রহস্যময়ী লেডি কিলার পর্ব-৯+১০

0
406

#রহস্যময়ী_লেডি_কিলার
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_৯

–“অবনীর কাছে ফিরে এসে দেখি সেও নাই। সেও কোথায় যেনো গায়েব হয়ে গেছে। যেটা দেখে কিনা এবার বুকের ভিতরে ভয়ঙ্কর রকমের ধুপধুপানি শুরু হয়! কিরে কি হচ্ছে এটা আমার সাথে! প্রথমে সেই মেয়েটা আমার চোখের সামনে থেকে গায়েব হয়ে গেছে! এবার দেখি অবনীও নাই। ঘটছে টা কি আমার সাথে এসব! তাজ্জব হয়ে আশেপাশে চোখ বুলিয়ে অবনীকে খুঁজতে লাগলাম। তখনি হুট করে পিছন থেকে অবনী আমার শরীরে স্পর্শ করে বললো,

–এই যো মহাশয়, চোখ বুলিয়ে কোথায় খুঁজছেন? আমি এখানে।

–অবনীর আচরণে আমার ভিতরে জন্ম নেওয়া তাজ্জব বিষয়টা যেনো ধারাবাহিক ভাবে আরো বেড়ে গিয়েছে! আমি বুঝে উঠতে পারছি না কি ঘটছে আমার সাথে! তাই অবনীকে প্রশ্ন করলাম, এই অবনী কোথায় গায়েব হয়ে গিয়েছিলে তুমি?

–আরেহ আমি ঐ যে পাশে গাছটা দেখছেন? সেটার পিছনে লুকিয়ে ছিলাম। কারন আমি দেখতে চেয়েছি, যে আপনার চোখের সামনে থেকে হুট করে আড়াল হয়ে গেলে আপনি কেমন রিয়াকশন করেন। কিন্তু আপনি তো দেখি বেশি চমকে উঠেছেন।

–অবনীর কথায় কেমন যেনো এক ধরনের খটকা লাগলো মনের ভিতরে! কারন অবনী যেই গাছটার কথা বলেছে, সেটা আমাদের থেকে মোটামুটি কিছুটা দূরে। তার উপরে আমি সেই গাছটার দিকেও সবে কেবল মাত্র দৃষ্টিপাত করে সামনে নজর ঘুরিয়েছি। আর সে এরমধ্যেই গাছের পিছন থেকে এসে আমায় অবাক করে দিয়েছে! কি করে সম্ভব এটা! আমি এসব ভাবতে ভাবতে অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছি। তখনি অবনী আমায় বলে উঠলো,

–এই যে মহাশয়, আপনি কোন ভাবনা চিন্তার জগতে হারিয়ে গেছেন বলেন তো?

–অবনীর কথায় হুশ ফিরে আসলো। নাহ অবনী আমি ঠিক আছি। কিন্তু তুমি আমার সাথে এটা কি করলে? আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।

–ইশ কি সাংঘাতিক ব্যাপার। আচ্ছা শোনেন আর ভয় পেতে হবে না। এবার চলেন বাড়ি যাবো। কারন আমার অশান্ত মন শান্ত হয়ে গিয়েছে আপনাকে দেখে।

–হুম ঠিক আছে। কিন্তু অবনী তার আগে তোমার থেকে আরেকটা জিনিস জানার আছে আমার।

–কি জিনিস?

–তুমি আমার নাম্বার পেয়েছো কি ভাবে?
আমার নাম্বার তো কারোর কাছে নেই।

–হি হি পেয়েছি। কিন্তু নাম বলবো না।

–আরেহ বলবে না মানে কি?

–কারন বললে আপনি হয়তো উনাকে বকাবকি করবেন।

–আরেহ কাকে বকাবকি করবো আমি? তুমি দেখি নামটা বলো।

–বকবেন না কিন্তু আগেই বলে দিলাম।

–আচ্ছা বলো।

–আপনার বডিগার্ড মুজাহিদ ভাইয়ার থেকে আপনার নাম্বার নিয়েছি। তবে শুরুতে তিনি দিতে চায়নি। বলতে গেলে এক প্রকার জোর করেই নিয়েছি। আর তাছাড়া তিনি নিজেই আমাকে চিনে নিয়েছে, যে আমি আপনার ঐ টা লাগি। কারন আপনাকে আর আমাকে তিনি রোমান্স করতে দেখেছেন কলেজের বাহির থেকে। তাই শুরুতে দিতে না চাইলেও পরে গিয়ে আমার জোড়াজুড়িতে আপনার নাম্বার দিয়েছে। আপনি প্লিজ উনাকে আবার বকাঝকা দিয়েন না।

