#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_8
.
.
.
আবির : জান এভাবে ছটপট করে কোনো লাভ নেই যতক্ষন না আমি তোমাকে ছাড়ছি ততক্ষন তুমি আমার হাত থেকে ছুটতে পারবে না….. বুঝলে……
তিশা : ছাড়ুন বলছি আমাকে….
আবির : ছাড়বো না…. আগে তুমি হা করো…
তিশা : কেন???
আবির : আমি তোমাকে নিজ হাতে আজকে খাইয়ে দিবো….
তিশা : আমি খাবো না আপনার হাতে বুঝেছেন…..
আবির : ঠিক আছে… খাবে না তাহলে তুমি আমার হাতে তাই তো…
তিশা : হে খাবো না আপনার হাতে….
আবির তিশার কোমড়ে একটা চিমটি কাটে… তিশা ব্যাথায় আহহ করে ওঠার সাথে সাথে আবির তিশার মুখে খাবার ডুকিয়ে দেয়…..
আবির : কি আমার হাতে খেতে হলো তো তোমাকে…..
তিশা আবিরের কাছ থেকে চলে যায়…..
আবির : এখন ছেড়ে দিয়েছি তোমাকে পরে যখন আমি আমার চ্যালেজ্ঞটা জিতবো তখন কিন্তু তোমাকে আর ছাড়বো না…..
এদিকে…..
নিরব গাড়ি থেকে নেমে বন্ধুর বাড়িতে হেটে যাচ্ছে আসলে গাড়িটা ছোট রাস্তা দিয়ে ডুকতে পারছিলো না তাই নিরব হেটেই যাচ্ছে আর নিরবের পিছনে দুজন গার্ড….নিরব প্যান্টের পেকেটে হাত গুজে নিজের মনের মতো করে হেটে যাচ্ছিল এমন সময় নিরবের সামনে হঠাৎ করেই একটা বাই সাইকেল চলে আসাতে নিরব ব্যালেন্স হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায় গার্ডরা তাড়াতাড়ি করে নিরবকে মাটি থেকে তুলে…….
গার্ড :স্যার আপনি ঠিক আছেন…..
নিরব : হে হে আমি ঠিক আছি…. ( শরীরের ময়লা পরিষ্কার করতে করতে)
গার্ড : এই যে মিস সাইকেল দেখে চলাতে পারেন না….
___সরি আসলে আমি বুঝতে পারি নাই….
গার্ড : বুঝতে পারেন নাই মানে….
নিরব টির্শাটের ময়লা পরিষ্কার করে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে তো পুরাই আবাক…..
নিরব : আরে আপনি আবার…..
___আপনিও আবার…. থানা থেকে এত তাড়াতাড়ি ছাড়া পেয়ে গেলেন….
নিরব : হুম আমি তো থানা থেকে তাড়াতাড়ি ছাড়া পেয়ে গেলাম এখন যদি আপনাকে আমি পুলিশে দেই যে আপনি আমার উপর দিয়ে সাইকেল চালিয়ে নিয়ে গেছেন তো….
___না না প্লিজ এমন করবেন না তাহলে বাবা আমাকে মেরেই ফেলবে…..
নিরব : ঠিক আছে পুলিশের কাছে আপনাকে ধরিয়ে দেবো না কিন্তু আমার একটা শর্ত…..
__শর্ত…. কি শর্ত????
নিরব : শর্তটা হলো গিয়ে আপনার নামটা কি???
___আমার নাম নিসা বুঝেছেন এবার তাহলে আমি আসি….
নিরব : আমি নিরব রহমান……
নিসা : ওওওওও এবার আমি আসি তাহলে…..
নিরব : আরে আমার পরের শর্তটা তো শুনবেন…
নিসা : আপনি একটা শর্তের কথা বলেছিলেন আর আমি আপনার একটা শর্ত পুরন করেছি এবার আমি আসি…..
নিসা এই কথাটা বলে তাড়াতাড়ি করে চলে যায়…..
নিরব : মেয়েটা পুরাই পাগল…..
গার্ড : স্যার আপনি কি এখন এই অবস্থায় যাবেন….
নিরব : না এখন একটা মলে চলো ওইখানে গিয়ে ড্রেসটা চেইন্জ করতে হবে বাড়িতে গেলে ভাইয়া অনেক প্রশ্ন করবে তাই বাড়িতে যাওয়া যাবে না আর ভাইয়াকে এই বিষয়ে কেউ কিছু বলবেন না….
