#Marriage_With_Benefits
#Part_17
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
নিহাল মাথায় হাত রেখে মলে বসে আছে।
আপনি,,,আপনি নিহাল না?(ডালিয়া)
আপনি,,?(নিহাল)
আরে আমি ডালিয়া।ঐযে অনাথ আশ্রমের।(ডালিয়া)
এইরে এই মেয়ে আবার কি করছে এইখানে?(নিহাল মনে মনে)
এইযে কি ভাবছেন?(ডালিয়া)
কিছু না কিছু না।(নিহাল জোরপূর্বক হাসি দিয়ে)
ওহ।আমি এখানে বই কিনতে এসেছিলাম।(ডালিয়া)
ওহ।(নিহাল অন্যমনস্ক হয়ে)
কি হলো কি?উনার ধ্যান অন্য দিকে মনে হচ্ছে!(ডালিয়া মনে মনে)
কি করা যায়?ওয়েট ডালিয়া তো আস্থার বান্ধুবি।আমাকে তো ওই সাহায্য করতে পারে।(নিহাল মনে মনে)
তাহলে আমি যাই,,
বলেই ডালিয়া যেতে নেবে তখনই নিহাল ওর হাত ধরে বললো
এই শোনো।দাড়াও আমাকে একটা হেল্প করতে পারবে?
ডালিয়া জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে
ওহ। সরি ভুলে তোমার হাত ধরে ফেললাম।কিছু মনে করো না।
নিহাল ডালিয়ার হাত ছেড়ে দিয়ে।
না না।কিছু মনে করবো না।আপনি বলুন আপনার কি সাহায্য লাগবে?(ডালিয়া)
আসলে আমার এক ভাবির জন্য কিছু কাপড় কিনতে হবে।কিন্তু আমার মেয়েদের কাপড় চোপড় সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই।আর আমিও কখনও মেয়েদের কাপড় চোপড় কিনি নাই।তুমি যদি একটু সাহায্য করতে?(নিহাল)
আপনার ভাবির সাইজ কতো?আর কে আপনার ভাবি?(ডালিয়া কৌতূহল নিয়ে)
আস্থা।(নিহালের মুখ ফসকে বেরিয়ে গেলো)
আস্থা?(ডালিয়া ভ্রু কুঁচকে)
আরে আস্থার মতো সাইজ।আর আস্থার মতই দেখতে।তুমি আস্থার যেই কাপড় পছন্দ ওই কাপড়ই কিনে দাও।(নিহাল কোনো মতে সামলে)
কিন্তু আমার দুটো শর্ত আছে!(ডালিয়া ভাব নিয়ে)
কি শর্ত?(নিহাল সন্দেহর দৃষ্টিতে)
আজ আমার সাথে আপনার কফি খেতে হবে আর একটা হলো আপনার নম্বরটা আমাকে দিতে হবে।(ডালিয়া)
কিহ!আমি আমার নম্বর দিবো না।কফি ঠিক আছে কিন্ত নম্বর না।(নিহাল)
বাবারে। এতো দিন শুনতাম মেয়েরা নম্বর দিতে চায় না।এখন দেখি ছেলেরাও।(ডালিয়া ভ্রু কুঁচকে)
তাহলে ওইটা বলো যে এত দিন শুনে আসলাম ছেলেরা নম্বর চায় এখন দেখি মেয়েরা চায়।(নিহাল)
কেনো চাইবো না?আমি আপনাকে হেল্প করবো।তার বদলে কি আমি কিছু নিবো না?(ডালিয়া মুখ ভেংচি দিয়ে)
দুই বান্ধবী এক। বেনিফিটস্ ছাড়া কেউ এক পাও আগায় না!(নিহাল বিড়বিড় করে)
কিছু কি বললেন?(ডালিয়া)
নাহ(নিহাল)
এখন বলেন কি করবেন?(ডালিয়া)
অন্য কোনো উপায় আছে?(নিহাল)
নাহ।নেই।(ডালিয়া)
তাহলে চলো।আমি রাজি।(নিহাল এক সাগর হতাশা নিয়ে)
নিহাল আর ডালিয়া মিলে শপিং করলো। শপিং শেষ করে কফি খেলো।তারপর নিহাল থেকে ওর নম্বরটা নিয়েই ছাড়লো ডালিয়া।
।
।
বর্তমান
আভি চল একসাথে নিচে নামি।
বলেই নিহাল আস্থা আর আভির সাথে নিচে নামছে।
আস্থা তোমার কোনো ভয় পাওয়ার দরজার নেই।তোমার ফুল পাওয়ার আছে।(আভি)
আমি মুচকি হাসি দিলাম।কারণ আমি জানি আমি কি করবো?
