আমার আসক্তি যে তুমি Part-48

0
3366

#আমার_আসক্তি_যে_তুমি
#Part_48
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
.
?
অতঃপর আমি দরজা ঠেলে খুলে ভিতরে প্রবেশ করি। আমি পিছু পিছু ভিতরে চলে আসে। রুমে ভিতরে এসে আমি যা দেখি তাতে হা হয়ে থাকি।
পুরো রুম সাদা আর গোলাপি রঙের ছোট ছোট ফেরি লাইট (মরিচবাতি) দিয়ে সাজানো। ফ্লোরে কাঠগোলাপ আর বেলি ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে রাখানো হয়েছে। রুমটা ইতিমধ্যে ফুলের ঘ্রাণে মো মো করছে। রুমের মধ্যে থাকা টি-টেবিলে একটা ছোট কেক রাখা সাথে কোকের বোতল। রুমের এক কিনারে সাউন্ড বক্স রাখা। সব কিছু মিলিয়ে এক আবেগময় পূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করছে।
হুট করেই দরজাটা বিকট শব্দ করে বন্ধ হয়ে যায়। দরজার এমন বিকট শব্দে আমি আর রিয়ান চমকে উঠি। পিছনে ফিরে দেখি দরজাটা বন্ধ। আর দরজার ওপাশ হতে আরিশা বলে উঠে,
.
— আজকের জন্য এই দরজাটি বন্ধ করা হলো। সকাল ব্যতীত এই দরজাটি আজ আর খুলা হবে না ধন্যবাদ।
.
তখন রিংকি পাশ থেকে বলে,
— তোদের এমন অবস্থা দেখে এক গান মনে পড়ছে রে। ” হাম তুম এক কামরে বান্দ হো ওর চাবি খো যায়ে।”
তো রিয়ানু বেবি ইজ বান্দ কামরেকা আচ্ছা ইসতেমাল কারনা হ্যাঁ।
.
আরিশাও তাল মিলিয়ে বলে,
— আমাদেরকে খালামনি ডাকার জন্য কাউকে কিন্তু খুব দরকার। তো যত তারাতারি পারিস আমাদের সেই ডাকার জন্য একটা মানুষকে নিয়ে আসিস।
.
তখন রিংকি আরিশার পেটে কুনোই দিয়ে গুতা দিয়ে বলে,
— খালামনি বলা মানুষটা তো তখনই আসবো যখন তুই কাবাব ম্যায় হাড্ডি হওয়ায় অফ করবি। এখন চল এইখান থেকে! এদের টাইম স্পেন্ড করতে দে।
.
আরিশা এক ভেংচি কেটে বলে,
— হুহ! বাই গাইস ইঞ্জয় ইউর নাইট আই মিন সাপ্রাইস। হেহে!
.
এই বলে দুইজনে এক দৌড়ে নিজ রুমে চলে আসে। রিয়ানা বেচারি আর কি বলবে? সে তো দুইজনের কথা শুনে লজ্জায় শেষ।

দুইজনের কথায় আমি লজ্জায় মরে যাচ্ছি। মনে হচ্ছে যেন মাটি ফাঁক করে তার ভিতরে ঢুকে পড়ি। রিয়ানের দিকেও তাকাতে পারছি না লজ্জায়। তাও কোনমতে সাহস জুগিয়ে রিয়ানের দিকে আড়চোখে তাকাই। সে এখনো নিরব দাড়িয়ে আছে। মুখ ভঙ্গিতে তেমন পরিবর্তন না হলে তাকে কিছুটা অপ্রস্তুতই লাগছে। মনে হচ্ছে যে সেও বোধহয় এক দ্বিধায় পড়ে গিয়েছে।
তখনই হুট করে সাউন্ড বক্সটি বেজে উঠে আর আরমান মালিকের ” জাব তাক” গানটি বেজে উঠে। হঠাৎ করে গান বেজে উঠায় আমি চমকে উঠি আর রিয়ানের গা ঘেষে দাড়িয়ে পড়ি। রিয়ান এইবার আমার দিকে তাকায়। আমি রিয়ানের দিকে তাকাতেই আমাদের দুইজনের চোখাচোখি হয়ে যায়।
রিয়ান আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে,
.
