#হঠাৎ_বর্ষনের_রাতে💖
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💖
— পর্বঃ০২
“হতভম্ব হয়ে অফিসের মধ্যে ঢুকতে গিয়ে তুমুল বেগে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে যায় ইরা!’সাথে সাথে ব্যাথা পেয়ে তার মুখ থেকে বেরিয়ে আসেঃ
—“উু মা গো আমার কোমড়,ওই কানা চোখে দেখোস না…
—“চোখে আমি না তুই দেখোস না(জেরিন, ইরার ফ্রেন্ড)
—“উড়ে দোস্ত কইস না আজকে অফিস আসতে অনেক লেট হয়ে গেছে,,তারওপর তুই তো জানিস ম্যানেজার আইমিন করিম স্যার না জানি কতটা রেগে আছে তাই একটু তাড়াতাড়ি ঢুকতে গিয়ে সলি দোস্ত…
—“হইছে আর সরি বলা লাগবে না তাড়াতাড়ি এখন উঠ…
“বলেই জেরিন ইরার হাত ধরে উঠালো!’দুজন দাঁড়াতেই ইরা বলে উঠলঃ
—“দোস্ত তোর লাগে নি তো…
—“না আমি ঠিক আছি…
—“আচ্ছা দোস্ত অফিসে যে নতুন বস আসার কথা ছিল এসেছে নাকি…
—“না এখনো আসে নি কিন্তু এসে পড়বে…
—“যাক বাবা বেঁচে গেছি…
“এরই মধ্যেই ইরার কথা শুনে পিছন থেকে হাল্কা গম্ভীর কন্ঠে করিম স্যার বলে উঠলেনঃ
—“না এখনো বাঁচো নি ইরা,তাড়াতাড়ি আমার রুমে আসো…
এতটুকু বলে চলে গেলেন উনি!’
—“ব্যস হয়ে গেল যে ভয়টা পাচ্ছিলাম সেটাই হলো দোস্ত আমি যাচ্ছি করিম স্যারের বকবকানি থেকে রক্ষা পেলে আবার দেখা হবে…
“এতটুকু বলে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে লাগলো ইরা!’আর জেরিন শুধু তাকিয়ে রইলো ইরার যাওয়া পানে কারন এটা নতুন নয়!’
____
“ম্যানজারের রুমে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে ইরা!’ইরাকে মাথা নিচু দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলে উঠল করিমঃ
—“কটা বাজে ইরা…
—“না মানে স্যার…
—“তোমাকে কালকে কতবার বলেছি আজ তাড়াতাড়ি আসতে,,তাড়াতাড়ি দূরে থাক রোজ যে টাইমে আসো তার থেকেও দেরি করেছো…
—“সরি স্যার…
—“হোয়াট সরি ইরা, তোমায় কালকে কি বলেছিলাম নতুন বসের রুমটা সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে…
—“আমায় জাস্ট দু’মিনিট সময় দিন স্যার আমি এক্ষুনি করে দিচ্ছি,আর নতুন বস তো এখনো আসে নি আমি এই যাবো আর এই আসবো…
“এই বলে কোনো মতে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল ইরা!’তারপর নতুন বসের রুমে ঢুকে সুন্দর মতো তার রুমটা সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো ইরা!’
“ফটাফট কাজ শেষ করে রুমে থেকে বেরিয়ে যায় ইরা!’তারপর দৌড়ে ম্যানেজারের রুমে গিয়ে বলেঃ
—“হয়ে গেছে স্যার…
—“এত তাড়াতাড়ি…
—“হুম স্যার এমনিতেও আমি কাল অর্ধেক কাজ করে রেখে গিয়েছিলাম তাই বেশি সময় লাগে নি…
—“ঠিক আছে আর একটা কাজ করো আমাদের অফিসের সামনেই একটা ফুলের দোকান আছে না ওখানে কিছু ফুলের অর্ডার দিয়েছিলাম কিন্তু এখনো ফুল আসার নাম নেই তুমি গিয়ে দেখো ফুল কেন আসছে না,
—“আচ্ছা স্যার…
“”বলেই দু’পা এগোতেই করিম ইরাকে বলে উঠলঃ
—“আচ্ছা শোনো একটু তাড়াতাড়ি এসো আর কিছুক্ষনের মধ্যেই নতুন বস আসবে কিন্তু…
—“ওকে…
“এতটুকু বলে তাড়াতাড়ি রুম থেকে বেরিয়ে যায় ইরা!’
