#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_13
.
.
.
আবির ঘরে ডুকে দেখে তিশা ফ্লোরে বসে কান্না করছে আবির দৌড়ে তিশার কাছে গিয়ে হাটু ঘেড়ে বসে….
আবির : কোথায় ছিলে তুমি এতক্ষন?? তুমি জানো তোমাকে আমি কোথায় কোথায় খুজেছি পাগলের মতো …. তোমাকে দেখতে না পেয়ে বুঝতে পারছো আমার কি অবস্থা হয়ে ছিল…. কি হলো কথা বলছো কেন?? তোমাকে আমি কিছু বলছি তো কোথায় ছিলে তুমি এতক্ষন??
তিশা কান্না করতে করতে চোখ মুখ ফুলে গেছে….. তিশা রাগে চিৎকার করে বলে ওঠে…..
তিশা : আমি যেখানেই থাকি তাতে আপনার কি???
আবির : আমার কি মানে… তুমি আমার স্ত্রী তোমার জন্য আমার চিন্তা হওয়া স্বাভাবিক…..
তিশা উঠে দাড়ায় সাথে আবিরও…..
তিশা : স্বামী আপনি….. হু আপনাকে স্বামী হিসেবে মানি না আর মানবোও না….
আবির : কোন কি দুষ যে তুমি আমাকে স্বামী হিসেবে মানতে পারবে না…. ও তোমাকে আমি জোর করে বিয়ে করেছি তার জন্য….
তিশা : হে এটাই আপনার দুষ…… আপনার জন্য শুধু মাএ আপনার জন্য আমার বাবা আমাকে আর নিজের মেয়ে হিসেবে মানে না বুঝতে পেরেছেন আপনি ….. ( তিশা আবিরের কলার চেপে ধরে) কোন জন্মের প্রতিশোধ নিচ্ছেন আপনি আমার উপর কোন জন্মের….
আবির : তিশা আমার কথাটা শুনো একটু প্লিজ….
তিশা : কি কথা শুনবো আপনার আপনি বুঝতে পারছেন যে আপনি আমার কত বড় একটা ক্ষতি করেছেন….. কেন এমনটা করলেন আপনি কেন???
তিশা আবিরের কলার ছেড়ে দেয়…..
আবির : তিশা….
তিশা : একদম আমাকে টাচ করবেন না আপনি একদম না….. আপনি চলে যান আমার চোখের সামনে থেকে চলে যান আপনাকে আমি আর এক মুর্হূত সহ্য করতে পারছি না চলে যান এখান থেকে চলে যান আমাকে প্লিজ একা থাকতে দেন প্লিজ……
তিশা আর কিছু বলতে পারে না সাথে সাথে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে….. আবির তিশাকে তাড়াতাড়ি কোলে তুলে বিছানাতে নিয়ে যায় …..
আবির : তিশা প্লিজ চোখ খুলো তিশা প্লিজ…..
আবির তাড়াতাড়ি ডাক্তারকে কল করে….. কিছুক্ষন পরেই ডাক্তার এসে তিশাকে চেকাপ করে……
ডাক্তার : চিন্তার কোনো কারন মানসিক চাপের কারনে ওনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন আমি ইনজেকশন দিয়ে দিয়েছি কিছুক্ষন পরেই জ্ঞান ফিরবে ওনার……
আবির :ধন্যবাদ ডক্টর আপনাকে..,
ডাক্তার : আচ্ছা এবার তাহলে আমি আসি……
আবির সোফাতে বসে তিশার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে…… তিশা আস্তে আস্তে নিজের দু চোখ খুলে…… তিশার জ্ঞান ফিরতে দেখে আবির তিশার কাছে যায়……
আবির : তিশা তুমি ঠিক আছো তো…..
তিশা : আপনি…. আপনি এখানে কি করছেন??? আপনি আমার কথাটা বুঝতে পারেন নি আপনাকে আমি সহ্য করতে পারছি না প্লিজ আমাকে একটু একা থাকতে দেন প্লিজ…..
