#হঠাৎ_বর্ষনের_রাতে💖
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💖
— পর্বঃ০৫
“মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে ইরা,ভয়ে হাত পা কাঁপছে তাঁর!’না জানি অর্নব তাকে কি করে?’
“অন্যদিকে রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে অর্নব ইরার দিকে!’অর্নব তার হাতের ফাইলটাকে স্ব-জোরে আওয়াজ করে রাখলো টেবিলের উপর!’ফাইলের আওয়াজে কেঁপে উঠল ইরা!’অর্নব বসা থেকে উঠে দাঁড়াতেই ইরা হতভম্ব কন্ঠে অর্নবের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলঃ
—“সরি স্যার সরি স্যার বিশ্বাস করুন আমি ইচ্ছে করে কিছু করি নি,ওই একটু উত্তেজিত হয়ে গেছিলাম তার কারনে প্লিজ স্যার প্লিজ রাগ করবেন না,এইবারের মতো ক্ষমা করে দিন…
“পুরো এক শ্বাসে কথাগুলো বলে থামলো ইরা!’ইরার কথা শুনে অর্নব ইরার দিকে এগোতে এগোতে বলে উঠলঃ
—“একি তো দেরি করে এসেছো তারওপর..
“অর্নবের কাজ দেখে ইরা ভয়ে ঘাবড়ে গিয়ে পিছনে যেতে যেতে বললোঃ
—“প্লিজ স্যার এই লাস্ট বারের মতো ক্ষমা করুন আই প্রমিস কাল থেকে আর লেট হবে না আর তখনকার বিষয় নিয়েও সরি স্যার মন থেকে সরি …
—“তুমি জানো,তোমার এই দেরির জন্য আমাদের কতগুলো সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে…
“বলেই ইরার মুখোমুখি দাঁড়ালো অর্নব,অর্নবের কাজে ইরা ঘাবড়ে গিয়ে চোখ বন্ধ করে বললোঃ
—“এইবারের মতো সরি স্যার,,
“অর্নব আরো কিছু বলবে এমন সময় অর্নবের টেবিলের উপর থাকা ফোনটা বেজে উঠল!’ফোনটা বেজে উঠতেই ইরা চোখ খুলে বলে উঠলঃ
—“স্যার আপনার ফোন…
“ইরার কথা শুনে অর্নব একবার ইরার দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে চলে যায় ফোনের কাছে!’
“অর্নব সরতেই ইরা সস্থির নিশ্বাস ফেললো!’আর কিছুক্ষন হলেই ভয়ে তার জানটা বেরিয়ে যেত!’
“অন্যদিকে অর্নব ফোনে বলে উঠলঃ
—“আমরা এক্ষুনি আসছি?’জাস্ট ফাইভ মিনিট ওয়েট..
“এতটুকু বলে ফোনটা কেটে দেয় অর্নব!’তারপর ইরার দিকে রাগী লুকিং এ তাকিয়ে বললোঃ
—“কাম ফাস্ট ইরা,আগে মিটিং সারি তারপর তোমায় দেখছি…
“বলেই হন হন করে বেরিয়ে যায় অর্নব!’
“অর্নব যেতেই ইরা নিজের দিকে একবার তাকিয়ে তাড়াতাড়ি চলে যায় অর্নবের পিছন পিছন!’
____
“একটা সুন্দর রেস্টুরেন্টের ভিতর ঢুকছে ইরা আর অর্নব!’অর্নব আগে আর ইরা তার পিছন পিছন!’ইরা ভিতরে ঢুকেই আশেপাশে তাকালো
তাদের কাছ থেকে কয়েককদম দূরেই চেয়ারে বসে আছে ওদের দুজন নতুন ক্যালাইন্ট!’ইরা লোকগুলোকে চিনতে পেরে বললোঃ
—“এই যে ওনারা বসে আছে স্যার?’
“অর্নব ইরার কথার উওরে কিছু না ওদিকেই পা বাড়ালো!’ইরাও চললো অর্নবের পিছন পিছন!’
