হবে কি আমার পর্ব-২৬ এবং শেষ পর্ব

0
8017

#হবে_কি_আমার💞
#writer_Ruhi_mondal
#পর্ব_26 (অন্তিম পর্বের প্রথম খন্ড)

সারা রাত অনুর দুচোখে ঘুম নেই, মেঝেতে বসে সারারাত কেঁদেছে সে, অরিন্দমকে অনেক কষ্টে রুমে এনেছে, দু একবার বমি ও করেছে, সেগুলো পরিষ্কার করে অরিন্দম কে ভালো করে শুইয়ে দেয়, দুটোর দিকে অরিন্দম ঘুমিয়ে পড়ে, বিড়বিড় করে মনে সব কথা গুলো বলেছে অরিন্দম, রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে ফোন পর্যন্ত, অনুর কথা গুলো শুনে বুক ফেটে যাচ্ছে,অনেক যন্ত্রনা নিয়ে ভোরের দিকে একটু ঘুমিয়ে পড়েছিল অনু, কিন্তু সেটা বেশিক্ষনের জন্য না, সকাল হতেই উঠে অরিন্দমের দিকে একবার তাকিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে যায় কিচেনে, অনেকটা সময় পর এক গ্লাস নুন লেবুর শরবত এনে রুমে দাঁড়ায়, অরিন্দমের একটু আগে ঘুম ভেঙেছে তার হয়তো বেশি কিছু মনে পড়ছে না মাথাটা প্রচুর ভার হয়ে আছে, তাই খাটে হেলান দিয়ে মাথা চেপে ধরে বসে আছে ,অনু রুমে এসে দাঁড়িয়ে অরিন্দম কে এমন অবস্থা দেখে ওর সামনে গিয়ে দাঁড়াল, অরিন্দম অনুর দিকে তাকিয়ে আবার চোখ বুঝিয়ে নেয়,,

অনু অরিন্দমের দিকে এগিয়ে গিয়ে গ্লাস টা সামনে ধরে শান্ত গলায় বলল,

_______”খেয়ে নাও!”

অরিন্দম চোখ বন্ধ রেখেই বলল,

________”আমার চিন্তা কাউকে করতে হবে না!”

অনু কিছুক্ষণ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বাঁ হাতে অরিন্দমের গাল চেপে ধরে গ্লাসটা মুখের সামনে ধরে,, অরিন্দম চোখ খুলে ওর দিকে তাকায়,

অনু বলে,

_________”তোমার চিন্তা আমিই করব,, আর এটা তোমাকে এক্ষুনি খেতেই হবে, আমি কোন কথা শুনব না, বলে গ্লাসটা মুখে চেপে ধরে অরিন্দমের ও খুব প্রয়োজন জলটা তাই ও আর কথা না বাড়িয়ে ঢকঢক করে জলটা খেয়ে নেয়, অনু ওড়না দিয়ে অরিন্দমের মুখটা মুছিয়ে দিয়ে বাইরে যেতে যেতে ভাঙ্গা গলায় বলল,

___________”ভালবাসলে বিশ্বাস রাখতে হয়!”

অরিন্দম চমকে উঠে অনুর দিকে তাকায়,অনু ততক্ষনে রুম থেকে বেরিয়ে গেছে, অরিন্দম মাথা চেপে ধরে অনু বলা কথাটা ভাবতে থাকে,,, কি বোঝাতে চাইল সে? ওর কি কোথাও কোনো ভুল হচ্ছে?কিন্তু ও যে স্পষ্ট শুনেছিল, সেগুলো তো মিথ্যে ছিল না,তাহলে কিসের বিশ্বাস?

___________
__________________

সারাবেলা অরিন্দম আর নিচে নামেনি, অনু ও উপরে যাইনি, দুজনেই মনে তোলপাড় চলছে, অনু কখনো ভাবতেও পারেনি অরিন্দম তাকে এতটা সন্দেহ, এতটা অবিশ্বাস করবে, ওর এখন সত্যিই খুব কষ্ট হচ্ছে, ও কি কোনদিনই নিজের ভালোবাসা বোঝাতে পারেনি অরিন্দম কে?ও কি এতটাই কম ভালোবেসেছে তাকে? যে এতো সহজেই তাকে সন্দেহ করল?

