগা চেপে ধরলো ওকে। আদিত্য নিশ্চয় আমার উপর রেগে আছে। রেগে থাকারই কথা। আমি কাজই এমন করেছি। আদিত্য আমার জন্য কতকিছু করে। আর আমি তার সামান্য আবদারই পুরন করতে পারলাম না। কেমন অযোগ্য বউ আমি। নিজের উপর চরম পরিমাণ রাগ হচ্ছে নূরের। একটা বার অন্তত ফোন করে ওকে জানানো তো দরকার ছিল। সেটাও করিনি আমি।

নূরের অবস্থা বুঝতে পেরে ইভান ওকে বাসায় চলে যেতে বলল। এখন মায়ের খেয়াল সে রাখতে পারবে সেই আস্বস্ত দিলো। নূরও আর এক মুহুর্তও না দাঁড়িয়ে দ্রুত বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো সে। রাস্তায় বারবার অস্থির মনে আদিত্যকে ফোন করতে লাগলো। কিন্তু ফোন রিসিভ করছে না সে। নূরের মন আরও ভারী হয়ে যাচ্ছে। অপরাধবোধে অন্তর পুড়ে যাচ্ছে ওর। বাসায় ফিরতে প্রায় রাত দশটা বেজে গেল নূরের। তড়িঘড়ি করে বাসায় ঢুকতেই আহানাকে দেখে ওর কাছে আদিত্য এসেছে কিনা জানতে চাইলো। আহানা বলে উঠলো,
–হ্যাঁ ভাইয়াতো সেই বিকালেই ফিরেছে। তোমার কথা জিজ্ঞেস করছিলো বারবার কিন্তু আমিতো জানতাম না তাই বলতেও পারিনি। মনে হলো ভাইয়া প্রচুর রেগে ছিলো। সেই তখন থেকে রুম থেকে বের হয়নি। রাতের খাবারও খায়নি।

নূরের অপরাধবোধ যেন এবার আকাশচুম্বী হলো। কান্নারা গলায় দলা পাকিয়ে এলো। নূর দ্রুত দৌড়ে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেল। রুমে এসে দেখলো আদিত্য বিছানায় উল্টো দিকে কাত হয়ে শুয়ে আছে। নূরের বুকের ভেতর টা হু হু করে উঠলো। কাতর হৃদয় টা মুচড়ে উঠলো প্রিয়র প্রতি নিজের অপারগতায়। এই প্রথম আদিত্য ওর কাছে কিছু আবদার করলো, তাও দিতে অক্ষম হয়ে গেল সে। এই অক্ষমতার শাস্তি হিসেবে নিজেকে কঠিন আঘাত করতে ইচ্ছে করছে ওর। এখন কি করবো আমি? মিঃ নায়ক আমার সাথে রেগে আছে। কান্নারা এবার উপচে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে নূরের। আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলোনা সে। কাঁধের হ্যান্ডব্যাগটা ফেলে দিয়ে ছুটে গেল সে আদিত্যর কাছে। বিছানায় উঠে পেছন থেকে আদিত্যকে শক্ত করে জাপ্টে ধরলো। আদিত্যর কাঁধে মুখ গুঁজে পরপর কয়েকটা চুমু দিলো কাঁধের মাঝে। কান্নাজড়িত, অপরাধী সুরে বলল,
–সরি। সরি,সরি,সরি আম সো সরি। সো সরি। প্লিজ মাফ করে দাও আমাকে। রাগ করে থেকোনা। চাইলে বকাঝকা করো। তাও রাগ করে থেকোনা প্লিজ।

আদিত্যর কাঁধে মুখ গুঁজেই কাঁদতে লাগলো নূর। আদিত্য হকচকিয়ে পেছনে ফিরে তাকালো। নূরকে কাঁদতে দেখে ভীষণ ঘাবড়ে গেল সে।নূরকে বালিশে শুইয়ে দিয়ে নিজে নূরের উপর ঝুঁকে দুই হাতে নূরের মুখটা ধরে উদ্বিগ্ন হয়ে বলল,
–হেই পাগলী, কি হয়েছে? কাঁদছ কেন? আর কে বলল আমি তোমার উপর রাগ করেছি?