_____
“গাড়ি করে যাচ্ছে অর্নব!’হঠাৎই তার চোখ যায় তার থেকে কয়েক কদম দূরে একটা ফুলের দোকানে ঢুকতে থাকা একটা মেয়ের দিকে!’কিছুটা কাল রাতের মেয়েটার মতো দেখতে বলে মনে হলো অর্নবের!’পরক্ষণেই আবার ভাবলো হয়তো চোখের ভুল!’কাল রাত থেকেই মেয়েটার মুখটা বার বার চোখের সামনে ভাসছে অর্নবের!’এই মুহূর্তে আফসোস হচ্ছে অর্নবের কেন যে কাল মেয়েটির নাম জিজ্ঞেস করেনি!’ছোট্ট একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললো অর্নব…
“কিছুক্ষনের মধ্যেই অর্নবের গাড়ি এসে থামলো একটা বড় কোম্পানির সামনে!’অর্নব এক পলক তাকালো সামনে এরই মধ্যে কোম্পানির ভিতর থেকে কয়েকজন লোক এসে সামনে দাঁড়ালো অর্নবের!’এদের মধ্যেই একজন লোক গাড়ির দরজা খুলতে খুলতে বললোঃ
—“ওয়েলকাম স্যার…
“অর্নবও মুচকি হেঁসে গাড়ি থেকে বের হলো!’অর্নবকে দেখে আসে পাশে সবাই জাস্ট হা হয়ে তাকিয়ে আছে!’অর্নবের পড়নে কালো কোট,প্যান্ট!’ওয়াইট শার্ট,গলায় টাই হাতে ব্লাক ওয়াচ,চুলগুলো সুন্দর করে গোছালো!’অর্নব গাড়ি থেকে বেরিয়ে আস্তে আস্তে ঢুকে পড়ে অফিসের ভিতরে!’তার সাথে সাথে একে একে সবাই ঢুকলো অফিসের ভিতর!’
___
“ফুল হাতে করে হাঁটছে ইরা অফিসের উদ্দেশ্যে!’এরই মাঝে তার ফোনটা বেজে উঠল উপরে জেরিনের নাম দেখে তাড়াতাড়ি ফোনটা তুলে বললোঃ
—“হ্যালো….
—“কই তুই বস তো এসে পড়েছে?’
—“এসে পড়েছে এই তো আসছি আমি…
—“তাড়াতাড়ি আয়…
—“হুম আসছি…
“বলেই ফোনটা কেটে দৌড়ে যেতে লাগলো ইরা!’এমন সময় তার পাশ কাটিয়ে গেল একটা গাড়ি,গাড়িটা এতটাই স্পিডে চলছিল যে রাস্তার সব কাঁদা পানি ছিটকে আসলো ইরার গায়ে!’ঘটনাচক্রে ইরা পুরো স্তব্ধ হয়ে যায়!’নিজের দিকে তাকিয়ে নিজেই বলে উঠলঃ
—“ছিঃ ছিঃ এখন কি হবে,,
.
.
“এদিকে….
“একে একে সবাই অর্নবকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে সাথে নিজেদের পরিচয় দিয়ে পরিচিত হচ্ছে অর্নবের সাথে!’অর্নবও হাসি মুখে সবার সাথে পরিচিত হচ্ছে!’এমন সময় অফিসের একজন ডাকলো ইরাকে!’কিন্তু ইরার কোনো নামগন্ধ নেই,,এরই মধ্যে সবার সামনে হাতে ফুল দিয়ে দৌড়ে এসে বললো ইরাঃ
—“এই তো আমি আসছি….
“সাথে সাথে অর্নবসহ সবাই তাকায় ইরার দিকে!’
“হা হয়ে তাকিয়ে আছে সবাই ইরার দিকে!’কিছু কিছু মানুষ তো অলরেডি হেঁসে ফেলেছে!’ইরা সবাইকে টপকে ম্যানেজারের সামনে গিয়ে বললোঃ
—“আপনার ফুল স্যার…
ইরার কথা শুনে ম্যানেজার হাল্কা হাসলো তারপর বললোঃ
—“নিজের কি অবস্থা করেছো ইরা…
—“আর বলবেন না স্যার একটা পাঁজি গাড়ি আমার এই অবস্থা করেছে…
“এই বলে আস্তে আস্তে এগিয়ে যায় ইরা তার বসের দিকে!’পুরোপরি বসের মুখটা দেখতেই চারশো চল্লিশ বোল্ডের জাটকা খায় ইরা!’তার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না কাল রাতের ছেলেটাই তার বস হবে!’
”অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইরা আর অর্নব একে অপরের দিকে!’দুজনেই দুজনকে দেখে বেশ অবাক হয়েছে!’এরই মাঝে ম্যানেজার এসে ফুলের তোড়া অর্নবের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললোঃ
—“এটা আপনার জন্য….
“লোকটির কথা শুনে অর্নব তার ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে ফুলের তোড়াটা হাতে নিলো!’ম্যানেজার ফুলের তোড়া হাতে দিতে দিতে বললোঃ
—“ওহ হলো ইরা স্যার আপনার এসিস্ট্যান্ট…
—“ওহ আচ্ছা…
—আর ইরা উনি হলেন আফজাল স্যারের ছেলে মিস্টার অর্নব….
“ম্যানেজারের কথা শুনে ইরা অর্নবের দিকে তার হাত এগিয়ে দিয়ে বললোঃ
—“nice to meet you sir…
—“same to….
“এমন সময় ম্যানেজার বললোঃ
—“চলুন স্যার আপনাকে আপনার রুমটা দেখিয়ে দেই,,ততক্ষণে ইরা ফ্রেশ হয়ে আসুক…
—“হুম…
“বলেই ইরার দিকে দু’পলক তাকিয়ে চলে যায় অর্নব তার রুমের দিকে…
“আর ইরাও কিছুটা শকট হয়ে তাকিয়ে থাকে অর্নবের দিকে!’…
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…..
#TanjiL_Mim♥️