Arrange Marriage part -05+06

0
505

#Ayesha
#ArrangeMarriage

পর্ব-5+6

বিকালে বাসায় এসে ঘুমিয়ে পরলাম, সন্ধ্যার আগে আগে উঠে আমার টেবিল গুছিয়ে নিলাম কারণ নামাজ পড়েই ভাইয়া আমাকে পড়াতে চলে আসেন,, 2বছর আনিস ভাইয়ার কাছে পড়ছি খুব ভালো করে সব বুঝিয়ে যান। সপ্তাহে 6দিন পড়ান তিনি তার পড়ানোর অনুযায়ী প্রাপ্য সম্মানি ও পান।।

9টা বাজে ভাইয়া চলে গিয়েছে।। আমার প্রতিদিনের রুটিন এইগুলো সারাদিন নিজের জন্য কমলা দেই । সামনে আরো চাপ বাড়বে আমি এইবার শেষ ।।

খাদিজা বিছানায় বসতে বসতে বললো

খাদিজা: দুলাভাই ফোন দিয়েছিল
আমি: কোন দুলাভাই?
খাদিজা: ন্যাকি, তোমার জামাই।।
আমি: তোকে না মানা করেছি আমার সাথে
এইভাবে কথা না বলতে?
খাদিজা: তো কি বলবো তুমি এত কম বুঝ কেন?
আমি: কি বলেছে?
খাদিজা: আমার সাথে বেশি কথা বলেছে। আর বাসার সবার সাথে টুক টাক কথা বলেছে।।
আমি: তোকে কি বলেছে সেটা বল
খাদিজা: তোমাকে কেন বলবো, তুমি কথা বললে কি কখনো আমাকে বলবে? বলবে না তাহলে আমিও বলবো নাম। দুলাভাই এর সাথে খুব ভাব হয়েছে আমার।।
আমি: গাইয়া মেয়ে দুলাভাই কি? ভাইয়া বলবি?
খাদিজা: সে সময় হলে ডাকবো।।

আমি কথা না বারিয়ে পড়তে বসলাম, কিছুক্ষন পরে মা ফোন এনে দিয়ে আমার টেবিলে রেখে গিয়েছে।।

আমার মায়ের অদ্ভুত সব আচরণ দেখছি কাল থেকে।। অন্য কোনো সময় আমার কাছে ফোন থাকেনা এখন মা নিজে ফোন দিয়ে যাচ্ছে, কাল ঘরে খাবার খেলাম কিচ্ছু বললো না এত ভালো কি করে?

এইসব ভাবার মধ্যেই ফোন স্ক্রীনে ভেসে উঠলো আব্বাজী
সবাইকে নতুন পেজে একবার ঘুরে আসার নিমন্ত্রণ রইল আশা করি ভালো লাগবে এবং পেজটিতে লাইক দিয়ে একটিভ থাকবেন। আপনাদের সুবিধার জন্য নিচে পেজটির লিংক দিয়ে দিলাম — https://www.facebook.com/রুপকথার-মায়াবী-লেখক-লেখিকা-112614303485434/
এই আব্বাজি আবার কে? নানা কে তো না আব্বা বলে ডাকে এছাড়া আমার দাদা ও তো বেচে নেই তাহলে?

আমি: হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম
: ওলাইকুম আসসালাম
আমি: আপনিই?
ফাহাদ: অবাক হলে যে? আমি তো কাল ও ফোন করেছি

আমি আর বললাম কেন অবাক হয়েছি।। আমার মাকে ধিক্কার জানাই জীবনে আমাকে মা বলে ডাকেনি, কখনো বলেনি নাও মা খেয়ে নাও মা এটা করে দাও সব সময় তুই তুই করেই বলতো।। আর 2দিন হলো না ছেলের সাথে পরিচয় তাকে আব্বাজি বানিয়ে ফেলল।। বাহ মা বাহ

ফাহাদ: চুপ করে আছো যে?
আমি: না কিছুনা
ফাহাদ: এখন কিন্ত তুমি পুরানো হয়ে যাচ্ছ সো ফর্মালিটি বাদ দিয়ে নরমালি বিহেভ করতে পারো।
আমি: আমি ফর্মালিটি করছি না
ফাহাদ: তাহলে এমনি?
আমি: জ্বী
ফাহাদ: এইটা কিন্ত ফর্মালিটি ছিল।।
আমি: না আমি সব সময় বলি।
ফাহাদ: আমার সাথে বলবে না নিজেকে মুরুব্বী মনে হয়?
আমি: নিজে যা তাই তো মনে হবে।।
ফাহাদ: অপমান করছো না মজা করছো?
আমি: আপনি তো উকিল মানুষ এইগুলা আমি বলে না দিলেও আপনি বুঝে যাবেন। উকিল রা লেজেন্ড হয়।।
ফাহাদ: এইটা অপমান করেছ ইয়াম শিওর।।
Ayesha
#ArrangeMarriage

