Secret Lover
Tafsirah Islam
#part – 11
রুহানের কেভিনে ঢুকতেই তিথি শক…দরজার সামনেই থ হয়ে দাড়িয়ে রইলো…
একটা মেয়ে রুহানকে জড়িয়ে ধরে দাড়িয়ে আছে আর রুহান তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে…
তিথি আর একমুহূর্তও সেখানে না দাঁড়িয়ে চলে এলো..
রুহান : এতো দিনে আমার কথা মনে হলো ?
রুহি : হুহ আমকে তো খুব মনে ছিল না ??
খুব মিস করছি ?
রুহান : হয়েছে আর মন খারাপ করতে হবে না.. এখন তো আমরা একসাথেই থাকবো..
রুহি : i love you.. i love you…?
রুহান : লাভ ইউ টু ?
..
তিথি কেভিনে বসে কাজে মন দেয়ার চেস্টা করছে কিন্তু কিছুতেই পারছে না..
একটু আগের ঘটনা মনে পড়তেই অজান্তেই চোখ থেকে দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো..
তিথি : হুহ…গো টু হেল জাস্ট গো টু হেল .. উনি যার সাথে খুশি থাকুক, যা খুশি তাই করুক.. আই ডোন্ট কেয়ার…
তারপরও কাজে মন দিতে না পেরে ক্যানটিনে গেল..
রুহি : আমি এখন যাচ্ছি, তারাতাড়ি আসবে কিন্তু..
রুহান : যথাআজ্ঞা ☺
..
রুহান : ১১ টা বেজে গেছে তিথি আজ একবারও কেভিনে আসলো না ?
মহারানী কি এমন করছেন দেখি..
রুহান ল্যাপটপ অন করে দেখে তিথি কেভিনে নেই
রুহান : গেল কোথায়..
একটু আগের ফুটেজ দেখি..
ফুটেজ চেক করে রুহানের চোখ কপালে..
তিথি রুহান আর রুহিকে একসাথে দেখে ফেলেছে..
রুহান : ওহ নো এই মেয়েটা তো এখন সব না জেনেই ভুল বুঝতে থাকবে..
কিছু একটা করতে হবে..
তখনই রুহানের মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি আসে..
রুহান : মিস. তিথি এবার আপনি নিজের মুখে স্বীকার করবেন.. ?
তিথি ক্যানটিনে একটার পর একটা আইসক্রিম খেয়ে যাচ্ছে…
আরেকটা নিয়ে মুখে দিতে যাবে এমন সময়ে কেউ তিথির হাত ধরে ফেলে..
তিথি সামনে তাকিয়ে দেখে রুহান..
তিথি : হাত ছাড়ুন ?
রুহান : যদি না ছাড়ি, অলরেডি চারটা খেয়েছেন আর না চলুন
তিথি : তাতে আপনার কি,আমি চারটা না চল্লিশটা খাবো সেটা আমার ব্যাপার, আপনি আমার বস বসের জায়গায় থাকুন, আমার সব ব্যাপারে আপনার মাথা ঘামাতে হবে না ?
রুহান : ওহ রিয়েলি মিস. তিথি, আচ্ছা তাহলে আমিও দেখি আপনি কয়টা খেতে পারেন…
রুহান আরো কতোগুলো আইসক্রিম এনে তিথির সামনে রাখলো..
আর একটা চেয়ার টেনে বসলো
তিথি আরেকটা নিয়ে খাওয়া শুরু করলো..
রুহান তিথির দিকে তাকিয়েই আছে.. …
তিথি : স্যার আপনার যদি খেতে ইচ্ছে করে তো খান, আমারটাতে নজর দিচ্ছেন কেন
রুহান : are you sure মিস. তিথি
তিথি : আপনার মন চাইলে আপনি খাবেন তাতে আমার সিওর হওয়ার কি দরকার ?
রুহান : ওকে
বলেই তিথির হাত থেকে আইসক্রিমটা নিয়ে খাওয়া শুরু করলো
তিথি : ?? আপনি আমারটা নিলেন কেন ?
রুহান : বাপরে বাপ… এতো রাগার কি আছে.. নিন আপনার আইসক্রিম আপনিই খান
তিথি : হুহ ?..
তিথি আরেকটা নিয়ে খেতে গেলে রুহান ওটাও নিয়ে নেয়
তিথি : ?
রুহান : ??.. মিস. তিথি আপনার যে কোল্ড এর প্রবলেম আছে তা কি ভুলে গেছেন.. অনেক হয়েছে এবার চলুন
তিথি : আমাকে নিয়ে আপনাকে এতো ভাবতে হবে না স্যার, আপনি আপনার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে ভাবুন
রুহান চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে তিথির সামনে গিয়ে..
রুহান : jealous ?
তিথি : মোটেও না ?
রুহান : তাই (তিথির সামনে একটু ঝুকে..)
তিথি উঠে চলে গেলো…
তিথি : কি মনে করেন উনি নিজেকে.. আমার লাইফে ইন্টার ফিয়ার করার অধিকার কে দিছে ওনাকে.. ? ( একা একাই বিরবির করে)
তখনই রুহানের ফোন আসে
তিথি : অসহ্য… হ্যালো
রুহান : মিস. তিথি আমার কেভিনে আসুন
তিথি : জি ?
