এক বরষায় পর্ব-২৭+২৮

0
511

#এক_বরষায় [২৭]
#জেরিন_আক্তার_নিপা

____________
ধারার জীবন যে কোন দিকে বয়ে যাচ্ছে তা সে নিজেও বুঝতে পারছে না। তবে জীবনের থেকে বিশেষ কোন চাওয়া পাওয়া নেই বলেই হয়তো তার কোন আফসোস নেই। স্রোতের মাঝে নিজেকে ভাসিয়ে দিয়েছে সে। স্রোত তাকে যেদিকে নিয়ে যেতে পারে। ধারার দাদী এই প্রথম ধারার বিয়ে নিয়ে ছেলের সাথে কথা বলছেন। ধারার বাবা মাথা নেড়ে হু হা করে শুনে যাচ্ছেন।

-ও শফু, ছেলেটা তো ভালো। এই যুগে এমন ভদ্র পোলা আমি আর দেখি নাই৷ তুই ওর বাপেরে খবর দে। ওর বাপের লগে কথা ক। আমার মন কয় পোলাডা ধারার জন্যই আইছে।”

-হু।”

-হু কী? তোর কি পোলাডারে পছন্দ না?”

-পছন্দ অপছন্দের কথা না মা। কতগুলা বছর পার হইয়া গেল। এইসব কথা কি এখনও কেউ মনে রাখছে?”

-কেন রাখব না। তোর বাপ আর নজরুলের বাপ কথা দিছিল ওদের নাতি নাতনির বিয়া দিব।”

-মানুষ তো কত কথাই দেয় মা। সেই সব কথা কয়জন রাখে? তখন আমাদের অবস্থা অন্যরকম ছিল। এখন পরিস্থিতি বদলাইছে। নজরুল যদি আমারে ফিরাইয়া দেয়।”

-কেন ফিরাইয়া দিব বাপ? নজরুল তো জাইনা শুইনাই ওর পোলারে আমাগো কাছে পাঠাছে। ও যদি সব ভুইলা যাইত তাইলে কি মুনতাসীররে আমাগো কাছে পাঠাইতো? তুই নজরুলরে খবর দে বাজান।”

-দেখি কী করা যায়।”

-দেখি না। আমি বাইচা থাকতে ওই পোলার লগে আমার ধারার বিয়াটা দেইখা যাইতে চাই।”

-হু।”

শরিফুল ইসলাম ভাবলেন বাবা হিসেবে মেয়েদের জন্য তিনি তেমন কিছুই করতে পারেননি। বাবা হিসেবে তাকে ব্যর্থই বলা যায়। কিন্তু নিজের বড় মেয়ের কথা ভেবে তিনি পুরোনো বন্ধুর মুখোমুখি হবেন। নজরুলকে বুঝিয়ে বলবে, অনেকগুলো বছর আগে যা হয়েছে তাতে তো তার মেয়েদের কোন দোষ নেই। তাহলে মায়ের পাপের শাস্তি কেন তার মেয়েরা ভোগ করবে? কাল পরশুই তিনি বন্ধুকে আসার জন্য খবর পাঠাবেন। দরকার পড়লে নিজেই উনার কাছে যাবেন।
*******

জেসমিনের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তাকে আজ একটু আগে আগেই কলেজে যেতে হবে। তাই জেসমিন মুনতাসীর ভাই আর আপুকে রেখে আতিফের সাথে চলে গেছে। আতিফ কাল সন্ধ্যায় ফিরেছে। ও মা এখন আগের থেকে সুস্থ।

জমিজমা নিয়ে কিছু ঝামেলা হয়েছে। নয়ন এ কয়দিন এসব নিয়েই ছুটাছুটি করেছে। ধারাকে দেখার সময়টুকু পায়নি। তাই আজ সকাল সকালই ধারাদের বাড়ির দোকানের সামনে চলে এসেছে। সকাল থেকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে। ওইতো ধারা ছাতা হাতে বের হচ্ছে। তিন/চারটা দিন পর ধারাকে দেখে নয়নের তৃষ্ণা মিটলো যেন। মুনতাসীরও ছাতা হাতে ধারার পেছনেই বেরিয়েছে। এই কয়দিন নয়নকে ধারার আশেপাশে দেখা যায়নি। কিন্তু আজ আবার দেখা যাচ্ছে। মুনতাসীর দ্রুত হেঁটে ধারার কাছাকাছি চলে এলো। ধারা ওকে পাশাপাশি হাঁটতে দেখে পায়ের গতি আরও বাড়িয়ে দিল। মুনতাসীর চাপা গলায় বলল,