ডাইনিং টেবিলে বসে আছে অনু, সারাদিন কিছু খাইনি, ঘড়িতে দুপুর দুটো বাজে, অরিন্দম নিচে নামেনি, রান্নার মাসিমা রান্না করে দিয়ে চলে গেছে, অনু ডাইনিং টেবিলে বসে ঝিমুচ্ছে, হঠাৎ করেই কারোর পায়ের শব্দ হকচকিয়ে মাথা তুলল, অরিন্দম গম্ভীরমুখে নিচে নেমে আসছে, সোজা এসে টেবিলে বসে, অনু কিছু না বলে খাবার বেরে দিতে থাকে,অরিন্দম অনেক ভেবেছে,, ভেবে এই সিদ্ধান্তে এসেছে যে ও অনুকে সব পরিষ্কারভাবে জিজ্ঞাসা করবে,তারপর যা হওয়ার হবে,,, এই ভেবে অনুকে কিছু বলতে যাবে তখনই ডোরবেল বেজে উঠলো, অনু যেতে নিলে অরিন্দম ছোট করে বলল,,

________” আমি দেখছি!”

দরজা খোলার পর অরিন্দম যেটুকু শান্ত ছিল সেটা যেনো রাগে পরিণত হল, কারণ ওর সামনে দাঁড়িয়ে অনুরাগ, শুধু অনুরাগ নয় সাথে মিলি তিশা ও আছে, ও শক্ত চোখে অনুরাগে দিকে তাকিয়ে পিছনে ফিরে অনুর দিকে তাকাল,অনু মুখে হাসি রেখে বলে,,

________ আরে তোরা এসে গেছিস এত লেট করলি যে?

মিলি দৌড়ে গিয়ে অনুকে জড়িয়ে ধরে বলে,

_________আমাদের জন্য লেইট হয়নি হয়েছে অনুরাগের জন্য ওই মেয়েদের থেকে বেশি দেরি করছিল,,,তিশা, অনুরাগ ওদের দিকে এগিয়ে যায়, তারপর অনুরাগ বলে আমার জন্য হয়নি রিধির জন্য হয়েছে।

অনু কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল,,

_________ এই এক সেকেন্ড রিধি কে?

অনুরাগ হাত দেখিয়ে বলল,

________ ওই যে তিশা,ওর বাড়ির নাম রিধি আজ জানলাম।

অনু ছোট করে ও বলল,,

তারপর তারা আবার একে অপরকে দোষ দিতে থাকে,অনুরাগ নিজেকে বুঝিয়ে নিয়েছে অনু শুধু অরিন্দমের।

অরিন্দম দূর থেকে এইসব দেখে ওর ভাঙ্গা মনটা আরো ভেঙে যাচ্ছে,এত কুল ভাবে অনুকে দেখে,ওর আর এইসব যেনো সহ্য হচ্ছে না,সে সিঁড়ির দিকে অগ্রসর হলে, তিশা এগিয়ে গিয়ে বলে,,

_______’আরে জিজু আপনি কেন চলে যাচ্ছেন? আমরা এসেছি আমাদের সাথে কথা বলবেনা?”

অরিন্দম একটু হাসার চেষ্টা করে বলল,

______”আমাকে কি প্রয়োজন তোমরা এঞ্জয় করো না!”

মিলি এগিয়ে গিয়ে বলল,,

_________ জিজু এমন বাহানা দিয়ে আমাদের কাছ থেকে চলে গেলে চলবে না ,, চলুন আমরা একসাথে বসে লাঞ্চ করব সেইজন্য তো অনু আমাদের ডেকেছে,,, আপনি প্লিজ চলুন আমাদের সাথে জয়েন করবেন,,

অরিন্দম আর কথা ফেলতে পারল না ওদের সাথেই খেতে বসলো, সবাইকে খাবার বেড়ে দেয় অনু,,, কিন্তু নিজে নিচ্ছে না দেখে তিশা বলল,

_______অনু তুই নিচ্ছিস না কেন ?তুইও আমার সাথে খেয়ে নে!

অনু একটু হেসে বললো,

_______আমি একটু আগেই নুডুলস খেয়েছি এখন আর খেতে ইচ্ছা করছে না তোরা খা,ওরা আর কিছু বলল না যে যার মত খেতে থাকলো, অরিন্দম খাচ্ছে না শুধু এক আঙ্গুল দিয়ে খাবার নাড়াচাড়া করছে ও জানে অনু কিছু খায়নি,ও একবার ভাবছে অনুকে খেতে বলবে আর ভাবছে অনুরাগকে কেন আসতে বলেছে ,,তাহলে যেটা ভাবছিলাম সেইটাই তো সত্যি,, এসব নানা কথা ভাবতে থাকে শেষে না পেরে উঠে দাঁড়ায়,, সবাই ওর দিকে তাকায়, অরিন্দম অনুর পাশে গিয়ে ওকে হাত ধরে চেয়ারে বসিয়ে দেয়,, তার পাশে বসে, অনু কিছু বলছে না সবাই বসে আছে বলে,, অরিন্দম প্লেটে খাবার বেড়ে দিয়ে শক্ত গলায় বলল,,

