সে আমার মায়াবতী পর্ব-০৩

0
889

#সে_আমার_মায়াবতী
#লেখনিতে_ঈশা_ইসলাম
#পর্ব_৩
—চোখ খুলতেই নিজেকে হসপিটালে আবিষ্কার করলাম.. পিটপিট করে তাকিয়ে দেখি মায়া, তুবা হা করে তাকিয়ে আছে,তুহিন ভাইয়া ও দেখি তাকিয়ে আছে,হটাৎ করেই মনে হলো আমার কাপড় ঠিক আছে তো?
নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সব ঠিকঠাক আছে, তাহলে গাধি গুলো এমন করে তাকিয়ে আছে কেন?

— এই ইশু ঠিক আছিস তুই?
— হ্যা তুমি ঠিক আছো, হটাৎ করে ঘুরে পরে গেলে কিভাবে? ভাগ্যিস বড় ভাইয়া ধরে ফেলেছে??
— ইশা করেই বলছি কারন তুমি ছোট, ডা. বলল কিছু না খাওয়ার কারনে আর তুমি নাকি অনেক স্ট্রেস এ ছিলে, কি নিয়ে এত ভা
—- কোন প্রেমিক পুরুষ আছে হয়তো, তাই দেখ গিয়ে তার কথা ভেবে অস্থির, হয়ত প্রেমিক বলেছে খাবে না তাই দেখ গিয়ে না খেয়ে ছিলো!

—- আচমকা আমরা ছাড়া অন্য কোন পুরুষ এর ভরাট কন্ঠ শুনে চমকে উঠলাম ? চোখে পানি আসার সাথে সাথে রাগ হলো প্রচুর, তাই ক্রোধিত কন্ঠে কিছু বলবো তাই পিছন ফিরে তাকে দেখেই হটাৎ করেই আমার বুক ধক করে উঠলো, শুভ্র পাঞ্জাবি, সেট করা চুল কিছু চুল কপালে গড়িয়ে পরেছে,হালকা চাপ দাড়ি, স্টাইল নিয়ে বসে আছে ” আমার ধ্যেন ভাংলো তার কন্ঠে,…

— কি মিস কি ভাবছো?
— মায়া তোর ফ্রেন্ড বোবা নাকি? তাকে বলে দে এই আরাভ এক কথা বার বার বলে না, যাই হোক বাড়ি চল
—- বড় ভাইয়া ও আসলে তেমন মে
— আহহ আমি তোর থেকে কিছু শুনতে চেয়েছি কি??
— এই যে শুনুন সেই কখন থেকে আমাকে যা নয় তা বলছেন তার সাথে আপনি আমার সামনে আমার ফ্রেন্ড কে ধমকাচ্ছেন আপনার সাহস তো কম না, আপনাকে চাইলে এক্ষুনি আমি হেরেসমেন্ট এর দায়ে পুলিশ এ দিতে পারি, আপনি আ

— সাট আপপপ ( চিৎকার করে)তোমার সাহস কি করে হয় আমার সাথে এভাবে কথা বলার, ইফ ইউ নো হু আই এম?

