#শহর_জুড়ে_আলোর_মেলা
কলমে:লাবণ্য ইয়াসমিন
পর্ব:2
নীরা ভুল মানুষকে ভালোবাসে অকালে জীবন দিয়েছে। ফল ভোগ করছে ওর কাছের মানুষগুলো। সবচেয়ে কষ্টের বাচ্চা মেয়েটাকে সামলানো। মায়ের বুকের উষ্ণতা সে গভীরভাবে অনুভব করতে পারে। গতকাল থেকে মাকে কাছে না পেয়ে একভাবে চিৎকার করছে।। মানুষ যখন অসহায় হয়ে পড়ে তখন কিছু স্বার্থপর লোকেরা সুযোগ নিতে চেষ্টা করে। লতিফ সাহেবের দিশাহারা অবস্থা। আলোর মামা মামি রাত থেকে সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। ছেলের সামান্য ত্রুটি আহামরি কিছু না। ডাক্তার দেখানো হচ্ছে ভালো চিকিৎসা হলে সুস্থ হয়ে উঠবে। এটা ওটা বলে বীণাকে বুঝিয়েছে। ভাইয়ের প্রতি দূর্বল থাকার দরুন উনি সহজে রাজি হয়েছেন কিন্তু মতামত প্রকাশের সাহস পাচ্ছে না। সেবার নীরার বিয়ের সময় লতিফ সাহেবকে বুঝিয়ে রাজি করানোর পর যথেষ্ট শিক্ষা হয়েছে। স্ত্রী মানুষের বুদ্ধি ভয়ঙ্কর হয়। আলোর বিয়ে নিয়ে আপাতত উনি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। ফায়জু বোনের বিয়ে সম্পর্কে উদাসীন। বাবার উপরে ছেড়ে দিয়েছে। সদ্য সন্তান হারা মধ্য বয়সী লতিফ সাহেব কি করবেন বুঝে উঠতে পারছে না। শালক যে আলোকে ছাড়া ফিরবে না সেটা ভালো করে বোঝা যাচ্ছে। উনি চোখ বন্ধ করে হাক ছাড়লেন,
> মা আলো,এঘরে একবার আসবে?
আলো ইশাকে নিয়ে বসে ছিল। গত দুদিন ঘুম হয়নি। বোনের জন্য কান্নাকাটি করে কণ্ঠ বসে গেছে, আওয়াজ আসছে না। ক্লান্ত শরীর চোখ জ্বলছে। ইশা ওকে ছাড়া থাকতে চাইছে না। আলো বাবার ডাক শুনে ইশাকে বিছানায় রেখে চুপচাপ পাশের কক্ষে গিয়ে হাজির হলো। শুকনো মুখে লতিফ সাহেব দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে। গতকাল বাবার প্রতি যে রাগটা ছিল আজ আর নেই। একজন পিতা কখনও তার কন্যার ক্ষতি চেয়েছে এরূপ ইতিহাসে বিরল। আলো বাবার পাশে বসে কোমল কণ্ঠে বলল,
> কিছু বলবে বাবা? বুবুর ভাগ্যে যা ছিল তাই হয়েছে। তুমি অহেতুক নিজেকে দোষারোপ করোনা। তোমার কষ্ট আমি বুঝি বাবা। বুবু ভুল মানুষকে পছন্দ করে নিজের বিপদ নিজে ডেকেছিল তুমি আমি কি করতাম বলো?
