Marriage_With_Benefits Part-45

0
4460

#Marriage_With_Benefits
#Part_45
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি নিজে থেকে আসবেন আমি কাউকে কিছু বলবো না।(আমি)

তুমি সত্যি ভালো।আমার আভির কপাল করে তোমার মত বউ পেয়েছে।(সুমু মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে)

তাহলে মা আমরা আসি।(আমি মুচকি হেসে)

হুম।(সুমু)

আমি যাওয়ার আগে সুমু মাকে বললাম
মা।আদি বাবা আপনি আসার পরই অ্যাকসিডেন্ট করে এখন সে বিছানায়।
বলেই চলে আসলাম।

আদি বিছানায়?আমি কি করবো?অতীত গুলো এতো দিন পর আমার জীবনে আবার হানা দিলো।আবার আমাকে দুবিধায় ফেলে দিলো।আমি কোথায় যাবো?কি করবো?কিছুই বুঝতে পারছি না!আমি কি আবার ফিরে যাবো?ফিরে গিয়ে কি বলবো?এতো বছর অভিমান করে কাটিয়ে দিয়েছি।এখন কি করবো?বাকি অর্ধেক জীবন কি এইভাবে একা কাটাবো নাকি।আবার জীবন শুরু করবো সবাইকে নিয়ে।আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা।
বলেই সুমু কান্না করতে লাগলো।


গাড়িতে
আস্থা তুমি এখন কি করবে?উনি তো আসলো না।এখন তোমার আর আভির সম্পর্ক?(জয়)

কিছুই করার নেই।আমি উনাকে জোর করতে পারি না।উনি উনার জায়গাতে ঠিক।এতো অপমানে অভিমান হওয়ারই কথা।ক্ষমা না করারই কথা।আর যেহেতু উনি এতো বছর অভিমান নিয়ে কাটিয়েছে।সেহেতু এতো তাড়াতাড়ি অভিমান ভেঙ্গে,,সব কিছু ভুলে আসা উনার পক্ষে সম্ভব না।আমরা মানুষ অনুভূতি আমাদের মধ্যে রয়েছে।আর সেই অনুভূতির অভিমানটা কাটিয়ে উঠতে তার একটু সময় লাগবে।আমি নিজের সম্পর্ক বাঁচাতে উনাকে জোর করতে পারি না।(আমি)

তাই ঠিক।(জয়)

আমি আর ডক্টর জয় চুপ করে আছি।ডক্টর জয় গাড়ি চালাচ্ছে।আমাকে বলেছে ঘুমাতে কিন্তু এখন আমার ঘুম পাচ্ছে না।ভোর হতে চললো।হটাৎ ডক্টর জয়ের ফোন বেজে উঠলো।
আস্থা একটু ফোনটা রিসিভ করতে হবে।হতে পারে কোনো রুগী।(জয়)

প্লিজ।কোনো সমস্যা নেই আমার।(আমি)

ডক্টর জয় গাড়ি দার করিয়ে ফোনটা রিসিভ করলো।

উনি কথা বলতেই উনার চেহারার রং যেনো পাল্টে গেল।উনি বারবার আমাকে আড় চোখে দেখছে।কিন্তু কেনো জানি আমার বিষয়টা ভালো ঠেকছে না।
ঠিক আছে…আমি ওকে আসছি।
বলেই ডক্টর জয় ফোনটা কেটে দিলো।

ডক্টর জয়।কি হলো?আপনাকে খুব চিন্তিত লাগছে মনে হচ্ছে।(আমি চিন্তিত হয়ে)

আস্থা।মনে রাখবে বেশি হাইপার হলে বেবির ক্ষতি হতে পারে।(জয়)

আমি জানি কিন্তু হঠাৎ আমাকে আপনি এইসব বলছেন কেনো?(আমি কৌতূহল নিয়ে)