-নয়নের সাথে হেসে কথা বললে কিন্তু তোর খবর আছে। ছাগলটাকে পিছু ছাড়াতে পারিস না। সারাক্ষণ তোর আশেপাশে ঘুরঘুর করে।”

ধারা নাক ফুলিয়ে মুনতাসীরের দিকে তাকাল। নয়নকে সে ভালো না বাসলেও সম্মান করে। মুনতাসীর নয়নকে ছাগল বলছে শুনে ধারার রাগ হলো। নিজে তো খুব দাদীকে বলছিল, বিয়ের জন্য মনের মতো মেয়ে পাই না। তাহলে তার পেছনে নয়ন ভাই ঘুরুক বা রোহানের মামা তাতে উনার কী আসে যায়। ধারার উপর তার এই অধিকার খাটানো একদম সহ্য হয়না ধারার। কোন সম্পর্কের ভিত্তিতে তিনি ধারার উপর অধিকার খাটাতে চান? ধারা কেন লোকটার কথা শুনবে?
নয়ন বৃষ্টি মাথায় নিয়েই ধারার দিকে এগিয়ে আসছে। সে যে ভিজে যাচ্ছে সেদিকে কোন খেয়াল নেই। ধারা নয়নকে দেখেই বলল,

-ভিজে যাচ্ছেন তো নয়ন ভাই।”

নয়ন হাসল। মাথার উপর হাত রেখে বৃষ্টি থেকে বাঁচতে চাইল কিনা কে জানে। বলল,

-সামান্য ভিজলে কিছু হবে না।”

-অনেকদিন দেখি না আপনাকে। এতদিন কোথায় ছিলেন নয়ন ভাই?”

ধারার এই আদিখ্যেতা দেখে মুনতাসীরের গায়ে আগুন জ্বলে যাচ্ছে। সে নিষেধ করেছে বলেই কি ধারা নিজে থেকে নয়নের সাথে কথা বললো? নয়ন একবার মুনতাসীরকে দেখল। ধারার সাথে ওকে দেখে যে নয়ন খুশি হয়নি এটা তার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তবুও হাসবার চেষ্টা করে বলল,

-জমিজমার কাগজপত্র নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তুইও তো আমাদের দিকে যাসনি।”

-আসলে সময় হয়ে উঠে না তো।”

-কাল যাস। রোজী আপা আসবে। এখন কি ভার্সিটিতে যাবি?”

-হুম। কিন্তু বৃষ্টি হচ্ছে রিকশা পাব বলে মনে হয় না।”

-তুই দাঁড়া। আমি ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।”

একটা রিকশা এলেও আজ আর মুনতাসীর ধারার সাথে উঠতে পারলো না। কারণ নয়ন এখনও এখানেই আছে। নয়নের সামনে বাড়াবাড়ি করলে ধারা চটে যাবে। এই ঘাড়ত্যাড়া মেয়েকে চটানো মঙ্গলকর হবে না ভেবে মুনতাসীর আর কিছু করলো না।
নয়ন এতক্ষণ যেন মুনতাসীরকে দেখেইনি। ধারা রিকশায় উঠে পড়লে এবার বলল,

-ওহ প্রফেসর সাহেব আপনিও তো কলেজে যাবেন। আরেকটা রিকশা লাগবে।”

নয়ন আশেপাশে দেখছে আর কোন রিকশা আছে কি-না। মুনতাসীর বিনয়ী হেসে ওকে বলল,

-আপনি ব্যস্ত হবেন না। আমি ব্যবস্থা করে নেব।”

ওরা কথা বলতে বলতে ধারার রিকশা কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিল। তখনই একটা বাইক ফুল স্পিডে ওদের সামনে দিয়ে চলে গেল। সাথে সাথেই সামনে থেকে ভীষণ জোরে একটা শব্দ ভেসে এলো। ওরা তাকিয়ে দেখল ধারার রিকশাটা উল্টে গেছে। ওই রিকশায় ধারা ছিল! নয়ন মুনতাসীর দু’জনই রিকশার দিকে ছুটে গেল। নয়ন চিৎকার করে তার সাঙ্গপাঙ্গদের ডাকছে।

-ওই রাসেল, ওই পারভেজ। বাজারের দিকে গিয়ে ওই শালাকে ধর। বাইক নিয়ে ও যেন পালাতে না পারে।”

মুনতাসীর হাত থেকে ছাতা ফেলে ছুটে গিয়ে একাই রিকশাটা তুলতে চাচ্ছে। কিন্তু তার একার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। নয়নও এসে ওর সাথে হাত লাগালো। রিকশার ভেতর থেকে একজনকেই বের করে আনা গেল। সে ধারা না। এই রিকশার চালক। ধারাকে রিকশার মধ্যে পাওয়া গেল না। মুনতাসীর পাগলের মতো ধারাকে খুঁজছে। নয়নের অবস্থাও মুনতাসীরের থেকে ভালো না। নয়ন চিৎকার করে ধারাকে ডাকছে।

