#হঠাৎ_বর্ষনের_রাতে💖
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💖
— পর্বঃ০৩
“ওয়ারুমের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে ইরা!’তার যেন এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না কাল রাতের ছেলেটাই তার নতুন বস!’কিছুক্ষন স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে চটজলদি নিজেকে ফ্রেশ করে বাহিরে বেরিয়ে আসলো ইরা!’এরই মধ্যে ডাক পড়লো তার,ইরা বেশি কিছু না ভেবে জোরে শ্বাস ফেলে এগিয়ে গেল অর্নবের রুমের দিকে…
__
“নিজের টেবিলের কাছে চেয়ারের উপর বসে একটা ফাইল দেখছে অর্নব!’এমন সময় তার রুমের দরজায় নক করলো ইরা,বললো সেঃ
—“মে আই কাম ইন স্যার…
“অর্নবও বেশি কিছু না ভেবে বলে উঠলঃ
—“ইয়েস কাম…
“অর্নবের কথা শুনে ইরা আর দেরি না করে তাড়াতাড়ি ঢুকে পরলো অর্নবের রুমে!’তারপর টেবিলের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে বললোঃ
—“সরি স্যার একটু লেট হওয়ার জন্য…
—“ইট’স ওকে,বাট নেক্সট থেকে যেন দেরি না হয়…
—“ইয়েস স্যার…
—“হুম আপনার নাম ইরা এম আই রাইট…
—“জ্বী স্যার..
“এতটুকু বলে কিছুটা উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠল ইরাঃ
—“আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না স্যার আপনি আমার..
“আর কিছু বলার আগেই অর্নব বলে উঠলঃ
—“এটা অফিস মিস ইরা,আর অফিসের টাইমে অন্য টপিক নিয়ে কথা বলা পছন্দ করি না আমি,তাই অন্যসব বিষয় নিয়ে পড়ে কথা বলবো আগে বলুন আজ আমাদের কি কি কাজ?’
“অর্নবের কথা শুনে কিছুটা বিব্রত ফিল করে ইরা,সাথে সাথে মাথা নিচু করে বলে সেঃ
—“সরি স্যার…
—“হুম এখন বলুন কি কি কাজ আছে?’
—“আজ তেমন কোনো কাজ নেই স্যার কালকে একটা মিটিং আছে,,আর আফজাল স্যার আইমিন আপনার বাবা বলেছিলেন উনি এসে আপনাকে সবকিছু গুছিয়ে বলবে,এছাড়া কালকের মিটিং জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে সব আপনার টেবিল গুছিয়ে রাখা আছে আপনি দেখে নিতে পারেন…
“এই বলে ইরা একটা একটা করে ফাইল অর্নবকে দেখাতে লাগলো!’
“এমন সময় অর্নবের রুমে এসে হাজির অর্নবের বাবা!’ভিতরে ঢুকেই বললেন উনিঃ
—“কেমন চলছে অর্নব তোমার অফিস…
“আচমকা কারো কন্ঠ শুনে অর্নব ইরা দুজনেই তাকালো সামনে!’অর্নব তার বাবাকে দেখে ইরাকে বলে উঠলঃ
—“আচ্ছা ঠিক আছে আপনি এখন আসতে পারেন মিস ইরা আবার ডাকলে চলে আসবেন?’
—“ওকে স্যার….
“এতটুকু বলে চলে যায় ইরা!’ইরা যেতেই অর্নবের বাবা বলে উঠলঃ
—“তারপর অর্নব কেমন লাগছে তোমার অফিস,আর অফিসের মানুষজন…?’
—“হুম ভালো,আইথিংক সবাই খুব ভালো…
“মুচকি হাসলেন অর্নবের বাবা!’তারপর এটা ওটা নিয়ে কথা বলতে শুরু করে অর্নব আর অর্নবের বাবা!’