রুহান : মিস. তিথি এই ফাইলটা আজই কমপ্লিট করবেন…
আর আমি ড্রাইভারকে বলে দিয়েছি আপনাকে নিয়ে যাবে অফিস শেষে..
চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালো..
তিথি : স্যার আপনি কোথাও যাচ্ছেন?
রুহান : জি☺ আসলে আজ রুহিকে নিয়ে একটু বের হবো…
তিথি আর কিছু না বলে ফাইল নিয়ে বেরিয়ে গেল…
রুহান : ??
তিথি অফিস শেষে যাওয়ার সময় দেখে
রুহান একটা মেয়েকে কোলে নিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হচ্ছে..
ভালো করে তাকিয়ে দেখে সকালের মেয়েটা
তিথি : ? লুচ্চা.. পাবলিক প্লেসে গার্লফ্রেন্ডরে কোলে নিয়া ঘোরা লাগে..
ঢং যত্তসব ?
রাতে খাওয়ার সময় তিথি বারবার ফোনের দিকে তাকাচ্ছে
তিথির মা : কিরে খাওয়া বাদ দিয়ে কি শুরু করলি.. কি দেখছিস বারবার ফোনে..
তিথি : কিছু না..
বলে উঠে চলে গেলো..
তিথির মা : কিরে না কিছুই তো খেলি না..তিথি…
তিথি আবার ফোন হাতে নিয়ে দেখে একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে ম্যাসেজ এসেছে..
অনেকটা খুশি হয়েই ম্যাসেজটা ওপেন করে…
** hey sweety ডিনার করলে না কেন.. ঔষধ খেতে হবে তো, ডিনার করে ঔষধ খেয়ে নাও লক্ষ্মীটি.. **
ম্যাসেজ পড়ে তিথির মাথাটা গরম হয়ে গেল…
তিথি : তোরে সামনে পাইলে কি যে করমু…
রাতে হঠাৎ তিথির মনে হলো কেউ মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে..
ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখে কালো পোশাক পরা এক লোক তিথির পাশে বসে আছে..
যেইনা তিথি চিৎকার দিতে যাবে ওমনি তিথির মুখ চেপে ধরলো..
তিথি : উম.. উমমম
রুহান : রিলাক্স মিস. তিথি
তিথি : স্যার আপনি এতো রাতে ? আমার রুমে ? ( গায়ের চাদরটা টেনে)
রুহান : ইয়েস মিস. তিথি আপনি যা ভাবছেন ঠিক তাই ? ( ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে তিথির আরেকটু কাছে গিয়ে)
তিথি : ?? স্যার আ……
রুহান : হুশশশ…( তিথির ঠোঁটে আঙুল দিয়ে)
ডিনার করেননি কেন হুম.. আর ঔষধও তো খাননি
তিথি : মন চায়নি তাই.. আপনার কি.. আর আপনার গার্লফ্রেন্ডকে রেখে এখানে এসেছেন কেন ?
রুহান : ???
তিথি : হুহ…হাসার মতো কি বলছি…?
রুহান : কিছু না… তারাতাড়ি খেয়ে নিন রুহি ওয়েট করছে যেতে হবে আমাকে
তিথি : ( আল্লাহ গো বিয়ের আগেই গার্লফ্রেন্ডরে বাসায় রেখে দিছে ? ?)
তো যাননা থাকতে বলল কে ?
রুহান : ওহ.. আপনার জন্য এগুলো এনেছিলাম আপনি নিবেন না ? ( কতগুলো চকলেট বের করে)
তিথি : কে বলল নিব না☺কই দিন
রুহান : এমনি এমনি তো দিচ্ছি না ?
তিথি : তাহলে..স্যার দিন ন…
রুহানের কাছ থেকে চকলেট গুলো নিতে চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই পারছে না..
শেষমেশ হার মেনে
তিথি : ? লাগবে না ?
রুহান : আগে ঔষধ খান তাহলে
তিথি : আচ্ছা ?
রুহান : আসি মিস. তিথি
তিথির কাছে আসতেই তিথি এক হাত কপালে আর এক হাত দিয়ে গলা ঢেকে নিল
রুহান : ??
তিথি : ?
রুহান : মিস. তিথি আপনার গলার তিলটা খুব সুন্দর ?
বলে চলে গেলো..
তিথি : ? লুচ্চা ?
রুহান যাওয়ার পর তিথি আনমনেই হেসে দিল..
তিথি : আচ্ছা উনি এমন কেন…
যতই ভাবি ততই কনফিউজড…
এতো কেয়ার আবার ঠিকই আমার সামনে দিয়েই গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরে ?
আমার এতো কষ্ট লাগে কেনো..
…
আবার রুহির কথা মনে হতেই
তিথি : উফফ এই মেয়ে গুলো এতো লুচ্চা কেন
দুনিয়াতে ক ছেলের অভাব পরছিল যে স্যার এর পিছেই পরছে ???
কলেজে আমার যত্তসব লুচ্চা ফ্রেন্ড গুলো আর এই এক রুহি…
এই রুহি নামের ভুত তো আমি স্যারের মাথা থেকে নামাবই…?
।।
।।
চলবে…