অন্তরালে তুমি পর্ব-০৭

0
2552

#অন্তরালে_তুমি
#Part_07
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
.
?
হসপিটালের চারদিকে মানুষ ছুটাছুটি করেই চলেছে। সকলেই কোন না কোন কাজে ব্যস্ত। অনেকের চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ তো অনেকের মুখে আপনজনকে হারানোর হয়। কেউ আবার আপনজনের মৃত্যুর খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েছে। বড় অদ্ভুত এই হাসপাতাল নামক জিনিসটি। এইখানে সকল শ্রেণির মানুষকেই দেখা যায়। সাথে তাদের অবস্থা, তাদের কষ্ট, বেদনা, সুখ সবই উপলব্ধি করা যায়। কিন্তু তাও দিন শেষে হাসপাতালের ভ্যাপ্সা উটকো গন্ধে কেউ টিকতে পারে না।
আরিহা অবজারভেশন রুমের সামনের চেয়ারে বসে আছে। মুখে কোন ভাবান্তর নেই। প্রতিবারের মতই সে স্থির আর শান্ত। বেশকিছুক্ষণের মধ্যেই অবজারভেশন রুম থেকে ডাক্তার বেরিয়ে আসেন। তা দেখে আরিহা নিজের অবস্থান ছেড়ে ডাক্তারের দিকে এগিয়ে যায়। তারপর শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করে,

— ডাক্তার ইহান এখন কেমন আছে? ইজ হি ফাইন?

আরিহার কন্ঠ কানে আসতেই ডাক্তার ওর দিকে তাকায়। ভ্রু দুটো কুঞ্চিত করে বলে,

— আপনি মি. ইহানের কি হন? ওয়াইফ!

আরিহা শান্ত কন্ঠেই বলে উঠে,
— জ্বি হ্যাঁ! আমি তার ওয়াইফ।

এই কথা শুনার সাথে সাথে ডাক্তারের ভ্রুকুটি যেন আরও কুঞ্চিত হয়ে যায়। সে বলে উঠে,
— আপনি কি সিউর আপনি তার ওয়াইফ? না মানে হাসবেন্ড এক্সিডেন্ট করেছে তা শুনে তো ওয়াইফদের অবস্থা নাজেহাল হয়ে যায়। কেঁদে কেটে একাকার হয়ে যায়। পুরো হসপিটাল কাঁপিয়ে ফেলে সে। কিন্তু আপনার বেলায় তেমন কিছুই হচ্ছে না। পুরো উল্টো ব্যপার। চ্রেঞ্জ!

আরিহা এইবার বিরক্তিমাখা চোখে ডাক্তারটির দিকে তাকায়। তারপর ডাক্তারটি উপর থেকে নিজ পর্যন্ত ভালোভাবে চেক করে নেয়। ছেলেটির বয়স বেশি না আর কমও না। হয়তো ৬-৭ বছর করে ডাক্তারি করে। চোখে কালো মোটা ফ্রেমের চশমা। কাধ হতে একটু নিচে এপ্রোনে তার নেম প্লেটটি ঝুলছে। তাতে গোটা অক্ষরে “ডা. মোহাম্মদ শাফিন” নামটি লিখা। আরিহা সেটা দেখে এইবার বিরক্তি মাখা কণ্ঠে বলে উঠে,

— ডা. শাফিন এইখানে সেখানের কথা না বলে যদি কাজের কথাটা বলতেন তাহলে খুশি হতাম। ইহান কেমন আছে?

আরিহার এমন জবাবে ডা. শাফিন কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যায় আর অপ্রস্তুত সুরেই বলে উঠে,
— অহহ হ্যাঁ! মি. ইহান ভালোই আছে। মাথার বা দিকটা সামন্য কেটে গিয়েছে আর ডান হাতটায় ফ্যাকচার হয়ে গিয়েছে। এক্সিডেন্টটা মাইনোর হওয়ায় তেমন কোন ইঞ্জুরি হয় নি। মেডিসিন দিয়ে দিয়েছি সেগুলা ঠিক মত খেলে আর প্রোপার রেস্ট নিলে দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন বলে আশা করছি। আর হ্যাঁ তাকে কমপক্ষে ১৫ দিন পর্যন্ত বেড রেস্টে থাকতে বলবেন। হাতটা যাতে একদমই নাড়া চাড়া না করা হয় এই দিকে বিশেষ খেয়াল রাখবেন।

আরিহা এইবার শান্ত গলায় বলে উঠে,
— রিলিজ কবে দিচ্ছেন?

