first love…..
Samira Afrin Samia (nipa)
Part: 25+26
তানভীরঃ অনেকহ্মন ধরে খেয়াল করছি। সামিহা জিসানের সাথে কি এতো কথা বলছে। কথা বলছে তো বলছেই।কিন্তু জিসান ওর হাত ধরে ফেললো। আর সামিহা কিছু বললো না।
ইমনঃ ওয়েটার দুইটা ডিংক্স দেও তো। কিরে তানভীর কোনো দিন ও তো ডিংক করিস না। তা আজ ও কি আম্মুর লক্ষী ছেলে হয়ে থাকবি।আরে ভাই তোর সামনে আমরা ডিংক করি এতে তো আমাদের ও লজ্জা লাগে। আজ কিন্তু তোর কোনো কথা শুনবো না।
তানভীরঃ এবার তো লিমিট ক্রস হয়ে গেল। জিসান সামিহার হাত ধরে ওকে নিয়ে ডান্স করতে চলে গেল। সামিহা একটুও বাঁধা দিল না।
ইমনঃ কিরে ভাই তুই কি ডিংক্স নিবি নাকি তোর জন্য দুধ ওর্ডার দিব।
তানভীরঃ একেতো সামিহা জিসানের সাথে ডান্স করছে। তার উপর ইমনের বকবক।রাগের মাথায় কয় গ্লাস ডিংক্স করলাম তা নিজেও জানি না।
ইমনঃ ভাই তুই ঠিক আছিস তো। এগুলো দুধ না মদ কি মনে করে খাচ্ছিস আল্লাহই জানে। আগে তো হাত ও লাগাতি না। আর আজ কি হলো?
আমিঃ জিসান ভাইয়া নিহা আপুকে অনেক ভালোবাসে।একজন আরেক জনকে অন্ধের মত বিশ্বাস করে। অনেক ভালোবাসা ওদের দুজনের মধ্যে। (মনে মনে)
(হঠাৎ করে ওনি এসে জিসান ভাইয়াকে মারতে শুরু করে দিল)
কি করছেন আপনি। আপনি ঠিক আছেন তো। এভাবে জিসান ভাইয়াকে মারছেন কেন? থামুন বলছি।
( মিউজিক অফ হয়ে গেল। সবাই ডান্স অফ করে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে)
তানভীরঃ হঠাৎ করে জিসানের জন্য অনেক মায়া হচ্ছে দেখি।কতদিন ধরে এসব চলছে তোমাদের মাঝে?
আমিঃ কি যা তা বলছেন?
তানভীরঃ কখনও তো আমার সাথে ডান্স করোনি। তাহলে আজ ওর সাথে ডান্স করছ কিভাবে।এখন তোমার খারাপ লাগছে না?
জিসানঃ তানভীর তুই ঠিক আছিস তো। ভাবীকে এসব কি বলছিস?
তানভীরঃ তুই চুপ কর। তোকে আমার ফ্রেন্ড ভাবতেও লজ্জা লাগছে। ফ্রেন্ড হয়ে ফ্রেন্ডের ওয়াইফের সাথে ছিঃ
জিসানঃ কি বলছিস এসব আমার তো কিছু মাথায় ঢুকছে না। আমি তোর কথা কিছুই বুঝতে পারছি না।
আমিঃ আপনি কি ডিংক করছেন?
