#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_7
.
.
.
.
.
তিশা ফুল দিয়ে সাজানো খাটে বধু সাজে বসে আছে…. কিছুক্ষন পরেই আবির ঘরে আসে তিশা রাগে সাপের মতো ফুসছে…. আবির মুচকি একটা হাসি দিয়ে খাটে এসে বসে তিশার হাত ধরতে যাবে সাথে সাথে তিশা খাট থেকে নেমে যায়…
তিশা : একদম র্স্পশ করবেন না আমাকে আপনার ওই নোংরা হাত দিয়ে…
আবির নিজের হাতে তাকিয়ে বলে…
আবির : নোংরা হাত আমার কোথায় সুইটহার্ট আমার হাত তো একদম পরিস্কার…
তিশা : দেখতে পরিস্কার কিন্তু আপনার ওই হাতের ইশারাতে আমার বাবা মা আর বোনের মুত্যৃর কথা হয়েছে…… (রাগে)
আবির : আরে ওইটা তো আমি তোমাকে ভয় দেখিয়েছি যাতে তুমি আমাকে সবার সামনে বিয়ে করতে পারে….
তিশা : বাহ খুব ভালো কাজ করেছেন আপনি…. আমাকে বিয়ে করে মনে হচ্ছে যেন আকাশের চাদ পেয়ে গেছেন….
আবির : চাদ তো আমি অনেক আগেই পেয়ে গেছি এখন শুধু সেই চাদকে ধরার অপেক্ষা…..
আবির তিশার দিকে এক পা এক পা করে এগিয়ে যাচ্ছে আর তিশা পিছিয়ে যাচ্ছে….
তিশা : কি করেছেন আপনি?? একদম আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না…
আবির : কেন কাছে আসবো না?? তুমি আমার বিয়ে করা বউ তাহলে তো তোমার কাছেই আসবো …
তিশা : আমি বলছি তো আপনি ও খানেই ধেমে যান….
তিশা পিছাতে পিছাতে আলমারির সাথে আটকে যায় আবির তিশার অনেক কাছে চলে আসে তিশা পাশ কেটে চলে যেতে চাইলে আবির তিশার দুপাশে হাত রেখে তিশাকে আটকে দেয়…
তিশা : কি… করছেন আপনি এসব??
আবির তিশার ঠোটের দিকে নিজের মুখ এগিয়ে নিছে… তিশা নিজের দু চোখ বন্ধ করে ফেলে…. প্রায় অনেকক্ষন হয়ে যায় তিশা কোনো অনুভব না পেয়ে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে আবির তিশার এক হাত দুরে দাড়িয়ে আছে…. আবির নিজের দু ভ্রু নাচিয়ে বলে….
আবির : কি ভেবেছিলে?? তোমাকে আমি কিস করবো…. আরে চিন্তা করো না আমি এতটাও খারাপ না যে নিজের বউয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে তাকে কিস করবো….. তোমার জন্য একটা গিফট এনেছি…
তিশা : কিসের গিফট?? আমি আপনার কাছ থেকে কোনো গিফট টিফট নিবো না বুঝেছেন…. এখন শুধু একটাই চিন্তা আমার এই বাড়ি থেকে আমি কখন বের হতে পারবো সারাজীবনের জন্য….
আবির : তুমি কোনো দিনও এই বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না যতক্ষন না আমি চাইবো….
তিশা : ওও তাই নাকি তার মানে বলতে চাইছেন আপনি আমি এই বাড়ি থেকে বের হতে পারবো না…
আবির : না আমার অনুমতি ছাড়া এই বাড়ি থেকে কোনো মশা মাছিও বের হতে পারে না আর তুমি বের হবে কি করে সুইটহার্ট….
তিশা : ঠিক আছে আমি ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই বাড়ি থেকে বের হবো…..
আবির : চ্যালেজ্ঞ করছো আমাকে……
তিশা : হে করছি…
আবির : ঠিক আছে তোমার চ্যালেজ্ঞ এক্সসেপ্ট করলাম আমি… তুমি যদি এই ২৪ ঘন্টার ভিতরে বাড়ি থেকে বের হতে পারো তাহলে আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি তোমাকে আমার জীবন থেকে সারাজীবনের জন্য দুরে সরিয়ে দিবো…. কিন্তু তুমি যদি এই ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাড়ি থেকে বের হতে না পারো তাহলে তুমি কি করবে???