ডা. শাহিন স্মিত হেসে বলে,
— একটু পরেই।

আরিহা এইবার “থেংক ইউ” বলে পাশ কেটে চলে যেতে নেয় তখন মি. শাহিন বলে উঠেন,
— আপনি সত্যি সকল হতে ভিন্ন। আমার পুরো ক্যারিয়ারে আমি এতটা শক্ত মনের মেয়ে দেখে নি।

আরিহা একবার মুখ ঘুরিয়ে পিছে তাকায়। তারপর কিছু না বলে অবজারভেশন রুমের ভিতরে প্রবেশ করে।

?

আকাশে অন্ধকার ছেঁয়ে আছে। মাঝে মধ্যে শুনা যাচ্ছে মেঘের ভয়ানক ডাক। বাইরে শো শো করে বাতাস বইছে সাথে হচ্ছে মশুল ধারে বৃষ্টি। বৈশাখ মাসের এমন হুট হাট বৃষ্টি তেমন কোন আচমকা বিষয় নয়। গাছের পাতা বেয়ে চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে বৃষ্টির শীতল স্পর্শ। সেই স্পর্শে তারা হয়ে উঠেছে সতেজ আর প্রাণবন্ত। রাস্তার এক পাশে কিছু রাস্তার ছেলেমেয়েরা মেতে উঠেছে এই বৃষ্টির শীতল স্পর্শ পেয়ে। কয়েকজন বৃষ্টি ভেজা নয়নতারা ফুল গুলো। মুখে তাদের কিবেক মিষ্টি হাসি। রাস্তায় চলাচল ব্যক্তিরা পাশের দোকান গুলোর ছাওনিতে দাড়িয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছে।
আরিহা জানালার পাশে মাথা ঠেকিয়ে সচ্ছ কাঁচের ফাঁক দিয়ে এতক্ষণ এইসব কিছু গভীর ভাবে লক্ষ্য করছিল। কেন যেন আজ এইসব দেখতে বেশ ভালো লাগছে তার। তার এইসব পর্যবেক্ষণ করার মাঝেই ইহান জেগে উঠে আর নড়াচড়া করতে শুরু করে। ক্লান্তির জন্য ইহান এসেই ঘুমিয়ে পড়েছিল। প্রায় ২ ঘন্টা পর গিয়ে ওর ঘুমটা ভাঙ্গলো।
আরিহা এইবার ইহানের দিকে তাকায়। ইহানকে নড়াচড়া করতে দেখে ওর দিকে এগিয়ে যায়।
আরিহা ইহানের কাছে গিয়ে ওকে উঠিয়ে বসিয়ে দিতে গেলে ইহান বাঁধা দেয়। আর নিজে নিজে উঠার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রতিবারের মত ব্যর্থ হয়। আরিহা এইবার জোর করে ইহানকে ধরে উঠিয়ে বসিয়ে দেয়। তারপর শান্ত কণ্ঠে বলে,

— হাসপাতাল থেকে আশার পথে তো ঠিকই আমাকে ধরে আসলে এখন এত ড্রামা করার কি দরকার?

ইহান এইবার রাগী চোখে আরিহার দিকে তাকায়। তারপর গম্ভীর গলায় বলে,
— বাধ্য হয়ে তোমার সাহায্য নিতে হচ্ছে তা না হলে তোমার সাহায্য নেওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই আমার।

আরিহা এইবার বাঁকা হেসে বলে,
— বউয়ের আদর খাওয়ার ইচ্ছা আছে বুঝি।

ইহান এইবার থমথম হয়ে বলে,
— তুমি এত নির্লজ্জ কেন? ঠোঁট কাটা মেয়ে একটা।

আরিহা এইবার নিজের ঠোঁটটা ইহানের সামনে এগিয়ে দিয়ে বলে,
— ভালো করে দেখ আমার ঠোঁটের কোন অংশ কাটা নেই।

ইহান এইবার একটু ছিটকে দূরে গিয়ে বসে। তারপর রাগান্বিত কন্ঠে বলে,
— মজা হচ্ছে?

