In_The_Depths_Of_Love Part-15

0
8022

#In_The_Depths_Of_Love
#Mizuki_Aura
#Part_15

বিমানবন্দরে দাড়িয়ে চেকিং করাচ্ছে আবির আর রেজোয়ান সাহেব। সন্ধ্যা প্রায়। এদিকে রেজোয়ান সাহেবের মুখ বেশ ভার। কেনো ? তা বোঝা আবিরের পক্ষে শক্ত।

” কি? মাকে খুব বেশিই মিস করছো নাকি?” আবির উপহাস করে বললো।

ছেলের কথায় রেজোয়ান সাহেব রেগে গেলেন ” তা কিভাবে বুঝলে বাবা?”

আবির টিকিট নিয়ে বাবার দিকে ঘর ঘুরালো ” তোমার চেহারার উন্নতি দেখে” হেঁটে চলে গেলো।

” বুঝবান ছেলে আমার” ফুঁসতে ফুঁসতে গেলো রেজোয়ান সাহেব।

প্লেন ছেড়ে দেবে এখনি। রেজোয়ান সাহেব জিজ্ঞেস করলেন ” বাড়িতে খবর দিতেই ভুলে গেছি। তুই বলেছিস?”

আবির মাথা নাড়লো আর ঠাট্টা করে বললো ” কি দরকার? তোমাকে দেখে নাহয় মা একটু মিনি শক খেলো…. ইটস গুড”

রেজোয়ান সাহেব বাকা চোখে তাকালেন ” নিজের মাছ ঢাকতে আমার শাক ব্যবহার করছো ? করো করো” বিড়বিড় করলেন

” এই বয়সেই যদি বিড়বিড় করো তো ভবিষ্যৎ তো পড়েই আছে” ফোনের দিকে তাকিয়ে।

রেজোয়ান সাহেব থতমত খেয়ে গেলেন ” বোঝে কিভাবে এইটাই আজ পর্যন্ত ধরতে পারলাম না ” মুখ ঘুরিয়ে বসে রইলেন।

__________________

এদিকে রাই আনমনেই বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলো । আকাশের দিকে তাকিয়ে ও বেখেয়ালি ভাবে নিজের সাথেই কথা বলে যাচ্ছে
“উনি এমনভাবে পরিবর্তন হচ্ছেন ! সত্যিই অদ্ভুত। আগে তো প্রায় সারাদিনই আমার আশপাশেই থাকতেন। কিছু হোক না হোক , এখন! একটা ফোন ও করেন না। ”

তখনি পেছন থেকে কেউ আচমকাই রাই কে জড়িয়ে ধরে কাঁধে একটা গভীর চুমু দিল “সবসময় আমিই কেনো এগোবো? নিজেও তো ফোন করতেই পারো ….. অন্যের ওপর এতো নির্ভরশীল কেনো থাকো?”

রাই চমকে উঠে ঘুরে তাকালো ” কেহ …..”
আবিরকে দেখে যেনো রাই এর বিশ্বাসই হলো না। রাই একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলো আবিরের দিকে।
আবির কি একটা ভাবলো। ভেবে রাই এর থেকে একপা সরে গেলো

” ওহ, সরি তোমাকে টাচ করা যাবেনা” বলে আবির ঘুরে যেতে নেবে রাই পেছন থেকে আবিরের হাত টেনে ওর বুকের সাথে লেপ্টে গেলো।
আবির বাকা হেসে রাই কে নিজের থেকে সরিয়ে নিলো । রাই এতই খুশি যে কিছু বলতেও পারলনা।

” তুমি তো ডিসটেন্স পছন্দ করো…..”

রাই এর চেহারা মলিন হয়ে এলো ” আপনি, তো আরো এক সপ্তাহ পরে আসবেন বলেছিলেন”

আবির বারান্দা থেকে ঘরে এলো”হ্যা, পরে ভাবলাম অনেকদিন যাবত কারো কড়া গলা শুনি না। একটু শুনে আসি” ।

রাই মনে মনে হাসলো । আর ওর কাপড় বের করে খাটে রাখলো ” ফ্রেশ হয়ে নিন, আমি খাবার দেই”

” নাহ। পেট ভরা। বেজায় খাটতে হবে না”

