LoVe Effect part-35+36

0
566

#LoVe_Effect
#writer : Sintiha Eva
#part : 35

🍁🍁🍁

মাহির নিজের রাগ কমতেই শ্রাবনীর সাথে করা ব্যবহারের জন্য অনুতপ্ত হয় নিজের ভুল বুঝতে পেরে মাহির শ্রাবনীর আসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে মাহিরের ভাবনা শ্রাবনী আসলে মাহির সরি বলে নেবে কিন্তু আধঘন্টার উপর হতে চললো শ্রাবনী কে আসতে না দেখে মাহিরের খটকা লাগে মাহির নিচে নেমে চারদিকে চোখ বুলিয়ে শ্রাবনী কে কোথাও পায় না হঠাৎ কিচেনের কথা মনে পড়তেই মাহির কিচেনের দিকে অগ্রসর হয়। কিচেনে এসে শ্রাবণী কে মেঝেতে ঘুমন্ত অবস্থায় পেয়ে মাহির বোকা বনে যায় এমন সিরিয়াস মুহুর্তে এই মেয়ের ঘুম আসলো কিভাবে এটাই মাহির ভেবে পাচ্ছে না মাহির শ্রাবনীকে কোলে তুলে রুমের দিকে অগ্রসর হয় রুমে এসে শ্রাবণী কে বেডে শুইয়ে লাইট অফ করে নিজেও শ্রাবনীর পাশে শুয়ে পড়ে ঘরের আবছা নীলাভ ঢিম লাইটের আলোয় শ্রাবনীর শ্যামবর্ণার মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে আছে মাহির চোখের পাপড়ি গুলো সিক্ত হয়ে আছে চোখ দুটো ও বেশ ফোলা ফোলা গালে পানির চাপ বসে গেছে হয়তো অনেক ক্ষণ কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছে মাহির একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চোখ বুঁজে নেয়।

সায়ন রিহির কাছ থেকে সব শুনে রাগে বোম হয়ে রুমে আসে কিন্তু রুমে এসে নীর কে লাগেজ গুছাতে দেখে সায়ন থমকে যায় সায়ন ধীর পায়ে নীরের দিকে এগিয়ে যায় সায়নের উপস্থিতি বুঝতে পেরেও নীর নিজের কাজ করতে ব্যস্ত থাকে এই মানুষ টার প্রতি আর মায়ায় জড়াবে না যে ওকে ভালোবাসে না তার কাছ থেকে ভালোবাসা আশা করা টায় নীরের ভুল হয়েছে নীরই বা কি করবে মেয়েদের মন তো মেয়ে মানুষ সবাই ভালোবাসার কাঙাল আর নিজের বিয়ে করা স্বামী ভালোবাসার মধ্যে তো কোনো পাপ নেই কিন্তু তবুও নীর পাপ করেছে ভুল মানুষ কে ভালোবাসে নীর চোখে পানি মুছে শাড়ি লাগেজে রাখতে নিলে সায়ন নীরের হাত চেপে ধরে নীর হাতের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সায়ন নীরের হাত চেপেই বলে

সায়নঃ লাগেজ গুছাচ্ছো কেনো কোথায় যাবে

নীর কাট কাট গলায় জবাব দেয়

নীরঃ অনেক তো হলো এই মিথ্যে সংসার এবার নিজের বাড়ি যাবো

সায়নঃ এটা তোমার বাড়ি না

নীরঃ হুমমম চোরাবালিতে বাড়ি বাড়ি সংসার বানিয়ে ছিলাম তাই ডুবে গেছে হাত ছাড়ুন রাত হচ্ছে আমাকে যেতে হবে

সায়ন নীর কে একটানে নিজের দিকে ঘুরিয়ে চোখে চোখ রেখে বলে

সায়নঃ তুমি এই বাড়ির বউ আর হুটহাট বাপের বাড়ি কিসের যাওয়া তোমার মন চাইলে আমি কাল সকালে দিয়ে আসবো রাতে নিয়ে আসবো

নীরঃ আমি আর কোনোদিন আসবো না আর আপনি এমন করছেন কেনো বুঝতে পারছি না সবাই আমাকে পেয়েছেন টা কি

সায়নঃ সবাই কি পেয়েছে জানি না তবে আমি বউ পেয়েছি

সায়নের কথায় এবার নীর বেশ রেগে যায় নীর ঝামটা মেরে হাত ছাড়িয়ে ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে

নীরঃ বউ কিসের বউ আমি আপনার কেউ না এন্ড আপনিও আমার কেউ না আজ কের পর থেকে আমি ভুলে যাবো সায়ন নামে আমার লাইফে কেউ ছিলো আর আপনি তো মনেই রাখেন না তাই ভোলার কথা আসলো না আর আমি আপনাকে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দেবো সাইন করে দেবেন

সায়নঃ ডিভোর্স

নীরঃ ইয়েস আই নিড টু সেপারেশন

সায়নঃ খুব সাহস বেড়েছে সেপারেশনের কথা তুলিস কোন সাহসে ( প্রচন্ড রেগে)

