হঠাৎ বর্ষনের রাতে পর্ব-০৮

0
478

#হঠাৎ_বর্ষনের_রাতে💖
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💖
— পর্বঃ০৮

“অবাক দৃষ্টিতে গাড়ির জানালার গ্লাস খুলে তাকিয়ে আছে অর্নব সামনের দিকে!”কারন তার থেকে বেশ খানিকটা দূরে একটা খোলা মাঠের এক কিনারায় গাছের নিচে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে ইরা!’পরনে তার ব্লাক চুড়িদার,হাতে ব্লাক কাঁচের চুড়ি, খোলা চুল!’আশেপাশে ইরা ছাড়া আর কেউ নেই,,দূর থেকেই ইরার মুখটা স্পর্শ দেখা যাচ্ছে!’অর্নব মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে ইরার দিকে,বুকের ভিতর এক অজানা অনুভূতি ফিল হচ্ছে তাঁর,সাথে এক অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করছে তাঁর!’আকাশ ফেটে চারিদিকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে, সাথে মেঘেরা মন খুলে গর্জন দিচ্ছে!’হুট করেই অর্নব আনমনে হেঁসে উঠল ইরার কান্ড দেখে কারন ইরা মেঘের গর্জন শুনে দৌড়ে গাছের নিচে দাঁড়াচ্ছে আবার মেঘের গর্জন শেষ হলে গাছের আড়াল থেকে সরে মুক্ত আকাশের নিচে দাড়িয়ে তার মুখশ্রীতে চোখ বন্ধ করে পবিত্র বৃষ্টির পানির ছোয়া নিচ্ছে!’ইরার এই যাওয়া আসার মুহূর্তটা বেশ লেগেছে অর্নবের!’আনমনেই হাসলো অর্নব…

.

“খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে ইরা!’বৃষ্টি প্রচন্ড ভালোবাসে ইরা!’এমন সময় তার দিকে এগিয়ে আসে অর্নব!’অর্নবকে দেখে হেঁসে ফেলে ইরা!’তারপর দৌড়ে এসে হাত ধরে অর্নবের!’ইরার কাজে অর্নব অবাক হয়ে শুধু তাকিয়ে রয় ইরার দিকে!’ইরা খুশি মনে বৃষ্টির মধ্যে অর্নবের হাত ধরে কাঁপল ড্যান্স করতে থাকে!’অর্নবও বেশ খুশি মনে করে সব!’খোলা আকাশ,মুক্ত বাতাস,গাছের পাতার ঝিরিঝিরি শব্দ,সাথে টপটপাটপ বৃষ্টির ছোঁয়া আর ইরার ঠোঁটের মিষ্টি হাসি সবই যেন এক অন্যরকম ঘোরের মধ্যে আঁটকে ফেলেছে অর্নবকে!’হঠাৎই মেঘের গর্জন শুনে হুট করেই ইরা অর্নবকে জড়িয়ে ধরে!’আচমকা পিছন থেকে গাড়ির হন বাজার শব্দ শুনে হুস আসে অর্নবের!’এতক্ষণ সে কিসব ভাবছিল ভাবতেই হেঁসে ফেলে অর্নব!’তারপর নিজেই নিজেকে বলেঃ

—“এসব কি ভাবছিলি তুই অর্নব?’

“আবারো মুচকি হাঁসে অর্নব!’এরই মাঝে ফোন বাজে তার উপরে মায়ের নাম্বার দেখে কলটা তুলে বলে সেঃ

—“হ্যালো মা…

“ছেলের কথা শুনে অন্যপাশে চিন্তিতভরা কন্ঠে বলে উঠল অর্নবের মাঃ

—“কোথায় তুই..?’

—“এই তো মা রাস্তায়..

—“তুই কি পৌঁছে গেছিস..

—“না মা কেবলই তো বের হলাম..

