#মেঘের_উল্টোপিঠ
#সাদিয়া_মেহরুজ_দোলা
[পর্ব-১০].
আজ প্রথম পরিক্ষা ছিলো। পরিক্ষা শেষ হতেই পূর্ব এহসানের দ্বারা বার্তা পাঠিয়েছে আমি যেনো পরিক্ষা শেষ হতেই আশপাশ না গিয়ে পূর্বের চেম্বারে গিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করি। আধাঘন্টা যাবৎ বসে আমি পূর্বের চেম্বারে। কিন্তু এই পূর্ব মানবের দেখা নেই! এহসানকে জিজ্ঞেস করতে সে তথ্য দিলো, পূর্ব অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন করছে। প্রতিত্তুর শোনার পর চেম্বার থেকে বের হতে নিলেই এহসান এক প্রকার আকুতি – মিনুতি করে বলল,
‘ ম্যাম! ম্যাম! আপনার পায়ে ধরি প্লিজ যাবেন না। স্যার যদি জানে আপনি চেম্বারের বাহিরে তাহলে আমায় মেরেই ফেলবে। প্লিজ যাবেন না ম্যাম। আরেকটু বসুন! স্যার এখনি চলে আসবে। ‘
‘ এহসান ‘ নামক ছেলেটার কথা ফেলতে ইচ্ছে হলো না। এমন ভাবে আকুতি মিনুতি করেছে ইমোশনাল না হয়ে পারা যাবে না। ফের নিজ স্থানে এসে বসে পড়ি। তবে খানিকক্ষণ বাদেই ধৈর্যহারা হয়ে এহসান এর চোখে ফাঁকি দিয়ে বেড়িয়ে পড়ি চেম্বার থেকে। হেঁটে ক্যাম্পাসে পেড়িয়ে বটতলায় আসতেই পাশে হন্তদন্ত হয়ে এসে কেও দাঁড়ালো। হকচকিয়ে বামে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে দেখা মিললো আয়াফের। চমকে গেলাম অনেকটাই! এই লোক এখানে কেনো?
‘ হেই এঞ্জেল! কতক্ষণ ধরে ডাকছি শুনছেন না কেনো?’
আমি কপালের চামড়ায় সুক্ষ্ম ভাজ ফেলে বলি,
‘ এঞ্জেল? এটা আবার কে?’
আয়াফ হাসলো! নিঃশব্দে নয় স্ব-শব্দে! যেনো আমি বেশ মজার কোনো কৌতূক বলেছি। বিরক্ত হয়ে সামনের দিকে পা ফেলতেই আয়াফ হাসি থামিয়ে ফের আমার পাশে এসে বললেন,
‘ এঞ্জেল টা আপনি দোল! এঞ্জেলের থেকেও মারাত্মক সুন্দরী আপনি। তাই এঞ্জেল বলে ডেকেছি এন্ড এখন থেকে এটা বলেই ডাকবো। ‘
আয়াফের কথায় পদে পদে চমকালাম! লোকটার এতো সাহস? ভাইয়ের বউকে ‘ এঞ্জেল ‘ বলে ডাকছে। কমনসেন্স নেই নাকি? কঠিন কয়েকটা কথা শোনাতে গিয়েও নিজেকে ধাতস্থ করে নিলাম। কৃত্রিম হেঁসে বললাম,
‘ আমার না কাজ আছে ভাইয়া। আজ আসি! অন্য কোনোদিন কথা বলবোনে। আসসালামু আলাইকুম। ‘
অতঃপর পূর্বের চেম্বারের দিকে যেতে নিলেই আয়াফের দ্রুত কন্ঠ কর্ণপাত হয়। সে ত্রস্ত পায়ে এগিয়ে এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে বললেন,
‘ আরে.. আরে..! ওয়েট! এতো তাড়া কিসের? আচ্ছা তোমাকে তুমি করে বলি?’
আমি কোনোমতে বলি, ‘ জি বলুন! ‘
‘ থ্যাংক্স! আজ তোমার পরিক্ষা ছিলো না? কেমন হয়েছে? আচ্ছা শুনো। চলো কোথাও বসে একটু কথা বলি? তোমার সাথে গুরুত্বপূর্ণ কথা ছিলো। আসো! বেশি টাইম নিবোনা। জাষ্ট ২০ মিনিট দাও?’
