হারিয়ে চাইছি তোমাকে পর্ব-২০ এবং শেষ পর্ব

0
620

#হারিয়ে_চাইছি_তোমাকে [২০]
#নিহা (মুনিয়া)
অন্তুিম পর্ব সংশোধিত।
_____________________

গায়ে হলুদের সমস্ত রকম অনুষ্ঠান শেষ করে মৃদুলা ফ্রেশ হয়ে ঘুমাতে গেলো। আর তো বাকি মাত্র কয়েকটি ঘন্টা তারপরেই আহান আর মৃদুলার এক হবার পালা! পূর্নতা পাবে তাদের অপূর্ন ভালোবাসা। এসব ভাবতে ভাবতে মৃদুলা ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমালো

সকাল থেকে দু পরিবারে বেশ ব্যস্ত সময় কাটছে। কারোর দম ফেলার সুযোগ নেই এরূপ অবস্থা! সকাল থেকে কার্যক্রম শুরু হয়ে গিয়েছে। পুরো বাড়ি সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। লোকজন এসেছে ভরপুর। সারা বাড়ি লোকজনে গমগম করছে। সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠেই রান্না বান্না পুরো বাড়ি সাজানো, অতিথিদের আপ্যায়ন কনা সবকিছু মিলিয়ে বেশ ব্যাস্ততায় ভরে ওঠেছে ববয়ে বাড়ি।
দুপুরের আজান দিয়ে ফেলেছে অলরেডি। আহানরা নামাজ পড়ে বেরোবে আর একটু পর! মৃদুলাও নামাজ পড়ে একটু বসেছিলো তখুনি পার্লার থেকে লোক এসে ওকে সাজাতে শুরু করলো। বিয়েতে সবাই লাল রঙের টুকটুকে শাড়ি পড়ে কিন্তু আহানের কথামতন আহানের দেওয়া সাদা রঙের লেহেঙ্গা পড়েছে মৃদুলা! লেহেঙ্গা টা সাদা হলেও এর পাড়ে লাল রঙের মো’টা করে পাথরের ডিজাইন দেওয়া আছে। দো পাট্টায় পাতলা নেটের পাড়ের দিকে সুন্দর করে পাথরের কাজ বসানো আছে। মৃদুলার লেহেঙ্গা সাদা রঙের সেইজন্য বেশি ভারী মেকআপ না করে মৃদুলাকে হালকা করে একটু মেক-আপ করানো হয়েছে। চুলগুলোকে খোঁপা করে রেখেছে সামনের দিকটা ফুলিয়ে। আর গহনা তো আছেই! সব মিলিয়ে মৃদুলার সাজ কমপ্লিট হযে গেছে। মৃদুলাকে দেখে মনে হচ্ছে যেনো আকাশ থেকে কোনো সাদা পরী নেমে এসেছে!

মৃদুলার সাজ রেডি করে রুমে বসিয়ে রাখা হয়েছে। একটুর পরেই বাহিরে শোরগোল শুরু হলো “বর এসেছে” করে। বর আসতে না আসতেই তাকে ভিবিন্ন রকম খেলায় মাতিয়ে তুললো পিচ্চি কাজিনরা! সমস্ত নিয়ম কানুন শেষে আহানকে বসানো হয়। কাজী তাড়া দিতে লাগলো বিয়ের জন্য।….
মৃদুলার কাছে গেলো কাজী তিনটি পবিত্র শব্দ “কবুল” পরপর তিন বার বলার মাধ্যমে শরিয়ত মোতাবেক মৃদুলা এখন আহানের স্ত্রী হয়ে গেলো।….
দু’জনেরই বিয়ে কমপ্লিট। বিয়ে শেষ হবার পরে কনে আর বরকে নামাজ পড়ানো হলো।
আহান এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে তার মিলা রানীর দিকে। কখনো কখনো চোখ মা’রছে যা দেখে মৃদুলায় লজ্জায় যেনো মূর্ছা যাচ্ছে বারংবার!
বর বউয়ের একের পর এক ছবি তুলতে ভীড় জমালো মানুষ ঠিক তখুনি কারোর “কংগ্রাচুলেশনস” জানানোর শব্দে সবার ছবি তোলা থেমে যায়!

