#মাফিয়া_ক্রাশ_বর
#লেখিকা :মার্জিয়া রহমান হিমা
#পর্ব : ৪১
রুহি হাসি মুখে কেবিনের ভেতর পা রাখে। ভেতরে ঢুকতেই একটা মেয়েকে অভিদের সাথে ঘেঁষে বসতে দেখে রুহির রক্ত গরম হয়ে পায়ের রক্ত মাথায় উঠে গেলো। রুহি রেগে ভেতরে যাওয়ার আগেই অভিদ মেয়েটার গালে ঠাস করে খুব জোড়ে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়। রুহি চোখ বড় বড় করে ফেললো। সাথে খুশিও হলো। মেয়েটা গালে হাত দিয়ে অবাক হয়ে অভিদের দিকে তাকায়।মেয়েটাকে দেখে গায়ে পড়া স্বভাবের মনে হলো রুহির। মেয়েটা অভিদকে কিছু বলতে নিলেই অভিদ মেয়েটার হাত চেপে ধরে টেবিলের সামনে এনে রেগে চেঁচিয়ে বলে
” how dear you to touch me!!Characterless girl !! আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে জেনেও আমাকে ছোঁয়ার চেষ্টা করছো আবার ডেট অফার দিচ্ছো !! তোমার সাহসের তারিফ করতে হয়। আমার কাছে কেউ আসার সাহস করে না সেখানে তুমি আমাকে ডেট অফার দিচ্ছো রিয়েলি ?? বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ জানে অভিদ রায়জাদা তার ওয়াইফ ছাড়া তার পাশে অন্য কোনো মেয়েকে সহ্য করতে পারে না।শুধু বাংলাদেশে কেনো আরও অনেক দেশের লোক জানে।” বলে দাঁতে দাঁত চেপে আরেকটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয় মেয়েটার গালে। মেয়েটা টান সামলাতে না পেরে ফ্লোরে পরে যায় মেয়েটার ঠোটের এক কোণা কেটে গেলো।
মেয়েটা ভয়ে কেঁদে দিলো। গালে হাত দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে
” sorry sir please forgive me !! আমি আর কোনোদিন এমন করবো না।” অভিদের চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। অভিদ রাগে থরথর করে কাঁপছে। মেয়েটা অভিদকে দেখেই ভয় পাচ্ছে। অভিদ মেয়েটার চুল ধরে উঠিয়ে দাড় করিয়ে সামনে ঘুরিয়ে পেছন থেকে হাত পিঠে চেপে ধরে মেয়েটা ব্যাথায় চিৎকার করে উঠে। রুহির ভয়ে কপাল থেকে ঘাম ঝরছে। রুহি হাত দিয়ে কপালে ঘাম মুছে নেয়। অভিদকে আটকাতে যেতে চাইছে তবে অভির রাগ দেখে আর যাওয়ার সাহস হচ্ছে না। অভিদ এক হাতে মেয়েটার চুল চেপে ধরে রেগে বলে
” আমাকে ছোঁয়ার সাহস হয় কি করে তোর ?? কিছু বলিনি দেখে সাপের পাঁচ পা দেখেছিস ?? তোর ওই পা গুলো না !! কেটে হাতে ধরিয়ে দেবো। শোন তোদের মতো হাজার একটা মেয়ে আসলেও না এই অভিদ রায়জাদার মনে জায়গা পাবে না। অভিদ রায়জাদা শুধু রুহির। দুশ্চিত্রা মেয়ে। আমার কাছে দ্বিতীয় আসার চেষ্টা করবি না। আর আসার উপায়ও রাখবো না। ” বলে কোমড় থেকে বেল্ট খুলে হাতে নিলো। মেয়েটা অভিদের হাতে বেল্ট দেখে আরো জোড়ে কেঁদে দিলো। চিৎকার করে বলে
” না, না প্লিজ স্যার আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমি আর কোনোদিন এমন করবো না। কারোর সাথে এমন করবো না প্লিন স্যার।” অভিদ মেয়েটার কথা কানে না নিয়ে বেল্ট দিয়ে মারতে থাকে।