— গান শুনে ভয় করছে নাকি আমার থেকে? যদি আমার থেকে ভয় করে থাকে তাহলে তো দেখছি তুমি সেই ভয়ের কাছেই ছুটে আসছো।
.
আমি কিছুটা অপ্রস্তুত সুরে বলি,
— না মানে!
.
— থাক বলতে হবে না। আমি শুধু মজা করছিলাম। বাই দ্যা ওয়ে আমার শালিকারা কিন্তু অনেক সুন্দর করেই রুমটা সাজিয়েছে।
.
— হুম। লজ্জা মাখা কণ্ঠে।
.
— তারা যখন এত কষ্ট করেছে তাহলে তাদের কষ্টটা সার্থক করা হক। কেকটা কেটে আর একটা কাপল ডান্সের মাধ্যমে। কি বল!
.
আমি মুচকি হেসে সম্মতি জানাই। তারপর রিয়ানের পিছে পিছে যাই। দুইজন মিলে কেকটা কাটি। রিয়ান আমাকে খায়িয়ে দেয় আর আমিও তাকে খায়িয়ে দেই। অতঃপর রিয়ান আমার সামনে তার হাতটা এগিয়ে দিয়ে বলে,
.
— মে আই!
.
আমি মুচকি হেসে তার হাতের উপর হাত রাখি। তারপর রুমের মাঝে এসে দাড়াই। রিয়ান তার এক হাত আমার কোমরে রাখে আরেক হাত আমার হাতের ভাজে। আমি আমার আরেক হাত তার কাঁধে। গানের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা নাচতে শুরু করি। আমি রিয়ানের দিকে তাকিয়ে আছি আর রিয়ান আমার দিকে। দুইজনই ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। রিয়ান এইবার আমাকে ঘুরিয়ে তার বুকের সাথে আমার পিঠ ঠেকিয়ে দেয়। আবার আমাকে ঘুরিয়ে নিচের সামনে নিয়ে আসে।
এইভাবে নাচের তালে তালে কখন আমরা একদম কাছে এসে পড়ি বুঝতে পারি না। রিয়ান এইবার আমাকে তার একদম কাছে টেনে নেয়। আলতোভাবে আমার কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়ে বলে,
.
— তোমার যখন সম্মতি হবে ঠিক তখনই সব হবে। এর আগে কিছু নয়। আমি চাই না তোমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু করতে। আমার কাছে তুমি আছো এইটা আমার জন্য যথেষ্ট। মুচকি হেসে।
.
আমি এইবার ছলছল চোখে তার দিকে তাকিয়ে থাকি। রিয়ান আমায় ছেড়ে দিতে নিলে আমি তাকে আকঁড়ে ধরি। তারপর কিছু না বলে তার ওষ্ঠদ্বয়ে নিজের ওষ্ঠ দুটো মিলিয়ে দেই। বেশ কিছুক্ষণ স্বরে এসে তার বুকে মাথা রেখে বলি,
.
— আমি আপনারই রিয়ান। আপনাকে আমার কাছে আসতে অনুমতি নিতে হবে না। আপনাকে ভালবাসি রিয়ান খুব ভালবাসি। চোখ বন্ধ করে।
.
রিয়ান এইবার মুচকি হেসে আমায় জড়িয়ে ধরে।
.
.
?
.
