#গল্পঃ_ইচ্ছেটা_তোমারই
#লেখাঃ_মেহেদী_হাসান_রিয়াদ
#পর্বঃ__৮_ও_শেষ
?
আখি চলে গেছে আজ দু,দিন পার হয়ে গেলো। বাবা হারিয়ে আকাশের মন জুরে যেই একটা শুন্যতা গরে উঠেছিলো, সেটা আখি কিছুটা পূর্ন করে তুলেছিলো। সেই আখিও শুন্যতাটা আরো গভির করে দিয়ে চলে গেলো তাকে ছেরে।
রাত তখন ১টা বেজে ৫০ মিনিট। ঘড়ির কাটা টা ঘুরছে আপন গতিতে। একটা নিস্তব্দ কবর মনে হচ্ছে এই বাড়িটাকে। ফিন ফিনে নিরবতা বিরাজ করছে সমস্ত ঘর জুরে।
আগামি কাল আকাশের প্লাইট। মামার কাছে চলে যাচ্ছে সে। হয়তো মন কিছুটা ফ্রেস হবে। তবে কি সব কিছু ভুলে যেতে পারবে সে?
গত চার মাসে ধটে গেছে অনেক কিছুই। তার অন্যতম চরিত্র হচ্ছে আখি।
আচ্ছা জদি আখিকে ফিরিয়ে আনতে যাই তাহলে কি সে আসবে? নাকি ফিরিয়ে দিবে? নাকি আমার সাথে কথাই বলবেনা?
হয়তো সে ফিরবেনা, সে যদি আমাকে চাইতো তাহলে চলে যাওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত একবার হলেও আমাকে বলতে পারতো। তাকে ছেরে দিয়ে ছিলাম তার তার অর্থ এই নয় তাকে চলে যেতে বলেছি। সে চাইলেতো আমার হাতটা ধরতে পারতো। সে চলে গেছে করণ, ইচ্ছেটা যে তারই।
ভুলতে পারবো কি তাকে আমি? নাকি তার সৃতি গুলো বার বার মনে জাগরিত হয়ল এলোমেলো করে দিবে মনটাকে?
বিছানায় আধ শোয়া হয়ে বসে আছে আকাশ। মাথা জুরে চক্কর কাটছে নানান চিন্তা। খুব দেখতে ইচ্ছে করছে আখিকে। নিজের অজান্তেই মনে হয় প্রচন্ড রকম ভালোবেসে ফেলেছি তাকে।
ঘুম আসছেনা কিছুতেই, কিচেনে গিয়ে এক কাপ কফি বানিয়ে বেলকনিতে দাড়ায় আকাশ। কাপে চুমুক দিয়েই তাকিয়ল থাকে বাইরে জোৎস্নায় ঘেরা সুন্দর প্রকৃতিটার দিকে।
সকালে নিজের প্রয়োজনিয় সকল কিছু পেক করছে আকাশ। এর মাঝে মামার সাথে কথা হয়েছে দুইবার।
ফোনটা হাতে নিয়ে এক দৃস্টিতে চেয়ে আছে আখির ছবিটার দিকে। ভাবছে যাওয়ার আগে একবার ফোন করে জানাবে আখিকে। কি মনে করে আবার ফোনটা রেখে দিলো।
,
,
,
এয়ার পোর্টে অনেক্ষন যাবৎ বসে আছে আকাশ। হয়তো একটু পরেই চলে যাবে সে এই মাতৃভুমিকে ছেরে। বোরখা পরে একটা মেয়ে এসে বসে আকাশের পাসটায়। একটু আড় চোখে ওর দিকে তাকায় আকাশ। মুখে হিজাব পরা একটা মেয়ে।
পাস থেকে মেয়েটা হাত নাড়িয়ে বলে উঠলো,
— হাই, আমি মেঘ।
একটা হাসি টেনে আকাশ বলে উঠে,
— আমি আকাশ।
— বাহ্ আপনার নামের সাথেতো আমার নামের দারুন মিল। আকাশ আর মেঘ।
— আকাশ আর মেঘের মাঝে মিলনটা এতো গভির নয়। কারন মেঘ যে আকাশের বুকে স্থির থাকেনা। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে হারিয়ে যায় অন্য প্রান্তে।
— অন্য প্রান্তটার নামও তো আকাশ তাইনা?