আরিহা এইবার মুচকি হেসে বলে,
— কিছু খাবে? সুপ করে দেই?

ইহান এইবার মুখ ঘুরিয়ে বলে,
— তোমার হাতের কিছু চাই না।

আরিহা কিছু না বলে রুম থেকে চলে যায়। অতঃপর এক বাটি সুপ নিয়ে এসে ইহানের সামনে রাখে। সাথে এক গ্লাস পানি। আর শান্ত কণ্ঠে বলে,
— আমার হাতে যেহেতু খাবে না তাই রেখে যাচ্ছি খেয়ে নিও।

এই বলে আরিহা রুম থেকে চলে যায়। ইহান একবার আরিহার যাওয়ার দিকে তাকায় অতঃপর চোখ সরিয়ে নিয়ে সুপের দিকে তাকায়। বা হাত দিয়ে বাটিটা ধরে সামনে আনার চেষ্টা করে। সামনে এসে বা হাত দিয়ে চামচটা ধরার চেষ্টা করে কিন্তু তা প্রতিবারই হাত থেকে পড়ে যাচ্ছিল। যার ফলে সুপের কিছু অংশ ওর জামায় ছিটকে পড়ছিল। ইহান এইবার রাগান্বিত হয়ে বলে,

— সবই আরিহার প্লেন। সে ভালো করেই জানে আমি বা হাতে খেতে পারবো না তাও আমায় একা রেখে চলে গেল। সেলফিশ কোথাকার। হুহ!

তখনই আরিহা আপেল খেতে খেতে রুমে আসে। তারপর ইহানের সামনে দাড়িয়ে বাঁকা হেসে বলে,
— কি খেতে পারছো না তো? তা এখনো তেজ আছে নাকি গিয়েছে।

ইহান এইবার রাগে ফুসতে থাকে। আরিহা আপেলটা সাইডে রেখে ইহানের পাশে বসে। আর ওকে জোর করে খায়িয়ে দিতে থাকে। ইহান না চাওয়া সত্তেও আরিহার হাতে খেয়ে নেয়। খাওয়া শেষ হতেই ডোরবেল বেজে উঠে। আরিহা এইবার দরজা খুলতেই দেখতে পায় দরজার সামনে রাতুল, সোহেল, তীব্র দাঁড়িয়ে আছে। একদম কাক ভিজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তারা। চোখে মুখে তাদের চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। আরিহাকে দেখার সাথে সাথে তিনজনই এক সাথে বলে উঠে,

— ইহান কোথায়? ও ঠিক আছে তো।

আরিহা শান্ত গলায় বলে,
— একদম কিনারের রুমে ইহান আছে। গিয়ে দেখা করে নিন।

আরিহার বলতে দেরি কিন্তু তাদের যেতে দেরি নি। তিনজনই হুর হুর করে বাসার ভিতর ঢুকে পড়লো আর ছুটলো রুমের দিকে।

?

আরিহা তার ইজি চেয়ারে বসে আছে। চোখ দুটো বন্ধ করে সে আস্তে আস্তে দোল খাচ্ছে। আকাশে এখনো মেঘ ডাকছে। রুমটা এখন আবছা অন্ধকারে পরিপূর্ণ। ভালোই লাগছে নিস্তব্ধ এক পরিবেশ থাকতে।
পাশের রুমেই রাতুল, সোহেল, তীব্র ইহানকে ঘরে বসে আছে। কিভাবে কি হলো তার খোঁজ নিচ্ছে। আরিহার নিজেকে সেখানে তৃতীয় পক্ষ বলে মনে হওয়াতে সে স্টাডি রুমে এসে চুপচাপ বসে পড়ে। মাথাটা আবার ধরেছে। কিন্তু তাও আরিহা চুপ। একদম নিস্তব্ধ।
কেন না সে ব্যস্ত অতীতের ঘটনাগুলো ঘাটতে। ডুব দিতে থাকে অতীতের পাতায়।

