💔#Divorce💔
Writer: Tahmina Toma
Part: 33
জ্যোতিঃ(এতোরাতে কে কল দিলো,,,,,?? আননোন নাম্বার,,,, কেটে গেলো,,,, একটু পর আবার বেজে ওঠলো,,,,,) আসসালামু আলাইকুম,,,, কে বলছেন,,??
,,,,,,,,,,
জ্যোতিঃ হ্যালো,,,,,কে বলছেন,,,??
,,,,,,,
জ্যোতিঃ আজব লোকতো কথা কেন বলছেন না,,,?? কথা না বললে ফোন কেন করেছেন,,,,??
,,,,,,
জ্যোতিঃ হ্যালো,,,,,,,,,,
,,,,,,,
জ্যোতিঃ ধূর,,,,,(ফোন কেটে দিলাম,,,)
,,,,,,,,
,,,তোমার গলার এই একটু স্বরই আমার আরামে ঘুমানোর ঔষধ,,,, শুভ রাত্রি,,,,
,,,,
জ্যোতিঃ আজব লোক তো,,, ফোন করে কথা বললো না,,, এখন আবার এই ম্যাসেজ,,, আমি কল দিলাম,,, কিন্তু ফোন বন্ধ বলছে,,, যে ইচ্ছে হোক আমার কী,,,?? পাগল,,,,ছা,,,ছাগল,,,,, এই পাগলামিগুলো একসময় আমিও করেছিলাম,,,,, আপনাকে একটু দেখার জন্য মাসের পর মাস বাবা-মাকে মিথ্যা বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছি,,,, কতগুলো নাম্বার চেঞ্জ করেছি তার হিসাব নেই,,,, দেখুন সেই পাগলামির স্বীকার আজ আমিই,,,,, হাহাহাহা,,,,,,কিন্তু এই পাগলটা কে,,,??? তনয় স্যার,,,??? এটা কী সম্ভব,,,?? আমি তো আবেগের বসে এসব করেছি কিন্তু উনার তো আবেগের বয়স নয়,,,, আমি বেশি ভাবছি উনি নয় হয়তো,,,,।
মাঃ জ্যোতি,,,,,,,,??
জ্যোতিঃ হ্যাঁ মা,,,,।
মাঃ এত রাত হয়েছে ঘুমাসনি এখনো,,,?? আগামীকাল আবার অন্তরার শশুর বাড়ী যাবি না,,,??
জ্যোতিঃ ( ও বাড়িতে যাওয়া মানেই রিয়াদের সামনে যাওয়া,,,, কিন্তু আমিতো উনার সামনে যেতে পারবো না,,,, উনার বলা কথাগুলো কানে বাজতে লাগলো,,,)
মাঃ কী ভাবছিস,,,?? অন্তরাকে না আনতে যাবি,,, তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়,,,,
জ্যোতিঃ আ,,,আমি যাবো না অন্তরাকে আনতে,,,
মাঃ সে কী,,,, যাবি না কেন,,,??
জ্যোতিঃ এমনই,,,, যেতে ইচ্ছে করছে না,,,
মাঃ ওহ্ ,,,, তোর ইচ্ছা,,,, তবু এখন ঘুমা,,, রাত হয়েছে অনেক,,, শরীর খারাপ করবে,,,,
জ্যোতিঃ হুম,,,, ঘুমিয়ে পড়ছি,,,,
,,,,,,,,
রিয়াদঃ এই সিয়া,,,, দেখো আজ বাড়ি সেইদিনের মতো সাজানো হয়েছে,,,, আমাদের বিয়েতে যেমন সাজানো হয়েছিলো,,,, হবে নাই বা কেন,,?? আজ চৌধুরী বাড়ির ছোট ছেলের বিয়ে,,,, হ্যাঁ তোমার সেই ছোটে মিয়ার বিয়ে আজ,,,, যার বউ নিজে সাজিয়ে আনতে চাইতে তুমি,,,,
,,,,,
রিয়াদঃ কী রে হৃদয়,,,,?? খাওয়া বাদ দিয়ে ফোনে কী করছিস,,,??? খাবার সামনে রেখে ফোন দেখে মিটমিট করে হাসছিস,,,,
হৃদয়ঃ কই ভাইয়া,,,?? তুমি কী যে বলো না,,??