পর্ব-6

ফাহাদ: এটা অপমান করছো ইয়াম শিওর।।
আমি: অপমান কেন করবো? আমি তো জাস্ট বলেছি
ফাহাদ: মা কথা বলবে তোমার সাথে, নাও।।

ধুর বাবা কি দরকার ছিল বাবার আমাকে এইভাবে বলি দেয়ার, জীবনে আত্মীয় স্বজনের সাথে ফোনে কথা বলিনি, এখন কি না হবু শাশুড়ির সাথে কথা বলা লাগবে, মানিয়ে নিতে হবে,

ওপাশ থেকে হ্যালো শুনা যেতেই আমি সালাম দিলাম
উনার মা: ওলাইকুম আসসালাম, কেমন আছো?
আমি: জ্বী আলহামদুিল্লাহ্ ভালো আপনি?
উনার মা: এইতো ভালোর দলেই, কি করছো? তোমার বাবা মা কেমন আছেন?
আমি: এইতো পড়ছিলাম, জী মা বাবা ভালই আছেন।।
উনার মা: আসলে মা কিছু মনে কর না কাল আসার পর থেকে কথা বলতে পারিনি বলে।। আমি কাল আসার পর থেকেই শরীর টা খারাপ, আমি আসি জার্নি করতে পারিনা, বমি করি বাসে। তাই এতটা খারাপ লাগছে, সামনে মাসে তোমাদের আকন্দ এর সময় ফাহাদ ওর বাবা ওর বন্ধুরা আসবে আমার খুব আফসোস হচ্ছে আমি যেতে পারব না বলে, তাই বলে এটা ভেবো না তোমার আকান্দের কোনো ত্রুটি হবে, আমি সব ব্যবস্থা করে পাঠাবো।। তুমি কিন্ত সুন্দর করে সাজবে,, আমি সব সুন্দর করে প্যাকেট করে পাঠিয়ে দিবো, আর তোমার কিছু লাগল বলতে পারো।। লজ্জা পেয়ো না এখন আমরা তোমার নিজের লোক হতে যাচ্ছি।।

উনি এত কিছু এক সাথে বলায় আমি কিছুটা অবাক হলাম, কি সুন্দর একটা অচেনা অজানা মেয়ে কে কত সহজে আপন করে নিলেন, আমি উনার সাথে আরো কিছুক্ষন কথা বলি, সব কথা উনি বলছেন আমি জ্বী, হু, হ্যাঁ করেছি।। প্রথম দিন উনার সাথে তেমন কথা হয় নি।। এখন কথা বলে বেশ ভালই লাগছে আমরা প্রায় আধা ঘন্টা কথা হচ্ছে অনেক টা ফ্রী হয়ে গিয়েছি,

উনার মা: আমার খুব ইচ্ছা ছিল আমার শাশুড়ি থাকবেন তার সাথে মেয়ের মত মিশবো কিন্ত আল্লাহ আমার কপালে সেই সুখ দেন নি, কিন্ত মা আমি চাই তুমি আমার সাথে সেইভাবে থাকো, পারবে না?
আমি: পারবো ইনশাআল্লাহ
উনার মা: ইনশআল্লাহ, তুমি কিন্ত আমাকে তুমি করে ডাকবে যেমন করে তোমার মাকে ডাকো, আর হ্যাঁ আমার চাইতাম আমার বউ মা আমায় আম্মা বলে ডাকুক।। কিন্ত তুমি বাচ্চা মেয়ে তুমি আমাকে মা ডেকো
আমি: আমার কিন্ত ডাকতে সমস্যা নেই আমি ডাকতে পারবো।।
উনার মা: তাহলে মামুনি ডেকো আম্মা আর মা সমান করে মামুনি কি বলো? আমার কিন্ত শুনতে কোনো আপত্তি নেই।।
আমি :মামুনি টা বেস্ট, আম্মাও ডাকবো মাঝে সাঝে।।
মামুনি:ঠিক আছে, আচ্ছা অনেকক্ষন কথা হয়েছে, তোমার পড়ার ডিস্টার্ব করলাম, অনেখানি সময় লস হয়েছে, এখন তোমার 1টা ঘণ্টা 1 বছরের সমান, তাই মা সময় টা কাজে লাগাও।।
(উনার সব কথার মধ্যেই খারাপ লাগা কথা এটা, বেশ তো কথা বলছিলাম। এমন কথা বলে মুডটাই নষ্ট হয়ে গেল)
আমি: জ্বী
মামুনি: এইবার রাখি তাহলে ভালো থেকো মা।

আমি: জী আপনিও
মামুনি: আবার আপনি? তুমি বলো
আমি: তুমিও ভালো থাক মামুনি
মামুনি: লক্ষ্মী মেয়ে, রাখছি।।

ফোন কেটে গেলো আমি একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিলাম, ভেবে শান্তি লাগছে এত সুখ আমার ভাগ্যে আল্লাহ রেখেছিল? হাজার হাজার শুকরিয়া।।

আমি রাতের পড়া শেষ করে শুয়ে পরলাম।।
বুবু: বুবু ডাকছে নে তোর ফোন এসেছে।
আমি: উফফ এখন আবার কে সারাদিন কষ্ট করে রাতে কেন এত পেরা দাও বল তো?