তিশা : ঠিক আছে আমিও তাহলে আপনাকে কথা দিচ্ছি আমি যদি এই ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই বাড়ি থেকে বের হতে না পারি তাহলে সারাজীবন আমি এই বাড়িতেই থাকবো কোনো দিন আমি এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো না….
আবির : ওয়াও এই তো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি আমি তো ভাবছিলাম তোমাকে কি করে এই বাড়িতে রাখতে পারি আর সেই তুমি কি না এমন শর্ত দিয়ে বসলে তাহলে তুমি ধরেই রাখো তুমি এই বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না….
তিশা : এটা তো এখন বুঝা যাবে মিস্টার আবির রহমান আমি এই বাড়ি থেকে বের হতে পারবো নাকি পারবো না এটা তো ২৪ ঘন্টা পর বুঝা যাবে…. আর আপনার কথাটা মনে রাখবেন যে আমি এই বাড়ি থেকে বের হতে পারলে আপনি কি করবেন….
আবির : এই আবির রহমান যাকে একবার কথা দেয় সেটা অব্যশই রাখবে কিন্তু বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর… এখন গিয়ে শুয়ে পড়ো রাত অনেক হয়েছে এখন তো বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না অনেক রাত হয়ে গেছে তাই গিয়ে শুয়ে পড়ো….
আবির গিয়ে সোফাতে শুয়ে পড়ে…
সকালে তিশা আযানের আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গে… তিশা সোফাতে তাকিয়ে দেখে আবির নেই…..
তিশা : গেলো কোথায় বজ্জাতটা??? জাহান্নামে যাক তাতে আমার কি আমি বরং ওযু করে নামাজটা পড়ে নেই….
তিশা ওযু করে জায়নামাজ ফ্লোরে বিছিয়ে নামাজ পড়ে নেয়…. নামাজ পড়ে তিশা সবসময়ের মতোই বেলকনিতে দাড়িয়ে র্সূযউদয় দেখে….. তিশা নিচে তাকিয়ে আবির আর একটা ছেলে মাথায় টুপি পড়ে বাড়িতে ডুকছে…
তিশা : বাবা বজ্জাতটা নামাজও পড়ে মসজিদে গিয়ে এতো ভালো কিন্তু সাথে ওই ছেলেটা কে আবার???
আবির ঘরে ঢুকে দেখে তিশা খাটের উপে নেই আবির চিন্তায় পড়ে যায় এত সকালে তিশা বাড়ি থেকে চলে যায় নিতো আবির ঘর থেকে বের হতে যাবে এমন সময় তিশা কাশি দিয়ে উঠে তিশার কাশির শব্দটা শুনে আবির নিশ্চিন্ত হয়…. তিশা কাশিটা যেন বেড়েই যাচ্ছে….. তিশার মুখের সামনে হঠাৎ করে কেউ একজন পানির বোতল ধরে…. তিশা তাকিয়ে দেখে আবির….,. তিশা আবিরের দিক থেকে মুখ সরিয়ে নেয়….
আবির : আমার উপর রাগ করে নিজেকে কষ্ট দিবে না তাই পানিটা খেয়ে নাও প্লিজ….
তিশা আবিরের কাছ থেকে পানির বোতলটা নিয়ে পানি খায়…
তিশা : ধন্যবাদ পানি দেওয়ার জন্য….
আবির : বাবা বাবা তুমি দেখা যায় ধন্যবাদও দিতে পারো….
তিশা : এই আপনার প্রবলেম কি বলুন তো?? আমাকে একটু একা থাকতে দিন….
আবির : ঠিক আছে…. আর এটা কি ভেবেছো কি করে বাড়ি থেকে বের হবে???
তিশা : আমি এটা আপনাকে বলতে যাবো কেন?? যে আমি কি করে এই বাড়ি থেকে বের হবো….
আবির : ওওও এটাও তো একটা কথা…. ঠিক আছে বলো না….
আবির যেতে চাইলে তিশা আবিরকে ডাক দেয়….
তিশা : শুনুন….
আবির : হুম বলো….
তিশা : ওই ছেলেটা কে??
আবির : কোন ছেলেটা???
তিশা : যে ছেলেটার সাথে আপনি একটু আগে বাড়িতে ডুকলেন সেই ছেলেটা….
