হারিকেন পর্ব-০২

0
2817

#হারিকেন (পর্ব:-০২)

মনে মনে ভাবলাম, মারিয়া স্বামী যদি মারা যায় তাহলে মারিয়ার কি হবে? আমিও মারিয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাহাত সাহেবের কাছে দেখা করতে গেলাম যেহেতু আমি ডাক্তার নই তাই কিন্তু বুঝতে পারছি না। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনি উপস্থিত হয়েছে দেখে ভালো লাগলো।

এখানে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে ইচ্ছে করছে না, মূলত হাসপাতালে আমার তেমন ভালো লাগে না। কারণ চারিদিকে প্রচুর অসুস্থ মানুষ দেখে খুব কষ্ট লাগে তাই হাসপাতালে আসতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু এই ধরনের কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয় হাসপাতালকে ত্যাগ করতে পারি না। কেবিন থেকে বেরিয়ে বেড এর দিকে এসে অনেক মানুষ দেখে অবাক হলাম। যদিও নাম “মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল” কিন্তু এখানে সকল প্রকার মানুষের চিকিৎসা হয়।

আপাতত খুনের স্থান ভালো করে দেখার জন্য আমি উঁকিঝুঁকি দিচ্ছি, কেবিনের সামনে কোন সিসিটিভি ফুটেজ নেই। তবে তার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতো যিনি সেই লোকটা কিছু দেখেছে কিনা জিজ্ঞেস করতে হবে। কিন্তু লখানে কাকে কি জিজ্ঞেস করবো?

একটু পরে দেখি পুলিশের লোকজন একজায়গায় জড় হয়ে আছে, আমিও তাদের কাছাকাছি গেল আলোচনা শোনার জন্য কান খাড়া করলাম।

– আমি আগ বাড়িয়ে বললাম, স্যার আমি কি কিছু প্রশ্ন করতে পারি?

– একজন পুলিশ, যাকে দেখে ওসি মনে হচ্ছে তিনি বললেন ” আপনি কে? ”

– জ্বি আমার নাম সাজু, আমি এখানে একজন রোগীর সঙ্গে এসেছি।

– কি বলতে চান? বলেন।

– আমি যার সঙ্গে এসেছি তার আজ অপারেশন হবার কথা, এবং যিনি খুন হয়েছে সেই ডাক্তারই অপারেশন করার কথা ছিল।

– মানে? এটা তো জানতাম না।

– স্যার আমার মনে হচ্ছে সেই অপারেশনের সঙ্গে এই মৃত্যুর কোন হাত আছে।

সবাই গুনগুন বন্ধ করে কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে রইল আমার দিকে, আর সেই ওসি সাহেব বললো,

– কি বলছেন? কেন মনে হচ্ছে এমনটা?

– আমি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি যে উক্ত অপারেশন করার জন্য এই হাসপাতালে তিনজন ডাক্তার আছে। তাদের মধ্যে কিন্তু দুজনকেই এক দিনে খুন করা হয়েছে, একজন এখানে আরেকজন কক্সবাজারে।

– হ্যাঁ বুঝতে পারছি, কিন্তু মিঃ সাজু কক্সবাজারে যিনি ছিলেন তিনি মারা যান নাই। সকাল বেলা যখন খবর এসেছিল তখন সবাই ভেবেছিল সে মারা গেছে, কিন্তু তিনি বেঁচে আছে। তাকে এখন এম্বুল্যান্স করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে আনা হচ্ছে।

আমি অবাক হলাম, একটু আগেই মৃত্যুর খবর শুনলাম কিন্তু এখন সেটা মিথ্যা?

– বললাম, তবুও স্যার যেহেতু আক্রমণ করা হলো সেহেতু কানেকশন আছে মনে হচ্ছে।

– আমরা অবশ্যই বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করবো, আর আপনার রোগী এখন কোথায়? তার অপারেশনের কি কোন ব্যবস্থা করা হয়েছে?

– আপাতত নয় কিন্তু কর্তৃপক্ষ বলেছেন তারা খুব শীঘ্রই অন্য হাসপাতাল থেকে ডাক্তার আনবে।

– আপনার সেই রোগী কি করে? মানে পেশা?