রাই এর ভালো লাগলো না কথাটা “আপনার একার জন্য তো আর রাজভোগ বানাতে হবেনা তাই সমস্যা নেই। ফ্রেশ হয়ে নিন” বলে রাই বেরিয়ে গেলো। বাহিরে এসে তো রাই এর খুশি দেখে কে। লোকটি ফিরে এসেছে। এর থেকে খুশির কি হতে পারে।
বাবাকে গিয়ে ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করলো তারপর দুজনের জন্য খাবার গরম করতে চলে গেলো রাই। বাকিরা অনেক আগেই খেঁয়ে নিয়েছে। তখনি রান্নাঘরে ঢুকলো নিশান।

” এখানে কী করছো? ” রেগে গেলো রাই।

” তোমার কথামত চলতে হবে এমনটা তো না” নিশান জবাব দিলো।

” না হবেনা। কিন্তু আমার থেকে দুরুত্ব বজীয়ে চলবে ” বলে রাই ঘুরে খাবারে মনোযোগ দিলো।

নিশান প্যান্টের পকেটে দুহাত দিয়ে রাই এর কানের কাছে মুখ এনে বললো ” তো ভালই হলো। যাও এখন ভাই কেইজিজ্ঞেশ করে দেখো সেদিন কি হয়েছিলো….”
রাই এর বুক ধক করে উঠল। নিশান ওখান থেকে হেলেদুলে চলে গেলো।

__________________

বাবার খাবার তার ঘরে দিয়ে এসে, রাই আবিরের খাবারটা ঘরে নিয়ে গেল। আবির সোফায় বসে ছিল। রাই গিয়ে সোফার সামনের ছোট্ট টেবিলে খাবার এর প্লেট রেখে দিল। আর তখনই আবির রাই এর বা হাত ধরে ওকে টেনে নিজের পায়ের ওপর বসিয়ে দিল আর সন্দিহান চোখে তাকালো ” সেদিন কাঁদছিলে কেনো?”

রাই কোনকথা বললো না। উল্টো মাথা নিচু করে নিলো।

” কেউ কিছু বলেছে?”

রাই মাথা নাড়লো। দরকার কি শুধু শুধু এই কথা বলে আবারো অশান্তি করার। আবির শেষবারের মতো বললো ” তাহলে কিছু লাগবে?”

রাই পুনরায় মাথা নেড়ে না করলো। আবির বেশ ভালই বুঝতে পারছে যে রাই কিছু লুকাচ্ছে। কিন্তু বেশি জোরাজুরি আবার আবিরের পছন্দ না।
” খাইয়ে দাও”

রাই অবাক চোখে তাকালো। আবির প্লেট টা সামনে এনে বললো “খাইয়ে দাও…”

আশ্চর্যজনক ভাবে আবির লক্ষ্য করছে রাই এখন আর আগের মতো ওর ওপর রাগছে ও না। আবার দূরেও ঠেলে দিচ্ছে না। আবারো প্লেট এগিয়ে দিল , রাই নিয়েও নিলো। আবির ভাবছে এটা কি সত্যি স্বপ্ন!
এক লোকমা ভাত নিয়ে আবিরের মুখের সামনে ধরলো রাই।

আবির নিজের চিন্তায় মশগুল ছিলো বিধায় দেখেই নি। রাই বলে উঠলো ” কিহলো? নেন”

চিন্তার জগৎ ছেড়ে আবির খাবার খেয়ে নিল। রাই ও নিজের মতো করে খাইয়ে দিচ্ছে। হটাৎ খাবার মুখে নিতে গিয়ে আবির আলতো ভাবে রাই এর হাত কামড়ে ধরলো। তবে আলতো ভাবে। রাই দ্রুত হাত সরিয়ে নিলো। কিন্তু কিছু বললো না। শুধু মনে মনে হেসে উঠলো।
একই কান্ড এখন যতবারই খাবার দিচ্ছে রাই ততবারই তার আঙ্গুল একটু একটু করে কামড়ে ধরছে। এদিকে রাই খাওয়ানো ছেড়ে দিলে নির্ঘাত এই ছেলে নিজে খাবে না, আবার উদ্ভট পাগলামি ও করছে। তবে এতে রাই এর বিশেষ সমস্যা হচ্ছেনা।

” খাবার আমার হাতে। আমার হাত নয়। ” রাই এর এই কথায় আবির এবারে একটু জোরেই কামড়ে ধরলো ” আহ্…… আরে এমন কেনো করছেন”