____ খাও,, কিন্তু অনু চুপ করে বসে আছে, বাকিরা খেতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে,,,, অনু খাবে না এত সহজে অরিন্দম বুঝতে পারছে তাই সে ভাত মাখিয়ে নিয়ে ওর মুখের সামনে ধরে, অনু অরিন্দমের দিকে জলভরা চোখে তাকাতেই অরিন্দম বুকটা কেমন করে উঠলো,,, নিজের হাজার কষ্ট হলেও ও কোনো দিন অনুর চোখের জল সহ্য করতে পারে না,,, কিন্তু আজ নিজেকে সামলে চুপচাপ খাবার বাড়িয়ে দেয়,অনু নিশব্দে একবার খেয়ে নিয়ে বলল,

_____আমি একা খেতে পারব, বলে একা খেতে থাকে!

অরিন্দম ও চুপ করে খাবার খেতে থাকে, খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ করে অনু কিচেনে সব ঠিক করে,তারপর ড্রয়িংরূমের সোফায় বসে কিছুক্ষণ গল্প করে নেয় সবার সাথে, অরিন্দম ওপরে চলে গেছে অনেক আগেই, সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওরা তিনজন অনুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বার হয়ে পড়ে, তিশা অনেক বার অরিন্দমের সাথে কথা বলতে চেয়েছে, কিন্তু সে রুম লক করে বসে আছে,,তাই ও হতাশ হয়ে গাড়িতে উঠতে যাবে তিশা অরিন্দম কে পুলের দিকে এসে দাড়াতে দেখে ও খুশি হয়ে এগিয়ে যায়,

অরিন্দম পাশে তিশাকে দেখে বলল,,

______” কিছু বলবে!”

তিশা বলে,,____” আপনি কিছু বলবেন?”

অরিন্দম ভ্রু কুঁচকে বলে,

______” আমি কি বলবো!”

তিশা ঠান্ডা গলায় বলল,

_______”অনু অনুরাগে বিষয়ে!”

অরিন্দম তাচ্ছিল্য হেসে বলল,

________ও তাহলে তো তুমি সবই জানো তাই না, তা কবে নিয়ে যাচ্ছ?” তোমাদের বান্ধবী কে অনুরাগের কাছে!”

তিশা হালকা হেসে বলল,

__________”জিজু আমি আপনাকে অত্যান্ত বুদ্ধিমান একজন ভেবেছিলাম, কিন্তু এখন দেখি আপনি সবচেয়ে বড় বোকা!”

অরিন্দম জলের দিকে তাকিয়ে বলল,

_______”আমি সবচেয়ে বড় বোকা, একদম স্টুপিড , না হলে কি কাউকে এতোটা বিশ্বাস করে ঠকতাম!”

তিশা হেসে বলে,

_______”আপনি ওকে কখনো বিশ্বাস করেছেন?”

অরিন্দম ওর কথায় কিছু না বুঝে ওর দিকে তাকিয়ে বলল,

______”মানে?”

______মানে এই যে আপনি ওকে কখনো বিশ্বাস করেনি!

অরিন্দম একটু রেগে গিয়ে বলল,,

________” কি যা তা বলছ?আমি ওকে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করতাম!”

তিশা ও একটু জোরে বলল,,

_______তাহলে আপনি ওকে দুদিন অনুরাগের সাথে দেখে এতটা সন্দেহ কি করে করতে পারলেন?”

অরিন্দম রেগে গিয়ে বলে,

___আমি নিজের কানে শুনেছিস,

তিশা কিছুক্ষন চুপ থেকে ছলছল চোখে বলে,,

________”আপনি কি শুনেছেন ?আপনি পুরো কথা শুনেছেন রেস্টুরেন্টের? নাকি পুরো কথাটা শুনে ছিলেন যে অনু কার সাথে ফোনে কথা বলছে? আপনি পুরোটা না শুনে ওকে এমনভাবে অবিশ্বাস করলেন?

অনু শুধু আপনাকেই ভালোবাসে,ওর কাছে পুরো পৃথিবী আপনি,,,,সেই আপনি ওকে এমন,,

অরিন্দম থমথমে গলায় বলল,,___” মানে?”

তিশা চোখের জল মুছে বলল,,,

_______সেইদিন রেস্টুরেন্টে অনু ভালোবাসি কথাটা অনুরাগকে বলছিলো,, আপনার নামে,অনুরাগ জিজ্ঞাসা করেছিলো, যে ও আপনাকে কতটা ভালোবাসে,,অনু তখন খুশি হয়ে নিজের মনের সব কথা বলছিল যে ও আপনাকে খুব ভালোবাসে,, আর আপনি পুরোটা না শুনেই বাইরে থেকেই চলে এসেছে,,,,আর ফোনেও কথা আমার সাথেই বলছিল আমি অনুরাগকে ভালোবাসি ও আমাকে বোঝা ছিল কিন্তু আপনি?

