Mental Lover Part-11+12

0
330

#Mental_Lover
পর্ব:১১
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম

__________________________________
সকালে ঘুম থেকে উঠে ইশিতা, নিস্তব্ধ পরিবেশ উপভোগ করছে,, চারদিকে একদম চুপচাপ,,,, কারো কোনো শব্দ নেই,,,,, ইশিতার মন ভালো হয়ে যায়,,। আরিয়ান ইশিতা কে পিছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরে বলল।

আরিয়ান: Good morning dear.
ইশিতা:কত সুন্দর পরিবেশ তাই না,,।
আরিয়ান: তোমার পছন্দ হয়েছে।
ইশিতা: হুম।
আরিয়ান: তাহলে ঠিক আছে। আচ্ছা এখন যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসো,,,,।
ইশিতা:আর আপনি।
আরিয়ান:আগে তুমি যাও তার পর আমি ফ্রেশ হব।
ইশিতা: হুম,,,,।
আরিয়ান ইশিতার কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দেয়।

অনেকক্ষণ ধরে আরিয়ান অপেক্ষায় আছে, ইশিতার বাইরে আসার,,আজ আরিয়ান ইশিতা কে নিয়ে বাইরে যাচ্ছে,,, আরিয়ান চায় ইশিতা সব কিছু চিনোক জানোক,,,ও এই শহরে নতুন,,ওর সব কিছু জানা প্রয়োজন, তাই আজ আরিয়ান অফিস অফ রেখে ইশিতা কে সময় দেওয়ার কথা ভাবছে।
কিছুক্ষণ পর ইশিতা বাইরে আসে।

আরিয়ান:এত লেট কেন ( রাগ করে)।
মূহুর্তের মধ্যে ইশিতার মুখ গোমড়া হয়ে যায়।
আরিয়ান: না আমার কথার মানে,, কখন থেকে অপেক্ষা করছি,,,,এসো।

আরিয়ান ইশিতা দুজনে গাড়িতে বসে। আরিয়ান ইশিতা কে পুরো শহর ঘুরিয়ে দেখায়,, ইশিতা পুরো বাচ্চাদের মত আচরণ করছিল,,, এতটা খুশি আরিয়ান ইশিতা কে আসার পর কখনও দেখেনি। ইশিতার মুখে হাসির ঝিলিক যেনো কমছেনা না,,, ইশিতা নতুন শহর আশেপাশের সব কিছু সম্পর্কে জানতে পারছে ভেবে খুশি,,,,,,,।

হঠাৎ আরিয়ান এর ফোন বেজে উঠল। অফিস থেকে ফোন আসে,,, আরিয়ানের একটা ফাইল আজকে ক্লাইন্ট দের দেওয়ার কথা কিন্তু আরিয়ানের একদম মনে ছিল না।

আরিয়ান অফিসের সামনে নেমে ড্রাইভার কে বলে ইশিতা কে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে ফাইল নিয়ে আবার আসতে।ড্রাইভার ইশিতা কে বাড়িতে পৌঁছে দেয়,,,, তার পর নিশা ড্রাইভার কে একটা ফাইল দেয়,,,,, ইশিতা লক্ষ্য করে আরিয়ান বলেছিল নীল রঙের ফাইল নিয়ে আসতে কিন্তু উনি কালো ফাইল নিয়ে চলে গেল।
ইশিতা:আরে উনি তো চলে গেছে,,,। ইশিতা নিশা কে ডাকে,, কিন্তু নিশা রুমের দরজা লক করে কানে হেডফোন লাগিয়ে শুয়ে আছে তাই কোনো শব্দ বা কথা ওর কানে পর্যন্ত পৌঁছায় না।

ইশিতা: আচ্ছা এটা কি আমি দিয়ে আসব,, কিন্তু আমি তো আরিয়ানের অফিসের ভেতরে যাইনি।কি করে বুঝবো আরিয়ান কোথায় থাকবে। কিন্তু এখন না গেলে তো হবে না এটা তো দেওয়া খুব জরুরি।

