ইষ্ক ইবাদাত পর্ব-৬৮+৬৯

0
4411

#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_৬৮

বাড়ির সবাই এখন বাড়ির দরজায় দিকে তাকিয়ে আছে। রেয়ান্স তোড়া তামিম লেখা রাই ওদিকে তাকিয়ে আছে। আর সাথে সাথেই ওদের সবাই এর চোখ মুখ শক্ত হয়ে যায়। মুখের এক্সপ্রেশন পাল্টে গেছে। রেয়ান্স এর চোখ মুখের দেখলে মনে হচ্ছে ওর চোখ দিয়ে ঠিকরে আগুন বের হচ্ছে। কপালের শিরা গুলো ফুলে ফুলে উঠেছে। হাত মুঠো করে তাকিয়ে আছে।

-“তাথই মা। তোড়ার মা মিসেস নিকিতা মানান ডেকে ওঠে।

হ্যাঁ দরজায় দাঁড়িয়ে আছে তোড়ার বাবা এহসান মানান ও নিকিতা মানান। আর ওদের দেখেই বাড়ির সবাই এর চোখ মুখ পাল্টে গেছে। তোড়ার বাবা মা তামিমদের বেরিয়ে যেতেই ওদের পিছু নিয়ে চলে আসে। আর ওদের দেখেই সবার মুখ পাল্টে গেছে।

-“আপনারা এখানে কি করছেন? কেনো এসেছেন এখানে? তামিম ওদের দেখেই চিৎকার করে বলে ওঠে।

-” তাথই মা। তোড়ার মা আবারো বলে ওঠে।

-“কে তাথই? এখানে কোনো তাথই নেই। আর এই নামের এখানে কেউ থাকে না। তোড়া শান্ত অথচ দৃঢ় ভাবে বলে ওঠে।

-” শুনতে পাচ্ছেন না? আপনাদের তো বলা হলো এখানে তাথই নামের কেউ থাকে না। তাহলে এখনও দাঁড়িয়ে আছেন কেনো? তাহা বলে ওঠে।

-” আপনাদের লজ্জা করছে না এই ভাবে মুখ উঠিয়ে এখানে চলে আসতে। আর তাছাড়া এখানের ঠিকানা পেলেন বা কি ভাবে? আর সিকিউরিটি বা কি ভাবেই তোমাদের ঢুকতে দিলো কি ভাবে? তামিম চিৎকার করে বলে ওঠে।

-” তামিম আমি তোর মা। তোড়ার মা আহত কন্ঠে বলে ওঠে।

-“কে মা কার মা? তুমি কারোর মা হওয়ার যোগ্যতা রাখো না। কোনো যোগ্যতা নেই তোমার। তাই নিজেকে মা হিসাবে দাবি করে লোক হাসিও না। তামিম বলে ওঠে।

-” তাথই মা আমি জানি আমি অন্যায় করেছি। মা আমার তুই কি তোর এই মা কে ক্ষমা করতে পারবি না? তোড়ার মা কাঁদতে কাঁদতে বলে ওঠে।

-” এক্সকিউজমি! কে তাথই? আমি তোড়া। আর আপনি কেনো আমার মা হতে যাবেন ? ইনি হলো আমার মম মিসেস তাসনীম দেওয়ান । আমার মা। তাই আপনাকে ক্ষমা করার কথা আসছে কোথায় থেকে। তোড়া দৃঢ় ভাবে বলে ওঠে।

এই মুহূর্তে তোড়ার মুখের ভাব দেখলে কেউ বুঝতে পারবে না যে তার ভিতরে কি চলছে। রেয়ান্স একবার তোড়ার মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে তোড়ার ভিতরে এই মুহূর্তে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ একমাত্র এই মানুষটা তোড়া কে বুঝতে পারে। তার মুখ দেখলে সব কিছু অনুমান করে নেয়। রেয়ান্স তোড়ার পাশে এসে দাঁড়িয়ে আলতো করে তোড়ার হাতে হাত রাখে। তোড়া একবার তার পাশের দিকে তাকিয়ে রেয়ান্স কে দেখে নিজের মনোবল বেড়ে যায় শক্ত করে রেয়ান্স হাত ধরে নেয়। রেয়ান্স ইশারায় তোড়া কে তার পাশে থাকার আশ্বাস দেয়।

-“তাথই মা এই ভাবে বলিস না। আমি জানি আমি ভুল করেছি। আমি তোর সাথে অনেক অন্যায় করেছি তোকে অবহেলা করেছি। মা হিসাবে কোনো কর্তব্য পালন করেনি। সব কিছু জানি। আমি খুব বড় অন্যায় করেছি। আমার উচিত ছিল তোকে বোঝা। তোকে বিশ্বাস করা। আজ আমার সমস্ত ভুল ভেঙে গেছে। আমাকে ক্ষমা করে দে মা। কাঁদতে কাঁদতে বলে ওঠে তোড়ার মা।

-“সিরিয়াসলি ক্ষমা! আচ্ছা কিসের ক্ষমা? আর আপনি মিসেস নিকিতা মানান আমার কাছে ক্ষমা চাইছেন? বলেই হেসে ওঠে তোড়া।

-” আমি জানি মা আমার ক্ষমা চাওয়ার কোনো মুখ নেই লজ্জা থাকা উচিত আমার যা অন্যায় করেছি তারপরও ক্ষমা চাওয়ার জন্য তারপরেও আমি আমার সব ভুল বুঝতে পেরেছি। আমাকে ক্ষমা করে দে মা। তোড়ার মা তোড়ার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলে ওঠে।

-” ওখানেই দাঁড়ান। একদম আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না। আরে আর কতবার বলব যে আপনি আমার মা নন। আমার মা কখনোই আমার সাথে এমন করতে পারে না। আর না আমাকে এই রকম কোনও পরিস্থিতি তে ছেড়ে দেয়। শুনুন মিসেস মানান জন্ম দিলেই বাবা মা হওয়া যায়না। রক্তের সম্পর্ক ছাড়া ও মা বাবা হওয়া যায়। আর এরই হলো আমার মম ও বাপি। আপনাদের কেউ নই। তোড়া ওর মম আর বাপির কাছে গিয়ে বলে ওঠে।

-“আজকে সত্যি টা সবার সামনে এসেছে বলেই আপনাদের ভুল ভেঙেছে। না হলে আমার কথা তো মনেই হতো না তাইনা। কারণ আপনারা কোনো ভুল করতে পারেন না আর কেউ কেউ তো ভুল করেও বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়। তাই এখানে আর কোনো নাটক করবেন না। আপনাদের কোনো মেয়ে এখানে থাকে না আর তাথই সে তো বহু বছর আগে মরে গেছে। তা হটাৎ তার প্রতি এত ভালোবাসা বেরিয়ে আসছে কেনো? তোড়া রুক্ষ ভাবে বলে ওঠে।

-“তাথই মা আমা…. । এহসান মানান কে হাতের ইশারায় চুপ করিয়ে দেয় তোড়া

-” এখানে তাথই নামের কেউ থাকে না। আর প্লিজ আমাকে মা বলবেন না। তোড়া দৃঢ় ভাবে বলে ওঠে।