আমার সাথে গেলেই দেখতে পারবে।
বলেই ডক্টর জয় একটা হসপিটালের সামনে এসে গাড়ি দাড় করালো।এতো ক্ষন প্রায় সকাল সাড়ে আটটা বাজে।আমি গাড়ি থেকে নামতেই দেখি মা,,বাবা,,আভি,,আয়ুশ,,নিহাল ভাইয়া,,দাদু,,আর আরিফ দাড়িয়ে আছে।আর সাথে আছে পুলিশ অফিসারও।কিন্তু সবাইকে এক সাথে দেখে আমার বিষয়টি ভালো ঠেকলো না।
কি হলো সবাই এক সাথে এখানে কেনো?কি হয়েছে?(আমি সন্দেহর দৃষ্টিতে)

আস্থা।শান্ত হও।(আভি খুব শান্ত গলায়)

আরে শান্ত হবো মানে?কেনো শান্ত হবো।আর তুমি এখানে কি করছো?তোমার না কাল রাতে এনগেজমেন্ট ছিলো।হবু বউ রাগ করবে তোমার।(আমি নিজেও জানি না আমি কি আবোলতাবোল বলছি)

আস্থা। চল তোকে নিয়ে যাই।(জিসান)

বাবা।কোথায় নিয়ে যাবে?(আমি অবাক হয়ে)

পরেই মা আর বাবা কিছু না বলেই আমাকে নিয়ে হসপিটালের মর্গে নিয়ে গেলো।
আমার হাত পা কাপছে,,,
মা বাবা। আ আ আমাকে মর্গে কেনো এনেছো?(আমি ভয়ে ভয়ে)

তোকে দেখাতে।(মা)

আমি মর্গে কি দেখবো?(আমি ভয়ে)

পরেই বাবা আমার সামনে থেকে একটা লাশের ওপর থেকে কাপড় সরিয়ে দিলো।
আমি ওমনি থপ করে নিচে বসে পড়লাম।
আস্থা।নিজেকে সামলাও।
বলেই পিছন থেকে আভি আমাকে ধরে ফেললো।

আভি কি হয়েছে বাবার(পালিত বাবা)?(আমি)

বাবা।কাল রাতে ছাদ থেকে পড়ে গেছে।(আভি মাথা নিচু করে)

ছাদ থেকে পড়ে গেছে।বাবা কি বাচ্চা নাকি?ছাদ থেকে পড়ে যাবে?আর রাতে কেনো উনি ছাদে উঠতে যাবে?(আমি আভিকে জোরে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে চিৎকার করে বলতে লাগলাম)

আস্থা।প্লিজ শান্ত হও।বাবা আর নেই।(আভি)

চুপ একদম চুপ।তুমি কে বলার আমার বাবা নেই?বাবা,,বাবা কই তুমি?তোমার ছোটো আস্থাকে রেখেই চলে গেলে।আমি তোমাকে রক্ষা করতে পারলাম না বাবা।আমি আমার কথা রাখতে পারলাম না বাবা।আমায় ক্ষমা করো বাবা।আমাকে ক্ষমা করো।(আমি বাবাকে ধরে কাদতে কাদতে)

আস্থা।
বলেই আভি আমার কাছে আসতে লাগলো।

একদম ছুবে না আমায়।দূরে যাও।বেরিয়ে যাও এখান থেকে।(আমি রাগে)

আভি আর কিছু বললো না।বেরিয়ে গেলো।আমি সেখানেই দাড়িয়ে রইলাম।


এক মাস পর
সেদিন বাবার সাথে আমার আর চৌধূরী বাড়ির সব সম্পর্ক কবরে দিয়ে আসলাম আমি।ওই বাড়ির সবার সম্পর্ক ঠিক করতে করতে আমার নিজের সম্পর্ক গুলো আমি হারিয়ে ফেলেছি।আর যার জন্য এইসব সেই আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো।এখন আমার আর চৌধূরী বাড়ির মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।সব আমি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছি।তবুও আজ আবার যাবো কিন্তু কোনো সম্পর্কের দোহাই দিয়ে না।বরং কিছু হিসেব বরাবর করতে।আজ আর নিজের মা হওয়া লুকাবো না।একজন মেয়ে হয়ে নিজের বাবার খুনিকে ধরতে যাবো।
আস্থা।অফিসার এসে পড়েছে।(কলি)

হুম।আসছি মা।
বলেই নিচে নেমে আসলাম।

আস্থা তুই শিওর তো তুই যা করতে চাইছিস তা ঠিক?(কলি মাথায় হাত বুলিয়ে)