-ধারা! ওই ধারা, কই তুই? ধারা…

নয়ন ভাই মুনতাসীর কথা বলছে দেখে ধারা ওদেরকে রেখে রিকশা চালককে এগিয়ে যেতে বলছিল। রিকশায় বসে পেছন ফিরে ওদের দেখে হাসি পাচ্ছিল ধারার। সামনে ফিরতেই দেখল একটা বাইক গতি হারিয়ে ফেলে কেমনে এঁকেবেঁকে এগিয়ে আসছে। ওদের রিকশা রাস্তার কিনারা দিয়েই যাচ্ছিল তবুও সামনে থেকে আসা বাইকটা ওদের রিকশাটাকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেল। মুহূর্তের মাঝে কী ঘটে গেল ধারা ঠিক বুঝতে পারেনি। সে ছিটকে গিয়ে দূরে কোথাও পড়ে জ্ঞান হারালো।
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। মুনতাসীর পুরোপুরি ভিজে গেছে। সে দিশেহারা হয়ে ধারাকে খুঁজছে। রাস্তার পাশে নিচু জায়গায় ধারাকে দেখতে পেল। ঘাসের মাঝে উপুড় হয়ে পড়ে আছে ধারা। সে ছুটে গিয়ে ধারাকে ধরে সোজা করলো। ধারার মাথা কোলের উপর নিয়ে ধারার মুখের উপর ঝুঁকে পড়ে ডাকতে লাগল

-ধারা! এই ধারা! ধারা কথা বল। ধারা!”

নয়নও ধারার কাছে আসতে চাচ্ছিল। কিন্তু রিকশা চালক লোকটা গুরুতর জখম হয়েছে। লোকটার একটা পা ভেঙেই গেছে হয়তো। মাথা ফেটে রক্ত পড়ছে। পিচঢালা রাস্তার উপর বৃষ্টির পানির সাথে লাল রক্ত মিশে যাচ্ছে। নয়ন ধারার কাছে না গিয়ে আগে লোকটাকে ধরল। জ্ঞান হারায়নি লোকটা। কিন্তু ব্যথায় চেহারা নীল হয়ে গেছে। দাঁতে দাঁত চেপে ব্যথা সহ্য করে লোকটা তার কাছে সাহায্য চাচ্ছে।

-ভাই আমারে বাঁচান। আমার ঘরে বউ আছে। বউটার আট মাস চলতাছে। আমার কিছু হইলে ওরে দেখার মতো কেউ থাকবো না। আমারে বাঁচান ভাই। আমি আমার সন্তানরে কোলে নিতে চাই। আমারে হাসপাতালে নিয়া যান ভাই।”

নয়ন এমনিতে সাহসী হলেও এই মুহূর্তে তার হাত পা কাঁপছে। মস্তিষ্ক ফাঁকা হয়ে গেছে। লোকটা এত কষ্টের মাঝেও নিজের বউ বাচ্চার কথা ভুলেনি। অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে শুনে অনেকেই এদিকে ছুটে এসেছে। অল্প সময়ে বেশ অনেকজন মানুষ জড়ো হয়ে গেছে। কিন্তু কেউই ওদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসছে না। সবাই দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে যেন। নয়ন মানুষ গুলোর উদ্দেশ্যে চেঁচিয়ে গালি দিতে লাগল,

-জানোয়ারের বাচ্চারা খাড়ায়া খাড়ায়া শুটিং দেখতাছোস! লোকটাকে হাসপাতালে নিতে সাহায্য কর। নইলে তোদের সব কয়টারে কাইটা কুচিকুচি করমু।”

নয়নকে এই পাড়ার সবাই চিনে। এতক্ষণ সবার মাঝে গা ভাসানো ভাব থাকলেও এবার অনেকেই সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলো। কিন্তু ঝুম বৃষ্টিতে কোন গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। ধারার জ্ঞান ফিরছে না। মুনতাসীর আগেপিছে কিছু না ভেবে অনায়াসে ধারাকে দু’হাতে পাঁজা কোলা করে তুলে নিল। নয়নের কাছে এসে বলতে লাগল,

-ধারা তেমন কোন আঘাত পায়নি। কিন্তু জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। তুমি লোকটাকে হাসপাতালে নিয়ে যাও। আমি ওকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।”