আমি আর আভি গিয়ে বসলাম। ডাইনিং টেবিলে গিয়ে দেখি শুধু দাদু বসে আছে আর তার এক পাশে আরিফ আর মিস:সাবিনা দাড়িয়ে আছে।
বাড়ির বাকি লোক কোথায়?(আমি কৌতূহল নিয়ে)
মিস:ঈশানি বাহিরে গেছে।রোহান স্যার(আভির চাচা) অফিসে গেছে।আর আয়ুশ স্যার(আভির ছোটো চাচার ছেলে)কলেজে গেছে।আর আর্শি মিস(ছোটো চাচার মেয়ে)কোথায় গেছে জানি না।(মিস সাবিনা)
উনি?(আমি মিস সাবিনাকে উদ্দেশ্য করে)
উনি হচ্ছে মিস সাবিনা।আমার মায়ের মত।আর উনি হচ্ছে আরিফ।আরমান চৌধূরীর সেক্রেটারি।(আভি)
ওহ।আচ্ছা সবাইকে কি এক সাথে খায় না?(আমি)
না।যে যার যার রুমে খায়।এক সাথে খেলে তো তাদের খাবার হজম হবে না।(আরিফ ফট ফট করে সব বলে দিলেন)
এই কথা শুনেই দাদু আরিফের দিকে রাগী চোখে তাকালো।
আর সাথে সাথেই আরিফ চুপ।উনিও(আরিফ)মজার মানুষ মুখ ফসকে আসল কথা বের করে ফেলেছে।
ডাইনিং টেবিলে খাবার দেওয়ার পর আমি,আভি আর দাদু খেলাম।দাদু আমার সাথে একটা কথাও বলে নি।যতটুকু বুঝতে পারছি এইবাড়িতে কারো সাথে কারো সম্পর্ক নেই।যা আছে তা নামে মাত্র।কিন্তু আমি এখন কিছু করতে চাইছি না।আগে পরিস্থিতি দেখে কাজ করতে হবে ঠান্ডা মাথায়।আগে সবাই বাসায় আসুক।তারপর বুঝবে সবাই কতো ধানে কত চাল।এক সাথে খাবি না আবার।তোরা তো খাবি তোদের চৌদ্দ গুষ্টি শুদ্ধু খাবে।আর যদি না খাওয়াতে পারি তবে আমি আস্থা না।
আমি আর আভি খাবার শেষ করে।রুমে গিয়ে বাহিরে যাওয়ার জন্য তৈরি হলাম।আমি এখন আমার পার্ট টাইম কাজে যাবো আর আভি অফিসে।আভির সাথে দাদুও যাবে।কিন্তু তাদের সাপে নেউলে সম্পর্ক কিনা?এক সাথে তো ভুলেও যাবে না।তাই দুই জনে একই গন্তব্যে গেলো দুই গাড়ি দিয়ে।বড়ো লোকের এলাহি কারবার।আমাকে আভি নামিয়ে দিয়ে গেলো।আমার অফিস ওর অফিসের রাস্তায় পড়ে।তাই সহজই।
আমি গিয়ে সরাসরি ভিতরে ঢুকলাম।
আমার কাজ রিসেপশনে সব খবর পৌঁছে দেয়া।আর রিসেপশনে আশা সব খবর বিভিন্ন জায়গা পাঠানো।
আমি যখন আমার কাজ করছিলাম।তখনই একটা মহিলা আমার সাথেই কাজ করে সে কান্না করছিলো।
কি হলো আপনি কান্না করছেন কেনো?কোনো সমস্যা আপনার?আপনি চাইলে আমাকে বলতে পারেন(আমি)
আমার স্বামী তার অফিসের সহকর্মীর সাথে পরকীয়াতে লিপ্ত।
বলেই মহিলা কান্না করতে শুরু করলো।
আপনি কি করে জানলেন উনি পরকীয়াতে লিপ্ত?(আমি অবাক হয়ে)
আমার স্বামী আমাকে আর আগের মত ভালবাসে না।সারাক্ষণ ফোন নিয়ে ব্যাস্ত সময় পার করে।আমার আর আমাদের সন্তানের একটু খেয়ালও রাখে না।বাসায় কোনো খরচ দেয় না।আমাকে এড়িয়ে এড়িয়ে চলে।আজ অফিসে যাওয়ার নাম করে বেরিয়েছে কিন্তু অফিসের বদলে পার্কে গিয়ে বসে ছিলো ওই মহিলার সাথে।আমি ফোন করে জিজ্ঞেস করার সময় উনি বলেছেন উনি নাকি অফিসে কাজে ব্যাস্ত এখন কথা বলতে পারবে না।