ইশিতা আর কিছু না ভেবে আরিয়ানের অফিসে যাওয়ার জন্য বের হয় কিছুক্ষণ পর অফিসে পৌঁছে যায়,,, ইশিতা ভেতরে রিসেপশনে ,,যায়।
ইশিতা: আচ্ছা আরিয়ান এর কেবিন কোন টা।
নিধি: তুমি কে আর স্যার কে নাম ধরে ডাকছ,, কেন।

ইশিতা: আমি তো ওনাকে এটা বলেই ডাকি,,।
অনিক:আরে নিধি,,এই মেয়ে নাকি আরিয়ান স্যার এর হবু স্ত্রী। (হাসতে হাসতে)।
নিধি: কি,,,, (হাসতে হাসতে),এই মেয়ে তুমি আর স্যার এর হবু স্ত্রী এটা হাস্যকর।
সবাই ইশিতা কে নিয়ে মজা করছে,,,।
অনিক: তুমি যদি স্যার এর হবু স্ত্রী হও তাহলে আমি হলাম আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কেমন (হাসতে হাসতে)।
আরিয়ান অনেকক্ষণ ধরে বাইরে হাসাহাসির শব্দ শুনতে পায়।
আরিয়ান বাইরে এসে দেখে ইশিতা,,,আর ইশিতা কান্না করছে।
আরিয়ান: কি হচ্ছে এসব। ইশিতা তুমি এখানে,,।
নিধি:স্যার এই পাগলের মত দেখতে মেয়ে টা নাকি আপনার হবু স্ত্রী।
আরিয়ান ঠা*স করে চ*ড় মা*রে, উপস্থিত সবাই হতবাক হয়ে গেলাম।
নিরব: তুই ওকে নিয়ে ভেতরে যা আমি দেখছি।
আরিয়ান: তোমাকে যেনো আর এই অফিসে না দেখি,,,।
নিধি: কিন্তু স্যার ,,,,,,,।
আরিয়ান ইশিতাকে নিয়ে ভেতরে যায়।
নিধি রেগে অফিস থেকে বের হয়ে যায়।

নিরব:তা শুনলাম আমাদের অফিসে নাকি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কাজ করে বাহ্ বাহ্ কি সৌভাগ্য আমাদের,,,তা ভাই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কই আপনি।
সবাই অনিক কে দেখিয়ে দেয়।
নিরব: আপনাকে আর কাজ করতে হবে না স্যার,,,, আপনি গিয়ে আমেরিকার কাজ সামলান।
আরিয়ান ইশিতাকে কে নিজের কেবিনে নিয়ে গিয়ে নিজের চেয়ারে বসায় আর ওর সামনে ফ্লোরে আরিয়ান বসে। ইশিতা সমানে কান্না করেই যাচ্ছে,,,।
আরিয়ান: ইশিতা প্লীজ কেঁদ না,,,,,, আচ্ছা তুমি কেন একা আসতে গেলে আমাকে বলতে আমি ড্রাইভার পাঠিয়ে দিতাম।

ইশিতা একটা ফাইল বের করে আরিয়ান কে দেয়।
ইশিতা:এটা দেওয়ার জন্য,,( কেঁদে কেঁদে )
আরিয়ান:আচ্ছা প্লীজ কান্না কর না।
ইশিতা: ওই আপু এমন কেনো বললেন।
আরিয়ান ইশিতাকে জড়িয়ে ধরে।
আরিয়ান কাঁদানোর ফল পাবে নিধি,,,,, (দাঁতে দাঁত চেপে)।
_____________________________________
সন্ধ্যা বেলায় নিধির হাত পা বাঁ*ধা অবস্থায় কেউ ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
নিধি: আপনি,,,,,,,,।

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,
চলবে…………..।

#Mental_Lover
পর্ব:১২
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম
____________________________