আবির ভাব নিয়ে বললো ” আমি তো খাবারই খাচ্ছি। মাঝে তুমি তোমার হাত নিয়ে এলে কামড় তো খাবেই।”

রাই হেসে ওঠে ” তাই? এককাজ করি চামচ নিয়ে আসি…..” বলে রাই উঠতে গেলে আবির উঠতে দিলো না ” প্লেটের দিকে দেখেছেন?”
রাই কপাল কুঁচকে প্লেটের দিকে তাকালো ….. আর এক লোকমার মতো খাবার আছে। এর জন্য আলাদা ভাবে চামচ? ধুর রাই খাইয়ে দিল। কিন্তু এইবারে আবির সত্যিই খুব জোরেই কামড়েছে। রাই হাতটা ছড়িয়ে নিলো ” রাক্ষস”

আবির ঠোঁট জোড়া কিঞ্চিৎ প্রসারিত করে তাকালো ” পানি?”
রাই চোখ ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইলো “পানিও আমাকে খাইয়ে দিতে হবে”
আবির কিছু না বলে তাকিয়ে রইলো। রাই একটা ছোট্ট শ্বাস ফেলে গ্লাসটা হাতে নিলো। শেষে কিনা বাচ্চাদের মত খাইয়ে দিতে হচ্ছে! বাবা দেখলে নির্ঘাত আবিরের কান ঝালাপালা করে দিতেন।

রাই হাত ধুয়ে হাত মোছার জন্য উঠতে যাবে আবির ওকে টেনে নিয়ে গলায় মুখ গুজল । ” আবির…….”

এই প্রথম আবিরের সামনে ওর নামে ডাকলো রাই , আবির গলায় গভীর এক চুমু দিয়ে ওকে আঁকড়ে ধরলো। কিন্তু আশ্চর্য এইবারে ও রাই বিদ্রোহ করলো না। যে কারণে আবির ওকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। রাই হাত উঠিয়ে আবিরের কাঁধে রাখবে তখনি দরজায় ডাক পড়লো ” ভাইয়া”

দুজনে চমকে উঠলো। আবির রাই কে ছেড়ে সরে গেলো। দুজনেরই হৃদস্পন্দন এত্ত দ্রুতবেগে ছুটছে বলার মত নয়। আবির নিজের চুলগুলো ঠিক করে নিল , আর উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিল।
সামনে নিশান দাড়িয়ে। নিশান হুড়মুড়িয়ে ঘরে ঢুকে আবিরকে জড়িয়ে ধরলো ” ভাইয়া কতদিন পরে আসলি এর আমার সাথে দেখা ও করলি না। বলে রাই এর দিকে তাকালো।

রাই এর মুহূর্তেই বিরক্ত লেগে গেলো। রাই সোফা থেকে উঠে দাড়ালো আর প্লেট আর গ্লাস নিয়ে ওদের পাস করে বেরিয়ে গেলো।
আবির বিষয়টা লক্ষ্য করলো। আর নিশানের সাথে কথা বলে নিলো। যদিও নিশান তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছুই বলতে আসেনি। তবে শুধুই আবির আর রাই কে দুর করার একটা কাজ ছিল।

এদিকে রাই অপেক্ষা করছে ঠিক কখন নিশান ঘর থেকে বের হবে। তখন সে ঘরে যাবে। নিশানের বলা কথা মাথায় আসলো রাই এর “আবিরকে জিজ্ঞেস করো সেদিন কি ঘটেছিল”

রাই দৃঢ় কণ্ঠে বলল ” করবো না। জিজ্ঞেস করবো না। তোমার মত ঠকবাজের কথা আর কি জিজ্ঞেস করবো?”