বলেই মহিলা আবার কান্না করতে শুরু করলো।
পরেই আবার বলা শুরু করলো।আমি ওকে অনেক ভালোবাসি। ও যদি আমাকে ছেড়ে খুশি থাকে তাহলে থাকুক।আমি এইসব মাইন্ড করবো না।আমি ওর থেকে অনেক দূরে চলে যাবো।(মহিলা)
কোথায় যাবেন আপনি?(আমি)
আমি আত্মহত্যা করবো।যখন আমি মারা যাবো তখন ও বুঝবে আমি ওর জন্য কি ছিলাম?(মহিলা)
আশ্চর্য তো।আপনি মরতে যাবেন কেনো?ভুলটা করেছে আপনার স্বামী।আর আমি তো শিওর না যে উনি এইসব করেছেন?আগে উনাকে জিজ্ঞেস করুন।যদি উনি স্বীকার করে তাহলে উনাকে উনার কৃতকর্মের জন্য শাস্তি দিবেন।(আমি)
আমার মৃত্যুই ওর জন্য শাস্তি।(মহিলা)
কোনো মতেই না।যে জীবিত অবস্থায় আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে।সে যে মৃত্যু হলে আপনার কথা ভাববে এইটা তো নাও হতে পারে।আপনি আপনার সন্তানের কথা ভাবুন উনি কি উনার বাবার দায়িত্ব পালন করতে পারবে??।(আমি)
আমি কি করবো?
বলেই মহিলা আবার কান্না করতে শুরু করলো।
আপনি প্রথমে আপনার স্বামীর সাথে খুলে কথা বলুন।তারপর যদি সত্যি আপনার স্বামী পরকীয়া করে থাকে।তাহলে নিজের সন্তানের কথা ভেবে বুক উচু করে বাঁচুন।(আমি)
মহিলা মনে হয় আমার কথা শুনে।একটু আশ্বস্থ হলো।
আস্থা আর মহিলার সব কথা আড়াল থেকে একজন শুনলো সে আর কেউ না কলি।
কলি খান গ্রুপে ম্যানেজিং ডিরেক্টর।আর খান গ্রুপের মালিক হলো জিসান।ভাগ্যক্রমে আস্থাও এই কোম্পানিতে চাকরি করে।আজ কলির একটা ইম্পর্ট্যান্ট মিটিং ছিলো বলে তাড়াতাড়ি যেতে ছিলো।তখনই রিসেপশন থেকে কারো কান্নার আওয়াজ আসলো।তাই সেখানে গিয়ে আস্থা আর মহিলার কথোপকথনটি শুনতে পেলো।
আস্থা।সত্যিই তুমি আমাকে প্রতি পদে পদে আমাকে মুগ্ধ করো।এইটুকু বয়সে তুমি কতো কিছু বুঝতে পারো।আমি ভেবছিলাম আমাদের এমনি এমনি শুধু দেখে হয়েছে।কিন্তু কোনো ঘটনাই কাকতালীয় না।ভাগ্য তোমাকে আমার সাথে মিলিয়ে দিয়েছে।আমাকে আজই জিসানের সাথে কথা বলতে হবে।
।
।
কেবিনে
জিসান জিসান।(কলি হন্তদন্ত হয়ে ঢুকলো)
কি হলো কলি এইভাবে ঢুকলে যে?কিছু কি হয়েছে?(জিসান ঘাবড়ে গিয়ে)
জিসান।আমার একটা কথা রাখবে প্রমিজ করো?(কলি)
কি কথা?আমি তোমার সব কথাই রাখি।(জিসান)
আমি একজনকে দত্তক নিতে চাই।(কলি)
কি?কাকে দত্তক নিবে?আর এখন?(জিসান)
হ্যা।আমি জানি প্রথমে আমার মেন্টাল হেলথ নিয়ে সমস্যা হয়েছিল।তারপর সুস্থ হওয়ার পর তুমি বলেছিলে দত্তক নেওয়ার কিন্তু আমিই আমার মেয়ের জায়গা কাউকে দিতে পারি নি।অন্য কাউকে আমার মেয়ের জায়গাতে বসাতে পারি নি।কিন্তু এখন আমার কেনো জানি ওকে দত্তক নিতে মন চাচ্ছে।আমি ওকে দত্তক নিবো।যে করেই হোক তুমি না করবে না।প্লিজ।(কলি খুব এক্সসাইটেড হয়ে)
