হঠাৎ বর্ষনের রাতে পর্ব-০৬

0
497

#হঠাৎ_বর্ষনের_রাতে💖
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💖
— পর্বঃ০৬

“আচমকা মুখে পানি পড়তেই লাফ মেরে উঠে বসলো ইরা তারপর হতভম্ব কন্ঠে বললো সেঃ

—“মা ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে, না হয় ছাঁদ ফুটো হয়ে পানি পড়ছে…

“ইরার কথা শুনে রায়হান হাসতে হাসতে বলে উঠলঃ

—“আপি ঘূর্ণিঝড় না টনেডো আসছে…

“রায়হানের কথা শুনে তাড়াতাড়ি চোখ খুলে তাকালো ইরা,তারপর চোখ বড় বড় করে বললো সেঃ

—“কি…

“সাথে সাথে উচ্চ স্বরে হাসলো রায়হান!’রায়হানকে হাসতে আর ওর হাতে মগ দেখে ইরার আর বুঝতে বাকি রইলো না এখানে আসলে কি হচ্ছিল!’ইরা রাগী লুক নিয়ে বললোঃ

—“রায়হানের বাচ্চা তোরে আজকে খাইছি…

“ইরার কথা শুনে রায়হান দৌড়!’অন্যদিকে ইরা রায়হান যেতে নিলেও আর কিছু করলো না চুপচাপ বসে রইলো কিছুক্ষন তারপর ঘড়ির দিকে তাকাতেই কেবল ৭ঃ০০টা বেজেছে দেখে মনটা ভালো হয়ে গেল তার!’শুরুতে রায়হানের ওপর রেগে থাকলেও এখন ভালো লাগছে ইরার!’খুশি মনে ইরা বিছানা ছেড়ে নামলো!’তারপর জানালা জুড়ে থাকা সাদা পর্দাগুলোকে সরিয়ে নিলো নিমিষেই সাথে সাথে বাহির থেকে বয়ে আসলো ঠান্ডা বাতাস!’বাতাস গায়ে লাগতেই হাল্কা শীত শীত করলো ইরার!’পরক্ষণেই চোখ বন্ধ করে নিলো সে,আজ যেন সকালের এই সুষমও প্রকৃতির বাতাসকে ফিল করতে ভালো লাগছে ইরার!’অল্প কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থেকে ইরা চোখ খুলে চলে যায় ওয়াশরুমে,,

“অন্যদিকে….

“ফ্রেশ হয়ে গোসল সেরে সাদা টাওয়াল পড়ে ওয়াশরুম থেকে বের হলো অর্নব!’চুল দিয়ে হাল্কা হাল্কা পানি পড়ছে তার,অর্নব বেশি কিছু না ভেবে চলে যায় তার আলমারির দিকে,আলমারি খুলে কয়েকটা জামা দেখতে থাকে অর্নব,তারপর বেশি কিছু না ভেবে ওয়াইট শার্ট বের করে অর্নব, সাথে নীল কোট,নীল প্লাট,ব্লাক টাই বের করে বিছানার উপর রাখলো!’

.

“ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হয় ইরা,ফটাফটা গিয়ে আলমারি খোলে সে,তারপর কিছুক্ষন আলমারির দিকে তাকিয়ে থেকে রেড কালারের একটা ফুলহাতার চুড়িদারের দিকে চোখ যায় তার,আজ যেহেতু সময় আছে তাই একটু সেজেগুজেই যাবে ইরা!’এরই মাঝে মা তাকে ব্রেকফাস্ট করতে ডাকদিল!’ইরাও তার হাতে থাকা চুড়িদারটা বিছানার উপর রেখে চলে যায় খাবার খেতে….

.

নীল কোট, নীল প্যান্ট ওয়াইট শার্ট সাথে ব্লাক টাই পড়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে অর্নব!’চুলগুলোকে সুন্দর মতো আচরিয়ে,গায়ে পারফিউম দিলো অর্নব তারপর হাতে ব্লাক ওয়াচ, গলায় টাই আর একটু ঠিক করে একবার তাকায় আয়নার দিকে অর্নব!’নিজেকে পারফেক্ট মনে হতেই আর বেশি কিছু না ভেবে রুম থেকে বেরিয়ে যায় সে….

.

“ব্রেকফাস্ট সেরে লাল চুড়িদার পড়ে আয়নার সামনে চেয়ারের ওপর বসে আছে ইরা!’আজ চুলগুলোকে সামনে দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে খুলে দিয়েছে ইরা,মুখে হাল্কা মেকাপ দিয়ে চোখে কাজল এঁকে সাথে চিকন করে আইলার আর মাসকারা দিয়ে সাজলো ইরা, কানে একজোড়া ঝুমকো আর লাস্ট ঠোঁটে লাল লিপস্টিক দিয়ে তৈরি ইরা!’জামার হাতা ফুল থাকায় আজ কোনো ব্যাচলেট বা ঘড়ি কোনোটাই পড়লো না ইরা!’অবশেষে গায়ে ওড়না জড়িয়ে একবার আয়নার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে ব্যাগ নিয়ে চললো ইরা!’আজ লেট হবে না ভেবেই খুশি খুশি লাগছে ইরার!’মনটাও ফুড়ফুড়ে তার,খুশি মনে বাসার সবাইকে বাই জানিয়ে জুতো পড়ে বেরিয়ে পড়লো ইরা অফিসের উদ্দেশ্যে….

.

“ব্রেকফাস্ট সেরে ছোট বোন মা,আর বাবাকে বিদায় জানিয়ে বাসা থেকে বের হয় অর্নব!’বাহিরে এসেই নিজের গাড়ি গিয়ে বসে পড়ে অর্নব,অর্নব বসতেই ড্রাইভার গাড়ি চালাতে শুরু করলো….