– খুব সম্ভবত চাকরি।

– ওসি সাহেব ভ্রু কুঁচকে বললেন ” খুব সম্ভবত? ”

– জ্বি, আসলে স্যার আমি তাকে রক্ত দেবার জন্য এখানে এসেছি তাই বিস্তারিত জানা নেই।

– তার পরিবারের কারো সঙ্গে দেখা করিয়ে দিতে হবে, চলুন আমাদের সঙ্গে।

সবাই কে নিয়ে রাহাত সাহেবের কেবিনের সামনে এলাম, মারিয়া প্রথমে আমার দিকে তাকিয়ে রইল তারপর ওর শশুর বললো,

– কি ব্যাপার স্যার?

– যার অপারেশন করা হবে তিনি আপনার কে?

– আমার ছেলে।

– আচ্ছা, আপনার ছেলের এখন কি অবস্থা? মানে অপারেশন হবে?

– এই মাত্র একজন নার্স এসে বলে গেল বাহির থেকে ডাক্তার আসবে আধা ঘণ্টার মধ্যে। তারপর নাকি অপারেশন আরম্ভ হবে, দোয়া করবেন প্লিজ আমার সন্তান যেন বেঁচে যায়।

– জ্বি আমরা সবাই দোয়া করি আপনার সন্তান খুব শীঘ্রই সুস্থতা লাভ করুক।

– আসলে স্যার ওর অপারেশনের জন্য কতটা খারাপ পরিস্থিতি হচ্ছে। প্রথমে রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না, পরপর তিন ব্যাগ রক্ত দেবার পরও গতকাল ডাক্তার বললেন অপারেশন করার সময় আরও এক ব্যাগ রক্ত লাগবে। চট্টগ্রাম থেকে মোটামুটি
আগেই তিন ব্যাগ যোগাড় হলো কিন্তু আজকের জন্য পাওয়া যাচ্ছিল না। তারপর বৌমা গতকাল রাতে এনাকে (আমাকে দেখিয়ে) ঢাকা থেকে ব্যবস্থা করে আনলো। কিন্তু কপাল খারাপ, সকাল বেলা ডাক্তার সাহেব খুন হয়ে গেল।

– আপনারা বেশি টেনশন করবেন না, আচ্ছা আমি আপনার ছেলের বিষয় কিছু জানতে চাই।

– জ্বি স্যার বলেন।

– আপনার ছেলে কি করে? পেশা?

– আমার ছেলে রাহাত চট্টগ্রাম ইপিজেডের মধ্যে একটা গার্মেন্টসে চাকরি করে।

– ফ্যাক্টরীর নাম কি?

– H.R.B এপ্যারেলস লিমিটেড, রাহাত সেখানে কোয়ালিটি ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করত।

– আপনার সন্তানের সঙ্গে কি অফিসের মধ্যে কোন মানুষের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে? মানে তেমন কিছু কি আপনারা জানেন?

– না স্যার জানি না, রাহাত এ বিষয়ে তেমন কিছু বলে নাই আমাদের।

– দেখুন আমাদের বা আপনার এই রক্তদানদাতা সাজু সাহেবের ধারণা হচ্ছে ” নিশ্চয়ই আপনার সন্তানের সঙ্গে এই খুনের সম্পর্ক আছে। ”

– মানে কি স্যার? আমার সন্তানের সঙ্গে ডাক্তারের মৃত্যুর সম্পর্ক কি স্যার? আমি জানি রাহাত খুব সাধারণ ছেলে, সকাল থেকে অফিস করে আর রাতে বাসায় ফেরে।

– দেখুন এটা আমাদের ধারণা কেবল, কিন্তু এমন হতে পারে যে, খুনি আপনার সন্তানের অপারেশন চায় না। তাই সে অপারেশন করতে পারা দুজন ডাক্তারকেই খুন করতে চেয়েছে, কিন্তু ভাগ্যক্রমে কক্সবাজারের ডাক্তার এখনো বেঁচে আছে কিন্তু এখানের ডাক্তার মারা গেছে।

– হায় আল্লাহ, আমার সন্তানের এমন শত্রু কেন আসবে? কি ক্ষতি করেছে আমার ছেলে?