আমি কি কোনো কিছুতে তোমাকে মানা করি?আচ্ছা আমরা কালকেই অনাথ আশ্রমে গিয়ে ওই বাচ্চাকে দত্তক নিয়ার প্রস্তুতি নিবো।,(জিসান)
ও বাচ্চা না তো।ঐযে অনাথ আশ্রমে যেই মেয়েটা নেচে ছিলো। ও সেই মেয়ে।(কলি)
ও।কিন্তু তুমি ওর দেখা কথা থেকে পেলে বলতো?(জিসান)
ও আমাদের কোম্পানিতে পার্ট টাইম জব করে।(কলি)
আচ্ছা।তাহলে কালকেই আমি আর তুমি মিলে ওর সাথে কথা বলবো কেমন?(জিসান)
যদি ও আমাদের মেয়ে হতে রাজি না হয়?(কলি চিন্তিত হয়ে)
জিসান ওকে জড়িয়ে ধরে বললো
আমরা ওকে মা বাবার এতো আদর দিবো।যতক্ষণ না ও রাজি হচ্ছে ততক্ষণ আমরা হাল ছাড়বো না।(জিসান)
।
।
অন্যদিকে
আমি এখন আভিদের কোম্পানিতে যাবো।আরিফ ফোন দিয়েছে দাদু নাকি কি ইম্পর্ট্যান্ট কথা বলতে চান?আমি যেনো আভি কেও কিছু না বলি।ছুটির পর এখন আমি আভিদের কোম্পানিতে যাচ্ছি রিকশা করে।তাড়াতাড়িই পৌঁছে গেলাম।আমি দাদুর কথা মত আভিকে কোম্পানিতে যাওয়ার কথা কিছু বলি নি।কারণ আমি জানি আমার দাদা শশুরকে আমি ঠিক সামলে নিবো।😁এখন শুরু হলো চৌধুরী বনাম আস্থা।দেখা যাক কে জিতে?
।
।
চলবে,,,
#Marriage_With_Benefits
#Part_18
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
আমাকে নিচে থেকে আমাকে আরিফ এসে রিসিভ করে নিয়ে গেলো।আমি কেবিনে ঢুকেই দেখি দাদু পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে।একদম আমার হাসব্যান্ড এর কপি।সরি আমার হাসবেন্ড উনার কার্বন কপি। যতই রেশারেশি থাকুক না কেন?উনারা ঠিকই একে অপরের ছায়া।
আমাকে পর্যবেক্ষণ হলো তোমার?(দাদু)
নাহ।দাদু ভাবছি আমার অনাগত সন্তান আপনার মত হবে নাকি আমার হাসব্যান্ড এর মতো। অবশ্য যার মতই হোক আমারই তো জ্বালা।(আমি টিটকারি করে)
হাসব্যান্ড!খুব ভালোবাসা আছে একজন আরেক জনের উপর।(দাদু)
থাকবে না।ভালোবেসে বিয়ে করেছি।ভালোবাসা উতলে পড়ছে আর কি?(আমি নেকামি করে)
অনেক হয়েছে ভালোবাসা।(দাদু রাগী গলায়)
আমি চুপ করে গেলাম।এখন আমার উনার কথা শুনতে হবে।তারপর পাল্টা জবাব দিতে হবে।
দাদু আবার বলতে শুরু করলো
আস্থা ইয়াসমিন।আসল মা বাবা অজানা।পালিত বাবা হসপিটালের একজন কর্মকর্তা যেই হসপিটাল থেকে তোমাকে এনেছিলো।পালিত বাবা ছাড়া বাসায় কেউই তোমাকে পছন্দ করেন না।কিছু দিন আগে বেরিয়ে এসেছো বাসা থেকে।আমার নাতির ঘাড়ে চাপলে কি করে?(দাদু তোতা পাখির মতো সব বললো)
আমি দাদুর দিকে তাকিয়ে ভাবছি,,
এরা শুধু দেখতে এক না। কাজকর্মও এদের এক।দাদু নাতির আর কোনো কাজ নেই শুধু আমার খোজ খবর নিবে। হায় আল্লাহ।
কি হলো?কি ভাবছো?আমার নাতির ঘাড়ে কেনো বসেছো?(দাদু)