কিছুক্ষন পর নিশান ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই রাই ঘরে ঢুকলো। রাই এর মনে সন্দেহ যদি নিশান উল্টো পাল্টা কিছু বলে গিয়ে থাকে।
কিন্তু তেমন কিছুই না। আবির স্বাভাবিক ভাবেই। খাটে গিয়ে শুয়ে পড়ল ” খুবই ক্লান্ত। ঘুমাবো”

রাই মাথা নাড়লো ” হুম” লাইট নিভিয়ে আবিরের পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ল রাই।
কিন্তু রাই এর ঘুম আর এলো না। কিছুক্ষন এপাশ ওপাশ করতে করতে শেষে গিয়ে উঠেই বসলো। এদিকে জনাব আবির কে দেখে মনে হচ্ছে বেঘোরে ঘুমোচ্ছে। রাই কিছুক্ষন ওকা উকি করে দেখার চেষ্টা করলো সত্যিই কি সে ঘুমিয়ে গিয়েছে কিনা।

কিন্তু আচমকাই রাই এর হাতে হ্যাঁচকা টান পড়লো। গিয়ে সোজা আবিরের উপরে। আবির ওকে ঘুরিয়ে নিজের ডানে নিয়ে এলো আর মুখটা চেপে ধরে উচু করে ফিসফিস করলো ” কিছু লাগবে?”

রাই মাথা নাড়লো।

” তাহলে উকি দিচ্ছিলে কেনো?”

রাই ধীরে ধীরে মাথা নাড়লো

” আমি তো তাই দেখলাম”

রাই চুপ। আবির ওকে জড়িয়ে নিলো

” সবসময় আমিই কেনো ইয়া আল্লাহ…… আমার ওপরেই কেনো এতো অত্যাচার”

আবিরের কথায় রাই ঠোঁট চিপে হাসলো। যাক ঘুমটা এবারে নিশ্চিন্তেই ভালোই হবে। রাই ওর বুকে মাথা রেখে শান্তির নিশ্বাস ফেললো।

____________________

পরদিন আর আবির অফিসে গেলো না। রেজোয়ান সাহেব যেতে দিলেন না। তবে খাবার টেবিলে যা কান্ড হলো সেটা আর বলার মত না।

সবাই খাবার খাচ্ছে। রাই আর ফুপি খাবার বেড়ে দিচ্ছেন। তখনি সুমি একটু গলা খাকারি দিয়ে বললো
” মামা, এগুলো কি তুমি ঠিক করছো?”

উপস্থিত সকলে সুমির দিকে তাকালো। রেজোয়ান সাহেব ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন ” আমি কি করলাম?”

সুমি বললো ” এইযে, তুমি যে আবির ভাই কে শুধুই কাজে যেতে দিচ্ছ এখনও তো ওদের বিয়ের একটা মাস ও হলো না। কেনো শুধু শুধু মধুর মধ্যে ঘি ঢেলে দিচ্ছে বলো তো?”কথাটা এমনভাবে বললো যেনো ভারী অন্যায় হয়ে যাচ্ছে।

রেজোয়ান সাহেব ছেলের দিকে বাঁকা চোখে তাকালেন ” আমি কি আর মধুর মধ্যে ঘি দিচ্ছি? ছেলে আমার ,,, নিরামিষ। আমি কি করবো?”

এইসব কথা উপস্থিত রাই আবিরের বিপক্ষে অর্থাৎ শাশুড়ি , চাচী, নীলা , নিশান এদের কারোরই ভালো লাগছে না। দাদী অবশ্য এসব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না। সুমি , রেজোয়ান সাহেব , ফুপি , সুমির বাবা সকলে আবার একই দলে। আবির তেমন প্রতিক্রিয়া করছে না। রাই ও তাই।

ফুপি বললেন ” এদিকে এতদিন হয়ে গেল এত ঝামেলা যাচ্ছে যে রাই যে একটু বাবার বাড়ি থেকে ঘুরে আসবে সেটাও হচ্ছে না। ভাই…..”
রেজোয়ান সাহেব বলে উঠলেন ” বুঝেছি। আর বলা লাগবে না। আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম। আর যেতে হবেনা কোথাও আবির পরশুই রাই কে নিয়ে চলে যাস।

আবির মাথা নাড়লো। এদিকে রাই আবিরকে খাবার দিচ্ছে তখনি সুমি বললো ” হ্যাঁ হ্যাঁ যাও আর তাড়াতাড়ি ফিরে এসো , এরপর তো আরেকটা ট্রিপ বাকি। আফটার অল এতো কাজ বাকি”

নীলা চেচিয়ে উঠলো ” আরেকটা ট্রিপ মানে?”

ফুপি বললেন ” আরে আস্তে আস্তে। এতো হাইপার কেনো হচ্ছো নীলা?”