সিয়াঃ প্রেমে টেমে পড়ছে নাকি আমাদের ছোটে মিয়া,,,,???
হৃদয়ঃ কী যে বলো না ভাবি,,,,,?? একটা জোক্স পরে হাসলাম,,,
সিয়াঃ হুম,,,, তোমার কষ্ট করতে হবে না ছোটে মিয়া,,,, আমি খুঁজবো তোমার বউ,,, আর নিজ হাতে সাজিয়েও দিবো,,,,,
,,,,,
রিয়াদঃ তুমি স্বার্থপর সিয়া,,,, তুমি অনেকবেশি স্বার্থপর,,,,
মাঃ( কী করবো আমি,,,,?? এক ছেলের জীবনতো গুছিয়ে দিলাম,,,,। কিন্তু ওর জন্য আমি কী করবো,,,?? সবার সামনে শক্ত থাকলেও ভেতরে ভেতরে শেষ হয়ে যাচ্ছে আমার ছেলেটা,,,,,। কী করে ঠিক করবো ওর জীবন,,,?? সিয়াম কান্না করছিলো,,?? আজতো কী খেয়েছে ঠিক নেই,,?? মনে হয় পেট ব্যাথা করছে এখন,,,। তাই ওকে কোলে নিয়ে হাঁটছিলাম,, রিয়াদের রুমের সামনে এসে রিয়াদের গলা কানে আসলো,,,,,। এভাবে আর মেনে নিতে পারছি না,,,,৷ চোখের সামনে নিজের সন্তানকে তিলেতিলে শেষ হতে কোনো মা দেখতে পারবে না,,,, কিন্তু বিয়ের কথা বললে পাগলামি শুরু করে দিবে,,,,,। সিয়াম কান্না করতে করতে আবার ঘুমিয়ে পড়েছে তাই ওকে নিয়ে রুমে চলে এলাম,,,,)
,,,,,,
হৃদয়ঃ অন্তরা,,,,,,
অন্তরাঃ হুম,,,,,(এখনো চোখ বুঁজে উনার বুকে মাথা রেখে দাঁড়িয়ে আছি,,,, উনার হাত আলগা হয়ে গেছে কিন্তু আমার সরে যাওয়ার ইচ্ছে করছে না,,,,,)
হৃদয়ঃ ভালোবাসি,,,,,,,
অন্তরাঃ(উনার কথা শুনে চোখ খুললাম,,, মাথা এখনো উনার বুকে,,,)
হৃদয়ঃ থাক,,, উত্তর দিতে হবে না,,,, শুধু সারাজীবন এভাবেই থেকো,,, আমার বুকে,,,,
অন্তরাঃ(উনার দিকে তাকালাম,,, এতো ভালোবাসা ছিলো আমার কপালে,,,, সইবে তো এই সুখ,,,??)
হৃদয়ঃ সুখ,,, দুঃখ,,,, হাসি,,, কান্না সব মিলেই আমাদের জীবন,,,,, শুধু দুঃখ থাকলে যেমন মানুষ মানতে পারে না,,, আবার শুধু সুখ থাকলে জীবনের মানে বুঝা যায় না,,,,। সব মিলেই জীবনের আসল মর্ম বুঝতে পারা যায়,,,,। জীবনে যেমন সময়ই আসুক শুধু এই হাত ধরে থেকো শক্ত করে,,,,। কিছু ভুল করলে,,, না লুকিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিয়ো,,,,। আমি কিছু ভুল করলে সেটা ধরিয়ে দিয়ো,,,, শেষে এটাই বলবো জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে বিশ্বাস রেখো,,,,। কারণ সম্পর্কে বিশ্বাস না থাকলে সেই সম্পর্কের অস্তিত্ব থাকে না,,,,।
অন্তরাঃ(কতো সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলেন কঠিন কথাগুলো,,,,। এখন আর সুখের চিন্তা হচ্ছে না,,,,। সত্যি তো সুখ আর দুঃখ মিলেই তো জীবন,,,)
হৃদয়ঃ কী হলো বুঝতে পেরেছো,,,???