নয়নের মাথায় এই সময় অন্য কোন চিন্তা আসলো না। সে উপরে নিচে সজোরে মাথা নাড়ালো। লোকটা এখনও যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। নয়ন আরও লোকজন নিয়ে ধরাধরি করে লোকটাকে অন্য একটা গাড়িতে তুলে হাসপাতালের দিকে ছুটতে লাগলো। এই ঘটনার মাঝেও মানুষ গুলো কীরকম চোখ বড় বড় করে মুনতাসীরকে দেখছে। মুনতাসীর কারোর বাঁকা দৃষ্টির তোয়াক্কা করল না। ধারার মাথা তার বুকের সাথে মিশে আছে। ভিড় ঠেলে ধারাকে নিয়ে বেরিয়ে এলো মুনতাসীর। গেট দিয়ে ঢোকার সময় বারান্দা থেকে দাদী ওদের দেখতে পেল। ধারাকে ওই অবস্থায় দেখে দাদী ভয় পেয়ে গেলেন। লাঠি ছাড়া তিনি হাঁটতে পারেন না। তবুও বৃষ্টির মধ্যে ছুটে নাতনির কাছে চলে এলেন।

-আমার ধারার কী হইছে? ও ভাই, আমার নাতনির কী হইছে? ও কথা কইতাছে না কেন?”

মুনতাসীর দাদীকে শান্ত করতে বলল,

-দাদী ছোট্ট একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। তবে ধারার কিছু হয়নি। আপনি ভয় পাবেন না।”

মুনতাসীর তাড়াহুড়োয় ধারাকে দাদীর ঘরে না নিয়ে গিয়ে নিজের ঘরে নিয়ে চলে এলো। এই ঘর অবশ্য ধারারই। সে দখল করে আছে। ঘরে এনে ধারাকে বিছানায় শুইয়ে দিল। তারা দু’জনই চুপচুপে ভিজে আছে। ধারার ভেজা কাপড় থেকে পানি পড়ে বিছানা ভিজে যাচ্ছে। মুনতাসীরের গা থেকে টুপটুপ করে পানি পড়ে মেঝে ভিজে যাচ্ছে। দাদীও ওদের পেছনে এই ঘরে এসেছে। ধারার পাশে বসে ওর মাথায়, মুখে হাত বোলাতে বোলাতে বলছেন,

-ওর কিছু হয় নাই তাইলে উঠতাছে না কেন?”

-ভয় পেয়ে হয়তো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। আপনি চিন্তিত হবে না দাদী।”

-ও ভাই আমার নাতনিডার যেন কিছু না হয়৷ মা হারা মাইয়া ওরে আমি অনেক কষ্ট কইরা, যতন কইরা বড় করছি। আমার ধারাটার জীবনে এমনিতেই দুঃখের অভাব নাই। ওর যেন কিছু না হয়।”

মুনতাসীর পানি এনে ধারার চোখে মুখে ছিটা দিচ্ছে। ধারার মুখের দিকে তাকিয়ে তার বুকের ভেতর রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে। ধারার কিছু হলে সে নিজেও যে ঠিক থাকতে পারবে না। এই মেয়েটা তার কী হয় এই কথা সে কাউকে বোঝাতে পারবে না।
ধারার জ্ঞান ফিরছে। চোখে মুখে পানির ছিটা পেয়ে চোখ পিটপিট করছে। মুনতাসীর ধারার উপর ঝুঁকে পড়ে ডাকছে,

-ধারা, ধারা।”

চোখের পাতা সামান্য ফাঁক করে সামনে যে মুখটা দেখতে পেল ধারার মনে হলো এই মুখটা তার ভীষণ চেনা। উদ্বিগ্ন চেনা একটা কন্ঠ স্বর কানে আসতে বুঝতে পারল, সে তাহলে মারা যায়নি। এখনও বেঁচে আছে। তার শ্বাস চলছে। ধারাকে চোখ মেলে তাকাতে দেখে মুনতাসীর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। ধারা চোখ খুলে দাদীকেও দেখতে পেল। দাদী কি কাঁদছে। ধারা উঠে বসার চেষ্টা করেও পারল না। মাথায় প্রচণ্ড যন্ত্রণা হচ্ছে। ধারাকে মুখ কুঁচকে ফেলতে দেখে মুনতাসীর বুঝতে পারল ওর কষ্ট হচ্ছে। তাই সে বাধা দিয়ে বলল,

-উঠতে হবে না। কোথায় লেগেছে? মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছে? শরীরের আর কোথায় ব্যথা হচ্ছে? পায়ে?” মুনতাসীর ধারার পা ধরলে ধারা বারণ করতে চাচ্ছিল। কিন্তু সে শক্তিটুকুও সে পেল না। মুনতাসীর তার অস্থিরতাকে চেপে রাখার যথেষ্ট চেষ্টা করছে।

-কোন পায়ে লেগেছে? ডান পায়ে? নাকি বাঁ পায়ে?”