লতিফ সাহেব মলিন হাসলেন। পরিস্থিতি মানুষকে পরিবর্তন করে তুলে। মেয়েটা নিজের চোখের পানি আড়াল করে উনাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে বুঝতে বাকী নেই। উনি আলগোছে ডান হাতটা মেয়ের মাথার উপরে রেখে বললেন,
> আমার অবস্থা তোমার অজানা না। সংসারে যেটুকু অতিরিক্ত অর্থ ছিল সবটা তোমার বুবুর জন্য খরচ করেছি। ফায়জুর প্রাইভেট বইপত্র ওর পেছনে প্রতি মাসে বেশ কিছু অর্থ খরচ হচ্ছে আমি শুধুমাত্র তোমার দায়িত্ব পালন করতে পারিনি মা। আমার প্রতি তোমার অনেক অভিযোগ। আমি সব সময় মেজাজ নিয়ে কথা বলি, অশান্তি করি। ঋণের বোঝা মাথার উপরে পাওনাদারদের কটুক্তি শুনে নিজেকে স্থির রাখতে পারিনা। যেটুকু মজুরি পাই সংসারের খরচ চালিয়ে উঠতে পারিনা। দেনা পরিশোধ কিভাবে করব?অতিরিক্ত মানুষিক টেনশনে আমি এমন ব্যবহার করি। যাইহোক তোমাকে যে জন্য ডেকেছি।রেজার জন্য তোমার মামা তোমাকে চেয়েছেন। আমি রাজি না হলে তোমার সব খরচ হয়তো উনি বন্ধ করে দিবেন। আমি চাইছি না অনিশ্চিত জীবনে তুমি পা রাখো। ছেলেটা নিঃসন্দেহে ভালো কিন্তু ভাদ্র মাস আসলে পাগলামি শুরু করে। মানুষ খু*ন অবধি করতে পারে। আরও দুজন তোমাকে বিয়ের প্রস্তাব রেখেছে। হয়তো বাকীটা তোমার মায়ের থেকে শুনে থাকবে। এখন তোমার মতামত কি? আমি অসুস্থ যেকোনো সময় যা কিছু হতে পারে। আমি চাইছি আমার মেয়েটার একটা গতি হোক। বুঝেছো আমার কথা?
লতিফ সাহেব হাপাচ্ছেন। ভদ্রলোক লিভারের জটিল সমস্যাতে আক্রান্ত। বছরের বেশিরভাগ সময় অসুস্থ থাকেন। আলো বাবার দিকে চেয়ে ঠোঁট চেপে কান্না আটকে বলল,
> বিয়ে হলেই কি আমার গতি হবে বলে তোমার মনে হচ্ছে বাবা? তবে বুবুর গতি তবে কেনো হলোনা ? বুবু নেই বাবা,আমি মানতে পারছি না। ওরা একটু একটু করে বুবুকে শেষ করে দিয়েছে।
আলোর চোখে পানি দেখে লতিফ সাহেব কেঁদে ফেললেন। আলোর হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললেন,
> মা পৃথিবীর সবাই কি এক রকম? তুমি ভেবে সিদ্ধান্ত জানাও আমি জোর করবোনা।
আলো বাবার দিকে চেয়ে চোখের পানি মুছে উত্তর দিলো,
> এই পরিবারের উপরে আমার দায়িত্ব আছে। তুমি ইকবাল মাহমুদকে খবর দাও আমি কথা বলব। উনি আমার শর্তে রাজি হলে আমি উনার ছেলেকে বিয়ে করবো। বাকী প্রস্তাবগুলো ফিরিয়ে দেবার কারণ তোমার জানা।
> জোর জবরদস্তি করছি না তুমি সময় নিয়ে ভাবো।
আলো মাথা নাড়ালো। বলল,
> ভেবেছি, তুমি খবর দাও।
আলো বাকীটা বলতে পারলোনা। ওঘর থেকে ইশার কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। তাড়াতাড়ি করে সেদিকে ছুটে গেলো। লতিফ সাহেব ফোন বের করলেন। এই মূহুর্তে উনি অনেকের কাছে স্বার্থপর হিসেবে পরিগণিত হবেন কিন্তু এছাড়া যে কিছু কারার নেই।