রুহি বেল্ট দিয়ে মারতে দেখে ভয়ে গায়ে কাটা দিয়ে উঠলো। চোখের সমনে আবার সিহাবের বেল্ট দিয়ে মারার দৃশ্য গুলো ভেসে উঠলো। রুহির চোখ থেকে পানি ঘরিয়ে পরতে থাকে। হাত থেকে ব্যাগ টা ফেলে মাথা চেপে ধরে।
অভিদ শব্দ পেয়ে কেবিনের দরজার দিকে তাকাতেই রুহিকে দেখতে পেয়ে অবাক হয়ে গেলো। রুহিকে মাথা চেপে ধরে কাঁদতে দেখে হাত থেকে বেল্ট পরে গেলো। অভিদ দৌড়ে রুহির কাছে গিয়ে রুহির বাহু চেপে ধরে আতংক গলায় বলে
” রুহু কি হয়েছে তোমার ?? রুহি !!” রুহি মাথা চেপে ধরে পরে যেতে দিলেই অভিদ রুহিকে ধরে সোফায় এনে বসিয়ে দিলো। মেয়েটা কয়েকটা মার খেয়েই ফ্লোরে লেপ্টে পরে আছে। আর ড্যাবড্যাব করে অভিদ, রুহির দিকে তাকিয়ে আছে। অভিদ মেয়েটার দিকে একবার তাকিয়ে দরজার দিকে তাকালো চেঁচিয়ে বলে উঠে
” সিকিউরিটি ?? গার্ড কোথায় তোমরা ?? কুইকলি কাম ইন।” অভিদের ডাকার মাঝেই বাইরে থেকে গার্ডরা দৌড়ে আসে। দরজার সামনে ব্যাগ দেখে সেটা উঠিয়ে টেবিলের উপর রেখে মেয়েটার দিকে তাকালো। মেয়েটাকে দেখেই বুঝে গেলো মেয়েটা কোনো অকাজ করেছে তাই অভিদ এই অবস্থা করেছে।
অভিদ গার্ডের দিকে তাকিয়ে চোয়াল শক্ত করে বলে উঠে
” এই characterless মেয়েকে নিয়ে বাইরে ফেলে এসো। এর পর থেকে এই মেয়েক যেন অফিসের আশেপাশে দেখতে না পাই। আর নিরবকে কেবিনে আসতে বলো। go!!” গার্ডরা মাথা নাড়িয়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো। কিছুক্ষণ পরে দুজন মেয়ে গার্ড এসে মেয়েটাকে তুলে বাইরে নিয়ে গেলো। অভিদ টেবিল থেকে পানির গ্লাস এবে রুহিকে পানি খাইয়ে দিলো। রুহির চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে
” ঠিকাছো তুমি ?? কি হয়েছিলো তোমার ??” রুহি চোখ বন্ধ করে বলে
” বেল্টের মার দেখে আমার সেই আঘাত গুলোর কথা মনে পরে হঠাৎ মাথা ব্যাথা করে উঠেছিলো আর কিছু না। আমি ঠিকাছি এখন।” অভিদ পানির গ্লাসটা রেখে রুহিকে জড়িয়ে ধরে রুহির কপালে চুমু দিলো। রুহি চোখ বন্ধ করে বসে থাকলো। কিছুক্ষণ পরে দরজায় নক হতেই রুহি অভিদের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো। অভিদ গম্ভীর গলায় বলে উঠে
” come in” অভিদের বলায় দরজা ঠেলে একটা ছেলে ভেতরে ঢুকলো। রুহি ছেলেটাকে দেখে চিনতে পারলো। নিরবকে তিন, চারবারের মতো দেখেছিলো। নিরব রুহিকে দেখে মুচকি হেসে বলে
” আসসালাম ওয়ালাইকুম ম্যাম। কেমন আছেন।”
রুহি হালকা হেসে বলে
” ওয়ালাইকুম সালাম। আলহামদুলিল্লাহ আমি আছি আপনি কেমন আছেন। ”
নিরব হেসে বলে
” আলহামদুলিল্লাহ !! আমি ভালোই আছি। স্যার ডেকেছেন আমাকে ??” অভিদ দাঁড়িয়ে নিরবের সামনে গিয়ে গম্ভীর গলায় বলে