“অর্নবকে দেখেই দুজন লোক দাঁড়িয়ে পড়লো!’কারন অর্নব তাদের না চিনলেও তারা অর্নবকে চেনে,আর তাছাড়া ওদের মধ্যে একজন ইরাকে চেনে!’অর্নব তাদের সামনে আসতেই অর্নবের দিকে হাত এগিয়ে দিয়ে বললো একজন লোকঃ
—“হ্যালো মিস্টার অর্নব,
“অর্নবও বেশি কিছু না ভেবে হাত মিলালো ওদের সাথে তারপর হাল্কা হেঁসে বললোঃ
—“হ্যালো মিস্টার আরিফ,নাইচ টু মিট ইউ..
—“সেইম হেয়ার…
—“প্লিজ সিট (পাশের লোকটি)
“তারপর তিনজন একসাথে বসে কথা বলতে লাগলো!”আর ইরা অর্নবের পাশ দিয়ে দাঁড়ালো যদিও ইরার এখানে আসার তেমন কোনো প্রয়োজন ছিল না কিন্তু অর্নব যেহেতু নতুন সেই জন্য আসতে হলো ইরাকে!’এরই মাঝে ওয়েটার এসে কিছু খাবার সার্ভ করলো অর্নবদের…
“বেশ কিছুক্ষন পর…
“হঠাৎই অর্নব ও তার সামনে থাকা দুজন লোক দাঁড়িয়ে পড়লো, তিনজনের মুখেই রয়েছে মিষ্টি হাসি!’আরিফ মুচকি হেঁসে বললোঃ
—“তাহলে ডিল ফাইনাল মিস্টার অর্নব?’
—“ইয়েস এন্ড থ্যাংক ইউ ফর এভরিথিং..
—“সেইম টু ইউ মিস্টার অর্নব!”
—“ওকে মিস্টার আরিফ বাই এন্ড সি ইউ..
—“ওকে মিস্টার অর্নব!’
“উওরে অর্নব আর কিছু না বলে হাঁটতে শুরু করলো!’অর্নব যেতেই ইরাও মুচকি হেঁসে বাই জানিয়ে চললো অর্নবের পিছন পিছন…
“ইরা যেতে নিতেই আরিফের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটি বলে উঠলঃ
—“এক্সকিউজ মি…
“কারো ডাক শুনে দাঁড়িয়ে পড়লো ইরা তারপর মুচকি হেঁসে বললোঃ
—“ইয়েস…
“অন্যদিকে কিছুদূর এগিয়ে ইরাকে আসতে না দেখে দাঁড়িয়ে পড়লো অর্নব!’লোকদুটোর সাথে ইরাকে হাসতে হাসতে কথা বলতে দেখে কেমন একটু লাগলো অর্নবের!’পরক্ষণেই বেশি কিছু না ভেবে বেরিয়ে গেল সে রেস্টুরেন্ট থেকে!’
—“আর ইউ অর্নব এসিস্ট্যান্ট এম আই রাইট?’
“লোকটির কথা শুনে আরিফ বলে উঠলঃ
—“হুম উনি মিস ইরা অর্নব গ্রুপ অফ কোম্পানির সাথে বেশ কিছুদিন যাবৎই কানেক্টেড আছেন আমার ওনার সাথে এর আগেও পরিচয় হয়েছে…
“আরিফের কথা শুনে পাশের ছেলেটি হেঁসে ইরার দিকে হাত এগিয়ে দিয়ে বললোঃ
—“গ্রেট,হাই আই এম আসফি…
“ছেলেটির কথা শুনে ইরাও বেশি কিছু না ভেবে হেঁসে ছেলেটির দিকে হাত এগিয়ে দিয়ে বললোঃ
—“হ্যালো আমি ইরা…
—“নাইচ নেইম,,,
—“থ্যাংক ইউ!’
___
“কিছুটা বিরক্ত নিয়ে গাড়িতে বসে আছে অর্নব কারন ইরা এখনো আসছে না!’কিছুটা রাগ হচ্ছে অর্নবের কারন সে বুঝতে পারছে না ইরা এখনো ভিতরে কি করছে?’এমন সময় রেস্টুরেন্টের ভিতর থেকে হাসতে হাসতে বের হয় ইরাসহ আরিফ আর আসফি!’অর্নব তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন এরই মধ্যে ইরা ওদেরকে বাই জানিয়ে এগিয়ে আসলো অর্নবের গাড়ির দিকে!’ইরাকে আসতে দেখে তাড়াতাড়ি অন্যদিকে চোখ সরিয়ে ফেললো অর্নব!’