আবির আর কোনো কিছু না বলে চলে যায়….. তিশার ইচ্ছে করছে নিজেকে শেষ করে ফেলতে কিন্তু এটা যে তিশা করতে পারবে না আত্নহত্যা করা যে মহাপাপ…
এদিকে আবির বাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়িতে বসে গার্ডরা আবিরের পিছনে যাওয়ার জন্য তৈরি হয় সাথে সাথে আবির রাগে বলে উঠে…..
আবির : কেউ আমার সাথে আসবে না কেউ না….
সোহেল : কিন্তু স্যার…
আবির : আমি একবার বলেছি যখন কেউ আসবে না মানে কেউ আসবে না…. (চিৎকার করে)
সোহেল ভয় পেয়ে যায় আবির এমন ভাবে কথা বলতে দেখে আবিরের চোখ গুলো রাগে লাল রক্তবর্ন ধারন করে ফেলছে কপালের কালো রগটা ফুলে গেছে রাগে…… নিরব আবিরের চিৎকার শুনে তাড়াতাড়ি বাড়ির বাইরে বের হয়ে আবিরকে আটকাতে যাবে সাথে সাথে আবির গাড়ি ড্রাইভ করে গেইটের বাইরে চলে যায়….. ….
নিরব : ভাইয়া আমার কথাটা তো শুনো একটু প্লিজ……
নিরব তাড়াতাড়ি অন্য একটা গাড়িতে উঠে আবিরের গাড়ির পিছন পিছন যাওয়া শুরু করে আবির এতটাই জোরে গাড়ি চালাচ্ছে যে নিরব আবিরের গাড়ি হারিয়ে ফেলে…..
নিরব গাড়ি ব্রেক করে….
নিরব : এখন কি করবো আমি?? ভাইয়ার গাড়ি তো হারিয়ে ফেলছি ভাইয়া এত হাই স্প্রিডে গাড়ি চালাচ্ছে কেন?? যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে কি হবে???
নিরব আবিরকে ফোন করে কিন্তু আবির ফোন রিসিভ করে না…..
প্রায় দু ঘন্টা হয়ে গেছে আবিরকে এখনও খুজে পায় নি… কেউ যদি নিজে থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখে তাহলে খুজে পাওয়া টা সত্যিই মুশকিল হয়ে যায়…… সবাই আবিরকে খুজতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে আর এদিকে তিশার কাছে একটা ফোন আসে তিশা ফোনটা রিসিভ করে….
তিশা : হ্যালো! কে বলছেন??
__এত তাড়াতাড়ি আমাকে ভুলে গেলে তুমি আমি কিন্তু এটা একদম আশা করে নি তোমার কাছ থেকে….
তিশা : রবিন আহমেদ….
রবিন : এইতো আমাকে তুমি চিনতে পেরেছো…
তিশা : আমাকে কোন ফোন দিয়েছেন আপনি???
রবিন : ফোন যখন দিয়েছি তার মানে নিশ্চয়ই তার কোনো কারন আছে তাই না….
তিশা : কারন!!! কি কারন??
রবিন : আসলে ওই তোমার স্বামী মানে আবির রহমান আমার গায়ে হাতে তুলেছে তোমার জন্য তাই আমি ভাবলাম কি জানো….
তিশা : কি ভেবছেন আপনি??
রবিন : এই গায়ে হাত তুলার প্রতিশোধটা একটু অন্যরকম ভাবে নেওয়ার কথা…… তবে সেই প্রতিশোধটা আবিরের উপরে নিবো না….. নিবো তোমার বাবার উপর
তিশা : কিহ?? কিহ যাথা বলছেন আপনি এসব??? আমার বাবা আপনার কি ক্ষতি করেছেন??