তানভীরঃ হুম আমি ডিংক করছি। আরও করবো তোমার কোনো প্রব্লেম। তুমি আমার সামনে অন্য ছেলের সাথে মেলামেশা করবে।অহ সরি অন্য ছেলে কেন বলছি। আমার ফ্রেন্ডের সাথে বাজে সম্পর্ক রাখবে তা আমি চেয়ে চেয়ে দেখবো।
আমিঃ ছিঃ আপনার চিন্তা ভাবনা এতটা নিচ তা আমি ভাবতেও পারিনি। আপনি এটা ভাবলেন কি করে আমার আর জিসান ভাইয়ার মধ্যে বাজে কোনো সম্পর্ক আছে। আমি তো আজকের আগে কখনও জিসান ভাইয়াকে দেখিইনি। আমি শুধু ভাইয়ার সাথে ডান্স করছিলাম এটাতে আপনি এমন রিয়েক্ট করলেন।আপনার মন মানসিকতা এতো নিচ আমার ভাবতেও অবাক লাগছে।
তানভীরঃ অহ এখন আমার চিন্তা ভাবনা মন মানসিকতা তোমার কাছে নিচ মনে হচ্ছে। আর তুমি যে তোমার হাজব্যান্ডেট সামনে অন্য একটা ছেলের সাথে গা ঘেসে ডান্স করছ তার বেলা কিছু না।
আমিঃ আপনার সাথে কথা বলতে ও আমার বিরক্ত লাগছে।আপনি এখন কি বলছেন তা আপনি নিজে ও জানেন না।
তানভীরঃ এখন তো আমার সাথে কথা বলতে তোমার বিরক্ত লাগবেই এখন তুমি অন্য কাউকে পেয়ে গেছ। এতহ্মন জিসানের সাথে ডান্স করছ এখন চলো আমার সাথে ডান্স করবে।
(মিউজিক অন করো)
আমিঃ (ওনি আমার হাত ধরে টান দিয়ে ওনার কাছে নিয়ে আমার কোমরে হাত দিয়ে ডান্স করতে লাগলো।সবাই আমাদের দিকে দেখছে)
কি করছেন আপনি?
আপনি আজ ডিংক্স করছেন। চলুন বাসায় যাবো।
তানভীরঃ এতক্ষণ তো হেসে হেসে ডান্স করছিলে। তাহলে এখন কি হলো।এখন তোমার প্রব্লেম হচ্ছে কেন?
এখন তো তোমার হাজব্যান্ডের সাথে ডান্স করছ তাহলে এখন তো তোমার প্রব্লেম হওয়ার কথা না।
আমিঃ( নিজেকে ওনার থেকে সরিয়ে নিলাম। ওনার কথা গুলো শুনে এমন রাগ উঠে গেল। নিজের অজান্তেই ওনার গালে চড় মেরে বসলাম)
এটা কি করলাম আমি? (মনে মনে)
তানভীরঃ তুমিও তোমার আসল রুপ দেখিয়ে দিলে। সব মেয়েরাই সমান হয়।মেয়েরা কাউকে মন থেকে ভালোবাসতে জানে না।
আমিঃ ওনার কথা গুলো আমার সহ্য হচ্ছিল না। আমি পার্টি থেকে বের হয়ে চলে আসলাম।
ইমনঃ তানভীর এসব কি করলি তুই। তুই কোনো দিনও ডিংক্স করিস নি। আজ ফাস্ট ডিংক্স করে নেশার ঘোরে ভাবিকে যা তা বললি।
জিসানঃ তানভীর তুই কাজটা ঠিক করিস নি।
তানভীরঃ( ঠিক হয়ে দাঁড়াতে পারছে না)
আমি যা করছি একদম ঠিক করছি। ও আমাকে ভালোবাসে না। ও একটা ধোঁকাবাজ।
জিসানঃ ইমন তুই তানভীরকে বাসায় দিয়ে আস।নেশার ঘোরে ও কি করছে তা ওর কোনো খেয়াল নেই। আর তোরা তানভীরকে ডিংক্স করতে দিলি কেন?
সকালে……
তানভীরঃ উফফ।।। মাথাটা কেমন ভারী ভারী লাগছে। মাথা ব্যাথায় ছিড়ে যাচ্ছে। এমন লাগছে কেন। কাল পার্টিতে কি হয়ছে কিছুই তো মনে নেই। সামিহা কোথায়?
মামনি… মামনি সামিহা কোথায়?
মামনিঃ আমাকে কেন জিঙ্গেস করছিস তুই ই তো ভালো জানিস সামিহা কোথায়?
তোকে আমার ছেলে বলতে ও আমার ঘৃণা হচ্ছে। এই জন্যই তোকে বাহির পাঠিয়েছিলাম।
তানভীরঃ এমন করে কথা বলছো কেন। আমি কি করছি?