অরিন্দম থম মেরে দাঁড়িয়ে আছে,তিশার কথা শুনে, ও এটা কি করে করতে পারলো? অরিন্দমের অবস্থা বুঝতে পেরে তিশা বলল,

__________আমি আসছি,, পারলে নিজের ভুলটা শুধরে নেবেন তাড়াতাড়ি।

অরিন্দম কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে দৌড়ে বাড়ির ভিতরে যায়, তারপর নিচে সব জায়গায় অনু কে খুঁজতে থাকে,, কিন্তু অনুকে দেখতে না পেয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে নিজের রুমে যায়,, তারপর পাশের রুমে ও যায় সেখানেও অনুকে কোথাও খুঁজে পায়না, অরিন্দম এবার নিজেকে পাগল পাগল ও মনে হচ্ছে, নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছা করছে ও কি করে করতে পারলো এতোটা অবিশ্বাস, আবার ও দৌড়ে নিজের রুমে যায় ব্যালকনিতে ভালো করে চেক করে কিন্তু অনুকে দেখতে পায় না,ও এবার ছাঁদে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাইরে বার হতে যাবে তখনই খাটের উপর একটা চিরকুট দেখে, চিরকুট দেখে অরিন্দমের বুক শুকিয়ে গেল, কিছুক্ষন থম মেরে দাঁড়িয়ে থেকে ভয়ে ভয়ে এগিয়ে গেল খাটের কাছে, কাঁপা কাঁপা হাতে চিরকুটটা নিয়ে চোখটা একবার বুঝিয়ে একটা শুকনো ঢোঁক গিলল,,, চিঠিটা খুলে তার চোখে একরাশ জল ভর করলো,, দাঁড়িয়ে থাকা শক্তি হারিয়ে ও ধপ করে ফ্লোরে বসে পরে,,,,তারপর চিঠিটা জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে ওঠে,,,,,ও এখন কি করবে কিছু ভেবে পাচ্ছে না সব যেনো শেষ হয়ে গেল,ও নিজেই যেনো সব নষ্ট করে ফেললো,,,,কারন চিঠিটা অনুর লেখা শুধু দুটো লাইন লেখা,,

________”ভালোবাসলে বিশ্বাস রাখতে হয় বরবাবু, যেখানে বিশ্বাস নেই, সেখানে কি ভালোবাসা আছে?”

#চলবে

#হবে_কি_আমার💞
#writer_Ruhi_mondal

অন্তিম পর্ব

অরিন্দম ফ্লোরে বসে পাগলের মতো কেঁদে চলেছে আর ভাবছে, এখন কোথায় খুঁজবে অনুকে ,অনু কি তাকে ছেড়ে চলে গেল সারা জীবনের মতো? অনু কি তার ভুলের জন্য এত বড় শাস্তি দেবে তাকে?এখন কোথায় পাবে ও অনুকে? পেলেও অনু কি তাকে ক্ষমা করবে ? কিন্তু তাকে খুঁজতে হবে যেকোন উপায়ে,,,,ওকে ছাড়া ও বাঁচতে পারবেনা কিছুতেই বাঁচতে পারবেনা!!এই ভেবে অরিন্দম নিজেকে সামলে উঠে দাঁড়িয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে গাড়ি চাবি আনতে যায় ঠিক তখনই পিছন থেকে কেউ তার চোখ ধরে নেয়,,,অরিন্দম কিছুটা চমকে গেলেও পরক্ষণে হাতের উপর হাত দিতেই তার এতক্ষন জ্বলতে থাকা বুকটা যেন একটু শান্ত হয়ে এলো, কারণ এটা অনু, অরিন্দম পিছনে ঘুরতে যাবে তখনই অনু আর ও জোরে হাত চেপে ধরে বলল,

___________”না একদম পিছনে ঘুরবে না চুপ করে আমি যেখানে নিয়ে যাচ্ছি চলো, বলে হাঁটা শুরু করে,,, অরিন্দম কিছু বলছে কিছু অনু শুনছে না,,তাই অরিন্দম চুপ করে ওর সাথে যেতে লাগলো, না দেখে হাঁটতে বেশ কষ্ট হচ্ছে কিন্তু অনু তাকে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, অনেকটা সময় পর একটা জায়গায় দাঁড়ায় অনু চোখ থেকে হাত সরিয়ে নিলেও অরিন্দমের চোখে একটা কালো কাপড় বেঁধে দেয়,তারপর বলে,,