নূর অশ্রুসজল চোখে বলল,
–আমি জানি। কারণ আমি কাজই এমন করেছি। তোমাকে আরও একবার নিরাশ করেছি আমি। তোমার আবদার রাখতে পারিনি আমি। তোমাকে এতটুকু খুশিও দিতে পারিনা আমি। আমি সত্যিই একটা অযোগ্য বউ।

আদিত্য নূরের গালে হাত রেখে আবেগী সুরে বলল,
–হুঁশশ,খবরদার আমার বউটাকে খারাপ বলেছ তো! তাহলে আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে না। আমার বউ হলো অনন্যা বুঝেছ? আর আমি আমার এই লক্ষী বউটার উপর একটুও রেগে নেই।তুমি কীভাবে ভাবলে তোমার খবর না জানা পর্যন্ত আমি চুপ করে বসে থাকবো? হ্যাঁ তবে চিন্তা হচ্ছিল অনেক। যখন তুমি ফোন ধরছিলে না তখন তোমার চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম আমি। তারপর তোমার বাড়িতে ফোন দেই। মিছরি ফোন রিসিভ করে বলল তুমি মাকে নিয়ে হসপিটালে গেছ। তখন একটু স্বস্তি পেলাম। আমিও আসতে চাইছিলাম তোমার কাছে। কিন্তু তোমার চিন্তায় আমার হঠাৎ প্রেসার বেড়ে গিয়ে মাথা ব্যাথা করছিল। তাই শুয়ে ছিলাম। মায়ের অসুস্থতার কথা জেনে আমি কীভাবে রাগ করে থাকতে পারি তোমার ওপর। হ্যাঁ আমার ফোন না ধরার জন্য একটু রাগ হয়েছিল। তবে তুমি এসেই যেভাবে আদর দিলে, এরপরতো আমার খু,ন করে ফেললেও রাগ হবে না।

নূর এক হাত আদিত্যর গালে রেখে আবেগময় মায়াবী কন্ঠে বলল,
–সত্যি বলছ? তুমি রেগে নেই তো আমার ওপর। তুমি আমার উপর রাগ করে থাকলে আমার সহ্য হয়না। অনেক কষ্ট হয় আমার। প্লিজ কখনো রেগে থেকোনা আমার ওপর। চাইলে যতো খুশি বকাঝকা করো। কিন্তু আমার থেকে কখনো মুখ ফিরিয়ে নিওনা। তোমার একটুখানি উপেক্ষাও এখন আমি সইতে পারিনা। এখন যে আর আমি আগের সেই নূর নেই। এই নূরের সবটা জুড়ে শুধু তুমি। তোমার চেয়ে বেশি আমার কাছে আর কিছু না। আমি নিজেও না। এখন তুমি ছাড়া আমার নিজের সত্তা বলতে কিছুই নেই । তুমি হীনা এই নূর সম্পূর্ণ নিঃশ্ব,শূন্য।

আদিত্যর চোখের কোণ ভরে উঠল। নিজেকে আজ সর্বাত্মক সার্থক মনে হচ্ছে। যে নূরের চোখে একসময় আদিত্য অসহ্যকর ছিলো, আজ সেই নূরের সবটা জুড়ে কেবল ওর বাস। নূরের চোখের এই পানি ওর ভালোবাসার গভীরতার বহিঃপ্রকাশ। এরচেয়ে সুখের আর কি হতে পারে আদিত্যর জন্য। আদিত্য মায়া ভরা চোখে নূরের পানে তাকিয়ে নূরের কপালে চুমু দিলো, কপালে কপাল ঠেকিয়ে নূরের গালে বৃদ্ধাঙ্গুল বুলিয়ে মোহময় কন্ঠে বলে উঠলো,
–তুমি ছাড়া যে এই আদিত্যও নিঃশ্ব। নূর আছে তো এই আদিত্য আছে। নূর নেই তো আদিত্যও নেই। আজ হিমুর মতো আমিও বলতে চাই,
“আমার একটা নদী আছে, যে শুধু একান্তই আমার।
আমার হৃদয়ের রানী,
আমার প্রেমের রাগিণী,
আমার হৃদমোহিনী,
তুমি শুধু আমার শৈবলিনী।

______________💞সপাপ্ত💞_____________

( শৈবলিনীর মূল কাহিনি এতটুকুই ছিলো। এরপর আর বাড়ালে সেটা অযথা টানা হতো। এতে গল্পের মান কমে যেত। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ গল্পটাকে এতো ভালোবাসা দেওয়ার জন্য। আশা করি আবারও কোনো নতুন গল্প নিয়ে ফিরবো আপনাদের মাঝে। ততদিন সবাই ভালো থাকবেন। আর দোয়া করবেন আমার জন্য 😊)