তুহিঃ দেখো মামনি এমন ভাব করছে। মনে যেন কিছুই জানে না।
মামনিঃ কি করছিস তুই। কাল রাতে পার্টিতে ডিংক্স করে সবার সামনে সামিহাকে যা তা বলে অপমান করেছিস।রাতে তোর ফ্রেন্ডরা তোকে বাসায় দিয়ে গেছে যখন তুই মাতাল অবস্থায় ছিলি।
সামিহা রাতে বাসায় আসেনি। মনে হয় ওর বাবার বাসায় চলে গেছে। ওকে একটা ফোন ও করতে পারিনি। কোন মুখ নিয়ে ওর কাছে ফোন দিব।ওর বাবা মা কেই বা কি বলবো।
তানভীরঃ( মাথায় হাত দিয়ে সোফায় বসে পড়লাম।এটা কি করেছি আমি। আল্লাহই জানে আমি নেশার ঘোরে সামিহা কে এমন কি কি বলেছি যার কারনে ও বাসায় আসলো না। না এখন রাতের কথা ভাবলে হবে না। এখন সামিহাদের বাসায় গিয়ে ওকে সরি বলে বাসায় ফিরিয়ে আনতে হবে। আর দেরি করা যাবে না।
আমি বসা থেকে দাড়িয়ে কারের চাবি নিয়ে বাসা থেকে বের হতে লাগলাম)
মামনিঃ কোথায় যাচ্ছিস আবার। আর কি করা বাকি আছে?
তানভীরঃ তোমার বৌমাকে ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছি। ওকে নিয়েই বাসায় ফিরবো।
(কারে বসে ভাবছি।। সামিহা আমাকে হ্মমা করবে তো।
ও কি আমার সাথে বাসায় ফিরে আসবে?)
আমিঃ চোখ খুলে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।চারিদিকে শুধু অন্ধকার।মাথাটা ভারী ভারী লাগছে।কাল আমি পার্টি থেকে বের হয়ে রুড দিয়ে হাঁটার সময় কিছু লোক আমাকে জোর করে কারে তুলে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিল।
তার পর তো আর কিছুই মনে নেই।
আমি যেই উঠতে যাবো তখন মনে হলো আমার হাত পা বাঁধা।
কোথায় আমি। কে আমাকে এখানে নিয়ে আসলো?
এমন অনেক প্রশ্ন মাথায় ঘুর পাক খাচ্ছিল।।
তানভীরঃ সামিহাদের বাসায় এসে কলিংবেল বাজাচ্ছি।
আন্টি এসে দরজা খুললেন।
আন্টিঃ আরে তানভীর এতো সকাল সকাল। ভেতরে এসো।
তানভীরঃ না আন্টি এখন ভেতরে আসবো না। আন্টি একটু সামিহাকে ডেকে দিবেন।
আন্টিঃ সামিহা। সামিহা কে কোথায় থেকে ডেকে দিব বাবা?
তানভীরঃ কেন ও আপনাদের বাসায় আসেনি?
আন্টিঃ না তো। ও কি তোমাদের বাসায় নেই। কোথায় গেছে সামিহা?
তানভীরঃ না আন্টি তেমন কিছু না। আচ্ছা আন্টি এখন আমি আসি পরে কোনো দিন আবার আসবো।
আমি কার ড্রাইভ করতে লাগলাম। কোথায় গেল সামিহা। কোথায় খুঁজব ওকে? ওকে এমন কি বলেছি যার কারনে ও রাগ করে কোথাও চলে গেল। ফোনটা বেজে উঠলো।
জিসান ফোন দিছে কেন?
ফোন হাতে নিয়ে।।।।। হ্যা জিসান বল।
জিসানঃ তোর সাথে কিছু কথা ছিল যা জন্য ফোন দিছি। তুই আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবি?
তানভীরঃ দেখ জিসান সামিহাকে খুজে পাচ্ছি না। এখন আমি তোর সাথে দেখা করতে পারবো না।
জিসানঃ আমি সামিহার ব্যাপারেই কথা বলবো।
তানভীরঃ সামিহার ব্যাপারে?
আচ্ছা কোথায় দেখা করবি বল।
(জিসানের সাথে দেখা করতে গেলাম)
কি হয়েছে বল।
জিসানঃ তোর সাথে কথা বলার কোনো ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু কিছু কথা না বলে পারছি না। তুই কাল রাতে পার্টিতে যা করছিস তা একদমই ঠিক হয়নি।
কাল সামিহা একা একা দাঁড়িয়ে ছিল তাই আমি সামিহা কে নিহার কাছে নিয়ে যাই।
তানভীরঃ নিহা কে?