-“একবার এই বাবা টা কে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দিবি মা? এহসান মানান বলে ওঠে।

-” বাবা কে বাবা কার বাবা? বাবা ডাকের মানে জানেন? প্লিজ নিজেকে বাবা বলে আর লোক হাসাবেন মিস্টার মানান।

-“আপনি কোনোদিন ও কারো বাবা যাওয়ার যোগ্যতা রাখেন না। যে নিজের সন্তান কে মেরে ফেলতে যেতে পারে যে বছরের পর বছর নিজের রক্ত কে অবহেলা করতে পারে। যে তার রক্ত কে বাইরে সবার সামনে পরিচয় করিয়ে দিতে লজ্জা বোধ করে সে কখনোই বাবা হওয়ার যোগ্যতা রাখেনা। বুঝতে পেরেছেন মিস্টার এহসান মানান।

-“আপনার ভালোবাসার সেকেন্ড ওয়াইফ এখন জেলের মধ্যে পচতে শুরু করেছে। তাই জন্য কি এখন তাকে বাচাতে আমার কাছে নাটক করতে এসেছেন তাইনা কিন্তু শুনে রাখুন মিস্টার এহসান মানান আমি কেস তুলব না তাই আপনি যা করার করে নিতে পারেন। তোড়া চিৎকার করে বলে ওঠে।

-” নারে মা না আমি আমার করা পাপ এর জন্য শাস্তি পেতে চাই। আমাকে যা শাস্তি দেয়ার দে কিন্তু ভুল বুঝিস না আমি কারোর জন্য আসিনি আমি তোর কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি। তোড়ার বাবা বলে ওঠেন।

-” ক্ষমা কিসের ক্ষমা সেই রাতে আমাকে পশুর মত পিটিয়ে ছিলেন বলে, এত বছর আমার সাথে অমানবিক আচরণ করেছেন বলে নাকি এখন আপনার প্রিয় মেয়ে তানিয়া আপনার কাছে নেই বলে। ভালোই নাটক করতে পারেন আপনি। সবার সামনে মেয়েকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে পিছন থেকে তাকে পালানোর সাহায্য করেছেন তাকে দেখতে মেন্টাল অ্যাসাইলাম গিয়েছিলেন। আর আমার কাছে এসে পাপ এর শাস্তি পেতে চাইছেন বাহ ভাই বাহ। তোড়া হাততালি দিয়ে বলে ওঠে।

ওখানে থাকা সবাই চমকে উঠেছে তোড়ার শেষের কথা গুলো শুনে শুধুমাত্র রেয়ান্স শাহীন ছাড়া। এরা দুজন জানতো শুধু এই কথা গুলো। এমনকি তোড়ার মা ও।

-“হ্যাঁ অবশ্যই তানিয়ার প্রতি আপনার ভালোবাসা তো থাকবেই। যার মায়ের প্রতি আপনার এত ভালোবাসা যার জন্য নিজের রক্ত কেও মেরে ফেলতে হাত কাপে না তার মেয়ে কে তো ভালোবাসতে হবে। আফটার অল এক সময়ে ওয়াইফ ছিল বলে কথা। তোড়া বলে ওঠে ।

-” মানে কি বলতে চাইছিস দিভাই? তামিম চমকে উঠে বলে।

তোড়ার কথায় ওখানে সবাই চমকে গিয়েছে। অবাক চোখে তোড়ার দিকে আর এহসান মানান এর দিকে দেখছে সবাই।

-” ওহহো মিস্টার মানান আপনি এটাও কাউকে বলেনি তাইনা যে তানিয়া আপনার মেয়ে। ইশ এটাতো অন্তত আপনার এই ওয়াইফ কে বলতে পারতেন তাইনা। যতো হোক এই মহিলার বান্ধবী ছিল বলে কথা নিশ্চয়ই খুশি হতেন। তোড়া তাচ্ছিল্য ভাবে বলে ওঠে।

-” মানে কি তোমার সন্তান মানে কি বলছে তাথই। তানিয়া তো অনিতার আমানত তাহলে তোমার মেয়ে বলছে কেনো? তোড়ার মা ওর বাবার কাছে গিয়ে চিৎকার করে বলে ওঠে।

-” আরে মিসেস মানান আপনি দেখছি এটাও জানেন না। তানিয়া অনিতার আমানত জেনে যে আপনি আপনার নিজের মেয়ের থেকেও বেশি ভালোবাসা দিয়েছেন। সব সময়ে তাকে বড় করে দেখেছেন আর তার আসল পরিচয় জানেন না ইশ। তোড়া বলে ওঠে ।

-” তানিয়া হলো মিস্টার মানান ও অনিতা শর্মা এর অবৈধ সন্তান। আপনার অগোচরে আপনার পেয়ার এর বান্ধবী আপনার স্বামী কে নিয়ে প্রেম প্রেম খেলায় মেতে ছিলেন। আর তার ফল তানিয়া। আর অনিতা ও নিজের মেয়ে কে ট্রাম কার্ড হিসাবে ইউজ করে মিস্টার মানান কে বিয়ে করেন। কিন্তু তিনি যে উদ্দেশ্যে বিয়ে করেছিলেন তাতে সফল হয়নি কিন্তু নিজের মেয়ে কে রেখে গিয়ে অন্য একটা শিশুর সব কিছু কেড়ে নিয়ে গেলেন কি ভালো না। তোড়া হাসতে হাসতে বলে ওঠে।

-“শোনো আমি তোমাদের আর মুখ ও দেখতে চাইনা। এখান থেকে চলে যাও তোমরা। আমি জানবো আজ থেকে আমার আর কোনো ছেলে নেই। তোড়ার দাদু বলে ওঠে।

-” কি হলো এখনও কেনো দাঁড়িয়ে আছেন?কেউ নেই এখানে আপনাদের। ও হ্যাঁ আপনারা চাইলেই আপনাদের প্রিয় মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে পারেন কোনো অসুবিধা নেই। এখন থেকে তাদের নিয়ে থাকুন কেমন। তোড়া বলে ওঠে ।

-” সিকিউরিটি। সিকিউরিটি। তোড়া গলা উচু করে ডেকে ওঠে।

-“ইয়েস ম্যাডাম । দুজন গার্ড ছুটতে ঢুকে আসে।

-“কোথায় থাকেন আপনারা বাইরের লোক বাড়িতে ঢুকে এলো কিভাবে? কিসের জন্য সেলারি দেয়া হয় আপনাদের? তোড়া বলে ওঠে।

-” সরি ম্যাম ওনারা তামিম স্যার এর পেছন পেছন ঢুকে এসেছে তাই ভাবলাম আপনাদের চেনা জানা কেউ। একজন গার্ড বলে ওঠে।

-“দ্বিতীয়বার যেনো এই ভুল না হয়। এখন ওদের কে বাইরে পর্যন্ত ছেড়ে আসুন। তোড়া বলে ওঠে ।