_________আমি যতক্ষণ না বলব তুমি চোখের বাঁধন খুলবে না!

অরিন্দম ও মাথা নাড়ায়, অনেকটা সময় পর অনু বলল,,

_________”বরবাবু চোখের বাঁধন খোলো!”

অরিন্দম তাড়াতাড়ি চোখের বাঁধন খুলে চোখ কচলে ভালো করে চারদিকে দেখতে থাকে,,

এখন ও বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে আছে চারিদিকে সুন্দর করে ফুল আর ক্যান্ডলেস দিয়ে সাজানো ছাদের মাঝ বরাবর একটা টেবিলের ওপর কেক রাখা, অরিন্দম এইসব কিছু দেখে বেশ অবাক হল ও ভাবছে অনুর মনে কি চলছে?আর অনু কোথায়? চারিপাশে থেকে চোখ সরিয়ে তারপর নিজের সামনে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে,, অনু ওর সামনে হাতে একগুচ্ছ লাল গোলাপ নিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে আছে, অরিন্দম চরম অবাক ও আশ্চর্য হয়ে অনুর দিকে তাকিয়ে আছে,

অনু ফুল গুলো বাড়িয়ে দিয়ে বলল,

________”হ্যাপি বার্থডে বরবাবু, মেনি মেনি হ্যাপি রিটার্নস অফ দা ডে,,,

এন্ড আই লাভ ইউ!”

অরিন্দম চোখ ছল ছল করে অনুর দিকে তাকিয়ে আছে অনু তার সাথে এতটা সহজ ভাবে কেনো বিহেভ করছে , ওর তো,,

অনু বলল”

_________”কি হলো কতক্ষণ বসে থাকবো ফুলগুলো নেবে তো!”

অরিন্দম কাঁপা কাঁপা হাতে ফুলগুলো নেয়!

অনু উঠে দাঁড়াতে

অরিন্দম বলে ওঠে,

_________’বউ আ’মি,,

অনু অরিন্দম কে থামিয়ে দিয়ে বললো,

_________”সব কথা পরে হবে আগে কেক কাটবে চলো!”

অরিন্দম আবার বলল,,

_______” কিন্তু তুমি একবার আমার কথাটা শোনো,

অনু হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে গেল তারপর হাতে নাইফ ধরিয়ে দিয়ে বলল,,

________ আগে কেক কাটিং হবে,তারপর সব কথা শুনব, অরিন্দম চুপ করে মোমবাতি তে ফু দিল, তারপর কেক কেটে অনুকে খাইয়ে দেয়,অনু ও অরিন্দম কে খাইয়ে দিল।

অরিন্দম এবার অনুর দিকে তাকিয়ে বলে,,

__________”বউ আই এম সরি, প্লিজ তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমি ভুল,

অনু অরিন্দম কে থামিয়ে অরিন্দমের গালে হাত রেখে বলল,,

______বরবাবু আমি জানি তুমি কিছু ভুল করোনি, সব ভুল আমারি ছিল,, হয়তো আমি তোমার কাছে আমার ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারিনি তাই তো তুমি,

অরিন্দম চোখের জল ছেড়ে বলল,

________”বউ প্লিজ আমি,

অনু আবার বলল,

________জানি তুমি আমাকে অবিশ্বাস করতে চাওনি,হয়তো তোমার সামনে এমন দৃশ্য দেখে তুমি মনের মধ্যে কল্পনাকে বাস্তবে ভেবে নিয়ে এত কিছু করে ফেলেছ,,,, আমাকে অবিশ্বাস করেছো,, আমার ভালোবাসা ভুল বুঝেছ , কিন্তু তুমি ভয় পেয়ো না আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না, কারণ আমি জানি তুমি আমাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসো,,,,, আর একটা কথা কি জানো?

________যাকে সবথেকে বেশি ভালবাসবে তার একটু অবহেলাতেই মনে হাজারো জল্পনা-কল্পনার তৈরি হয়ে যায়,, তুমি সেগুলো কে প্রশ্রয় দিয়েছে, কিন্তু তাও আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা একটুও কমেনি, তুমি সবসময় আমাকে এক আকাশ ভালোবেসেছ,,আর আমি সেই ভালোবাসা কারনেই তোমার কাছে থাকতে রাজি!

