সাঁঝেরবেলায় তুমি আমি পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব

0
858

#তাসনিম_তামান্না
#সাঁঝেরবেলায়_তুমি_আমি
#পর্ব_১৭_ও_শেষ_পর্ব

🍁🍁🍁

কেটে গেছে ৫দিন এর মধ্যে প্রমির সাথে আশার কোনো কথা হয় নি। আরমান আর থাকতে না পেরে ওদের বিয়ের ব্যাপারে আশা আর আসাদকে সব বলে দিয়েছে। আশা প্রথমে না জানানোর জন্য রাগ করলেও পরে মনে নিয়েছে। কিন্তু প্রমিকে ফোনে না পাওয়ায় ওরা টেনশনে ছিলো। নানা বাজে চিন্তা নিয়ে ওরা ছয় দিনের দিন রওনা দিলো প্রমির খবর জানার জন্য।
আরমানের এটাই প্রথম দাদাবাড়ী আসা আগে কখনো আসেনি। আরমান আসতেই চারিদিকে দেখলো। আকাশী রঙের টিনের বাড়িটাই নোনা লেগে কিছু অংশে রং উঠে গেছে। বাড়ির পাশেই বেড়া দিওয়া রান্নাঘর ওদেরকে দেখে টুম্পা দুপুরের রান্না করছিলো ওদেরকে দেখে রান্নাঘর থেকে বেড়িয়ে এসে অবাক চোখে তাকিয়ে বলল

-আপনারা? (টুম্পা)

-হ্যা আমরা প্রমি কোথায় প্রমির ফোন ওফ কেনো? কি করছো তুমি প্রমির সাথে? (আশা)

-মানে কি কইতাছেন প্রমিরে কি করুম? (টুম্পা)

বাইরে চেচামেচি শুনে চাঁদনী বেগম আর ঘরে বসে থাকতে পারলেন না ইদানীং চাঁদনী বেগমের শরীরটা বেশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। লাঠিতে ভর দিয়ে উঠে দাড়ালেন কিন্তু হাটতে গিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যেতে নিলেই অয়ন (আজাদ আর টুম্পার একমাত্র ছেলে।ওদের ছেলে হলেও স্বভাবে, আচার-আচরণে ওদের থেকে পুরাই উল্টা) এসে চাঁদনী বেগমকে ধরে বলল

-কি করছো দাদী এক্ষুনি তো পড়ে যেতে! কি হতো বলো তো? (অয়ন)

-না রে ভাইজান মাথাডা ঘুইরা গেলো। আর বাইরে কি হইতাছে রে এতো কথার শুনা যায় ক্যা রে কেডা আইসে (চাঁদনী বেগম)

-জানি না ওসব বাদ দাও তো জানোই তো আম্মুর সবার সাথে ঝগড়া লাগানো স্বভাব ওসব তুমি টেনশন করো না এখানে বসো তো দেখি (অয়ন)

-না আমারে একটু ধইরা বাইরে লইয়া চল ভাইজান দেইখা আছি কি হইলো আবার চল না ভাইজান (চাঁদনী বেগম)

-আচ্ছা আচ্ছা নিয়ে যাচ্ছি (অয়ন)

অয়ন ধরে চাঁদনী বেগমকে বাইরে নিয়ে আসলো। এসে আশা আর টুম্পার কথা কাটাকাটি শুনে বুঝলো প্রমিকে নিয়ে কথা বলছে।

-তুমি বুঝতে পারছ না তুমি কি করছো? (আশা)

-কারা আপনারা? প্রমি আপুকে কি দরকার? (অয়ন)

অয়নের কথায় সবাই ওদের দিকে তাকালো। আশা চাঁদনী বেগমকে দেখে চাঁদনী বেগমের পাশে এসে বলল

-কেমন আছেন চাচীমা? আর প্রমি কোথায় চাচীমা? (আশা)

-ভালা আছি তোমরা ভালো আছ তো? (চাঁদনী)

-আমার আর ভালো কেমন করে থাকি প্রমিকে ফোনে না পেয়ে চিন্তায় শেষ হয়ে যাচ্ছি। তাই আর থাকতে না পেরে চলে আসলাম (আশা)

-ভালা কাম করছো তোমাগো কতদিন দেহি না আহো বহো। ভাইজান এটা তোর চাচী হয় (চাঁদনী)

-আসালামুআলাইকুম চাচী! কেমন আছেন? আমি আসলে জানতাম না কিন্তু আমি আপনাদের অনেক গল্প শুনছি (অয়ন)