গার্ড : ওকে স্যার….. কিন্তু আপনার বন্ধু….
নিরব : ওটা আপনাকে নিয়ে ভাবতে হবে না…..
গার্ড : ওকে স্যার…..
দুপুর হয়ে গেছে কিন্তু তিশা এখন কোনো প্লেন বের করতে পারলো না কি করে এই বাড়ি থেকে বের হবে….. তিশা এই সব চিন্তায় ঘরের মধ্যে পায়চারি করেছ এমন সময় একজন কাজের মেয়ে আসে……
___মেমে সাহেব আপনার খাবার….
তিশা কাজের মেয়েটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে কিছু একটা ভাবে কাজের মেয়েটা চলে যেতেই চলেই তিশা ডাকতে দেয়…
তিশা : শুনো…..
___জি
তিশা : তুমি এখানে কয়টা পর্যন্ত কাজ করো…
___এই তো সন্ধ্যা সাতটা আটটা পর্যন্ত….
তিশা : আচ্ছা তুমি একটা কাজ করবে আমার জন্য….
___কি কাজ???
তিশা : তুমি একটু দাড়াও আমি আসছি…
তিশা আলমারি থেকে একটা শাড়ি নিয়ে আসে….
তিশা : তুমি এই শাড়িটা পড়ে নাও আর তোমার পড়ানে যে শাড়িটা আছে ওইটা আমাকে দেওওও
__কি বলছেন আপনি এসব???
তিশা : ঠিকেই বলছি তুমি দাও আমাকে…
___কিন্তু বড় সাহেব যদি কিছু বলে….
তিশা : কিছু বলবে না যদি কিছু বলে তাহলে বলবে আমি তোমাকে দিয়েছি ঠিক আছে……
____আইচ্ছা
তিশা : তুমি যাও এই শাড়িটা পড়ে নাও….
কাজের মেয়েটা চলে যায় ঘর থেকে….
তিশা : মিস্টার আবির রহমান আমি তো এই বাড়ি থেকে বের হবোই…… আর আপনি কিচ্ছু করতে পারবেন না…..
নিসা আর ওর সব বন্ধুরা একটা রেস্টুরেটে বসে আছে…..
ওলি : দোস্ত তিশা আপুর কি সত্যি সত্যি ওই আবির রহমানের সাথে বিয়ে হয়েছে…
নিসা : হে…..
ইশিতা : আচ্ছা নিসা তর বাবা মা কি এই সব কিছু মেনে নিয়েছে…
নিসা : নাহ…. জানিস বাবা মা খুব কষ্ট পেয়েছে আপুর এই কান্ড থেকে বাবা তো এখন আর আমার সাথে ভালো করেই কথা বলে না যদি আমি এমন কিছু করে বসি তার জন্য…..
ওলি : আচ্ছা তিশা আপুর সাথে তর কথা হয় না…
নিসা : না আপুর সাথে ওই দিনের পর থেকে আমার আর কোনো কথা হয় নি….
ইশিতা : তো তিশা আপু এখন আবির রহমানের বাড়িতেই আছে তাই তো…..
নিসা : হুম….. শুনেছি আপু আর আবির রহমানের আবার নতুন করে বিয়ে হয়েছে….
ওলি : তরা যাস নি….
নিসা : না যেখানে বাবা এসব মেনে নিতে পারি নি সেখানে বাবা কি করে যাবে বল তো…..
ওলি : আচ্ছা এসব কথা এখন বাদ দে…… কি খাবি সেটা অর্ডার কর….
নিসা : তরা অর্ডার কর…. আমার ভালো লাগছে না
ইশিতা : উফফ নিসা এমন করিস না তো আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে….
ওলি : দোস্ত ছেলেটাকে দেখ কি হ্যান্ডসাম একদম মনে হচ্ছে কোনো সিনেমার হিরো….
ইশিতা : তর আবার শুরু হলো যাকে দেখিস তাকেই সিনেমার হিরো বানিয়ে ফেলিস…
ওলি : আরে হারামি একবার তো দেখ ছেলেটাকে…
ইশিতা ছেলেটাকে দেখে……
ইশিতা : তাই তো ছেলেটা তো ব্যাপক হ্যান্ডসাম….
নিসা : উফফ তরা থাক আমি গেলাম….