–আচ্ছা ঠিক আছে বকবো না।

–মনে থাকে যেনো।

–হুম থাকবে।
আর এবার চলো উঠা যাক এখান থেকে।

–আচ্ছা।

–তারপর অবনীকে সাথে নিয়ে পার্ক থেকে বেরিয়ে আসলাম। পরে অবনীকে একটা রিক্সায় তুলে দিয়ে এগিয়ে দিতে চাইলাম। কিন্তু সে আমায় যেতে না করলো। কারন সে নাকি একাই যেতে পারবে। তাই আর অবনীকে জোড়াজুড়ি করলাম না। অবনীকে রিক্সায় করে পাঠিয়ে দিয়ে আমি নিজেও গাড়িতে উঠে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় আসতেই মুজাহিদ এসে আমায় বললো,

–ভাই কি ভাবে যেনো আপনার একটা ছবি পাবলিক হয়ে গিয়েছে টিভিতে। তবে নেগেটিভ কিছু হয়নি। পজিটিভলি’ই সব হয়েছে। কিন্তু আমার মতে আপনার ছবি না থাকাই ভালো কোথাও। কারন আপনার ছবি শত্রুদের হাতে পড়লে তারা সেটার অপব্যবহার করতে পারে।

–হুম ঠিক বলেছিস। আমিও সেই বিষয় নিয়ে ভেবেছিলাম। কিন্তু অবনীর সাথে দেখা করতে যাওয়ায় সেটা মাথা থেকে সরে গেছে। তাই তুই একটা কাজ কর। আমার ছবি যারা পাবলিক করেছে, তাঁদেরকে বল সেটা হাঁটিয়ে দিতে।

–আচ্ছা ভাই আমি আগে খবর লাগাচ্ছি কে করেছে এমনটা। তারপর তাকে খুঁজে বের করে ছবি হাঁটিয়ে দিতে বলছি।

–হুম তুই কাজে লেগে পড়। আমি রুমে গেলাম।

–আচ্ছা ভাই।

–মুজাহিদকে ছবি হাঁটানোর কাজ দিয়ে রুমে চলে আসলাম। রুমে আসার আধঘন্টা পর মুজাহিদ আবার আমার রুমে আসলো। তারপর বললো,

–ভাই মিনিস্টার সাহেবের কোন লোক যেনো ভুলে এমনটা করে ফেলেছে। সে নাকি অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য ক্যাপচার করছিলো। এবং সেখানে উপস্থিত সবার ছবি নিচ্ছিলো। যাতে করে পরবর্তীতে সেটা দিয়ে সে নিউজ বানাতে পারে। কারন সে একজন জার্নালিস্ট। তবে আমি মিনিস্টার সাহেবকে দিয়ে সেই ভিডিও ফুটেজ ডিলিট করিয়েছি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আগে যেটা সম্প্রচার হয়ে গেছে, সেটা থেকে যে কেউ চাইলে আপনার ছবি তুলতে পারে। এছাড়া আর কোনো সমস্যা নাই। তারা ভিডিও ফুটেজ ডিলিট করে দিয়েছে। এবং সেটা আজকে বা আগামীতে আর কখনোই সম্প্রচার হবে না।

–আচ্ছা সমস্যা নাই। আমার ছবির ফুটেজ টা দিয়ে আর নিউজ না করলেই হলো। আর এটা আমিও জানি যে, যেই খবর একবার সম্প্রচার হয়েছে, সেটা ঠিক করার আর কোনো উপায় নেই। তবে টিভি নিউজ ওয়ালারা তো একটা নিউজ সারাদিনে দেখা যায় অনেক কয়বার কাভার করে। তাই আমি তোকে বলেছি সেটা যেনো আর না হয়।

–হুম ভাই সেটা আর হবে না।

–আচ্ছা যা এবার গিয়ে রেস্ট কর। না হয় বাকিদের সাথে আড্ডা মার। আমি একটু বিছানায় শুয়ে বিশ্রাম নিব।

–আচ্ছা ভাই আমি চলে গেলাম।
আপনি বিশ্রাম নেন।

–মুজাহিদ চলে গেলো। আমি বিছানায় শুয়ে শুয়ে অবনীর কথা ভাবছি। মেয়েটা একদিনে আমার ক্লোজ হয়ে আমায় ভিতর টাকে এভাবে পাল্টে দিয়েছে, যা ভাবতে আমার নিজের ও অবাক লাগছে! তবে সব কিছুর ভিড়ে অবনীর আরেকটা কথা আমায় ভাবাচ্ছে, যে সে হুট করে উধাও হয়ে গিয়ে পরবর্তীতে আমায় এসে বলছে, সে আমার রিয়াকশন দেখতে চেয়েছে। অবনীর ব্যাপারে ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি তা নিজেও বলতে পারবো না। এক ঘুমে মাগরিব পেরিয়ে এশার আজান দিয়েছে। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে গেলাম সবার সাথে কথা বলার জন্য। তখনি রাজ নিজ থেকে আমার সামনে এসে বললো,

–ভাই আপনাকে কিছু বলার আছে। কিন্তু আপনি কি ভাবে রিয়েক্ট করবেন তা বুঝে উঠতে পারছি না!