ধারা বিস্মিত হয়ে মানুষটাকে দেখছে। তার জন্য মানুষটা এতটা অস্থির হচ্ছে! কেন? তার কিছু হলে মানুষটার কী আসে যায়?
মুনতাসীর ধারার দৃষ্টির অর্থ বুঝতে পেরে উঠে দাঁড়াল। দাদীকে বলল,

-দাদী ওর কাপড় পাল্টে দিন। ভিজে কাপড়ে থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে।”

কথাটা বলেই মুনতাসীর ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। ধারা একই ভাবে ওর যাওয়ার দিকে চেয়ে রইল।

চলবে_

#এক_বরষায় [২৮]
#জেরিন_আক্তার_নিপা

__________________
নয়ন লোকটাকে হাসপাতালে ভর্তি করে উনার চিকিৎসার যাবতীয় খবর নিজে বহন করলো। লোকটার ডান পা ভেঙে গেছে। শরীরের নানা জায়গায় যে চোট গুলো এসেছে সেগুলো তেমন গুরুতর না। রাসেল, পারভেজ বাইক চালককে ধরতে পারেনি। ধারার কথা মনে পড়লে নয়ন ওদের হাসপাতালে রেখে চলে এলো।

-তোরা এখানে থাক। কোনো কিছুর দরকার পড়লে আমাকে জানাবি।”

-আপনি কই যান ভাই?”

-ধারার কাছে।”

ধারা রিকশা থেকে ছিটকে পড়েছিল। তার সারা শরীরে তেমন ব্যথা না পেলেও হাঁটুতে ভালোই ব্যথা পেয়েছে। তবে ভাগ্য ভালো তার পা ভাঙেনি। বাঁ পায়ের পাতা ফোলে উঁচু হয়ে গেছে। বেকায়দায় পড়ে মচকে গেছে হয়তো। তখন ব্যথা তেমন অনুভব না হলেও এখন সময় যাচ্ছে আর যন্ত্রণা বাড়ছে। ধারা নিজে উঠে দাঁড়াবে তো দূর কেউ পায়ে হাত দিলেই চিৎকার করে উঠছে। কাউকে ছুঁতেই দিচ্ছে না। মুনতাসীর ধারাকে কষ্ট পেতে দেখতে পারছে না। সে দাদীকে ধারার কাছে বসিয়ে বাড়িতে ডাক্তার আনতে চলে গেল। মুনতাসীর গেট দিয়ে বেরুবার সময় নয়ন এলো। এই মুহূর্তে তাদের মধ্যে কোনোরকম শত্রুতাই রইলো না। নয়নকে বিধ্বস্ত দেখাচ্ছে। মুনতাসীরকে দেখে নয়ন জিজ্ঞেস করল,

-ধারা কেমন আছে?”

-পায়ে ব্যথা পেয়েছে। তখন বোঝা যায়নি৷ এখন পা ফোলছে সাথে ব্যথাও বাড়ছে।”

নয়ন ব্যস হয়ে বলল,

-আমি তাহলে ডাক্তার নিয়ে আসি।”

মুনতাসীর ওকে আটকালো। বলল,

-আমি যাচ্ছি। ধারা ঘরে তুমি ওর কাছে যাও।”

নয়ন এতদিন মনে মনে মুনতাসীরকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতো। এক পুরুষের দৃষ্টি আরেক পুরুষ খুব সহজেই বুঝতে পারে। মুনতাসীরের চোখেও ধারার জন্য কিছু একটা লক্ষ করেছে নয়ন। সেজন্যই ধারার আশেপাশে মুনতাসীরকে দেখতে পারতো না।
মুনতাসীর নিজেও তো ধারার আশেপাশে নয়নকে সহ্য করতে পারেনি। কিন্তু আজ তাদের মধ্যকার অপ্রকাশিত শত্রুতা বা রেষারেষির সমাপ্তি ঘটলো। ওরা দু’জনই ধারাকে ভালোবাসে। দু’জনই ধারাকে নিয়ে ভাবে। ধারার খারাপ কেউই চায় না। ধারা যতদিন না তাদের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেয় ততদিন ধারার উপর তাদের সমান অধিকার আছে। মুনতাসীর নয়নের পথে বাধা হতে চাইলো না। সে নিজের মতো ধারাকে পেতে চাইবে। নয়নও তার মতো চেষ্টা করুক।
ধারা ব্যথায় চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকতে পারছে না। আবার চিৎকারও করতে পারছে না। এত অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে ধারা ছটফট করছে। নয়ন ঘরে ঢোকার আগে অনুমতি নিল। ধারা নয়নকে দেখেও কিছু বলতে পারল না। দাঁতে দাঁত চেপে পড়ে রইল।

-ধারা তোর কি বেশি কষ্ট হচ্ছে?”