জিসানঃ আমার ওয়াইফ নিহা। তুই হয়ত জানিস না আমি আর নিহা বিয়ে করেছি।
তানভীরঃ আমাদের সাথে কলেজে পড়তো ঐ নিহা?
জিসানঃ হুম।। এখন শুন কাল সামিহাকে নিহার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
কাল রাতে পার্টিতে।।।।
ভাবী এ হলো আমার ওয়াইফ নিহা।নিহা এ হচ্ছে আমার ফ্রেন্ড তানভীরের ওয়াইফ সামিহা।
নিহাঃ হাই ভাবী কেমন আছেন?
সামিহাঃ আমি ভালো আছি আপনি কেমন আছেন?
(এর মধ্যেই মিউজিক শুরু হয়ে গেল)
জিসানঃ মিসেস জিসান আমরা কি ডান্স করবো?
নিহাঃ এখন আমি ডান্স করবো না। তুমি তো আমার অবস্থা জানোই। এই অবস্থায় তুমি আমাকে ডান্স করাতে চাও?
সামিহাঃ কেন আপু কি হয়েছে?
জিসানঃ আমার ওয়াইফ প্যাগনেন্ট।
সামিহাঃ ওহহ
জিসানঃ আমাদের বাচ্চার আম্মু আমি কি আপনার অনুমতি নিয়ে সামিহা ভাবীর সাথে ডান্স করতে পারি?
নিহাঃ (এক গাল হেসে) কেন নয়।অফকোর্স পারবে। আমি ডান্স করতে পারবো না তা বলে কি তুমি ও ডান্স করবে না। তুমি ভাবীর সাথে ডান্স করতে পারবে। এতে আমার কোনো প্রব্লেম হবে না।
সামিহাঃ অবাক হয়ে নিহা আপুর দিকে তাকিয়ে আছি।
নিহাঃ কি হলো ভাবী এভাবে কি দেখছেন?
আরে ভাববেন না আমার হাজব্যান্ড আমাকে অনেক ভালোবাসে।ও আমাকে ছাড়া অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকাবে ও না। আর তাকালে ও বোন মনে করে দেখবে।( হেসে হেসে)
জিসানঃ বোন মনে না করে কি উপায় আছে। আমাকে তো বাসায় থাকতে হবে।
নিহাঃ জিসান।
জিসানঃ আচ্ছা বাবা। এখন আমি আর ভাবী একটু ডান্স করি তুমি আর আমার বেবী দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখো।
সামিহাঃ ভাইয়া আমি ডান্স করবো না। আমি ডান্স করতে পারি না।
জিসানঃ নো প্রব্লেম ভাবী আমি শিখিয়ে দিব।চলুন তো আপনি শুধু আমার সাথে দাড়িয়ে থাকবেন।
.
.
.
আর তুই সামিহা ভাবীকে ভুল বুঝে যা নয় তাই বললি।
তানভীরঃ( জিসানের কথা শুনে আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।আমি হাঁটু গেড়ে নিচে বসে পড়লাম। রাতে পার্টিতে কি হয়েছে তা একটু একটু মনে আসছে। এটা কি করলাম আমি)
জিসান দোস্ত তুই আমাকে হ্মমা করে দিস।আমি কিছু না জেনেই তোর গায়ে হাত তুলছি।প্লিজ দোস্ত আমাকে হ্মমা করে দিস।
জিসানঃ আমি জানি তুই রাতে যা করেছিস তা তুই জেনে করিস নি। আমি তো তোর ফ্রেন্ড আমি তোকে না জানলে কে তোকে জানবে। ডিংক্স করার কারনে তুই এসব করেছিস।আমি তোকে হ্মমা করবো কি করে আমি তো রাগ করিনি।কিন্তু ভাবী হয়ত রাগ করছে।
তানভীরঃ (জিসানকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম)
থেক্স দোস্ত তোর মত বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।
আমিঃ( হঠাৎ করে রুমের দরজা খোলার শব্দ পেলাম। কে আসছে? তারাতারি করে চোখ অফ করে নিলাম।কেউ একজন রুমে এসে লাইট অন করে আমার পাশে বসলো। আমার মাথায় হাত দিয়ে চুলে বিলি কেটে দিয়ে বলতে লাগলো)
;- আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি তা তুমি কোনো দিন ও বুঝনি।আমি তোমার জন্য সব কিছু করতে পারি তা তুমি কেন বুঝ না।
এটা তো নাহিদের কন্ঠ। তার মানে নাহিদ আমাকে এখানে নিয়ে আসছে। ওর উদেশ্যটা কি।আমাকে এখানে কেন নিয়ে আসছে?( মনে মনে)
নাহিদঃ সেই স্কুল লাইফ থেকে আমি তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু তুমি।
তুমি ঐ আলিফকে ভালোবাসছো।কি করবো আমি বলো।তোমার জন্য আমি কতো কি করছি। শুধু তোমার জন্য আমাকে র্নিদোষ একটা মানুষকে মেরে ফেলতে হলো।তোমার জন্যই তো আমি আলিফের মাডার করতে হলো।
আমিঃ কি বললো নাহিদ? ও আলিফের মাডার করেছে। তার মানে আলিফ এক্সিডেন্ট করে মারা যায়নি।ওকে মেরে ফেলা হয়েছে।(মনে মনে)
(আমি চোখ খোলে শুয়া থেকে বসতে বসতে)
তুই আলিফকে হত্যা করেছিস। আলিফের এক্সিডেন্ট হয়নি। তুই ওর এক্সিডেন্ট করিয়েছিস।আমি তোকে ছাড়বো না। তুই একটা খুনি। আমি তোকে জেলে দিব।
চলবে…..
first love….
Samira Afrin Samia (nipa)
Part: 26
নাহিদঃ জনি আমার জানের হাত কে বাঁধছে?
জনিঃ ভাই আমি।
আমিঃ নাহিদ ছেলেটা কে ঠাস করে একটা চড় দিয়ে নিচে ফেলে দিল। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। নাহিদের এমন রুপ আগে কখনও দেখিনি।
নাহিদঃ দেখতে পারছিস না। আমার জানের কষ্ট হচ্ছে।(আমার হাতের বাঁধন খুলতে খুলতে)
তুমি যখন সব শুনে নিছো তাহলে একটু ভালো ভাবেই শুনো।আমি যে দিন জানতে পারলাম তুমি আলিফকে ভালোবাসো ঐ দিনই তোমার সাথে দেখা করতে যাই।তুমি বলেছিলে তুমি আলিফ কে বিয়ে করবে ঐ দিনই আমি ঠিক করে নেই আলিফ কে তোমার লাইফ থেকে সরিয়ে দিব।আলিফ যে দিন তোমাদের বাসায় যাচ্ছিল ও রোড ক্রস করার সময় একটা কার খুব দ্রুত এসে ওকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। যা আমার বলাতে ই হয়েছিল। ভেবে ছিলাম আলিফ মারা যাওয়ার পর তোমার সামনে গেলে তুমি আর আমাকে ফিরিয়ে দিবে না। কিন্তু আমি তোমার কাছে যাওয়ার আগেই তোমার বাবা মা তানভীরের সাথে তোমার বিয়ে দিয়ে দিল।তানভীরকে ও মারার চেষ্টা করছি কিন্তু ঐদিন ওর ভাগ্য ভালো ছিল তাই বেঁচে গেছে।
দেখলে তো সুইট র্হাট তোমার জন্য আমি কতো কিছু করেছি। তার পর ও তুমি আমাকে ভালোবাসো না।
এবার যেভাবেই হোক তোমাকে আমার করে নিবোই।
আমিঃ তুই পাগল হয়ে গেছিস। তুই একটা সাইক্রো। তুই আমার থেকে আলিফকে দূরে সরিয়ে দিছিস।তুই আমার থেকে আমার ভালোবাসা কেড়ে নিছিস।এখন আবার আমার স্বামীর হ্মতি করতে চাইছিস।(কান্না করতে করতে)
নাহিদঃ জান কান্না করো না প্লিজ। তোমার কান্না আমি সহ্য করতে পারি না। জনি আমার জানের জন্য খাবার নিয়ে আয়।কাল থেকে না খেয়ে আছে। জান তুমি এখানে থাকো আমি খুব দ্রুত আমাদের বিয়ের আয়োজন করব।
আমিঃ বিয়ে?