***
পড়ন্ত বিকেল,ইশাকে ঘুম পাড়িয়ে কপালে টিপ পরানোর সময় ঘরে প্রবেশ করলো আলোর মামি জুলেখা বেগম। আলো সেদিকে চেয়ে আবারও নিজের কাজে মনোযোগ দিলো তখনই আওয়াজ আসলো,
> আলো মা তুমি ইশার সঙ্গে এভাবে জড়িয়ে পড়ছো কেনো? যাদের জন্য আমাদের মেয়েটা আজ পৃথিবীতে নেই আমরা তাদের মেয়েকে কেনো পালন করবো বলো? ওকে ওর বাপের কাছে পাঠিয়ে দাও। আমি ভাইজানের সঙ্গে কথা বলবো। মায়া বাড়িয়েতো লাভ নেই।
আলো বিস্ময়কর দৃষ্টিতে চেয়ে ভ্রু কুচকে বলল,
> মামি ও আমার বুবুর অংশ। ওর দিকে চাইলে বুবুকে আমি অনুভব করতে পারি। তুমি কিভাবে বললে এমন কথা? ওকে আমি দিতে পারবোনা। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ওকে নিজের মেয়ের মতো পালন করবো। ও আমার মেয়ে হয়ে নিজেকে চিনবে।
ভদ্রমহিলা আলোর উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। বোঝাতে শুরু করলে,
>আমার রেজার অবস্থা তুমি জানো। ওর মাথা যখন ঠিক থাকে না তখন উল্টোপাল্টা কাজ করে। বাচ্চাদের পছন্দ করে না। আমি চাইছি না এই বাচ্চা আমার বাড়িতে গিয়ে উঠুক। ওর বাপ একটা প*শু। ওর র*ক্ত খারাপ। এই র*ক্ত আমার ছেলের নাম খারাপ করবে আমি মানতে পারবোনা।
ভদ্রমহিলার কথা শুনে আলো হাসলো। ইশার কপালে ছোট করে চুমু দিয়ে বলল,
> আপনি ভাবছেন কেনো আমি বা ইশা আপনাদের বাড়িতে যাচ্ছি? মামি ওকে বা আমাকে নিয়ে ভাববেন না। আপনি বরং রেজা ভাইকে নিয়ে ভাবুন। ভাদ্র মাস আসতে একদিন বাকি আছে। বাড়িতে চলে জান। বেচারা পাগল হয়ে বড় ভাবির বাচ্চার মতো আবার কার বাচ্চার সর্বনাশ ঘটিয়ে ফেলবে তখন আফসোস করতে হবে। বড় ভাবি নিজের মানুষ। সংসার বাঁচাতে দাঁতে দাঁত চেপে চুপ থাকতে হচ্ছে অন্যরা কিন্তু চুপ থাকবে না। বুঝেছেন আমার কথা?
আলোর মুখে হাসি বিরাজ করছে কিন্তু কণ্ঠে যে কি ছিল সেটা শুনে ভদ্রমহিলা কেঁপে উঠলেন। সেই আমোঘ সত্যি বাড়ির চার দেয়াল ছাপিয়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছে। উনি দ্বিতীয়বার আর কথা বলার ভাষা খুঁজে পেলেন না। চুপচাপ প্রস্থান করলেন। আলো তাচ্ছিল্যপূর্ণ হেসে মিনমিন কণ্ঠে বলল,
“পাপ কখনও চাপা থাকে না”
*******
ইকবাল মাহমুদের সম্মুখে বসে আছে আলো। মাথায় ছোট করে ঘোমটা টানা। গায়ে কালো রঙের খুব সাধারণ একটা থ্রিপিচ। মুখে বিষাদের চিহ্ন। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। পাশের কক্ষে ওর মামার সঙ্গে বাবার প্রচুর তর্কবিতর্ক হচ্ছে।নীরবতা কাটিয়ে ভদ্রলোক বলে উঠলেন,
> তোমাকে পুত্রবধূ করতে চাওয়ার কারণ জানতে চাইবে না? তোমার মনে হচ্ছে না দেশে এতো এতো মেয়ে থাকতে তোমাকেই কেনো আমার পছন্দ হলো?
