#ভালোবাসি
#পর্বঃ৮
#Tanisha Sultana (Writer)
হেই স্যার
রিক তুলির কাছে আসে।
“আমাকে পাগল করে দিতে চাও না কি?
” কি যে বলেন না স্যার।
“ঠিকই তো বললাম। হেই তুলির ভাইয়া হাউ আর ইউ
হাসি মুখে বলে রিক। সায়ান দাঁতে দাঁত চেপে বলে
“ফাইন
” স্যার এটা আমার হবু ভাবি। ভাইয়ের গফ। তো আমরা ওদিকটাই যায় ওনারা কথা বলুক
“ইয়াহ শিওর
” তুলি
“সায়ান ভাইয়া আমি ওদিকটাই থাকবো। হারাবো না। আপনাদের দেখাদেখি শেষ হলে ডেকে নিয়েন।
তুলি আর রিক চলে যায়।
” সায়ান তুলির সাথে রিককে খুব মানায় বলো সায়ান (মায়া)
“তুলিকে শুধু ওর স্বামীর সাথে মানায়।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে চলে যায় সায়ান।
তুলি আর রিক পাশাপাশি হাটছে
” তুলি সায়ান কি শুধুই তোমার ভাইয়া।
“নাহহহ। আমার স্বামী
” কিহহহহহ। মজা করছো
“আমার জীবনটাই মজার।
” তোমার আর ওনার বয়সের দিক
“বাদ দেন না প্লিজ। আমার এখন আর এসব ভালো লাগে না
” সায়ান তোমার গায়ে হাত তুলে তাই না
তুলি থেমে যায়। রিকের দিকে তাকায়
“আজ তুমি কান্না করছিলে, তারপর তোমার কপালে চোট, সব মিলিয়ে আমি বুঝতে পেরেছি সায়ান তোমাকে পছন্দ করে না।
“হুমম। আমি আর একটু বড় হলে ওনাকে মুক্তি দিয়ে দেবো।
” তখন আমাকে একসেপ্ট করবে?
“আমি আপনার সাথে ফ্রেন্ড +স্যার হিসেবে কথা বলি। তো আপনি যদি অন্য কিছু বলেন তো আমাদের সম্পর্ক এখানেই শেষ।
” আমি তোমার ফ্রেন্ড হয়েই থাকতে চাই।
তুলি একটু মুচকি হাসে।
রিক তুলির অনেক ছবি তুলে দেয়।
সবাই এক সাথে খেতে বসে। মায়া সায়ানের পাশে বসেছে। আর তুলি রিক সায়ানের সামনে।
“তুলি
পেছনে তাকিয়ে দেখে তুলির বাবা। তুলির হাসিখুশি মুখটা কালো হয়ে যায়।
” কাকায় তুমি এখানে
সায়ান তুহিনকে জড়িয়ে ধরে।
“কেমন আছিস বাবা
” ভালো। তুমি
“খুব ভালো।
তুলি খাওয়া ছেড়ে ওঠে।
” তুলি একটু কথা বলো না আমার সাথে
“কি কথা বলবো আপনার সাথে? আর কেনো বারবার আমার সামনে আসছেন? কি চায়?
” তুলি আমি তোমার বাবা
“আমার বাবা মারা গেছে। আমি এতিম
তুলি আর এক পা না দাঁড়িয়ে চলে যায়। রিক তুলির পেছনে যায়।
” সায়ান
“কাকায় আমি তুলির সাথে কথা বলবো
সায়ান ও চলে যায়।
তুলি নিরিবিলি জায়গায় একা দাঁড়িয়ে আছে। রিক পাশে দাঁড়ায়।
“তুলি ছোট ছোট বিষয় নিয়ে ভেঙে পরা বা কান্না করাটা দুর্বলদের কাজ। জাস্ট ইগনোর করো। তোমার পিছুটান তো একদিন তোমার সামনে আসবেই তাই বলে ভেঙে পরবে। ইটস নট ফেয়ার তুলি
” আমি ভেঙে পরি নি। খুন্ব স্ট্রয় আমি
“ভেরি গুড
রিক তুলির মাথায় একটা চাটি মারে। তুলি হেসে ফেলে। সায়ান দেখে ফেলে। সায়ান রিকের সামনে থেকে তুলির হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়। পাগলের মতো ডাইভ করে
” ভাইয়া প্লিজ আস্তে চালাও আমার ভয় করছে
সায়ান স্পিড আরও বাড়িয়ে দেয়। তুলি সিট বেল্ট বাধে নি। চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে তুলি। এই বুঝি এক্সিডেন্ট করলো।
সারা রাস্তা ভালোই আসে। কিন্তু বাড়ির সামনে আসতেই সামনে থাকা আরেকটা গাড়ির সাথে ধাক্কা খায়। তুলি গাড়ির দরজা খুলে নিচে পরে যায়। সায়ান মাথায় একটু হালকা চোট পায়। পাশে তাকিয়ে দেখে তুলি নেয়। তুলি নিচে পরে গেছে।
সায়ান তুলিকে ওঠায়। হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাসপাতালের করিডোরে চোখ বন্ধ করে বসে আছে সায়ান। তুলি পায়ে ব্যথা পেয়েছে। আর কপালের কাটা যায়গা থেকে রক্ত বের হয়েছে।
“আপনি এবার আপনার বোনকে নিয়ে বাসায় যেতে পারেন
নার্সের কথা শুনে বিরক্তির সাথে নার্সের দিকে তাকায় সায়ান
” বোন
“হুম। উনি তো বললো আপনি ওনার ভাই হোন
সায়ান রাগে ফুসতে ফুসতে তুলির কেবিনে ঢোকে।
তুলি মুখ বাঁকিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে আছে
” আমি তোর ভাই লাগি