-তাই না-কি (আশা)

-হ্যাঁ আসেন হাত-মুখ ধুয়ে নেন (অয়ন)

-অয়ন!(টুম্পা)

-চাচী কারোর ধমকাধমকি শুনেন না আসেন আমি আপনাদের ঘর দেখিয়ে দিচ্ছে (অয়ন)

-আরে অয়ন আমরা থাকতে আসে নি। প্রমিকে নিতে আসছি (আশা)

-থাকবেন না কেনো? এটা আপনাদের ও বাসায় তাই আপনারাও থাকবেন (অয়ন)

অয়নের ব্যবহারে আশা, আসাদ, অবাক না হয়ে পারলো না এদিকে আরমানের এসব দিকে খেয়াল নাই আরমানের দুচোখ শুধু প্রমিকেই খুঁজে চলছে। কিন্তু তার চোখ ব্যার্থ হচ্ছে বারবার। নিশা ওদের দিকে শুধু ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে কিছু বলছে না। অয়ন ওদেরকে ঘর দেখিয়ে দিলো। সেটা দেখে টুম্পা সাপের মতো ফোঁস ফোঁস করতে লাগলো কিন্তু কিছু বলতে পারলো না কারণ কিছু বলেই অয়ন চলে যেতে পারে। এমনিতেই অয়ন বাসার কোনো জামেলাই থাকে না। সবাই চলে গেলোও আরমান প্রমিকে খুজতে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখতে দেখতে হাটছিলো হটাৎ অয়নের সাথে ধাক্কা খেয়ে বাস্তবে ফিরে বলল

-সরি সরি (আরমান)

-না না ঠিক আছে ভাইয়া (অয়ন)

-আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেসা করি? (আরমান)

-আমি জানি আপনি কি জিজ্ঞেসা করবেন! আপনি হাত মুখ ধুয়ে নেন একটু বিশ্রাম নিয়ে নিন তারপর দাদীই সব বলবে (অয়ন)

আরমান বুঝলো এখন কিছু বলেও কিছু হবে না তাই ফ্রেস হয়ে নিলো।

★★★

চাঁদনী বেগম আশা,আসাদ,আরমান, নিশাকে সবটা খুলে বলল। সব শুনে ওরা অবাকের ওপর অবাক হচ্ছে।

-এতো কিছু ঘটে গেছে আর কিছুই জানতে পারলাম না (আশা)

-আচ্ছা সব বুঝলাম কিন্তু প্রমি আপু কোথায় আপুকে তো কোথাও দেখতে পারছি না (নিশা)

-হ্যা তাই তো প্রমি কোথায় চাচীমা (আশা)

-প্রমিকে সাহেলা বেগম নিয়ে গেছে… (চাঁদনী)

চাঁদনী বেগমের কথার মাঝে আরমান চেচিয়ে বলে উঠলো

-ওয়াট! প্রমিকে নিয়ে গেছে মানে কি প্রমির যদি ওরা কোনো ক্ষতি করে দেয়? তখন কি হবে (আরমান)

-ওর কে ক্ষেতি করবো ভাইজান (চাঁদনী)

-চাচীমা আপনি বুঝতে পারছেন না কে ক্ষতি করতে পারে? প্রমির চাচার কথা বলছি যদি প্রমির ক্ষতি করে দেই (আশা)

-না না বউমা ঔ হৃদয় তো আর বাঁইচা নাই গো ও ওর শাস্তি পাইছে তাই আর চিন্তার ও কারণ নাই (চাঁদনী)

-মানে? (আসাদ)

-হ রে হৃদয় আর বাঁইচা নাই ও তো কিছু দিন আগে গাড়িতে চাপা পইড়া মারা গেছে শুনছি অনেক কষ্ট পাইছে মরার আগে কেউ সাহায্যের লেইগা আগাই আসে নি আল্লাহ ওর শাস্তি দিসে। আর প্রমিও তো একটা ভরসার হাত লাগবো কতদিন আর তোমাগো ঘাড়ে বসে খাবো। আর আমিই আর কইদিনই বা বাঁইচা আছি আমি যহন চইলা যাইবো তহন কি হইবো মাইয়াডার। রিদয় আগে কতবার আইশা প্রমিরে নিয়ে জাওনের কথা কই ছিলো আমিই তো জাইতে দেই নি প্রমিরে। তাই ওরে ওর বাপের কাছে পাঠাই দিসি মাইয়াডা এই টুকু বয়সে কত ঝাটালাঠি খাইলো (চাঁদনি)