আমি তোকে বিয়ে করবো এটা তুই ভাবলি কি করে।তুই আমার থেকে আমার ভালোবাসা কেড়ে নিছিস।তুই একটা খুনি। আর তাছাড়া আমার বিয়ে হয়ে গেছে। আমার স্বামী আছে। আর উনি এসে ঠিক আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাবেন।
নাহিদঃ(হেসে হেসে) তোমার হাজব্যান্ড তোমাকে নিতে আসবে।কি করে নিতে আসবে?
তোমার হাজব্যান্ড তো জানেই না তুমি যে এখানে আছো।আর যদি এখানে এসেও পড়ে তাহলে আর বেঁচে ফিরতে পারবে না।
আমিঃ (আমার হাতের বাঁধন খুলে দিলে আমি দৌঁড়ে রুম থেকে বের হতে চাইলে নাহিদ আমার হাত ধরে ফেললো।আমি নাহিদের গালে চড় মেরে দিলাম)
আমাকে ছাড় বলছি। আমি বাসায় যাবো। তুই খুনি আমি তোকে জেলে দিব।
নাহিদঃ (সামিহা কে এক ধাক্কায় বেডে ফেলে দিলাম)
অনেক সাহস হয়েছে তোমার। অনেক কথা বলছ।তোমার এই থাপ্পড়ের শোধ তো আমি তুলবই।
জনি এর হাত পা বেঁধে রাখ অনেক সহ্য করছি আর না। দেখবি ও যেন পালাতে না পারে।
কালই আমি তোমাকে বিয়ে করবো।
আমিঃ (নাহিদ রুমের দরজা লাগিয়ে দিয়ে চলে গেল)
এখন আমি কি করবো। উনি জানবেন কি করে আমি এখানে আছি।কোথায় উনি। আমি কি করে উনার কাছে যাবো?
আমার ব্যাগ কোথায়? আমার ফোনটা পেলে তো উনাকে জানাতে পারতাম।
তানভীরঃ( কার ড্রাইভ করে পাগলের মত সামিহা কে খুজচ্ছি কিন্তু কোথাও নেই ও।কোথায় গেল সামিহা। পার্টি থেকে বের হয়ে কোথায় চলে গেল ও।রোডের সাইডে কার থামিয়ে একটা দোকানের লোক কে সামিহার পিক দেখিয়ে সামিহার কথা জিজ্ঞেস করলাম। এভাবে কয়েক জন কে জিঙ্গেস করলাম। কিন্তু কেউই সামিহার কথা বলতো পারলো না। রোডে বসে গেলাম। চিৎকার দিয়ে)
কোথায় খুঁজব আমি তোমাকে?
আমিঃ কাল রাতে ঐ ঘটনার পর কি উনি আমাকে খুজতেছেন।আমি যে বাসায় যাইনি এটা কি উনি জানেন। উনি আমাকে কিভাবে খুঁজবেন। আমি এখান থেকে কি করে বের হবো?
কিছুক্ষণ পর…..
নাহিদঃ সুইট র্হাট তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসছি খেয়ে নেও। দাঁড়াও আমি তোমাকে খাইয়ে দেই।তুমি কতটা রোগা হয়ে গেছ দেখতো।মনে হয় ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করো না। নিজের খেয়াল রাখতে পারো না।
আমিঃ আমি মরে যাব পরেও তোর হাতে খাবো না। তুই একটা সাইক্রো।
নাহিদঃ আমার অনুমতি ছাড়া তুমি যে এখন মরতে ও পারবে না সুইট র্হাট।
এই জনি পেপারটা আন।সামিহার দিকে পেপার এগিয়ে দিয়ে। এই নেও এটা তে একটা সাইন করে দেও।
আমিঃ কিসের পেপার এটা?