চিন্তা করো না মা।আমি এখন ওই বাড়ির বউ না আমার বাবার মেয়ে হয়ে যাচ্ছি।(আমি কঠোর কন্ঠে)

আস্থা চলো।(জয়)

পরেই আমি,, ডক্টর জয়,, অফিসার আর সাথে কিছু পুলিশ বেরিয়ে পড়লাম চৌধূরী বাড়ির উদ্দেশ্য।

আস্থাকে আভির প্ল্যান সম্পর্কে জানিয়ে দেই।(জিসান)

না।ভুলেও না।রাইশা কতো ভয়ঙ্কর দেখেছো না।ও কি করে আসুর পালিত বাবাকে মেরে ফেললো।এখন যদি ও আমার আসুকেও মেরে ফেলে।(কলি ভয়ে ভয়ে)

কিন্তু আসুর মনে যে আভির জন্য ঘৃণা সৃষ্টি হচ্ছে তা?(জিসান চিন্তিত হয়ে)

হচ্ছে যখন হতে দাও।আমি চাই আস্থা আরোও ঘৃণা করুক আভিকে।ওদের মধ্যে যতো ঘৃণা থাকবে।আভি আর আস্থা তত দূরে থাকবে।(কলি)

তুমি কি কোনোভাবে আভি আর আস্থাকে আলাদা করতে চাও?(জিসান অবাক হয়ে)

হ্যা।আমি চাই আভি আর আস্থা আলাদা হোক।আস্থা যতো আভির কাছে থাকবে তত ওর কষ্ট বাড়বে।(কলি)

কলি আমি তোমার চিন্তা বুঝতে পারছি।কিন্তু আভি আর আস্থাকে আলাদা করার তো কোনো দরকার নেই।(জিসান কলিকে বুঝাতে বুঝাতে)

আমি তোমাকে আগেও বলেছি যদি একটা সুযোগও আমি পাই ওদের আলাদা করার আমি তা হাত ছাড়া করবো না।আর তুমিও বলেছো যদি কখনো এমন মনে হয় আভির সাথে আস্থা সুরক্ষিত না তাহলে তুমি আমার সাথেই থাকবে।মনে আছে?(কলি)

হ্যা।মনে আছে।আমি সত্যিই তখন তোমার সাথেই থাকবো।(জিসান)


গাড়িতে
আমি জোর করে বাবার ডেথ টাকে ইনভেস্টিগেশন করাচ্ছি।আমি জানি বাবার মৃত্যু কখনই একটা অ্যাকসিডেন্ট হতে পারে না।কিন্তু এতে বাঁধ সাধে আভি।আভি অনেক বার চেষ্টা করেছে আমি যেনো বাবার মৃত্য নিয়ে ঘাটাঘাটি না করি ওইটা নাকি একটা অ্যাকসিডেন্ট।আর এইটাই আমাকে মেনে নিতে হবে। কিন্তু বাবার মারা যাওয়াটা আমার কাছে মোটেও একটা অ্যাকসিডেন্ট মনে হয় না।তার উপর এখন আভির আমাকে সাপোর্ট দেয়ার কথা।কিন্তু ও তাও দিচ্ছে না।আজ আমার আভিকে অনেক প্রয়োজন কিন্তু আভি নেই আমার পাশে।অবশ্য ওকে আমার পাশে চাওয়াই ভুল।এখন তো ও তুলির সাথে থাকবে।কিন্তু আমিও দেখি কতক্ষন তুমি ওই তুলিকে বাঁচাতে পারো।আমার কাছে তুলির বিরুদ্ধে প্রমাণ আছে সেদিন তুলি বাবার বিল্ডিংয়ে গিয়ে ছিলো।আর তুলির সাথে বাবার মৃত্যুর সম্পর্ক আছে।তা একবার তুলিকে ধরলেই আসল সত্য বের হবে।


চৌধূরী বাড়িতে
আস্থা?আস্থা কি প্রেগনেন্ট?(আভি অবাক হয়ে)

কি হলো মি:আভি?খুব অবাক হলেন মনে হচ্ছে।(আমি)

তুমি প্রেগনেন্ট?(আভি খুশি হয়ে)

