#গল্পঃ_ভিলেন
লেখিকাঃ আদিবা ইসলাম আঁখি
পর্বঃ ১৬
——————–★★————————
আমি: শুভ এখানে!!… আমাদের বাসায় ( মুখে হাত দিয়ে)
চোখের সামনে গাড়িটা নিমেশে চলে গেলো আমি আর সাত-পাঁচ না ভেবে তাড়াতাড়ি করে বাসায় ডুকলাম….বাসায় ডুকে দেখি আব্বু বসে আছে আম্মু তাকে খাইয়ে দিচ্ছে
আমি: আব্বু,,,,,
আমায় দেখে আম্মু আমার দিকে এগিয়ে আসতেই….
আব্বু: দাড়াও….. আদিবা তুই এখানে ( রেগে)
আম্মু: মেয়েটা অনেকদিন পর আসছে ভিতরে আসতে বলবো না
আব্বু: না!!.. বলবে না,,,,
আমি: আব্বু তুমি ঠিক আছো তো…!
আব্বু: কে তোর আব্বু.. তোর আব্বু মারা গেছে
আমি: আব্বু ( অসহায় ভাবে তাকিয়ে)
আম্মু: কি যাতা বলছো তুমি…
আহিরা: আব্বু প্লিজ আপুকে ক্ষমা করে দাও
আব্বু: আহিরা
আহিরা কে ধমক দিতেই আহিরা মাথা নিচু করে সরে গেলো,,,,,আমি গিয়ে আব্বু সামনে দুহাত জোর করে দাড়িয়ে কাঁদতে লাগলাম…
আমি: আব্বু প্লিজজ আমার কথা তো শুনবে…! আমি ইচ্ছে করে শুভকে ডিবোর্স দেই নি আমি বাধ্য হয়ে দিয়েছি,,,,
আব্বু: আমি তোকে আর বিশ্বাস করি না তুই নিজে শুভকে ডিবোর্স পেপার দিয়েছিস আর তুষারকে বিয়ের কথা বলেছিস এই নিজের কানে শুনেছি
আমি: আব্বু সব সময় নিজের চোখে দেখা জিনিস গুলোও ভুল হয় বুঝার চেষ্টা করো,,,,
আম্মু: ওগো একবার আদিবাকে বিশ্বাস করে দেখো না
আব্বু: তুমি চুপ থাকবে..!
আমি: আব্বু তুমি তো তোমার মেয়েকে চিনো তোমার মেয়ে এমন কোন কাজ করতে পারে না যার জন্য তোমার অসম্মান হবে,,,,
আব্বু: তুই পারবি তুষারকে বলতে তাকে তুই তাকে বিয়ে করবি না,,,
আমি: আব্বু কি বলছো বিয়ের সব আয়োজন শেষ আর আব্বু তুষার আমায় বড্ড ভালোবাসা জানো ও আমার জন্য সব করতে পারে,,,,,
আব্বু: তুই এখনি আমার বাসা থেকে বের হবি,,,
আমি: আব্বু!! প্লিজ একটু বোঝার চেষ্টা করো আব্বু,,,
___ আব্বু আমার হাতটা ধরে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে গিয়ে দরজা আটকে দিলো,,,,
আব্বু: তোর জন্য এই বাসার দরজা চিরকালের জন্য বন্ধ
আম্মু: আদিবা ( কেঁদে কেঁদে)
আমি: আব্বু দরজাটা খোল কেনো তোমার মেয়ের অবস্থাটা বুঝছো না..! আব্বু আজ তোমাদের সাপোর্ট সবচেয়ে দরকার ছিলো আর তোমরায় আমায় দুরে সরিয়ে দিচ্ছো আব্বু প্লিজজজজ দরজাটা খোলো ( কাঁদতে কাঁদতে)
__দরজার বাইরে প্রায় ১ ঘন্টা বসে আছি হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো ফোনের স্কিনে তাকিয়ে দেখি মা,,,,,
আমি: হ্যাঁ মা বলেন
মা: কই তুমি হুট করে বের হয়ে গেলে টেনশন করছে তোমার বাবা
আমি: বাবা কে বলুন টেনশন না করতে আমি ঠিক আছি
মা: ওকে বাসায় এসো তাড়াতাড়ি
আমি: হুমম আসছি,,,,
ফোনটা কেঁটে দিয়ে বসা থেকে উঠে হাঁটা দিলাম আর বার বার পিছনে তাকাতে লাগলাম
রাস্তায় এসে রিক্সশা না উঠে হাঁটা দিলাম……..