?
সেইদিন ইহানকে বাধ্য হয়ে কন্ট্রাক্টটা মানতে হয়। কেন না এ ছাড়া ওর কাছে কোন উপায় ছিল না। ইহান কোন মতে নিজের রাগ সামলিয়ে কাজের মধ্যে মন বসায় সে।
আরিহার নির্দেশ অনুযায়ী সকলেই পরের দিন ফটোসুটের জন্য চলে আসে। একেক করে তারা আরিহার ডিজাইন করা জামাকাপড় গুলো পড়ে ফটোসুট করে। যখন ইহান ফটোসুট করতে যায় তখন আরিহা সেখানে আসে। আর ফটোসুট দেখতে থাকে। ইহানের এক্সপ্রেশন ভালো না আসায় সে বার বার ফটোসুটের মধ্যে বাঁধা দিচ্ছিল। আরিহা এইবার ইহানের দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বলে,

— আপনি কি আদো প্রফেশনাল? দেখে তো হচ্ছে না।

ইহান এইভাবেই আরিহাকে দেখে প্রচন্ড রেগে ছিল। তার উপর আরিহার এমন কথায় সে আরও রেগে যায়। কিন্তু তাও কিছু না বলে চুপচাপ সব সহ্য করে যায়। সে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,

— আমি যতটুকু পারি ততটুকুই করার চেষ্টা করছি। আপনি আমার থেকে বেশি জানলে আপনি বলে দিন না কিভাবে কি করবো?

— যদি তাই হয় তাহলে তাই হোক।

অতঃপর ইহান আরিহার কথা মত সব করে। আর আশ্চর্যজনক ভাবে ছবিগুলো সত্যি অসাধারণ হয়।
এরপর ছেলে-মেয়ে দুইজনে এক সাথে ফটোসুট করার টাইম আসে। সকলেই ড্রেস চেঞ্জের জন্য তাদের দেওয়া নির্দিষ্ট চেঞ্জিং রুমে চলে যায়। ইহানও নিজের রুমের চলে যায়। রুমে এসে নিজের জামাটা খুলে পাশে রাখতেই দরজা ঠেলে একজন ফিমেল মডেল এসে ইহানের রুমে হাজির হয় আর দরজা আটকিয়ে দেয়। ইহান শব্দ শুনে পিছে তাকায়। ভ্রুকুটি কুঞ্চিত করে মেয়েটির দিকে তাকায়। মেয়েটির দিকে তাকিয়ে ইহানের ২ সেকেন্ডও লাগলো না চিনতে। মেয়েটির নাম হিনা। দেখতে মাত্রাতীত সুন্দর। যার জন্য এই মেয়ের রূপের অহংকারের শেষ নেই। কিন্তু সে সর্বদাই ইহানের আগে পিছে ঘুর ঘুর করে। একবার এক সাথে একটা মডেলিং এর কাজ করতে হয়েছিল তাদের। সেখান থেকেই হিনা মেয়েটি ইহানকে চিনে। মেয়েটি বলতে গেলে ইহানের জন্য মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে পাগল। সে প্রায় অনেকবারই ইহানকে প্রেম নিবেদন করেছে আর প্রতিবারই ইহান প্রতিবারই তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু সে তাও ইহানের পিছেই পড়ে আছে।

হিনা এইবার ইহানের দিকে তাকিয়ে বলে,
— কেমন আছো বেবি?

ইহান এইবার বিরক্তিকর একটা ভাব নিয়ে বলে,
— ডোন্ট ইউ ডেয়ার টু কল মি বেবি।

হিনা এইবার ইহানের কাছে এসে বলে,
— এত রাগ কেন করছো? কুল ডাউন বেবি। দেখ আমাদের ভাগ্য বার বার কিভাবে এক হয়ে যায়। ভাগ্যও চায় তুমি যাতে আমার হও। আমার হয়ে যাও না বেবি। সত্যি বলছি তুমি যা চাইবে তাই দিব আমি তোমায়। একবার আমার হয়ে তো দেখ।