ভদ্রলোকের কথা শুনে আলো মাথা তুলে চাইলো। আড়চোখে তাকিয়ে বলল,
> আপনার ধারণা আমার হাত ধরে আপনার বে*য়া*ড়া ব*খা*টে ছেলে ভদ্র সমাজে পা রাখবে। হয়তো রূপের মোহে নয়তো আমার ব্যক্তিত্বের বন্ধনে উনি আটকা পড়বেন।
আলোর কথা শুনে ভদ্রলোক অমায়িক হাসলেন। রুমালখানা দিয়ে কপাল মুছে উত্তর দিলেন,
> আলো তোমাকে আমি আগে থেকেই চিনি। কিভাবে কখন সেসব প্রশ্ন এখন অবান্তর। যাইহোক তুমি বলো মা এই বিয়েতে তোমার কোনো শর্ত থাকলে বলতে পারো। তবে একটা কথা আমি আমার ছেলের নামে কোনো সুনাম করতে চাইছি না তুমি বরং নিজে থেকে দেখে আর চিনে নিও। ও আর যাইহোক তোমাকে কখনও অসম্মান করবে না এটা আমি গেরান্টি দিয়ে বলতে পারি। ছেলেটা একরোখা যা মনে করে সেটাই করে। বাবাতো নিজের ছেলের ভবিষ্যতের চিন্তা আমাকে ঘুমাতে দেয়না। আমি স্বার্থপরের মতো তোমার দুয়ারে এসেছি।
ইশা ইকবাল সাহেবের কথা শুনে মনে মনে সাহস সঞ্চয় করে বলল,
> ছেলের সন্তান হিসেবে ইশাকে মেনে নিতে পারবেন ? আমাকে পুরোপুরি স্বাধীনতা দিতে পারবেন? আপনি বলেছেন আমার ভাইয়ের একটা গতি করে দিবেন সেটা আপনার একান্ত ব্যক্তিগত কিন্তু আমার বিষয়ে আমি ভীষণ সিরিয়াস আঙ্কেল। আমি পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। অনেক পরিবার আছে বউদের ঘরের শোপিস ভাবে। সেই পরিবারের বউদের ইচ্ছা অনিচ্ছার কোনো দাম নেই। আমি ওরকম জীবন অতিবাহিত করতে পারবো না। আপনাকে কথা দিতে হবে আপনার বাড়িতে আমার সম্মান নিয়ে যেনো টানাটানি করা চলবে না। সবটা মানতে পারলে আপনি বাবার সঙ্গে কথা বলুন। বাকী কথা নাহয় আপনার বাড়িতে গিয়ে বলবো।
আলোর সাবলীল কথাবার্তা শুনে ইকবাল সাহেব উচ্চ শব্দে হেসে উঠলেন। মনে হলো মেয়েটা মজাদার কোনো গল্প শুনিয়েছে। আলোর চোখে মুখে কৌতূহল। আলোকে আরও ভড়কে দিয়ে ভদ্রলোক পকেট থেকে আংটি বের করে ওর হাতে পরিয়ে দিয়ে বলল,
> খুব তাড়াতাড়ি আমাদের দেখা হচ্ছে তখন কিন্তু আঙ্কেল বলা চলবে না। বাবা বলার জন্য প্রস্ততি শুরু করো কেমন?
আলো মাথা নিচু করলো। এই লোক যেকোনো ভাবে নিজের ছেলের জন্য ওকে নিতে প্রস্তুত হয়ে আছে। আলো ভেবেছিল এসব বললে হয়তো রাজি হবে না কিন্তু তেমন কিছুই হলোনা। আলোর বাবার সঙ্গে কথা বলে উনি প্রস্থান করলেন। আলোর মামা মামি সেই সঙ্গে বিদায় নিলেন। বীণা নিঃশব্দে চোখের পানি ফেলছে। ভাই ভাবির বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলো। বাবার ভিটা ভাটিতে পা রাখতে না পারার যন্ত্রণা উনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। আলো চুপচাপ সবটা দেখছে।
*****
নির্জন রাত, ব্যালকনিতে সিগারেটের ধোয়া উড়িয়ে আকাশের দিকে চেয়ে আছে শ্রাবণ। পাশেই প্রাণপ্রিয় বন্ধু রাহিন বসে আছে। নির্জনতা কাটিয়ে রাহিন বলে ফেললো,
> এক বাচ্চার মাকে তুই বিয়ে করবি মাথা ঠিক আছে তোর? আর আঙ্কেল কিভাবে তোর জন্য এরকম মেয়ে দেখতে পারলো? আমাকে বলতে পারতি, আমি মেয়ে দেখতাম। তাছাড়া শ্রাবণ মাহমুদ বিয়ে করবে সেখানে মেয়ের অভাব কিভাবে হতে পারে? শ্রাবণ সময় আছে আঙ্কেলকে বুঝিয়ে বল। লোকজন কি বলবে? আমাদের সোসাইটির সামনে যেতে পারবি?