অন্তরাঃ হুম,,, বুঝতে পেরেছি,,,,।
হৃদয়ঃ গুড,,,(ওর কপালে কপাল ঠেকালাম,,,। ওকে ড্রেসিংটেবিলের সামনে নিয়ে দাঁড় করালাম,,,,)
দেখো তো মানিয়েছে কিনা,,,??
অন্তরাঃ(উনার কথা শুনে আয়নায় তাকালাম,,, উনি আমার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে,,,, নীল পাঞ্জাবি গায়ে,,, অসম্ভব সুন্দর লাগছে উনাকে,,,, আমার গায়েও নীল শাড়ী,,,,। দুজনকে সত্যি অনেক সুন্দর মানিয়েছে,,,,)
হৃদয়ঃ কী হলো বলো,,,??(একটা হাত শাড়ির নিচে খালি পেটে রাখলাম,,,,, মনে হচ্ছে সারা শরীরে বৈদ্যুতিক শক খেলাম,,,, পেটটা কেমন তুলোর মতো নরম,, আর একটা হাত শাড়ির ওপরে,,,,, থুতনি ঘাড়ে রাখলাম,,,, কেমন মাতাল মাতাল লাগছে নিজেকে,,,)
অন্তরাঃ(উনার স্পর্শে কেঁপে ওঠলাম,,,,, সারা শরীর কাঁপছে,,,,, আয়নায় উনার দিকে তাকালাম,,,, উনি আয়নার মধ্যে কেমন নেশাগ্রস্ত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,,, আমি চোখ নামিয়ে নিলাম,,,)
হৃদয়ঃ কী ভাবছো এতো,,,?? কথা বলতেই ভুলে গেছো মনে হচ্ছে,,??
অন্তরাঃ ক,,,কী ব,,বলবো,,??
হৃদয়ঃ কেমন মানিয়েছে,,,, মিস্টার এন্ড মিসেস হৃদয় চৌধুরী,,,??
অন্তরাঃ ভ,,,,ভালো,,,,
হৃদয়ঃ তুমি কী আমাকে ভয় পাচ্ছো অন্তরা,,,???
অন্তরাঃ(কী বলবো,,,?? ভয়তো করছেই,,, সাথে লজ্জাও,,,,)
হৃদয়ঃ তোমার মুখে ভয় আর লজ্জা দুটোই দেখতে পাচ্ছি আমি,,,,। এটা আমার ব্যর্থতা এখনো তোমার মনের ভয় দূর করতে পারিনি,,,,।
অন্তরাঃ ন,,না না,,, আপনি কী বলছেন,,,??
হৃদয়ঃ হুস,,,,(অন্তরার ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিলাম,,,) যেদিন তোমার মুখে এই ভয় না থাকবে,,,,, শুধু লজ্জা থাকবে,,,, আর আমার মতো তুমিও আমাকে কাছে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকবে সেদিনই তোমার কাছে ধরা দিবো আমি,,,,,
অন্তরাঃ কিন্তু আমি,,,,,।
হৃদয়ঃ উহুম,,,, আমার বলা শেষ হয়নি,,,, তাতে ভেবো না তুমি একবারে ছাড় পেয়ে যাবে,,,, আমার যখন ইচ্ছে হবে তখন জড়িয়ে ধরবো,,,, যখন ইচ্ছে হবে কিস করবো,,,(কানের কাছে ফিসফিস করে,,,)
অন্তরাঃ( ধূর এভাবে কেউ বলে,,,?? সরে আসতে চাইলে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে,,,, উনার এক হাত এখনো আমার খালি পেটে,,,,)
হৃদয়ঃ আচ্ছা তুমি কী দিয়ে তৈরি বলোতো,,,??