আয়াফের কথা সমাপ্ত হতেই আমি অকপটে বলি,
‘ টাইম নেই ভাইয়া। পূর্ব অপেক্ষা করছে আমার জন্য। ‘
‘ পূর্ব তো অপারেশন করছে। ওর আরো লেট হবে। আসো প্লিজ! ‘
আয়াফের অদ্ভুত চাহনি আমায় অস্বস্তিতে ফেলে দিলো। নিজেকে থাপ্পড় লাগাতে ইচ্ছে করছে এই মূর্হতে! ইশশ! কেনো যে বের হলাম? বের না হলে কি এই পরিস্থিতিতে পড়তে হবে? আয়াফ নামক ‘পাগল’ বান্দা তো আঠার মতো চিপকে আছে। আত্নীয় বলে ঠাস করে চড়-ও লাগাতে পারছি না। তবুও সামনের দিকে পা ফেলতেই হাতে টান পড়লো। ডান হাতের পানে অবলোকন করতেই দৃশ্যমান হলো আয়াফ আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরে আছেন। হতভম্ব হয়ে গেলাম এই ক্ষনটায়! বুদ্ধি লোপ পেলো যেনো হিতাহিত কান্ডে!
আয়াফ হাত ধরার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বললেন,
‘ এঞ্জেল! প্লিজ একটু! একটু শুনো। ‘
বাম হাত দিয়ে আয়াফের গাল বরাবর চড় মারতে নিবো তার আগেই আয়াফের গালে চড় পড়লো! সে আমার হাত ছেড়ে দিয়ে ছিটকে মাটিতে পড়ে যায়। সামনে দৃষ্টি দিতেই দৃশ্যমান হলো পূর্বের রক্তিম মুখশ্রী! চোয়াল শক্ত করে সে আয়াফের দিকে তাকিয়ে আছে। একহাত দিয়ে তৎক্ষনাৎ সে আমার কাঁধ ধরে টেনে নিজের বক্ষঃস্থলের সাথে আগলে ধরলেন। রুষ্ট কন্ঠে চিবিয়ে বললেন,
‘ বলেছিলাম না দূরে থাকবি ওর থেকে?হাহ্?তোর সাহস কিভাবে হয় ওকে স্পর্শ করার?’
আয়াফ উঠে দাঁড়ালো। ঠোঁট কেটে রক্ত পড়ছে ওর। কুটিল হেঁসে বলল,
‘ এই তুই কি থাপ্পড় ছাড়া আর কিছু মারতে পারিস না? অন্যভাবে? অলওয়েজ থাপ্পড়? বোরিং লাগে না নাকি?’
পূর্ব আমায় ছেড়ে আয়াফের নিকট গিয়ে নিম্ন কন্ঠে কিছু বললেন। কি বললেন? তা আমার কর্ণপাত হলো না। তবে পূর্বের কথা শ্রবণ করার পর আয়াফের মুখশ্রীর পরিবর্তন স্বরূপ রেগে লাল হয়েছে আঁখি জোড়া! সে নিজেও কিছু বলার পর পূর্ব তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে এসে আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরলেন। এক প্রকার টানতে টানতেই তিনি নিজের চেম্বারে নিয়ে গেলেন। ভাগ্যিস আশ- পাশে কোনো মানুষ ছিলো না।
পূর্ব চেম্বারে এসে এহসানের দিকে ক্ষুব্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন,
‘ একটা কাজও ঠিকমতো হয়না তোমার দ্বারা? কি বলে গিয়েছিলাম আমি?’
এহসান কাচুমাচু ভঙ্গিতে কিছু বলবে তার পূর্বেই আমি চট করে বলি,
‘ এহসানের কোনো দোষ নেই পূর্ব। আমিই ওর চোখ ফাঁকি দিয়ে বেড়িয়ে গিয়েছিলাম। ‘
পূর্ব ক্ষিপ্ত হয়ে তাকালেন। অতঃপর গলার কন্ঠ উঁচু করে এহসানকে ধমকে বললেন বেড়িয়ে যেতে। এহসান বেচারা ভয়ে এক প্রকার হুড়মুড়িয়ে পালালো! তার পালানোর স্টাইলে হাসি পেলেও এই মূর্হতে হাসা একদমই উচিত না তা ভেবে নিজেকে ক্ষ্যান্ত করলাম!
