হৃদয়েশ্বরী পর্ব-০৮

0
677

#হৃদয়েশ্বরী
#লেখনীতে- সাদিয়া মেহরুজ দোলা
#পর্ব__০৮

গোধূলি লগ্নের অন্তিম প্রহর। আকাশ জুড়ে লালাভ আভা বিরাজমান। কুয়াশার আড়ালে ঢাকা পড়তে শুরু করেছে বিশাল আকৃতির দালান গুলো। নিরব প্রকৃতিতে পাখিদের ডানা ঝাপটানোর আওয়াজ চারপাশে প্রতিফলিত হচ্ছে সুমধুর রূপে৷ মিষ্টি, সতেজ অনিলের বিচরণ মেদিনীতে। রক্তিম বিকেলের শেষ অংশ অন্তিম হয়ে ধীর পদে নামছে আঁধারের পাল্লা।অন্তরীক্ষে সন্ধ্যাতারা জ্বলজ্বল করে জানান দিচ্ছে সায়াহ্নের আগমন ঘটবে কিয়ংদশ বাদেই।

শীতল কক্ষ। বাহিরে অবশিষ্ট রশ্মির ছিটেফোঁটা অব্দি নেই নিঃশব্দতা বিচরণ করা কক্ষে। থেমে থেমে কারো গুমোট কান্নার শব্দধ্বনি কর্ণপাত হচ্ছে করুন রূপে। কষ্ট, বুক চিঁড়ে বেড়িয়ে আসা দীর্ঘ নিঃশ্বাসের পাল্লা সময়ের সাথে দ্বিগুণ হচ্ছে। বদ্ধ দরজার অপাশ থেকে দরজায় কড়াঘাত করতে করতে রুহি ক্লান্ত হয়ে সেখানেই ‘ ধপ ‘ শব্দ উৎপত্তি করে বসে পড়লো। চিন্তায় ললাটে নোনা ঘাম আবির্ভূত হয়েছে। বক্ষঃস্থলের ডান পাশে থাকা হৃদপিণ্ড তুমুল বেগে স্পন্দিত হচ্ছে ক্ষনে ক্ষনে। দুপুর বেলা মীরাকে কাঁদতে কাঁদতে বাসায় ফিরতে দেখে তার অন্তঃস্থল ছ্যাৎ করে উঠেছিলো। কি হয়েছে? তা জিজ্ঞেস করবে কিন্তু মীরা তার সুযোগ না দিয়েই রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। শতবার ডাকার পরও খুলেনি দরজা। রুহির ভয় করছে প্রচন্ড। মীরার হলো টা কি? খারাপ কিছু নয়তো?

ঘুটঘুটে আঁধারে ছেয়েঁ থাকা কক্ষে বালিশে মুখ গুঁজে চাপা সুরে কাঁদছে মীরা। কাঁদতে কাঁদতে মুখোশ্রীর বেহাল দশা। রক্তিম হয়েছে আঁখিজোড়ার সাদা অংশ, সর্ব মুখোশ্রী। হেঁচকি তুলছে অনবরত। হাঁচি দিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটা। মীরার এই এক সমস্যা। কান্না করলে সর্দি লেগে যায়। রুহির চিন্তিত কন্ঠ ক্রন্দনরত মীরার ধ্যান কেঁড়ে নিতে ব্যার্থ। ইহজগৎ এর কোনো ধ্যান আপাতত মীরার মধ্যে নেই। সে ব্যাস্ত নিজ ভাবনা জগতে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বলা উশানের প্রতিটি বিষাক্ত তীরের ন্যায় বাক্য অনবরত তার হৃদপিণ্ড এবং মস্তিষ্কে সুচালো আঘাত করছে। ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকাকালীন মীরা যখন অতীব উত্তেজনা নিয়ে প্রশ্ন ছুড়েঁ দিয়েছিলো তখন উশানের করা প্রতিত্তুর ছিলো এরূপ,