___
“নিজের ডেস্কে বসে কম্পিউটারে কাজ করছে ইরা!’এমন সময় তার টেবিলের উপর এককাপ কফি রাখলো জেরিন!’আর বললোঃ
—“দোস্ত কেমন লাগলো?’
—“এখনো খেয়ে দেখি নি তো…
“ইরার কথা শুনে জেরিন চোখ বড় বড় করে বললোঃ
—“কি…
—“বলছি কফি খেয়ে দেখিনি তো যে বলবো কেমন লাগলো..
—“হাধারাম তোকে কফির কথা বলি নি তো…?’
“জেরিনের কথা শুনে ইরা জেরিনের দিকে তাকিয়ে বললোঃ
—“তাহলে..
—“আমি তো বসের কথা বলছি,কেমন লাগলো তোর ওনাকে..
—“হুম ভালো…
—“শুধু ভালো, আমার তো ওনাকে হেব্বি লেগেছে!’
—“হু..
—“কি সুন্দর দেখতে বলতো সাথে কি সুন্দর সবার সাথে মিশে কথা বলেছে আমার তো বেশ লেগেছে,ওনার স্টাইল, ডেসিং লুক,হেয়ার স্টাইল সব..
—“হু…
—“কি হু হু করছিস?’
—“বলছি বুঝলাম তো..
—“কি বুঝেছিস?’
—“এই যে তোর অর্নব স্যারকে ভালো লেগেছে…
—“শুধু ভালো নয় এর থেকেও বেশি…
.
“এমন সময় একটা লোকের ওপর চেঁচিয়ে উঠলো অর্নব!’সাথে সাথে ইরা জেরিন দুজনেই চমকে উঠলো!’আশেপাশের সবাই বেশ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো অর্নবের দিকে!’অফিসের প্রথম দিনই এভাবে চেঁচামেঁচি করবে তাও কিনা ফাইল দিতে দু’মিনিট দেরি হয়েছে বলে,সবাই বেশ বুঝতে পেরেছে অর্নব খুব রাগী!’জেরিন আর ইরা তো দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিললো!’জেরিন তো বলেই উঠলোঃ
—“ওরে দোস্ত এই দেখি পুরোই রাগী তরমুজ…
—“তা তো দেখতেই পাচ্ছি…
____
“বিকেল ৪ঃ০০টা….
“অফিসের রুলস জানানোর জন্য ছোট্ট একটা মিটিং এর ব্যবস্থা করেছে অর্নব!’মিটিং রুমে অফিস কর্মকর্তা,কর্মচারিসহ সবাই এসে হাজির!’অর্নব সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলঃ
—“আজ থেকে সবাইকে অফিসের কিছু নিয়ম মেনে অফিসে আসতে হবে,যে মানতে পারবে না তাকে পানিশমেন্ট পেতে হবে সাথে রেজিকনেশন লেটার দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হবে..
“রুলস নাম্বার ওয়ানঃ সকাল ৯ঃ০০টার মধ্যে অফিসে হাজির হতে হবে,এর থেকে একমিনিট দেরি হলে তাকে পানিশমেন্ট পেতে হবে…
“প্রথম রুলসের কথা শুনে ইরার অবস্থা যায় যায় কারন অফিসের সবাই জানে প্রতিদিন লেট ওই করে…
“রুলস নাম্বার টুঃপরিপাটি হয়ে অফিসে ঢুকতে হবে,কোনো কাঁদা পানি মেখে অফিসে ঢোকা যাবে না…
“এবারের কথা শুনে সবাই ইরার দিকে তাকালো!’সবাই ইরার দিকে তাকাতেই ইরা শুকনো হাসি দিলো..