নীরঃ তো কি আমাকে রক্ষীতা করে রাখবেন ভালো ও বাসবেন না সহ্য ও করতে পারবেন না সরি মিস্টার আমি এতো অবহেলা সহ্য করতে পারি না আর আমার চরিত্র নিয়ে কথা উঠলে ও না তবুও আজ সব মুখ বুঁজে সহ্য করছি এই পরিবারের কথা ভেবে কিন্তু এবার আর পারছি এবার আমার সেপারেশন চাই দ্যান আপনি যাকে ইচ্ছে বিয়ে করুন আই জাস্ট ডোন্ট কেয়ার আমি আপনার সামনে কেনো আমি এই দেশেই আর থাকবো

সায়ন একদৃষ্টিতে নীরের দিকে তাকিয়ে আছে নীরের চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে কথাগুলো বলে নীর ফুপিয়ে কেঁদে দেয়

নীরঃ আমিও মানুষ আমার ও ধৈর্য শক্তি আছে আমার একটা মন আছে আমি এতো কিছু নিতে পারি না আপনার আমাকে যদি নাই সহ্য হয় কেনো আমার জীবন টা এভাবে নষ্ট করলেন তবুও আমি কিছু বলবো না কিন্তু এবার আমাকে মুক্তি দেন চারদিকের এতো ভারী ভারী কথা আমি আর নিতে পারছি না দম বন্ধ হয়ে আসছে না প্লিজ আমাকে মুক্তি দেন এই মিথ্যে বন্ধন থেকে

হঠাৎ হাতের কনুইয়ের দিকে টান পড়ায় নীর চমকে মাথা তুলে তাকায় সায়ন নীরকে টানতে টানতে নিচের দিকে নিয়ে যাচ্ছে নীর চোখের পানি কোনোরকমে মুছে সায়নের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু সায়নের শক্তির সাথে পেরে উঠছে না। ড্রয়িংরুমে বসে আছে সবাই ছিলো হঠাৎ নীরকে এভাবে নিয়ে আসতে দেখে রিহি বাদে সবাই অবাক হয় তার চেয়ে ও বেশি অবাক হয় নীরের অস্বাভাবিক চোখ-মুখ দেখে আয়াত অভি একে অপরের দিকে তাকায় সায়ন নীরকে সবার মাঝখানে দাড় করায় সায়নের চোখ দিয়ে যেনো আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে সায়নের বাবা ধমকের সুরে বলে

সায়নের বাবাঃ কি সমস্যা তোর সায়ন নীরকে এভাবে টেনে নিয়ে এসেছিস কেনো

সায়ন গম্ভীর কণ্ঠে বলে

সায়নঃ আমার ও সেইম কুয়েশ্চন তোমাদের কি নীরকে নিয়ে কোনো সমস্যা আছে

সায়নের এমন কথা শুনে সবাই অবাক হয় সায়নের বাবা না বুঝতে পেরে বলে

সায়নের বাবাঃ মানে কি বলতে চাইছিস

সায়নঃ নীর এই বাড়ির বউ তার থেকে ওর বড় পরিচয় ও সায়ন চৌধুরীর ওয়াইফ আমার ওয়াইফ কে কেউ বাজে কথা বললে আমি তাকে ছেড়ে দেবো না ফারদার যদি ওর সম্পর্কে কেউ বাজে কিছু বলে আমি তাহলে ছোট বড় মানবো না

আয়াতঃ কি সব বলছিস কে কি বলেছে নীরকে

সায়নঃ সেটা তোদের আদরের ফুফুকে জিজ্ঞেস কর উনি আমার বউ কে কি বলেছে

সায়নের কথায় সবাই সায়নের ফুফির দিকে তাকায় সায়নের ফুফি রাগী কন্ঠে নীরকে বলে

সায়নের ফুফিঃ সংসারে তো আগুন ভালোই লাগাতে পারো বর আসতে না আসতেই কানে বিষ ঢেলে দিয়েছো কি এমন বলেছি আজ আমি ঘরের মানুষ বলেছি কাল পুরো পাড়া বলবে এতো দিন হলো একটা বাচ্চা দিতে পারলো না এটা নিয়ে সবার আক্ষেপ আছে আমি মুখে বলে দিয়েছি আর তোরা কেউ বলিস নি যে যেটা তাকে সেটাই বলেছি খারাপ কি সন্তান দেওয়ার ক্ষমতা নেই সংসার ভাঙার ক্ষমতা আছে এর থেকে আমার মেয়ে টা কে বিয়ে করলে এতোদিনে বাপ ডাক শুনে যেতিস

এতো বাজে কথায় উপস্থিত সবাই অপ্রস্তুত হয়ে যায় আয়াত অভি বেশ লজ্জায় পড়ে যায় তেমনি রেগেও যায় রিহি তো প্রায় কেঁদে দেওয়ার অবস্থা ভাগ্যিস ইশান হিয়া ঘুমুচ্ছে নীর নিঃশব্দে মাথা নিচু করে কেঁদে যাচ্ছে সায়নের রাগ এবার কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে সায়ন তেজি গলায় চেচিয়ে বলে