অন্তরাঃ কেন,,,,???
হৃদয়ঃ এতো নরম কেন,,,?? মনে হচ্ছে তুলো,,, (পেটে হাত রেখেই,,)
অন্তরাঃ (মুখে কিছু আঁটকায় না দেখছি এর,,,)
হৃদয়ঃ আগেই তো বললাম বউয়ের কাছে লজ্জার কিছু নেই,,,,। আর আমার এমনিতেই লজ্জা একটু কম,,,,(চোখ টিপ দিয়ে)
অন্তরাঃ (চোখ ছোটো ছোটো করে উনার দিকে তাকালাম,,,, মনের কথাও শুনতে পায় দেখছি,,)
হৃদয়ঃ হুম,, শুনতে না ঠিক,,, তোমার মুখ দেখে মনে হলো এসবই বলছো,,,,
অন্তরাঃ মানুষের মুখ দেখে মনের কথা বুঝা যায়,,,??
হৃদয়ঃ হুম যায়,,, তবে মানুষটাকে অনেক ভালোবাসতে হয়,,,, তারপর তার মুখ দেখে মনের কথা বুঝা যায়,,,,,
অন্তরাঃ ওহ্ ,,,,,,,
হৃদয়ঃ টাওয়েল কোথায়,,,,,??
অন্তরাঃ কেন ফ্রেস হবেন,,??
হৃদয়ঃ আমি এসেই ফ্রেস হয়ে নিয়েছি,,,, তোমার চুলের পানিতে আমার পাঞ্জাবি ভিজে গেছে,,, তোমার শাড়িও,,,,, ঠান্ডা লেগে যাবে তো তোমার,,,,
অন্তরাঃ ওহ্ ,,,, আমি এখনই মুছে নিচ্ছি,,, কিন্তু টাওয়েল কোথায় রাখলাম,,,,???
হৃদয়ঃ( সোফা থেকে টাওয়েল নিয়ে চুল মুছে দিতে লাগলাম,,,,,)
অন্তরাঃ আমি করে নিবো,,,,,,
হৃদয়ঃ জানি করে নিতে পারবে,,,, কিন্তু এখন এটা আমিই করবো,,,,,(চুল মুছে ভালো করে চুল আঁচড়ে দিলাম,,,, তারপর কোলে তোলে নিলাম,,,,)
অন্তরাঃ ক,,,,,কী করেছেন,,,,, আপনি না বললেন,,,??..
হৃদয়ঃ হুস,,,,,,,,,
চলবে,,,,,,,,
💔#Divorce💔
Writer: Tahmina Toma
Part: 34
অন্তরাঃ ক,,,,,কী করেছেন,,,,, আপনি না বললেন,,,??..
হৃদয়ঃ হুস,,,,,,,,, (ওয়াশরুমে নিয়ে নামিয়ে দিলাম,,,)
অন্তরাঃ আরে ওয়াশরুমে কেন আনলেন আবার,,??