” অফিসের রুলস কি ভুলে গিয়েছো ?? আমি আগেই বলেছি এসব ভুল যাতে আমার চোখে না পরে।অফিসের রুলস কি ছিলো?? আমি বলে দিয়েছিলাম তো যে, অফিসে কোনো মেয়ে ইন্টার্ভিউ দিলে তাকে সিলেক্ট করার আগে তার সম্পর্কে সব খোজ খবর নিতে ?? চরিত্রহীন ব্যক্তি দের এই অফিসের কোথাও জায়গা নেই জানো তো ?? তাহলে এতো বড় ভুল কি করে হয় ?? কি যেন নাম !! মিস লিনি ?? সে কি করে সিলেক্ট হয়েছে ?? আন্সার মি ড্যাম ইট।” অভিদের ধমকে রুহি নিরব দুজনেই কেঁপে উঠে। নিরব মাথা নিচু করে বলে
” সরি স্যার। আসলে মিস লিনির ব্যাপার টা অন্য কেউ হাতে নিয়ে বলেছিলো সে খোঁজ খবর নেবে তাই আর আমি কিছু করিনি শুধু সিলেক্ট করেছি।সরি স্যার আর এমন হবে না।”
অভিদ শান্ত হয়ে চোয়াল শক্ত করে বলে
” এরপর যাতে এমন না হয়। আর যে এমন ভুল করেছে রুলস দেখে তার running month এর half salary ban করো।” নিরব মাথা নেড়ে বেরিয়ে যায়।
অভিদ রুহির পাশে বসে ভ্রু কুচকে বলে
” তুমি অফিসে কি করছো ?? আমাকে বলে আসোনি কেনো ??” রুহি গলা ঝেড়ে নড়ে বসে বলে
” আমি কালকে বলেছিলাম না আমি আপনার জন্য রান্না করে নিয়ে আসবো !! তাই আজকে আমি আপনার জন্য কিছু রান্না করে নিয়ে এসেছি।” অভিদ অবাক হয়ে যায়। অবাকের রেশ কাটিয়ে বলে
” তুমি রান্না করেছো, রিয়েলি ?? আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না। আচ্ছা তোমার হাত, পা পুরেনি তো ?? দেখি তোমার হাত দেখি।” বলে রুহির হাত ধরে। রুহি চমকে হাত মুচড়াতে মুচড়াতে বলে
” আ আমার কি হবে ?? কিছুই হয়নি হাত পা সব ঠিকাছে। আমার সাথে তো ফুপিরা ছিলো সত্যি বলছি কিছু হয়নি।” অভিদ সন্দেহ ভাবে রুহির দিকে তাকিয়ে থাকে। রুহি অভিদের তাকানো দেখে বলে উঠে
” আরে আপনি এখনও বসে আছেন কেনো ?? ফ্রেশ হয়ে আসুন আমি আপনার খাবার দিচ্ছি।” অভিদ রুহির কথা শুনে ঘড়ি দেখে দাঁড়িয়ে বলে
” লাঞ্চ টাইমের এখনও ১০ মিনিট বাকি। ওই অসভ্য মেয়ে হুহ !! আমি শাওয়ার নিয়ে আসছি। এসো রুমে গিয়ে বসো আমি ফ্রেশ হয়ে এসে লাঞ্চ করছি।” অভিদ কেবিনের দরজা লক করে রুহিকে নিয়ে টেবিলের উপর থেকে ব্যাগটা নিয়ে টেবিলের পেছনে একটা দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে গেলো। রুহি ভেতরে ঢুকে অবাক হয়ে গেলো। সুন্দর গোছানো একটা রুম এটা, বারান্দাও রয়েছে। অভিদ রুহিকে বসিয়ে আলমারি থেকে একটা শার্ট বের করে ওয়াসরুমে চলে গেলো। রুহি রুমের মিনি টেবিলের চেয়ারে বসে খাবার বের করতে থাকে। কিছুক্ষণ পরে অভিদ বের হয়। গলায় টাওয়াল ঝুলিয়ে চুল মুচ্ছে। ফর্শা মুখে ফোটা ফোটা পানি রয়েছে। রুহি ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে অভিদের দিকে।
” হায় কি কিউট আমার জামাইটা। এমন হাজবেন্ড কয়জন পায় ?? দেখতে রাজপুত্র কাজে ভালো হাজবেন্ড হিসেবে ভালো হিসেবে ভালো বন্ধু হিসেবে ভালো। সবই ভালো, ভালো তো হতেই হবে পৃথিবীতে একটাই মাফিয়া ক্রাশ বর বলে কথা। আমার মাফিয়া ক্রাশ বর।” রুহির ভাবনার মাঝে অভিদ রুহির নাম ধরে ডাকে।রুহি বলে