মৃদুলা দেখে নিলা আর সামাদ এসেছে। নিলা সামাদকে দেখে মৃদুলার রা’গ বেড়ে যায় । মৃদুলা আহানকে কিছু বলার আগেই আহান তার দু চোখের ইশারা দ্বাড়া মৃদুলাকে আসসত্ব করলো।

-‘ নিলা তোমার কথা মতন আমরা চলে এলে তো এলাম কিন্তু এবার কি হবে? কোনো গ’ন্ড’গো’ল হবে না তো?’

-‘ তোমাকে গা’ধা বললেও গা’ধার অসম্মান হবে স্টু’পি’ট! আমরা এখানে নিজে আসিনি আমাদেন আহান ডেকেছে। আহান আমাকে ফোন করে বললো আজকে না-কি আসতেই হবে তাই তো এসেছি। আর এতো ভ’য় পাবার কি? আহান তো জানে না যে আমরাই সবকিছু করেছি। জানলে সেদিনই আমাদের ক’পালে শ’নি নাচতো! আর সবচেয়ে বড়ো তথা হলো আহান আমাকে ডেকেছে আর আমি না এসে থাকতে পারি?’

-‘ কিন্তু ওদের তো বিয়ে হয়ে গেলো নিলা। ‘

-‘ তো কি হয়েছে? আলাদা হতে কতক্ষণ? ‘

-‘ মানে? তুমি কি আবারো কিছু করতে চাও?’

-‘ এখন না। এখন পরিস্থিতি শীতল হউক। তারপরে করবো। আমি তো আমার ভালোবাসা আদায় করবোই সেটা মৃদুলার থেকে কে’ড়েই! ‘

সামাদ আর কিচ্ছু বললো না চুপ করে রইলো। অপেক্ষা করতে লাগলো কি হয় দেখার জন্য।

আহান আমাকে চোখ দ্বারা ইশারা করে সেই যে কোথায় একটা চলে গেলো বুঝতে পারছি না! এদিকে লোকজন আমাদের কাপল পিক তুলবে কিন্তু উনারই কোনো পাত্তা নেই। কি দরকার ছিলো ওই নিলা এদের এখানে আনানোর। কি করতে চাইছে কি আহান?

মৃদুলার ভাবনার মাঝেই আহান হাতে একটা ফোন নিয়ে আসে।

-‘ বাবা, মা, চাচ্চু, চাচি, দাদিমা তোমরা যে যেখানে আছো একটু এদিকে এসো তাড়াতাড়ি। ‘

বিয়ে হয়ে যাওয়া মানেই বিয়ে বাড়ির সমস্ত কাজ শেষ এরকম না। আহানের ডাকে সবাই নিজেদের কাজ ফেলে আহানের সামনে এসে দাঁড়ালো।

-‘ কি বলবি কি তুই? তাড়াতাড়ি বল।’

-‘ বলছি দাঁড়াও কিন্তু যাকে নিয়ে বলবো সে কোথায়? ওইত্তো নিলা। নিলা তুমি এদিকে আমার পাশে এসে দাঁড়াও তো।’

নিলা আহানের পাশে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই পু’লি’শ এসে উপস্থিত হলো বাড়িতে! নিলা পু’লিশ দেখে ঘা’ব’ড়ে যায় কিছুটা।

-‘ তোমাদের সকলের মনে প্রশ্ন মৃদুলা দু’দিন কোথায় চলে গেছিলো তাই তো?’

-‘ হ্যাঁ। কিন্তু খুলে বল সবটা এরকম না করে।’

-আহান ফোন থেকে সেই ভিডিও ক্লিপস টা বের করে সবাইকে দেখাতে লাগলো যেখানে নিলা আর সামাদ মৃদুলার কিড’ন্যা’পিং নিয়ে কথা বলছে! এই ভিডিওটা আহান সেদিন নিলার বাসার বাহিরে থেকে করেছিলো। ভিডিও দেখে সামাদ পালানোর চেষ্টা করেও পারলো না পু’লি’শের জন্য! ওদিকে নিলার হাত পা কাপাকাপি শুরু হয়ে গেছে!

-‘ তার মানে আহান তুমি সবটা জানতে আর তুমিই তাহলে মৃদুলাকে উ’দ্ধার করে এনেছো?’