‘ দ্যাখ মীরা! এটা সম্পূর্ণ তোর ভুল ধারণা। আমি তোকে ভালোবাসিনা৷ এসব করেছি নিজ দায়িত্ব থেকে। সেদিন রাতে ফার্মেসি যাওয়ার নাম করে তোকে বাসায় পৌঁছে দেয়া। ঐটা আমি বিবেক বোধ থেকে করেছি।অতো রাতে একা যাওয়াটা রিস্কি। তারপর কানের দুল কিনে দেয়াতে যেই রিজনটা আমি দেখিয়েছিলাম সেটা একদম সত্যি। তুই চাইলে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারিস। আর রইল প্রতিদিন তোকে ভার্সিটিতে পৌঁছে দেয়া মিথ্যা কাজের অযুহাত দেখিয়ে। এটা সঠিক। কিন্তু এর পিছনে কারণ আছে৷ মাহদি আংকেল আমাকে রিকুয়েষ্ট করেছিলো যেনো আমি তোকে প্রতিদিন ভার্সিটি পৌঁছে দেই। বিশ্বাস না হলে আংকেল কে জিজ্ঞেস করতে পারিস।যদিও মাহদি আংকেল সত্যিটা বলবে কিনা সন্দেহ। তুই হাইপার হতে পারিস তাই নাও বলতে পারি। ক্লিয়ার করতে পেরেছি? এসব ভাবনা কখনোই মাথায় আনবি না। এটলিষ্ট আমাকে ঘিরে তো অবশ্যই না। ‘

এতটুকু বার্তা মীরার অন্তঃকরণে অশান্ত ঝড় তুলতে সক্ষম হয়েছিলো। কোনোমতে সেখান থেকে টলতে টলতে নিজের বাসায় এসে ঘরবন্দী করে নিয়েছিলো নিজেকে চেষ্টা করেছিলো বোঝার কেনো সে এতোটা কষ্ট পাচ্ছে? কেনো ঐ ছন্নছাড়া ব্যাক্তির জন্য তার মন অনলে দহন হচ্ছে? পরিশেষে দীর্ঘ ১ ঘন্টার মাত্রাতিরিক্ত চিন্তা – ভাবনায় মীরা আবিষ্কার করলো সে ‘ উশান ‘ নামক খামখেয়ালি, পাথর মানবটাকে একটু একটু করে এই আড়াই মাসে নিজ অন্তরালের এক বিশাল জায়গায় স্থান দিয়ে ফেলেছে। তার নিভৃতের এক স্থান জুড়ে দখলদারত্ব করে বসে আছে উশান রেজওয়ান।মীরার সবচেয়ে ঘৃণিত বস্তু, ‘ প্রণয়, প্রেম ‘ আজ তার সর্বাঙ্গ জুড়ে রাজত্ব করছে। ব্যাপারটা হজম করা ভীষণ কষ্টসাধ্য। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই দীর্ঘ ক্ষণ ক্রন্দনের মেলা বসেছে। নেত্রকোনা অশ্রু দ্বারা সিক্ত হচ্ছে বারংবার।

দরজার নিকট আবারও কড়াঘাত। ভরাট কন্ঠস্বর। মীরা এবার এই কন্ঠ শ্রবণ করলো। কর্ণকুহরে তার ঝংকার তুললো। মস্তিষ্ক বলছে তার ‘কাঙ্ক্ষিত ‘ সেই ব্যাক্তির আগমন ঘটেছে। এসেছে সে। ভাবনায় ছেদ পড়ে কর্কশ ধ্বনি কর্ণপাত হওয়ার পর। দরজার অপাশ থেকে উশান উচ্চ স্বরে বলে উঠলো,

‘ তুই যদি এখন দরজা না খুলিস মীরা! আমি এই দরজা এক্ষুনি ভেঙে ফেলবো। ‘

মীরা ত্রস্ত পায়ে উঠে দাঁড়ায়। আশ্চর্য তো! রাগ তো তার দেখানোর কথা। উল্টো এই ব্যাক্তি কোথা থেকে উড়ে এসে ফের তার ওপর অধিকার ফলাচ্ছে?
মীরা দ্রুত হাতে দরজার নবে মোচড় দিয়ে লক খুলে ফেললো। তৎক্ষনাৎ অপাশ হতে দরজা ধাক্কা দিয়ে প্রবেশ করে সেই দাম্ভিকতা নিয়ে চলা মানুষটা। বাদামী মুখটা কেমন শুকিয়ে আছে। মীরা খেয়াল করলো তা। মনে মনে আওড়ালো, ‘ এই লোকের আবার এই অবস্থা কেনো?’