রবিন : তোমার বাবা কোনো ক্ষতি করেন নি করেছে তো তোমার স্বামী….. তাই এই ক্ষতিপুরন তোমার বাবাকে দিতে হবে এই মুর্হূতে…..
তিশা : একদম আমার বাবার কোনো ক্ষতি করবেন না তাহলে কিন্তু এর ফল ভালো হবে না…..
রবিন : নিজের বাবাকে যদি বাচাতে চাও তাহলে যেই ঠিকানাটা মেসেজ করে পাঠাছি ওই ঠিকানাতে চলে আসো যদি নিজের বাবাকে বাচাতে পারো……
রবিন সাথে সাথে ফোনটা কেটে দেয়….
তিশা : হ্যালো!!! হ্যালো!!!! না আমি আমার বাবার কিছু হতে দিবো না কিছু না আজকে ওই আবির রহমানের জন্য আমার বাবাকে এই বিপদে পড়তে হয়েছে ওকে আমি কোনো দিন ক্ষমা করবো না কোনো দিন না…..
তিশা তাড়াতাড়ি করে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখে বাড়িতে কোনো গাড়ি নেই তিশা কিছু না ভেবেই নিরবকে ফোন করে……
নিরব : হে ভাবি বলো…
তিশা : নিরব কোথায় তুমি??
নিরব : কোনো ভাবি কি হয়েছে??
তিশা : নিরব আমি তোমাকে পরে সব কিছু বলবো আগে তুমি তাড়াতাড়ি তোমার গাড়িটা নিয়ে বাড়িতে আসো…
নিরব : ঠিক আছে আমি এখনেই আসছি….
তিশার ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে ইকবাল ইসলামকে তিশা বারবার কল করছে কিন্তু কল ধরছেই না….
তিশা : বাবা প্লিজ ফোনটা ধরো প্লিজ…..
একটু পরেই নিরব গাড়ি নিয়ে বাড়ির সামনে আসে….. তিশা তাড়াতাড়ি করে গাড়িতে উঠে বসে..
নিরব : ভাবি কি হয়েছে??
তিশা : নিরব তুমি প্লিজ এই ঠিকানাতে তাড়াতাড়ি চল না হলে আমার বাবাকে বাচাতে পারবো….
নিরব : কি বলছো?? তুমি ভাবি আমি কিন্তু কিছু বুঝতে পারছি না….
তিশা : নিরব তুমি আগে গাড়ি স্ট্রাট করো তারপর তোমাকে সব খুলে বলছি….
নিরব আর তিশার পিছনে কিছু গার্ডরাও যায়….. রবিনের দেওয়া ঠিকানাতে নিরব আর তিশা পৌছায়….. তিশা গাড়ি থেকে নেমে দেখে একটা রেস্টুরেন্ট তিশা তাড়াতাড়ি করে রেস্টুরেন্ট ডুকে সাথে নিরবও….. তিশা ওর বাবাকে দেখে কিছু লোকের সাথে বসে আলাপ করছে ….. তিশা নিজের বাবাকে দেখে একটা জোরে চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস ছাড়ে…. কিন্তু তিশা চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে ইকবাল ইসলামের পিটের উপর লাল টার্গেট লাইটের আলো পড়ছে তিশার বুঝতে আর বাকি রইল না এটা কিসের আলো….. তিশা জোরে ওর বাবাকে ডাক দেওয়াতে ইকবাল ইসলাম দাড়িয়ে তিশার দিকে ফিরে তাকাতেই একটা গুলির শব্দ হয় তিশা ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে…. রেস্টুরেটের সবাই দৌড়া দৌড়ি শুরু করে দিয়েছে…. তিশা ভয়ে ভয়ে চোখ খুলে তাকিয়ে যা দেখে তাতে তিশার সারা শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে যায়…. তিশা ভাবতেই পারি নি এমন একটা ঘটনা ঘটবে……
#চলবে