অরিন্দম অপরাধীর ন্যায় তাকিয়ে আছে,ও ওর কাজে অনুতপ্ত সেটা স্পষ্ট,,,

অনু জোরালো গলায় বলল,,

________ বরবাবু তোমার টিয়াপাখি যে তোমার খাঁচায় বন্দি, সে অন্য কারোর খাঁচায় কখনো বন্দি হতে পারেনা,,,,, ভালোবাসি তোমাকে আমি ,,তুমি বিশ্বাস করো আর না করো, তবুও বলবো ভালোবাসি।

অরিন্দম অনুকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠে বলে,,

_________বউ প্লিজ তুমি এমন ভাবে বলো না আমার সত্যিই ভুল হয়েছে, তুমি আমাকে যা শাস্তি দেবে দাও,,, কিন্তু মনের মধ্যে একটু ও অভিমান রাখবে না প্লিজ!

অনু কেঁদে উঠে বলল,

______ বরবাবু তোমাকে শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই, তোমাকে শুধু ভালোবাসায় দিতে পারবো, এছাড়া আর কিছু না!

অরিন্দম অনুকে ছাড়িয়ে,,অনুর চোখের জল মুছে দিয়ে চোখেমুখে অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিয়ে বলল,,

______ আই প্রমিস জীবনে কখনো আর তোমাকে সন্দেহ করব না।

অনু নাক টানতে টানতে বলল,

_________”প্রমিস করছো কিন্তু, আমি এটাই প্রথমবার বলে তোমাকে ছেড়ে দিলাম, দ্বিতীয়বার হলে আর একটা সুযোগ দেবোনা।

অরিন্দম তাড়াতাড়ি করে বলল

______”আর কখনো হবে না বউ সত্যি বলছি!”

অরিন্দমের কথায় অনুর মুখে হাসি ফুটল সাথে অরিন্দমের ও!”

অরিন্দম ওকে কাছে টেনে নিয়ে কপালে চুমু এঁকে দিয়ে বলল,

______ ” ভালোবাসি বউ!”

_________________

অনু ছাদের এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে, অরিন্দম ওকে একটু দাঁড়াতে বলে রুমে গেল,,অনু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঝিলের দিকে তাকিয়ে আছে, ওর এখন সবকিছু ভালো লাগছে আগের মত হয়ে গিয়েছে সব, মনটা এবার হালকা লাগছে,,মূলত এই কারণেই তিশাদের বাড়িতে আসতে বলেছিল, অনু জানতো অরিন্দম ওর সাথে এই বিষয়ে কথা বলবে না, তাই সে তিশাকে নিয়ে এই প্ল্যান করেছিল,, অনেকটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর অরিন্দম ছাঁদে আসে চিলেকোঠার কাছে দাঁড়িয়ে অনুর দিকে ভালো করে দেখে অনু আজ সেই বিয়ের দ্বিতীয় দিন সকালে যেমন সবুজ শাড়ি পরে টিয়াপাখি সেজেছিল,আজ তেমনি সেজেছে,, অরিন্দম মুচকি হেসে এগিয়ে গিয়ে পিছন থেকে অনুকে কে জড়িয়ে ধরে,অনু মুচকি হাসলো হাতের ওপর হাত রাখতে যাবে অরিন্দমের হাতের বাঁধন আলগা হয়ে গেল, সেই দিনের কথা মনে পড়তে ও একটু সরে আসতে নিলে অনু ওর হাত চেপে ধরে বলে,

_____ কি হলো সরে যাচ্ছো কেন?

অরিন্দম মুচকি হেসে শক্ত করে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরল, তারপর ভীত গলায় বলল,,

__________বউ তুমি আমায় ওই চিঠিটা কেন দিয়েছিলে? যানো আমি কতটা ভয় পেয়ে গেছিলাম, একবার তো ভেবেই ফেলেছি আমি তোমাকে হারিয়ে ফেললাম, আমার শ্বাস নেয়া ও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছিল।

অনু মুখ গোমড়া করে বলে,

________”তাহলে তুমি আমাকে কাল সারারাত কাঁদিয়েছো সেইটার কি ?সেইজন্য আমি একটু ভয় দেখিয়ে শোধ নিলাম।

অরিন্দম ওর বাম গালে পিছনদিক থেকে চুমু দিয়ে বলল,

_________”কাল তোমাকে সারারাত কাঁদিয়েছি, আজ তোমাকে সারারাত আদর করব!”

অনু চোখ বড় বড় করে অরিন্দমের দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে,

___________”মানে?”

অরিন্দম অনুকে কাছে টেনে নিয়ে কোমড় জড়িয়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলল,,