____

“অফিসেই ঢুকতেই সবাই হা হয়ে তাকিয়ে রইলো ইরার দিকে!’এর দুটো কারন এক আজ প্রথম হয়তো ইরা টাইম মতো অফিসে এসেছে আর দুই ইরাকে দেখতে সুন্দর লাগছে!’ইরা টোটালি সবাইকে ইগনোর করে একটু ভাব নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলো!’তারপর নিজের রুমে ঢুকেই সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেঃ

—“হ্যালো এভরি ওয়ান!’

“আচমকা ইরার কন্ঠ শুনে জেরিনসহ ওর আশেপাশে থাকা সবাই তাকালো ইরার দিকে!’আজ টাইম মতো আসতে দেখে সাথে ওর সাজ দেখে সবাই বলে উঠলঃ

—“হ্যালো ইরা…

“জেরিন তো দৌড়ে গিয়ে ইরাকে বলে উঠলঃ

—“উড়ে দোস্ত তোকে কি লাগছে রে…

“জেরিনের কথা শুনে হাল্কা ভাব নিয়ে বললো ইরাঃ

—“দেখতে হবে না কে সেঁজেছে…

“ইরার কথা শুনে হাসলো জেরিন!’তারপর বললোঃ

—“কি ব্যাপার বলতো আজ এতো সেজেগুজে এসেছিস..

“জেরিনের কথা শুনে ইরা নিজের ডেস্কে বসতে বসতে বললোঃ

—“আরে তেমন কোনো ব্যাপার নেই,প্রতিদিন লেট হয় তাই সাজার মন আর টাইম কোনোটাই থাকে না আজ দুটোই থাকায় সেজেছি একটু,,

—“একটু সাজেই তোকে কি লাগছে দোস্ত…

“হাসলো ইরা!’

“এরই মাঝে অফিসের সামনে হাজির হলো অর্নব!’বেশি কিছু না ভেবে গাড়ি থেকে বের হয় অর্নব তারপর চলে যায় সে অফিসের ভিতর!’অফিসের ভিতর ঢুকতেই একে একে সবাই অর্নবকে হায় হ্যালো বলে ওয়েলকাম জানালো!’অর্নবও সবাইকে উওর জানিয়ে চললো নিজের রুমের দিকে!’….

“অফিসের বেশির ভাগ মেয়েরাই অর্নবের দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে,তবে অর্নব সেদিকে তেমন লক্ষ্য না দিয়ে চলে যায় নিজের মতো….

“আরেকদিকে,

“বস এসেছে শুনেই যে যার কাজে মন দিলো!’আর ইরা ভেবে নিয়েছে আর দু’মিনিটের মধ্যে তার ডাক পড়বে আর বলতে না বলতেই ডাক পড়লো ইরার!’ইরাও বেশি কিছু না ভেবে এক বুক সাহস আর ফুড়ফুড়ে মেজাজ নিয়ে চললো অর্নবের রুমের দিকে..

___

“ল্যাপটপে কিছু কাজ করছিল অর্নব এমন সময় বলে উঠল ইরাঃ

—“মে আই কাম ইন স্যার…

“ইরার কন্ঠ শুনে অর্নব তার ল্যাপটপ থেকে মুখ সরিয়ে তাকালো ইরার দিকে তারপর বললোঃ

—“কাম…

“এতটুকু বলে ইরাকে পা থেকে মাথা অবদি স্ক্যান করলো অর্নব!’আজ ইরাকে একদমই অন্যরকম লাগছে অর্নবের কাছে,, কিছুক্ষনের জন্য হলেও অর্নবের চোখ আঁটকে যায় ইরার ওপর!’অর্নবের ভাবনার মাঝখানেই ইরা হেঁটে এসে দাঁড়ালো অর্নবের পাশ দিয়ে তারপর বললোঃ

—“স্যার…

“স্যার” শব্দটা কানের আশার সাথে সাথে অর্নব তার ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসলো!’তারপর বললোঃ

—“হুম,আজ একদম টাইম মতো এসেছো গুড…

“উওরে হাল্কা হাসলো ইরা!’তারপর বললোঃ

—“তাহলে কাজ করা যাক স্যার…

—“হুম….

“তারপর ইরা আর অর্নব কালকের বিষয় নিয়ে ডিসকাস করতে লাগলো!’

“কিছুক্ষন পর,,

—“ওকে স্যার এখন আপনি বাকিগুলো দেখে নিন,আমি যাচ্ছি কোনো দরকার পড়লে ডাকবেন কিন্তু…

—“ঠিক আছে…

“উওরে ইরা আর কিছু না বলে বেরিয়ে যেতে নেয় অর্নবের রুম থেকে!’এরই মাঝে হতভম্ব হয়ে অর্নবের রুমের ভিতর ঢুকলো দুজন সিকিউরিটি গার্ড!’

“সিকিউরিটি গার্ডদের দেখে ইরা দাঁড়িয়ে পড়লো ওখানেই,,আর অর্নব বললো ওদেরঃ

—“কিছু কি হয়েছে?’

—“জ্বী স্যার একটা মেয়ে আপনার গাড়ির জানালার গ্লাস ভেঙে ফেলেছে…

“গার্ডের কথা শুনে অর্নব অবাক হয়ে বললোঃ

—“কি….

—“জ্বী স্যার তাও আবার ইচ্ছে করে….

“এবারের কথা শুনে অর্নব ইরা দুজনেই বেশ অবাক হলো!’অর্নব তো রাগী কন্ঠে বলে উঠলঃ

—“আমার গাড়ির গ্লাস ভাঙার সাহস হলো কার…?’
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…..

[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!]

#TanjiL_Mim♥️