কথাটা বলার সময় নয়নের গলা কেঁপে গেল। আজ ধারার আরও বড় কিছু হয়ে যেতে পারতো। ধারা যদি দূরে গিয়ে না পড়ে ওর একটা হাত পা রিকশার চাকার নিচে চলে যেত! কল্পনা করতেও নয়নের বুক কাঁপে।
বাড়িতে ডাক্তার এসেছে। ধারার পা-টা ফোলে নীলবর্ণ ধারণ করেছে। ডাক্তার ফোলা জায়গায় হাত দিয়ে ব্যথার তীব্রতা দেখলেন। ফোলা জায়গায় ধরার সাথে সাথে ধারার গলা দিয়ে কাতর শব্দ বেরিয়ে এলো। ব্যথা কমার জন্য পেইন কিলার দেওয়া হলো।

– এক্সরে করা ছাড়া এখনই কিছু বলা যাবে না।আপাতত পা-টা কোনোরকম নাড়াচাড়া করা যাবে না। দেখি তো একটা বালিশ দিন। হ্যাঁ, এই পা বালিশের উপর থেকে নামাবেন না। একটু উঁচুতে রাখলে ব্যথা কমবে। আক্রান্ত স্থানে বরফ টরফ কিছু দিয়েছেন?”

উত্তরে মুনতাসীর জানাল, না। ডাক্তার বললেন,

-সরাসরি বরফ না দিয়ে ভালো করেছেন। তবে একটা তোয়ালে ভিজিয়ে এনে আঘাতপ্রাপ্ত জায়গায় আধা ঘণ্টার মতো হালকা ভাবে পেঁচিয়ে রাখুন। এতে ফোলা কমে যাবে। কাল সকাল পর্যন্ত যদি ব্যথা আর ফোলা না কমে তাহলে উনাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে এক্সরে করাতে হবে। যদি ফ্রেকচার এসে থাকে তাহলে দুই তিন সপ্তাহের জন্য ব্যান্ডেজ বা প্লাস্টার করে দিতে হবে। আর যদি সকালের মধ্যে ব্যথা কমে যায় তাহলে ওসবের প্রয়োজন পড়বে না। কয়েকদিন রেস্ট নিলে এমনিতেই সেরে যাবে।”

নয়ন জিজ্ঞেস করল,

-আর কিছু লাগবে না ডাক্তার সাহেব?”

-না। কিছু ঔষধ লিখে দিয়ে যাচ্ছি আনিয়ে খাইয়ে দিবেন। ব্যথা কমে গেলে আর কিছুর প্রয়োজন নেই।”

নয়ন ডাক্তারকে বিদায় দিতে গেল। মুনতাসীর একটা কাপড় ভিজিয়ে এনে আলতো করে ধারার পায়ে জড়িয়ে দিল। ধারা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। যেহেতু এই পা নিয়ে ধারার নড়াচড়া করা সম্পূর্ণ নিষেধ তাই সে এখন নিজের ঘরে যেতে পারলো না। ঘরটা তার হলেও দীর্ঘদিন ধরে এই ঘরে মুনতাসীর থাকছে। নিজে বালিশে, নিজের বিছানায় ধারা মুনতাসীরের গন্ধ পাচ্ছে। মনে মনে ধারার কিছুটা অস্বস্তি হলেও তার কিছু করার নেই। সে যতক্ষণ এই ঘরে থাকবে ততক্ষণ মুনতাসীর নিশ্চয় এই ঘরে আসবে না। মানুষটাকে শুধু শুধু যন্ত্রণা দিচ্ছে সে। মুনতাসীর দাদীকে ধারার কাছে রেখে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। দাদী ধারার কানের কাছে গিয়ে নিচু গলায় বলল,

-দেখলি ছেমরি তোর লাইগা পোলাডার কত চিন্তা! এই অল্প সময়ে চোখ মুখ কেমন শুকাইয়া ফেলছে। তোর যখন জ্ঞান ছিল না মুনতাসীরই তো তোরে কোলে কইরা বাড়ি আনছে। তোর কিছু হইয়া যায় ভাইবা ছেলেডার কলিজায় পানি ছিল না। এখনও কি তুই কিছু বুঝবি না নাতনি? সবকিছু তো পানির মতো পরিষ্কার, দিনের আলোর মতো ফর্সা। ছেলেডা তোরে পছন্দ করে এইডা কি আরও ভাষায় বুঝাইতে হইব? তুই কি কিছুই বুঝোস না?”

