Secret Lover Part-12

0
886

Secret Lover
Tafsirah Islam
Part – 12

তিথি : উফফ এই মেয়ে গুলো এতো লুচ্চা কেন
দুনিয়াতে ক ছেলের অভাব পরছিল যে স্যার এর পিছেই পরছে ???
কলেজে আমার যত্তসব লুচ্চা ফ্রেন্ড গুলো আর এই এক রুহি…
এই রুহি নামের ভুত তো আমি স্যারের মাথা থেকে নামাবই…?
সকালে…

ফোনের আওয়াজে তিথির ঘুম ভেঙে যায়..
ঘুম ঘুম চোখে ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে অপরিচিত নাম্বার..
ফোন রিসিভ করে..

তিথি : হ্যালো
ওপাশ থেকে নিশ্চুপ
তিথি : হ্যালোওওও….কথা বলছেন না কেন
এবারও চুপ..
তিথি : ? ওই বোবা নাকি ফোন দিয়া চুপ করে আছেন কেন..
এবারও চুপ শুধু একটু হাসির শব্দ শোনা গেল
তিথি : ?? ওই হাসছ কেন ? এতো সকালে আমার এতো সুন্দর ঘুমের ১২ টা বাজাইয়া এখন হাসা.. তোরে সামনে পাইলে আমি আলুর ভর্তা বানাইয়া রোদে শুখাইতাম ?
বলে ফোন কেটে দিল..

এরপরই ফোন হাতে নিয়ে চেক করে দেখে কয়েকটা ম্যাসেজ এসেছে

** hey sweety গুড মর্নিং **

তিথি : ঢং এর জালায় বাচে না ?

** hey আর কতো ঘুমাবে… **

তিথি : সারাজীবন ঘুমামু তোর কি ?

** আজ সকাল থেকে বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম… এই আসায় যে তুমি বারান্দায় আসবে আর আমি মন ভরে তোমায় দেখবো **

তিথি : কি ঢং কি ঢং ?

** এই শুনো রাতে ঘুমানোর সময় দরজা জানালা ভালো করে বন্ধ করে ঘুমাবে..? **

তিথি : আজ থেকে মেইন ডোর ও খুলে রাখমু ?

তিথি এবার উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নেয়.. আজ ক্লাস আছে

রেডি হয়ে ফোন হাতে নিতেই একটা ম্যাসেজ আসে….

* এই… এই ড্রেস চেঞ্জ করো..এই ড্রেস পরে বের হলে খবর আছে তোমার ?..চেঞ্জ করো বলছি **

তিথি : হুহ… তুই কে রে…যে আমি তোর কথায় ড্রেস চেঞ্জ করমু…
আমিতো আজ এই ড্রেসই পরবো..☺তিথি হাল্কা সাজগোজ করে নিল..

তিথি কলেজে ঢুকতেই সবাই তিথির দিকে তাকিয়েই আছে.. যেন নজরই ফেরাতে পারছে না
ব্লু ড্রেস আর হাল্কা সাজ দারুণ লাগছে..

তিথি ক্লাসে না গিয়ে আগে রুহানের কেভিনে যায় দেখা করতে

তিথি : স্যার আসবো?
রুহান : আসুন
তিথি কেভিনে ঢুকেই দেখে রুহান কেমন রেগে আছে..
রুহান : মিস. তিথি আপনি কি এভাবে দাঁড়িয়েই থাকবেন? কোন দরকার থাকলে বলুন.. নাহলে ক্লাসে যান
তিথি : স্যার ক্লাস শুরু হতে তো আরো ১৫ মিনিট আছে
রুহান : মিস. তিথি আমার অনেক কাজ আছে আছে..আপনি এখন আসুন

তিথি বেরিয়ে এলো কেভিন থেকে..
তিথি : একবার তাকালোও না ?
তাকাবেই বা কেন এখন তো ওনার গার্লফ্রেন্ড কে পেয়ে গেছেন..
আমিও তিথি ?..এই রুহি নামের ভুত যদি না নামিয়েছি ??

ক্লাসে…
রুহান ক্লাস নিচ্ছে তখন খেয়াল করে ক্লাসের একটা ছেলে তিথির দিকে তাকিয়েই আছে…
রুহান তো পারে না কাচা চিবিয়ে খেয়ে ফেলে..

ক্লাস শেষে তিথি দাঁড়িয়ে আছে..
তিথি : হুহ.. আজকে নিতে না আসলে যাবো না ?

রুহান : কি ব্যাপার ম্যাডাম আজ এখনো আসে নি কেন.. আজ খবর আছে তোমার তিথি.. রাস্তায় বের হলে এতো সাজগোজ কিসের ?

রুহান আবার কলেজে ঢুকে দেখে তিথি একটা গাছের নিচে বসে আছে

রুহান : আমি এদিকে অপেক্ষা করছি আর ম্যাডাম এখানে গাছের নিচে বসে আছে ?