” কি ??” অভিদ কপাল কুচকে বলে
” কি !! আমি এতোক্ষণ ধরে ডাকছি শুনেছোই না। শুধু ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছো। আমাকে এতো হ্যান্ডসাম লাগছে বুঝি ?? তা প্রতিদিন এভাবে দেখো না কেনো ??” অভিদের কথায় রুহি প্রচন্ড লজ্জা পেলো। লজ্জায় মাথা নিচু করে মিনমিন সুরে বলে
” বসুন খাবার খেয়ে দেখুন কেমন হয়েছে।” অভিদ বাকা হেসে সামনের চেয়ারে বসে পরে। রুহি প্লেটে খাবার বেরে রেখেছে। অভিদ টেবিলের তাকিয়ে দেখে যা খাবার আছে সব তার পছন্দের খাবার গুলো। অভিদ অবাক হয়ে বলে।
” এতো কিছু তুমি রান্না করেছো ??” রুহি মাথা নাড়িয়ে বলে।
” হুম ” অভিদ হেসে প্লেটের খাবার মুখে নেয়। অভিদ খাবার খেতে খেতে রুহির দিকে তাকিয়ে দেখে রুহি উত্তরের আশায় বসে আছে। অভিদের কাছে খুবই ভালো লাগলো কিন্তু অভিদ কিছু না বলে একে একে সব খাবার টেস্ট করলো। শেষের খবারটা খেয়ে খুশি হয়ে বলে
” অসাধারণ হয়েছে। প্রথম দিনই এতো ভালো রান্না করেছো কি বলবো।” রুহি এক ভ্রু উঁচু করে বলে
” আপনি মিথ্যা বলছেন না তো ??” অভিদ চোখ ছোট ছোট করে বলে
“আমি মিথ্যা কথা বলি না। বিশ্বাস না হলে নিজে খেয়ে দেখে নাও।” রুহি সত্যি সত্যি সামনের প্লেট থেকে একটু খাবার মুখে পুরে নিলো। খাবারটা গিলে মুখ বাকিয়ে বলে
” কই শুধু একটু ভালো হয়েছে। অসাধারণ তো হয়নি।” অভিদ ভ্রু কুচকে বলে
” প্রথম দিনই কি সব কিছু সুন্দর ভাবে হয় ?? আমি কি এই অফিসটা একদিনে তৈরি করেছি ?? অনেক সময় লেগেছে তেমনি তুমিও আজকে প্রথম চেষ্টা করেছো তাই ভালো হয়েছে আরো রান্না করবে আরো ভালো হবে।” বলে প্লেট হাতে নিয়ে রুহির পাশে বসে বলে
“এখন নাও আমাকে খাইয়ে দাও।” রুহি চমকে গেলো অভিদের কথায়। মনে মনে বলে
” ডান হাতই তো পুরে গিয়েছে। কি করে খাইয়ে দেবো ?? এখন খাওয়াতে নিলেই হাত দেখে ফেলবে আর আমার বকা তো ফ্রি।” ভেবে অভিদের দিকে তাকিয়ে মেকি হেসে আমতা আমতা করে বলে
” মা মানে ববলছিলাম যে আ আপনি আমাকে খাইয়ে দিন না। আমি পরে একদিন আপনাকে খখাইয়ে দেবো।” অভিদ কিছুক্ষণ ভ্রু কুচকে তাকিয়ে গম্ভীর মুখ করে ফেলে। হঠাৎ করে আমার হাত দুটো টান মেরে সামনে নিয়ে আসে। আচমকা এমন হওয়ায় রুহি ঘাবড়ে গেলো। অভিদ রুহি বা হাত দেখে ডান দেখতেই চোখ কপালে উঠে গেলো। হাতের তালুতে একটু আর তালুর নিচে অনেক টাই পুরে গিয়েছে।
অভিদ চিৎকার করে বলে