ধারা দাদীর কথা শুনেও কোন প্রতিক্রিয়া জানালো না। চোখও খুললো না। আগের মতোই নিরুত্তর পড়ে রইল।
*******

জেসমিন বাড়ি ফেরার পথে জানতে পেরেছে তার বোনের অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। রিকশাচালক লোকটার নাকি পা ভেঙে গেছে। তাহলে নিজের বোনের কী অবস্থা হয়েছে ভেবেই কাঁদতে কাঁদতে এক দৌড়ে বাড়ি পৌঁছুল। নিজেদের ঘরে গিয়ে ধারাকে না পেয়ে ভাবল, আপুকে হয়তো হাসপাতালে নিয়ে গেছে। জেসমিন হাসপাতালে যাওয়ার জন্য ছুটছিল তখনই মুনতাসীর বাড়ি ফিরে। জেসমিনকে কাঁদতে দেখে মুনতাসীর বলল,

-কাঁদছো কেন তুমি? কী হয়েছে?”

জেসমিন ফোঁপাতে ফোপাঁতে বলল,

-মুনতাসীর ভাই, আমার আপু কই? আমার আপুর কী হয়েছে?”

এটুকু বলে কান্নার কারণে আর কিছু বলতে পারলো না। মুনতাসীর আলতো করে জেসমিনের মাথা ছুয়ে দিয়ে বলল,

-তোমার বোন ঘরেই আছে। কেঁদে ভাসানোর মতো তেমন কিছু হয়নি ওর। পায়ে সামান্য ব্যথা পেয়েছে।”

-কোন ঘরে? আমি তো… ‘ মুনতাসীরের ঘরের দিকে জেসমিনের খেয়াল গেল। আপু কি তাহলে ওই ঘরে আছে? ধারা চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিল। ঘরে কেউ এসেছে বুঝতে পেরে চোখ খুললো৷ জেসমিন বোনকে দেখে দরজার সামনে থেকে ছুটে গিয়ে ওর উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। ধারা কয়েক মুহূর্ত স্তব্ধ হয়ে বসে রইল। মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে শেষ হয়ে যাচ্ছে। ধারা বোনের পিঠে আদরের হাত বোলাতে বোলাতে ওকে শান্ত করছে।

-তোমার নাকি পা ভেঙে গেছে। ওরা বলছিল আর নাকি হাঁটতে পারবে না।”

বলেই জেসমিন শব্দ করে কাঁদতে লাগলো। তার এই সামান্য অ্যাক্সিডেন্টকে মানুষ এত বড় রূপ দিয়েছে তা শুনে ধারার হাসি পেলো। আর এই পাগলও লোকের কথা বিশ্বাস করে নিয়েছে!

-লোকে বললো আর তুই বিশ্বাস করে নিলি! লোকে তো কতকিছুই বলে৷ লোকে যদি বলে চিলে তোর কান নিয়ে গেছে তাহলে তুই আগে কানে হাত দিয়ে না দেখে চিলের পেছনে ছুটবি?”

-সত্যি সত্যি তোমার পা ভাঙেনি?”

-না রে, তুই নিজেই দেখ না। পা ভাঙলে কি আমি হাসপাতালে না গিয়ে ঘরে শুয়ে থাকতাম?”

জেসমিন মাথা তুলে কান্না থামিয়ে ধারার পায়ের দিকে দেখছে। পা-টা ফোলে গেছে কিন্তু ভেঙেছে বলে মনে হচ্ছে না। জেসমিন ব্যথিত মুখে বলল,

-ব্যথা করছে?”

-না।”

জেসমিন ফোলা জায়গাটায় ধরতে নিলে ধারা চেঁচিয়ে উঠে ওকে চড় দিয়ে বলল,

-ব্যথা দিচ্ছিস কেন?”

জেসমিন অশ্রুসিক্ত চোখে ভেজা গালে অপরাধী ভাবে হেসে বলল,

-তুমিই তো বললে ব্যথা করছে না। এখন তাহলে চিৎকার দিচ্ছ কেন?”

অপরদিকে মুনতাসীর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দুই বোনের ভালোবাসা মাখা ঝগড়া দেখছে।
******

রাত পর্যন্ত ধারা মুনতাসীরের ঘরে ছিল। জেসমিনও বোনের পাশে খুটি গেড়ে বসে আছে। ধারার পায়ের ব্যথা এখন অনেকটাই কমেছে। তবে হাঁটতে পারবে কিনা বুঝতে পারছে না। একবার দাঁড়ালে বুঝতে পারতো হাঁটাচলা সম্ভব কিনা। জেসমিন কমলা খেতে খেতে বলল,

-ডাক্তার যেহেতু না করেছে হাঁটাচলা করতে তাহলে হাঁটার দরকার কি?”