আপনি এখানে।
আরিয়ান: তুই খুব বড় ভুল করেছিস,যে ইশিতা কে কাঁদিয়ে,,, এখন এর ফল তো পেতেই হবে,,।
নিধি:ওই মেয়ের জন্য আপনি আমাকে এভাবে নিয়ে এসেছেন। আমি পুলিশের কাছে যাব,,,।
আরিয়ান: ওরা আমার কিছুই করতে পারবে না।
নিধি: ঠিক আছে,,, কিন্তু আমি তো করতেই পারব,,, আমি আপনার ইশিতা কে শে*ষ করে দেবো।
আরিয়ান: আবার ভুল করলি,,, আমি এই মাত্র ভেবেছিলাম যে ছেড়ে দেব তোকে কিন্তু এই কথা টা এখন তোর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিধি:মা,,,মানে।

আরিয়ান একটা শ*য়*তা*নী হাসি দেয়।
_____________________________________

আরিয়ান বাড়িতে ফিরে যায় ।
ইকবাল হোসেন: কোথায় ছিলি তুই এতক্ষন ধরে।
আরিয়ান: একটু কাজ ছিল তাই বাইরে গেছিলাম।
ইকবাল হোসেন: ঠিক আছে এখন গিয়ে রেস্ট নে।

আরিয়ান: হুম,,,।
আরিয়ান সবার আগে ইশিতার রুমে গিয়ে ওকে দেখে আসে,, তার পর নিজের রুমে চলে গেল।
পরের দিন সকালে আরিয়ান বেরিয়ে পড়ে আর সবাই কে বলে যায় আসতে ওর লেট হবে।

সাবিনা সোফায় বসে বসে পানসুপারি তৈরি করে খাচ্ছে, তখন হঠাৎ একটা লোক এসে বললো
পেয়াদা:ম্যাডাম কেউ আপনার সাথে দেখা করতে এসেছেন।
সাবিনা: ঠিক আছে পাঠিয়ে দে

আরিয়ান ভেতরে আসে।
সাবিনা: আপনি কে।
আরিয়ান: আরিয়ান চৌধুরী।
সাবিনা:ও আচ্ছা,, তাহলে আপনি হলে আরিয়ান।তো হঠাৎ এখানে, অবশ্য আমি ভাবছিলাম আপনার সাথে দেখা করব।
আরিয়ান: তাহলে তো ভালোই,, আপনার কষ্ট হল না আমি চলে এলাম,, দেখা করতে,যাই হোক এখন আসল কথায় আসি।
সাবিনা: কেনো না,,,,,।
আরিয়ান: আমি সুজা বলে দিচ্ছি,,, ইশিতার পেছন ছেড়ে দিন।কারণ ও এখন আমার।
সাবিনা: তুমি কি আমাকে হু*ম*কি দিচ্ছ নাকি।
আরিয়ান:এটা আপনি রিকোয়েস্ট বা হু*ম*কি যেটা ইচ্ছে ভাবতে পারেন।
সাবিনা: তাহলে শুনো, ওকে তো আমি ছাড়ব না।দেখব আমি তুমি কি করো।
আরিয়ান: তাহলে এবার দেখুন আমি ঠিক কি কি করতে পারি।

আরিয়ান চলে যায়।
সাবিনা: বাহ্, কি আশিক জুটিয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ নেই, তোকে এখানেই আসতে হবে আর আমি তোকে বিক্রি করে টাকা আনব অনেক টাকা (অট্টহাসি হেসে)।
____________________________________
আরিয়ান আর নিরব আজকে,, বিজনেস এর কাছে,,, শহরের বাইরে যাবে, আরিয়ান নিশা কে বলে যায় ইশিতার খেয়াল রাখতে। বিকেলে আরিয়ান আর নিরব বেরিয়ে পড়ে।
তানজিম এসব কথা জানতে পেরে,প্লেন করে আজকে ইশিতা কে নিয়ে যাবে।