আমি কোনো পেপারে সাইন করবো না।
নাহিদঃ এটা ডিবোস পেপার। এটাতে তোমাকে সাইন করতেই হবে তা না হলে যে আমি তোমার বাবাইয়ের কোনো হ্মতি করে দিব।(হাসতে হাসতে)
আমিঃ তুই মানুষ না জানোয়ার।তুই আমার বাবাইয়ের কিছু করবি না। আমার বাবাইয়ের কিছু হলে আমি তোকে ছাড়বো না।
নাহিদঃ আচ্ছা যাও তোমার বাবাই কে আমি কিছু করবো না। তাহলে তো তোমাকে এই পেপারে সাইন করতে হবে আর লক্ষী মেয়ের মতো এই খাবার গুলো খেতে হবে।
তানভীরঃ অনেক জায়গায় খুজেও সামিহা কে পাইনি।থানায় ওর মিসিং কেস ফাইল করলাম। যত দ্রুত সম্ভব ওকে খুজে বের করার চেষ্টা করছে।
সামিহা কি রাগ করে কোথাও চলে গেল নাকি ওর কিছু হয়েছে।ওর কিছু না হলে রাগ করে এতদিন বাসায় না এসে থাকবে না। আমার মন বলছে সামিহা কোনো বিপদের মধ্যে আছে।
সামিহা তুমি কোনো চিন্তা করো না। যে করেই হোক তোমাকে আমি খুজে বের করবো।
থানা থেকে অফিসার ফোন দিছে। সামিহাকে খুঁজে পাওয়া গেল নাকি?
ফোন রিসিভ করলাম।।।
হ্যা…. অফিসার সামিহার কোনো খোঁজ পাওয়া গেছে?
অফিসারঃ আমরা যেটুকু জানতে পেরেছি তাতে বুঝা যায় আপনার ওয়াইফ কে কেউ কিডন্যাপ করেছে। আমরা পার্টির সিসিটিভি ফুটেজ কালেক্ট করেছি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে কিছু লোক আপনার ওয়াইফ কে জোর করে একটা গাড়িতে তুলছে।গাড়িটা কার তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছি আশা করি খুব শিগ্রী আপনার ওয়াইফ কে ও খুজে পাবো।
তানভীরঃ প্লিজ অফিসার যত দ্রুত সম্ভব আমার ওয়াইফ কে খুজে বের করুন।
ফোন রেখে আমি বেডে বসে গেলাম। আজ সামিহার কথা অনেক মনে পড়ছে। আমার সাথে বেড নিয়ে কত ঝগড়া করছে। আমার উপর সাপ ছেড়ে দেওয়া থেকে শুরু করে ওর সাথে কাটানো প্রতিটা মূহুর্ত আমার চোখের সামনে ভাসছে। সামিহার কিছু হবে না তো। কে ওকে কিডন্যাপ করতে পারে?
আমিঃ আমাকে এখান থেকে বের হতে হবে।যে করেই হোক আমাকে এখান থেকে বের হওয়ার রাস্তা বের করতে হবে। (মনে মনে)
আমি পানি খাবো। কেউ আছো আমাকে পানি দিয়ে যাও।
জনিঃ (রুমের বাহির থেকে)ভেতরে পানি রাখা আছে খেয়ে নিন।
আমিঃ আমার হাত বাঁধা আমি পানি নিবো কিভাবে? আমার হাত খুলে দেও। আমি পানি খাবো।
জনিঃ সরি ভাবী আমি আপনার হাত খুলে দিলে ভাই আমাকে মেরেই ফেলবে।
আমিঃ কি ছাতার ভাবী ভাবী করছে। আমি এর কোন জন্মের ভাবী ছিলাম। ইচ্ছে করছে এর মাথা ফাটিয়ে দেই।(মনে মনে)
আইডিয়া টা তো খারাপ না……..
এখন যদি আমি পানি খেতে না পারি। আর আমি যদি নাহিদ কে বলি তোমার জন্য আমি পানি খেতে পারিনি। তুমি আমাকে পানি দেও নি। তোমার জন্য আমার কষ্ট হয়ছে। তখন নাহিদ তোমার কি হাল করতে একবার ভেবে দেখো।
সকালের থাপ্পড়ের কথা মনে আছে তো?
জনিঃ (সকালের কথা মনে করে গালে হাত দিয়ে)
সত্যিই তো ভাই যদি জানতে পারে আমি ভাবীকে পানি দেইনি। তাহলে তো আমাকে মেরেই ফেলবে। (মনে মনে)
আমিঃ কি হলো আমার হাত কি খুলে দিবে নাকি আমি নাহিদ কে বলবো?