–আরে কি এমন কথা, যেটা কিনা তুই আমাকে বলতে নার্ভাসফিল করছিস।

–ভাই আমার মনে হয় না, যে আমার যাদের তালাশ করছি তাঁদেরকে কখনো খুঁজে পাবো। আর তাছাড়া তাঁদেরকে খুঁজে পেলেও তাঁদের সাথে লড়াই করে জিতরে পারবো না। কারন ভাই আমাকে এবং বাকিদেরকে নিয়ে যখন ঘর বন্দী করেছে। তখনি সেখানে একজন নয় দু’জন ছিলো। যাদের মাঝে ভিন্ন ভিন্ন শক্তি রয়েছে। একজনের কাছে ঝড়েরবেগে দৌড়ানোর শক্তি আছে। যে কিনা আমাদের সবাইকে একত্রে একবারেই গাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে ঘরে বন্দী করেছে। আরেক জনের কাছে আগুনের শক্তি আছে। যে কিনা পুরো ফরেস্ট কলোনী জ্বালিয়ে পুড়িয়ে তসনস করে দিয়েছে। সেটা তো আপনারও চোখে দেখেছেন। ভাই আমার মনে হয় না আমরা তাঁদের সাথে কখনোই পেরে উঠবো। কারন আমরা সবাই সাধারণ মানুষ। আর ওরা হলো দৈত্য। যাদের কাছে কিনা ভিন্ন ভিন্ন রকমের অলৌকিক ক্ষমতা রয়েছে। ভাই তারা মানুষের আকৃতি ধারণ করলেও সত্যিকারত্বে তারা কিন্তু মানুষ না। তারা নরপিশাচের বংশধর। আমি তাঁদের সেই অদ্ভুত ক্ষমতা নিজ চোখে প্রদর্শন করেছি। যার কারনে তাঁদের সাথে লড়াই করে জিততে পারবো, সেই আস্থাটা আমার ভিতর থেকে হারিয়ে গেছে।

–রাজ তোকে একটা কথা বলি।
তুই সেই খবিশ গুলোকে নিজের সচক্ষে দেখছিস। আর আমিও কিন্তু তাঁদের একটাকে নিজের সচক্ষে দেখেছি। তবে তাঁদেরকে দেখে তোর মনোবল হারিয়ে গেছে। কিন্তু আমার মনোবল হারায়নি। আর তার কারন হলো আমি অন্য কিছুতে বিশ্বাসী। দেখ উপর ওয়ালা দুনিয়াটা সৃষ্টি করেছে মানুষের জন্য। আর তার সাথে সাথে দুনিয়ার সকল জিনিস ও কিন্তু উপর ওয়ালা মানুষের জন্যেই সৃষ্টি করেছে। মানুষ এই দুনিয়াতে রাজত্ব করবে। এই পৃথিবীতে এমন কোনো অসুরের ক্ষমতা নাই যে, তারা মানব জাতিকে হারাবে। এবং কোনো ঐশ্বর্যের ও ক্ষমতা নাই যে, তারা মানব জাতিকে হারিয়ে এই দুনিয়ায় রাজত্ব করবে। আমি তার কারনটা কিন্তু আগেই বলে দিয়েছি। এই পৃথিবীটা মানুষের। তাই মাথায় রাখবি যে যাই করুক না কেন, বিজয় কিন্তু মানুষের এই হবে। তাই তুই তোর চিন্তা ভাবনার পরিবর্তন ঘঠা। আর তাছাড়া আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা তোকে এবং বাকি সবাইকেই বলি। তোরা নিজের চোখে মানুষরূপী আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী হিসাবে যাদেরকে দেখেছিস, আমার মতে তারাও কিন্তু মানুষ। হয়তো তাঁদের কাছে কোনো না কোনো এক ভাবে এই বিশেষ শক্তি গুলো এসেছে। তাই আমার মতে আমাদের সকলকে আগে তাঁদের সেই শক্তির উৎসকে খুঁজে বের করতে হবে। তাহলেই তাঁদেরকে হারানো সম্ভব। তাঁদেরকে সেই শক্তির উৎসকে জানতে পারলেই তারা আমাদের হাতের মুঠোয় চলে আসবে। তাই কেউ ঘাবড়ে না থেকে তাঁদের দূর্বলতা সম্পর্কে সবাই জানার চেষ্টা কর। আর রাজ তুই আমার কথার আমল কর।

–ভাই ক্ষমা করবেন। আমি তাঁদের ক্ষমতা দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে আপনার কথা শুনে আমার মনোবল সেই আগের ন্যায় হয়ে গেছে। বরং তার থেকেও আরো বেড়ে গেছে। ভাই আমি কথা দিচ্ছি তাঁদের দূর্বলতা সম্পর্কে জেনেই আমি স্বস্তিতে নিশ্বাস ফেলবো।