সায়নঃ বিয়ের প্রথম রাতেই স্ত্রীর উপর জানো/য়ারের মতো ঝাপিয়ে পড়াটা পুরুষত্ব নয় আমি নীরকে বিয়ে করেছি ওর দেহ কে না আর যে মেয়ে টা কে আমি আজ পর্যন্ত টাচ ই করলাম না সেখানে বাচ্চা হবার কথা আসে কোথা থেকে বাচ্চা কি কোনো গেইম নাকি গুগুল থেকে ডাউনলোড দেবো আর দুনিয়ায় সব মেয়ে রা শুধু বাচ্চা জন্ম দেয় একটা সন্তানের জন্মের পেছনে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের অবদান প্রয়োজন তো এখানে আপনি নীরের দোষ না ধরে আমার দোষ ও তো ধরতে পারতেন

সায়নের ফুফিঃ এখন আর শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে হবে না আমরা এমন যৌবন কাল পার করেছি বিবাহিত বউ কে টাচ করিসনি আমাদের বুঝাতে আসিস

সায়নের বাবা ধমকে বলে

সায়নের বাবাঃ আহ জমিলা ( সায়নের ফুফি) জ্ঞান বুদ্ধি সব হারিয়েছিস নাকি কাদের সামনে কিসব বলছিস

সায়নঃ আপনাকে যেনো আমি কাল সকাল হবার সাথে সাথে এই বাড়ি ছাড়া দেখি এই বাড়ির ত্রিসীমানায় ও আপনার ছায়া যেনো না পৌঁছায় তাহলে সেদিন কেয়ামত হয়ে যাবে এতো টা চিপ মাইন্ড আপনার মতো মহিলাদের জন্য সমাজের এই অবস্থা আর আপনার মেয়ে কথা বলেছিলেন তাই না আজ অবধি কয়জনে বেড পার্টনার হয়েছে একটু খোঁজ নিয়ে দেখুন নিজের ঘর সামলান তারপর অন্যের টা দেখতে আসবেন

সায়নের ফুফিঃ দুদিনের মেয়ে টার জন্য এতো কথা শুনাচ্ছিস আমাকে

সায়নঃ এই দুই দিনের মেয়েটায় আমার শেষ সম্বল ও দুদিন হয়েছে এসেছে কিন্তু আমার সারাজীবনের পথ চলার সাথী ও আমার ওয়াইফ মিসেস সায়ন চৌধুরী

সায়ন নীরকে নিয়ে রুমে চলে যায় মুহুর্তেই পুরো পরিবেশ গম্ভীর হয়ে যায় সায়নের বাবা ভাবতে ও পারছে না উনার বোন উনাই ছেলের বউকে এতো বাজে মন্তব্য করেছে। নীরবতা ভেঙে রিহি বলে

রিহিঃ সায়নকে নীর কিছু বলেনি যা বলার আমি বলেছি

রিহির কথায় সায়নের ফুফি রাগী চোখে রিহির দিকে তাকায় সায়নের বাবা গম্ভীর কণ্ঠে বলে

সায়নের বাবাঃ কাল সকালে তুই চলে যাবি আর কখনো আসবি না আগে তোর মানসিকতা ঠিক কর দ্যান ভালো মানুষ হয়ে এই বাড়ির ত্রিসীমানায় পা রাখবি তার আগে না

সায়নের বাবা চলে যায় একে একে সবাই চলে যায় সায়নের ফুফি রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে রুমে চলে যায়।

সায়ন নীরকে রুমে নিয়ে এসে দরজা লাগিয়ে দেয় রাগে সায়নের শ্যামবর্ণের উজ্জ্বল মুখ পুরো লাল হয়ে গেছে নীর রুমে মাঝখানে দাঁড়িয়ে কেঁদে যাচ্ছে সায়ন রাগ সামলাতে না পেরে নীরের লাগেজ নিচে ফেলে দেয় গায়ের শার্ট খুলে বেডে ছুঁড়ে মারে।

সায়নঃ নীর স্টপ ক্রায়িং আই সে স্টপ ক্রায়িং

সায়নের কথায় নীরের কোনো হেলদোল নেই নীর তো কান্নায় ব্যস্ত সায়ন নীরের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় নীরের মাথা তুলে গালে দু হাত দিয়ে আদুরে গলায় বলে

সায়নঃ আমার বাঘিনী তো এমন না তাহলে সে এখন এতোটুকুতে ভেঙে পড়লো কেনো আমার বাঘিনী তো প্রতিবাদী নারী তাহলে আজ কেনো প্রতিবাদ করলো না আমার সেই রাগিনী বাঘিনী ডাকিনী নীর কোথায় সংসারে এসে কি সে হারিয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমার তো সেই ডাকিনী কেই চাই যে অল্পতে রেগে যাবে আবার হেসে দেবে রাগ করে নাক ফুলাবে আর অভিমান করে গাল ফুলাবে খুশিতে খিলখিলিয়ে হাসবে সবার দুঃখে ঢাল হয়ে দাঁড়াবে নিজের বেস্টফ্রেন্ডের জন্য জীবন বাজি রাখবে আবার নিজের বাসরে নিজেই টাকা তুলবে কোথায় সেই ডাকিনী

