ভিলেন পর্ব-১২

#গল্পঃ_ভিলেন

লেখিকাঃ আদিবা ইসলাম আঁখি

পর্বঃ ১২

———————★★———————–

ডক্টর: মিঃ মাসুদ সুখবর আপনি দাদু হতে চলেছেন…..

ডক্টর কথা শুনে সবাই শক্ট বিষেশ করে শুভ….!

শুভ: ওয়াটটটটটটট

ডক্টর : কংগ্রেস মিঃ শুভ….

আশা: ওয়াউ আমাদের বাসায় পুচকু আসতেছে,,,,,

বাবা: আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না,,,কে কোথায় আছিস মিষ্টি নিয়ে আয়,,,,,

হঠাৎ সেন্স ফিরতেই চোখ মিলে তাকাতেই মা এসে পাশে বসলো,,,

ডক্টর: এবার থেকে কিন্তুু সাবধানে চলতে হবে মিসেস শুভ ( হেসে হেসে)

আমি: কেনো কি হয়ছে আমার,,( মাথায় হাত দিয়ে)

ডক্টর: আপনি মা হতে চলেছেন,,,

ডক্টর কথা শুনে সোয়া মানুষ উঠে দাড়ালাম,,,

আমি: কিহহ,,,,

মা: বউমা আসতে,,,

বাবা: বউমা কি হলো,,,

আমি: আমি মা হবো আমি ( মাথা ঘুরতে লাগলো)

মা: ডক্টর কি মিথ্যা বলবে আর হতেই তো পারো সমস্যা কি,,,

আমি: মা আপনি তো সব জানেন তবুও

মা: হুম জানি তো হতেই পারে,,,,

আমি: মা আপনি বুঝতে পারছেন না,,,

বাবা: কি বলছো এসব কিছুই তো বুঝতেছি না,,,

মা: তুমি বুঝবে না,,, সবাইরে মিষ্টি খাওয়াও,,,

বাবা: হুমম সেটাই করি,,আর বউমা সাবধানে চলবা না হলে বকা দিবো,,,

আমি: হুম বাবা!! কি হচ্ছে এটা আমার সাথে,,,,,,( মনে মনে)

মা: শান্ত হও,,,

আমি: মা,,,,( অসহায় ভাবে তাকিয়ে)

___ শুভ হন হন করে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো…!!!!!

আশা এসে রুমে দিয়ে গেলো,,,বেলকুনিতে বসে আছি আর ভাবছি,,,

আমি: শুভ কি ভাবছে কে জানে হে আল্লাহ তুমি তো সবটা জানো!!!
আমার কি করে বেবি হবে উফফফ মাথা যন্ত্র ফেটেঁ যাচ্ছে কি করবো আমি কি জবাব দিবো শুভকে….

বসা থেকে উঠে পাইচারি করতেছি হঠাৎ মা রুমে আসলো,,,,

আমি: মা এটা কি করে অসম্ভব আপনার ছেলে তো আমায় সয্য করতে পারে বেবি অসম্ভব!!!

মা: ধরে নাও নাটক,,,,

আমি: মানে ( আবাক হয়ে)

মা গিয়ে বিছানায় বসলো পিছন পিছন গিয়ে বসলাম,,,,

আমি: নাটক মানে মা কি বলছেন এসব,,,,,,

মা: হ্যাঁ নাটক,,,,,জানো বউ একটা ছেলে সবচেয়ে দূর্বলতা কি,,,?

আমি: কি?

মা: সন্তান,,,,,

আমি: মমমমমমা,,,,,

মা: হ্যাঁ,,,,,,শোন আজ থেকে ঠিক যেমন যেমনটা বলবো শুধু তেমনটাই করবা বাকিটা আমি দেখে নিবো,,,,

আমি: কিন্তুু মা এটা তো শুভবে ঠোকানো হচ্ছে আমি পারবো না,,,,

মা: আমার ছেলেও তো তোমায় ঠোকাচ্ছে তাহলে তুমি পারবে না কেনো

আমি: কিন্তুু

মা: কোন কিন্তুু আমি থাকতে তোমার সংসার ভাঙ্গতে দিবো না,,,,,( গালে হাত দিয়ে)

আমি: মা,,,, আপনি আমার জন্য এত কিছু সত্যি,,,,

মাকে জোরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগলাম….!