–এই তো এসেছিস লাইনে। তো এবার কাজে লেগে পড়। তবে হ্যাঁ সবাই সাবধান। কেউ তাঁদের দূর্বলতা সম্পর্কে জানতে চেয়ে তাঁদের ফাঁদে পা দিবি না। সব সময় সতর্কতা অবলম্বন করে কাজ করবি।
.
আকাশের কথায় বাকিদের পাশাপাশি রাজের মনোবল আবার আগের ন্যায় বৃদ্ধি পায়। তাই সে আকাশকে আবার বলে,

–ভাই আমি জানি না কি ভাবে আমরা বা আমি নিজে তাঁদের দূর্বলতা সম্পর্কে জানবো! এবং তাঁদের তালাশ করবো। কিন্তু তাঁদের মুখে একটা জায়গার নাম কয়েকবার আমি শুনেছি। তারা যখন আমাদের সবাইকে নিয়ে ঘরের মধ্যে বন্দী করে, তখন ঝড়েরবেগে দৌড়াতে পারা খবিশ টা বাকি আরেক জনকে বলছিলো, যে এদের সবাইকে তাড়াতাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়ে ড্রয়িডে ফিরে যেতে। আমার সৃতি শক্তি বলছে ড্রয়িড হয়তো তাঁদের কোনো গোপনীয় স্থানের নাম। আমার মতে সেই জায়গার তালাশ করে আমাদের সবাইকে একবার নিজের রক্ষাকবচ নিয়ে সেখানে যাওয়া উচিৎ।

–কিহহহহ, এই মুজাহিদ তুই তারাতাড়ি সেই জায়গার তালাশ কর ম্যাপ থেকে। আগামীকাল আমরা সবাই সেখানে যাবো।

–আচ্ছা ভাই।
.
আকাশের কথা মতন মুজাহিদ ম্যাপে সেই জায়গাটার তালাশ করতে লাগলো। কিন্তু পুরো ম্যাপের মধ্যে সেই জায়গার কোনো নাম নিশানাও নাই। কিন্তু মুজাহিদ তো হার মানবার মতন মানুষ না। তার যে করেই হোক সেই ড্রয়িড নামক জায়গাটার খোঁজ বের করতে হবে। তাই সে একজনকে ফোন করে সেই জায়গার লোকেশন বের করতে বলে। ভাগ্যক্রমে মুজাহিদ যাকে ফোন করে জায়গার লোকেশন বের করতে বলে, সে কিছু সময়ের মাঝেই মুজাহিদকে সেই জায়গার লোকেশন বের করে দেয়। ড্রয়িড নামক জায়গাটা নাকি অনেক দূরে একটা ভয়ঙ্কর জঙ্গলের মাঝে। যার জন্যই কিনা সেই জায়গাটার নাম ম্যাপের মধ্যে নেই। আর সেখানে যেতে হলে নাকি হেলিকপ্টার প্রয়োজন। না হয়তো ভূমির রাস্তা দিয়ে গেলে জঙ্গলের আদিবাসী না হয়তো জঙ্গলে ভয়ানক জীবজন্তুর শিকার হতে হবে সবাইকে। মুজাহিদ সেই জায়গার তথ্য বের করে আকাশকে জানায়। আকাশ সেখানে যাওয়ার প্রস্তুতি স্বরূপ রাতের বেলাতেই অনেক কয়টা হেলিকপ্টার ঠিক করে। তারপর তারা সবাই মিলে আগামীকাল ভোর বেলায় সূর্য উদয় হওয়ার পর সেখানে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হবে বলে মন স্থির করে। সেই মোতাবেক সবাই রাতের বেলায় তাড়াতাড়ি করে ঘুমিয়ে পড়ে। আকাশ ও বাকি সবার মতন ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু মাঝ রাতে সে অনুভব করে তাকে কেউ জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। এবং সেই জড়িয়ে ধরা ব্যক্তিটা থেকে সে খুব উষ্ণতা পাচ্ছে। শুরুতে এই বিষয়টা তার ভালো লাগলেও পরবর্তীতে ঘুমের মধ্যে সে এই বিষয় টাকে নিয়ে কেমন যেনো একটা অন্য রকম ফিল করে। যার কারনে তার ঘুম একদম হালকা হয়ে যায়। ঘুম হালকা হতেই পরক্ষণে আকাশ চোখ মেলে বসে কে তাকে জড়িয়ে ধরেছে সেটা দেখার জন্য। তখনি সে দেখতে পায়, অবনী তাকে খুব শক্ত করে নিজের শরীরের সাথে লেপ্টে ধরে আছে…..

চলবে…..