কথাটা বলে চাঁদনী বেগম দীর্ঘ শ্বাস নিলো। প্রমি ওর বাবার কাছে শুনে আরমান যেনো খুশি হতে পাড়লো না মনে মনে প্রমিকে হারানোর ভয় কাছ করতে লাগলো।

-চাচীমা আব একটা কথা বলার ছিলো যদি কিছু মনে না করতেন আর আমার মনে হলো এই সময়টাই ঠিক এ কথাটা বলার জন্য (আশা)

-হ বউমা কও কি কইবা (চাঁদনী)

-আগে বলেন আমার এই ছোট আবদারটা রাখবেন (আশা)

-আইচ্ছা বলো (চাঁদনী)

-আসলে আমি প্রমিকে আমার মেয়ে করে রাখতে চাই।সারাজীবন প্রমি আর আরমানের বিয়ে দিতে চাই।আমি কথা দিচ্ছি কখনো প্রমিকে বউয়ের নজরে নয় মেয়ের করে রাখবো। ও যে এখানে আসার পর থেকে আমার বাড়িটা ফাঁকা হয়ে গেছে (আশা)

-এগুলান কি কইতাছো বউমা (চাঁদনী)

-যা বলছি ঠিকই বলছি চাচীমা। আমি আসা করছি আপনি আমার এই ছোট আবদারটা রাখবেন দয়া করে ফিরিয়ে দিবেন না (আশা)

-কি কইতাছো বউমা তুমি যে ভাবে কইলা আমি ক্যান কেউই ফিরাই দিতে পারবো না। আমার প্রমির জন্য যে আমার চিন্তার শেষ নাই তোমার মেয়ে যদি তোমার মেয়ে হইয়া থাকবার চাই তাইলে আমার কোনো আপত্তি নাই (চাঁদনী)

আরমানের ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটলো। আরমান আশার চোখের দিকে তাকালো তা দেখে আশা চোখ দিয়ে আশাশ দিলো।

★★★

দুপুর ৪টা বাজে বাইরে রোদের তীব্র ভাবসা গরম। প্রমি জানালার পাশে দাঁড়িয়ে পশ্চিম দিগন্তে লাল-কুসুম হেলে যাওয়া সূর্যটার দিকে তাকিয়ে আছে। দুপুর জুরে ঘুমানোর অনেক চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়ে জানালার পাশে এসে দাড়িয়েছে। দিনগুলো কেমন তিক্ত কাটছে যার কোনো প্রাণ নাই। প্রমি না চাইতেও বারংবার আরমানের কথা আরমানের সাথে কাটানো মুহুর্ত গুলো ভুলতে পারছে না। ওর বাড়ির কথা ভেবে বুকটা ভারী হয়ে যাচ্ছে কান্না গুলা দলা পাকিয়ে আসছে। মনের দহন গুলা দীর্ঘ শ্বাস দিয়ে বের করিয়ে দিচ্ছে বার বার মনে বলছে বাবা আছে তো আমি ছাড়া তো বাবার কেউ নাই।

-এখানে দাড়িয়ে কি করা হচ্ছে শুনি। আমাকে ছাড়াই খুব ভালো আছো দেখছি। না বলে চলে আসার শাস্তি কি রকম হতে পারে তোমার সেটা জানা আছে কি? (আরমান)

প্রমি নিজের মনে কল্পনা জল্পনা করছিলো। হঠাৎ চিরচেনা কন্ঠ শুনে পিছনে ফিরে আরমানকে দরজার সাথে হেলান দিয়ে দু-হাত বুকে গুজে রাখা দেখেলো। প্রমি নিজের কল্পনা ভেবে পাত্তা দিলো না। কেনো না এমন অনেক বার দেখেছে আরমান এসেছে কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার বিলিন হয়ে গেছে। আবার জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বলল

-আবার আইসে জ্বালাতে শালারে ভুলতে পারি না এর মাঝে আবার জ্বালাতে আসে। আমারে শান্তি দিবো না ও বাড়িতে ও দি নাই এখানেও দিচ্ছে না দূর তাকাবোই না ওর মতো ও চলে যাবে (প্রমি)

প্রমির মুখে এমন কথা শুনে আরমান টাস্কি খেলো। পরক্ষণেই ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মুখে হাসি প্রমির দিকে এগিয়ে গেলো। আরমান প্রমির কোমর জড়িয়ে ধরে কানে ফু দিয়ে আস্তে করে কামড় দিলো। প্রমি বড় বড় চোখ করে আরমানের দিকে তাকালো। আরমান প্রমির কোমরে চিমটি কেটে বলল