ওখানে থাকা বাকিরা এতক্ষণ চুপ করে তোড়ার কথা শুনে যাচ্ছিলো। তোড়ার বাবা মা আর কোনো কথা বলতে পারেন না তারা ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে তোড়ার দিকে। তারা তাদের পাপ এর শাস্তি পাচ্ছে। তোড়ার বাবা মা তোড়ার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকেই বেরিয়ে যায়। আর যে তাদের কোনো কথা বলার মুখ নেই।

তোড়ার বাবা মা বেরিয়ে যেতেই তোড়া রেয়ান্স কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ওঠে। সে এতক্ষণ নিজেকে স্বাভাবিক রেখেই কথা বললেও তার নিজের মধ্যে ঝড় বয়ে যাচ্ছিলো। আজ সে তার প্রতি হওয়া সমস্ত অন্যায় এর মোকাবিলা করেছে সবাই কে তার যোগ্য জবাব দিয়েছে। রেয়ান্স এতক্ষণ তোড়ার পাশে থেকে তার মনোবল জাগিয়ে যাচ্ছিলো কারণ এটা তোড়ার একার লড়াই এখানে সে পাশে থাকতে পারে এর বেশি কিছু নয়। হটাৎ করেই তোড়া কাঁদতে কাঁদতেই রেয়ান্স এর বুকে ঢোলে পড়ে।

তোড়ার হঠাৎ এই ভাবে সেন্সলেস হয়ে যাওয়াতে সবাই চিন্তায় পড়ে যায়। রেয়ান্স তোড়া কে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে রেখেই কোলে তুলে নিয়ে রুমের দিকে পা বাড়ায়। সাথে বাকিরা ও চিন্তিত হয়ে ডক্টর কে কল করেই ওদের রুমের দিকে চলে যায়। তোড়ার সেন্সলেস হয়ে যাওয়াতে রেয়ান্স পাগল হয়ে যায় সমানে তোড়া কে ডেকে চলেছে। আর ওখানে থাকা বাকিরা সবাই রেয়ান্স তোড়ার এই বন্ধন দেখতে থাকে তাদের এই ভালোবাসা তারা মুগ্ধ চোখে দেখে।

কিছুক্ষণ পর রেয়ান্স দের ফ্যামিলি ডক্টর চলে আসে। তোড়া কে চেকআপ করার পরই তার মুখ গম্ভীর হয়ে যায় আর এটা দেখেই যেনো রেয়ান্স এর দম আটকে আসে দুশ্চিন্তা তে।

-“কি হলো আংকেল চুপ করে আছেন কেনো ওর কি হয়েছে বলুন না। রেয়ান্স বলে ওঠে।

-” ডক্টর আমার দিভাই এর কি হয়েছে বলুন না। তামিম বলে ওঠে।

-“আসলে কথা টা যে ভাবে বলব বুঝতে পারছিনা। ডক্টর বলে ওঠে।

-” আরে বাবা মুখ দিয়েই বলুন আর কি ভাবে বলবেন। রাই বলে ওঠে।

-“আংকেল প্লিজ। রেয়ান্স বলে ওঠে।

-“কথাটা হলো যে রাওয়াত পরিবারে একজন নতুন অতিথি আসতে চলেছে। ডক্টর বলে ওঠে।

-“মানে? প্রায় সবাই একসাথে চিৎকার করে বলে ওঠে।

-“মানে তোড়া প্রেগনেন্ট। ডক্টর হাসি মুখে বলে ওঠে।

-“আরে সালা তুই তো ভয় পাইয়ে দিয়েছিস। রেয়ান্স এর দাদু ডক্টর পিঠে মেরে বলে ওঠে।

এদিকে বাকি সবাই এই খবরে খুশি হয়ে ওঠে। একটু আগের যে বিষাদময় পরিবেশ ছিল সেটাও কেটে গেছে এই খবরে। বাড়ির সবাই মেতে উঠেছে। কিন্তু রেয়ান্স এখনও পাথরের মত বসে আছে। তার চোখ দুটো এখন তোড়ার মুখের দিকে স্থির। তার মুখ দেখে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। না খুশি না দুঃখ। বাড়ির সবাই রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই রেয়ান্স আসতে আসতে তোড়ার বুকের উপর মাথা দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে থাকে। রেয়ান্স এখন নিজেকে শান্ত করতে চায়। সে এই মুহূর্তে কোনও অনুভূতি প্রকাশ করতে পারছেনা তার মনে হচ্ছে সে যেনো জমে গেছে।

বেশ কিছুক্ষণ পর তোড়ার জ্ঞান ফিরতে অনুভব করে বুকের উপর ভারী কিছুর। চোখ খুলে তাকাতে দেখতে পায় রেয়ান্স তার বুকে মুখ গুঁজে শুয়ে আছে। রেয়ান্স এর চোখের কোন চিকচিক করছে। হটাৎ করে রেয়ান্স এর এমন ব্যবহারের জন্য তোড়া হকচকিয়ে গেছে।

-“কি হয়েছে তোমার? আর আমি এখানে কি করে আসলাম? কি হয়েছিলো আমার? তোড়া চিন্তিত ভাবে বলে ওঠে।

রেয়ান্স তোড়ার বুকের থেকে মুখ তুলে তোড়ার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকেই তোড়ার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর তোড়ার ঠোঁট ছেড়ে কপালে একটা স্পর্শ বুলিয়ে দেয়। তোড়া শুধু ভ্রু কুঁচকে রেয়ান্স এর কাজ কারবার দেখে যাচ্ছে অবাক হয়ে। হটাৎ করে রেয়ান্স এর হলো কি? কি চলছে রেয়ান্স এর মনে এইসব ভেবে যাচ্ছে তোড়া।

-“আই অ্যাম সরি ওয়াইফি। আমি তোমার ক্যারিয়ারে বাঁধা দিতে চাইনি বিশ্বাস করো। রেয়ান্স বলে ওঠে।

-” রেয়ান্স কি হয়েছে তোমার? কি সব বলছো তুমি? তোড়া অবাক হয়ে বলে ওঠে।

রেয়ান্স তোড়ার কথা শুনে তোড়ার পেটের উপর মুখ নামিয়ে এনে তোড়ার পেটের উপর থেকে ড্রেস সরিয়ে দিয়ে চুমু খেতে থাকে। রেয়ান্স এর এমন স্নেহ ভরা স্পর্শে তোড়া কেঁপে ওঠে অবাক হয়ে যায়। তার সারা শরীরের আনন্দে শিহরিত হয়ে ওঠে চোখের কোণে পানি জমে আসে। আজ রেয়ান্স এর এই স্পর্শে কোনো কামনা নেই আছে একরাশ ভালোবাসা মাখা স্নেহ এর স্পর্শ।

-“রেয়ান্স… । তোড়া কাঁপা কাঁপা গলায় ডেকে ওঠে।

-” ইয়েস ওয়াইফি আমরা পেরেন্টস হতে চলেছি। রেয়ান্স মুখ তুলে বলে ওঠে।

রেয়ান্স এর কথা শুনেই তোড়ার চোখের কোণে জমে আসা পানি বিন্দু আকারে গড়িয়ে পড়ে। চোখে মুখে খুশির ঝিলিক বয়ে যায়। তোড়া রেয়ান্স কে দু হাতে জড়িয়ে নেয়। রেয়ান্স তোড়ার পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।