মা: ব্যস ব্যস আর কান্না নয় এবার থেকে নিজের একটু যত্ন নিবা নতুন অতিথীর জন্য কেমন

আমি: হুম অবশ্যয়,,,,,,

___দুজনি আনমনে হেসে দিলাম,,,,,,,

রাত প্রায় ২ বাজে এখন শুভ বাসায় ফেরেনি হাত পা ঠান্ড হয়ে আসছে প্রচন্ড টেনশনও হচ্ছে,,,,
রুমে ভিতরে পাইচারি করতেছি হঠাৎ শুভ রুমে ডুকলো শুভকে দেখে শক্ট হলাম,,,,

আমি: শুভভ আসতে!!! ও মাই গড আপনি ড্রিংক করছেন

শুভ: বেশ করেছি তোর কি,,,

শুভকে রুমে ডুকিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি করে দরজা নক করে দিলাম যদি বাসায় কেউ দেখে ফেলে একটা বাজে কান্ড হয়ে যাবে,,,,,,

শুভ: দরজা নক করলি কেনো,,,,,

আমি: আসতে প্লিজ সবাই জেগে যাবে,,,

শুভ: জাগুক সবাই,,,,

আমি: প্লিজ একটু শান্ত হয়ে বসেন,,,

শুভ আমায় ঝ্যাংটা মেরে সরিয়ে দিয়ে গিয়ে বিছানায় বসে পড়েই ধপাস করে সুয়ে পড়লো,,,,

শুভ: বেশ করছি খেয়েছি আরো খাবো তাতে তোর কি,,,

আমি: আসতে,,,,ঠিক আছে আপনি আরো খাবেন কিন্তুু এখন তো চুপ করুন বাসার সবায় জেগে যাবে,,,

শুভ: জাগগুক ( চিল্লিয়ে)

আমি: হে আল্লাহ কি করবো এখন!!

__মুখে আগুল দিয়ে হাঁটতেছি হঠাৎ শুভ বলে উঠলো,,,,

শুভ: নদী বিশ্বাস কর আমি ওরে ছুয়েও দেখিনি ট্রাস মি নদী প্লিজজজ!!! আমি শুধু তোকেই ভালোবাসি শুধু তোকেই ( বিড় বিড় করে)

শুভর কথা বুকের ভিতরটা মুচরে উঠলো… পিছন দিকে ঠোলে পড়তেই দেওয়ালের সাথে ঠাক্কা খেলাম!! চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো মুখে হাত দিয়ে দৌড়ে ওয়াসরুমে গিয়ে দরজা নক করে দিলাম,,,,

আমি: তার মানে শুভ নদীকে ভালোবাসে ,,,,তাহলে কেনো বিয়ে করে তার মায়ারবাধনে বাঁধে ফেললো….. ( কাঁদতে কাঁদতে)

___সকালের ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে এসে দেখি শুভ ঘুমাচ্ছে গুটি গুটি পায়ে কাছে গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই হঠাৎ শুভ আমার হাতটা ধরে টান দিয়ে বুকে নিয়ে….

শুভ: আমি জানতাম তুই রাগ করে থাকতেই পারবি না আই লাভ ইউ নদী,,,,

আমি: আমি নদী নয় আদিবা

শুভ আমার কথা শুনে চোখে মেলে তাকিয়ে তাড়াহুরু করে উঠে দাড়ালো,,,

শুভ: তুই এখানে এইই তোর সাহস কত!!