রাহিনের কথা শুনে শ্রাবণ হাসলো। হাতের সিগারেট ছুড়ে দিয়ে আয়েশি ভঙ্গিতে বসতে বসতে বলল,
> একটা বাচ্চা হলে মেয়েরা কি পচে যায়? অদ্ভুত কথাবার্তা তোর। আর তোদের ভদ্র সোসাইটি আমাকে অনেক আগে থেকেই ব*খাটে বলে আখ্যায়িত করেছে। বখাটের বউ নিশ্চয়ই পৃথিবীর বিখ্যাত সুন্দরী হবে না? বাবা বাদরের গালাতে মুক্তার মামা দিতে চাইছে না। আমিও যেমন আমার বউ হবে সেও তেমন।
> শ্রাবণ মানছি তুই ত্যাড়া মানুষ, সমাজের তোয়াক্কা করিস না। তবুও ভাই আমার মন মানছে না। একটা বাচ্চা আছে না জানি মেয়েটার স্বভাব চরিত্র কেমন।
শ্রাবণ চোখ বন্ধ করে বলল,
> এই বিয়েটা আমি তোদের ভদ্র সমাজের মুখে থা*প্প*ড় লাগানোর জন্যই করবো। চিন্তা করিস না। বাবার ধারণা আমার মতো বে*য়া*দবকে সামলাতে হলে চরম বেয়া*দব মেয়ের প্রয়োজন। উনি কি সব শর্ত দিয়ে মেয়ে রাজি করিয়েছে। আমার শুনেই ভীষণ হাসি পাচ্ছে। শ্রাবণ মাহমুদকে কোনো মেয়ে শর্ত দিয়ে বিয়ে করছে।ভাব আমার অবস্থা কতটা শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে?
রাহিন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। শ্রাবণ একরোখা ছেলে। অন্যায় দেখলে ছোট বড় মানে না। যেখানে সেখানে ঝগড়া ঝামেলা শুরু করে। এই জন্য সুশীল সমাজে ওর বখাটে বলে ভালো নামডাক আছে।কিন্তু ওর সঙ্গে মেয়ে দিবে না এমন না। বাপের টাকা থাকলে বউয়ের অভাব হওয়ার কথাও না। শ্রাবণ পূণরায় সিগারেট জ্বালিয়ে বলল,
> বিয়ে নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। বাবার অনুরোধ শেষ বারের মতো রাখতে রাজি হয়েছি। বিয়েটা শুধুমাত্র বাচ্চাটার জন্য তাছাড়া কিছুই না। রেবার মতো কোনো মেয়ের করুণ পরিণতি হোক আমি চাইছি না।
শ্রাবণ আকাশের দিকে চেয়ে সিগারেটের ধোয়া উড়িয়ে চলেছে। রাহিন ওর মুখের দিকে চেয়ে আছে। শুধুমাত্র একটা বাচ্চার জন্য শ্রাবণের এহেন ত্যাগ কিভাবে ওকে আজীবন সুখী করবে? যেখানে মেয়েটাকে ও চিনে না পযর্ন্ত। টিকবে এই সম্পর্ক? কত বছরের প্রেম ভালোবাসার বিয়ে কয়েক দিনে তিক্ততা এসে যায় আর ফলাফল হিসেবে বিচ্ছেদে রূপ নিয়েছে। সেখানে এই বিয়ের কি মূল্য থাকবে? দুজন মানিয়ে চলতে পরবে?
চলবে