______”ভালোবাসবো বউ খুব ভালোবাসবো , আজ তুমি, হবে_ কি _আমার💞 , সম্পূর্ণ ভাবে _হবে_কি_আমার💞?”

অনু অরিন্দমের চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,

______”আমিতো সেই প্রথম দিন থেকেই তোমারই হয়ে গেছি, আর সম্পূর্ণভাবে তোমারি থাকবো, ভালোবাসি তোমাকে বরবাবু!”

অরিন্দম হঠাৎ করেই অনুকে কোলে তুলে নেয়,অনু একটু হকচকিয়ে গিয়ে অরিন্দমের গলা জড়িয়ে ধরে বলে,,

________” কি হলো এমন করে কোলে তুলে নিলে কেন?”

অরিন্দম অনুর নাকে নাক ঘষে বলল,

_______”ভালোবাসবো বউ, খুব করে ভালোবাসবো, আমার ভালোবাসার রঙে রাঙাতে চাই তোমাকে, আমার ভালোবাসার আদরে চাদরে মোড়া তে চাই তোমাকে, মিশে যেতে চাই তোমাতে, হারাতে চাই তোমার ভালোবাসায়,আজ সব সীমা লঙ্ঘন করতে চাই, তুমি কি আমায় সব সীমা লঙ্ঘন করার অনুমতি দেবে?

অরিন্দমের কথায় অনু লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়ে অরিন্দমের বুকে মুখ গুঁজে লেপ্টে যায়, অরিন্দম মুচকি হেসে সিঁড়ির দিকে পা বাড়ায়।

এখান থেকেই সূচনা হলো তাদের ভালোবাসা এক নতুন পর্ব, তাদের ভালবাসায় পরিপূর্ণ হলো, পরিপূর্ণ মাধ্যমেই তারা শুরু করল এক নতুন অধ্যায়,যেখানে থাকবে না কোনো সন্দেহ অবিশ্বাস যেখানে থাকবে শুধু ভালোবাসা!

__________________

ছ’বছর পর,

চার বছরের একটা বাচ্চা মেয়ে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে গুটি গুটি করে কাঁদতে কাঁদতে অরিন্দমের কাছে দৌড়ে যাচ্ছে পাপ্পা পাপ্পা করে,অরিন্দম রুমে বসে ল্যাপটপে কিছু কাজ করছিল কান্নার শব্দে উঠে দাঁড়ায় ঘুরে দেখে তার চার বছরের মেয়ে “অহি” কাঁদতে কাঁদতে ওর দিকে এগিয়ে আসছে, অরিন্দম তাড়াতাড়ি করে অহিকে কোলে তুলে নেয়, মুখের দিকে ভাল করে তাকায়, মেয়েটাকে দেখতে একদম তার মায়ের মতই হয়েছে,গায়ের রং ফর্সা ধবধবে, কান্নার কারণে চোখ মুখ কান লাল হয়ে উঠেছে, ঠোঁট টা অরিন্দমের মত লাল হয়েছে, অরিন্দম অহির এমন অবস্থা দেখে ব্যস্ত হয়ে চোখের জল মুছে দিতে দিতে বলল,,

_______ “কি হয়েছে আমার মাম্মার, কাঁদছে কেনো?”

আহি কাঁদতে কাঁদতে বলল,

____বাপ্পা মাম্মা আমায় চতলেত নিয়ে নিয়েতে,

(এমন করে কথা আমার দাদার মেয়ে বলে,তাই লিখে ফেললাম )

অরিন্দম একটা হতাশার নিঃশ্বাস ত্যাগ করল,কারণ এটা প্রতিদিনই হয়, প্রতিদিনই অনু নিজের মেয়ের কাছে থেকে চকলেট খেয়ে নেয়,

অহি আবার বলল,,

______ পাপ্পা তুমি মাম্মা তে বতে দাও,

অরিন্দম দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে অনু লুকিয়ে লুকিয়ে বিড়ালের মতো ওদের দেখছে , অরিন্দম ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে তারপর ঠাণ্ডা গলায় বলল,

_________”বউ ওখানে লুকিয়ে থেকে লাভ নেই এই দিকে এসো!”

অনু মুখ কাচুমুচু করে হাত কচলাতে কচলাতে ওদের সামনে এসে দাড়ালো,

অরিন্দম চোখ ছোট ছোট করে অনুকে বলল,

________বউ তুমি রোজ রোজ অহির কাছ থেকে চকলেট কেনো নিয়ে নাও? আমি তো তোমাকে আলাদা দিই, তবুও তুমি ওর কাছ থেকে কেনো নাও? দেখতে পাচ্ছ কত কাঁদছে মেয়েটা।