হৃদয়ঃ ওযু করবো দুজনে একসাথে,,,, তারপর দু’রাকাআত নফল নামাজ পড়ে নতুন জীবন শুরু করবো,,,,
অন্তরাঃ আমি তো কেবল গোসল করলাম,,, ওযু আছে আমার,,,,,
হৃদয়ঃ আবার করো আমার সাথে,,,,
অন্তরাঃ ঠিক আছে,,,,,
(দুজনে একসাথে ওযু করে এসে নামাজ পড়ে নিলো,,,,)
অন্তরাঃ(হে আল্লাহ,,,, তোমার কাছে অশেষ শুকরিয়া ,,,,, আমার জীবন থেকে অন্ধকার সরিয়ে আলোর সন্ধান এনে দিয়েছো,,,, এমন একজন জীবনসঙ্গী তুমি দান করেছো,,,,,,। তুমি আমার সব আপনজনদের অনেক ভালো রাখো,,,, নেক হায়াত দান করো,,,,, আমার স্বামীর নেক হায়াত দান করো,,, আর সবার মন জুগিয়ে চলার ধৈর্য দান করো,,,, উনার হাত ধরে বাকি জীবন পারি দেওয়ার তৌফিক দান করো,,,,,নতুন জীবন নতুনভাবে শুরু করার তৌফিক দাও,,,,, আমিন,,,)
হৃদয়ঃ ( ওর বিশ্বাস যেন আমি সারাজীবন ধরে রাখতে পারি খোদা,,,,, অনেক কেঁদেছে জীবনে,,,, আর এক ফোঁটা পানি যেন না আসে সেভাবে রাখতে দিও খোদা,,,,, জীবনের সব পরিস্থিতিতে যেন ওর হাত শক্ত করে ধরে রাখতে পারি,,,, আমিন,,, নামাজ শেষে ওর দিকে তাকালাম,,, ও মোনাজাত শেষ করে আমার দিকে তাকালো,,) কী চাইলে,,??
অন্তরাঃ না,,,, আল্লাহ তাআলার কাছে চাওয়া জিনিস অন্যকাউকে বলা যাবে না?? ( ওঠে দাঁড়িয়ে দু’টো জায়নামাজ ভাজ করলাম,,, ভাজ করে রেখে উল্টো ঘুরতেই আবার কোলে তোলে নিলেন,,,,) আরে এখন আবার কোথায় যাচ্ছেন এভাবে,,,,??
হৃদয়ঃ গেলেই দেখতে পাবে,,,, এখন চোখ বন্ধ করো,,,,
অন্তরাঃ কিন্তু,,,,,,,
হৃদয়ঃ তুমি কী এখনো আমাকে বিশ্বাস করো না,,??
অন্তরাঃ পাইছে এক কথা,,,, আগে জানতাম মেয়েরা ইমোশনাল ব্লাক মেইল করে,,,, এখানে দেখছি উল্টো,,,,, নিন করেছি চোখ বন্ধ,,,,
(হৃদয় অন্তরাকে কোলে নিয়ে হাঁটতে লাগলো,,)
হৃদয়ঃ এবার চোখ খুলো,,,,
অন্তরাঃ( আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকালাম,,,, ছাদে দাঁড়িয়ে আছি আমরা,,,, চাঁদের আলোয় সব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে,,,, ছাঁদটাও অনেক সুন্দর করে সাজানো,,,,, অনেক ফুল দিয়ে,,,, ছাঁদে অনেক গাছও আছে দেখা যাচ্ছে,,,,, উনি কোলে নিয়ে একটু সামনে নিয়ে গেলো,,,,) ছাঁদে সুইমিংপুল,,,,??
হৃদয়ঃ কেন ভালো লাগলো না,,,??? এটা আমার সুইমিংপুল,,,।
অন্তরাঃ অনেক সুন্দর,,,,, মনে হচ্ছে চাঁদটা পুলে নেমে এসেছে,,, হাত বাড়ালেই ধরা যাবে,,,,