একটু পর বাসায় আসলাম….. বাসায় এসে শুভ রুমে গেলাম,,,
আমি: আসবো
শুভ: তুই
আমি: আপনি আমাদের বাসায় কেনো গেছিলেন,,,,
শুভ আমার কথা শুনে চমকে উঠলো,,,,,
শুভ: কই যায় নি তো ( আমতা আমতা করে)
আমি: আমার দিকে তাকিয়ে বলুন তো,,,,
শুভ: হ্যাঁ গেছিলাম শুনলাম আংকেল অসুস্থ তাই ভদ্রতার খাতিরে গেছিলাম যদি তোর কোন প্রবলেম থাকো নেক্সট টাইম যাবো না হ্যাপি ( চিল্লিয়ে)
আমি: আপনি এমন করতেছেন কেনো ( আবাক হয়ে)
শুভ: তো কি করবো মধুর সুরে বলতে হবে ( নেলিয়ে)
আমি: ব্যসসস… আমি শুধু আপনাকে ছোট একটা প্রশ্ন করেছি তার উওরে এত কথা শুনালেন….
শুভ: এই আওয়াজ নিচে,,,
আমি: হ্যাঁ সেটাই আমি তো কিছুই বলতে পারবো না … নিজেকে আপনি কি মনে করেন যখন ইচ্ছে হবে বিয়ে করবেন আবার কেউ এসে বলবে সে আমায় ভালোবাসে তখন আপনি ডিবোর্স দিয়ে সেই মানুষটার সাথে থাকতে বাধ্য করবেন… আপনার থেকে তুষার হাজার গুনের ভালো ছেলে ভাগ্য ভালো আপনার মতো ছেলে থেকে মুক্তি পেয়েছি !! পৃথিবী সবচেয়ে খারাপ মানুষটি আপনি হ্যাঁ আপনি ঘৃনা করি আমি আপনাকে যাস্ট হেট ইউ….
মুখে হাত দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে আসলাম শুভ নিঃস্তব্দ হয়ে সেখানে দাড়িয়ে রয়লো……
দৌড়ো রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লাম…..
_____রাতে দিকে বিছানায় বসে আছি হঠাৎ আশা এসে টেনে নিয়ে সাদে চলে আসলো সাদে এসে দেখি সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে,,,,
আশা: আমাদের মহারানি হাজির,,,
তুলি: ভাবি এসো বসো
আমি: না গো আমার ভালোলাগছে না তোমরা আড্ডা দাও
আশা: না না তোমাকে ছাড়া একটুও আড্ডা জমবে না প্লিজজ বসো,,,,
নদী: আরে আদিবা বসো না,,,,
তুলি: তুষার ভাইয়া কিছু বলো না,,,
তুষার: সবাই যখন বলছে বসো না,,,,
সবার জোরাজোরিতে বসলাম,,,,
আশা: ট্রুথ ডেয়ার খেলবো কেমন,,,,
তুলি: হুমম চিল,,,,
নদী: শুভ খেলছিস তো
শুভ: না আমার এসব ভালোলাগে না
নদী: খেল না একটু প্লিজজ
শুভ: প্লিজজ তোরা খেল
নদী: ওকে নাও শুরু করো,,,,,,
সবাই মিলে খেলা শুরু করলো …! একে একে সবার পালা শেষ হলো,,,
আশা: আমার ভাবি আমাদের গান শুনাবে
তুলি: ওয়াওওও
আমি: এমা না না প্লিজ আমি পারি না
তুষার: গাও না একটু আগে তো কলেজে গাইতে গাও
তুলি: প্লিজজ প্লিজজ
নদী: আদিবা গাও অনেক দিন তোমার গান শুনা হয়নি
আশা: প্লিজজজ ভাবি
আমি: ওকে ওকে গাইতেছি,,,,
___ শুভ গিটারটা হাতে নিয়ে বাঁজাতে লাগলো আমি বসা থেকে উঠে গান শুরু করলো,,,,
মন যাকে চাই ” তাকে পায় না
স্বপ্ন আমার ভাঙ্গা আয়না
কান্ত দুচোখ শুধু খোঁজে ফেরে
“হৃদয়ের গানে বেদনার সুরে”
{ হা হা কার }
স্মৃতি আর আমি এই ঘরে
!..একা কার একা কার..!
