গল্পের নামঃ- #তুই_তারারে_ভিনদেশী❣️💫
লেখিকাঃ- konika islam (sanju)
পর্বঃ15
আদিত্য আফরিনকে কোলে করে নিয়ে এসে কাড়ের ভিতরে বসিয়ে দেয়। অন্যা বলে
—- দেখছ আদিত্য ভাইয়া কত রোমান্টিক আর তুমি? কৌশাল একটা হাসি দিয়ে বলে
—- তুমি এতো শুকনা স্লিম না আফরিনের মতো। তুমি তো আমার গুলুমুলু, অন্যা মিষ্টি কুমড়া। অহনা হাহা করে হেসে দেয়। আদিত্য বলে
—- দেখতেই চিকুন ভার আছে। আমার কমড়। আফরিন বলে
— আপনাকে বলছিলাম কোলে নিতে,, আজাইরা। বলেই আরেক দিকে তাকায়। আহান বলে
— হয়েছে হয়েছে এখন চল যাওয়া যাক। আদিত্য আপন মনে গাড়ি চালাচ্ছে। অনেকটা সময় হয়েগিয়েছে সবাই বকবক করছে কিন্তু আফরিন চুপ তাদেখে আদিত্য বলে
,—– ব্যাটারি শেষ,,তোমার,,,আফু,??? আফরিন বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিল ঢাকা থেকে তারা বেশ দূরে চলে এসেছিল তাই হওয়াটা ছিল ধূলোময়লা মুক্ত তাই সেটা সে ফিল করছিল। আফরিন আদিত্যর দিকে তাকিয়ে বলে
— আফু না বলে ছোট আপুই বলতে পারতেন। আদিত্য রাগী চোখে তাকিয়ে বলে
,— বাজে বকবাতো দিব এক চড়। এইটা বলো তুমি আজ হিজাব করনি কেন? আফরিন খুব সোজা সাপ্টা উত্তর দেয়
—- গরমটা বেশি ছিল আর মাথাটাও ধরেছিল তাই। এখন ঠিক আছি। আদিত্য বলে
—- আচ্ছা তাহলে তুমি ঘুমাও। আফরিনও সিটে হেলান দিয়ে ঘুমায়। অহনা আহানকে উদ্দেশ্য করে বলে
—- দেখছ কি ভাবে কেয়ার নিতে হয়,, আর তুমি। আহান বলে
—- অহু আমার কহু কহু করা অহু। তুমি বুজবানা আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি। তুমি চাইলে চাঁদ তারা নিয়ে আসতে পারমু ঐ আকাশ থেকে। আফরিন চোখ বন্ধ করে বলে
—- হ্যা সেই গুলোতো তোমার নামে রেজেসট্রেট করা। যা পারবা না বল কেন? আহান একটু নড়চড়ে বসে বলে
—- একটা রকেট বানাবো তারপর ঐটা দিয়ে সবাই চাঁদে যাবো। অহনা মেকি হাসি দিয়ে বলে
—- রকেট বানাবা তো ইন্ঞ্জিনিয়ার হতে হবে,, আর ইন্ঞ্জিনিয়ার হতে হইলে সাইন্স নিয়ে পড়তে হবে। আর তুমি কি নিয়ে পড়ছ? কৌশাল বলে
— গাজাব বেইজ্জাতি। আদিত্য, অহনা আর কৌশাল হাহা করে হেসে দেয়। তখনই আফরিন একটু নড়ে উঠে। আদিত্য বলে
—- সবাই চুপ। কোনো কথা হবে না। সবাই ঠোঁটে আঙুল রেখে বলে
—-ওকে।
_________________
আফরিন ধীরে ধীরে চোখ খুলে দেখে কেমন ফুরফুরে বাতাস। চারদিকে সবুজের সমাহাড়। এই কাঠফাটা রোদেও বাতাসটা অনেক ঠান্ডা আর হবেই বা না কেন রাস্তার দুই পাশের সারিতে যেই পর্যন্ত চোখ যাচ্ছে বড়বড় গাছলাগানো। বেশ সুন্দর জায়গায় কিন্তু কথা হচ্ছে বাকি সবাই কোথায়। আফরিন গাড়ি থেকে নেমে দেখে। আদিত্য একটু দূূরে দাড়িয়ে সিগারেট টানছে। আর অন্য পাশে বাকিরা কাপাল পিক তুলছে। আদিত্য কাড়ের দরজা লাগানোর আওয়াজে তাকিয়ে দেখে আফরিন। আফরিন আস্তে করে গাড়ির উপরে উঠে বসে। চোখ মুখে এখনো ঘুম ঘুম ভাবটা বিরাজমান,,,,, সামনের কাটা চুলগুলো বেরিয়ে এসেছে ঘুমটার মাঝ দিয়ে। আদিত্য নিজের ফোনটা বের করে ঘেচ ঘেচ করে আফরিনের বেশ কয়েকটা পিক তুলে নিল । আদিত্য আফরিনের সামনে দাড়িয়ে বলে
—- মাথা ব্যাথা কমেছে?, আফরিন কিছু বলে না তা দেখে আদিত্য বলে
—- কি হলো আবার। আফরিন বলে
—- আপনি যদি এই সিগারেট কোনো রকম ছাইপাঁশ খান তাহলে আর আমার সাথে কথা বলতে আসবেন না। কৌশাল অন্যার হাত ধরে আসতে আসতে বললো
—- বললেও শুনে না। তিন বেলা তিনটা তার খাওয়া লাগবেই। ঔষধের মতো আরকি। আদিত্য রাগী চোখে কৌশালের দিকে তাকায় কৌশাল বলে,,
—- লাভ নাই মামা। আফরিন বলে
—- আজকের পর যেন আর এই সব না দেখি। আদিত্য নিজের পকেট থেকে সিগারেটের পেকেট আর লাইটার টা বের করে ফেলে দিয়ে বলে
— দিলাম ছেড়ে, ,,,, খুশি। আফরিন আদিত্যার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দেয় সেটাই যেন অনেক আদিত্যর জন্য । আদিত্যও আফরিনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেয়। আর তখনি আহান বলে