—“আজকে আর কোথাও যেতে হবে না বাড়ি চলে আয় আকাশের অবস্থা ভালো নয়…

—“কিছু হবে না মা তুমি টেনশন নিও না…

—“কাজটা কাল করলেও তো হয় আজ কি বৃষ্টি নেমেছে দেখেছিস হয়তো ঝড় আসবে…

“মায়ের কথা শুনে অর্নব বিরবির করে ইরার দিকে তাকিয়ে বললোঃ

—“তা তো অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে মা…

“অর্নবের বিরবিরানি ঠিক ভাবে বুঝতে না পেরে বলে উঠল অর্নবের মাঃ

—“কিছু কি বললি,হ্যালো ঠিক ভাবে শোনা যাচ্ছে না অর্নব…

“মায়ের কথা শুনে হুস আসে অর্নবের!’তাড়াতাড়ি কথা পাল্টে বলে সেঃ

—“আরে মা কিছু বলি নি নেটওয়ার্ক সমস্যা আচ্ছা তুমি চিন্তা করো না আমি আসছি…

“অর্নবের কথা শুনে খুশি হয় তার মা, খুশি মনেই বলে সেঃ

—“ঠিক আছে তাড়াতাড়ি আয়!’

—“আচ্ছা মা…

“এতটুকু বলে ফোনটা কেটে দেয় অর্নব!’তারপর সে যাদের সাথে মিট করতে যাবে তাদেরকে ফোন করে আসতে বারন করে!’এমন সময় ইরা অর্নবের সামনে এসে কিছুটা অবাক হয়ে বললোঃ

—“স্যার আপনি…?’

“আচমকা ইরার কন্ঠ শুনে চমকে উঠলো অর্নব!’তাড়াতাড়ি ফোনটা কেটে ইরার দিকে তাকিয়ে বলেঃ

—“হুম আমি একটা কাজে বেরিয়ে ছিলাম…

—“ওহ..

—“তা তুমি এখানে কি করছো?’

—“আমি তেমন কোনো কিছুই করছি না একটু বাহিরের হাঁটতে বেরিয়ে ছিলাম তারপর হুট করে বৃষ্টি শুরু হলো আমার আবার বৃষ্টি খুব ভালো লাগে স্যার তাই একটু!’ যাগ গে আপনি আপনার কাজে যান আমার জন্য দেরি হয়ে যাচ্ছে…

—“না তেমন কোনো ব্যাপার নয় যে কাজের জন্য যাচ্ছিলাম সেটা ক্যান্সেল করে দিয়েছি এখন বাড়ি যাবো…

—“ওহ ঠিক আছে যান স্যার আমিও বাড়ি যাবো অনেকক্ষণ হয়েছে বাসা থেকে বেরিয়েছি….

“এতটুকু বলে চলে যেতে নেয় ইরা!’আর অর্নব ইরার যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকে!’হঠাৎই কিছু একটা ভেবে বলে উঠল অর্নবঃ

—“শোনো…

“পিছন থেকে অর্নবের কন্ঠ শুনে দাঁড়িয়ে পড়ে ইরা!’তারপর আবার অর্নবের কাছে এসে বলে সেঃ

—“জ্বী স্যার বলুন…

—“না মানে বৃষ্টিতে ভিজে তো নিজের যাচ্ছে তাই অবস্থা করেছো এখন কি এভাবে রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে যাবে বাড়ি…

—“না মানে স্যার বাসা তো বেশি দূর নয় আমি যেতে পারবো…

—“বেশি বুঝো কেন,গাড়িতে উঠো আমি তোমায় পৌঁছে দিচ্ছি…

—“না স্যার তার প্রয়োজন পড়বে না আমি যেতে পারবো…

—“আমি তোমায় গাড়িতে উঠতে বলেছি ইরা(ক্ষিপ্ত কন্ঠে)

“অর্নবের এবারের কথা শুনে ইরা আর না করতে পারে নি,,কিছুক্ষন চুুপ থেকে বলেঃ

—“ঠিক আছে স্যার…

“এতটুকু বলে গাড়ির দরজা খুলে বসে পড়ে সে গাড়িতে!’ইরার বসতেই অর্নবও আর দেরি না করে গাড়ি চালাতে শুরু করলো….

____

“ইরাদের বাড়ির সামনে আসতেই ইরা গাড়ি থেকে নেমে গেল!’ইরা গাড়ি থেকে মুচকি হেঁসে বললো অর্নবকেঃ

—“থ্যাংক ইউ স্যার,

—“ম্যানশন নট!’