গানটা শেষ করে পিছনে তাকিয়ে দেখি সবাই হা করে আমার দিকে তাকিয়ে…! শুভ দিকে তাকিয়ে দেখি মাথা নিচু করে আছে….
দৌড়ে সাদ থেকে নামতেই সামনে মা দাড়ালো,,,,
মা: এতো কষ্ট নিয়ে কি করে হাসি মুখে চলো বল তো
আমি: মা কি যে বলেন কই কষ্ট আমার কোন কষ্ট নেই দেখছেন তো আনন্দে আছি ( মুচকি হেসে)
মা: পাগলি মেয়ে মাকে কেউ ফাঁকি দিতে পারে,,,
আমি: উহু কখন দিতে পারে না…! ( হেসে হেসে)
মা: পাগলি একটা মেয়ে..! আল্লাহ তায়ালা যানেন কতটা ধর্য্য তোমার ভিতরে দিয়েছে…
আমি: মা আপনিও না একটু বেশি বেশি বলেন,,,,,
মা: হুমমম,,যায় হক গানটা সুন্দর গেয়েছো,,,
আমি: থ্যাংক ইউ সো মাচ…
মা আমার কপালে আলতো করে চুমু দিলো,,,,,,
রাত প্রায় ১১:০০ বাজেঁ রুমে এসে দরজা নক করে বিছানার দিকে হাঁটা দিতেই মাথাটা ঝিম ঝিম করতে লাগলো….!
আমি: মাথাটা এমন কেনো ঝামাচ্ছে
আচমকা সবটা ঝাঁপসা ঝাঁপসা লাগলো!! হঠাৎ ফ্লোরে পড়ে গেলাম….
____ সকাল ১০:৩০ দিকে মা আর আশা রুমের বাইরে দাড়িয়ে ডাকছে…
শুভ: আম্মু কি হয়ছে এখানে চিল্লাচ্ছ
আশা: ভাইয়া ভাবি সকাল থেকে দরজা খুলছে না অনেক ক্ষন ডেকে চলেছি,,,,
শুভ: ওয়াটট সর তো দেখি
মা: মেয়েরটা কি হলো খুদা জানে,,,,
শুভ: কি হয়নি টেনশন করো না দেখছি আমি,,,!
শুভ ডাকতে লাগলো কোন সারা না পেয়ে পিছনে জানালা দিয়ে রুমে ডুকে দেখে সেন্স লেন্স হয়ে ফ্লোরে পড়ে আছি….!
শুভ: আদিবা…
মা: বউমা কি হয়ছে উঠো,,,,
শুভ: আশা পানি দে তো…!
আশা: আনছি…
শুভ মুখে পানি দিতেই সেন্স ফিরে তাকিয়ে দেখি শুভ কোলে মাথা রেখে সুয়ে আছি তাড়াতাড়ি করে উঠে বসলাম…
শুভ: আর ইউ ওকে
আমি: হুমম
মা: হঠাৎ কি হয়ছিলো… শরীর খারাপ নাকি
আমি: না মা তেমন কিছু না মাথাটা ঝিম ঝিম করতেছিলো,,,,
মা: ডক্টর কে ডাকবো নাকি
আমি: না মা ঠিক আছে,,,
মা: তাহলে তুমি একবার ডক্টর সাথে দেখা করে আসো,,,,, বার বার এমন শরীর খারাপ আমার টেনশন হচ্ছে
আমি: মা কিছু হয়নি আমার টেনশন করবেন,,,,,
মা: না তুমি ডক্টর কাছে যাবে
আমি: মা সন্ধায় বিয়ে এখন ডক্টর অন্যদিন
মা: না এখনি যাবে শুভ নিয়ে যেতে পারবি ওরে
শুভ: আমার সমস্যা নাই,,,,
আমি: না মা আমি একা যেতে পারবো…!
শুভ: আমি নিয়ে গেলে কিছের প্রবলেম
আমি: আমি একা যেতে পারবো থ্যাংস,,,,,
____ একটু পর হসপিটালে বসে আছি তখনি একটা মেয়ে এসে ডেকে গেলো ……কেবিনের ভিতরে গিয়ে সালাম করতেই আবাক হয়ে ডক্টর দিকে তাকালাম…..!
আমি: তুইইই!!!……
( চলবে)