-“আমি কিন্তু এত তাড়াতাড়ি চাইনি। কিন্তু কিভাবে যে কি হয়ে গেলো। রেয়ান্স এখনও সেই আগের মত বলে ওঠে।

তোড়া রেয়ান্স কথা শুনেই ওকে ছেড়ে মুখের দিকে তাকায়। দেখতে পায় রেয়ান্স এর মুখ একদম অনুভূতি শূন্য হয়ে আছে। তোড়া বুঝতে পারে রেয়ান্স এই খবর তাতে প্রচণ্ড পরিমাণে শক পেয়েছে। তাই তার অনুভূতি কাজ করছে না।

-“তুমি খুশি হওনি? তোড়া রেয়ান্স এর গালে হাত রেখে বলে ওঠে। আর রেয়ান্স এর একটা হাত তার পেটের উপর ধরে রাখে।

তোড়ার কথা শুনেই রেয়ান্স তোড়া কে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে। তোড়ার পেটে থাকা হাতটা স্লাইড করতে থাকে।

-” আমি তোমাকে বোঝাতে পারব না ওয়াইফি আমি কতটা খুশি হয়েছি। কিন্তু আমি তা প্রকাশ করতে পারছি না। আমি খুব খুশি হয়েছি খুব। এত বড় একটা খুশির খবর দেয়ার জন্য তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসবো আজ। রেয়ান্স তোড়া কে জড়িয়ে রেখেই বলে ওঠে।

আজ তোড়ার কাছে তার জীবনের সব থেকে শ্রেষ্ঠ একটা দিন আজকে দিনে সে জানতে পেরেছে তার ভিতরে একটা প্রাণ বেড়ে উঠছে। এটা যে তার আর রেয়ান্স এর ভালোবাসার চিহ্ন । তার জীবনের সমস্ত দুঃখ কষ্ট ভুলিয়ে দিতে আসছে তাদের ছোট্ট বেবি।
.
.
.
. ❤️❤️❤️
. চলবে…….

#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_৬৯

তোড়া প্রেগনেন্ট জানার পর থেকেই রেয়ান্স এর কেয়ার দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। রেয়ান্স প্রথমে তার অনুভূতি প্রকাশ না করতে পারলেও তারপর থেকেই তোড়া কে সব সময়ে জন্য চোখে চোখে রাখে। তার ভালোবাসা আগের থেকে আরো বেশি হয়ে গেছে। আর এটা হবার কারণ ও আছে। এখন যেহেতু তোড়া একা নয় তাই ভালোবাসা দ্বিগুণ হয়েছে। পরের দিন গিয়ে ডক্টর চেক আপ করিয়ে আনে। পনেরো দিনের প্রেগনেন্ট। আর এই খবর জানার পর থেকেই বাড়িতে খুশির মেলা বসে গেছে তোড়ার দাদু ও রেয়ান্স এর দাদু মিলে এখন থেকেই তাদের আগত নাতি নাতনীর নিয়ে মেতে আছে আর তোড়ার মম নতুন নতুন ডিশ বানিয়ে তোড়া কে খাইয়ে যাচ্ছে। লেখা তাহার সাথে সারাদিন কাটিয়ে দেয়। মাঝে মাঝে তামিম এর সাথে জোর কদমে ঝগড়া ও চলে যেটা বাড়ির সবাই বেশ উপভোগ করে। আর এদের সাথে তো লেগে আছে রাই শাহীন ওরা সাথে থাকা কালিন চোখে চোখে প্রেম পর্ব চালিয়ে যায় মাঝে মাঝে সবার কাছে ধরা ও পড়ে যায়। তোড়ার দাদু ভাই আর বোন ওই দিনের পর তাদের ব্রান্দায় থাকা ফ্ল্যাটে চলে যেতে চেয়ে ছিল কিন্তু তোড়ার মম রেয়ান্স এর দাদু যেতে দেয় নি একসাথে থেকে গেছে। এখন দুই দাদু মিলে সারাক্ষণ তাদের গল্প করে যায় নাহলে চেস এর বোর্ডে দম দেয়।

তোড়ার বাবা মা ওই দিনের পরেও কয়েকবার দেখা করতে এসেছিল কিন্তু গার্ড ভিতরে আসতে দেইনি। সাথে তোড়ার বাবার স্টেট মিনিষ্টার এর পদ থেকে ও তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মিডিয়াতে ওই দিনের পুরো ঘটনা দেখার পর এমনিতেও পাবলিক ক্ষেপে ছিল আর তার উপরে নিউ প্রজেক্ট যে বেআইনি ভাবে কাজ চলছিল সেটা না জেনেই ওই প্রজেক্ট এর অর্ডার সাইন করে দিয়েছিলো। আর তারপরে ইনভেস্টিগেশনে জানা যায় ওখানে বেআইনি কাজ চলছিল সেটা দেখেই ওই পদে থেকে বহিষ্কার করে দেয় সরকার। এহসান মানান তার শাস্তি পেয়ে গেছে। আর তোড়ার মা তিনি ও সব সময়ে জন্য সন্তান হারা হয়ে গেছে। একটা মায়ের কাছে এর থেকে বড় শাস্তি আর কি হতে পারে।

এই সবের মধ্যে ও তোড়া তার কাজ করে যাচ্ছে তবে সেটা সাবধানতা অবলম্বন করে। আর এই সময়ে তোড়া রেয়ান্স এর চোখে চোখে থাকে। তোড়ার আগের থেকে অনেক গুলো কন্ট্রাক্টড সাইন করা ছিল তাই হঠাৎ করে তো সে মাঝ পথে এসে ছেড়ে দিতে পারবে না। এতে তার যতো না ক্ষতি হবে তার থেকেও বেশি হবে কোম্পানির। আর কাজের ক্ষেত্রে সব সময়ে কেয়ার ফুল থাকে। আর তাছাড়া সে একদম তার লক্ষ্যের শিখরে পৌঁছে গেছে রেয়ান্স এর লেভেল এর থেকে একটু দূরেই। তাকে টপ করতে হবে নিজের জন্য না হলেও রেয়ান্স এর জন্য তার সন্তান এর জন্য। তোড়ার সমস্ত স্বপ্ন পূরণ এর ইচ্ছা ও ছিল রেয়ান্স এর স্বপ্ন সেটা তোড়া কিভাবে ভেঙে দিতে পারে। এমনিতেই রেয়ান্স এখনও গিল্টি ফিল তার ক্যারিয়ার এর উচু এর পথে এই ভাবে বাধা আসার জন্য। তাই তোড়া সব সময়ে স্বাভাবিক থাকে আর নিজের কাজ ও করে যাতে রেয়ান্স কোনো ভাবেই নিজেকে দোষ দিতে না পারে। সে তার কিছু কাজ এগিয়ে রাখছে। আর তাছাড়া ও যতো দিন না বেবিবাম্প বোঝা যায় ততদিনে সে তার কাজে ওয়াকিবহল থাকবে। রেয়ান্স এখন করে তার সব কাজ আর তারপরে তোড়া কে দেখাশোনা করা এই সবের মাঝে যখন তার মনে পড়ে সে বাবা হতে চলেছে। তখন তার সারা ক্লান্তি মুছে যায় আরো বেশি করে এনার্জি বেড়ে কাজের প্রতি। আর তার সাথে ও আর মাত্র কয়েকদিন বাকি আর তারপরেই তাদের বিয়ের অ্যানাউন্স করবে।