ইশিতা : নিসা নিসা প্লিজ এমন করিস না বস না একটু…..
নিসা : আমার এমনি মন মেজাজ ভালো না আর তরা একটা ছেলেকে নিয়েছে কি শুরু করলি…..
যাকে নিয়ে এতক্ষন ওলি আর ইশিতা কথা বলছি সে হ্যান্ডসাম ছেলেটা আর কেউ না আমাদের নিরব রহমান…. নিরব এই রেস্টুরেটে ওর ফ্রেন্ডদের সাথে এসেছে…..
নিরব : আরে শুন আজকেও ওই মেয়েটার সাথে দেখা হয়েছিল বুঝলি….
সাইদ : তাই নাকি ভাই….
রকি : মেয়েটা দেখতে খুব সুন্দরী তাই না….
নিরব : হুম…. একদম একটা পরী
সাইদ : মামা তুই তো দেখি দেশে এসেই প্রেমে পড়ে গেছিস….
নিরব : তা তো অবশ্যই…..
নিরবের চোখ যায় নিসার দিকে…
নিরব : এই দাড়া তো আমি একটু আসছি….
সাইদ : আরে কোথায় যাচ্ছিস??
নিরব নিসার সামনে গিয়ে দাড়ায়….
নিরব : আরে তুমিই তো সেই মেয়ে তাই না….
নিসা : আপনি আপনি এখানে কি করছেন??? আমাকে ফলো করছেন……
নিরব : ছেঃ নিরব রহমানের এতটাও বাজে সময় আসি নি যে তোমাকে ফলো করতে হবে তবে আমার হয়তো এমন বাজে সময় আসতে পারে ভবিষতে…..
ওলি নিসার কানে কানে বলে….
ওলি : দোস্ত কাহিনীটা কি??? আমি যার উপর ক্রাস খেলাম সে তকে কি করে চিনে… কিছু লুকাছিস না তো….
নিসা : ওলি তুই চুপ করবি ( দাতে দাত চেপে)
নিরব : কি হলো কানে কানে কি বলা হচ্ছে??
নিসা : শুনুন আমার হাতে না এত সময় নেই যে আপনার সাথে কথা বলার…. এই চল তো…..
নিসারা চলে যেতে চাইলে নিরব ডাক দেয়….
নিরব : ওই নিসার ফ্রেন্ড এদিকে শুন ( আঙ্গুলের ইশারাতে)
ওলি : আমাকে বলছেন….
নিরব : হে তোমাকে বলছি শুন একটু…
নিসা : ওলি যাবি না কিন্তু একদম…
ওলি : উফফ তুই চুপ করতো ও কি বাঘ নাকি ভালুক যে কাছে গেলে আমাকে খেয়ে ফেলবে….
নিসা : তরা যা পারিস তাই কর আমি গেলাম…..
নিসা চলে যায় নিসার পিছন পিছন ইশিতাও যায়…. ওলি নিরবের কাছে যায়
ওলি : হে বলুন ( লাজুক হয়ে)
নিরব : বলছিলাম কি তোমার ওই ফ্রেন্ড মানে নিসার ফোন নাম্বারটা তোমার কাছে আছে…..
ওলি : হে ( আবাক হয়ে)
নিরব : ওর ফোন নাম্বারটা তোমার কাছে আছে…. আমার ওর নাম্বারটা লাগবে…
ওলি : ওর নাম্বার নিয়ে আপনি কি করবেন?
নিরব : আসলে ওকে আমি পছন্দ করি…
ওলি : কি??? ( চোখ বড় বড় করে)
নিরব : হুম তাই ওর নাম্বারটা আমার লাগবে….
ওলি : কিন্তু…
নিরব : প্লিজ এই হেল্পটা করতে পারবেন না…..
ওলি : ঠিক আছে দিছি….
ওলির কাছ থেকে নিরব নিসার নাম্বারটা নিয়ে নেয়….
নিরব : একটা কথা বলবো….
ওলি : হে বলুন…
নিরব : আসলে এই কথাটা নিসাকে বলা যাবে না কেমন…
ওলি : কেন বলবো না এই কথাটা??
নিরব : আমি বলছি তাই….
ওলি : ঠিক আছে বলবো না….