-‘ হুম। কিন্তু সেদিন তোমার মু’খো’শ খোলার মতন কোনো প্রমান ছিলো না কিন্তু আমি কালকে রাত্রে তোমার বাসায় যেতেই তোমাদের এই সুন্দর কথোপকথন শুনতে পাই। কালকে আমাদের গায়ে হলুদ ছিলো তাই অশান্তি করিনি। কিন্তু এখন তো গায়ে হলুদ, বিয়ে সবকিছুই হয়ে গেছে এখন যদি তোমার সম্পর্কে না বলি তো কবে বলবো বলো?’

আহানের কথা শেশ হতে না হতেই নিলার গালে সপাটে দু’টো চ’ড় পড়লো! থা’প্প’ড় নিলা হতভম্ব! এই থা’প্প’ড় তাকে অন্য কেউ নয় আহানের মা মে’রে’ছে! যাদের সঙ্গে এতোবছর নিলা ছিলো তারাই হাত তুলেছে নিলার গায়ে! নিলা ল’জ্জা আর অপ’মা’নে কাঁদতে লাগলো!

-‘ আমাকে মা’রছো কেনো আন্টি? আমি কি ভুল কিছু করেছি? আমি তো শুধু একটু আহানকে ভালোবেসেছি। নিজের করে পেতে চেয়েছি এটা দোষ?’

-আহান এবার সহ্য করতে না পেরে নিজেই নিলার গালে আরো কয়েকটি থা’প্প’ড়’ মেরে দিলো! এবার নিলা রে’গে গেলো!

-‘ তোকে তো বন্ধুর মতন ভেবেছি সবসময়। আর তুই এরকমটা করতে পারিস আমি ভাবতেও পারিনি! তুই না ভালো করে জানতিস আমি মৃদুলাকে ভালোবাসি তাও তোর আমাকে লাগবে? এবার আমাকে নয় জে’লে থাকবি তুই! বন্ধুত্বের মর্যাদা দিতে পারিস নি। তোকে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড ভাবতাম। পাঁচটা বছর বন্ধুর মতন মিশেছি তোর সঙ্গে এটাই বোধহয় সব থেকে বড়ো ভুল ছিলো! সংশোধনারে গিয়ে যদি কখনো শুধরে আসতে পারিস তো আসিস আর না হলে তোর চেহারাও দেখতে চাই না আমি! আর মা’থা’য় রাখিস মৃদুলা আমার বউ, আমার ভালোবাসা! যতো যা-ই হউক না কেনো আমি ওকে ছাড়ছি না আর না ছাড়বো কোনোদিন। তুই শুধরে যা এটাই তোর জন্য ভালো হবে।’

আহানের মা নিলার কাছে গেলো।

-‘ নিলা ঠান্ডা মা’থায় শোন, লন্ডনে থাকতে তুই আমার ছেলেকে সঙ্গ দিয়েছিলি ওর সঙ্গে থেকেছিস। ওর মন খারাপে পাশে ছিলিশ। বন্ধুত্বের মতন পবিত্র সম্পর্কে ছিলিস। এই সবকিছুর জন্য আমার ছেলে কেনো আমরা সবাই-ই তোর প্রতি কৃতজ্ঞ। সেই সময় আহান আমাদের থেেক প্রায় দূরে সরে গেছিলো কিন্তু তুই এটু একটু করে ওকে বুঝিয়েছিস। কিন্তু নিজেই অবুজের মতন কাজ করলি। জোর করে কিছু হয় না রে। আর ভালোবাসা তো নয়ই! এটা মানতে শিখ জীবন সুন্দর! তুই যদি আহানকে সত্যি ভালোবাসিস তো ওকে মৃদুলার সঙ্গে ভালো থাকতে দে।’

নিলা কারোর কথার কোনো প্রতিত্তোর না করে অশ্রুসিক্ত নয়নে আহানের দিকে তাকিয়ে চলে গেলো পুলি’শের সঙ্গে! সামাদকেও নেওয়া হয়েছে! নিলা হয়তো সত্যিই আহানকে ভালোবেসেছিলো যার প্রমান আহানের প্রতি চোখের পানি। কিন্তু যে মানুষ অন্য কারোতে আসক্ত তার জন্য ভালোবাসা মনে না জড়ানোই ভালো! নিলা আর সামাদ তাদের কৃতকর্মের ফল পেয়েছে!