নীরঃ আমাকে আপনার ওই বুকে একটু জায়গা দেবেন বেশি না এই জায়গা টা দেবেন আমি আপনাকে একটু জড়িয়ে ধরবো ( কান্নামিশ্রিত কন্ঠে)

সায়ন আলতো হেসে দু হাত মেলে দেয় নীর হামলে সায়নের বুকে পড়ে হাউমাউ করে কেঁদে দেয় নীরের জড়িয়ে ধরায় সায়ন দুপা পিছিয়ে যায় সায়ন নীরকে একহাতে জড়িয়ে ধরে অন্যহাতে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।

নীরঃ আপনি তো আমাকে নিয়ে সুখী না তাহলে কেনো বাড়ির সবার কথা ভেবে আমাকে সহ্য করছেন আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেন তারপর অন্যকাউকপ বিয়ে করে নিন তাহলে আপনি বাবা ডাক শুনতে পারবেন আমি তো পারবো না আমি কি এখন বাচ্চার জন্য রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াবো

নীরের কথায় সায়ন নীরের পিঠ খামচে ধরে চোখে পানি এসে যায় নীর সায়নের উন্মুক্ত বুক খামছে নিজের প্রলাপে ব্যস্ত সায়ন নীরের কোমড় জড়িয়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে

সায়নঃ তুমি আমার সুখ তোমাকে ছেড়ে আমি সুখী হবো না তাই এই দিকাটায় আমি বড্ড স্বার্থপর নিজের সুখকে কিভাবে পর করে দেয় আর তোমার তো কোনো দোষ নেই তাহলে তুমি কেনো কাঁদছো আমি তো জানি তুমি এখনো নিজেই বাচ্চা এই বাচ্চা বয়সে বাচ্চা কিভাবে সামলাবে এসব চিন্তা আর মাথায় আনবে না না কি বাচ্চা চাও

নীর ডুকরে কেঁদে দেয় সায়ন নীরকে নিজের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নীর ও সায়নের পিঠের উন্মুক্ত অংশের নিজের নখ বিঁধিয়ে দেয় এতো জুড়েই জড়িয়ে ধরেছে 🥱

নীরঃ আ আপনি আমাকে ভালোবাসেন না তো একটুও

প্রতিত্তোরে সায়ন বেশ কিছু ক্ষণ মৌন ক্ষাণিক বাদে সায়ন মাদকতার সুরে বলে

‘ আমি কেনো তাকে বলবো ভালবাসি

সে কি জানে না তাকে ছাড়া আমার চলে না ‘

______________________________

সূর্যের আলো চোখে পড়তেই মাহিরের ঘুম ভেঙে যায় বুকের উপর কারো অস্তিত্ব অনুভব করতেই মাহির তাকিয়ে দেখে শ্রাবণী মাহিরের বুকে গুটিশুটি দিয়ে ঘুমিয়ে আছে মাহির শ্রাবনীর চুলগুলো কানের উল্টো পিঠে গুঁজে দেয় কপালে কারো স্পর্শে শ্রাবনীর ঘুম ভেঙে যায় শ্রাবণী নড়ে উঠতেই মাহির চোখ বুঁজে নেয় শ্রাবনী ঘুম থেকে উঠে নিজেকে মাহিরের বুকে আবিষ্কার করে ধুরুম করে উঠে বসে ভয়ে হৃদপিণ্ড কেঁপে উঠছে বিয়ের কিছুদিন পর সকালে একদিন উঠে দেখেছিলো ও মাহিরের বুকে আর মাহির রাগি দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে তারপর কত কথা শুনালো শ্রাবনী মাহিরের দিকে তাকিয়ে দেখে মাহির ঘুমে মগ্ন শ্রাবনী একটা স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ে। শ্রাবণী বেড থেকে পা নামাতেই মাহির পেছন থেকে বলে

মাহিরঃ আম সরি শ্রাবনী

মাহিরের কন্ঠস্বরে শ্রাবণী থেমে যায় মাহির উঠে শ্রাবনীর পাশে বসে অনুশোচনার সুরে বলে

মাহিরঃ কাল রাতের জন্য সত্যিই সরি আসলে শোভনের ফোন দেখে মাথা গরম হয়ে গিয়েছিলো তাই

শ্রাবনীঃ ওহ আচ্ছা

মাহিরঃ ক্ষমা করেছো

শ্রাবনীঃ নাহ করবো একটা শর্তে

মাহিরঃ কি শর্ত

শ্রাবনীঃ আমাকে এখানে একটা আদর দে তাহলে তোকে ক্ষমা করে দেবো ( গাল দেখিয়ে)