জনিঃ (রুমের ভেতরে এসে)
একটু দাঁড়ান ভাবী এখনই আপনার হাত খুলে দিচ্ছি।
আমিঃ (হাত খুলে দেওয়ার পর….
আমাকে এক গ্লাস পানি এনে দেও।জনি পিছন ফিরে যেই পানি আনতে যাবে ঠিক তখনই চারপাশে তাকিয়ে নিচে ছোট একটা ফুলের টপ দেখতে পেলাম। ঐ টপ টা হাতে নিয়ে পিছন থেকে জনির মাথায় মেরে দিলাম। জনি চিৎপটাং হয়ে নিচে পড়ে গেল।)
এই যা খুব জোরে মেরে দিলাম নাকি।বেঁচে আছে তো?
এখন এতো কিছু ভাবার সময় নেই।
আমি জনির ফোন নিয়ে বাবাইয়ের কাছে ফোন দিলাম। কি হলো বাবাই ফোন ধরলো না কেন। ওনার কাছে ফোন দিব নাকি?
এতকিছু না ভেবে দিয়েই দেই।
তানভীরঃ আমি কার ড্রাইভ করছি এমন সময় আননোউন নম্বর থেকে ফোন আসলো।
দুই বার রিং হওয়ার পর ফোন রিসিভ করলাম।
….হ্যালো কে?
আমিঃ রাখেন আপনার হাই হ্যালো।আমি যে কিডন্যাপ হয়ে গেছি তা কি আপনি জানেন?
তানভীরঃ (ফোনের ওপাশ থেকে সামিহা কথা বলছে) তুমি এখন কোথায়। এটা কার নম্বর থেকে ফোন করছ।তুমি ঠিক আছো তো।আর কে তোমাকে কিডন্যাপ করছে?
আমিঃ আমি এখন জাহান্নামে।।। কি সব আজাইরা কোয়েশন করছেন?
আমি কিডন্যাপ হয়েছি আর আপনি জিঙ্গেস করছেন আমি কোথায়, এটা কার নম্বর, আমি ঠিক আছি কি না আর কে আমাকে কিডন্যাপ করছে?
কিডন্যাপ হলে কি কেউ ঠিক থাকে?
কোথায় আছি তা জানলে কি আমি এখনও এখানে আছি।
ঐ নাহিদ কুত্তার ডিম টা আমাকে এখানে আটকে রাখছে। আপনি আমাকে এখান থেকে নিয়ে যান প্লিজ।
তানভীরঃ নাহিদ।।। ঐ নাহিদ কে তো আমি ছাড়বো না।তুমি কোথায় আছো আমাকে বলো। আমি এখনই আসছি। তুমি ভয় পেয় না আমি তোমাকে নিতে আসছি।
আমিঃ আমি কিডন্যাপ হয়েছি দুদিন হলো আর আপনি এখন আসছেন।
আপনি এই দুদিন আমাকে একটু ও খুঁজেন নি?
তানভীরঃ স্টুপিডের মত কথা না বলে এটা বলো এখন তুমি কোথায় আছো।
আমিঃ আমি জানিনা আমি কোথায় আছি।
তানভীরঃ চারপাশে দেখো কি আছে। ভালো করে দেখে বলো এটা কোন জায়গা?
আমিঃ নাহিদ আমাকে একটা রুমে আটকে রাখছে। আমি কিছু চিনতে পারছি না।
আপনি এসে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যান। আমার অনেক ভয় লাগছে।
(হঠাৎ করে কে যেন আমার হাত থেকে ফোন নিয়ে গেল।পিছনে ফিরে দেখি নাহিদ। নাহিদ ফোনটা ফ্লোরে ছুড়ে ফেলে দিল।ফ্লোরে ফেলে দেওয়ার ফলে ফোনটা কয়েক টুকরো তে পরিণত হলো )
নাহিদঃ তোমার তো দেখছি অনেক সাহস। তোমার হাজব্যান্ড কে ফোন দিছো তো। আচ্ছা ঠিক আছে আজ তোমার হাজব্যান্ডকে তোমার সামনে মাডার করবো।তার পর তোমাকে বিয়ে করবো।
(জনির মুখে পানি ছিটিয়ে ওর জ্ঞান ফিরালাম)
জনি বিয়ের আয়োজন কর আমি আজই সামিহা কে বিয়ে করবো।
চলবে……..