-‘ এবার সবটা পরিষ্কার তো সবার সামনে? নিলা ওর শা’স্তি পেয়েছে যদি নিজের ভুল বুঝতে পারে তাহলে আর এরকম কিছু করবে না। এবার এসব বাদ দিয়ে গান বাজাও পরিবেশটা যেনো নির্জিব হয়ে গেছে! ‘

এতোক্ষণ যেনো সবাই একটা ঘো’রের মধ্যে ছিলো। কেউই আশা করেনি নিলা এরকম একটা কাজ করবে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট আহানের মা পেয়েছে কারন তিনি নিলার সঙ্গে থাকতেন বেশি সময়। আপাততো এসব বাদ দিয়ে আহানের কথা মতন গান বাজনা শুরু হলো। কাজিনরা যে যার মতন করে নেচে যাচ্ছে!

-‘ আমাকে বলো নি এসব কিছু?’
-‘ সময় পেলাম কই বলো? তোমাকে বলার? যাইহোক নিলা তার ফল পেয়েছে। কিন্তু আমার তো ক্ষিদে পেয়েছে!

-‘ ক্ষিদে পেয়েছে তো একটু বসো একটু পর খেয়ো।’

-‘ খাবার নয়! আমার তো তোমার টুসটুসে গালো দু’টো কা’মড়ে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে।’ 😏

মৃদুলা আহানের কথায় লজ্জা পেয়ে বসে রইলো।
হই হুল্লোড়ের ভেতর সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে! সময় জানান দিলো বিদায়ের সময় এসে গেছে।

সবার নয়ন এখন অশ্রুসিক্ত! মেয়েকে বিদায় দেবার কষ্ট কি সেটা একমাত্র বাবা মা’ই বুঝতে পারে!
এতোকাল যাদের সঙ্গে থেকেছে সেই চেনা মুখ ছেড়ে অচেনা জগৎে পা দিতে হয়! কান্নাসিক্ত হয়ে বিদায় দিলো মৃদুলাকে সবাই।

ওই বাড়িতে ঢোকা মাত্রই দরজা থেকে শুরু করে ওদের রুম অব্দি গোলাপের পাপড়ি দিয়ে রাস্তা দেখতে পায় মৃদুলা!
যা দেখে মনের কোনে হাসি ফুটে ওঠে। যাকে চাচি বলতো সে এখন শাশুড়ি মা হয়ে গেছে!

-‘ কিরে তাকিয়ে থাকলে হবে? আমাদের এই সংসারে তোকে স্বাগতো। এখন থেকে এটাই তোর বাড়ি।’

মৃদুলা বাড়িতে প্রবেশ করলো। আপাততো মৃদুলাকে সোফায় বসিয়ে রাখা হয়েছে আহান দের প্রতিবেশীদের জন্য! তাদের বউ দেখাতে হবে। কিছুক্ষণ পর সবার বউ দেখা শেষ হলে খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ করে মৃদুলাকে আহানের রুমে বসিয়ে দেওয়া হয়! ওদিকে আহান বাহির থেকে এসে রুমে ভেতর যাবে তখুনি চার পাজ জনের দল আহানকে ঘিরে ধরলো!

-‘ কতো দিতে হবে বল?’

-‘ ভাইয়া তো দেখছি এডভান্স! বলার আগেই বুঝে গেলো। বোধহয় ভাবির কাছে যাবার তড় সইছে না!’

বলেই সবাই হাসতে লাগলো। ওদিকে আহানের বিরক্ত লাগছে! সত্যিই তার যেনো তর সইছে না আর।

-‘ বলবি নাকি তোদের সাইড করে চলে যাবো? ‘

-‘ আচ্ছা আচ্ছা বেশি না পঞ্চাশ হাজার দেও আমরা চলে যাচ্ছি! ‘

-‘ আচ্ছা ধর! এবার চলে যা!’

আহান ওদের হাতে দশ হাজার টাকার একটা খাম ধরিয়ে দেয় রুমে ঢুকে ধরাম করে দরজা বন্ধ করে দেয় যাতে ওরা ভেতরে ঢুকতে না পারে! আচমকা শব্দে মৃদুলা দেখলো আহান এগিয়ে আসছে একটু একটু করে।
আহানকে দেখে মৃদুলার লজ্জা ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে! সে ধীর গতির পায়ে একটু একটু করে এগিয়ে আহানের কাছে গেলো সালাম করতে।

-‘ সালাম করতে হবে না। সষ্ট্রা ছাড়া কারো কাছে ঝুঁকা নিষেধ! চলো নামাজ পড়ে শুকরিয়া আদায় করে আসি।’

দুজনের নামাজ পড়া শেষ। মৃদুলা আহানের পাশে বসে আছে। আহান মৃদুলার মাথা থেকে ঘোমটা খানি সরিয়ে মৃদুলার মুখের দিকে চেয়ে মাশাআল্লাহ বলে ওঠলো!