তানজিম: আজকে তোকে দিদির কাছে নিয়ে আসব,,।
সন্ধ্যা বেলায় ইকবাল হোসেনের ঘুমের সমস্যা হওয়ার কারণে ওষুধ খেয়ে ঘুমাতে যায়,সে আজকেও প্রতিদিনের মত ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে,,নিশা আর ইশিতা একসাথে গল্প করছিল তখন বাড়ির বেল বেজে উঠল,,নিশা গিয়ে দরজা খুলে দেয়,,কিছু লোক আসে,নিশা কে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় ।
নিশা:আরে,,,কারা আপনারা,,,,,।
তানজিম: ইশিতা ,,ওই ইশিতা বের হ।
ইশিতা তানজিম এর গলা শুনে দৌড়ে বের হয়,,,।
ইশিতা:মামা,,,,।
তানজিম ইশিতার চুলের মু*ঠি শ*ক্ত করে ধরে বলল।
তানজিম:চল এবার,,তোর কপালে অনেক দুঃখ আছে ।
ইশিতা:ছাড় আমাকে আমি যাব না,,,, (কাঁদতে কাঁদতে)।

তানজিম ইশিতা কে নিয়ে চলে গেল। নিশা কিছু বুঝতে পারছে না কি করবে,, আরিয়ান কে ফোন করে সব কিছু বলে দেয়, আরিয়ান তো রেগে আগুন হয়ে যায়,, তাড়াতাড়ি নিরব কে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দেয়ি, আরিয়ানের বাড়িতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে,,ভোর হয়ে আসে

আরিয়ান: নিশা,,,,,,।
নিশা আরিয়ানের গলা শুনে বাইরে বের হয়, দৌড়ে এসে আরিয়ান কে জড়িয়ে ধরে।

নিশা: ভাইয়া,, (কাঁদতে কাঁদতে)।
আরিয়ান: কাঁদিস না,, আমরা তো এসে গেছি।
নিরব:হ্যা নিশা তুমি কেঁদো না,,।
আরিয়ান: এখন বল কি হয়েছে,,,,, ইশিতা কোথায়।

নিশা প্রথম থেকে সব কিছু আরিয়ান কে খুলে বলল।
আরিয়ান সিদ্ধান্ত নেয়,আজকেই ও ইশিতা কে নিয়ে আসবে, যেভাবেই হোক।
নিরব আরিয়ান এর সাথে যেতে চায়, কিন্তু আরিয়ান না করে দিল।

নিরব: কি বলছিস তুই একা যাবি মানে।
আরিয়ান:হ্যা,,, তুই এখানে মামা আর নিশার খেয়াল রাখবি। আমি ইশিতা কে নিয়ে আসব।
নিরব: তুই না বললি ওকে ভালোবাসিস না,,। হায়রে,,, তুই লুকিয়ে রাখতে পারি না ,, তুই ওকে ভালবাসিস।
আরিয়ান: সত্যি কী ,,আর যদি এটাই হয় তাহলে তো আমার ওকে লাগবে,,,।

_______________________________________

ইশিতা:ছাড় আমাকে।
সাবিনা:তোর সাহস হলো কি করে,,, পালানোর,,,,।
ইশিতা:যা করেছি বেশ করেছি,,,, তুমি খুব খা/রাপ মামুনি।দেখ আরিয়ান এসে আমাকে নিয়ে যাবে।
সাবিনা :দেখব,, তোর আরিয়ান তোকে কি করে নিয়ে যায়,,,। এখন শুন তুই,,,যদি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করিস তাহলে তোর বোনের কপালে দুঃ/খ আছে।
ইশিতা: মানে,,,,,।
সাবিনা: আমি তোর বোন কে বিক্রি করে টাকা আনব,,,,।
ইশিতা:মামুনি ,,নেহা তোমার মেয়ে হয়,,,।
সাবিনা: না,, টাকা আমার কাছে সব কিছু,, এখন তুই ভেবে দেখ কি করবি।

ইশিতা: এবার আমি কি করবো।
,,,,,,,,,,,,,
বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন।
,,,,,,,,,,,,,
চলবে………………।