বুবু কিছু না বলে ফোন রেখে চলে গেলো

আমি: হ্যালো
ফাহাদ: আমি কি তোমাকে বিরক্ত করছি?
আমি: নয়তো কি? সারাদিন দৌড়া দৌড়ি করে রাতে ও
ফাহাদ: ঠিক আছে ।।
বলে ফোন কেটে দিল, আমি আর কিছু না ভেবে ঘুমিয়ে পরলাম,

সকালে উঠে আবার একই নিয়মে জীবন চলছে।।
সারাদিন এইভাবেই গেল।। আমি সাধারণত টিভি দেখিনি আজ কি মনে করে টিভি অন করলাম দেখি আবরার ফাহাদের হত্যা কারিদের ধরা হয়েছে, সব জায়গায় আবরার ফাহাদ, আমি ইউটিউবে আবরার হত্যা নিয়ে আন্দোলন সব ভিডিও দেখেছি, খুব খারাপ লাগছে ছেলে টা র জন্য।। আজ 25তারিখ সে মারা গিয়েছে আজ 18দিন হয়ে গেল।। না জানি কত কষ্ট আছে তার পরিবার।। আমার হটাৎ মনে হলো তার নাম ও তো ফাহাদ, আমার ভিতর টা এক মুহূর্তে ভারী হয়ে গেল।। আমার মনে হলো কালকে রাতে এমন ব্যাবহারের পর ও আর ফোন দেয়নি, আমি তখন ওর হটাৎ করে ফোন কেটে দেওয়ার মানে টা না বুঝলেও এখন খুব ভালো করেই বুঝতে পারছি।। কি করবো ওকে কি ফোন দিব?

আমি ওর নাম্বার ডায়েল করে বসে আছি শুধু একটা চাপ দিলেই হবে, কিন্ত পারছি না এগো কাজ করছে আমি কেন ফোন দিবো, পরক্ষনেই মনে হলো না আমি যেহেতু ভুল করেছি সেহেতু আমাকেই সরি বলতে হবে।। আমি ওর নাম্বারে কল দিলাম ফোনটা বেজে বেজে কেটে গেল, আবার দিলাম ধরছে না কেউ।
বাহ উকিলবাবুর রাগ ও আছে তাহলে।।

2বার ফোন করার পরে আর দেইনি। 5মিনিট পর ফোন বেজে উঠলো, এই আব্বাজী নামটা দেখেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়, মা তো ওর নাম দিয়েই সেভ করতে পারতো,

আমি: হ্যালো
ফাহাদ: সরি সরি আমি শাওয়ারে গিয়েছিলাম
আমি: এখন শাওয়ার?
ফাহাদ: তুমি ফোন দিয়েছিলে?
আমি: জী
ফাহাদ: জী জী করার ফর্মালিটি টা বাদ দাও।
আমি: সরি
ফাহাদ: জ্বী বলছ তাই না অন্য কিছুর জন্য?
(অন্যকিছুর কথা বলে তুমি যে কালকের কথা বুঝিয়েছ তা আমি খুব বুঝেছি উকিল বাবু) আবার বললাম
আমি: সরি
ফাহাদ: কেন?
আমি: রাতের ব্যাবহারের জন্য
ফাহাদ: তুমি সরি কেন বলছো? আসলে আমি বুঝিনি, সারাদিন এত কষ্ট কর তুমি, কত দৌড়াদৌড়ি করা লাগে, রাতে ফোন দিয়ে বিরক্ত করাটা ঠিক হয় নি আমার।।
আমি: এইবার আপনি অপমান করছেন
ফাহাদ: হেসে দিলো, তোমাকে আমি খুন করে ফেলবো
আমি: কেনো?
ফাহাদ: এত কষ্ট কি করে দাও?
আমি: কি কষ্ট দিয়েছি?
ফাহাদ: একটা বার ফোন দাও না,খুঁজ খবর নাও না, আমি কল করলে ভালো করে কথা বলো না, আমি কথা বলার জন্য কতটা চট ফট করি জানো?
আমি: আমার ফোন নেই
ফাহাদ: কাল ফ্রী আছ কখন?
আমি: এখানে ফ্রী থাকার কথা কেনো আসছে?
ফাহাদ: ফ্রী কি না?
আমি: বিকাল দিকে ফ্রী আছি, কেনো?
ফাহাদ: কালকেই জানতে পারবে।।

ফোন কেটে দিল, আবার রাগ করলো নাকি? যাই হোক আমি তো সরি বলে দিয়েছি।।

দেখি কাল কি অপেক্ষা করে আমার জন্য

চলবে