মাহিরঃ ওয়াট ( অবাক হয়ে)

শ্রাবনীঃ দে না টুকলুস আমি না তোর শিশু বউ শিশু বউকে বকেছিস তোর শিশু বউয়ের বুঝি কষ্ট হয় না দে না একটা আদর

মাহিরঃ নো ওয়ে

শ্রাবনীঃ দে না রে টুকাই এমন করিস কেনো টুকটুক দে না একটাই তো আদর চেয়েছি তোর মন টা তো চাইনি আদর না দিলে মা-বাবা কে ফোন দিয়ে বলবো তাদের ছেলে তাদের শিশু বউ মাকে অত্যাচার করছে এই যে ফোন দিচ্ছি

মাহিরঃ এই নাহহ

শ্রাবনীঃ তাহলে দে টুকটুক

অগত্যা মাহির বাধ্য হয়ে শ্রাবণীর দু গালে দুইটা চুমু খায় শ্রাবণী খুশিতে গদগদ হয়ে মাহিরের গলা জড়িয়ে একটা কিসি দিয়ে দেয় মাহির হা হয়ে যায় শ্রাবণীর কাজে হঠাৎ শ্রাবনী ভ্রু কুঁচকে বলে

শ্রাবনীঃ তোকে তো বলেছি একটা আদর দিতে তুই দুই টা দিলি কেনো কুচ কুচ হোতা হে টুকটুক তোর পেটে পেটে এতো

শ্রাবনীর কথায় মাহিরের কাশ উঠে যায়

চলবে,,,,,,

( ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, ধন্যবাদ 😐)

#LoVe_Effect
#Writer : Sintiha Eva
#part : 36

🍁🍁🍁

সায়াহ্নের সময় ঘড়ির কাটা তখন ৬ টা বেজে ৪৫ মিনিট শ্রাবনী পুরো বাড়িতে একা নিজের রুমে বসে আছে ভয়ে শ্রাবনী’র নাজেহাল অবস্থা মাহির সকালে অফিসে চলে গেছে তারপর থেকে সারাদিনই শ্রাবনী বাড়িতে একা তবে মাহির কিছুক্ষণ পর পর কল দিয়েছে শ্রাবনীর শ্বশুর শ্বাশুড়ি এখনো ফিরেনি। শ্রাবনী ভয়ে বেডের এককোনায় গুটিশুটি মেরে বসে আছে আর মাহিরকে বকছে আচমকা বাজ পড়ার আওয়াজে শ্রাবনী চমকে যায় হঠাৎ রাতের হালকা নীলাভ আকাশ কালো আঁধারে নিজেকে আবৃত করে নিয়েছে চারদিকে শুরু হয়েছে ঝড়ো হাওয়া রুমের জানলা বেলকনির দরজা খোলা থাকায় মুহুর্তে উষ্ণ রুম পুরো ঠান্ডা বাতাসে শীতল হয়ে গেছে জানালা দরজার সাদা পর্দা গুলো বাতাসে এলোপাতাড়ি উড়ছে আকাশ গর্জে মেঘ ঢেকে উঠছে প্রকৃতির এমন ভয়ানক রূপ দেখে শ্রাবণী ভয়ে জান যায় যায় অবস্থা মনে প্রাণে চাইছে মাহির এখনি চলে আসুক। শ্রাবনীর নিজের উপর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে কেনো যে কাজে বোয়া কে চলে যেতে বলেছিলো নয়তো মাহির আসা অবধি কাজের বোয়া থাকতো আচমকা শ্রাবনীর ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলছে এখনি কারেন্ট চলে যাবে শ্রাবনী এক মুহুর্ত বিলম্ব না করে ফেন হাতে নিয়ে ফ্লাশলাইট অন করে দেয় মুহুর্তেই পুরো বাড়ি অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে এতো বড় অন্ধকার বাড়িতে শ্রাবনী সম্পূর্ণ একা বাইরের প্রকৃতি ক্রমশ নিজেকে ভয়ানক রূপ রূপান্তরিত করেই যাচ্ছে সেই সাথে শ্রাবনী ভয়ে আরো মিইয়ে যাচ্ছে

রুমের মাঝে শ্রাবনী ব্যতিত অন্যকারো উপস্থিতি অনুভব করতে পেরে শ্রাবনী ভয়ে আরো সিটিয়ে যায় চেনা গলায় নিজের নাম শুনতে পেয়ে শ্রাবনী শুকিয়ে যাওয়া আত্মায় পানি আসে