উশান তড়িৎ বেগে হেঁটে জানালায় এঁটে দেয়া মোটা শুভ্র রঙের পর্দাগুলো এক টান দিয়ে সরিয়ে ফেলে। বারান্দার দরজা দ্রুত হাতে খুলে ক্ষ্যান্ত হয়ে তপ্তশ্বাস ছাড়লো। মীরা উশানের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দরজার বাহিরে তাকায়। রুহি কোমড়ে হাত দিয়ে কটমট দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মীরা তার পানে দৃষ্টিপাত ফেলতেই রুহি রুষ্ট কন্ঠে বলল,

‘ আমি ১ ঘন্টা ধরে তোরে ডাকতেছি। আমার ডাক তো গেলো না তোমার কানে। উশান ভাই আসতে না আসতেই দরজা খুলে ফেললি? মীর জাফরের ভাগ্নী তোরে তো আমি খু/ন করবো আজ। ‘

‘ বাঁচালের মতো পকপক কম কর। আমি এমনিতে আরো কয়েকঘন্টা পর দরজা খুলতাম। উশান ভাই এর কথায় দরজা না খুললে সে বাবার কানে কথা লাগাতো তখন বাবা চিন্তা শুরু করতো। বাবা এমনিতেই হার্টের পেশেন্ট চিন্তা করলে সমস্যা অনেক সমস্যায় পড়তো। ‘

রুহি কিছু বলার জন্য ওষ্ঠাধর প্রসারিত করতেই রুমের ভিতর হতে উশান হাঁক ছেড়েঁ মীরাকে ডাক দেয়। রুহি একবার রুমে উঁকিঝুঁকি দিয়ে শেষে মীরার পানে তাকিয়ে চিবিয়ে বলল,

‘ একবার উশান ভাই যাক। তারপর দেখিস তোরে আমি কি করি! ‘

শব্দ করে পা ফেলে রুহি রুমের সামনে থেকে চলে যায়।তপ্তশ্বাস শ্বাস ফেলে মীরা ওড়না টেনে রুমে প্রবেশ করে। ঘুটঘুটে আঁধারে নিমজ্জিত রুমটা এখন রশ্মির ঝলকানিতে ঝলমল করছে৷ যদিও বাহিরে রশ্মির ধাপ প্রায়ই শেষ। কিন্তু কৃত্রিম রশ্মির সাহায্যে রুম এখন সম্পূর্ণ আলোকিত। উশান তার হতে তিন ফুট দূরে দাঁড়ানো। মীরা পদচারণ থামিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

‘ আপনি হটাৎ আমার ফ্লাটে কেনো এসেছেন?’

উশান উল্টোপিঠ হয়ে দাঁড়ানো। মীরার প্রশ্নে নড়চড় কিংবা হেলদোল কোনোটাই লক্ষ করা গেলো না। ক্ষনিক বাদে স্বাভাবিক গলায় বলে উঠলো,

‘ দরজা আঁটকে কান্নাকাটি করছিলি কেনো মীরা?আমার উত্তর শুনে? ‘

মীরার শিরদাঁড়ায় অদ্ভুত এক স্রোত প্রবাহিত হলো।উশানের কন্ঠস্বর উদ্ভট ঠেকছে তার নিকট। ভীষণ শীতল কন্ঠ। আক্ষেপ, ক্ষোভ, রাগ সবকিছু যেনো স্বাভাবিক থেকে নম্রভাবে প্রকাশ করছে। নিজেকে সামলে নিয়ে মীরা প্রতিত্তুর করলো,

‘ আপনার উত্তর শুনে কি আদও আমার কান্নাকাটি করার কথা? প্রশ্নটা বেখাপ্পা লাগলো না আপনার?’