(হৃদয় অন্তরাকে কোল থেকে নামিয়ে দিলো,,,, অন্তরা হেঁটে গিয়ে পুলের পানিতে পা ভিজিয়ে বসলো,,, হৃদয়ও অন্তরার পাশে বসে পড়লো,,,,)
অন্তরাঃ চারদিকে ফুলের সুভাস,,,,, আশেপাশে নানারকম গাছ,,,, তার মধ্যে একটা পুলে মনে হচ্ছে চাঁদ নেমে এসেছে,,,,,চাঁদের আলোয় চারদিক আলোকিত,,,, অপরুপ এক পরিবেশ,,,, মনে হচ্ছে কোনো স্বপ্নের রাজ্য,,,, ঘুম ভাঙলেই সব ভ্যানিস হয়ে যাবে,,,,
হৃদয়ঃ উহুম,,, কিছুই ভ্যানিস হবে না,, আমার খুব ইচ্ছে ছিলো আমার ভালোবাসার মানুষের সাথে এখানে বসে জোছনা বিলাস করবো,,, দেখো আমার ইচ্ছে পূরণ হয়েছে,,,, আজ পূর্নিমা চাঁদ আকাশে আর আমার চাঁদ আমার পাশে,,,, এই চাঁদের কাছে ঐ চাঁদ আজ বড্ড ফিকে লাগছে,,,,
অন্তরাঃ(আমি উনার কাঁধে মাথা রেখে আকাশের চাঁদ দেখছি আর উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,)
হৃদয়ঃ (চাঁদের আলোয় অন্তরার রুপ যেন আরো কয়েকগুণ বেড়ে গেছে,,,,)
অন্তরাঃ চাঁদতো ঐদিকে আকাশে,,,,,
হৃদয়ঃ আমার চাঁদ এইদিকে,,,, আমার কাঁধে মাথা রেখে ঐ চাঁদ দেখছে,,,,,
অন্তরাঃ(উনার দিকে একবার তাকিয়ে আবার কাঁধে মাথা রাখলাম,,,, এখন কেন যেন কোন জড়তা কাজ করছে না,,,, উনাকেই সবচেয়ে বেশি আপন মনে হচ্ছে,,,,,,এই বুকটাতেই শান্তি খোঁজে পাচ্ছি,,,, )
হৃদয়ঃ (এই নিষ্পাপ মুখটা দেখেও কেউ কীভাবে আঘাত করতে পারে,,,,?? এই মুখ দেখলে তো,,,, কোনো নিকৃষ্ট পাপীও পাপ করতে ভুলে যাবে,,,,)
অন্তরাঃ কী ভাবছেন,,,,?? আফসোস হচ্ছে এখন,,,??
হৃদয়ঃ অন্তরা,,,,,,??? (রাগে চোখ লাল হয়ে গেছে,,, অনেক জোরে ধমক দিয়ে)
অন্তরাঃ স,,,স,,সরি (উনাকে দেখে এখন আমার ভয় করছে,,,,। কিছুদিন আগে রাস্তায় কিছু ছেলে,,, বাজে কথা বলায় রেগে গিয়েছিলো,,,, এখনোও তেমনি রেগে গিয়েছে,,,, দেখে ভয় হচ্ছে,,,,। এই সামান্য কথায় উনি এতটা রেগে যাবেন ভাবতেও পারিনি,,,, উনি কী আমাকে মারবে এখন,,,??)
হৃদয়ঃ (অন্তরা ভয় পাচ্ছে দেখে চোখ বন্ধ করে রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলাম,,,, চোখ বন্ধ করা অবস্থায় ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম,,,,)
অন্তরাঃ(আমি ভেবেছিলাম উনি হয়তো আমাকে মারবে কিন্তু এভাবে জড়িয়ে ধরবে ভাবতেও পারিনি,,,,,)
হৃদয়ঃ এই হৃৎস্পন্দনের শব্দ শুনতে পাচ্ছো,,,,??