মাহিরঃ শ্রাবণী কোথায় তুমি

মাহিরের কন্ঠে নিজের নাম শুনে শ্রাবণী দ্রুত বেডে থেকে নেমে দাঁড়ায় কিছুদূর কিঞ্চিৎ আলোর উৎস পেতেই শ্রাবণী দৌড়ে গিয়ে মাহির কে পেছন থেকে ঝাপটে ধরে আচমকা কেউ ঝাপটে ধরায় মাহির হকচকিয়ে যায় অতঃপর চেনার হাতে স্পর্শে বুঝতে পারলো এটা শ্রাবনী মাহির পেছনের দিকে ঘুরতেই শ্রাবনী মাহির কে সামনে দিক থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শ্রাবনীর সম্পূর্ণ শরীর ভয়ে কাঁপছে শ্রাবনীর কাঁপুনি বুঝতে পেরে মাহির শয়তানি হেসে শ্রাবণীর কানের কাছে গিয়ে গলার স্বর মোটা করে বলে

মাহিরঃ শ্রাবন্নী

আচমকা মোটা কন্ঠস্বর শুনে শ্রাবণী ভয়ে কেঁদে দেয় আর নিজ মনে বলতে থাকে

শ্রাবনীঃ প্লিজ আমাকে মে/রো না ভূত আমি এখনো শিশু আমাকে এতো তাড়াতাড়ি মে/রো না আমি এখনো বাসরই করতে পারলাম না আমি ম/রে গেলে আমার অনাগত সন্তান দের কি হবে প্লিজ আমাকে ছেড়ে দাও

শ্রাবনী আবোলতাবোল কথায় মাহির ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় তবুও নিজেকে ধাতস্থ করে শ্রাবণী কে কাঁদতে দেখে শ্রাবনীকে নিজ থেকে জড়িয়ে ধরে বলে

মাহিরঃ আরে কাঁদছো কেনো আমি এখানে ভূত আসবে কোত্থেকে এদিকে তাকাও আমি মাহির

মাহিরের কথা শুনে শ্রাবণী শব্দ করে কেঁদে দেয় আহ্লাদী সুরে বলে

শ্রাবনীঃ তুই খুব পঁচা টুকলুস আমাকে একটু ও ভালোবাসিস না তোর এই নিষ্পাপ শিশু বউটা কে এভাবে ভয় দেখালি যদি আমি হার্ট অ্যাটাক করতাম খুব খুশি হতি তাই না আমাকে একা রেখে অফিসে মেয়েদের সাথে গিয়ে ফ্লাট করছিলি তাই না জানিস আমি তোকে খুউব মিস করছিলাম এতো বড় বাড়িতে আমি কখনো একা থাকিনি আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো সারাটা দিন আমি কিভাবে কাটিয়েছি এটা শুধু আমি জানি তুই কোথায় এসে আমাকে একটু আদর করবি তা না ভয় দেখাচ্ছিলি ভ্যাঁহহহহহহহ আমাকে তুই একটু ও ভালোবাসিস না কেনো ভালোবাসিস না বল আমাকে আজ তোকে বলতেই হবে

এরই মাঝে কারেন্ট এসে যায় মাহির শ্রাবনীর কথায় কেমন একটা ঘোরে চলে যায় মাহির নিজের ফোন টা বেডে ছুঁড়ে মারে শ্রাবণী কে বুক থেকে তুলে বলে

মাহিরঃ খুউব মিস করছিলে আমাকে

শ্রাবনী বাচ্চাদের মতো মাথা নাড়িয়ে হুমম বলে মাহির শ্রাবনীর গালে হাত দিয়ে বলে

মাহিরঃ কেনো মিস করছিলে আমি তো তোমাকে সারাদিন বকা দেয় আমি না আসলে তো তোমার খুশি হবার কথা তাই না তাহলে কষ্ট কেনো পাচ্ছিলে

শ্রাবনীঃ আমার কষ্ট হবে না তো কার হবে আমি না তোর বউ হই

মাহিরঃ ওহ আমার শিশু বউ তো তাই না ( ভাবুক ভঙ্গিমায়)

শ্রাবনীঃ হুমমমম

মাহিরঃ কারেন্ট চলে এসেছে আমি চেঞ্জ করে আসছি বাইরে অবস্থা অনেক খারাপ রাতের দিকে বৃষ্টি আরো বাড়তে পারে

শ্রাবনীঃ আবার যদি কারেন্ট চলে যায়

মাহিরঃ আর যাবে না আর গেলে ওইদিকে একটা সুইচ আছে অন করে দিও সারা বাড়িতে আলো জ্বলে উঠবে আর আমার ফোন নিয়ে গেমস খেলো আমি আসছি আব্বু আম্মুর ফিরতে আরো একসপ্তাহ লাগতে পারে

শ্রাবনীঃ এতোদিন আমাকে একা থাকতে হবে ( মন খারাপ করে)

মাহিরঃ উপায় নেই

শ্রাবনী মুখ গোমড়া করে বেডে বসে পড়ে মাহির ওয়াশরুমের দিকে অগ্রসর হয় হঠাৎ রুমের চারদিকে চোখ যেতেই মাথা চক্কু মারে এ কি দেখছে নিজের চোখ কে মাহির বিশ্বাস করতে পারছে না মাহির বিস্মিত কন্ঠে বলে

মাহিরঃ ব্যাপার কি আজ রুম এতো চকচক করছে প্রতিদিন তো রুমের বারো টা বাজিয়ে রাখো আজ এতো সাজা গুছানো কেনো