-আমি সত্যি আসছি এটা কল্পনার আমি নই। সত্যি আমিটাই তোমার সামনে দাড়িয়ে আছি। বুঝলে সাঝঁকণ্যা (আরমান)

প্রমি ব্যাথায় চোখ মুখ কুচকে নিলো। পিটপিট করে চোখ খুলে আরমানের দিকে তাকালো। আরমানের মুখে ‘সাঝঁকণ্যা’ ডাক শুনে প্রমি আরেক দাফা অবাক হলো। কথা বলার শক্তি টুকু হারিয়ে ফেলছে মনে হচ্ছে প্রমির কম্পিত ঠোঁটে কিছু বলতে যাবে তখনি। নিশা এসে বলল

-বাহ! বিয়ের কথা শুরু হতে না হতেই রোমাঞ্চ শুরু তাইলে আজই বিয়েটা দিয়ে দিতে বলি বাসর করে নে (নিশা)

নিশার কথা শুনে আরমান প্রমির থেকে দূরে গিয়ে দাড়িয়ে মাথা চুলকে বলল

-বেশি পেকেছিস তুই (আরমান)

-ওমা ছেলে দেখি এখন লজ্জাও পাই বাহ কেয়া বাত হে (নিশা)

-নিশা তোকে কিন্তু আমি…. (আরমান)

-এই ঘর থেকে বের হ আপুকে নিয়ে যেতে বলছে নিলজ্জ ছেলে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে ওয়াসরুমে যাওয়ার নাম করে এখানে এসে হবু বউয়ের সাথে ইয়ে করতে লজ্জা করে না বেশি বাড়াবাড়ি করলে এ কথা লিক করে দিবো বিয়াদ্দপ ছেমড়া যা ভাগ (নিশা)

আরমান কটমট চোখে তাকালো নিশার দিকে কিছু না বলেই চলে গেলো। প্রমি সেই থেকে লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে। তা দেখে নিশা প্রমি পাশে গিয়ে দাড়িয়ে প্রমির কাধে ধাক্কা দিয়ে বলল

-কি গো নতুন বউ লজ্জা পেলে চলবে এমন তো একটু একটু হবেই বিয়ে পর আরো হুম হুম হে হে হে (নিশা)

-ছিঃ নিশা কি বলছ এগুলা আর কিসের বিয়ে (প্রমি)

-বাইরে গেলেই জানতে পারবে বাই দা রাস্তা তুমি জানো তোমার জন্য মন খারাপ হচ্ছিল বলে তোমার কাছে আসছিলাম ও বাড়িতে এসে সারপ্রাইজ হয়ে গেলাম (নিশা)

-সারপ্রাইজ? কিসের (প্রমি)

-তুমি নাই সারপ্রাইজ (নিশা)

নিশার কথা শুনে প্রমি হেসে উঠলো।

★★★

ছাদের এক কোণে দাড়িয়ে আছে প্রমি কেনো জেনো খুব কষ্ট হচ্ছে ওর বাবাকে ছেড়ে যাবার কষ্ট এই ক’দিনে প্রমি ওর বাবার সাথে অনেকটা আগের মতো হয়ে গেছে। বাবাকে একা রেখে ছেড়ে থাকার কথা ভাবতেই কান্না গুলা দলা পাকিয়ে আসছে। এই ক’দিনে রিদয় সকালে উঠে প্রমিকে ডেকে দুজন নামাজ পড়ে একটু হাটাহাটি করে বাসায় এসে রিদয় চা বানাতো ওদের দুজনের জন্য সেটা খেতে খেতে এতোদিনের জমে থাকা কথাগুলো বলতো প্রমি সেগুলা মন দিয়ে শুনে ভাবতো কতটা একা কেটেছে এই কইটা বছর। প্রমিকে বাড়ির কোনো কাজ করতে দিতো না রিদয়। সবসময় আগলে রাখতো। প্রমি যে দিন থেকে এসেছে সেদিন থেকে দেখেছে রিদয় প্রতিরাতে প্রিয়ার ছবি আঁকড়ে ধরে কেঁদে বিভিন্ন অভিযোগ করে সে কান্না প্রমি নিজেও কেঁদে ফেলে বারংবার কতটা ভালো বাসলে এমন করে কাদতে পারে মানুষ ভেবে মনে একা কোণে ভালো লাগা কাজ করে। প্রমির চাচি, রায়হান (চাচাতো ভাই) আর দাদী এক বাড়িতে থেকে ও রিদয়ের ধারে কাছে আসতে ভয় পাই। রিদয় ওদের ওপরে রেগে থাকলেও নিজের দায়িত্ব ঠিকি পালন করে যায়। আজ যখন সবাই নিচে বিয়ের কথা বলছিলো তখন প্রমি রিদয়ের দিকে তাকিয়ে ছিলো রিদয়ের মুখ শুখনো ছিলো। সেদিকে তাকিয়ে থাকার ক্ষমতা প্রমির ছিলো না তাই ওখান থেকে চলে আসছে প্রমি। বিয়েটাতে না ও করতে পারবে না প্রমি যেখানে বিয়েটা হয়েই গেছে সেখানে বিয়েতে না করার কোনো কারণ দেখছে না। আবার বিয়ে না হলেও কিছু হতো না কিন্তু সেটা কেউ জানে না।