সকাল ৮ বেজে ৩১ মিনিট,
আকাশে হাল্কা মেঘ জমে আছে আর তার পিছেই সূর্য মামা বসে বসে ঝিমুচ্ছে। মাঝে মধ্যে মেঘ দুষ্টুমির ছলে সরে যাচ্ছে আর সূর্য মামার ঝিমুনিতে ব্যাঘাত ঘটছে। শা শা শব্দ করে বাতাস বয়ে চলে। যান্ত্রিক শহরটি ধীরে ধীরে তার প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। পাখিরা আকাশে ছুটোছুটি করে চলেছে। মাঝে মধ্যে দুই এক জোড়া পাখি বারান্দায় এসে বসে গুন গুন করছে।
আমি আয়নার সামনে চুল গুলো মুচছি তখনই বারান্দায় থাকা এক জোড়া চড়ুই পাখির দিকে নজর যায়। দুইজনই খুনশুটিতে মেতে উঠেছে। আবার একটু পর ভাব করে এক সাথেই উড়ে চলে যায়। তা দেখে আমি মুচকি হেসে আয়নার মধ্যে দিয়ে রিয়ানের দিকে তাকাই। রিয়ান চ্যাপ্টা হয়ে শুয়ে আছে। গায়ে তার চাদর জড়ানো। উপরে দিয়ে তার উদোম পিঠটা দেখা যাচ্ছে।
তা দেখে আমার কালকের রাতের কথা মনে পড়ে যায়। সাথে সাথে আমার গাল দুটো লাল হয়ে উঠে। আয়নায় নিজের তাকাতেও যেন লজ্জা লাগছিল। হঠাৎ আমার মনের মধ্যে শয়তানি বুদ্ধি এসে হানা বনে।
আমি পা টিপে টিপে রিয়ানের কাছে যাই তারপর তার সামনে গিয়ে চুলটা ঝাড়া দিতে থাকি। চুলের পানি গুলো পানির ঝাপ্টায় পরিনত হয়ে রিয়ানের মুখের উপর গিয়ে পড়ে। এইটা করার মূল উদ্দেশ্য রিয়ানকে বিরক্ত করার।
কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো যেখানে রিয়ানের এক বিরক্তিকর ভাব প্রকাশ করা সেখানে রিয়ান তার বদলে মুচকি এক হাসি হাসছে। তা দেখে রীতিমতো আমি অবাকই হই। তখনই রিয়ান আমার হাত ধরে আমায় তার বুকের উপর ফেলে চোখ খুলে বলে,
.
— এমন এক সকালের আশা যে বহুত আগে থেকেই আমি করে রেখেছিলাম রিয়ুপাখি। অবশেষে আজকে গিয়ে এমন একটি সকাল আমি পেলাম। আজ মনে হচ্ছে আমি আমার জীবনের সকল প্রাপ্তি পেয়ে গিয়েছি। থ্যাংকস টু ইউ।
.
আমি শুধু মুচকি হাসি দেই।
.
.
আজ রিয়ানকে জামাই বাজার করতে হবে। যার জন্য সে সকল প্রস্তুতি নিয়ে চলে গিয়েছে বাজারে। প্রায় ঘন্টা খানেক বাদে সে ২ ব্যাগ ভরে বাজার করে এনেছে। এক ব্যাগে হরেক রকমের মাছ তো আরেক ব্যাগে নানান রকমের সবজি। এত বাজার দেখে সকলেই প্রায় বিষ্ময়কর চোখে রিয়ানের দিকে তাকিয়ে ছিল। অবশেষে সব পেরিয়ে আন্টিরা লেগে পড়ে রান্নার কাজে। এইদিকে রিংকি আর আরিশা পিছে লেগে পড়ে আমার। দুষ্টুমি আর খুনসুটিতে পাড় করে ফেলি কয়েক ঘন্টা।
দুপুরের খাবার শেষে আমি আর রিয়ান রুমে চলে যাই৷ আরিশা আর রিংকি চলে যায় বাইরে।
.
.
?
.
রিক্সার মধ্যে ইশান আর রিংকি বসে আছে। রিংকি মূলত ইশানকে বিভিন্ন জায়গা ঘুরিয়ে দেখাছে। রিংকি হুট করে বলে উঠে,

— ওই ব্রিটিশ বান্দর।
.
— বলুন।
.
— চলেন আজকে আপনাকে এইখানকার বেস্ট ফুচকা খাওয়াবা।
.
— হোয়াট ইজ পুচকা? কৌতূহলি চোখে।
.
— আরেহ ভাই ওইটা পুচকা না ফুচকা। আপনি তো দেখি পুরো ফুচকা জাতিকেই অপমান করে দিলেন। এর জন্য আপনাকে এক বস্তা শাস্তি দেওয়া উচিৎ। কঠোর হতে কঠোর শাস্তি।
.
— কি এমন জিনিস এইটা যে নাম বিকৃতি এর জন্য আমাকে শাস্তি পেতে হবে?
.