আপনার দাদুর ঘাড় আমার খুব পছন্দের একটা জায়গা পুরো শরীরের মধ্যে থেকে(আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
পাশের রুমে আভি আর নিহাল বসা ছিলো।দাদু ওদের আস্থার আসল রূপ দেখানোর জন্য।আভি আর নিহালকে অন্য রুমে বসিয়ে রেখেছে।আভি কে মানা করছে যদি ওর ভালোবাসার উপর ভরসা থাকে তাহলে ও যেনো দাদুর প্ল্যান সম্পর্কে আস্থাকে কিছু না জানায়।আর আভিও ভেবেছে আস্থা কাজটা করতে পারবে কি না তা জানার এর থেকে ভালো আর কোনো সুযোগ নেই।তাই আভিও দেখতে চায় আস্থা কি করে দাদুর প্ল্যানের বারোটা বাজিয়ে দেয়। ক্যামেরা দিয়ে ওরা দেখছিলো দাদু আর আস্থার রুমে কি চলছিলো।আর সাথে কথা গুলো শুনছিল।যখনই আস্থা এই কথা বললো তখনই আভি ফিক করে হেসে দিলো।
নিহাল। ম্যাচটা জমেছে ভালো।(আভি হাসতে হাসতে)
তা আর যা বলেছিস!দাদু চিড়িয়াখানার যেমন বাঘ আস্থাও তেমন জঙ্গলের বাঘিনী।এখন খেলা হবে।শুধু চুপচাপ বিনোদন নে।(নিহাল)
আস্থা।তোমার উপর আমার পুরো আস্থা আছে।আমাকে নিরাশ করো না।(আভি মনে মনে)
.
.
কেবিনে
চুপ বেয়াদব মেয়ে। কার সামনে কি করে কথা বলতে হয় তুমি তাই জানো না?আমি তোমার দাদা শশুর হই।(দাদু রেগে)
আপনিই তো বললেন আপনি আমাকে মেনে নেন নি তাহলে আপনি আমার দাদা শশুর কি করে হোন?(আমি ভ্রু কুঁচকে)
এই মেয়ে আমাকে আমারই কথায় পেঁচিয়ে দিলো(দাদু মনে মনে)
কি হলো কিছু বলুন?(আমি তাড়া দিয়ে)
কি বলবে?মুখে সুপারি গেঁথে গেছে যে।এই প্রথম আরমান চৌধূরী কে কেউ চুপ করাতে পারলো।(আরিফ মনে মনে)
তুমি বেশি কথা বলছো?(দাদু)
এই বেশি কথা দিয়েই তো আপনার নাতি ফিদা হয়ে গেছে।(আমি নেকামি করে)
.
.
রুমে
বাহ!আস্থা এমন অ্যাকটিং করবে আমি তো তা ভাবতেই পারি নি।(আভি মনে মনে)
.
.
কেবিনে
ফালতু কথা ছাড়ো কাজের কথায় আসা যাক।(দাদু গম্ভীর হয়ে)
আমি তো এতক্ষন কাজের কথাই বলছিলাম।কি করে আমাদের লাভ স্টোরি এগিয়েছে।(আমি নেকামি করে)
ওই মেয়ে চুপ।আর একটা কথা বললে খবর আছো।এখন বলো কতো টাকা চাও।(দাদু)
কিসের টাকা?নতুন বউয়ের মুখ দেখানোর টাকা?(আমি টিটকারি)
আরিফ ফিক করে হেসে দিলো।
দাদু আরিফের দিকে আবার রাগী লুক দিয়ে তাকালো।আরিফ চুপ হয়ে গেল।অন্যদিকে
আভি!আস্থা যা খেলছে না।আজ তোর দাদু তো আউট।(নিহাল হাসতে হাসতে)
আভিও আস্থার কথা শুনে হাসছে।
তোমাকে আমি মানি না।তোমার মুখ দেখার কোনো প্রশ্নই উঠে না আমার।(দাদু রেগে)
একটু আগেই তো বললেন আপনি আমার দাদা শশুর।আর এখন বলছেন আপনি আমাকে মানেন না?(আমি কথার প্যাচ ধরে)
তোমাকে তো আমি,,,
(দাদু কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি উনাকে থামিয়ে বললাম
ছাড়ুন তো।এখন বলুন কিসের টাকা?