—————

তোড়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হচ্ছে। পাশে কৃতী ও রাই দাঁড়িয়ে আছে। এখন লর্ড রেজেন্সিতে কৃতীর ও অবাধ বিচরণ। আজ অ্যাওয়ার্ড শেরিমেনি আছে। আজ তোড়া তার লক্ষে পৌঁছতে চলেছে। এই অ্যাওয়ার্ড শো এর নমিনেশনে তোড়ার নাম আছে। তাই রেডি হচ্ছে একটু পরে রাই আর কৃতীর সাথে বেরোবে। সাথে তার বাড়ির লোক ও আছে গেস্ট হিসাবে তারা যাবে। তাদের যাওয়ার জন্য রেয়ান্স ভি আই পি টিকিট অ্যারেঞ্জমেন্ট করিয়েছে। আজ তাদের সবার কাছেই একটা বড় দিন। আজ এই অ্যাওয়ার্ড শো এর স্পেশাল গেস্ট রেয়ান্স। যদি ও এটা তোড়া ছাড়া আর কেউ জানে না। আসলে এই প্রোগ্রাম এর জাজ হিসাবে রেয়ান্স কে সিলেক্ট করা হয়েছিলো কিন্তু রেয়ান্স এই অফার ফিরিয়ে দেয়। যেহেতু এই প্রোগ্রামে তোড়া রয়েছে তাই সে কোনো কন্ট্রোভার্সি হোক সে চায়না তাই সে গেস্ট হিসাবে যেতে রাজি হয়েছে শুধু।

রেয়ান্স তোড়ার বিয়ের ছয় মাস আগের দিন পূর্ণ হয়ে গেছে সেই হিসাবে এখন তারা তাদের বিয়ের অ্যানাউন্স করে দেবে ।দেখতে গেলে এখন সব দিক দিয়ে তাদের খুশির দিন। হয়তো তোড়ার জীবনে তার ছোটো থেকে পাওয়া কষ্ট দুঃখের স্মৃতি ভুলে যাওয়ার জন্য এত ভালোবাসা রাখা ছিল তার কপালে। আজ তোড়া ব্ল্যাক কালার এর একটা রাফেল্ড ইভিনিং গাউন পড়েছে ।চুল গুলো কে মেসি করে সাইট বান বানানো হয়েছে। মুখে একদম লাইট মেকআপ ।আর তার সাথে রয়েছে আজ তার কিছু বৈবাহিক চিহ্ন। নাকে খুব সুন্দর ছোট্ট একটা হিরের নোস পিন পরে আছে। আর তার সাথে আছে রেয়ান্স দের পরিবারে খানদানি ব্রেসলেট যেটা একদম সরু চুড়ির মত ডিজাইন করা অন্য হাতে রয়েছে আরো একটা ডিজাইন করা ব্রেসলেট যেটা তে রয়েছে কয়েকটা লেটার আর যেগুলো হিরে ও খ্রিস্টল পাথর দিয়ে ডিজাইন করা। এর মধ্যে রয়েছে তিনটে “আর” লেটার ও একটি “টি” লেটার। তবে প্রথম “আর” লেটার আর “টি” লেটার টা একটা লাভ শেপ এর মধ্যে রয়েছে। আর বাকি দুটো “আর” লেটার আলাদা লাভ শেপ এর মধ্যে রয়েছে। ব্রেসলেট এর মধ্যে মত তিনটে লাভ শেপ রয়েছে। যেটার জন্য ব্রেসলেট টা কে দেখতে আরো সুন্দর লাগছে। এটা রেয়ান্স যেদিন জানতে পেরেছিল সে বাবা হতে চলেছে তার পরের দিন এটা তোড়া কে গিফট করেছে এর মধ্যে তাদের আর তার বেবির নাম এর লেটার আছে। আর তারপর থেকেই তোড়া এটা সব সময়ে জন্য হাতে পড়ে থাকে।

তোড়া রেডি হয়ে রাই ও কৃতী এর সাথে বেরিয়ে গেছে। বাকিরা ও ওদের পিছু পিছু বেরিয়ে গেছে। রেয়ান্স ওদের সাথে যাবেনা একটু পরেই সে বেরোবে। কারণ এখনও তাদের বিয়ের অ্যানাউন্স হয়নি তাই সে চাইনা এটা নিয়ে কোনো স্ক্যান্ডেল তৈরী হোক। তাই সে তোড়ার কিছু পরেই বেরোবে। আজ রেয়ান্স ও তোড়ার সাথে ম্যাচ করে ড্রেস পরেছে। আসলে এটা একটা কাপল ড্রেস ছিল।

—————

অ্যাওয়ার্ড ফাংশন শুরু হয়ে গেছে। সব গেস্ট চলে এসেছে। তোড়া একদম স্টেজ এর সামনে বসে আছে । তার পাশেই আছে বিভিন্ন কোম্পানির মডেল। প্রথম রো ও সেকেন্ড রো তে ভরে আছে নামি দামি মডেল ও বড় কোম্পানির সি.ই.ও রা। তার পরের কিছু সিট পরেই আছে বাড়ির লোকের জায়গা। তোড়ার পাশে ও পিছনে বসে আছে তার সাথে থাকে নমিনেশনে মডেল এদের ও নাম উঠেছে তবে এখন দেখার সময় উইনার কে হয় তা জানার। যদিও এই অ্যাওয়ার্ড পুরো পুরি ফেয়ার হচ্ছে তাই কোনো ঝামেলা নেই। ইতি মধ্যে রেয়ান্স ও এখানে উপস্থিত হয়েছে। আর রেয়ান্স আসতেই চারদিকে থেকে চিৎকার আর সিটি বেজে ওঠে। রেয়ান্স সবার দিকে তাকিয়ে অভিবাদন জানিয়ে তার সিটে এসে বসে পড়ে যেটা তোড়ার সাইটে ছিল। যেখান থেকে দুজন দুজন কে স্পষ্ট দেখতে পাবে।

প্রথমে টপ টেন নিউ কমার মডেল এর অ্যাওয়ার্ড শুরু হয়। যারা এই অ্যাওয়ার্ড এর মাধ্যমে এ ক্যাটাগরির মডেল হিসাবে চিহ্নিত হবে। আর তারপরেই আছে মুম্বাই টপ টেন মডেল। যেটাতে এখন তোড়া টপ ওয়ান পজিশনে রয়েছে।। এই দুটো অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়ে যাওয়ার পর এবার শুরু হয় ইন্টারন্যাশনাল নাম্বার ওয়ান মডেল অ্যাওয়ার্ড । এটাতে চার জন নমিনেটশনে রয়েছে। তোড়া দেওয়ান, স্মৃতি গুপ্তা, আকৃতি পাঠক, রুমা পাণ্ডে।