অনু মুখ গোমরা করে বলল,

________”আমি কি করবো বরবাবু ও কেন এত দেরি করে খাবে,, আমার সামনে,, আর ওর দাঁতে পোকা হবে ওই জন্য তো আমি খেয়ে নিই।

অরিন্দম কিছু বলতে যাবে অহি কেঁদে কেঁদে বলল,

______পাপ্পা তুমি মাম্মা তে বোতো ,আল কান মুলে দাও আমাতে মাম্মা মেলেতে,!”

অরিন্দম চোখ লাল করে অনুর দিকে তাকিয়ে বলল,

________”বউ তুমি ওকে মেরেছ কেন?”

অনু দুহাত কোমরে দিয়ে এগিয়ে গিয়ে অহিকে বলল,

________”এই একদম মিথ্যে কথা বলবি না,তোকে আমি কখন মেরেছি , আর তুই আমাকে মার খাওয়াতে চাইছিস, আমি না তোর মা হই, বলে কানটা আবার ধরতে যাবে অরিন্দম ধমক দিয়ে বলল,

_______”কি করছ কি তুমি ওকে আবার মারবে নাকি?”

অরিন্দমের ধমকে অনু একটু কেঁপে ওঠে, তারপর ন্যাকা কান্না জুড়ে দিয়ে বলে,

__________”তুমি আমাকে বকলে,?তুমি আর আমাকে ভালোবাসো না, সবসময় বকো বলে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে উঠলো,

এদিকে অহি কাঁদছে আর ওপর দিকে তার মা কাঁদছে,অরিন্দম বেচারা করুন অবস্থা কাকে চুপ করাবে? নিজের মেয়েকে না নিজের বউ কে?

অহিকে ভালো করে বা হাতে জড়িয়ে ধরে ডান হাতে অনুকে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে, অরিন্দম এবার কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে,

__________তোমরা দুজন প্লিজ চুপ করো,আই এম সরি, সব দোষ আমার ,আমি কাল থেকে অনেক চকলেট আনবো, কাল থেকে সারাদিন চকলেট খাবে আর কিছু খাওয়ার দরকার নেই এক গাড়ি চলে আনবো! তোমরা দুজন আর ঝগড়া ও করো না কেঁদেও না।

অহি খুশি হেসে বলে,

_________”পাপ্পা সত্তি কাল থেতে অনেত চতলেত খাব!”

অনু অরিন্দমের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বলে,

______”বেশি চকলেট খাবি না তুই!”

অরিন্দম আবার অনুর দিকে তাকাতে অনু দু হাতে দুজনের কান মুলে দিয়ে ভো দৌড় দেয়,,, অহি আবার কান্না শুরু করে দেয়,অরিন্দম ওকে কোলে নিয়ে ধপ করে খাটে বসে পড়ে,, এদের দুজনকে নিয়ে ও পাগল হয়ে যাবে, অরিন্দম অহিকে চুপ করাছে আর বলছে,

__________”প্লিজ আমার লক্ষী মা চুপ করে যাও, না হয় আমি পাগল হয়ে যাব,, প্লিজ,,

অহি কান্না বন্ধ করে গলা জড়িয়ে ধরে বলল,

______ “পাপ্পা মাম্মা আমাতের ভালোবাতে না দেতো দু’জনতেই মাললো!”

অরিন্দম ঠোঁট উল্টে ওর দিকে তাকিয়ে আছে, ওকে যে বিয়ের পর থেকেই মার খেতে হচ্ছে ওর বউয়ের কাছে, আর কত যে কামড় খেয়েছে ও তার হিসাব নেই,, সেটা নিজের মেয়ের কাছে কি করে বলবে ও।

অনু তড়িৎ গতিতে দৌড়ে এসে দুজন কে ঝাপ্টে জড়িয়ে ধরে বলে,,,

_______আমি তোমাদের দুজনকে খুব ভালোবাসি সোনা, বললে ও অহির গালে একটা চুমু দিল তারপর অরিন্দমের।

অহি খিলখিল করে হেসে,অনুর কোলে গিয়ে গলা জড়িয়ে ধরে বলে,

____ মাম্মা আমি,, বলে অনুর গালে চুমু দেয়,

অরিন্দম ও উঠে দাঁড়িয়ে অহিকে কোলে নিয়ে,অহির গালে চুমু দেয়, তারপর অনুর গালে চুমু দিয়ে মুচকি হেসে অনুকে জড়িয়ে ধরে বলে,,

________আমিও তোমাদের খুব ভালোবাসি সোনারা । বলে তিনজনেই খুশির হাসি হেসে উঠলো।

বেঁচে থাকুক তাদের ভালোবাসা, এই ভাবেই পরিপূর্ণ হয়ে সারা জীবন একসাথে থাকুক তারা তিনজন,,,,, আগামী দিনের জন্য তাদের অনেক শুভকামনা।

_________________ সমাপ্ত______________