আমি: আমমমমি আপনি ই তো

শুভ: ঠাসসসসসস!!!! তোরে কি বলছিস এখন লজ্জা হয় নি…আমার থেকে দুরে থাকতে বলছি,,, আজ তোর জন্য আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে শুধু তোর জন্য,,,,

আমি: আমি কি করেছি যা করার আপনি করেছেন,,,,

শুভ চর তুলতেই শুভ হাতটা ধরলাম,,,,

আমি: ব্যসসস আর নয়,,,,

শুভ: আদিববববা

আমি: হ্যাঁ,,,,ভুলে যাবেন না আপনার স্ত্রী হয়,,,,

শুভ: স্ত্রী আর তো কয়টা দিন,,,,

আমি: কয়দিন মানে কি আপনার সন্তান ও আমার পেটে আমি আপনারে ডিবোর্স দিবো না,,,,

শুভ: আদিববববা( চিৎকার করে)

আমি: দিবো না বলছি তো,,,,

শুভ: দিতে তো তোকেই হবে,,,আর রয়লো সন্তান ওই সন্তান আমার হতেই পারে না!!!… এটা তুইও জানিস আর আমি… কে জানে কার কি

আমি: চুপপপপপপপ,,,

কানে হাত দিয়ে শুভকে থামিয়ে দিলাম,,,,

আমি: এসব বলতে একবার ও আপনার বিবেগে বাধলো না কতটা নিচু আপনি!!! ছিঃ শুভ ছিঃ

কাঁদতে কাঁদতে বাইরে দিকে চলে আসলাম,,,,,,

_____ বিকালের দিকে বেলকুনিতে দাড়িয়ে অনমনে আকাশ পানে তাকিয়ে আছি হঠাৎ কেউ একজন কাঁধে হাত রাখতেই পিছনে তাকিয়ে দেখি তুষার,,,,

আমি: আপনি এখানে ( আবাক হয়ে)

তুষার: এসব কি শুনলাম সব কি সত্যি,,,,

হঠাৎ তুষার এমন প্রশ্ন করা দেখে কি উওর দিবো ভেবে পাচ্ছি না,,,

আমি: হুমম ( মাথা নাড়িয়ে)

তুষার: ওয়াট,,,,,,সেই দিন তো বললে তুমি শুভকে ভালোবাসো তাহলে,,,

আমি: না মানে ( আমতা আমতা করে)

তুষার: ওকে ওকে ফাইন ( চোখ বন্ধ করে শ্বাস নিলো),,,,,,,,

তুষার গিয়ে সোফায় বসলো আমি গিয়ে সামনে দাড়ালাম,,,,,,,,হঠাৎ তুষার বলে উঠলো,,,,,

তুষার: যা হবার হয়ে গেছে,,,,শুভ সাথে কথা হয়ে গেছে সামনে সাপ্তাহে আমাদের বিয়ের কাজটা সম্পূর্ন করবো,,,,,

তুষার কথা শুনে আবাক হলাম,,,,

আমি: কিহহ বলছেন এসব,,,,

তুষার: কেনো তোমার আপত্তি আছে কি…! এই বাচ্চা আমাদের পরিচয়ে বড় হবে ,,,, আদিবা আমি তোমাকে বড্ড ভালোবাসি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না!!!!

আমি: আপনি কি পাগল হয়েছেন কি বলছেন এসব,,,,,

তুষার: হ্যাঁ হয়েছি,,,,,, তুমি শুধু আমার হবে আর কারো না….. তোমাকে আমার করে পেতে যদি নিজের জীবন দিতে হয় হাসতে হাসতে দিয়ে দিবো,,,,,,পাগলি খুব খুব ভালোবাসি প্লিজজজ এভাবে বার বার আমার ভালোবাসাকে ফিরিয়ে দিও না প্লিজজজ

___ তুষার আমার হাত টা ধরে কাঁদতে কাঁদতে ফ্লোরে বসে পড়লো
আমি যেনো কথা বলার মতো কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না,,,,,,

( চলবে)