শ্রাবনীঃ হোপপ আমি এখন বড় হচ্ছি না এখন কি এমন অগোছালো হলে হয়

মাহিরঃ ওএমজি আমার শিশু বউ বড় হয়ে যাচ্ছে এখন তো আমাকেও সাবধানে থাকতে হবে

শ্রাবনীঃ কেনো ( ভ্রু কুঁচকে)

মাহিরঃ না জানি কখন আমাকেও জিনিস ভেবে আলমারিতে ঢুকিয়ে রাখো তাই

শ্রাবনীঃ কিহহহহ

মাহিরঃ জ্বিহহহহহ

শ্রাবনী তেড়ে আসতেই মাহির ভো দৌড়ে ওয়াশে চলে যায় শ্রাবণী মুখ টা লটকিয়ে বসে পড়ে হঠাৎ ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে ওঠে।

সায়নঃ নীর জানালা টা লাগিয়ে দাও পানি আসছে তো

নীরঃ নাগাল পাচ্ছি না তো আপনি এসে লাগিয়ে দেন তো

সায়নঃ মিনিপ্যাক হলে যা হয় আর কি

সায়নের কথায় নীর রণচণ্ডী মুডে বলে

নীরঃ ওয়াট কে মিনিপ্যাক

সায়নঃ আমার রুমে তুমি আমি ব্যতিত কেউ থাকলে সেই বাট আমি তো আর মিনিপ্যাক না দেখো কত লম্বা আমার হাঁটুর নিচে পড়ো

নীর আগের ন্যায় মুডেই সায়নের কাছে সায়নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে হাইট মেপে বলে

নীরঃ চার চোখে ও কম দেখেন আমি আপনার থেকে কয়েক ইঞ্চি খাটো আপনার মতো সিলিংফ্যান না হুহহ

সায়নঃ ছেলেদের এতোটুকু লম্বা হতে হয় নয়তো হিটলার শ্বশুর তার হিটলার মেয়েকে আমার কাছে দিতো না বলতো আমার মেয়েও মিনিপ্যাক তুমিও মিনিপ্যাক হলে আমার আগামী জন্মের নাতি-নাতনীরা মিনি সাইজ হবে

নীরঃ নাতি-নাতনী 😱

সায়নঃ অফকোর্স এটা স্বাভাবিক বিয়ের পর সবারই হয়

নীরঃ আপনি যাচ্ছে তাই ধেৎ আগে জানালা লাগান বাপের জন্মে এমন ঝগড়ুটে ছেলে দেখিনি আমার ভাগ্যের পড়তে হলো আপনাকে তাই না

সায়ন জানালার দিকে অগ্রসর হয়ে সুর টেনে বলে

সায়নঃ যার সাথে যার জুড়ি লেখা তার সাথে তার হয় রে দেখা পাগলি তুই বুঝবি আম্মুর ভদ্র ছেলে অসভয় বানানোর ধান্দায় আছিস যেনো সবাই বলতে পারে আমি আম্মুর বউমা’র সাথে অসভ্যতামি করেছি তাই সে প্রেগগগগ এহেম এহেম

বাকি টা না বলেই সায়ন কাশার ভান করে পিছন ফিরে নীরের দিকে তাকায় নীর আহাম্মকের মতো সায়নের দিকে তাকিয়ে আছে সায়ন জানালা লাগিয়ে নীরের সম্মুখে দাঁড়িয়ে আচমকা গলায় আলতো চুমু খেয়ে লাইট নিভিয়ে দেয় নীর গলায় হাত দিয়ে হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সায়ন বেডে গিয়ে শুয়ে পড়ে নীরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বিরক্তি নিয়ে উঠে নীরের হাত টেনে বেডে শুইয়ে নীরকে ঝাপটে ধরে লতাপাতার মতো পেচিয়ে চোখ বুঁজে নেয়।

মাহিরঃ বুঝলে আমাদের বাড়ির পূর্ব দিকে একটা তেঁতুলগাছ আছে আমাদের ছাঁদ থেকে দেখা যায় ওখানে কয়েক বছর আগে একটা মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলো তারপর থেকে এখানে প্রায়ই ওই মেয়ে আত্মা কে দেখা যায় প্রতিদিন রাতে আমাদের ছাঁদে ঘুঙুরের আওয়াজ ভেসে আসে আমার রুমে নানান ধরনের আওয়াজ শোনা যায়+ছায়া ও দেখা যায় আমি তো একদিন নিজ চোখে সাদা ড্রেস পড়া লম্বা কালো ঘন চুল ছেড়ে তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছো সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি শুনেছি বৃষ্টি নাকি ওর খুব পছন্দের ছিল তাই বৃষ্টির দিন নাকি তার পছন্দের একটা বাড়িতে যেকোনো একটা রুমে নাচে