– আচ্ছা আপনার সন্তান কীভাবে এক্সিডেন্ট করে সেটা কি জানেন?

– বৌমা আর রাহাত গত শুক্রবার বাইরে থেকে রিক্সা করে বাসায় ফিরছিল, হঠাৎ করে পিছন থেকে আসা একটা পিকআপ ওদের রিক্সা ধাক্কা মারে।

– ওসি সাহেব এবার মারিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো, আপনাদের সঙ্গে তখন কি হয়েছিল? আর কোন যায়গা এক্সিডেন্ট হয়েছিল?

– মারিয়া বললো, আমরা দুজনেই ফ্রি পোর্ট মোড়ে বে-শপিং সেন্টার থেকে কিছু কেনাকাটা করে বন্দরটিলার দিকে যাচ্ছিলাম। বন্দরটিলার একটু আগে বড় মসজিদের সামনে যেতেই হঠাৎ করে একটা পিকআপ আমাদের পিছনে ধাক্কা মারে।

– হুম বুঝলাম, তারপর?

– এখন তো ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ চলে তাই রাস্তার খুব খারাপ অবস্থা, রিক্সার ধাক্কার জন্য আমি আগে থেকেই দু’হাতে রিক্সার রড ও সিট ধরে বসেছিলাম। আমার স্বামীর হাতে শপিং করার ব্যাগগুলো ছিল, তাই ও তখন ধাক্কা সামলাতে পারে নাই। পিছনের ধাক্কায় একদম ছিটকে গিয়ে রাস্তায় পরলো, আর আমি রিক্সার সঙ্গে রাস্তায় উল্টে পরে গেলাম।

– বুঝতে পারছি, মিঃ সাজু সাহেবের ধারণা মনে হচ্ছে মোটামুটি ঠিক আছে। কারণ এটা হতে পারে কোন পরিকল্পনা করে ধাক্কা, খুনি তখনই হয়তো আপনার স্বামীকে বা আপনাদের দুজনকেই খুন করতে চেয়েছে। কিন্তু আপনি বা আপনার স্বামী দুজনেই বেঁচে গেছেন তাই এখন হয়তো আপনার স্বামীর অপারেশন বন্ধ করার চেষ্টা চলছে।

– কিন্তু স্যার তাহলে আমি কেন বাদ যাবো? কোই আমার উপর তো আক্রমণ হচ্ছে না।

– দেখুন এখনো কিছু পরিষ্কার করে বলা সম্ভব হচ্ছে না, আমরা আপাতত আপনার স্বামীর যেই অফিসে চাকরি করতেন সেখানে যাবো। তারপর সেখানে গিয়ে কিছু অনুসন্ধানের চেষ্টা করবো।

এমন সময় পুলিশের মধ্যে থেকে একটা পুলিশ বলে উঠলো ” স্যার আমি সাজু সাহেবকে একটা প্রশ্ন করতে চাই। ”

– কি প্রশ্ন করবা?

এবার সে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,

– আপনি কি সাজু ভাই নামে পরিচিত? মানে বিভিন্ন খুনের রহস্য বের করার কারণে আপনার মোটামুটি অভিজ্ঞতা আছে তাই না?

– আমি বললাম, হ্যাঁ আমি সাজু ভাই নামে বেশি পরিচিত, রহস্য নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে আমার মেলা মেলা ভালো লাগে।

– দেখছেন স্যার, আমার ধারণা একদম সঠিক, আমি তখন থেকেই ভাবছি যে সাজু নামটা খুবই চেনা চেনা লাগে।

– ওসি সাহেব বললো, মিঃ সাজু ওরফে সাজু ভাই আপনি তাহলে গোয়েন্দা? সেজন্যই খুন হবার সঙ্গে সঙ্গে রোগী রেখে রহস্যের পিছনে ছুটতে আরম্ভ করেছেন তাই না?

– অনেকটা সেরকমই স্যার।

– তাহলে আমিও সাজু ভাই বলে ডাকবো, আচ্ছা আপনার সন্দেহ কিন্তু মোটামুটি কাজে দিচ্ছে। তবে এখন আপনি কি আমাদের সঙ্গে অফিসে যাবেন?

