#Psycho_behind_the_mask🎭
#Part_4(last part)
#Writer_Nusrat🌷
আরিশা একটা একটা করে ড্রেস দেখেই যাচ্ছে বাট একটা ড্রেস ও পছন্দ হচ্ছে না তার৷ শেষে একটা ড্রেস পছন্দ হলো৷ সেটাই নিয়েই ট্রায়াল রুমে যাচ্ছে৷ ট্রায়াল রুমে ঢুকতে যেতেই কেউ আরিশার ওরনা ধরে টান মারলো৷ আরিশা পিছনে তাকিয়ে দেখলো একটা ছেলে শয়তানী হাসি দিয়ে ওর ওরনা ধরে রেখেছে৷ আরিশা কিছু না বলে ছেলেটির কাছ থেকে ওরনাটা টান মেরে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো৷
একজোড়া চোখ একেবারে রক্তিম লাল চোখ করে তাকিয়ে আছে৷ ছেলেটির দিকে৷
প্রায় সবারই শপিং শেষ এখন শুধু আরিয়ানের জন্য অপেক্ষা করছে সবাই৷ মানুষ কতটা ইরেসপন্সিবল হলে এমনটা করে৷ প্রায় এক ঘন্টা পর আরিয়ানের দর্শন মিললো৷রিফাত রেগে এগিয়ে গেলো আরিয়ানের দিকে৷
হেই কোথায় গিয়েছিলিস জানিস কত সময় ধরে ওয়েট করছি৷
স্যরি ভাইয়া আমার এক ফ্রেন্ড এসেছিলো ওর সাথেই দেখা করতে যাচ্ছিলাম৷ নাথিং এল্স৷
ঠিকাছে চল৷
আরিশা এগিয়ে গেলো আরিয়ানের দিকে ওর চোখ ছলছল করছে,,,দাড়ান আরিয়ান আপনার হাতে এই চোটটা কিসের৷ রক্ত পড়ছে তো এখন থেকে৷ এতটা কেয়ারলেস কেন আপনি৷ কীভাবে ব্যথা পেলেন আপনি৷ কথাটা বলে আরিশা কেঁদে ফেললো৷ কেন কাঁদছে সেটা নিজেও জানেনা আরিয়ানের ক্ষত দেখে আরিশার বুকের ভিতরটা কাঁপছে৷ সে তার ব্যাগ থেকে একটা টিস্যু বেড় করে আরিয়ানের হাত চেপে ধরলো৷ আরিয়ান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে আরিশাকে৷ যেন কিছু পাওয়ার তৃপ্তি অনুভব করছে৷ আরিশার কাঁদা দেখে সবাই অবাক হয় তাকিয়ে আছে৷
কী রে তোর হাতে কী হলো??
.
ও কিছু না আসার সময় লেগে গিয়েছিলো৷
🌅🌅🌅🌅
বিকেলে ছাঁদে দাঁড়িয়ে আছে আরিশা আর আরিয়ান৷ আরিয়ান আরিশার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর আরিশা দূর আকাশ দেখছে৷
আরিয়ান অনেক ভেবে চিন্তে বললো,,আচ্ছা তুমি আমার ক্ষত দেখে কাঁদছিলে কেন??
আরিশা আরিয়ানের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,,
আসলে তখন কেন আমি এমন করেছিলাম সেটা আমি নিজেও জানিনা৷ শুধু এটাই জানি আপনার কিছু হলে আমি সহ্য করতে পারবোনা৷ কেমন একট ফিল হয় আপনাকে দেখলে৷ যেটা আর কখনো হয়নি৷ কেমন যেন টান অনুভব হয়৷ আমার কী মনে হয় জানেন আমাদের মধ্যে অনেক গভীর সম্পর্ক রয়েছে যেটা আমি কি়ংবা আপনি কেউই টের পাচ্ছিনা৷ জানেন আমি না আপনাকে প্রতিদিন স্বপ্নে দেখি৷ দেখি যে আপনি আমাকে থ্রেট দিচ্ছেন বিয়ে করার জন্য
আরিশা কী বলছে সেটা ও নিজেই বুঝতে পারছেনা৷ যেন এক অজানার জগতে হারিয়ে গেছে৷ আরিশার হুস আসলো আরিয়ানের কথায়৷
আমি তোমাকে বিয়ে করার পর কী??
আরিশা জিভে কামড় দিয়ে বললো,, ও কিচ্ছু না৷ ও নিজেই বুঝতে পারছেনা স্বপ্নের সেই ছেলেকে কেনো সে আরিয়ান ভাবলো৷
আরিয়ান এখনও এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে৷ আর মুখে লেগে আছে সেই মিষ্টি হাসি৷ হঠাৎই আরিশার চোখ গেলো আরিয়ানে বুকে আজও কিছু একটা দেখা যাচ্ছে বুকে৷ আরিশা আর কিছু না ভেবে টান মেরে শার্ট খুলে ফেললো৷ আরিয়ানের বুকে জ্বলজ্বল করে উঠছে আরিশার নাম৷
আরিশা মুখে হাত দিয়ে দু কদম পিছিয়ে গেলো৷
কী হলো পিছিয়ে গেলে কেনো৷ তুমিইতো দেখতে চাইছিলে৷
এটাতো আমার নাম৷ কিন্তু আপনার বুকে কেনো৷
কারণ আমার বুকে শুধু তুমিই বিরাজ করে আছো যে৷
এসব কী বলছেন আপনি??আর ট্যাটুটা দেখেতো অনেক পুরনো মনে হচ্ছে৷ কিন্তু আপনার সাথে আমার দেখা হলো তিন দিন আগে৷
হুম সেটা ঠিক৷জানো আরু আমি তোমাকে কখন দেখেছিলাম প্রথম,,তুমি সেদিন ভার্সিটির সামনে দাড়িঁয়ে বান্ধবীদের নিয়ে ফুচকা খাচ্ছিলে৷ তোমার মুখ নাক লাল হয়ে গিয়েছিলো৷ আমি সেখান দিয়েই নিজের কারে করে বাড়ি ফিরছিলাম৷ তোমাকে দেখে খুব ভালো লেগেছিলো আমার৷এরপর থেকে প্রায়ই আমি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তোমায় দেখতাম৷ ধীরে ধীরে এই ভালো-লাগা ভালোবাসায় রুপান্তরিত হলো৷ আমি তোমাকে ছাড়া কিছুই বুঝতাম না৷ সব সময় তোমাকে নিয়ে ভাবতাম আমি৷ তোমার আচে পাশে কাউকে দেখলেও আমার সহ্য হতোনা৷ আর যারা তোমার সাথে অসভ্যতামি করে তাদের তো না ওই৷
তার মানে আপনিই সে যে আমাকে বাজে কথা বলে,বাজে দৃষ্টিতে তাকায় তাদের অবস্থা খারাপ খারাপ করে ছাড়তেন৷ আচ্ছা সব তো ঠিক আছে আাট আপনি কেনো আমায় বলেননি যে আপনি আমায় ভালোবাসেন৷
.