বলতে পারেন।আপনার ওই খেলার একটা গুটি আমার পেটে।(আমি কঠিন গলায়)

আস্থা এইসব কি বলছো তুমি?এইটা আমার বাচ্চা।(আভি আমার দিকে হাত বাড়িয়ে)

আমি আভির হাত হেচকা দিয়ে সরিয়ে
শুনে খারাপ লাগলেও সত্যিই।এইটা শুধু আমার বাচ্চা।ভুলেও একে নিজের খেলায় বাঁধতে যাবেন না। মি আভি চৌধূরী।

আস্থা।খুব ভালো করেই আমায় ঘৃণা করতে শুরু করেছে।আমাকে একটি বারও বললো না যে ও মা হতে চলেছে আর আমি বাবা।আস্থা আমি যা করছি তোমার ভালোর জন্যই করছি।তোমাকে বাবার ইনভেস্টিগেশন করতে মানা করেছি কারণ এতে রাইশা জেনে যাবে তুমিই সেই মেয়ে রাইশা যাকে মারতে গিয়েও মারতে পারে নি বাবার জন্য।ওইদিন রাইসা বাবার কাছে গিয়েছিলো শুধু এইটা জানতে যে তুমি কোথায়?যখন বাবা বলার জন্য মানা করে দেয়।তখন ও বাবাকে মারার হুমকি দেয়।বাবার যখন বলে না তখন তাকে ছাদ থেকে ফেলে দেয়।আর রাইসার সাথে ছিলো সেই কেয়ারটেকার।দুজনে মিলে বাবাকে হত্যা করেছে।কিন্তু এখন সেই কেয়ার টেকার মিশিং ওকে খুঁজার চেষ্টাই করছি আমি।কিন্তু তুমি ইচ্ছে করে নেমে পড়লে বাবার খুনিকে ধরতে।বাবা তোমাকে বাঁচাতে নিজের জীবন দিয়ে দিলো আর সেই তুমি এখন রাইসার কাছে ইচ্ছে করে ধরা দিচ্ছ।আর শুধু মাত্র তোমার এই স্বভাবের জন্য আমি তোমার কাছে সব কিছু লুকালাম।নিজের জন্য ঘৃণা জাগালাম।আর সেই তুমি বারবার রাইসার কাছে ইচ্ছে করে ধরা দেও।আমি যতো চাই রাইসা থেকে তোমাকে দূরে রাখতে তুমি তত রাইসার কাছে চলে আসো।(আভি আস্থার দিকে তাকিয়ে কথা গুলো ভাবছে)

মি:আভি চৌধূরী।আপনার হবু স্ত্রীকে ডাকুন।(আমি)

ততক্ষনে বাড়ির সবাই এসে পড়েছে।আরশি ভাবী বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরতে যাবে তখনই আয়ুশ ওকে মানা করে।দাদু আর আরিফও চুপ করে আছে।সবাই বুঝতে পেরেছে আমি সবার উপর ক্ষিপ্ত আর তা না হলে মা হবার ব্যাপার কাউকে জানালাম না কেনো?

ওকে কেনো ডাকবো?(আভি ভ্রু কুঁচকে)

আপনার প্রেমিকা আমার বাবার হত্যাকারী।(আমি)

তুলি আস্থার বাবার হত্যাকারী? ইন্টারেস্টিং ব্যাপার।কে আস্থার বাবা?(রাইশা উপরে দাড়িয়ে দাড়িয়ে সব শুনছে)

কি যা তা বলছো?তুলি কেনো তোমার বাবাকে মারতে যাবে?অফিসার ওকে নিয়ে যান(আভি তাড়া দিয়ে)

আস্থা প্লিজ যাও।আর কিছুদিন পর তুমি সব জানতে পারবে।(আভি মনে মনে)

কেনো যাবো আমি?তোমার প্রেমিকা আমার বাবাকে মেরেছে।(আমি)

কোনো প্রমাণ আছে?(আভি)

সিসিটিভি ফুটেজ।এক মাস আগে যেইদিন আমার আমার বাবা খুন হয় আপনার প্রেমিকা সেখানে গিয়েছিলো।আর কোনো না কোনো ভাবে আমার মৃত্যুর সাথে আপনার প্রেমিকার হাত আছে।(আমি আভির সামনে দাড়িয়ে ওর চোখে চোখ রেখে)