“এরই মাঝে ইরা এসে বসলো অর্নবের পাশে!’ইরা বসতেই ড্রাইভার গাড়ি চালাতে শুরু করলো..
.
“রাত_১০ঃ০০টা….
“ডিনার সেরে বিছানার উপর বসে আছে অর্নব,রাতের জোৎসা ভরা আলো এসে পড়ছে তার রুমে!’আকাশের তাঁরারাও উঁকি মারছে অর্নবের রুমে,সাথে চারপাশ থেকে বয়ে আসছে শীতল মেশালো বাতাস,,এমন সময় হুট করেই রাতের আকাশের আবহাওয়া পাল্টে যেতে লাগলো কিছুক্ষনের মধ্যেই আকাশের তারারা ডুবে গেল মেঘের আড়ালে আর মেঘেরা ডেকে গেল কালো মেঘে,সাথে কালে মেঘ থেকে শুরু হলো মেঘের গর্জন!’তারপর বলতে না বলতেই আকাশ থেকে নিচে গড়িয়ে পড়তে লাগলো ঝুম ঝুম করে বৃষ্টি,আচমকাই চোখের পলকে মেঘের এমন বদলে যাওয়া দেখে বেশই অবাক হয় অর্নব!’তবে ভালো লাগছে তাঁর…
“হুট করেই অর্নবের সেদিন রাতের কথা মনে পড়লো যেদিন রাতে এমনই এক বৃষ্টির মধ্যে ইরা এসেছিল তার গাড়ির সামনে হুট করেই বৃষ্টির মধ্যে জড়িয়ে ধরে ছিল তাকে!’আচমকাই ইরার কথা কেন মনে পড়লো তা বুঝলো না অর্নব!’…
“এই মুহূর্তে অর্নবের মনে হলো…
“এই মাথাটাও না হলো এই আবহাওয়া বদলে যাওয়ার মতো!’কখন যে কিসের খেয়াল আসবে সেটা সে ব্যক্তিও জানে না!’
“অর্নব বেশি কিছু না ভেবে কাঁথা মুড়ি দিয়ে,রুমের লাইট অফ ঘুমিয়ে পড়লো বিছানায়!’
|| আর আরেকজন… ||
” নিজের রুমের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে বাহিরে হাত পেতে রয়েছে ইরা,বৃষ্টির ফোঁটা এসে পড়ছে তার হাতে!’যদিও শীত করছে তার পরও এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে ভালো লাগছে তার!’বৃষ্টি বরাবরই পছন্দের ইরার!’এই বৃষ্টির রাতেই,,
“সেদিনের কথা ভাবতেই ভয়ে শরীর কাঁপে ইরার!’
—“ভাগ্যিস সেদিন অর্নব স্যারের গাড়ির সামনে পড়েছিলাম তা না হলে কে জানে কি হতো?’এতটুকু তো পরিষ্কার অর্নব স্যার যতই রাগী হোক এমনিতে খুব ভালো…
“ভেবেই হাল্কা হাসলো ইরা!’হঠাৎই ইরার মনে পড়লো কাল অফিস আছে তার!’আর অফিস লেট হলে,আজ তো তাও মিটিং এর জন্য বেঁচে গেছিল!’ কিন্তু কাল তো ভাবতেই তাড়াতাড়ি বেলকনি থেকে চলে আসে ইরা!’তারপর আবার এলাম সেট করে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে!’যে করেই হোক কাল তাকে তাড়াতাড়ি উঠতেই হবে…
“রাতের আকাশে মেঘ বেয়ে বৃষ্টি হচ্ছে খুব!’মাঝে মাঝে দু’একবার বিদুৎও চমকাচ্ছে..
“এরই মাঝে অর্নব ইরা যে যার রুমে কাঁথা জড়িয়ে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে…!’
___
“পরের দিন সকালে….
“লাগাতার তিনটে এলাম বেজে চলেছে ইরার বিছানার পাশ দিয়ে!’তারপরও ইরার ঘুম ভাঙছে না এমন সময় রায়হান হাতে এক মগ পানি এনে ঢেলে দিলো ইরার মুখে…..
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…..
#TanjiL_Mim♥️