—“স্যার আপনি চাইলে কিন্তু আমাদের বাড়িতে আসতে পারেন…

—“ইট’স ওকে বাট আজ নয় অন্য একদিন…

—“ঠিক আছে স্যার বাই এন্ড সি ইউ…

—“ওকে…

“উওরে ইরা আর কিছু না বলে চলে যায় তার বাড়ির ভিতর!’অর্নবও আর বেশিক্ষন না দাঁড়িয়ে গাড়ি স্ট্যার্ট দিয়ে চলে যায় নিজের গন্তব্যের দিকে….

____

“বিকাল_৫ঃ০০টা….

“বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে অর্নব!’এখনও বৃষ্টি হচ্ছে খুব!’এক অদ্ভুত ফিলিংস হচ্ছে অর্নবের বার বার শুধু ইরার মুখচ্ছবি ভেসে আসছে তাঁর!’সাথে এক অদ্ভুত শিহরণ বয়ে যাচ্ছে অর্নবের ভিতর দিয়ে!’অর্নব আনমনেই বলে উঠলঃ

—“Do you love him, Arnab?

“হেঁসে ফেললো অর্নব!’কেন যেন বার বার তার হাসি পাচ্ছে খুব….

.
.

“মাঝখানে কাটলো দু’দিন….

“আজকে অফিসে অর্নবের ডিল অনুযায়ী তার প্রোডাক্ট ডেলিভারি দেওয়ার দিন!’মোটামুটি সবকিছুই ঠিকঠাক ভাবে গুছানো হয়েছে সবটা!’সবদিক দেখতে দেখতে ইরাসহ সবাই বেশ ব্যস্ত আজ!’আজও অর্নব কাজের ফাঁকে ফাঁকে তাকিয়ে ছিল ইরার দিকে!’যেটা ইরার চোখে তেমন পড়ে নি!’ইদানীং কারনে অকারণে ইরাকে দেখতে ভালো লাগে অর্নবের…

.

“অবশেষে সব গুছিয়ে গাছিয়ে বড় গাড়ি করে অর্নবের অফিসের প্রোডাক্টগুলো সুন্দর মতো পার্সেল করে পাঠানো হলো আরিফদের ফ্যাক্টরিতে!’এবারের প্রোডাক্টগুলো সাকসেসফুলি হলেই অর্নবের অফিসের প্রফিট আরো বেড়ে যাবে!’সবাই বেশ এক্সাইটেড বিষয়টা নিয়ে!’পুরো কাজটা কমপ্লিট করতে করতে সবার বিকেল গড়িয়ে গেল!’কাজের চাপে কারোই আজ লান্স করা হয়নি!’

“সবাই যে যার ডেস্কে বসে খুশি মনে লান্স করছে!’আজ সবাই বেশ ক্লান্ত…

“রাত_৮ঃ০০টা….

“আজকের মতো কাজ সেরে অফিস থেকে বের হবে ইরা!’সবাই চলে গেছে এক সে বাদে!’ইরা তার ব্যাগটা নিয়ে যেই না বের হতে যাবে সেই মুহূর্তে পুরো অফিস অন্ধকারে ঢেকে গেল মানে লোডশেডিং হলো!’আচমকা এমনটা হওয়াতে কিছুটা ঘাবড়ে যায় ইরা!’তাড়াতাড়ি ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে মোবাইলের লাইট অন করে আস্তে আস্তে বের হতে নেয় সে!’হঠাৎই কিছুর শব্দ কানে আসতেই আরো ভয় পেয়ে যায়!’যদিও অন্ধকারে তেমন ভয় লাগে না ইরার কিন্তু এই মুহূর্তে তার খুব ভয় করছে!’হুটহাট শব্দে বুক কাঁপছে ইরার!’এমন সময় কিছু একটা নড়তে দেখে ভয়ে চেঁচিয়ে উঠলো ইরা!”

“তারপর ভূত ভূত বলতে বলতে দিল দৌড়…..

“আচমকা কারো চেঁচানো শুনে নিজের রুম থেকে বের হয় অর্নব!’…..
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…..

[বাকিডা কাইল কমু…🥱
ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ!’আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে]

#TanjiL_Mim♥️