-না হাঁটলে ঘরে যাব কীভাবে?”

-এটা তো তোমারই ঘর।”

-আমি এখানে থাকলে তোর আহ্লাদের ভাই কই থাকবে? গাছতলায়?”

-আজকের রাতটা নাহয় আতিইফার সাথে থাকবে। এই ঘরে তোমাকে কেন এনেছে? তখন বুঝলো না!”

ধারা উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করছে। জেসমিন যা কিছুই বলুক সে এই ঘরে থাকতে পারবে না।

-উঠছো কেন? তুমি বড্ড নাছোড়বান্দা।”

-তুই আমাকে একটু ধর তো। ধরে ধরে হাঁটতে পারব।”

-বেশি বুঝছো তুমি। দেখো আবার ব্যথা ফিরে আসবে।”

-আসলে আসুক।”

জেসমিন ধারার হাত ধরে ওকে দাঁড় করাতে সাহায্য করতে নিলে মুনতাসীর তখনই ঘরে এসে দুই বোনের নির্বুদ্ধিতা দেখে কঠিন গলায় বলল,

-কী হচ্ছে? ডাক্তার নিষেধ করেছে তো!”

আপু এই ঘর থেকে যাক জেসমিনেরও এটা ইচ্ছে ছিল না। মুনতাসীরকে দেখে সে সব দোষ বোনের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে বলল,

-আমিও না করেছিলাম। কিন্তু আপুই জোর করছে। আমি বলেছি একটা রাত মুনতাসীর ভাই আতিফের সাথে থাকতে পারবে। কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু কে শুনে কার কথা? আমার ঘাড়ত্যাড়া বোন কিছুতেই আপনার ঘরে থাকবে না। ও এই ঘরে থাকলে নাকি আপনার সমস্যা হবে। আপনার কি সমস্যা হবে মুনতাসীর ভাই?”

মুনতাসীর কটমট চোখে ধারাকে দেখছে। এতকিছু করার পরেও এই মেয়ের মন একটুও গলছে না! সে আর কীভাবে বোঝাবে, ভালোবাসে সে। ভালোবাসে বলেই কেয়ার করে। কাঠকাঠ গলায় মুনতাসীর বলল,

-কেউ যদি নিজে নিজে এক লাইন বেশি বুঝে বসে থাকে তাহলে আমি আর কী বলব। আমি তো একবারও বলিনি আমার সমস্যা হবে।”

ধারা তার বোনটার উপর বোম হয়ে ফেটে পড়তে চাচ্ছে। মুনতাসীরের খোঁচা মার্কা কথারও জবাব দিতে পারছে না। জেসমিন ধারাকে আবার বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলল,

-শুনলে তো, তুমি এই ঘরে থাকলে মুনতাসীর ভাইয়ের কোন সমস্যা হবে না। নিশ্চিন্তে আজকের রাতটা এখানে থাকো তো। আরে এটা তো তোমারও ঘর। নিজের মানুষের সাথে এত ফর্মালিটি করার দরকার নেই। মুনতাসীর ভাই তো ঘরের ছেলেই।”
******

সেদিন অ্যাক্সিডেন্টের সময় মুনতাসীর ধারাকে কোলে করে বাড়ি নিয়ে এসেছিল। এই কথাটা এখন পাড়ার সবার মুখে মুখে ঘুরছে। অনেকে তো ওদের সম্পর্কে আপত্তিকর কথাবার্তা বলতে শুরু করে দিয়েছে। কেউ কেউ বলছে,

-ওরা নিশ্চয় প্রেমিক প্রেমিকা। এতদিন এক বাড়িতে আছে ওদের মাঝে কি কিছু হয়নি মনে করেছ?”

-সেদিন সবার সামনে দিয়ে যেভাবে কোলে তুলে নিল! লজ্জা শরমের বালাই নাই।”

-ওর বাপ, দাদী কি কিছুই বুঝে না। বাড়িতে বিবাহযোগ্য দুই মেয়ে থাকা স্বত্বেও অবিবাহিত একটা ছেলেকে জায়গা দিয়েছে।”

-গিয়ে দেখো তলে তলে কতদূর এগিয়েছে। আমাদের কি? আমরা তো আর বলতে যাব না।”

-প্রেম পিরিত থাকলে বিয়ে দিয়ে দিক না। বিয়ের আগে এসব নষ্টামি করে পাড়ার বাকি ছেলেমেয়েদের মাথা খাচ্ছে। ওদের দেখেই তো ছেলেমেয়ে গুলো এসব নোংরামি শিখবে।”

চলবে_