— খেলেই বুঝবেন। এই মামা সাইডে ওইখানে রিক্সা থামিয়েন তো।
.
রিক্সা এসে থামে এক ফুচকার দোকানের সামনে। রিংকি রিক্সা থেকে নেমে তিন প্লেট ফুচকা ওর্ডার করে। কিছুক্ষণ বাদেই তিন ফুচকা নিয়ে এসে একটা ইশানকে দেয় আরেকটা রিক্সাওয়ালা মামাকে। ফুচকার প্লেট দিয়ে রিংকি বলে,
— মামা আমরা যখন খাব আপনিও খান। খিদা কিন্তু সবার এই লাগে।
.
রিক্সাওয়ালা মামাটা এইবার ছলছল চোখে রিংকির দিকে তাকায়। বুঝাই যাচ্ছে যে আগে কেউ হয়তো বা তার জন্য এমনটা করে নি।
রিংকি এইবার ইশানের দিকে তাকিয়ে বলে,
.
— খেয়ে দেখেন। অনেক মজা। ইয়াম ইয়াম! একবার খাইলে বার বার খাইতে চাইবেন।
.
ইশান এইবার উৎসুক্যের নিয়ে এক পিস ফুচকা মুখে দেয়। সাথে সাথে তার চেহারাটা বিকৃতি ধারণ করে। তারপর বলে,
.
— এইটা এমন কেন? এত ঝাল আর টক। কেমন যেন লাগছে। ইয়াক! এইটা মানুষ কিভাবে খায়।
.
— আপনাকে না কচু গাছের সাথে ফাসি দেওয়ার দরকার। ফুচকার বদনাম করেন। ওই মিয়া আর কয়েকবার খান দেখবেন ঠিক লাগবে।
.
ইশান কিছু না বলে আরও কয়েকবার খায়। কিন্তু এইবার ঝালে ওর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। মুখ একদম লাল হয়ে যায়। সে রিক্সা থেকে নেমে লাফায়ে শুরু করে। তা দেখে রিংকি হাসতে হাসতে বলে,
.
— নাও ইউ আর লুকিং লাইক এ লাল বান্দর। হেহে!
.
ইশান এইবার দৌড়ে এক দোকানে গিয়ে পানি কিনে আনে আর গটগট করে খেয়ে। এখনো যেন ওর কান দিয়ে ধুয়ো বের হচ্ছে আর রিংকি তা দেখে হাসতে থাকে।
.
.
?
.
দেখতে দেখতে ১ মাস কেটে যায়। রিয়ান আর আমি এখন একাই রিয়ানের ফ্লেটেই থাকি। সকলেই ফিরে গিয়েছে তাদের গন্তব্যে।
আমি আর রিয়াম এক সাথেই মেডিক্যালে যাওয়া আসা করি। রিয়ান আমার মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে খেয়াল রাখে। কোন কিছুতে কোন কমিতি থাকতে দেয় না। এমন কি সে আমার পড়ালেখা নিয়েও বেশ সিরিয়াস। প্রতিদিন বাসায় এসে আমাকে বিভিন্ন জিনিস বুঝিয়ে দেয়। আমাকে যে সে অনেক ভালবাসে তার প্রতি কোন সন্দেহ নেই।
কিন্তু মাঝে মধ্যে এই রিয়ানকে আমার বড্ড অচেনা লাগে। হুট করেই এত রেগে যায় যেন সবকিছু শেষ করে দিবে। খানিকটা হিংস্র হয়ে উঠে সে। বেশির ভাগ যখন আসে আমার কথাটা। আমার দিকে কেউ বাজে দৃষ্টিতে তাকালেই তার অবস্থা নাজেহাল করে দেয় সে। এইতো কয়েকদিন আগের কথা, রিয়ানের সাথে শপিং করতে গিয়েছিলাম। তখন একটা লোক আমায় ইচ্ছে করে ধাক্কা দিয়েছিল বলে রিয়ান তাকে সকলের সামনে তাকে এবড়োথেবড়ো ভাবে পিটায়। প্রায় জান দিয়ে নিবে এমন অবস্থা। খুব কষ্টে তাকে সেখান থেকে নিয়ে এসেছিলাম। সে যে কতটা হিংস্র হয়ে উঠেছিল তা শুধু আমিই জানি। সেইদিন প্রথম আমার রিয়ানের থেকে ভয় লেগেছিল।