নিরব : আচ্ছা শুনো এটা তোমার…
ওলি : কি এটা…
নিরব : বাসায় গিয়ে খুলে দেখো…. আর প্লিজ নিসাকে কিছু বলো না আর আজকে থেকে তুমি আর আমি ফ্রেন্ড….
ওলি : আচ্ছা তাহলে আমি আসি…
নিরব : আরে দাড়াও তোমার নাম্বারটা দাও আমাকে…
ওলি : আমারটা ( আবাক হয়ে)
নিরব : হে তোমারটা….
ওলি : আচ্ছা দিছি…..
নিসা : দেখেছিস এখনও ওলিটা আসে না….
ইশিতা : তুই তো জানিস ও এমনেই দিনে চার পাচটা ক্রাস না খেলে ওর পেটের ভাত হজম হয় না বুঝলি….
নিসা : ওই দেখ আসছে….. এতক্ষন লাগে তর আসতে…
ওলি : আরে আমার ক্রাসের সাথে কথা বলছিলাম তো একটু সময় লাগবেই তাই না…..
নিসা : তা তর ক্রাস তকে কি দিলো….
ওলি : জানি না রে পেকটটা খুলে দেখতে হবে….
ইশিতা : তো তর ক্রাস কি তকে প্রপোজ করলো না কি…
ওলি : ধ্যাত ও আমার ক্রাস শুধু লাইফপাটনার না বুঝলি আর অন্য একজনকে পছন্দ করে….
ইশিতা : কাকে???
ওলি : জানি না….. আচ্ছা নিসা আমার ক্রাসের সাথে তর আগে কি দেখা হয়ে ছিল…
নিসা : শুন আমার এখন ভালো লাগছে না আমি গেলাম.,…..
নিরব দুর থেকে দাড়িয়ে এতক্ষন নিসাকে দেখছিলো….
নিরব : তোমাকে তো আমি আমার নিজের করেই নিবো নিসা জান…..
নিরব কথাটা বলে একটা বাকা হাসি দেয়…….
সন্ধ্যা হয়ে গেছে …. চারিদিকে ঘুটঘুট অন্ধকার হয়ে গেছে
আর এদিকে তিশা খুব কষ্ট করে কাজের মেয়েটার কাছ থেকে যে শাড়িটা নিয়েছিল সে শাড়িটা খুব কষ্ট করে কাজের মেয়েটার মতো করে পড়ে…..
তিশা : বাপরে বাপ ওনারা শাড়ি এভাবে পড়ে কি করে…. না এখন এসব চিন্তা না করে বাড়ি থেকে বের হতে হবে হাতে বেশি সময় নেই কিন্তু যাবো কই এতো রাত আচ্ছা দেখা যাবে আগে তো এই বাড়ি থেকে বের হই……
তিশা অন্য একটা ঘর থেকে চেইন্জ করে মাথায় ঘোমটা দিয়ে আস্তে আস্তে করে হেটে নিচে যায় নিচে যেতেই একটা মেয়ে তিশার হাতে একটা কফির মগ ধরিয়ে দিয়ে বলে…..
___এটা বড় সাহেবকে দিয়ে আসো….
তিশা : এটা আবার কোন ঝামেলাতে পড়লাম… ধ্যাত
তিশা আবিরের ঘরে ডুকে দেখে আবির লেপটপ নিয়ে কাজ করছে তিশা আস্তে আস্তে করে ঘরে ডুকে টেবিলের উপর কাপটা রাখে…..
তিশা : স্যার আপনার কফি ( গলা চেইন্জ করে)
আবির : ঠিক আছে যাও…..
তিশা হাফ ছেড়ে বাচে তিশা চলে যাবে এমন সময় আবির বলে উঠে…..
আবির : শুনো তিশাকে গিয়ে বলো আমি ওকে ডাকছি….
তিশা : হুম…..
আবির : ঠিক আছে যাও…..
তিশা আবিরের ঘর থেকে বের হয়েই জোরে নিশ্বাস ছাড়ে…..
তিশা : উফফ বাঘের গুহাতে ছিলাম এতক্ষন….. না না আর দেরি করলে চলবে না আমাকে এখনেই যেতে হবে….
তিশা তাড়াতাড়ি করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেইটের সামনে যাবে সাথে সাথে কারো ছায়া দেখে তিশা দাড়িয়ে পড়ে…… তিশা ছায়ার দিক থেকে মুখ সরিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে যা দেখে তাতে তিশার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে…….
#চলবে