আমার নাতির জীবন থেকে চলে যাওয়ার জন্য কতো টাকা নিবে শুনি?(দাদু)
আপনি আমাকে টাকা দিবেন?(আমি অবাক হয়ে)
.
.
রুমে
এইরে আস্থা না আবার টাকা নিয়ে বসে ওর তো।কোনো ভরসা নেই।কিডন্যাপের দিনও অফার করতেই টাকা নিয়ে ছিলো।এখনও তো দাদু অফার করছে ও কিনা আবার টাকা নেয়?(আভি চিন্তিত হয়ে)
আভি চিন্তা করিস না।আস্থা টাকা নিবে না।আমার বিশ্বাস।(নিহাল ও টেনশন নিয়ে)
।
।
কেবিনে
কতো টাকা দিবেন আপনি?(আমি সন্দেহর দৃষ্টিতে)
যতো টাকা তুমি তোমার জীবনেও দেখোনি।এই নাও। পঞ্চাশ লাখ টাকা আছে।যদি চাও আরো দিবো।শর্ত একটাই আমার নাতিকে ছেড়ে চলে যেতে হবে।
বলেই দাদু আমাকে একটা চেক এগিয়ে দিলো।
আভি আর নিহাল পাশের রুমে বসে বসে ভাবছে আস্থা কি জবাব দেবে?
আমি হাত বাড়িয়ে চেক টা নিয়ে বললাম
আপনার নাতির মূল্য কি শুধু পঞ্চাশ লাখ টাকা?
তাহলে এই নাও।আরো পঞ্চাশ লাখ টাকা।(দাদু আরেকটা চেক এগিয়ে দিলো)
আমিও ওই চেক টা নিয়ে বললাম
থাক এইটাই যথেষ্ট।আমার আর টাকা লাগবে না।এক কোটি টাকা দিয়ে কতো কিছু করা যাবে তাই না?(আমি চেক এ হাত বুলাতে বুলাতে)
হুম।অনেক কিছু করতে পারবে?যা খুশি কিনতে পারবে।(দাদু বিজয়ের হাসি দিয়ে)
যা খুশি কিনতে পারবো?(আমি)
আভি দেখো তোমার ভালোবাসা আমি কি করে কিনে নিলাম?(দাদু মনে মনে)
।
।
রুমে
শিট।দেখছিস।আস্থা চেক গুলো নিয়ে নিলো।আমি জানতাম আস্থা একটা লোভী মেয়ে আর তা প্রমাণ হয়ে গেলো।আমার ওর উপর দিয়ে বিশ্বাস করাই ভুল হয়েছে। ও আমার ফিলিংস নিয়ে মজা করেছে।কি করে পারলো ও আমাকে ধোঁকা দিতে?আমি ওকে কতো ভালো করে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম।কিন্তু ও টাকা দেখেই সব ভুলে গেছে।ওর কাছে টাকাই সব মানুষের মনের কোনো দান নাই।কি করে পারলো ও টাকা গুলো নিতে।আমি তো বলেছি ওর সব প্রয়োজন আমি দেখবো কিন্তু ও।একটা লোভী মেয়ে কোথাকার!আজ ওর এক দিন কি আমার এক দিন?(আভি রাগে)
আভি এভাবে রাগ করিস না।আগে পুরো ব্যাপারটা ভালো করে বুঝে নে।(নিহাল)
কি বুঝবো?যা বুঝার বুঝা হয়ে গেছে!