— আরাভ শান্ত হয়ে বস, ও তোকে চিনতে পারে নি তুবার ফ্রেন্ড তাই পরে বুঝিয়ে বলব তুই মাথা গরম করিস না, মেয়েটা বুঝতে পারে নি
—- নিজে মনে হয় কত বুঝে ( বিরবির করে)
— কি বললে তুমি তুবা?
— কি কিছু বলি নি তো, বিশ্বাস করুন কিছু বলি নি
— কেমন আছো মামনি?
— আমাদের কথার মাঝখানেই ডা. আংকেল কেবিনে প্রবেশ করলেন
— জ্বি আংকেল এখন অনেক বেটার কিন্তু আমার হাতের সুই টা খুলে দিন প্লিজ ( কাঁদো কাঁদো গলায়)
তখন নার্স এসে আমার হাত ধরতেই আমার ভয় ঢুকে গেলো, এখন তো এটা খুললে ব্যথা পাবো, রক্ত বের হবে, এসব ভাবনার মাঝেই কেউ টান দিয়ে আমাকে তার মাঝে জড়িয়ে নিলো আমিও তাকে জরিয়ে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলাম,
—- আহহ
— নার্স আস্তে খুলুন
— হ্য হ্যাঁ স্যার হয়ে গিয়েছে
এদিকে মায়া তুবা আর তুহিন হা করে তাকিয়ে আছে, কারন তাদের জানা মতে দ্যা গ্রেট এটিটিউড বয় একজন নেতা, আর হাজারও মেয়ের ক্রাস কিনা নিজে থেকেই একটা অজানা অচেনা মেয়েকে জরিয়ে ধরেছে,
— এই মেয়ে, উফফ এই মেয়ে ছাড়ো আমাকে কি হলো
— হটাৎ করেই আমার হুশ এলো এ আমি কি করছিলাম, লজ্জা,রাগ আমার গাল গরম করে দিয়েছে,
— নিজেকে এত ইমপোটেন্স দেয়ার কিছুই হয়নি ওকে, আমি যাস্ট ফেবার করলাম কারন তুমি আমার কলিজা আমার বোন এর বিপদে হেল্প করেছো।
— তার কথায় যতটা অবাক হয়েছি তার থেকেও বেশি খারাপ লাগছে নিজের উপর সত্যি কি আমি সবার দয়ার পাত্র?
— মায়া চল এখানে কাজ শেষ, আমার কাজ আছে আর তুহিন বিকালে অডিটরিয়ামে চলে আসিস প্লেনিং আছে,
— হ্যা তুই যা আমি যাবো বিকাল এ, ইশা চলো তোমাকে ড্রাইভ করে দেই, তুবা চল
— তোরা যা আমি যেতে পারবো
— হ্যা আবার ঘুরে পরো এতে অবশ্য তোমার লাভ, কারো কোলে তো চড়তে পারবে
— মি. আপনি আমার বিষয় না জেনেই তখন থেকেই বাজে কথা বলে যাচ্ছেন, আমি কি বলেছিলাম আমাকে কোলে নিন বলেছি? কেন কেন এভাবে অপমান করছেন?
—- এই আরাভ আয়ান চৌধুরির সাথে গলা তুলে কথা বলার শাস্তি তুমি পাবে মেয়ে, রেডি থেকো
— বলেই হনহন করে চলে গেলো
— ঈশা তুমি বড় ভাইয়ার কথায় কিছু মনে করো না প্লিজ আমার ভাইয়া খুব ভালো, সারাদিন পলেটিক্স নিয়ে থাকতে থাকতে খুব রাগি হয়ে গিয়েছে প্লিজ কিছু মনে করো না,,,,
—- আমি মায়ার হাত দুটো ধরে বললাম মায়া তুমি অনেক ভালো, আমি ওনার কথায় কিছুই মনে করি নি, যাও হ্যা আর কাল সুন্দর করে সেজে আসবে,
— আচ্ছা ইশা বলেই জরিয়ে ধরলো।
—- তারপর এক এক করে আমি তুবা আর তুহিন ভাইয়া চলে এলাম, অনেক বারন করার পরেও আমার বাড়িতে পৌছে দিয়ে গিয়েছে
বাড়িতে ঢোকার পরে দাদি আমার হাত ধরে নিয়ে সোফায় ধাক্কা দিয়ে বলে
— নবাবজাদি কই ছিলি হ্যা
সারাদিন কোন নাগরের সাথে ছিলি, পাখা বড় হয়ে গিয়েছে তাই না, কই নাবিলা দেখে যাও এই মেয়ে আমাদের মুখে চুনকালি দিবে দেইখো,
— মা বাদ দিন না মেয়েটা সারাদিন পরে বাড়িতে এসেছে ইসা মা আয় ঘরে আয়
–না ও ঘরে যাবে না, আজ ওর একটা হেস্তনেস্ত হবেই
— মা আমি রাস্তায় ঘুরে পরে গিয়েছিলাম তাই হসপি
— থাম তুই দোস করে আবার মিথ্যা বানিয়ে বলছিস
— মা বিশ্বাস করো আমি মিথ্যা বলি নি, তুমি একটু শুনো
— শুনো নাবিলা একটা পোলা দেইখা ওরে বিয়ে দিয়ে দেও আমরাও শান্তি তে থাকতে পারমু
— দাদি কি বলছো এসব, আমি এখন বিয়ে করবো না, না মানে না
বলেই ঘরে দৌরে চলে আসলাম,
— আমি পারছি না আমার কি এই কস্ট শেষ হবে না, ঠিক আছে তুমি চাও তো মা আমি চলে যাই, যাবো মা যাবো অনেক দুরে চলে যাবো আর খুজলেও পাবে না দেখো
— মা, ভাবি আপনারা এমন না করলেও পারতেন মেয়েটা সারাদিন এ বাড়িতে এসেছে কিছু সকালে খেয়ে যায় নি এখন তো শান্তি তে খেতে দিন,
— নিপা তোমাকে আমি যথেস্ট ভালোবাসি আশা করছি বড় ভাবি হিসাবে আসা করি আমাকে কিছুতে বাধা দিবে না আর ভুলে যাবে না ইশা আমার মেয়ে
— সত্যি কি তাই ভাবি, তাহলে রাইসা আর ইশার মধ্যে এত পার্থক্য কেন ভাবি,
আমি তোমাকে ভাবি না নিজের বড় বোনের মতো সম্মান করি ভালোবাসি তাই তুমি অন্তত্য ভেবে দেখবে ভাবি! এমন না হয় সব হারিয়ে শেষ এ বুঝবে
—এটা বলেই চাচিমা চলে গেলো দাদি বলে
— শোন বউমা পরের ঘরের মেয়েরে প্রতি এত দরদ না দেখিয়ে যা বলেছি তাই করো আপদ বিদায় করো..
— ঘুম থেকে উঠতেই দেখি সামিয়া আপু আর চাচিমা খাবার নিয়ে এসেছে আর অনেক গুলো শাড়ি
— আয় তো মা তোকে খাইয়ে দেই
বলেই খাওয়াতে শুরু করলো, আর সামিয়া আপু শাড়ি দেখাতে শুরু করেছে
— কালকে তে তোর নবিন বরন এর অনুস্টান আছে তাই তুই এই নিল শাড়ি টাই পরবি, দেখ
— বাহ খুব সুন্দর লাগছে তো তোকে
— আমিও আপুর কথা শুনে মুচকি হাসলাম
—- সেই গারো চোখ, কথার তেজ, টোল পরা গালে লজ্জার আভা কেন কেন বার বার এই মেয়ের মুখ ভেসে উঠছে, নো আরাভ কোন মেয়েকে নিয়ে এতটা ডেসপারেট, বাট আই লাইক হার এটেটিউড!!

চলবে।