এদের সবার নাম স্ক্রিনে আসার সাথে সাথে এদের চার জনের উপর ও স্পট লাইট এসে পড়ে। বাকি তিন জনের মুখে হালকা অভিব্যক্তি দেখা গেলেও তোড়া একদম শান্ত হয়ে বসে আছে। এদের নামের সাথে সাথে এদের ওয়ার্ক গুলো ও দেখানো হচ্ছে। যে কে কিসের ভিত্তিতে অ্যাওয়ার্ড পাবে। ইতি মধ্যে পুরো অডিয়েন্স জুড়ে চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়ে গেছে সাথে রয়েছে ফ্যানসদের চিৎকার। চার জনের ফ্যানসদের মধ্যে সব থেকে বেশি শোনা যাচ্ছে তোড়ার নাম। আর হোস্ট ও উইনার এর নাম ঘোষণার আগেই পুরো চারদিকে ভালো ভাবে তাকিয়ে দেখে নেয়।

-“অ্যান্ড দ্য উইনার ইজ…. ।বলেই থেমে যায় হোস্ট।

বাকিদের মধ্যে প্রশ্ন তুলে দিয়ে হোস্ট চারদিকে তাকিয়ে নেয় তার পরে হাসি মুখে অ্যানাউন্স করে।

-” অ্যান্ড দ্য উইনার ইজ…. তোড়া দেওয়ান । হোস্ট মাঝে কিছুক্ষণ চুপ থেকেই বলে ওঠে।

আর সাথে সাথে পুরো হল চিৎকারে আর হাততালিতে ফেটে পড়ে। এদিকে রেয়ান্স তোড়ার থেকে কিছুটা দূরে বসে তোড়ার দিকে তাকিয়ে আছে। আর তোড়া সে তো তার নাম অ্যানাউন্স হতে দু হাতে নিজের মুখ ঢেকে নেয়। আজ তার খুশির দিন। সে পেরেছে নিজের একটা পরিচয় তৈরী করতে। সে পেরেছে সবার কাছে নিজেকে প্রমাণ করতে। ইতি মধ্যে ইন্ডিয়া তে সে ফাইটার গার্ল হিসাবে পরিচিত সবার কাছে, অনিতার কেস এর পুরো ব্যাপারটা মিডিয়ার কাছে রিভিল করা হয়েছে তাই কারোর কাছে অজানা নয় তার ছোটো থেকে বড় হওয়ার প্রত্যেকটা পদক্ষেপ।

হোস্ট তোড়া কে স্টেজ আসার জন্য অনুরোধ করে। কিছুক্ষণ পরে তোড়া নিজেকে স্বাভাবিক করে উঠে দাঁড়ায়। একবার রেয়ান্স এর দিকে তাকিয়ে আসতে আসতে স্টেজ গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। স্টেজ আসতেই হোস্ট তোড়ার হাতে মাইক্রোফোন ধরিয়ে দেয় কিছু বলার জন্য। তোড়া মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে ওঠে।

-” আমি তোড়া দেওয়ান। যদি ও আমার আরো একটি পরিচয় আছে যেটা আপনারা একটু পরেই তার সাথে পরিচিত হবেন। আশা করি এখানে উপস্থিত সবাই আমার ইতিহাস জানেন। এটা আমার পূর্ণজন্ম । যদি ও পূর্ণজন্ম বলে কিছু আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না। কিন্তু এটার ক্ষেত্রে বলতে গেলেই আমার পূর্ণজন্ম বলতে পারেন এক জীবনে দু দুবার পরিচয় পেয়েছি বাবা মায়ের। জন্ম দিলেই শুধু বাবা মা হওয়া যায়না। রক্তের সম্পর্ক ছাড়া ও বাবা মা হওয়া যায়। আর এটা যদি মিথ্যা হতো তাহলে আজ সমাজে দত্তক নেয়ার রীতি ও উঠে যেতো। যায় হোক এখানে এইসব কথা বলছি কেনো? তার একটাই কারণ। আজ যে আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি আজ যে আমি ইন্টারন্যাশনাল নাম্বার ওয়ান মডেল এর এই অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছি সেটা একমাত্র আমার মম বাপি ও আমার লাইফ এর একজন স্পেশাল মানুষ এর জন্য। তাদের জন্য আজ তাথই মানান থেকে তোড়া দেওয়ান হতে পেরেছি। সেদিন আমাকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছে যারা আবার ও পাথরে পরিনত একজন মেয়ে কে নতুন করে বাঁচার মানে শিখিয়েছে যারা একজন মেয়ে কে তাদের মেয়ে হিসাবে পরিচিত দিয়েছে ভালোবাসা দিয়েছে তাহলে হলো নাকি পূর্ণজন্ম। হ্যাঁ এটাই আমার কাছে পূর্ণজন্ম। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে আজ থেকে প্রায় আট থেকে নয় মাস আগে তাথই মানান সাততলা বিল্ডিং থেকে পড়ে মারা গেছিলো। হ্যাঁ সেদিন সত্যি তাথই এর মৃত্যু দিন ছিল আর তারপরেই জন্ম হয়েছে তোড়া দেওয়ান এর। তোড়া এটুকু বলেই চুপ হয়ে যায় কান্নায় তার গলা বুজে আসছে। চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।

পুরো অডিয়েন্স জুড়ে একদম পিনপতন বিরাজ করছে। কারোর মুখে কোনো কথা নেই। কারোর চোখে পানি ও চলে এসেছে। তোড়া রেয়ান্স এর দিকে একবার তাকিয়ে দেখে সে তার দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের দুজনের চোখ চোখ পড়তেই রেয়ান্স তার চোখের ইশারা করে তোড়ার মনোবল জগায়। স্টেজ হোস্ট ও চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে এতক্ষণে যে হাসি খুশি পরিবেশ ছিল সেটা একদম চেঞ্জ হয়ে গেছে সবাই জানে মিডিয়ার দৌলতে তোড়ার পুরো কাহিনী তাই সবার চোখে মুখে কষ্টের ছাপ ফুটে উঠেছে।

-“আজ আমি তোড়া দেওয়ান হতে পেরে গর্বিত। আমার জীবনে মম ও বাপির মত পেরেন্টস পেয়ে সত্যি আমি ধন্য। আমার জীবন সার্থক আমার জীবন সঙ্গী কে পেয়ে। আজ আমি যেখানেই দাঁড়িয়ে আছি যতো টুকু পরিচয় অর্জন করেছি সব ওই তিনটে মানুষের জন্য আমাকে তোড়া দেওয়ানে পরিনত করেছে আমার মম বাপি আমাকে আবারো স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনেছে আমার জীবনের সেই স্পেশাল মানুষ আমার হাজবেন্ট। যে প্রথম থেকেই আমার পাশে থেকে আমাকে সাহস দিয়ে গেছে আমার মনোবল বাড়িয়ে গেছে আমাকে সব সময় তার ভালোবাসা দিয়ে আগলে রেখেছে। তোড়া হাসি মুখে বলে এক দৃষ্টিতে রেয়ান্স এর দিকে তাকিয়ে থাকে।