এক মাস আগে? বিল্ডিংয়ের সিসিটিভি ফুটেজ?তার মানে এই মেয়ে কোনো ভাবে সেই মেয়ে তো না যাকে আমি খুঁজছি?(রাইশা মনে মনে)

একটা সিসিটিভি ফুটেজ কোনো ভাবেই প্রমাণ করতে পারে না যে তুলি খুনি। জাস্ট গেট আউট।(আভি চিৎকার করে)

একদম চিৎকার করবে না।তুলিকে নিচে ডাকো।নাহলে তুলিকে পুলিশ দিয়ে নিচে টেনে নিয়ে আসবো।(আমি)

তোমার সাহস তো কম না।আমার বাড়িতে দাড়িয়ে তুমি আমারই হবু বউকে টেনে আনবে বলবো।(আভি দাত চেপে চেপে)

অফিসার।আপনি আপনার কাজ করুন।(আমি আভির দিকে তাকিয়ে)

পরেই অফিসার গেলো তুলিকে নিয়ে আর সাথে গেলো মহিলা পুলিশ।

আস্থা বেশি বেশি করে ফেলছো।(আভি রাগে)

তোমার এই দুই দিনের প্রেমিকার জন্য কষ্ট হচ্ছে।আর উনি আমার বাবা ছিলো।যদিও পালিত বাবা।কিন্তু উনাকে বুঝার পর থেকেই বাবা বলে জেনে এসেছি।তুমি কিছুতেই তোমার প্রেমিকাকে বাঁচাতে পারবে না।
এই কথা বলতেই আভি আমার গালে একটা চড় মেরে বসলো।

আমি গালে হাত দিকে অবাক হয়ে আভির দিকে তাকিয়ে আছি।আভি আজ তুলির জন্য আমার গায়ে হাত তুললো।

পরেই আমার বাহু ধরে টেনে নিয়ে
তোকে বলছি না চুপ করতে।কথা কানে যায় না তোর।চুপ একদম চুপ এক্ষুনি বেরিয়ে যা আমার বাড়ি থেকে(আভি রাগে)

আমি যাবো না।(আমিও রাগে)

আস্থা।রাইশা এখানেই আছে।আর তুমি নিজের মুখে বলে দিলে ওকে সব।এখন তো তোমাকে ছাড়বে না।শেষ আমার সব প্ল্যান শেষ।(আভি মনে মনে)

সব গুলো ইডিয়েট।তারমানে কলি আর জিসানের মেয়ে আস্থা।বাহ!মেঘ না চাইতেই জল।ভালো।
বলেই রাইসা নিজের রুমে চলে গেলো।

আভি যেনো কাকে ফোন দিলো।কিছুক্ষণ পর পুলিশ অফিসার যখন তুলিকে যখন নিয়ে যাবে তখনই উনার ফোনে ফোন আসে।আর সাথে সাথেই অফিসার তুলিকে ছেড়ে দিলো।তুলি গিয়ে আভিকে জড়িয়ে ধরে নেকা কান্না করতে শুরু করে দিলো।

অফিসার।আপনি ওকে ছেড়ে দিলেন কেনো?(আমি অবাক হয়ে)

আমার স্যার ফোন দিয়েছে।বলেছে এইটা অ্যাকসিডেন্ট কেস।এইটা নিয়ে যাতে আর ঘাটাঘাটি না করি।সরি মিস আস্থা আমরা আর কিছু করতে পারবো না।
বলেই পুলিশ গুলো চলে গেলো।

কি হলো তুমি দাড়িয়ে আছো কেনো?দেখছো না আমার হবু স্ত্রী তোমাকে সহ্য করতে পারছে না(আভি বিরক্ত হয়ে)

আমি পাগলের মতো হাসতে শুরু করলাম,,,
আভি।আমার বাবা তখন মরে নি এখন মারা গেছে।তুমি মেরেছো আজ নিজের হাতে তার হত্যাকারীকে বাঁচিয়ে।আর সাথে সাথে আমাদের সম্পর্ক যেটুকু বেচেঁ ছিলো তাই মেরে ফেলেছো তুমি।আভি একটা কথা রাখবে আমার,,,,তোমার বেনিফিটস্ স্ত্রী হিসেবে।আমি মারা গেলে আমার লাশও দেখবে না।
বলেই ডক্টর জয়কে নিয়ে কাদতে কাদতে বেরিয়ে আসলাম।