-‘ এই দিনটার জন্য কতোদিন কতো রাত অপেক্ষা করেছি জানিস? অবশেষে সকল অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আমি তোকে পেয়েছি। একবার হারিয়েও ছি কিন্তু আবারো #হারিয়ে_চাইছি_তোমাকে আর পেয়েওছি দেখলে?’

-‘ হুম কারন তোমার ভালোবাসা সত্যি ছিলো তাই। ‘

আহান একটু রা’গ করে বসলো।

-‘ তুমি বুঝি ভালোবাসো না আমাকে?’

-‘ উঁহু! কে বলেছে আমি আপনাকে ভালোবাসি?’

-‘ মানে?’

-‘ মানে তোমাকে আমি এতো করে চাই যেমন নিঃশ্বাস ছাড়া মানুষ বাঁচে না! তোমার সঙ্গে এতোটা থাকতে চাই যেনো ম’র’নও আলাদা করতে না পারে! খুববব খুব খুব বেশি ভালোবাসি তোমাকে। খুবববব বেশি। নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

-‘ আমিও আমার নুড়ি পাথরকে নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসিইইই! কখনো ছেড়ে যাবো না! সারাজীবন ভালোবাসার চাদরে মুড়িয়ে রাখবো।’

আহানের ভালোবাসা পরিপূর্নতা পেলো এবার! সত্যিই তো এই কথাগুলোর জন্য এতোকাল অপেক্ষা করেছে আজকে সকল অপেক্ষার প্রহর শেষ একেবারে! আহান মৃদুলার বা হাতে একটা আংটি পড়িয়ে দিলো। আংটিটা নিজের হাতে মৃদুলার চিনতে একটুও অসুবিধা হলো না এটা তো সেই আংটি টা!

-‘ এই আংটি! এখনো তোমার কাছে আছে? এটা তো সে-ই আংটি যেটা দিয়ে সেদিন তুমি আমাকে প্রপোজ করেছিলে!’

-‘ হুম সেই আংটি যেটা তুমি পড়োনি। কিন্তু আমি এতোবছর এটা যত্ন করে রেখেছি নিজের কাছে। আমি জানতাম তুমি ঠিক আমারই হবে কারন আমার ভালোবাসা যে সত্যি ছিলো। আংটিটা সবই ঠিকআছে শুধ একটু সাইজটা বড়ো করেছি। ‘

মৃদুলা মুচকি হেসে আংটিটার দিকে তাকালো এক পলক! মৃদুলা খাটের একপাশে আহান তার থেকে একটু দুরত্বে বসে ছিলো।
আহান একটু একটু করে মৃদুলার আরো এগিয়ে গেলো। এতোটাই কাছে এসে বসেছে মৃদুলা আহানের নিশ্বাসের শব্দ শুনতে পাচ্ছে! মৃদুলার শরীরে বেশ অদ্ভুত শিহরন বয়ে গেলো। সে আহানের দিকে তাকাতে পারছে না লজ্জায় অদিকে আহান এক ধ্যানে মৃদুলার দিকে তাকিয়ে আছে। চোখ দু’টো তৃষ্ণা মিটছে,
এক অদ্ভুত অনুভুতি দু’জনের মাঝখানে। মৃদুলার মনে লজ্জা ভ’য় দু’টোই আছে। আহান এবার মৃদুলার ঠোঁট দু’টো নিজের মধ্যে আয়ত্ত করে নিলো। গম্ভীর ভাবে আপন করে তার নুড়ি পাথরকে! মনের সবটুকু উজার করে ভালোবাসার অতলে প্রবেশ করলো। যতোটা আপন করলে অন্যের থেকে আলাদা হয় না যতোটা ভালোবাসলে কেউ কাউকে ছাড়তে পারে না ঠিক ততোটাই ভালোবাসা!
____________________সমাপ্ত___________________