এবার আর কোনো রেস্পন্স দিলোনা আকাশ। পাস থেকে মেয়েটা বলে উঠে,
— কোথায় যাচ্ছেন আপনি?
কিছুক্ষন স্থির থেকে আকাশ বলে উঠে, অস্ট্রেলিয়া।
— তাই? আমিও তো অস্ট্রেলিয়াই যাচ্ছি।
আকাশ মেয়েটার দিকে এবার ভালো করে তাকায়। অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে এই অবস্থায়।
— আপনি কি ম্যারিড?
— আপনার জানাটা কি খুব জরুরি?
— আপনার সমস্যা হলে বলার দরকার নেই থাক।
— ছিলাম,
— ছিলাম মানে কি?
— চলে গেছে। ডিবোর্স
— ও যদি সে আবার ফিরে আসতে চায়?
— আসবেনা?
— যদি আসেও।
এবার চুপ করে আছে আকাশ।
— আপনাকে দেখে মনে হয়, আপনি এখনো তাকে ভুলতে পারেন নি।
— পারবো কিনা তাও যানিনা।
— আচ্ছা আপনাদের ডিবোর্সের কারন টা যানতে পারি?
— আজব তো, আপনি মনে হয় বিয়ের জন্য আমার ইন্টারবিউ নিতে আসছেন? আর আপনার সাথে আমি এতো কিছু শেয়ার করছি কেনো?
— ওহ্ সরি, আপনি মাইন্ড করবেন বুঝতে পারিনি । লাস্ট একটা প্রশ্ন করি?
আকাশ আড় চোখে তাকিয়ে বললো,
— কি প্রশ্ন?
— আপনি যে চলে যাচ্ছেন সে কি যানে?
— হয়তো না, তারপর থেকে তার সাথে আর যোগাযোগ হয়নি।
— ওহ্ আচ্ছা। মন থেকে ভালোবেসেছিলেন কি তাকে?
একটা দির্ঘশ্বাস নিয়ে আকাশ বলে উঠে,
— চলুন সময় হয়ে গেছে।
আকাশ চলে যেতেই পেছন থেকে হাতটা চেপে ধরে মেয়েটা। হটাৎ দাড়িয়েই আকাশ একবার মেয়েটার দিকে তাকায় আরেকবার হাতের দিকে।
আকাশ একটু অদ্ভুদ ভাবে বলে উঠে,
— আপনার সাহসের প্রশংসা করতে হবে। প্রথমে দেখে ভেবেছিলাম, নিশ্চই কোনো ভালো ঘরের মেয়ে হবেন। এখনতো মনে হয় পুরুটাই ঝামেলা। বুঝছি আমি আপনার মতলবটা কি? এই নিন এই টাকাটা নিয়ে বিদায় হন।
— টাকাতে কি সব কিছু পরিমাপ করা যায়?
— আপনার সাথে আমার কিসের এতো সম্পর্ক যা টাকাতে পরিমাপ করা যাবেনা?
মেয়েটা এবার গম্ভির গলায় বলে উঠে,
— আপনি কি সত্যিই চলে যাবেন?
— না, এখানে সিনেমা চলছে। শুটিং করতে এসেছি। এখন টাকাটা নিয়ে তারাতারি বিদেয় হনতো।
— তো শুটিংয়ে এসে হিরুইনকে এভাবে অপমান করার মানে কি?
— কেনো আপনি যদি হিরু হন, আমিতো হিরুইন ই তাইনা?
— আখি তুমি?
— কেনো অবাক হচ্ছেন?
— কিন্তু তোমার কথা বলার ধরনটা এতো চেন্জ হয়ে গেলো?
— হা হা হা, আমি পারি।
— ভালো কেনো এসেছো এখানে। সবতো শেষ হয়েই গেলো।
— এই শেষটা কি আবার শুরু হতে পারেনা?
— মানে?