রেজোয়ান সাহেব তো ” আমার কান গেলো রে । গলা তো না পুরো তবলা”

চাচী ক্ষেপে গেলেন “রেজোয়ান ভাই। তুমি কিন্তু বেশিই বলছো এবার”

সুমি সবাইকে থামিয়ে দিল। রাই তো অবাক। কোন কথা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। সুমি বললো ” আরে ওদের ট্রিপ নিয়ে তোমরা কেনো ঝগড়া করছো?”

আবিরের মা গম্ভীর গলায় বললেন ” আর কিসের ট্রিপ?”

” হানিমুন….” বললো সুমি।

সাথে সাথে নীলা চাচী, আবিরের মা, নিশান সবার মুখ হা হয়ে গেল আর একটুর জন্য সকলের মুখের ভাত নিচে পড়ে নি। রেজোয়ান সাহেব নরম সুরে বললেন ” মধুচন্দ্রিমা”

এদিকে রাই আর আবির তো থ। এরা কি সত্যিই পাগল হলো নাকি? হানিমুন ওদের আর প্ল্যানিং চলছে পাবলিকলি! রাই পুরোই লজ্জা পেয়ে গেল।
আবিরের মা স্বামীর হতে চিমটি কেটে বললেন ” তুমি কোথায় ভেসে যাচ্ছো হ্যা? ”

রেজোয়ান সাহেব হেসে বউ এর দিকে মুখ নিয়ে ফিসফিস করলেন ” আমাদের সময়ে”
মহিলা খাড়ার উপর শকড।
এদিকে নীলার তো হা ক্রমশ বড়ই হচ্ছে। ওর সামনেই ওর আবির কিনা রাই এর সাথে ছি ছি…….
নিশানের মুখ চোখ শক্ত হয়ে এলো।

আবির একটু কেশে উঠলো । সবাই স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টায়। রেজোয়ান সাহেব বললেন ” তাহলে আর কি? পরশুই চলে যাবি শ্বশুরবাড়ি। ”

সুমি চোখ টিপ দিয়ে বললো ” এরপর…..”
রাই এর চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেলো। বেচারি।

এদিকে সারাদিন রাই লক্ষ্য করলো নীলা আবিরের পিছু পিছু ঘুরছে। কেনো কে জানে,? দেখে তো মনে হচ্ছে কিছু বলতে চায়। কিন্তু আবির ওকে এমনভাবে এড়িয়ে যাচ্ছে যে অন্য কেউ হলে তার খুব ইগোতে লাগতো। কিন্তু নীলা তো নীলা।
ও পণ করে রেখেছে আজ ও আবিরের সাথে কথা বলেই ছাড়বে।
আবির ও নাছোড়বান্দা। একটু পরপরই ও রাই কে কোনো না কোনো বাহানায় কাছে ডাকছে। কখনো পানি দিতে বলছে কখনো খাবার কখনো এমনিতেই।
নীলা এতে বেশ রেগে যাচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই আবিরকে হাতের নাগালে পাচ্ছে না।

দুদিন পর আবির রাই কে নিয়ে ওর বাবার বাড়িতে রওনা দিলো। অবশ্য এই দুদিন নীলা , বা রাই কেউই আবিরকে তেমন একটা কাছে পায়নি। নীলা তো পায়ই নি আর রাই এর আর কি বলবো। আবির এই দুদিন অফিসের কাজের জন্যই সকালে বেরিয়ে রাতে দেরিতে ফিরত।

আজ যাচ্ছে ওরা । সবাইকে বিদায় জানিয়ে দুজনে গাড়িতে চড়ে বসলো। অবশ্য নীলা সর্বস্ব চেষ্টা করেছে দুজনকে না যেতে দেওয়ার কিন্তু সে গুড়ে বালি।

অবশেষে রাই এর বাড়িতে ওরা পৌঁছে গেলো। রাই খুশিতে ছুটে গেলো তাদের ফ্ল্যাটের দিকে।
বেল বাজাতেই রাই এর মা দরজা খুললেন। মেয়ে সোজা মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো ” আম্মু। ”

মায়ের চোখেও জল ” কেমন আছিস মা?”

তামিম এসে রাই কে জড়িয়ে ধরলো। রাই এর বাবা ও এলেন।
আবির কুশল বিনিময় করে নিলো।

দুজনেই অতঃপর বাড়িতে ঢুকে সোফায় বসলো।

চলবে🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