ইহান কিছুটা দূরে স্বরে বলে,
— অহ জাস্ট শার্ট আপ। এইসব থার্ডক্লাশ কথাবার্তা অন্যের সামনে গিয়ে বলো আমার সামনে না। ব্লাডি বিচ! তোমাকে দেখলেও গা গুলিয়ে আসে আমার। দূরে থাকো আমার থেকে। আর বেরিয়ে যাও রুম থেকে।

হিনা এইবার রেগে গিয়ে ইহানের কলার ধরে টান দিয়ে বলে,
— এত কিসের দেমাক তোমার? একটা মেয়ে নিজ থেকে এসে তোমার হাতে ধরা দিচ্ছে দাম দিচ্ছো না তো। বার বার দূরে সরিয়ে দিচ্ছো। কিন্তু আর না। আজকের পর থেকে তুমি সমাজে মুখ দেখাতে পারবে না। তখন বাধ্য বয়ে তোমায় আমার হতে হবে।

— হোয়াট রাবিস! জাস্ট গেট লোস্ট ফ্রোম হিয়ার।

হিনা এইবার মুচকি হেসে নিজের জামা নিজে ছিড়তে শুরু করে। নিজের চুলগুলো এলোমেলো করে নেয়। মুখে মেকাপ নষ্ট করে ফেলে আর জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকে, “বাঁচাও! বাঁচাও!”
ইহান এইবার অবাক চোখে হিনার দিকে তাকিয়ে থাকে। হিনা এইবার আরও জোরে চিৎকার করতে থাকে আর দরজা খুলে দৌড়ে চলে যায়। ইহান দ্রুত ওর পিছে যায়। ইতিমধ্যে হিনার চিৎকার শুনে সকলেই রুম থেকে বেরিয়ে আসে। আরিহা ও মি. কালাম কিছু কথা বলছিল তখন তাদের কানে হিনার চিৎকার আসতেই তারাও এগিয়ে আসে। হিনা ফটোসুটের জায়গায় এসে স্থির দাড়ায় আর ন্যাকাকান্না শুরু করে দেয়।
সকলেই এইবার ওকে ঘিরে দাড়িয়ে পড়ে। ইহানও পিছু পিছু সেইখানে চলে আসে। সকলেই ওর দিকে চোখ গোল গোল করে তাকিয়ে ছিল। এমন সময় আরিহাও সেখানে এসে হাজির হয়। আর হিনার এমন অবস্থা দেখে জিজ্ঞেস করে,

— কি হয়েছে মিস. হিনা? আপনি এইভাবে কান্না করছেন কেন?

হিনা এইবার ন্যাকা কান্না করতে করতে বলে,
— ম্যাম ইহান স্যার আমাকে মলেস্ট করার ট্রাই করেছে।

হিনার কথা শুনে সকলেই এইবার ইহানের দিকে তাকায়। ইহান খালি গায়ে থাকায় তারা হিনার কথাই সত্যি মনে করে বসে। আরিহা এইবার একটা চাদর নিয়ে হিনার গায়ে জরিয়ে দেয়। অতঃপর বলে সব খুলে বলতে। হিনা তখন মিথ্যে হিচকি তুলতে তুলতে বলে,
— ম্যাম ইহান স্যার আমায় তার রুমে ডাকে। সিনিয়র ভাই মেনে আমিও তার রুমে যাই। তারপর সে আমাকে বাজে প্রস্তাব দেয়। আমি না করতেই সে আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।

এই বলে আবার মিথ্যে কান্না ঝুড়ে দেয়। সকলেই এইবার ইহানের দিকে ঘৃণার চোখে তাকায়। ইহান তখন বলে উঠে,

— আরেহ ও মিথ্যে বলছে। আমি এমন কিছুই করি নি। আরে ও নিজেই তো…

আর বলতে পারলো না। আরিহা সকলের সামনেই ওর গালে স্বজোরে থাপ্পড় বসিয়ে দেয়। আর চেঁচিয়ে বলে উঠে,

— মি. কালাম কল দ্যা পুলিশ।

কথাটি সকলের কানে পৌঁছাতে পুরো পরিবেশটা একদম নিস্তব্ধ হয়ে যায়।

#চলবে