#রহস্যময়ী_লেডি_কিলার
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_১০

“মাঝ রাতে আকাশ অনুভব করে তাকে কেউ জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। এবং সেই জড়িয়ে ধরা ব্যক্তিটা থেকে সে খুব উষ্ণতা পাচ্ছে। শুরুতে এই বিষয়টা তার ভালো লাগলেও পরবর্তীতে ঘুমের মধ্যে সে এই বিষয় টাকে নিয়ে কেমন যেনো একটা অন্য রকম ফিল করে। যার কারনে তার ঘুম একদম হালকা হয়ে যায়। ঘুম হালকা হতেই পরক্ষণে আকাশ চোখ মেলে বসে কে তাকে জড়িয়ে ধরেছে সেটা দেখার জন্য। তখনি সে দেখতে পায়, অবনী তাকে খুব শক্ত করে নিজের শরীরের সাথে লেপ্টে ধরে আছে। আকাশ অবনীকে এভাবে দেখতে পেয়ে ব্যাপক পরিমাণে ভয় পেয়ে যায়। যার কারনে সে চিৎকার করে উঠে। কিন্তু দুঃখজনক কাহিনী হলো আকাশ চিৎকার করার আগ মুহূর্তেই অবনী তার শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে আকাশের মুখ চেপে ধরে। যার কারনে আকাশের চিৎকারের শব্দ কেউ শুনবে তো দূরের কথা, সে নিজেই নিজের চিৎকারের শব্দ শুনতে পায় না। তার উপরে এখন তার নিশ্বাস নিতে ও কষ্ট হচ্ছে। “অপরদিকে অবনী আকাশের কষ্ট হচ্ছে দেখেও সে তাকে ছাড়ে না। বরং আরো শক্ত করে আকাশের মুখ চেপে ধরে। মনে হচ্ছে যেনো সে আকাশের নিশ্বাস আঁটকে দিয়ে তাকে মেরে ফেলতে চায়। আকাশ অবনীর এমন কর্মকান্ডে জবাই করে দেওয়া মুরগীর মতন ছটফট করছে। তবে সে হার মানে নি। তার যতো কষ্টই হোক না কেন, সে বরাবরের মতোই চেষ্টা করে যাচ্ছে অবনী থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য। আর এক সময় তার চেষ্টা সফল হয়। সে জোর খাটিয়ে নিজেকে অবনী থেকে ছাড়িয়ে নেয়। তারপর বড় বড় শ্বাস নিতে নিতে আগের চেয়ে আরো জোরে শব্দ করে চেঁচিয়ে উঠে। আর পরক্ষণেই সে লাফ দিয়ে শোয়া থেকে উঠে বসে পড়ে। কিন্তু সে এবার নিজের আশেপাশে কাউকেই দেখতে পাচ্ছে না। এমন সময় রাজ মুজাহিদ আরো অনেকেই দৌড়ে আকাশের রুমে আসে। তারপর তাকে জিজ্ঞাস করে,

–ভাই আপনার কি হয়েছে?
আপনি হটাৎ এমন অদ্ভুত ভাবে চেঁচিয়ে উঠলেন যে?

–না মানে আসলে রুমের মধ্যে কেউ একজন ছিলো। রাজ তুই একটু রুমটা ভালো করে সার্চ করতো।

–ভাই রুমে তো কেউ নাই। তার উপরে আপনার রুমে কে থাকবে? আপনার রুমে যে পরিমানে সিকিউরিটি প্রোটোকল করা আছে, তাতে করে কোনো মানুষ কেন জ্বিন,পরী ও তো আসতে ভয় পাবে।

–রাজের কথা শুনে আমার বুঝতে বাকি নেই, যে এতো সময় আমার সাথে যা যা ঘটেছে, সব কিছুই আমি স্বপ্নে দেখছি। কারন রাজ ঠিকই বলেছে। আমার রুমে অনেক আধুনিক টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে। এই রুমে হুটহাট করে যে কেউ প্রবেশ করা অসম্ভব। তাই কিছুক্ষণ চিন্তাধান্তা করে রাজকে বললাম, এই রাজ তোরা চলে যা। আমি হয়তো ঘুমের ঘোরে কোনো দুঃস্বপ্ন দেখেছি।

–হুম ভাই এমনটাই হবে।

–আচ্ছা এবার তোরা চলে যা। আর গিয়ে ঘুমিয়ে পড়। খামোখা রাত জেগে শরীর খারাপ করিস না।

–ঠিক আছে ভাই আমরা গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ছি।

–তারপর সবাই চলে গেলো।
আর আমি আবারে শুয়ে পড়লাম। কিন্তু এখন আর ঘুম আসছে না। অবনীকে নিয়ে এমন স্বপ্ন দেখে আমি পুরো হযবরল হয়ে গেছি। মাথাও জ্যাম খেয়ে আছে। নাহ মেয়েটাকে একবার একটু ফোন করে দেখি। তাহলে হয়তো মাথার জ্যাম ছুটবে। চিন্তা-ভাবনা অনুযায়ী অবনীকে ফোন লাগালাম। দু’বার রিং পড়তেই সে ফোন রিসিভ করেছে। সে ফোন রিসিভ করতেই আমি তাকে জিজ্ঞাস করলাম, এই তুমি ঠিক আছো তো?