অন্তরাঃ হুম,,,,,
হৃদয়ঃ প্রতিটা স্পন্দনে তোমার নাম লেখা আছে,,, তুমি যদি এখন দেখতে একদম বাজেও হতে তাহলেও আমার ভালোবাসা এমনই থাকতো,,,, তুমি যেমনই হও আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি,,,, কেন জানো,,,?? মানুষ ভালোবাসে চোখ দিয়ে নয়,,,, মন দিয়ে,,, আর মন সবসময় অন্ধ হয়,,,,। এই হৃৎস্পন্দনের শব্দ যতদিন শুনতে পাবে ততদিনই আমি তোমাকে ভালোবাসবো,,, যেদিন এই শব্দটা থেমে,,,,,
অন্তরাঃ এটা কী বলছেন,,,?? (করুন চোখে তাকালাম,,,)
হৃদয়ঃ (ওর হাত সরিয়ে হাতে একটা কিস করলাম,,,, তুমি মানো আর না মানো তুমিও আমাকে ততটাই ভালোবাসো যতটা আমি তোমাকে বাসি,,,,,) ভয় নেই তোমাকে একা ফেলে যাবো না,,, সেখানে যাবো তোমাকে সাথে নিয়ে যাবো,,,,,। এই স্পন্দনের শব্দ থেমে গেলেও তোমাকেই ভালোবাসবো,,,,( ওর কপালে কিস করে আবার বুকে জড়িয়ে ধরলাম শক্ত করে,,, জানি না কবে তুমি আমার ভালোবাসা বুঝতে পারবে,,,, কবে আমাকে বিশ্বাস করা পারবে,,,,)
(অনেকসময় দুজন এভাবেই বসে রইলো,,,)
হৃদয়ঃ চলো রুমে যাওয়া যাক,,,, রাত শেষের দিকে মনে হচ্ছে,,,,,
অন্তরাঃ,,,,,,,,,,,,,
হৃদয়ঃ(অন্তরার দিকে তাকিয়ে দেখি ঘুমিয়ে পড়েছে বুকে মাথা রেখেই,,,,,, অসম্ভব মায়াবী লাগছে ঘুমন্ত অন্তরাকে,,,, আগে শুধু শুনে এসেছি,,,,৷ মেয়েরা ঘুমালে তাদের আরো মায়াবী লাগে,,, আজ তার প্রমাণও পেয়ে গেলাম,,,, কোলে করে রুমে চলে,,,, বেডে শুইয়ে দিয়ে ওর দিকে তাকালাম,,,,, কপালে একটা কিস করে চোখ গেলো ওর ঠোঁটের দিকে,,,,, গোলাপি ঠোঁট বাচ্চাদের মতো উল্টে ঘুমাচ্ছে,,,,, গোসলের পর সব মেকআপ ধুয়ে গেছে,,,, একদম স্নিগ্ধ লাগছে,,,, ওর ঠোঁটে ছোট করে একটা কিস করলাম,,,,, ঘুমের মধ্যেই কপাল কুঁচকে গেলো ওর,,,, তা দেখে ফিক করে হেঁসে দিলাম,,,,, তারপর ওর বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়লাম,,,,)
অন্তরাঃ(ফজরের আযান শুনে ঘুম ভেঙে গেলো,,,, আমার অনেক আগে থেকেই নামাজ পড়ার অভ্যাস,,, তাই আযান কানে আসলেই ঘুম ভেঙে যায়,,,,, উঠতে গিয়েও উঠতে পারলাম না,,,, বুকে ভাড় অনুভব করে চোখ খুললাম,,,, তাকিয়ে আমার চোখ রসগোল্লার মতো বড়বড় হয়ে গেলো,,,, কেউ আমার বুকে মাথা রেখে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে,,,,, হঠাৎই গতকালের সব মনে পড়ে গেলো,,,, আমরা ছাঁদে ছিলাম,,,, কখন ঘুমিয়ে পড়েছি মনে নেই,,,, হয়তো উনি কোলে করে নিয়ে এসেছেন,,,,, ইস কতো কষ্ট হলো উনার,,,,। উঠতে হবে,,, নামাজ পরবো,,,,। কিন্তু উনি যেভাবে শুয়ে আছে না ডাকলে যেতে পাড়বো না,,,) এই যে শুনছেন,,,???
হৃদয়ঃ হুম,,,,,,,,,
অন্তরাঃ হুম কী,,, উঠুন আমি নামাজ পড়বো,,,,,,
আপনি পড়বেন না,,??
হৃদয়ঃ পড়ে নামাজ পড়ে নিবো মা,,,, কাল রাতে অনেক পড়ে ঘুমিয়েছি,,,, ঘুম হয়নি এখনো আমার,,,,
অন্তরাঃ মা এলো কোথা থেকে,,,???