রেয়ান্স মুগ্ধ দৃষ্টিতে তোড়ার দিকে তাকিয়ে আছে। সে এতক্ষণ মুগ্ধ হয়ে তোড়ার প্রত্যেকটা কথা শুনে যাচ্ছিলো। তাকে যখন স্পেশাল মানুষ হিসাবে পরিচয় দিচ্ছিল তখন মনের কোণে একটা ভালো লাগার সৃষ্টি হয়। আর সবার সামনে যে এই স্টেজ এমন একটা অ্যানাউন্স করবে তোড়া সেটা ভাবতেও পারেনি রেয়ান্স তাকে যখন হাজবেন্ট বললো তার নিজের মধ্যেই কেমন শিহরন খেলে হার্ট জোরে বিট করতে থাকে।

এদিকে তোড়ার এমন কথায় সবাই অবাক হয়ে গেছে তাদের মধ্যে বিস্ময় এর শেষ নেই। পুরো অডিয়েন্স জুড়ে চাপা গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে। আর হোস্ট এর তো পুরো চোখ বড় বড় ও মুখ হা হয়ে গেছে।

-“মিস তোড়া আপনি নিশ্চই আমাদের সাথে মজা করছেন? আপনি জানেন আপনার এই কথায় কত জনের হার্ট ব্রেক হয়ে গেছে? হোস্ট অভিনয় করে বলে ওঠে।

-” আমি কোনো মজা করছিনা। কিন্তু কি করা যাবে বলুন আমি ছয় মাস আগের থেকেই বিবাহিত। আমার বিয়ের ছয় মাস পূর্ণ হয়ে গেছে। তোড়া আলতো হেসে বলে ওঠে।

-” কে সেই ভাগ্যবান পুরুষ যে আপনাকে বিয়ে করেছে? হোস্ট বলে ওঠে।

-“সে লাকি কিনা জানি না তবে আমি লাকি যে তার মত একজন লাইফ পার্টনার কে পেয়েছি। আর উম সে এই ইন্ডাস্ট্রির কিং। তোড়া হেসে বলে ওঠে

-” আচ্ছা তাই নাকি? তাহলে এতদিন কেনো আপনি সামনে আনেনি তার পরিচয়? হোস্ট ও মজা করে বলে ওঠে।

-“প্রথমত আমি তার পরিচয় এতদিন সামনে নিয়ে আসিনি তার একটাই কারণ। আমি চাইনি কেউ আমাকে এটা বলতে না পারে যে আমি তার সাহায্য নিয়ে উপরে উঠেছি। আমি প্রথম থেকেই চেয়েছি নিজের পরিচয় তৈরী করতে নাকি হাজবেন্ট এর পরিচয়ে পরিচিত হতে। আমি বাবা মা ও হাজবেন্ট এর পরিচয় ছাড়া ও নিজের একটা পরিচয় গড়ে তুলতে চেয়েছিলাম তাই আমি আমার বিয়ের অ্যানাউন্স করিনি। আর এতে সে আমাকে পূর্ণ সহযোগিতা করেছে সব সময়ে আমার পাশে থেকেছে। আমরা ছোট্ট থেকেই কেউ এক লাফে বড় হয়ে যায়নি। ছোটো বাবা মা আমাদের কে হাতে ধরিয়ে হাঁটা শিখিয়েছে আর তার সাথে ছিল আমাদের প্রচেষ্টা কারণ ছোটো বেলায় প্রত্যেক শিশুর মধ্যে একটা নতুন জিনিস এর প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে। আর সেই আগ্রহ টাই সবার মধ্যে থাকা উচিত। বাবা মা তো সব সময়ে আমাদের পাশে থাকে আমাদের আগলে রাখে। কিন্তু আমাদের নিজেদের মধ্যে একটা প্রচেষ্টা থাকা দরকার যার উপরে বেস করে আমরা সামনের পথে এগিয়ে যেতে পারি। স্কুলে পড়া থেকে শুরু করে চাকরি জীবনে ও আমাদের নিজের কাজ গুলো কে নিজের করে নিতে এই জায়গায় কেউ আমাদের হয়ে পরীক্ষা ও দিতে পারবে না আর না পারবে ইন্টারভিউ দিতে। তেমনই সবার আলাদা প্রফেশন আছে। আর মডেলিং করাটাও কোনো হাতের মোয়া এর জন্য প্রপার স্কিল থাকতে হয়। মডেলিং এসে কেউ এক সপ্তাহ কি দু সপ্তাহ পরে টপ করতে পারে না। হ্যাঁ কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়ে যায়। যখন কেউ শর্ট কাট ইউজ করে। কিন্তু সেটাও একটা লিমিটে গিয়ে শেষ হয়ে যায়। তাই আমি প্রথমেই চেয়েছিলাম নিজের পরিচয় গড়ে তুলতে যাতে সবাই আমার পরিচয়ে চিনতে পারে নাকি আমার মম বাপি বা আমার হাজবেন্ট এর পরিচয়ে নয়। তোড়া বলে ওঠে ।

-“সত্যি ম্যাম আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন। এখন এই সময়ে দাঁড়িয়ে কেউ এমন চিন্তা করে না। পাওয়ার কাজে লাগিয়ে উপরে ওঠার সিঁড়ি বানিয়ে নেয়। হোস্ট বলে ওঠে।

-” আমি চাই আমি এই অ্যাওয়ার্ড টা আমার হাজবেন্ট এর হাতের থেকে নিতে। কারণ সে সব কাজে আমার পাশে ছিল তাই এই মুহূর্তে আমি তাকে পাশে চাই। তার থেকে আমি আমার জীবনের প্রথম অ্যাচিভমেন্ট গ্রহণ করতে চাই। তোড়া বলে ওঠে ।

-” আরে আপনার হাজবেন্ট কে সে কি এখানে উপস্থিত আছেন? তার নাম তো জানি না? হোস্ট বলে ওঠে।

-” আপনারা তাকে দেখলেই বুঝতে পারবেন আর তার নাম আপনা আপনি আপনাদের মুখে চলে আসবে। প্লিজ মিস্টার হাজবেন্ট কাম অন দ্য স্টেজ। তোড়া হাসি মুখ বলে ওঠে।

সাথে সাথে পুরো জায়গাটা চিৎকারে ভরে যায় সবাই উৎসুক হয়ে আছে এটা জানার জন্য যে কে হতে পারে এখানে যে কিনা তোড়ার হাজবেন্ট