পূর্ব মানব সেল্ফের নিকট এগিয়ে গিয়ে হাতে ছোট বোতলের মতো কিছু নিয়ে আসলেন। কাছে আসতেই বোধগম্য হলো তার হাতের কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি আসলে ‘ হ্যান্ড স্যানিটাইজার ‘! উৎসুক দৃষ্টিতে তার পানে তাকাতে তিনি ইশারায় আমায় বললেন বসতে। বিনাবাক্যে আমি বসে পড়তেই পূর্ব আমার পাশে বসলেন। আমার ডান হাত টেনে নিয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে রাব করে দিলেন।টিস্যুর বক্স এনে এক এক টিস্যু দিয়ে হাত কোমল ভাবে মুছে দিতে থাকলেন।এক পর্যায়ে টিস্যু বক্স খালি হয়ে গেলে তিনি ক্ষ্যান্ত হলেন। পুরো ঘটনায় ভ্যাবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে আছি। পরিশেষে হতভম্ব হয়ে বলি,
‘ এটা কেনো করলেন আপনি?’
পূর্ব ফিচেল কন্ঠে বললেন, ‘ আয়াফের স্পর্শ ক্ষতিকর তোমার জন্য! ঐ বদমাইশের ছায়া পর্যন্ত দূর্ষিত! ‘
হটাৎ হাসি পেলো খুব! এবার আর হাসি আটকাতে পারলাম না। ফিক করে হেঁসে দিতেই পূর্ব চমকে তাকান আমার পানে! অতঃপর রাশভারী কন্ঠে বললেন,
‘ তোমার হাসি দেখলে আমি আমার নাম পর্যন্ত ভুলে যাই ঘোরে চলে গিয়ে। কিন্তু এবার আমি ভুলছিনা তুমি কি করেছো! সো আমার উইকনেস প্রদর্শন বাদ দিয়ে শাস্তি পাওয়ার জন্য প্রস্তুত হও! ‘
আমি বিমূঢ় হয়ে হাসি থামিয়ে বললাম, ‘ আপনি আমায় শাস্তি দিবেন?কিন্তু কেনো?’
পূর্ব আমার দিকে খানিকটা ঝুঁকে হিসহিসিয়ে বললেন, ‘ কথা অমান্য করার জন্য। চেম্বার থেকে বের হতে নিষেধ করেছিলাম না? হু? ‘
ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে ধীর কন্ঠে বলি, ‘ শাস্তি হিসেবে কি দিবেন? সেদিনের মতো স্কেল দিয়ে ঠাস! ঠাস! মাইর?’
পূর্ব ম্লান হাসলেন। হুট করেই তিনি আমার কোল দখল করে নিজের মাথা রেখে বললেন,
‘ উঁহু! তোমার শান্তি হচ্ছে, এখন আমি ঘুমাবো। আর আমি ঘুম থেকে না ওঠা পর্যন্ত তুমি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেবে! একদম থামাথামি নেই। থামলে শাস্তি ডাবল হবে। চেম্বারে কিন্তু সিসি ক্যামেরা আছে। তুমি হাত বুলিয়ে দেয়া বন্ধ করলে কিন্তু আমি দেখতে পাবো। ‘
আমি কাঁদো কাঁদো চাহনি দেই। তার মধ্যেই পূর্ব ধমকে বললেন,
‘ Your punishment Start’s form now. so get started ‘
চটপট তার মাথায় হাত রাখি। পূর্ব একদম ছোট বাচ্চাদের মতো ঘুমিয়ে আছেন। এই ছোট্ট সোফায় তার বিশাল, লম্বাটে দেহ জায়গা পাচ্ছে না ঠিক মতো। এভাবে ঘুমানো যায় আদও? সেকেন্ড খানিক পর পূর্ব ফের হিসহিসিয়ে বললেন,