কারণ আমি চাইছিলাম তোমার আমার প্রতি ফিলিংস আসলে তারপর বলবো৷ আর এসেছে বলেই বলিছি৷ আমি কখনো ভাবিনি তোমায় এতো তারাতাড়ি পেয়ে যাব৷ কিন্তু দেখো কিভাবে জেনো সব ম্যাজিক হয়ে গেলো৷
.
আপনি সাইকো৷ আপনি উপর থেকে যেরকম সাদা ভিতর থেকে তেমনি কুৎসিত৷ আপনার প্রতি আমার কোনো ফিলিংস নেই৷ আমার সব ফিলিংস আরেকজনের প্রতি৷
.
আরিশার কথা শুনে রাগে হাত মুঠো করে নিয়েছে আদনান৷ তারপর মুখে একপ্রকার হিংস্রতা ভাব ফুটিয়ে বললো,,কে সে যার প্রতি তোমার সব ফিলিংস৷
.
তাকে কখনো দেখিনি আমি৷ ভার্সিটিতে গেলে সে সবসময় আমায় ফুল দিয়ে পাঠাতো৷ তাও আমার পছন্দের ফুলগুলো৷ ফুলের সাথে চিরকুটও থাকতো৷ ওই অজানার একেকটা চিরকুট পড়ে আমি হারিয়ে যেতাম৷ কি সুন্দর করে লিখতো৷ ওর সব চিরকুট এখনো আমার ডায়েরির ভিতরে আছে৷ যেগুলো আমি প্রায় রাতে বেড় করে দেখি৷ ছেলেটার জন্য এখনো আমার মন আকুপাকু করে৷ যদি একবার দেখতে পারতাম তাকে৷
.
ফুলের মধ্যে থাকতো, গোলাপ,বেলী,ডালিয়া৷ আর চিরকুট থাকতো বিভিন্ন কালারের৷
আরিশা আরিয়ানের কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে৷
.
এসব কী বলছেন আপনি৷ আপনি কী করে জানলেন৷
.
কারণ ওসব আমিই দিতাম তোমাকে৷
.
বিশ্বাস করিনা আমি৷
.
তাহলে কীভাবে বিশ্বাস করবে চিরকুটে যা লিখা ছিলো সেগুলো বললে৷ তাহলে শুন আমি বলছি৷
আরিয়ান এক এক করে ওকে সেই চিরকুটে লিখা বাক্য গুলো বললো৷
আরিশা এখনও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে৷
.
আমি আপনাকে তারপরও মানবো না৷
.
কেনো মানবেনা৷
.
কারণ আপনি একজন সাইকো৷
.
হ্যা আমি সাইকো কিন্তু আমি তো কাউকে খুন করিনি৷ সাইকো হয়েছি তাও তোমার জন্যে৷ আর এখন তুমিও আমায় মানবেনা৷
.
মানবো৷ আগে আপনাকে এসব ছেড়ে দিতে হবে৷ সাইকো বিহাইন্ড দ্যা মাস্ক কথাটা শুনলেই কেমন ভয় করে৷ আর আপনি ওতো সেম৷
.
তোমার জন্য আমি সব করতে পারি শুধু আমার সাথে থেকো৷ কথাটা বলে আরিয়ান আরিশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো৷ তারপর কানে কানে বললো তুমি যদি চাও তাহলে তেমার দেখা স্বপ্নের মতোও বিয়ে করতে পারি৷
.
আরিশাও একটু হেসে বললো,,তার আর দরকার নেই৷ আমার বাবা মা এমনিতেই বিয়ে দিবে৷
🌷🌷🌷🌷দুইবছর পর🌷🌷🌷🌷
আরিয়ান ওর ১ বছরের মেয়ে আতশিকে কোলে নিয়ে বসে আছে আর আরিশা নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে৷ আতশি আরিয়ানের কানে খামচি দিচ্ছে নাকে ধরে টানছে আর এসব আবার না করতে দিলে কান্না করছে৷ তাই আরিয়ান বাধ্য হয়েই ওর মেয়ের জ্বালা সহ্য করছে৷
আরিশা ঘুম থেকে উঠে ওদের কান্ড দেখে হেসে ফেললো৷ তারপর আতশিকে কোলে নিয়ে আরিয়ানের সারা মুখে হাত বুলিয়ে দিলো৷ আরিয়ানও হেসে আতশিকে আর আরুশিকে জড়িয়ে ধরলো৷
_____________সমাপ্ত___________