আস্থা।(আভি করুণ স্বরে)


আপনি এই জন্য আমাকে ওই বিল্ডিংয়ে যেতে বলেছিলেন।যাতে আপনি খুন করলে দোষ আমার উপর চাপে?(তুলি রেগে)

তোমার আর কোনো উপায় আছে আমার কথা শুনা ছাড়া!(রাইশা নিজের রুমের সোফায় বসে বসে)

আপনি,,,!আপনার কারণে আভি আমাকে সন্দেহ করেছে।আমি তো ওকে বলেছি আমি এক ফ্রেন্ডের বাড়ি গিয়েছিলাম।পড়ে একটু শান্ত হয়েছে।(তুলি)

হা হা(শয়তানী হাসি দিয়ে)।তোমার কি মনে হয় আভি এতটাই বোকা।আভি ইচ্ছে করে আস্থাকে এই বাড়ি থেকে দূরে রেখেছে যাতে আস্থা আমার নজর থেকে দূরে থাকে।আর আমি যাতে টের না পাই আস্থা কলি আর জিসানের মেয়ে।(রাইসা)

কি আস্থা কলি আর জিসানের মেয়ে?কিন্তু কলি আর জিসান তো রাইসাকে দত্তক নিয়েছে।(ঈশানি)

রাইসা ওর হাতের কাছে থাকা পানির গ্লাস ঈশানির কপাল বরাবর ছুঁড়ে মারে।আর তা গিয়ে সোজা ঈশানির মাথায় লাগে।

আহহ!আমাকে কেনো মারলে?(ঈশানি কপালে হাত দিয়ে)

তুই আমাকে আগে বলিস নি কেনো?কলি আর জিসান আস্থাকে দত্তক নিয়েছে।(রাইশা ভয়ানক ভাবে)

আমি ভেবেছিলাম।এইটা একটা সাধারণ ব্যাপার।(ঈশানি অবাক হয়ে)

তোমাকে এই বাড়িতে বিয়ে করিয়ে এনেছি।যাতে তুমি আমাকে সব খবর দাও।সাধারণ কি না অসাধারণ তা আমি ঠিক করবো!(রাইসা)

ঈশানি চুপ করে আছে।

এখানে না দাড়িয়ে বেরিয়ে যাও।(রাইসা)

পরেই ঈশানি বেরিয়ে গেলো।

তোমাকে(তুলি) কি আলাদা ইনভিটেশন দিতে হবে।দূর হও আমার চোখের সামনে থেকে।(রাইসা)

পরেই তুলিও বেরিয়ে গেলো।


সেদিন যখন আভিকে ফলো করলাম তখনই জানতে পারলাম।কলি আর জিসানের মেয়ে জীবিত।আর সে মেয়েকে একমাত্র ওই লোকটা(পালিত বাবা)আর আভি জানে।কিন্তু আভি কিছুতেই বলবে না।তাই ওই লোকটার কাছে গেলাম। ওই লোকটা মরে গেলো কিন্তু কিছু বলে গেলো না।থাক সমস্যা নেই এখন তো আমি জানি আস্থা সেই মেয়ে।
বলেই রাইসা শয়তানী হাসি দিলো।


রুমে এসে আভি কাউকে ফোন দিলো।
আমাকে আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে?(আভি ফোনে)

স্যার।আমরা যথা সম্ভব চেষ্টা করছি।কিন্তু রাইসা অনেক চালাক।ওর বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করা কঠিন।একটু সময় লাগবে।

সময়ই আমার কাছে নেই।যা করার তাডাতাড়ি করো।
বলেই আভি ফোনটা কেটে দিলো।

রাইসা জেনে গেছে আস্থার কথা এখন কি হবে?জিসান আঙ্কেল তো আস্থাকে প্রোটেক্ট করবে বলেছে।তবুও রাইসাকে ধরা না পর্যন্ত কিছু করা সম্ভব না।(আভি চিন্তায় মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে)


চলবে,,,,