“আপনি আমার জোম লাগেন। সব সময় আমাকে মারার প্লান করেন কেন? আমি মরলে আপনি বেঁচে যান মানলাম তাই বলে নিজের হাতে খুন করবেন। আপনার কি একটুও মায়া দায়া নাই
তুলি আর কিছু বলতে পারে না। কারন তার আগেই সায়ান তুলির ঠোঁটে টুপ করে একটা চুমু দেয়। তুলির কথা গুলো আটকে যায়।
” কি হলো চুপ কেন? আরও কি কি বলবি বল
“আপনার ক্যারেকটার এতো খারাপ। ছি কথায় কথায় ঘেসাঘেসি করেন চুমু দেন। এরপর যদি আবার চুমু দিতে আসেন না তাহলে ঠোঁট সিলাই করে দেবো বলে দিলাম
” চুপ করবি
“আমি বাসায় যাবো
” তো যা না
“আমার পা টা যে আপনি ভেঙে দিছেন
” ঠিক হইছে এবার আমিও দেখবো তুই কি করে রিকের সাথে নিকনিক করিস
“আমি তো আর রিককে বাসায় নিতে পারবো না কজ ভাড়া থাকি যে। কি আর করার কিছু দিন আপনার আর আপনার মায়ার রংঢং দেখতে হবে
” তাতে তোর কি
“সেম টু ইউ
” তুই আমার বউ
“আপনিও আমার বর
” এতো কথা কেনো বলিস তুই
“সেটা তো আমারও কোশ্চেন
” আমি তোকে একটুও হেল্প করবো না। দেখি কি করে বাড়ি যাস
“আকাশ বা রিককে ফোন করতে হবে।
সায়ান তুলিকে কোলে তুলে নেয়।
নিজের রুমে বসে বই পরছে তুলি। পা টা আগের থেকে বেশি ব্যাথা হয়ে গেছে। নারাতেও পারছে না। এদিকে ভিষণ খিদে পেয়েছে। বাইরে থেকে সায়ান আর মায়ার কথার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে।
” আজ আর কিছু খাওয়া হবে না। সায়ান আমার কথা ভুলে গেছে। না খেয়েই ঘুমিয়ে পরি
তুলি ওভাবেই ঘুমিয়ে পরে। কিছুখন পরে সায়ান খাবার নিয়ে এসে দেখে তুলি ঘুমিয়ে গেছে। সায়ানও নিজের রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে।
সকালে অনেক বেলা করে তুলির ঘুম ভাঙে। পায়ের ব্যাথাটা অনেক কমেছে। একটু একটু হাটতে পারছে তুলি। ফ্রেশ হয়ে রান্না ঘরে চলে যায়।
“আমি তোর জন্য রান্না করেছি
” আপনার রান্না খাবো না
“কেনো?
” বলা তো যায় না খাবারে বিশ টিশ মিশিয়ে দিতে পারেন
“তোকে আমার রান্নায় খেতে হবে।
তখন কলিং বেল বেজে ওঠে। সায়ান দরজা খুলে দেখে মায়া। মায়া ভেতরে আসে
” মায়া আপু ভালো সময়ই এসেছো
“কেনো?
” সায়ান ভাইয়া তোমার জন্য রান্না করেছে
“সত্যি
” হুম ১০০% সত্যি
মায়া খেতে বসে যায়। সায়ান অগ্নি দৃষ্টিতে তুলির দিকে তাকিয়ে আছে। মায়া খেতে খেতে বলে
“জানো তুলি। আগে না সায়ান প্রতিদিন আমার জন্য নতুন নতুন ডিশ রান্না করতো। কিন্তু তুমি ওর লাইফে আসার পরে আমাদের মধ্যে দুরত্ব বেরে গেছে
” সব কিছুর জন্য তুমি দায়ী মায়া (সায়ান)
“আই প্রমিজ আমি আবার সব ঠিক করে দেবো।
” বেশি পাকনামি করবি না তুই
সায়ান রাগী সুরে বলে
“আপনার মুখে হাসি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য যদি একটু পাকনামি করি তাহলে হ্মতি কি?
তুলি রান্নাঘরে চলে যায়। সায়ান তুলির দিকে তাকিয়ে থাকে। মায়া খাচ্ছে।
আজ আর সায়ান অফিসে যায় নি। তুলি সোফায় বসে খাচ্ছে আর ফোন দেখছে। মায়া চলে গেছে। মায়ার বাসাটা পাশেই হওয়ায় একটু পরপরই আসে।
” তাহলে তুই আমার রান্না করা খাবার খাবি না
তুলি পায়ের ওপর পা তুলে বলে
“প্রশ্নই ওঠে না
” খুব বার বেরেছে তোর
“হুমমম
“চুলা আমার। টাকা আমার
” টাকাটা দাদুর। চুলা নিয়ে খোটা দিচ্ছেন তো। আমি তো কয়েক মাস পরে চলে যাবো। তাই আর এই কয়মাসের জন্য চুলা কিনবো না।
“তুলি তুই
” কিচ্ছু বলার দরকান নেই। আপনি রান্না করবেন মায়া আপু খাবে ব্যাস
“আমার রান্না তুই খাবি
” যাতে আমাকে মারতে আপনার সুবিধা হয়
“আমি কেনো মারবো তোকে
” তাহলে পা টা ভাঙলো কি করে
“তোর বোকামির জন্য
” আপনার সাথে কথা বলার ইচ্ছে নেই
“রিকের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হয়
” হুম হয় তো
সায়ান তুলির হাত শক্ত করে ধরে বলে
“আমার সাথে তোর কথা বলতে হবে। ইচ্ছে না থাকলেও। আর রিকের বেবস্থা তো আমি করবোই।
চলবে