মাহির মুখে এমন লোমহর্ষক গল্প শুনে শ্রাবণী শরীরে কাটা দিয়ে উঠে পুরো শরীর দিয়ে শীতল হাওয়া ভয়ে যায় চোখের সামনে মুহুর্তেই ভেসে উঠে গলায় দড়ি দেওয়া একটা মেয়ের লা/শ শ্রাবণী দৌড়ে গিয়ে মাহিরের গা ঘেঁষে বসে মাহির বেশ মজা নিচ্ছে হঠাৎ ই আজ শ্রাবনীকে নিজের কাছে চাইছে তাইতো এতো আয়োজন মাহির ঠোঁট চেপে হেসে আবার বলে

মাহিরঃ ভূ*ত কি এক জায়গায় থাকে হয়তো তোমার পেছনে আছে বা তোমার সাথে বা আমি নিজেই কিংবা তোমার সামনে এরা মুক্ত পাখির ন্যায় চলাফেরা করতে পারে যায় হোক থেংক্স রুম টা গুছিয়ে রাখার জন্য বাট আবর্জনা গুলো রুমে এভাবে জমিয়ে না রেখে ডাস্টবিনে ফেলে দিতে পারতে

মাহিরের কথায় শ্রাবণী তেমন একটা গুরুত্ব দেয় না ওর তো ভূতের ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছে রাতে কিভাবে ঘুমাবে এটা ভেবেই মাহির ঘুম ঘুম চোখে বলে

মাহিরঃ আমার খুব ঘুম পাচ্ছে গুড নাইট তুমি ও ঘুমিয়ে পড় হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার লোডশেডিং হবে

মাহির শুয়ে পড়ে শ্রাবনী ভয়ে ভয়ে চারদিকে চোখ বুলিয়ে মাহিরের দিকে তাকায় মাহির ততক্ষণে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন শ্রাবণী মাহিরের উল্টো সাইডে শুইয়ে পড়ে গায়ে কম্বল জড়িয়ে পুরো শরীর কম্বল দিয়ে ঢেকে গুটিশুটি মেরে শুয়ে আছে হঠাৎ ই মনে হলো সারা রুম অন্ধকার হয়ে গেছে শ্রাবণী উঁকি দিয়ে দেখে সত্যি সত্যিই কারেন্ট চলে গেছে শ্রাবণী দ্রুত মাথা ঢুকিয়ে নেয় কানে মাহিরের কথা গুলো ভাসছে চোখ বন্ধ করলেই মনে হচ্ছে ওর মাথার পাশে কেউ বসে আছে কিংবা পায়ের পাশে মুখের উপর কেউ ঝুঁকে আছে এদিকে কারেন্ট চলে যাওয়ায় বেশ গরম ও লাগছে কিন্তু উপায় নেই কম্বল সরালেই যদি ওর উপর ঝাপিয়ে পড়ে ওই মেয়েটার আত্মা এটা ভেবেই শ্রাবনী চুপচাপ শুয়ে আছে কিন্তু এভাবে কি ঘুম হয় শ্রাবণী উপায়ন্তর হয়ে মাহিরের পাশ ঘেঁষে শুইয়ে পড়ে এদিকে মাহির ঘুমে আচ্ছন্ন শ্রাবণী হাত-পা ছড়িয়ে কাদতে মন চাইছে হঠাৎ কিছুর আওয়াজ কানে আসতেই শ্রাবনী হুড়মুড়িয়ে মাহিরের একদম কাছ ঘেঁষে শুয়ে মাহিরকে ও নিজের কম্বল দিয়ে ঢেকে মাহিরের বুকে মাথা দিয়ে জড়িয়ে ধরে ভয়ে জান যায় যায় অবস্থা মাহির গরমে বিরক্তির ভান করে বলে

মাহিরঃ শ্রাবণী আম টায়ার্ড প্লিজ ঘুমাতে দাও আর এই গরমে কম্বল নিলে কেনো

শ্রাবনীঃ আমার খুব ভয় করছে

মাহিরঃ কিসের ভয় এসব কিছু না ঘুমিয়ে পড়ো

মাহির শ্রাবনীর দিকে ঘুরে ঘুমিয়ে পড়ে শ্রাবনী অসহায় দৃষ্টিতে মাহিরের দিকে তাকিয়ে মাহিরের আরেক টু কাছ ঘেঁষে যায় মাহিরের বুকে মুখ গুঁজে দেয় মাহিরের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে ওঠে ওর অপারেশন সাকসেস মাহির ঘুমের ভান করেই শ্রাবনীকে জড়িয়ে ধরে মাহিরের গরম নিঃশ্বাস গলায় পড়তেই শ্রাবনী কেঁপে উঠে শ্রাবনী মাথা উঁচু করে মাহিরের দিকে তাকায় তখনই মাহির শ্রাবনীর গলায় মুখ গুঁজে আরেকটু নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরে শ্রাবণী পুরো জমে বরফ হয়ে যায় শিরা-উপশিরা বয়ে উষ্ণ শীতল স্রোত বয়ে যায় এক আলাদা ভালো লাগা সৃষ্টি হয়।

চলবে,,,