–ওমাহ আপনার কি হয়েছে আবার মহাশয়?
আপনি এই রাতের বেলায় আমায় ফোন করে এসব কেন জানতে চাইছেন? আর কি হবে আমার?

–নাহ আসলে তোমাকে নিয়ে একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছি। তাই ফোন করলাম আরকি।

–ইশ কি সাংঘাতিক ব্যাপার স্যাপার মাগো!

–এই তুমি কি আমার সাথে মজা নিচ্ছো?

–এই না না, আসলে আমি না খুব সারপ্রাইজড। তাই ওভাবে রিয়েক্ট করেছি। আপনি প্লিজ ভুল ভাববেন না আমায়।

–হুম। আচ্ছা তুমি ঠিক আছো কিনা বললে না তো?

–মহাশয় এতো রাতে প্রিয় মানুষটা যখন ফোন করে খবর নেয়। তাও আবার দুঃস্বপ্ন দেখে। তাহলে আপনিই বলুন ভালো না থাকি কি করে?

–যাক ভালো লাগলো কথাটা শুনে।

–আমারো অনেক ভালো লেগেছে। যার কোনো সীমা নাই। আমার ইচ্ছে করছে বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে উড়াধুরা নাচানাচি করি। কারন আমার কল্পনাতেও ছিলো না, যে আপনি কিনা এতো রাতে ফোন করে আমার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইবেন। প্রিয় অনেক ভালোবাসি আপনাকে। তার উপরে আপনার এমন কর্মকান্ডে আপনার জন্য ভালোবাসা আরো বেড়ে গেছে।

–এই অবনী হয়েছে এবার থামো। আর বলো এতো রাতে না ঘুমিয়ে কি করছিলে?

–আসলে রুমমেট আপুদের সাথে আড্ডা দিয়ে এই তো কিছুক্ষণ আগেই বিছানায় এসে শুলাম। আর তার পরেই আপনি ফোন দিয়েছেন।

–হুম এবার গিয়ে সোজা ঘুমিয়ে পড়ো।

–আচ্ছা ঘুমিয়ে পড়ছি। আর শোনেন একটা কথা…

–কি কথা?

–অনেক ভালোবাসি প্রিয়। আমার এখন ইচ্ছে করছে আপনাকে পাপ্পি দিয়ে আপনার ঠোঁটের অবস্থা বারোটা বাজিয়ে দিতে। কিন্তু সেটা এখন সম্ভব না। তাই আগামীকাল আপনি কলেজে আসলেই সেই কাজটা সেরে নিব।

–এই মেয়ে পাগলামি বন্ধ করে এবার ঘুমিয়ে পড়ো। আর আগামীকাল আমি কলেজে আসবো না। কারন অনেক জরুরী একটা কাজ আছে আমার।
.
আগামীকাল আকাশের কাজ আছে। এই কথা শুনে অবনীর মুখটা কেমন যেনো মলিন হয়ে যায়। কিন্তু সে সেটা নিয়ে বেশি একটা রিয়েক্ট না করে শান্ত ভাবে আকাশকে বলে,

–আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমিয়ে পড়লাম। আর সম্ভব হলে আগামীকাল আপনি কাজ সেরে একটু কলেজে আসবেন। তবে জোর নেই। সম্ভব হলে আসবেন আরকি। কারন আপনাকে না দেখলে আমার ভালো লাগে না।

–আচ্ছা ট্রাই করবো। এবার রাখলাম ফোন।

–হুম ঠিক আছে। আর আপনিও ঘুমিয়ে পড়ুন।

–আচ্ছা।
অবনীর সাথে কথা শেষ করে ফোন রেখে দিলাম।
এখন শান্তি লাগছে নিজের ভিতরে। তার উপরে মাথার জ্যাম ও সরে গেছে। কারন মেয়েটা ঠিকঠাক আছে। অবনীকে নিয়ে স্বাভাবিক রকমের চিন্তা-ভাবনা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
“সকাল বেলা সূর্য উদয় হতেই ঘুম থেকে উঠে প্রিপারেশন নিয়ে নিয়েছি ড্রয়িডে যাওয়ার জন্য।
আমার সাথে সাথে সবাই প্রিপারেশন নিয়ে নিয়েছে। সবাই সকাল বেলা নাস্তা-পানি করে হেলিকপ্টারে করে ড্রয়িডের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছি। মোট সাতটা হেলিকপ্টার মোতায়ন করেছি ড্রয়িডে যাওয়ার জন্য। ড্রয়িডের জঙ্গলে পৌঁছানোর পর দেখছি পাইলট ড্রয়িডের জঙ্গলের উপরে হেলিকপ্টারের নিয়ে গোল গোল চক্কর কাটছে। যেটা দেখে তাকে জিজ্ঞাস করলাম, পাইলট কি হয়েছে? আপনি এভাবে চক্কর কাটছেন কেন জঙ্গলের উপরে?