‘ আমার ব্যাক্তিগত প্রিয় সম্পদ একান্তই আমার! তাকে স্পর্শ করার অধিকার শুধুমাত্র আমারই আছে। আর কারো নয়! আমি বাদে অন্যকেও তাকে বিন্দুমাত্র বাজে মতলব নিয়ে স্পর্শ করলে সেই ব্যাক্তিকে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করতেও আমার বুক কাঁপবে না। স্নিগ্ধপরীকে স্নিগ্ধ স্পর্শ তার রাজকুমার করবে কোনো কীট নয়! ‘
ফোনের মধ্যে ব্যাস্ত থাকায় পূর্বের বলা বর্তমান কথাটি ঠিকমতো বোধগম্য হলো না আর না শ্রবণ করা হলো। তবে তার হিসহিসিয়ে কন্ঠস্বর ঠিকই কাঁপুনি ধরিয়ে দিতে সাহায্য করলো।
_______
বিকেলের দিকে ভাবীর সাথে ছাঁদে আসতে হয়েছে। ভাবী এক প্রকার জোর করেইক নিয়ে এসেছি। প্রথমত আসতে ইচ্ছে না করলেও এখন যেতে ইচ্ছে করছে না। ছাঁদের ডেকোরেশন মনোমুগ্ধকর! বিশেষ করে সকল প্রকারের গাছপালা কে যেভাবে বিন্যস্ত রূপে সাজানো হয়েছে তা অপরূপ, দেখার মতো। আমি হাস্যরত মুখ ভাবীকে জিজ্ঞেস করি,
‘ গাছপালা গুলোকে সারিবদ্ধভাবে তাকে তাকে সাজানের আইডিয়া কিন্তু দারুণ ভাবী। কে করেছে এগুলো? তুমি?’
ভাবী ম্লান হেঁসে প্রতিত্তুরে বলল, ‘ উহু! আমি নই! তোমার বর করেছো সব। পূর্ব গাছপ্রেমী মানুষ। সাথে গাছ নিয়ে যেকোনো আইডিয়া ওর মাথায় ভুড়ি ভুড়ি আছে। এভাবে সাজানোর আইডিয়া ওরই! যেকোনো বিষয়ে আমাদের পূর্ব ফটাফট চমৎকার আইডিয়া দিতে পারে।পূর্ব অনেক ট্যালেন্টটেড! বেশ ভাগ্যবতী তুমি দোলা! পূর্বকে পেয়ে। অবশ্য পূর্বও খুব লাকী বলা চলে তোমাকে পেয়ে। তুমি যেই সুন্দরী। সাথে কিউট এন্ড লক্ষীও বটে! ‘
আমি মৃদু হাসি দেই। প্রসঙ্গ পাল্টাতে তৎক্ষনাৎ বলি,
‘ অভ্র ভাইয়া কম নাকি ভাবী? তুমিও লাকি অলসো অভ্র ভাইয়া! আচ্ছা ভাবী, অভ্র ভাইয়া কোথায়? আকদের দিনও দেখলাম না তাকে। ভাইয়া কি দেশে নেই?’
অভ্র ভাইয়ার প্রসঙ্গ টানতেই ভাবীর মুখশ্রী পাংশুটে আকার ধারণ করলো। তার আঁখিজোড়া জ্বলজ্বল করছে। কাঁপা ওষ্ঠাধর! খানিক বাদে স্থির হয়ে বলল,
‘ দোলপাখি?থাকো একটু এখানে। আমি চুলোয় না দুধ বসিয়ে এসেছিলাম। মা পায়েস রান্না করতে বলেছিলো। আমি রান্না করে আসি। ছাঁদ ভ্রমণ শেষ হলে নিচে চলে এসো। বেশী দেরি করো না আবার। ঠান্ডা লেগে যাবে। ‘
ভাবী নিজের বক্তব্য শেষ করে এক প্রকার ছুটে পালালেন। আমি বিষ্ময়কর দৃষ্টি দিয়ে সেদিকে তাকিয়ে আছি। নিভৃতে এই ঘটনা দেখার পর বারংবার একটাই প্রশ্ন ঘুরছে! ‘ তারা আপু আর অভ্র ভাইয়ার মাঝে কি কোনো সমস্যা হয়েছে? ‘
______
রাতের দিকে আম্মুর সাথে কথ বলা শেষ করে ফোন রাখতেই পূর্ব মানবের আগমন ঘটে! সুদর্শন মানবের মুখশ্রীতে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে রয়েছে। তিনি রুমে এসে সর্বপ্রথম আমাতে দৃষ্টি দিয়ে বললেন,
‘ কার সাথে কথা বলছিলে?’