‘ প্রশ্ন নয় তোর উত্তর বেখাপ্পা। তোর চোখ স্পষ্টত সকল উত্তর দিচ্ছে আমায়। তোর চেহারা আমায় বলে দিচ্ছে তোর অন্তরালের অপ্রকাশিত কথা।’

মীরা ধরা খেয়ে ইতস্তত বোধ করলো। তার এই এক বিরাট সমস্যা। কোনোকিছু সঠিক সময়ে গোপন করতে পারেনা। মুখ বন্ধ রাখলেও চেহারায় ফুটে উঠে তার মনোঃ কথা। উশান পিছনে ফিরলো এবার। মীরার মুখোশ্রীর প্রতি সচেতন চাহনি তার। অশ্রুকণা শুকিয়ে গালে দাগ বসে গিয়েছে। চেহারা বলে দিচ্ছে আসল সত্যিটা। তার অন্তঃকরণ একটু অস্থিতিশীল হয়ে উঠলো।

মীরা এগোল। উশানের সন্নিকটে গিয়ে। হটাৎ করেই নিজের আসল সত্বা, রূপ, কাঠিন্যতা ফেলে ঠোঁট ভেঙে হু হু করে কেঁদে উঠলো। অবাধ্য, অদৃশ্য অশ্রুকণা দর্শন দিলো নেত্রকোণে। গাল বেয়ে পড়ে গেলো সে নিজ নিয়ম অনুসারে। আচানক সে তার সামনে থাকা লম্বা, শক্তপোক্ত দেহের অধিকারী মানবকে আবেগে জরীয়ে ধরলো। উশানের বুকের কাছের শার্টের অংশটা খামচে ধরলো শক্ত করে। নিজ কার্য হাসিলের মাঝে মীরা একটুখানি চমকে উঠলো বটে। পাথর মনের মানবটার শরীরটাও দেখি পাথর। পেটানো শরীর যেনো লোহার মতোন শক্ত। উশানের কোমড় জরীয়ে ধরে মীরা কান্নামাখা সুরে বলে উঠলো,

‘ আপনি আমায় ভালোবাসেন না! এই কথাটা শোনার পর আমার এতোটা কষ্ট হয়েছে যেনো আমি এখনি দম বন্ধ হয়ে মারা যাবো। কোনোমতে বাড়ি ফিরে দরজা আঁটকে বসেছি। হাতে নতুন একটা ব্লেট’ও নিয়েছিলাম সুইসাইড করার আশায়। ট্রাস্ট মি! তখন যে আমার মধ্যে কি চলছিলো, আই ডোন্ট নো! বারবার মনে হচ্ছিলো আপনাকে না পেলে এই মূর্হতে আমি পাগল হয়ে যাবো। এমনটা হওয়ার কারণ বুঝিনি প্রথমে। অনেকক্ষন চুপচাপ বসে থেকে উপলব্ধি করলাম আপনার মতো অসভ্য, বদমাইশ, পাথর মানবটাকে আমি ভালোবাসি। ‘

মীরা থামলো। হেঁচকির তালে কথা বলা বেশ মুশকিল হয়ে পড়েছে। উশান স্তব্ধ চোখে তার বুকে থাকা ক্রন্দনরত রমনীকে দেখছে। এটা কি সেই মীরা? যে তাকে ঘৃণা করতো। সহ্য করতে পারতো না। মীরার হটাৎ পরিবর্তন উশানের মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। এটা কি হলো? ক্ষন বাদে,মীরা ছিটকেঁ সরে আসে। মনে করলো এই মাত্র সে কি করেছে? কি বলেছে?সর্বনাশ! এটা কি করলো সে?আবেগের তাড়নায় এই নিষিদ্ধ ভুলটা কি করে করতে পারলো? মীরার অস্বস্তি, ইতস্তত অনুভূতি মিশ্রিত মুখোশ্রী দেখে উশান বুঝলো মীরা তখন নিজের মধ্যে ছিলে না। হয়তো নিজের মাঝে চেপে রাখতে চেয়েছিলো কথা গুলো। জোড়াল শ্বাস ফেলে সে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বলে উঠে,