–ভাই আসেপাশে কোনো জায়গা দেখছি না ল্যান্ড করানোর মতন। তাই ল্যান্ড করার জন্য জায়গার তালাশ করছিলাম। ভাই সামনে ছোটখাটো একটা ফাঁকা জায়গা দেখা যাচ্ছে। আমার মনে হয় সেখানেই হেলিকপ্টার ল্যান্ড করা যেতে পারে। তবে সবাই একত্রে না। একজন একজন করে করে ল্যান্ড করতে হবে।

–ঠিক আছে আপনার সুবিধা মতন নামিয়ে দিন।

–আচ্ছা ভাই।
.
পাইলট সবাইকে ইশারা করে একেক করে ল্যান্ড করতে বললো। আকাশের হেলিকপ্টারের পাইলটের কথা মতন সবাই একেক করে সেই ফাঁকা জায়গায় ল্যান্ড করে সবাইকে নামিয়ে দিয়েছে। আকাশ ও নিচে নেমেছে। নিচে নেমে আকাশ সবাইকে বলে,

–এই তোরা সবাই অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সামনে দিকে আগাতে শুরু কর। তবে সবাই কিন্তু সাবধান। কারন এই জঙ্গলের অবস্থা অনেক ভয়াবহ। যে কোনো সময় যে কোনো কিছু ঘটতে পারে।
.
আকাশের কথা মতন সবাই অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সামনের দিকে আগাতে শুরু করেছে। আকাশ ও তাঁদের সাথে সাথে সামনে আগাচ্ছে। তারা এগোতে এগোতে একদম ঘন জঙ্গলের ভিতরে ঢুকে পড়ে। যেখান থেকে কিনা সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছে না। ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে আছে সব কিছু। অথচ তাঁদের মাথার উপরেই কিন্তু সূর্য। কিন্তু জঙ্গলের এতো কঠিন ঘনত্ব, যে সূর্যের আলো তো দূরের কথা, তাঁদের পথ চলতেই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারা যতো সামনে এগোচ্ছে, ততোই তাঁদের পথ আঁধার হয়ে আসছে। মনে হচ্ছে যেনো তারা জমিন ছেড়ে কোনো এক পাতাল দেশে পথযাত্রা করছে। যেখানে নাই কোনো আলো, তাই কোনো বসতি। এ যেনো এক ভিন্ন দুনিয়া। জঙ্গলের এমন ভয়াবহ রূপ দেখে আকাশের ছেলেপেলের মনে খুটখুট করতে শুরু করে। কিন্তু কেউ সাহস করে আকাশকে কিছু বলে উঠতে পারে না। তবে আকাশ সবার মতিগতি দেখে বুঝে নেয়, যে তারা জঙ্গলের ঘনত্ব দেখে ভয় পাচ্ছে। তাই সে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে,

–এই তোরা নির্ভয়ে সামনে আগা। কারন উপর ওয়ালা যেখানে মৃত্যু লিখে রেখেছে, সেখানেই তার মৃত্যু হবে। তাই খামোখা এসব জিনিস নিয়ে ভয় পেয়ে লাভ নাই। আর তাছাড়া তোরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কতো গোলাবারুদের লড়াই করেছিস। সেই তোরাই কিনা এখন এসে জঙ্গলের ঘনত্ব দেখে ভয় পাচ্ছিস। এটা তো মেনে নিতে পারছি না আমি।
.
আকাশের কথা শুনে রাজ বলে উঠে,

–এই তোদের ভয় পাওয়ায় কিছুই নেই। ভাই আমাদের সাথে আছে মানে আমাদের কোনো টেনশন নেই। আর তাছাড়া আমরা যাঁদের তালাশে বেরিয়েছি, তাঁদের মোকাবিলা কিন্তু আমি এবং কয়েকজন আগ থেকেই করে এসেছি। তাঁদের অনেক ক্ষমতা। কিন্তু আমাদের ও কম ক্ষমতার নেই। দানবের মতন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পথযাত্রা শুরু করেছি। দেখবো না কে আমাদের সামনে এসে পথ আঁটকায়। একদম কলিজা কানা করে দিব সব কয়টার। তোরা সবাই নির্ভয়ে আগাতে শুরু কর।
.
রাজ আর আকাশের কথা মতন সবাই সামনে অগ্রসর হতে থাকে। এভাবে ঘন্টা কয়েক সফর করার পর তারা জঙ্গলের অন্ধকার ঘনত্ব পেরিয়ে খোলা জায়গায় চলে আসে। তারপর তারা সবাই মিলে এক জায়গায় কিছুক্ষণ বসে বিশ্রাম করে আবার সামনে এগোতে শুরু করে। এবার আকাশ সবাইকে তার পিছনে রেখে সে সবার সামনে থেকে যাত্রা শুরু করেছে। এভাবে আরো কিছুক্ষণ যাওয়ার পর আবার একটা জঙ্গল চলে আসে তাঁদের সামনে। তারা চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই জঙ্গলের ভিতরে প্রবেশ করে। দেখতে দেখতে সেই জঙ্গলটা অতিক্রম করে পুনরায় একটা ফাঁকা জায়গায় এসে হাজির হয় সবাই। আর তখনি তাঁদের নজর পড়ে কিছুটা দূরে ফাঁকা জায়গায় বিশাল বড় একটা বাড়ি দেখা যাচ্ছে। যেটা দেখে আকাশ সবাইকে বলে,