বলেই আভি দরজা খুলে বেরিয়ে আস্থার কাছে যাবে তখনই আস্থা আবার বলে উঠলো।
এই নিন।এক কোটি পাঁচশো টাকা।(আমি দাদুকে চেক দুটো আর আমার ব্যাগ থেকে বের করে দেয়া একটা পাঁচশো টাকার নোট এগিয়ে দিলাম)
মানে?(দাদু)
মানে আমি এই এক কোটি পাঁচশো টাকা দিয়ে আপনার নাতিকে কিনে নিলাম।আজ থেকে আপনার নাতি আমার শুধু আমার।(আমি চেকটা দাদুর হাতে তুলে দিয়ে)
আমার নাতি কি কেনা বেচার জিনিস?(দাদু চিৎকার করে)
তাহলে আমার ভালোবাসার মানুষও কেনা বেচার জিনিস না।(আমি চিৎকার করে)
তোমার ভালোবাসা কিনতে কতো লাগবে শুনি?(দাদু রাগী গলায়)
আপনার নাতি বাজার পণ্য হতে পারে আমার ভালোবাসার মানুষ শুধু আমার পার্সোনাল।প্রাইভেট পণ্য।যা আমি আপনার মত বাজারে নিলাম করবো না।
বলেই আমি পিছন দিকে তাকালাম।তাকিয়ে দেখি আভি দাড়িয়ে আছে।
আমি আভিকে দেখে একটা মুচকি হাসি দিয়ে দৌড়ে ওর কাছে গেলাম।ওকে টেনে নিয়ে এসে দাদুর সামনে দাঁড় করালাম।
ওর টাই ধরে মাথাটা নিচে নামিয়ে ওর গালে একটা চুমু দিয়ে দিলাম।এই ঘটনাতে দাদু খুব শক খেয়েছে।
আভি জানো আজ এক কোটি পাঁচশো টাকা দিয়ে তোমাকে আমি তোমার দাদু থেকে কিনে নিয়েছি।তাই না দাদু?(আমি দাদুকে টিককারি মেরে)
ওই আমার টাকা ছিলো!(দাদু চিৎকার করে)
আপনিই তো বললেন আমি ওই টাকা দিয়ে যা খুশি কিনতে পারি তো আমি তাই কিনলাম।আমি আমার হাসব্যান্ডকে কিনে নিলাম।(আমি)
অন্যদিকে
আভি আস্থাকে ভুল বুঝেছে বলে খুব অনুতপ্ত অনুভব করছে।আমি কি ভেবেছিলাম এই মেয়ের ব্যাপারে আর ওর মাথায় কি চলছিলো?আমার উচিত ছিল ওর উপর বিশ্বাস করা।আমি কি করে ওর চোখের দিকে চোখ মেলাবো।ওর দিকে কোন মুখে তাকাবো।যদিও আস্থা কিছু শুনে নি তবুও তো আমি ওকে ছোটো করে কথা বলেছিলাম।এখন আমারই খুব খারাপ লাগছে।যা ওকে বলতে হবে আমি যতক্ষণ না কনফেস করছি ততক্ষণ আমার নিজেরই ভালো লাগবে না।(আভি মনে মনে)
।
।
আভি আর আমি গাড়িতে বসে আছি। আভি ড্রাইভ করছে আর আমি ওর পাশের ছিটে বসে আসি।এখন আমরা বাসায় যাবো।আভি কেনো জানি চুপ আজকে।ওর তো খুশি হওয়া উচিত।আজ খুব ভালো করেই জব্দ করলাম দাদুকে সেই ভালো লাগছে আমার।(আমি মনে মনে)
আভি আজ কেমন হলো আমার পারফরম্যান্স?(আমি এক্সসাইটেড হয়ে)
আভি চুপ করে গাড়ি চালাচ্ছে।
আভি(ধাক্কা দিয়ে)
হুম!কি হলো?(আভি)
আজ কি আমার পারফরমেন্স ভালো হয় নি?(আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে)
আস্থা।আমি অনেক দুঃখিত।(আভি গাড়ি থামিয়ে)
হাহ!(আমি অবাক হয়ে)
আভি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো
আই অ্যাম রিয়েলি সরি।আস্থা।
আমি অবাক যে সরি বলার জন্য আমাকে পাঁচ লাখ টাকা দিতে পারে সে আমাকে আজ সরি বলছে!কেসটা কি?(আমি মনে মনে অনেক অবাক হয়ে)
কি হলোটা কি?আপনি কেনো আমাকে সরি বলছেন?কি হয়েছে?আমি কি করছি?আপনি কি ভুল করছেন?আমি কিছুই তো জানি না।আর আপনি কেনো আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।আরে ছাড়েন।(আমি আভি কে ছাড়াতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম)
আভি আমাকে ছেড়ে আমাকে বললো ও আর দাদু কি প্ল্যান করছিলো!আভি পাশের রুমের ছিলো সব শুনছিল।
আমি চুপচাপ উনার কথা শুনছি।
।
।
চলবে,,,,