‘ আম্মুর সাথে! ‘
পূর্ব এপ্রন খুলে সোফায় ছুঁড়ে বললেন, ‘ অহ! ‘
আমি তার সামনে গিয়ে ধীর কন্ঠে বললাম,
‘ আপনার সাথে কিছু কথা বলার ছিলো পূর্ব। ‘
‘ আচ্ছা বলো! তার আগে আমার জন্য কফি নিয়ে এসো। ফ্রেশ হয়ে এসে তারপর তোমার কথা শুনবো। ‘
আমি অকপটে বলি, ‘ ঠিক আছে। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন। আমি কফি বানিয়ে আনছি। ‘
পূর্ব ওয়াশরুমে চলে যাওয়ার পর আমি কফি বানাতে কিচেনে চলে আসলাম। অন্তরালে নিজের কথাগুলো বিন্যস্ত ভাবে সাজিয়ে নিলাম। কফি নিয়ে ওপরে আসার পর রুমে শূন্যতা দৃশ্যমান হলো। পূর্ব এখনো ওয়াশরুম হতে বের হয়নি! কফি টেবিলে রেখে তার ঘর্মাক্ত এপ্রনটা বেলকনিতে মেলে দিয়ে আসতেই পূর্ব মানব তার ভেজা চুল মুছতে মুছতে বললেন,
‘ বাহ্! বউদের মতো দায়িত্ব পালন করা শুরু করেছো। ‘
পূর্ব কফির মগটা হাতে নেয়ার পরপরই আমি চটপট বলি, ‘ আপনাকে কিছু বলার ছিলো। ‘
হেঁটে সে বেলকনিতে গেলেন। ইশারায় বললেন তার সাথে আমায় বেলকনিতে আসতে। বেলকনিতে আসার পরপরই তিনি আমার সামনে কফির মগটা দিয়ে বললেন,
‘ তোমার ওপর বিশ্বাস নেই! সকালের শাস্তির জন্য কফিতে কি মিশিয়েছো চটপট বলো তো! আচ্ছা থাক বলার দরকার নেই। কফিতে সিপ দাও আমার সামনে। ফাস্ট! ‘
‘ হোয়াট?’
‘ যা বলেছি তা করো! ‘
বিরক্তি নিয়ে কফিতে সিপ দেয়ার পর পূর্ব আমার হাত থেকে কফির মগটা এক প্রকার কেঁড়ে নিলেন। আমি যেই স্থান দিয়ে সিপ দিয়েছি পূর্ব মানব ঠিক সেই জায়গায় নিজের অধর লাগিয়ে সিপ(চুমুক) দিলেন। আমি হকচকিয়ে বলি,
‘ আরে ওখান দিয়ে খাচ্ছেন কেনো? ওখানে তো আমি ঠোঁট দিয়েছি। ‘
পূর্ব প্রতিত্তুরে রাশভারী কন্ঠে বললেন, ‘ নান অফ ইউর বিজনেস! কি বলতে চেয়েছিলে বলো।’
লম্বাটে শ্বাস টেনে কিছুটা সামনে আগাই! দম নিয়ে বলি,
‘ পূর্ব? তারা আপু আর অভ্র ভাইয়ার মাঝে কি কোনো সমস্যা হয়েছে? তাদের দুজনকে ফোনে ঝগড়া করতে দেখেছি। অভ্র ভাইয়ার নাম শুনলে আপুর চেহারা কেমন মলিন হয়ে যায়। কেনো?’
পূর্বের মুখশ্রী থমথমে হয়ে গেলো পুরোদমে। তিনি কফির মগটা পাশে রেখে রাশভারী কন্ঠে পুনরায় বললেন…
চলবে…