– না স্যার, আমি এখন বাসায় যাবো তারপর তারপর সম্পুর্ন ঘটনা আমার নোটবুকে লিখবো।

– কেন কেন?

– স্যার আমার একটু সমস্যা আছে, আমি ইদানিং চলমান ঘটনা বড্ড ভুলে যাচ্ছি। এখনকার ঘটনা দেখা গেল কালকে বা পরশু অনেককিছুই আমি মনে করতে পারবো না। তখন আবার নোটবুক পড়ে নেবো শুরু থেকে, আর সবকিছু জেনে কাজ করবো।

– আপনার তো যথেষ্ট বুদ্ধি।

– সামান্য একটু রাখতে হয় স্যার।

পুলিশের টিম ৬/৭ জন হাসপাতালে রইল আর বাকি সবাই ওসি সাহেবের সঙ্গে বের হয়ে গেল। ওসি সাহেব তার নিজের নাম্বার আমাকে দিয়ে গেল আর আমিও তার নাম্বার রাখলাম। রাহাত সাহেবকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়ে গেছে, একটু পরে অপারেশন শুরু হবে। পুলিশ এখন অপারেশন থিয়েটারের চারিদিকে গভীর মনোযোগ দিয়ে পাহারা দিচ্ছে। ওসি সাহেব হুকুম করে গেছেন, নতুন করে যেন কোনভাবে খুনি আক্রমণ করতে না পারে।

অপারেশন শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গে আমি মারিয়ার কাছে বিদায় নিয়ে বের হলাম। কারণ আজকের এই সম্পুর্ণ ঘটনা তাড়াতাড়ি লিপিবদ্ধ না করলে রহস্যের উন্মোচন করতে কষ্ট হবে। অনেককিছুই আছে যেগুলো আমি সন্দেহ করে রাখি কিন্তু সেই কথা কাউকে বলি না। তাই সেগুলো ভুলে গেলে তো বিপদের শেষ নেই, কি আর করা?

★★★

এতক্ষণ ধরে সাজু ভাইয়ের লেখা নোটবুক খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছিল সাজু ভাইয়ের বন্ধু রকি। সবটুকু পড়ে সে মন খারাপ করে বসে রইল।

বাথরুম থেকে গোসল করে বের হয়ে সাজু ভাই দেখলো যে রকি মুখ গম্ভীর করে বিছানায় বসে আছে। সাজু ভাই তখন আশ্চর্য হয়ে রকির কাছে প্রশ্ন করলো:-

– মুখ এমন কেন তোর?

– তুই তোর প্রাক্তন স্ত্রীর স্বামীকে রক্ত দেবার জন্য চট্টগ্রামে আসছো, আগে বলিসনি কেন?

– তারমানে তুই আমার নোটবুক পড়ছিস?

– কেন নিষেধ আছে নাকি?

– না না নিষেধ করবো কেন? কিন্তু তোদের বলি নাই কারণ নিজের কাছে খারাপ লাগবে।

– তো তুই এতটা মহান কেন সাজু? যার সঙ্গে তোর ডিভোর্স হয়ে গেছে তার বর্তমান স্বামীর জন্য রক্ত দেবার জন্য নাচতে নাচতে আসছো?

– এখন বাদ দে রকি।

– আচ্ছা সজীব আগে অফিস থেকে আসুক আর তারপর তোর ব্যবস্থা হবে।

– ঠিক আছে তাই হবে।

– এখন কি করবি? রাহাত সাহেবকে খুনের চেষ্টা ও ডাক্তারের খুনের রহস্য যেহেতু মাথার মধ্যে তাই সেটা তো বের করতে হবে।

– হ্যাঁ।

– সন্দেহের তালিকায় কে আছে?

– সেটা পরে বলবো, কিন্তু সজীব আসার সঙ্গে সঙ্গে তুই আর আমি কক্সবাজার যাবো।

– কেন কেন? ওহ্ আচ্ছা লামিয়ার খোঁজে? তুই তো আগে রহস্যের গন্ধ পেলে পৃথিবীর সবকিছু ভুল যেতি কারণ রহস্যই প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু এখন রহস্য বাদ দিয়ে হঠাৎ লামিয়ার পিছনে যাচ্ছ কেন বন্ধু? কুচ কুচ হোতা হে?

দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সজীব শুনে বললো, রকি রে তোর বন্ধু তো লামিয়ার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। আহারে আহারে, সাজু ভাই এখন কারো প্রেমে পরে গেল রে।

– রকি বললো, এইতো সজীব এসে গেছে বাহহ অসাধারণ।

– সাজু ভাই বললেন, তোরা প্লিজ বন্ধ কর তো। আমি কক্সবাজারে ডাক্তারের খুনের রহস্য বের করার জন্য যাচ্ছি।

– মানে?

– সাজু ভাই বললো, দুজনেই শোন ” আজকে যে ডাক্তার খুন হয়েছে তার একজন পারসোনাল সেক্রেটারি ছিল। তিনি সবসময় ডাক্তারের কক্ষে আর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতেন। কিন্তু হঠাৎ করে গতকাল রাতে তিনি কক্সবাজার চলে গেছে, আজকে সকালে তাকে হাসপাতালে দেখা যায় নাই।

– বলিস কি? কিন্তু কেন?

– আমি ওই সেক্রেটারির সন্ধান করছিলাম কিন্তু পাচ্ছিলাম না, পরে ওখানে একজন সিকিউরিটির কাছে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি কিছু জানেন না, পরে তাকে দিয়ে ওই সেক্রেটারির কাছে কল দিয়ে কথা বলালাম। আর তখনই জানতে পারি যে তার কক্সবাজার চলে গেছে, আগে থেকে তার কোন পরিকল্পনা ছিল না কারণ হাসপাতালে কিংবা ডাক্তারের কাছে ছুটি নেন নাই।

– তাহলে কি কক্সবাজার হোটেলে আহত হওয়া ডাক্তারের উপর সেই সেক্রেটারি হামলা করেছে?

– সেটা জানার জন্য কক্সবাজার যেতে হবে।

আলোচনা বন্ধ হয়ে গেল, রকি ও সাজু দুজনেই তৈরি হয়ে নিল। সজীব যেতে চাইলো কিন্তু সাজু ভাই বললেন ” তিনজনে একসঙ্গে গেলে কাজ হবে না সজীব, কারণ তিনজনে যদি বিপদে পরি তাহলে রক্ষা করবে কে? টাঙ্গাইলের সেই রুহির বান্ধবীদের কথা মনে আছে? ”

– সজীব বললো, হ্যাঁ আছে।

– তখন যদি তুই না যেতিস তাহলে কিন্তু রহস্যের উন্মোচন করতে কষ্ট হতো।

সাজু ভাইয়ের মোবাইল বেজে উঠল, বের করে দেখলো মারিয়া কল করেছে। হাসপাতাল থেকে এসে তার সঙ্গে কথা বলতে মনে ছিল না, আসলে নোটবুক লিখতে গিয়ে সবকিছু ভুলে গেছে। অপারেশন কেমন হয়েছে সেটাই জানা হলো না।

– হ্যালো মারিয়া?

– মারিয়া কিছু না বলে শুধু ফুপিয়ে কান্না করতে লাগলো, এবং তার পাশে অন্য কারো কান্নার শব্দ খুব জোরে শোনা যাচ্ছে।

– সাজু ভাই বললো, মারিয়া রাহাত সাহেব ঠিক আছে তো?

.

বি:দ্র:- চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে পুরুষ মানুষেরও চিকিৎসা হয়। কিন্তু এটা হয়তো বা চট্টগ্রামের বাইরের অনেকেই জানেন না। গতকাল প্রথম পর্বে অনেক মানুষের এই বিষয় নিয়ে খুব হাসাহাসি করতে দেখলাম। কেন ভাই? আমি তো জেনেশুনেই লিখলাম, যদি আপনার সন্দেহ থাকে তাহলে একটু খোঁজ নিয়ে দেখুন।
.
চলবে…
লেখা:-
মোঃ সাইফুল ইসলাম (সজীব)