তিথির কাছে গিয়ে…

রুহান : মিস.তিথি আপনি এখানে কি করছেন.. ওদিকে আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করছি আর আপনি ?
তিথি : ?? আমাকে নিয়ে আপনার ভাবতে হবে না..
রুহান : (তিথির রাগ দেখে হাসি পাচ্ছে তাও রাগী মুড নিয়ে) চলুন

রুহান তিথিকে নিয়ে আগে একটা শপিং মলে গেল..
তিথি : স্যার আমি আগেই বলে দিচ্ছি আমি আপনার গার্লফ্রেন্ড এর জন্য শপিং টপিং করতে পারবো না..
রুহান : করতে হবে না আপনাকে..একটু কষ্ট করে আমার সাথে চলুন এতেই হবে
তিথি : পারবো না ?
রুহান : কি বললেন ?
তিথি : পারবো না.. পারবো না.. পারবো না ?
রুহান : ও তাহলে সোজাসুজি আপনি যাবেন না.. ঠিক আছে
বলেই গাড়ি থেকে বেরিয়ে তিথির কাছে গিয়ে তিথিকে কোলে তুলে নিল..
তিথি : আরে আরে স্যার কি করছেন.. নামান বলছি ? এটা পাবলিক প্লেস..লোকে কি বলবে..নামান আমাকে ?
রুহান : রেগে লাভ নেই…বলছিলাম কথা শোনেন নি..
তিথি : ? আমি আপনার গার্লফ্রেন্ড এর মতো নির্লজ্জ না যে…
রুহান : হুশশশ..( তিথিকে থামিয়ে দিয়ে) মিস. তিথি আপনি খুব বেশি বকবক করেন..এতো বেশি কথা বললে কিন্তু ফেলে দিব..কি দিব ফেলে ( ফেলে দেয়ার ভাব করে)
সাথে সাথেই তিথি শক্ত করে রুহানের গলা জড়িয়ে ধরে..
তিথি : এই না না স্যার প্লিজ..
রুহান মুচকি মুচকি হাসছে..
আর ওদের কান্ড দেখে আসেপাশের লোকজনও হাসছে..

রুহান একটা সাদা রঙের ড্রেস এনে তিথিকে দিয়ে
রুহান : এই নিন চেঞ্জ করে আসুন
তিথি : আমি চেঞ্জ করতে যাবো খুশিতে.. আর…
রুহান : মিস. তিথি আর একটাও কথা বললে আমি নিজেই আপনাকে ট্রায়াল রুমে নিয়ে যাবো..
আর চেঞ্জও আমি নিজেই করে দিব ?( তিথির কানের কাছে মুখ নিয়ে)
তিথি : ? ( লুচ্চা ? এর কোনো বিশ্বাস নাই তিথি, ভালোয় ভালোয় নিজেই যা)
তিথি ড্রেস নিয়ে চেঞ্জ করে আসে..
রুহান : ? (আগেই তো ভালো ছিল এখন তো পুরো পরির মতো লাগছে)

রুহান কিছু না বলে আরেকটা হলুদ রঙের ড্রেস দিয়ে..
রুহান : নিন এটা পরে আসুন
তিথি : ?
রুহান : কি হলো.. যান
তিথি : ? যাচ্ছি..

এবার আরেকটা ড্রেস দিতেই..
তিথি : স্যার আমি আর পারবো না ?
রুহান : আচ্ছা চলুন.. আমি হেল্প করছি ?
তিথি : ?
রুহান : এটাই লাস্ট

রুহান : ( এবার তো আরো বেশি ?) হয়েছে চলুন…

গাড়িতে তিথি বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে..

গোলাপি ড্রেস হাল্কা সাজ খোলা চুল গুলো বাতাসে উড়ছে…
রুহান তিথির দিকে বার বার তাকাচ্ছে..
রুহান : এবার বুঝচ্ছি প্রব্লেম টা কোথায় ? ( মনে মনে)
তিথি : স্যার ড্রাইভিং এ মন দিন..নয়তো অ্যাক্সিডেন্ট হবে ( বাইরের দিকে তাকিয়েই বলল)
রুহান : ? কি??( তিথির আচমকা এমন কথায় রুহান ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়)
(নিজেকে সামলে নিয়ে..)
মিস. তিথি আমি মনোযোগ দিয়েই ড্রাইভিং করছি..

অফিসের সামনে এসে গাড়ি থেকে নামতে নামতে
রুহান : মিস. তিথি আমার সাথে আগে আমার কেভিনে আসুন

তিথি অফিসে ঢুকতেই
শিহাব : হেই তিথি ইউ আর লুকিং সো বিউটিফুল.. জাস্ট লাইক এন অ্যাঞ্জেল ?
তিথি : থ্যাংকস ?
যার জন্য সাজলাম সে তো একবার তাকালোই না ?