—- ওয়াও হুয়াট এ পিক। কৌশাল বলে
—- কোথায় দেখি। তারপর সবাই মিলে দেখে আদিত্য আর আফরিনের এই সুন্দর মুহূর্তটা নিজের কেমারায় বন্ধি করেছে আহান। আহান বলে
—- এই পিকটা তোদের বিয়েতে গিফ্ট করব। আহ কি শান্তি বেশি টাকা আর লাগতো না। আদিত্য হাসি দিয়ে বলে
—- আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তোর কথা কবুল করুক। আফরিন লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। অহনা বলে
—- আহারে আমার লাল টোম্যাটো। ,,,,
________________
সবার প্রচুর খুদা লেগেছে। অহনা আসার সময় কৌশালকে দিয়ে বিরিয়ানি কিনিয়েছে নিয়ে আসছে। অহনারা নিশ্চিন্তে আজ ঘুরবে,,, কারণ মা-বাবা জানতো তারা আজ ঘুরতে যাবে। আফরিন যখন ঘুমে ছিল অহনা ফোন করে আফরিনের মাকে বলে দিয়েছে আজকে তাড়া ঘুরতে যাবে। আর রাতে আফরিন তাদের বাসায় থাকবে। আফরিনের আম্মুও আপত্তি করে না কারণ তারা ছোট বেলার ফ্রেন্ড কেউ কারো বাসায় রাত দিন পরে থাকলেও কিছু বলবে না। খবারটা বেশ হ্যাবি । আফরিন এক মনে মনে খাচ্ছে আর সবার সাথে বকবক করছে। আদিত্যর পানি তেষ্টা লাগাতে হাতা থাকা পেকেট টা গাড়ির উপরে রেখে পানি খেতে গেলে পেকেট বাই মিস্টেক পরে যায়। কৌশাল বলে
—- এইরে,,, আদি এখন তুই কি খাবি? আদিত্য কিছু বলতে যাবে তখনই আফরিন আদিত্যর মুখের সামনে খাবার ধরে। অন্যা বলে
—- এইতো সমস্যার সমাধান হয়ে গেলো। আদিত্য যতটানা খুশি হয়েছে তার থেকে বেশি অবাক হয়েছে কারণ এটা তার ধারণার বাইরে ছিল।।আদিত্য ও সেটা খেয়ে নেয়।। আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা হঠাৎ করেই। আদিত্য আর সবাই গাড়িতে বসে পরে। একটু পরই শুরু হয় বৃষ্টি। আদিত্য কাড় চালাতে চলাতে বললো
—- আফরিন কাড়ের জানলাটা অফ করো। পানি আসছে। আফরিন বাইরে নিজের হাত বারিয়ে বলে
—- কই খারাপ লাগছে না তো বেশ ভালোই লাগছে। কিন্তু কিছু একটা মিসিং। কৌশাল বলে
—- আদিত্য একটা গান গা। আদিত্য বলে
—- ইচ্ছে করছে না। আফরিন ভেংচি কেটে বলে
— গানের গলা ভালো তাই এতো ভাব। একটা গানই তো গাইতে বলছে। অহনা বলে
—- আদিত্য ভাইয়া গাও না একটা গান। আদিত্য আফরিনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে শুরু করে
—— Mujhko de tu mitt jaane ab se khud dil
.. mil jaane
.. Kyun hai yeh itna faasla
Lamhe ye phir na aane Inko tu na de jaane
Tu mujhpe khudko de lutaa
Tujhe tujh se todh lu Kahin khud se jod lu
Mere jismo jaandian Teri khusboo oad lu
Jo bhi saansein main bharun Unhe tere sang barun
Chahe jo ho raasta Usse tere sang chalun
Dil ibadat kar raha hai Dhadkanein meri sun
Tujh ko main kar lu haasil lagi hai yehi dhun
(বাকিটা নিজ দায়িত্বে শুনে নিয়) আহান বলে
—- ভাইয়া গানটা যে তুমি আমাদের জন্য না আফরিনের জন্য গাইছো সেটা ভালোই বুঝতে পারছি। আদিত্য প্রতি উত্তরে মুচকি হাসি দেয় আর বলে
—– যার জন্য গান তার হুশ নাই পারা পরসির ঘুমনাই। অহনা বলে
—– আমাদের আফরিনও কিন্তু খুব ভালো গান পারে। আফরিন রাগী চোখে অহনার দিক তাকিয়ে বলে
—– হিরো আলমের ৩৬০ নম্বর বউ চুপ কর। আহান বলে
—- তুমি আমাকে হিরো আলম বলতে পারলা শালীকা? অহনা বলে
—- ওর দ্বারা সব সম্ভব। তুই গাইবি নাকি তোকে জানলা দিয়ে ফেলে দিব। আফরিন আনমনেই বলে ফেলে
—- আদিত্য থাককতে তোর এই কথা বলতে কলিজা কাঁপলো না। অন্যা বলে
—- খাইছেরে। আফা আমাগো কি কইলো। আদিত্য ঠোঁট চেপে হাসছে। অন্য দিকে আহান আর কৌশাল আদিত্য কে টিজ করছে। কিন্তু আদিত্য এতে বিন্দুমাত্র ইরিটেড হচ্ছে না। আফরিন পরস্হিতি সামাল দিতে বলে
চলবে।