মাঝে মধ্যে রিয়ানের কাছ থেকে অতি এক পরিচিত ঘ্রাণ পাই। কিন্তু প্রতিবারই সনাক্ত করতে ব্যর্থ হই। কেন যেন মনে হয় ঘ্রাণটি আমার খুব চেনা। কিন্তু সেই চেনা ঘ্রাণটি আর আসলে সনাক্ত রুপে চেনা হয় না।
রিয়ান মাঝে মধ্যে বেশ অদ্ভুত আচারণ করে। অদ্ভুত বলতে পাগলামো করে। আমার সামান্য হাত কাটাতেও সে এমন রিয়েক্ট করে যেন কি না কি হয়ে গিয়েছে। অনেক সময় তো নিজেকেই আঘাত করে বসে এই বলে যে, ” তোমার প্রত্যেকটা আঘাতও আমার হতে হবে।”
আমি তখন শুধু নির্বাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকি। অনেক সময় ভাবি, “ঠিক কতটা ভালবাসতে পারলে মানুষ এমন করতে পারে?” কিন্তু প্রতিউত্তরে শুধু “রিয়ানের” নামটি এই আসে।
.
.
আজ আমি মেডিক্যাল যাই নি। কিছু এসাইনমেন্ট বাকি ছিল যার জন্য বাসায় বসেই তা শেষ করার উদ্যোগ নেই। তাই রিয়ান সকাল সকালই চলে যায় মেডিক্যালের উদ্দেশ্যে।
এসাইনমেন্ট করতে গিয়ে দেখি আমি আমার একটা বই আমার বাসায় রেখে এসেছি। সেই বইটির এতদিন দরকার না পড়ায় জিনিসটি চোখে পড়ে নি। তাই বাধ্য হয় বাসায় যাব বলে ঠিক করি।
কিন্তু বিপত্তি ঘটে তখন যখন নিজের বাসার চাবিটি খুঁজে উঠতে ব্যর্থ হই। হুট করেই মনে পড়ে যায় যে আমি ওই বাসার চাবিটি ওই বাসাই রেখে এসেছি। মন খারাপ করে বসতেই আমার মনে পড়ে যে রিয়ানের কাছে তো আমার বাসার ডুপ্লিকেট চাবি আছে। ভেবেই মনটা খুশিতে নেচে উঠে।
আমি দ্রুত হাতে সেই চাবিটি খুঁজতে থাকি। একসময় পেয়েও যাই। চাবিতে আমার ফ্ল্যাট নাম্বার “৫০৬” লিখা ছিল বিধায় খুঁজতে তেমন বেগ পেতে হয় নি।
কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো যে আমি বাসার দুইটা চাবি পাই। মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন জাগ্রত হতে থাকে যে,”রিয়ানের কাছে আমার বাসার দুইটো চাবি কিভাবে আসলো? ”
তখনই নজর যায় আমার কিনারে পড়ে থাকা একটির চাবির দিকে। আমি চাবিটি হাতে নিয়ে দেখি তাতে “৫০৫” লিখা। যা দেখে আমি রীতিমতো অবাকের শেষ পর্যায়ে চলে যাই। আবার মনের মধ্যে একটি প্রশ্ন এসে উঁকি মারে যে,” আমার পাশের ফ্ল্যাটের চাবি রিয়ানের কাছে কেন? সে কি সেখানে থাকতো? যদি থাকতো তাহলে জানতাম না কেন? ”
এমন হাজারো প্রশ্ন আমার মাথায় এসে ভীড় জমায়। তখনই ভাবলাম হয়তো রিয়ান আমার জন্য কোন সাপ্রাইস প্লেন করছে। তাই আমি উৎসুক ভাব নিয়ে পরিকল্পনা করি যে রিয়ানের সাপ্রাইস দেওয়ার আগেই আমি সেটি দেখবো। যে ভাবা সেই কাজ! রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ি “৫০৫” নাম্বার ফ্ল্যাটের সাপ্রাইস নামক রহস্যটি উদঘাটনের উদ্দেশ্যে।
.
.
#চলবে