হৃদয়ঃ (ঘুমঘুম চোখ খুলে অন্তরার দিকে তাকালাম,,,, ওকে জড়িয়ে ওর বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছি,,,,,আবার ভালো করে শুলাম) সারারাত স্বপ্নে জ্বালিয়ে ভোরেও চলে এসেছো,,,, এসেই যখন পড়েছো এখন ফট করে একটা মর্নিং কিস দাও,,,(ঠোঁট দেখিয়ে,,)
অন্তরাঃ(পাগল হয়ে গেছে নাকি,,,,) আপনি কী বলছেন এসব,,,??
হৃদয়ঃ স্বপ্নেই এতো লজ্জা পাও,,,, বাস্তব কী করবে,,,?? কথা বাদ দিয়ে ফট করে একটা মর্নিং কিস দাও,,,,,
অন্তরাঃ আপনি কী পাগল হয়ে গেছেন,,,?? মাকে ডাকবো,,,?? কী আবোলতাবোল বলছেন,,,??
হৃদয়ঃ (অন্তরার এমন কথা শুনে ঘুম কেটে গেলো,,, আবার ওর দিকে তাকালাম,,, তার মানে আমি স্বপ্ন দেখছি না,,,, সব সত্যি,,,, ফট করে ওঠে বসলাম,,,) স,,,সরি,,,, ঘুম থেকে ওঠে সব স্বপ্ন মনে করেছিলাম,,,। আসলে প্রতিদিন এক স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙতো তো তাই আর কী,,,
অন্তরাঃ মানে,,,, আপনি প্রতিদিন এই,,,,,,
হৃদয়ঃ (ধূর কী বলে দিলাম,,,,??) না মানে কিছু না,,, তুমি ফ্রেস হয়ে ওযু করে এসো,,,, আমি মসজিদে যাচ্ছি,,,??
অন্তরাঃ তাহলে আপনি আগে ফ্রেস হয়ে যান,,
হৃদয়ঃ ঠিক আছে,,,,,
(হৃদয় ফ্রেস হয়ে মসজিদে যাওয়ার জন্য বের হলো,,, আর অন্তরা ওযু করে রুমেই নামাজ পড়তে দাড়িয়ে গেলো,,,,)
রিয়াদঃ হৃদয়,,,,,,,
হৃদয়ঃ হ্যাঁ ভাইয়া,,,,,
রিয়াদঃ মসজিদে যাবি,,,,,
হৃদয়ঃ হ্যাঁ,,,, তুমি একাই চলে যাচ্ছো কেন আজ,,,??
রিয়াদঃ ভাবলাম তুই যাবি না হয়তো,,,, গতকাল অনেক ধকল গেছে,,,, তাই একাই যাচ্ছিলাম,,,
হৃদয়ঃ না চলো,,, আমিও যাবো,,,,
(রিয়াদ সিয়ার জন্য রাতভর কাঁদলেও ঠিকমতো নামাজ পড়ে সিয়ার জন্য দোয়া করে,,, নেশা করে না বরং আল্লাহর কাছে হাত তুলে,,, যখন খুব বেশি কষ্ট হয়,,,, ফজরের নামাজ দু’ভাই একসাথেই পড়তে যায় প্রতিদিন,,)
রিয়াদঃ তুই বাসায় যা আমি আসছি,,,,,
হৃদয়ঃ কোথায় যাবে,,,,??
রিয়াদঃ সিয়ার কাছে যাবো একটু,,,,,, তুই বাসায় যা,,,
হৃদয়ঃ আমিও যাবো চলো,,,,
(দুজনে একসাথে সিয়ার কবর জিয়ারত করলো,,, তারপর কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বাসার উদ্দেশ্য পা বাড়ালো,,,)
হৃদয়ঃ ভাইয়া একটা কথা বলতাম,,,, যদি কিছু মনে না করো,,,,
রিয়াদঃ হুম,,,, বল,,, কী মনে করবো,,,,??
হৃদয়ঃ জ্যোতি মেয়েটাকে আমি চিনি,,,,। ও কিন্তু সত্যি তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসে,,,
চলবে,,,