“এরই মাঝে অর্নব আবারো বলে উঠলঃ
“সাপ্তাহিক ছুটি বাদে পারমিশন ছাড়া ছুটি নেওয়া বা অফিস বন্ধ দেওয়া যাবে না,ঝড় বৃষ্টি যাই থাকুক না কেন অফিস রোজ আসতে হবে,যে পারমিশন ছাড়া অফিস অফ দিবে তার মাইনে থেকে টাকা কাটা যাবে,,
“আর হ্যাঁ অফিস কাজ ছাড়া অন্যকিছু নিয়ে বকবক করা যাবে না,মনে রাখবেন অহেতুক বকবক করা আমার পছন্দ নয়,
“বেশি কথা বলতে ইচ্ছে হলে অফিস শেষে কোনো ক্যাফে,হোটেল বা রেস্টুরেন্টে নিয়ে বকবক করবেন…
“সময়ের কাজ সময়ে করতে হবে,,কাজে ফাঁকি দিলে চলবে না…
“এন্ড লাস্ট অফিস থেকে মেয়েরা তাড়াতাড়ি বের হবে বেশি রাত অবধি দেরি করে অফিস করার কোনো প্রয়োজন নেই,বেশি প্রয়োজন হলে বাসায় বসেও কাজ করা যাবে…
“আশাকরি সবাই বুঝতে পেরেছেন!’
“লাস্ট কথা শুনে ইরা অবাক হয়ে তাকায় অর্নবের দিকে!’কারন সে বেশ বুঝতে পেরেছে কথাটা তাকে উদ্দেশ্য করেই অর্নব বলেছে!’
“অর্নবের কথা শুনে সবাই নিজেদের মধ্যে বকবক শুরু করে দেয়!এতে অর্নব কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলেঃ
—“আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন সবটা এখন যান যে যার কাজে চলে যান…
“অর্নবের কথা শুনে কেউ আর কোনো কথা না বারিয়ে বেরিয়ে যায় মিটিং রুম থেকে!’সবাইকে বের হতে দেখে ইরাও যেতে নেয়!’ইরাকে যেতে দেখে বলে উঠল অর্নবঃ
—“মিস ইরা…
“সাথে সাথে দাঁড়িয়ে পড়ে ইরা,তারপর অর্নবের সামনে দাঁড়িয়ে বলেঃ
—“জ্বী স্যার…
—“কাল থেকে অফিস দেরি করে আসা যাবে না কথাটা মনে রাখবেন,আপনি যে অফিসে রোজ লেট করে আসেন এটা কিন্তু আমার জানা তাই কাল থেকে এই বিষয়ে মনোযোগ রাখবেন…
—“জ্বী স্যার….
—“আরেকটা কথা কাজের টাইমে বকবক করবেন না,,এটা আপনি আর আপনার বান্ধবী মাথায় রাখবেন..!’
“এবারের কথা শুনে ইরা বেশ অবাক হয় তার মানে তখন যে জেরিন আর আমি কথা বলেছি উনি দেখেছে ইরার ভাবনার মাঝে অর্নব আবারো বললোঃ
—“আশা করি বুঝেছেন?’
—“জ্বী স্যার,এখন কি যেতে পারি আমি?’
—“হুম…
“উওরে ইরা আর কিছু না বলে বেরিয়ে যায় রুম থেকে!’এত এত রুলসের কথা শুনে ইরার মাথা ঘুরছে!’ইরা বের হতেই জেরিন বলে উঠলঃ
—“কি বললো রে তোকে?’
—“অফিসে লেট করে না আসতে সাথে তোকে আর আমাকে বকবক না করতে বারন করেছে..
—“ওরে দোস্ত মনে হয় অফিসের ভালোদিন চলে আসছে…
—“হ দোস্ত…
“অফিসের সবাই বেশ বুঝতে পেরেছে তাদের এখন নিয়ম মেনে ভালোভাবে কাজ করতে হবে,,হেয়ালি করলে চলবে না….
___
“রাত_৯ঃ০০টা….
“সারাদিন কাজ করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে তুমুল বেগে কলিংবেল বাজাচ্ছে ইরা!’এতবার কলিংবেলের আওয়াজ পেতেই রান্নাঘর থেকে ইরার মা এসে দরজা খুললো,দরজা খুলতেই….
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…..
[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!’আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে]
#TanjiL_Mim♥️