-মন খারাপ? (আরমান)

প্রমি চমকে পাশ ফিরে তাকালো আরমানকে দেখে বলল

-আপনি এখানে (প্রমি)

-কেনো আসতে পারি না? (আরমান)

-না আমি তেমনটা বলতে চাই নি (প্রমি)

-হুম তো কি বলতে চাইছো (আরমান)

-আসলে বিয়েটা এখন করতে চাই না আমি আব্বুর সাথে থাকতে চাই (প্রমি)

কথাটা বলে মাথা নিচু করে নিলো প্রমি। জানে এখন আরমানের কাছে ঝাড়ি খাবে তার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে ও। কিন্তু প্রমির ভাব না ভুল প্রমান করে দিয়ে আরমান বলল

-হুম থেকো আমি মানা করছি নাকি আর আমিও এমন পিচ্চি মেয়েকে মোটেও বিয়ে করতে রাজি নই (আরমান)

প্রমি অবাক হয়ে আরমানের দিকে তাকিয়ে বলল

-মানে (প্রমি)

আরমান প্রমির পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল

-মানে হলো তোমার পড়াশোনা শেষ হলে আমরা বিয়ে করবো ততদিন আব্বু সাথে থাকো আর আমার সাথে চুটিয়ে প্রেম করবা (আরমান)

-মানে (প্রমি)

-ওফ্ফ জান এতো মানে মানে করো কেনো এতো মানের উত্তর আমার জানা নেই। (আরমান)

প্রমি ছলছল চোখে তাকিয়ে বলল

-সত্যি বলছেন তো আপনি আমি আব্বুর সাথে থাকবো (প্রমি)

আরমান প্রমিকে মুখোমুখি দাড় করিয়ে বলল

-কাঁদো কেনো জান আমার কষ্ট হয় তো। তোমার চোখে পানি মানায় না কিন্তু কাজল মানায় আর তোমার মুখের মিষ্টি হাসি ওফ খুব দারুণ লাগে আমাকে মাডার করার জন্য ঔ টুকুই যথেষ্ট (আরমান)

প্রমি আরমানের কথায় লজ্জা পেয়ে আরমানের বুকে মুখ লুকালো। তা দেখে আরমান ঠোঁট কামড়ে হেসে বলল

-বাহ আমার বউ দেখছি খুব ফাস্ট। তো আর কিছু করবে নাকি আমি কিন্তু রেডি আছি করলে করতে পারো তোমারইতো বর (আরমান)

প্রমি আরমানকে ছাড়াতে চাইলো কিন্তু না পেরে বলল

-আপনি লুচ্চু খুব খারাপ হয়ে গেছেন এতো (প্রমি)

-আমার সাঝেঁরকণ্যার জন্য হতে হলো ‘ভালোবাসি সাঝেঁরকণ্যা’ প্রতি সাঝেঁরবেলায় তুমি আমি দিন শেষের সূর্যকে দেখিয়ে প্রেম করবো জানে সূর্যও আমাদেরকে দেখে জলে বুঝলে (আরমান)

-হুম (প্রমি)

-তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসি বললা না তার মনে তুমি আমাকে ভালো বাসো না (আরমান)

-হুম বাসি তো

-কি বাসো

-ভালোবাসি

-কাকে

-মিঃ আরমানকে খুব খুব খুব ভালোবাসি আর এভাবেই সারাজীবন থাকতে চাই

___________________সমাপ্ত___________________