— আমরা কি রিয়েল লাইফে হিরু-হিরুইন হতে পারিনা? এই দেখো ডিবোর্স পেপারটা, আমি এখনো সাইন করিনি। শুধু আপনার একটা উত্তরের আশায়।
— কি উত্তর?
— ভালোবাসেন আমায়?
— সন্দেহ আছে?
— আপনি যেভাবে ছেরে চলে যাচ্ছেন তাতে সন্দেহ করাটাই সাভাবিক।
— তুমি মেঘ?
— আমি নিজেই রেখেছি নামটা। আকাশের মেঘ যে চাইলেও আকাশের বুক থেকে কোথাও পালাতে পারবেনা।
,
,
,
______________________________________
( বেলকনিতে দাড়িয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে আখি। হটাৎ করে ফোনে কেও একজন বলে উঠলো, আকাশ নাকি চলে যাচ্ছে আজ। নিজের অজান্তেই চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পরছে আখির। একটা সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষকেও হারিয়ে ফেলছে সে। তার মা দটা কপির কাপ হাতি নিয়প বেলকনিতে আসতেই দেখে প্লোড়ে বসে হেলান দিয়ে নিরবে চখের জল ফেলছে আখি।
— কিরে মা কি হয়েছে তোর?
— মা, কাওকে ভালোবেসে ফেলাটা কি অন্যায়?
— অন্যায় না, যদি সে ভালোবাসার যোগ্য হয়।
— তাহলে আকাশ। সে না আমি নিজেই তার অজোগ্য। তার ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যতা হয়তো আমার নাই। এই চার মাসে, এক মুহুর্তের জন্যও আমায় ছুয়ে দেখেনি আকাশ। সবসময় আমার ইচ্ছেটাকেই প্রাধান্ন দিয়েছে আমি কি চাই। যার চোখে নেই কোনো রাফিনের মতো বিশ্বাস ঘাতকতার ছাপ। বলো তো মা, কয়জন নারিই একজন সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষকে পাওয়ার যোগ্যতা রাখে? আবার কয়জন ছেলেই বা একটা মেয়েকে প্রকৃত ভাবে ভালোবাসতে জানে? এমন একটা ছেলে কি ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না মা তুমিই বলো? তোমার চোখে ও যাি হোক আমার চোখে ও একজন প্রকৃত পুরুষ। আর আমি এমন একটা প্রকৃত পুরুষকেই আমার জীবনে চেয়েছিলাম। আর তা পেয়েও আমি ধরে রাখতে পারছিনা।
— তুই যদি আকাশের সাথে সুখি হস এতে আমার কোনো সমস্যা নাই। আমিতো চাই তুই সব সময়ই সুখে থাক।
— আকাশ অস্ট্রেলিয়া চলে যাচ্ছে মা।
— তুই তাকে ফিরিয়ে আন।
— সত্যি মা যাবো?
— তোকেইতো ফিরিয়ে আনতে হবে তাইনা?)
_______________________________________
আখি লুকিয়ে আছে আকাশের বাহুডোরে। এয়ারপোর্টে কতই না লোকজন তবুও যেনো আজ সকল লজ্জাই হার মেনে গেছে তার ভালোবাসার কাছে।
— এখন থেকে আপনাকে আমার সকল ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখবো।
— ইচ্ছেটা তোমারই। আগলে রাখবে নাকি আবার ছেকা দিবে।
— না কক্ষনো ছেরে যাবোনা এই প্রমিস। আজ থেকে শুধু আমার ইচ্ছেটা উদ্ধে থাকবেনা, তোমার ইচ্ছেটাকেও প্রাধান্য দেওয়া হবে।
— আর আমার ইচ্ছে হলো তুই এখন যেভাবে তুমি করে বললে, সারা জীবন এমনই ডেকো। গভির একটা তৃপ্তি খুজে পাওয়া যায় এর মাঝে।
……………………সমাপ্ত……………………
গল্পটা কেমন হলো এটা জানতে খুবই আগ্রহি আমি। ভালোবাসা অবিরাম আমার সকল পাঠক-পাঠিকাদের প্রতি।