‘ ছিহঃ মীরা! এটা কি করলি তুই? আমার শার্ট., নাকের পানি, চোখের পানি সব এক করে মিশিয়ে ফেলেছিস। ধর এটা। সকাল আমাকে শার্টটা ধুয়ে বাসায় দিয়ে আসবি। ‘

উশান তার পরনের শার্ট মীরার সামনেই খুলে ফেললো। মীরা হকচকিয়ে উঠলো তৎক্ষনাৎ। তবে উশান ভিতরে টিশার্ট পরিহিত বলে ক্ষ্যান্ত হলো। উশান মীরার হাতে শার্ট ধরিয়ে দিয়ে রুম থেকে বের হতে হতে বলল,

‘ নিজের অনুভূতি কন্ট্রোল করতে করা শেখা দরকার তোর। আবেগের দুনিয়া ছেড়ে বাস্তবতা দেখ। সবকিছুর পার্থক্য বুঝতে পারবি। ‘

উশান চলে যেতেই মীরা বিছানায় বসলো। লোকটা কি বলে গেলো? তার কথা গুলো কি ভালোমতো শুনেনি? ভালোবাসার মাঝে ‘ আবেগ’ শব্দটা টানছে কেনো? সব চিন্তা ফেলে মীরা তার হাতে থাকা উশানের শার্টটা নিজের নাকের কাছে ধরলো। শ্বাস টেনে উপলব্ধি করে প্রিয় পুরুষের গায়ের মিষ্টি পুরুষালী ঘ্রাণ। দরজার অপাশ হতে সরে যায় উশান। বুক চিঁড়ে তার আপনা-আপনি বেড়িয়ে আসে দীর্ঘ নিঃশ্বাস। এসবের শেষ কবে? কবে সে তার ওপর আরোপিত বিশাল দায়িত্বের ইতি টেনে শান্তি, স্বস্তির প্রিয়তম প্রহরকে কাছে টানতে পারবে?

_

পুশআপে ব্যাস্ত এরিক। কোথা থেকে তূর্শী উড়ে এসে তার পিঠের ওপর বসে পড়লো। মুখ থুবড়ে পড়ে যেতে নিয়েও নিজেকে সামলে পুশআপ করতে থাকে সে। ঈষৎ বাদে নিজের মাতৃভাষা ব্যাবহৃত করে থেমে থেমে বলতে লাগল,

‘ মিস.তূর্শী! এতো সকালে আমার এখানে? ‘

তূর্শী ভাবলেশহীন গলায় উত্তর দেয়,

‘ কেনো আসতে পারি না নাকি? আসা নিষেধ?তাহলে চলে যাই। ‘

‘ স্ট্রেঞ্জ! এটা কখন বললাম? আসা নিষেধ হতে যাবে কেনো? তোমার প্রেমিকের বাসা। যখন খুশি তখন আসবে। ‘

‘ স্টপ! পরে পুশআপ করো। আমার কিছু কথা আছে। উঠে এসো। ‘

তূর্শী এরিকের ওপর থেকে নেমে ডিভানে গিয়ে বসলো। এরিক উঠে দাঁড়িয়ে তোয়ালে দিয়ে অবশিষ্ট ঘামটুকু মুছতে মুছতে এগোল তূর্শীর নিকট। সন্নিকটে দাঁড়িয়ে কিছু বলবে তৎক্ষনাৎ মাথার পিছন দিকটায় চাপ অনুভূত হলো তার।সঙ্গে সঙ্গে ছিটকেঁ পড়লো সামনে। তারপর অনুভব করলো,তার ওষ্ঠাধর এক কোমল অধর জোড়ার মাঝে আস্তে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এরিক আশ্চর্য হয়! আবেশে চোখ বদ্ধ করতেই চট করে তূর্শী চোখ খুলে অতীব সন্তপর্ণে এরিকের চক্ষু নজর এড়িয়ে ফটাফট কয়েকটা ছবি তুলে নেয় বিভিন্ন পদ্ধতিতে।

চলবে,