–সবাই নিজের প্রস্তুতি নিয়ে সামনে আগা। কারন এই স্থান টার নামই হয়তো ড্রয়িড। কারন সামনে বিশাল বড় একটা পাকা দালান বাড়ি দেখা যাচ্ছে।
.
আকাশের কথা মতন সবাই অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একদম পরিপূর্ণ প্রস্তুত হয়ে সামনে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু তারা আর কিছুটা পথ এগোনোর পরেই সামনে গিয়ে থেমে যায়। কারন অদৃশ্য কিছু একটা তাঁদের পথ আঁটকে দিয়েছে। সবাই সামনে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। কিন্তু অদৃশ্য একটা দেয়াল তাঁদেরকে সামনে অগ্রসর হতে দিচ্ছে না। তবে তারা সেই দেওয়াল টাকে নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছে না। কিন্তু যখনি তারা সামনে অগ্রসর হতে চাচ্ছে, তখনি তারা গিয়ে সেই অদৃশ্য দেওয়ালের সাথে বাড়ি খাচ্ছে। যেটা দেখে আকাশ বুঝে নেয়, যে এটা হয়তো সেই বাড়ির কোনো অদৃশ্য সীমানা। তাই সে সবাইকে বলে,

–এই তোরা সবাই আন্ধাধুন গুলি করতে আরম্ভ কর। যাতে করে অদৃশ্য দেয়াল টা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়।
.
আকাশের কথা মতন সবাই তাই করতে আরম্ভ করে। সবাই আন্ধাধুন গুলি করতে আরম্ভ করে। কিন্তু কেউ সেই অদৃশ্য দেওয়ালের কিছুই করতে পারে না। বরং তাঁদের গুলির বুলেট গুলা অদৃশ্য দেয়ালটা গিলে খেয়ে নিচ্ছে। তারা ফায়ার করছে ঠিক, কিন্তু তাঁদের গুলির বুলেট গুলা দেয়ালের সাথে গিয়ে লাগতেই হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। মানে হলো সেই দেয়ালটা তাঁদের গুলির বুলেট গুলোকে নিজের ভিতরে গিলে নিচ্ছে৷ যেটা দেখে আকাশ বেশ চিন্তায় পড়ে যায়। তাই সে সবাইকে গুলি করা বন্ধ করতে বলে কিছু একটা ভাবতে থাকে দেওয়ালের একদম সামনে গিয়ে। মানে সে হয়তো ভিতরে যাওয়ার কোনো রাস্তা তালাশ করছে।
আকাশ অনেকক্ষণ যাবৎ দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কিছু একটা নিয়ে চিন্তা করে দেয়ালের উপরে হাত রাখে। আকাশ দেওয়ালের উপরে হাত রাখতেই সেই দেয়াল টা আকাশকে টেনে ভিতরের দিকে ঢুকিয়ে ফেলে। যেটা দেখে সবাই দেয়ালের দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু সেই অদৃশ্য দেয়ালটা আগের ন্যায় সবার পথ আঁটকে দেয়। যেটা দেখে সবাই ঘাবড়ে যায়! “অপরদিকে আকাশ অদৃশ্য দেয়ালের এই প্রান্তে এসে পাকা দালান বাড়িটার দিকে নজর ফিরায়। তখনি সে দেখতে পায় সেই পাকা দালান বাড়িটার সামনে পাঁচ থেকে ছয়জন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন ভাবে নিজেদের শক্তির ব্যবহার করছে। একটা মেয়ে বরফ দ্বারা নিজের সারা শরীর বেষ্টন করে রেখেছে। মানে হলো বরফ দ্বারা রক্ষাকবচ বানিয়ে রেখেছে নিজের শরীরে। আর দু’জন সেই বরফ দ্বারা তৈরী রক্ষাকবচ টাকে ভাঙ্গার চেষ্টা করছে। হাওয়ায় উড়ে একজন সেই মেয়েটার শরীরে আগুন নিক্ষেপ করে বরফ গলাতে চাইছে। অপরদিকে আরেকজন নিচ থেকে হাতের সাহায্যে
সেই মেয়েটার শরীরে ইলেকট্রক্যাল শর্ট দিচ্ছে। যাতে করে সেই মেয়েটার শরীর থেকে বরফের শিল্ড বা রক্ষাকবচ টা ভেঙ্গে যায়। দূর থেকে আকাশ এসব দৃশ্য দেখে তার চোখ কপালে উঠে যায়!

চলবে….

গল্পের ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।