রেয়ান্স তোড়ার কথা শুনে তার মনে ভালোবাসার শত প্রজাপতি খেলে যায়। রেয়ান্স একবার চারিদিকে তাকিয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। সাথে সাথে চারিদিকে চিৎকার এক নিমেষে বন্ধ হয়ে যায়। আর তার বদলে শোবার চোখ মুখে বিস্ময়ের ছাপ ফুটে ওঠে চোখ গুলো বড় বড় হয়ে যায় আর সবার মুখ দিয়ে অস্ফুটে বেরিয়ে আসে একটাই নাম রেয়ান্স রাওয়াত।

রেয়ান্স স্টেজ এসে তোড়ার পাশে দাঁড়ায় তোড়ার দিকে তাকিয়ে হালকা করে জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে। আর এটা দেখেই সব শক থেকে বেরিয়ে আবারো চিৎকার করতে থাকে। যারা যারা তোড়া কে পছন্দ করতো তারা তোড়ার সাথে রেয়ান্স কে দেখেই আরো বেশি খুশি হয়ে গেছে।

-“আমি কি সত্যি দেখছি নাকি স্বপ্ন দেখছি? হোস্ট বলে ওঠে।

-” কেন এটাই তো আমার একমাত্র হাজবেন্ট মিস্টার রেয়ান্স রাওয়াত ।তোড়া মজা করে বলে ওঠে।

-“আপনারা নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝতে পেরে গেছেন আমার আরো একটা পরিচয়। হ্যাঁ আমার আরো একটা পরিচয় হলো মিসেস তোড়া রেয়ান্স রাওয়াত । তোড়া একবার রেয়ান্স এর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে ।

এরপরেই হাসি খুশিতে কেটে যায় অ্যাওয়ার্ড শো। চারিদিকে সবার আনন্দে মেতে ওঠে সেই সন্ধে।

—————

দেখতে দেখতে কেটে গেছে পাঁচ মাস। সেইদিন অ্যাওয়ার্ড শেরিমেনি তে তোড়া তার বিয়ের অ্যানাউন্স করলেও সে যে মা হতে চলেছে সেটা বলেনি। কারণ সে প্রথম থেকেই চাইনি যে তার সন্তান জন্ম থেকেই সোস্যাল মিডিয়া থেকে বড় হোক সেই তার বেবি কে এই সব থেকে দূরে রাখতে চেয়েছে। এখন তোড়ার বেবি বাম্প ও বেরিয়ে এসেছে। তাই এখন সে বাড়িতে শোবার সাথে বসে কাটিয়ে দেয় তার সমস্ত কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন তার সবার ভালোবাসা আর রেয়ান্স এর দ্বিগুণ ভালোবাসা ও কেয়ার এর মধ্যে দিন কেটে যায়। এই সময়ে বসে না থেকে সে প্রতিনিয়ত রেয়ান্স এর সাথে তাদের বাড়িতে থাকা জিমে গিয়ে জিম করে রেয়ান্স এর সাহায্যে যাতে সে ও তার বেবি একদম ফিট থাকে।

রাগিব রাওয়াত তাদের বিয়ের কথা বললেই সাথে সাথে তোড়া নাকচ করে দেয়। সেই এই মুহূর্তে কোনও বিয়ের আয়োজন চায়না। তোড়া তার বিয়ে উপলক্ষে কিছু অনাথ আশ্রমে ও বৃদ্ধাশ্রমে ডোনেট করেছে বাচ্চাদের পড়াশোনার ভার নিয়েছে আর বৃদ্ধাশ্রমের সবার জন্য নতুন কিছু করে হাসিতে খুশিতে থাকার প্রয়াস করেছে যাতে তাদের শেষ জীবনটা ও হাসিতে খুশিতে কেটে যেতে পারে। ও পথ শিশুদের কে খাওয়ার থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে যাতে তাদের ভবিষ্যত আরো উজ্জ্বল হতে পারে।। সে এমনিতেই লোক খাওয়ানোর দিকে নারাজ। যাদের কে পাত পেড়ে খাওয়ানো হবে তারাই দু দিন পরেই নিন্দা করবে কটূক্তি করবে। বরং ও অসহায় ব্যক্তিদের সাহায্য করলে তাদের ভালোবাসা ও দোয়া পাবে। যাদের কে দিলে কোনো ক্ষতি হবে না তাদের কে দেয়াই উচিত বেকার ভূত খাইয়ে নিন্দা কুড়ানোর থেকে।
আর তোড়ার এই সমস্ত কাজে রেয়ান্স তার পাশে থেকেছে তার প্রত্যেকটা আশা পূরণ করেছে।

————-

তোড়া কে রেডি করিয়ে দিয়ে রেয়ান্স নিজে রেডি হচ্ছে। আর তোড়া চুপচাপ বসে বসে দেখে যাচ্ছে। এই অবস্থাই সে কিছুটা গুলুমলু দেখতে হয়েছে। তাকে আরো বেশি আকর্ষণীয় লাগছে দেখতে। তবে এখন করে তার খুব ঘুম পেয়ে যায়। খিদে তাও বেশী পায়। তবে মুড সুয়িং টা হলেও পরিমাণে তুলনা খুব কম উত্যক্ত করে রেয়ান্স কে। বলতে গেলে কোনো ঝামেলা নেই বললে চলে শুধু রেয়ান্স এর বাড়ি ফেরার সময়ে চকোলেট ও আইসক্রিম নিয়ে আসলেই তোড়া শান্ত।

আজ শাহীন ও রাই এর বিয়ে। তারা তাদের জীবনের সমস্ত বাধা বিপদ কাটিয়ে একসাথে চলার জন্য তৈরী হয়ে নিয়েছে। তবে তারাও বেশি সাদামাটা ভাবেই বিয়ে করছে। কাছের কিছু গেস্ট ছাড়া কেউ নেই রেজিস্ট্রেশন আর কবুল বলা ব্যাস বিয়ে শেষ। সব কিছুর আয়োজন রেয়ান্স এর বাড়িতেই হয়েছে। তোড়া কে নিয়ে এই সময়ে বাইরে যেতে চায়না। তাই সব আয়োজন এখান থেকেই হচ্ছে।

রেয়ান্স রেডি হয়ে নিয়ে তোড়া কে নিয়ে নিচে আসে। সব অপেক্ষায় ছিল তাদের। রেয়ান্স তোড়া আসতেই বিয়ের কাজ শুরু হয়। শাহীন আর রাই একে অপরের দিকে কোনা চোখে তাকিয়ে সাইন করে দেয়। সবাই ওদের নিয়ে মেতে আছে। আর দুজন ঝগড়া পাটি ও দুই দিকে দাঁড়িয়ে একে অপরের দিকে তাকিয়ে যাচ্ছে কেউ চোখ রাঙিয়ে যাচ্ছে তো কেউ মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। শেষে কবুল বলার সময়ে শাহীন এক নিঃশ্বাস নিয়ে বলে ফেলে। শাহীন এর কবুল বলার ধরণ দেখেই সবাই হেসে ফেলে। আর রাই সে কিছুটা লজ্জা নিয়েই বলে ওঠে। শেষ বিয়ে। আরো একটা প্রেম কাহিনীর সারা জীবন একসাথে থাকার শুরু হলো।
.
.
.
. ❤️❤️❤️
. চলবে…… ।

ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন…… ।