আবির : ওও আচ্ছা…. তার মানে তুমি আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে উপর থেকে দেখছিলে তাই তো….
তিশা : শুনুন আমার এতো শখ নেই যে আপনাকে দেখবো তাও আবার লুকিয়ে লুকিয়ে….
…
আবির : শখ নেই তোমার আমাকে দেখার …… একদিন তুমি আমাকে চোখে হারাবে এক মুর্হূত তুমি আমাকে না দেখে তাকতেই পারবে না…..
তিশা : সেগুড়ে বালি….. এটা কোনো দিন হবে না যে আমি আপনাকে চোখে হারাবো আমি আপনাকে দু চোখে দেখতে পারি না বুঝতে পেরেছেন….. তাই আমি আজকে যে করেই হোক এই বাড়ি থেকে বের হবো…
আবির : ঠিক আছে দেখা যাবে সুইটহার্ট… আর ওই ছেলেটার সাথে তোমাকে আমি পরে পরিচয় করে দিবো কেমন??? এখন আমার খুব ঘুম পাচ্ছে যাই একটু ঘুমাই গিয়ে…..
তিশা : এখন আবার কিসের ঘুম তাও আবার সকালে….
ব্রেকফাস্ট করার জন্য নিরব অনেকক্ষন ধরে ডায়নিং টেবিলে বসে আছে কিন্তু আবিরের কোনো দেখা নাই….
নিরব : ভাইয়া বিয়ে করে পুরাই গেছে আমি যে ছোট ভাই হয়ে অপেক্ষা করছি কখন থেকে তার কোনো মুল্যই নেই ওনার কাছে…
আবির : কিরে একা একা কি বিড়বিড় করচ্ছিস???
নিরব : এতক্ষনে তোমার আসার সময় হলো তাই না ভাইয়া….
আবির : আরে ঘুমিয়ে পড়ছিলাম তাই একটু লেইট হয়েগেছে…
নিরব তিশাকে আসতে দেখে বলে…
নিরব : গুড মর্নিং ভাবি…
তিশা : গুড মর্নিং…( আবাক হয়ে বলে)
আবির : আচ্ছা তিশা তোমার সাথে আমার ছোট ভাইটার পরিচয় করে দেই…. ও হলো নিরব রহমান আমার একমাএ আদরের ছোট ভাই ও এতদিন বিদেশে ছিলো পড়াশোনার জন্য গতকালকে দেশে ফিরেছে আর এখন থেকে ও আমাদের সাথেই থাকবে….
তিশা : ওওওও( তাতে আমার কি?? আমি তো আজকে চলে যাবো এই বাড়ি থেকে)
আবির তিশা আর নিরব ব্রেকফাস্ট খেতে শুরু করে…
নিরব : আচ্ছা ভাইয়া শুনো আমাকে ব্রেকফাস্ট করে বেড়ুতে হবে অনেক দিন পরে দেশে ফিরেছি তো তাই বুন্ধরা সবাই মিলে একটা পার্টি রেখেছে তাই আজকে ফিরতে আমার রাত হবে…
আবির : আচ্ছা যা তবে গার্ড আর ড্রাইভার নিয়ে যাবি সাথে করে….
নিরব : আচ্ছা… তাহলে আমি আসি
আবির : আচ্ছা সাবধানে যাস….
আবির তিশাকে লক্ষ্য করে তিশা ব্রেকফাস্ট না করে একজন কাজের মহিলার দিকে তাকিয়ে আছে ….
আবির : তিশা কি হলো খাচ্ছো না কেন???
তিশা নিজের ঘোর থেকে ফিরে আসে….
তিশা : কি হয়েছে???
আবির : বলছি খাচ্ছো না কেন????
তিশা : আমার ইচ্ছে আমি খাই বা না খাই তাতে আপনার কি???
আবির সব র্সাভেন্টদের ইশারা করতে এখান থেকে চলে যায়….. আবির তিশার হাত ধরে টান দিয়ে এনে নিজের কোলে বসায়…..
তিশা : আরে এসব কি করছেন?? ছাড়ুন আমাকে…
তিশা উঠতে চাইলে আবির তিশার কোমড় চেপে ধরে…. তিশা আবিরের হাত থেকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ছটপট করে….
#চলবে