রুহান খেয়াল করলো শিহাব তিথির উপর থেকে নজরই সরাচ্ছে না
রুহান : মি. শিহাব আপনাকে অফিসে মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করতে রাখা হয়নি তাই কাজে মন দিন ?
আর মিস. তিথি আপনি এখনো দাঁড়িয়ে আছেন কেন চলুন ?

কেভিনে ঢুকতেই রুহান তিথির হাত ধরে টেনে ওয়াশরুমে নিয়ে গেল

রুহান : এই যতসব আলতু ফালতু মেক আপ লাগিয়েছেন এগুলো ধুয়ে তারপর বের হবেন
তিথি : ? বয়েই গেছে.. মেক আপ কি ধুয়ে ফেলার জন্য করেছি নাকি
রুহান : শেষ বার বলছি..
তিথি : শেষ বার বলুন বা প্রথম বার বলুন.. আমি শুনছি না ?
রুহান : ওকে..
বলেই ওয়াশরুমের দরজা লক করে দিয়ে এক পা দু পা করে তিথির দিকে এগোচ্ছে..
তিথি ভয়ে পেছাতে পেছাতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়..
তিথি : স..স..স্যার ভ..ভ ভালো হবে না কিন্তু..
..
রুহান দুষ্টু হাসি দিয়ে শাওয়ার অন করে তিথিকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে
তিথি : স্যার ছাড়ুন..

রুহান তিথি দুজনেই ভিজছে
ভেজা অবস্থায় তিথিকে আরো আকর্ষণীয় লাগছে
রুহান ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তিথির দিকে তাকিয়ে আছে..

তিথি : স্যার ছাড়ুন নয়তো আমি চিৎকার করবো
রুহান : তাই ?করুন তাহলে
তিথি : হে….
তিথি চিৎকার দেয়ার আগেই রুহান তিথির ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নেয়
তিথি ছাড়ানোর চেষ্টা করতেই আরো শক্ত করে তিথির কোমর জড়িয়ে ধরে..

কিছুক্ষণ পর তিথিকে ছেড়ে দিয়ে বেরিয়ে যায়..

তিথি : ?? শয়তান.. বান্দর, লুচ্চা, বজ্জাত কোথাকার ?
রুহান : মিস. তিথি আপনার বকা শেষ হলে এবার চেঞ্জ করে আসুন.. বেশি ভিজলে ঠান্ডা লেগে যাবে.. 5 মিনিটের মধ্যে বের না হলে আমি আসবো..

তিথি : ?
তারাতাড়ি করে চেঞ্জ করতে গিয়ে দেখে ড্রেস তো নেই
তিথি দরজা খুলে উঁকি মেরে দেখে রুহান আছে কিনা..
খাটের উপর চোখ পরতেই দেখে হলুদ রঙের ড্রেস রাখা যেটা শপিং মলে ট্রাই করেছিল

তিথি আর সাতপাঁচ না ভেবে বেরিয়ে ড্রেস হাতে নিয়ে সামনে তাকাতেই দেখে রুহান ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে

রুহান সামনে এগোচ্ছে আর তিথি পেছাচ্ছে..
তিথি এক দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল
রুহান : ??

তিথি চেঞ্জ করে দাঁড়িয়ে আছে.. বের হলেই রুহানের সামনে পরতে হবে..তাই লজ্জায় বের হচ্ছে না

রুহান : ড্রেস চেঞ্জ করতে এতক্ষণ লাগে ?
রুহান : মিস. তিথি আপনি কি আজ ওয়াশরুমে থাকার প্ল্যান করেছেন নাকি
( দরজা নক করে)
রুহান ডাকতেই তিথি বেরিয়ে আসে..
তিথির দিকে তাকাতেই রুহানের চোখ কপালে…

হলুদ ড্রেস ভেজা চুল একদম অসাধারণ লাগছে..
রুহানের চাহনিতে তিথি খুব লজ্জা পাচ্ছে.. লজ্জায় তাকাতে পারছে না

রুহান : হলুদ পরী ?
তিথি চলে যাচ্ছে এমন সময়..
রুহান : ( এখন বের হলে শিহাব শকুন টা তাকিয়েই থাকবে ?)
মিস. তিথি..
তিথি : জি
রুহান : আজ আপনি আমার কেভিনে বসেই কাজ করবেন
তিথি : কিন্তু কেন স্যার
রুহান : উহু…কোন প্রশ্ন না
তিথি : ওকে ?

তিথি মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে আর রুহান তিথিকে দেখছে
রুহান : ?? পাগল হয়ে যাব আমি ( মনে মনে)

তখনই কেউ রুহানের কেভিনে আসে..
তাকে দেখা মাত্রই তিথির চোখ কপালে..
।।
।।
চলবে…