” কি করেছো এসব ?? ” রুহি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে। অভিদ দৌড়ে ফার্স্টএইড বক্স নিয়ে আসে। রুহির হাতে মলম লাগিয়ে দিতে থাকে আর আগের মতো রাগে কাঁপতে থাকে। রুহি অভিদকে রাগতে দেখে নিজেকে গুটিয়ে নিতে থাকে। অভিদ হাতের ট্রিটমেন্ট শেষ করেই থাপ্পড় মারার জন্য হাত তোলে রুহি ভয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়। কিন্তু থাপ্পড় গালে পারলো না। অভিদ রেগে চেঁচিয়ে টেবিলের উপর থেকে একটা কাচের গ্লাস ফেলে দিলো। রুহি ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়ে উঠে। অভিদ রুহির দুই বাহু চেপে ধরে মুখটা সামনে এনে দাঁতে দাঁত চেপে বলে
” তোকে রান্না ঘরে যেতে না করেছিলাম না আমি ?? তাহলে কেনো গিয়েছিস ?? বল কেনো গিয়েছিস ?? কতো খানি হাত পুরে গিয়েছে এখন কষ্ট কে পাচ্ছে ?? আমি পাচ্ছি কষ্ট ??চুপ করে আছিস কেনো ??” অভিদের চেঁচানো কথা শুনে রুহি ঢুকড়ে কেঁদে দিলো। অভিদ রুহিকে ঝাড়া দিয়ে ছেড়ে আবার চেঁচিয়ে বলে
” এই একদম কান্না করবি না। কথায় কথ্যা কান্না ছাড়া আর কিছু করতে পারে না অপদার্থ মেয়ে। এতোখানি হাত লুরে গেলো অথচ হাতে এখনও কিছুই লাগায়নি, লুকিয়ে রেখেছে।ইচ্ছে তো করছে এক থাপ্পড়ে গাল ফাটিয়ে দেই।” রুহি মুখ চেপে কান্না থামানোর চেষ্টা করতে থাকে। অভিদ রেগে উঠে চলে যেতে নিলেই রুহি হাত ধরে পেছন থেকে কান্না গলায় বলে
” খেয়ে জান প্লিজ !! আর কোনো দিন আপনার কথা ফেলবো না। সব কথা শুনবো প্রমিস করছি। আপনি খেয়ে নিন প্লিজ।” অভিদ চোখ মুখ শক্ত করে রাগ সংযত রাখার চেষ্টা করে। রাগ কন্ট্রোল করে আবার রুহির পাশে বসে পরে। প্লেট হাতে নিয়ে খেতে শুরু করে। রুহিকে টেনে আরো কাছে এনে রুহিকেও খাইয়ে দিতে থাকে। রুহি একটু খাবার খেয়ে বলে
” আর খাবো না আপনি খেয়ে নিন।” বলে উঠে যেতে নিলেই অভিদ রুহির হাত চেপে ধরে অগ্নিচোখে তাকায়। রুহি ঢোক গিলে আবার বসে পরে। অভিদ খাবার খাইয়ে দিতে থাকে। খাওয়া শেষ হতেই অভিদ গম্ভীর গলায় বলে
” যাও বাসায় যাও আর আজকে আমার ফিরতে দেড়ি হবে রাতে ডিনার করে ঘুমিয়ে পরবে।” রুহি ভাবলো অভিদ রাগ করেছে তাই রাতে দেড়ি করে ফিরবে।রুহি কিছুক্ষণ অভিদের দিকে তাকিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে চলে যায়। অভিদ তার কেবিনে এসে কাজ করতে থাকে। গার্ডরা রুহিকে নিয়ে বাড়িতে এসে পরে।
গোডাউনের অন্ধকার একটা রুমে অভিদ আর রায়হান প্রবেশ করলো। অন্ধকার রুমের লাল আলোর লাইট জ্বালাতেই যাবেদ খানকে দেখা যায়। বলতে গেলে অপরিচিত যাবেদ খান। সেই আগের স্বাস্থ্য, চেহারা চুল কিছুই নেই। দেখে মনে হচ্ছে কতোদিন ধরে যেন খেতে পায় না। প্রতিদিন যাবেদ খানকে মারা হয়। অভিদ এতোদিন আসতে পারেনি অফিসের কাজের জন্য তবে আজকে সময় করে এসেছে। যদিও রায়হান প্রতিদিন আসতো। লাইটের আলোয় যাবেদ খান চোখ খুলে তাকায়। অভিদ আর রায়হানকে দেখে যাবেদ ভয়ে কাঁপতে শুরু করলো। অভিদ এসে যাবেদ এর চুল গুলো মুঠোয় চেপে ধরে চোয়াল শক্ত করে বলে
” বল তোর ছেলে সিহাব কোথায় লুকিয়ে আছে।”
চলবে…wait for next part….