#you_are_only_my_queen
Faria Siddique
Part 39
আমি বলতে শুরু করলাম।
অতীত
এভাবে কেটে গেলো তিন মাস।
আমার ভাইয়ারা রুশা আর মেহেককে নিয়ে আর বিশাল আর ভাবিন সামিয়া আর সারাকে নিয়ে লন্ডন চলে গেল।
একদিন রুদ্র অফিস থেকে ফিরে দেখল সবাই আমার রুমে বসে আছে আর আমি বিছানায় শুয়ে আছি আর ডাক্তার আমাকে দেখছে।
ডাক্তার দেখে রুদ্র বিচলিত হয়ে পরল।
রুদ্রঃকি হয়েছে কি হয়েছে??(ভয় পেয়ে)
কথাঃবুঝতে পারছি না।হঠাৎ করেই মাথা ঘুরিয়ে পরে গেল।
রুদ্রঃকি বলছো!!!!! নিশ্চয়ই ঠিক করে খাওয়া দাওয়া করে না!!আমি অফিসে থাকি তাই এই অবস্থা। মা,বাবা তোমরা একটু খেয়াল রাখতে পারো না!!(রেগে)
ডাক্তারঃআরে আরে একটু শান্ত হোন।আর শুনুন দোকানে গিয়ে মিস্টি নিয়ে আসুন। আপনি বাবা হতে যাচ্ছেন।(মুচকি হেসে)
রুদ্র হা হয়ে তাকিয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে খুব খুশি হইছে।কিন্তু বাবা আর মায়ের মুখে কোন হাসি নেই।তারা খুবই চিন্তিত। তারা একমুহূর্ত দেরি না করে দাদুভাইয়ের কাছে চলে গেলো।
রুদ্রঃসত্যিই আমি বাবা হব!!!!!
আমিঃনা না মিথ্যা মিথ্যা হবা…
রুদ্রঃপাখি তুমি জানো না তুমি কতো বড় একটা খুশি দিলা আমাকে।
ডাক্তার এবার কাশি দিয়ে উঠে চলে গেল।
আমিঃতুমি সত্যিই পাগল।
রুদ্র কিছু না বলে আমার পেটে কান পেতে শুনতে লাগলো।
আমি ওর পাগলামি দেখে হাসতে হাসতে শেষ।
আমিঃআমার রাজা মশাই বাচ্চাদের এত ভালোবাসে?আমি তো জনতাম না??
রুদ্রঃকি বল!!!!তুমি জানো আমার একটা ফুটবল টীম করার ইচ্ছা আছে।
আমিঃআমার দিকটাও একটু চিন্তা কর??
রুদ্র এবার হেসে দিল।তারপর ফ্রেশ হয়ে এসে বাবা মার রুমে গেল।
কিন্তু গিয়ে যা শুনল তাতে রুদ্রের পায়ের নিচের থেকে মাটি সরে গেল।
রুদ্রঃবাবাবাবাবায়ায়ায়া.(চিৎকার করে)
সবাই রুদ্রকে দেখে ভয় পেয়ে গেলো।
রুদ্ররের চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো।
রুদ্র মাথায় চেপে ধরে বসে গেলো।
দাদুভাইঃরুদ্র শান্ত হ।
রুদ্রঃআমি এই বাচ্চা চাই না বাবা(কঠিন গলায়)
দাদুভাইঃ কি বলছিস এসব!!!!
রুদ্রঃআমি ঠিকই বলছি।আমি বাচ্চার জন্য আমার জানপাখিকে হারাতে পারব না বাবা।
কথাঃআদিপিতা বলেছে যে এর সমাধান আছে..
রুদ্রঃতোমরা এসব কিছু আমাকে আগে বলনি কেন?(রেগে চিল্লিয়ে)
কথাঃআমি বলতে চেয়েছিলাম।কিন্তু…….
রুদ্রঃকিন্তু কি মা???
দাদুভাইঃআমি মানা করেছিলাম।
রুদ্রঃযাই হোক আমি কালকে গিয়েই বাচ্চাটা এবোরেশন করিয়ে আসবো।
বলেই উঠে যেতে লাগলে দাদুভাই পিছন থেকে বলে উঠে
দাদুভাইঃতা যদি হয় তাহলে বাচ্চার সাথে ফারিয়াও মারা যাবে।
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে…
রুদ্রঃমানে………
দাদুভাইঃকারন তুমি হচ্ছো ভ্যাম্পায়ার কিং। আর তোমার ছেলে তোমার থেকেও শক্তিশালি হবে।আর তার শক্তি তার ভ্রুন অবস্থা থেকেই তার মধ্যে চলে যাবে।আর তাই তাকে মেরে ফেললে ফারিয়াও বাচবে না।
রুদ্রঃএখন আমি কি করবো?? (কান্না করতে করতে)
বাবাঃআমরা এখন আদিপিতাকে স্মরণ করবো।উনি বলেছেন এই সমস্যার সমাধান আছে.
রুদ্র আর কিছু না বলে আদিপিতাকে স্মরণ করলো। আর সাথে সাথেই আদিপিতার দেখা ফেল।
আদিপিতাঃআমি জানি তুমি আমাকে কেন ডেকেছো…
রুদ্রঃদয়া করে আমার থেকে আমার জানপাখিকে কেড়ে নিবেন না।এই সমস্যার সমাধান আমাকে দিন।
আদিপিতাঃ শান্ত হও। সময় আসলেই আমি সব বলবো। এখন শুধু তুমি ফারিয়ার সাথে থাকবে।ওকে কখনো কাছ ছাড়া করবে না।আর দেখবে যাতে কোন আঘাত না পায়।
আর সময় এলেই আমি সব বলবো। এখন যা বলেছে তাই শুন।আর হা আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করবো তোমার ফারিয়াকে বাচানোর জন্য।
এইবলেই তিনি চলে গেলেন……
রুদ্র কারোর সাথে কোন কথা না বলে রুমে চলে আসলো।
আমিঃকি হল রাজা মশাই চেহারার এই হাল কেন??
রুদ্র কোন কথা না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরল।
কিছুক্ষন পর আমার গলায় আমি চোখের পানি দেখতে পেলাম।
আমিঃরুদ্র তুমি কান্না করছো!!!!!!
রুদ্রঃকোন কথা না বলে চুপচাপ থাক।
আমি আর কোন কথা বললাম না।
আমি বুঝতে পারছি রুদ্র কোন কারনে কান্না করছে।
আমি এবার আলতো করে রুদ্রের গালে চুমু খেলাম।আর ওর বুকের সাথে মিশে গিয়ে বললাম।
আমিঃআমার বাবুর আব্বুকে কান্না মানায় না।
রুদ্র আর কিছু না বলে আমাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
আমিঃআচ্ছা রাজা মশাই আমার ছেলে হবে না মেয়ে হবে?
রুদ্রঃজানি না।
আমিঃতা এটা এত রেগে বলার কি আছে!!
রুদ্রঃদেখ পাখি আমি এখন ঘুমাব আর তুমিও ঘুমাবে।
আমিঃনা আমি এখন ঘুমাব না আর তুমিও ঘুমাবে না।
রুদ্র এবার রাগী চোখে আমার দিকে তাকাল।
আমি ভয় পেয়ে গেলাম।
আমিঃআচ্ছা আচ্ছা এখন তুমিও ঘুমাবে আর আমিও ঘুমাব।
রুদ্রঃগুড।
এই বলে রুদ্র ঘুমিয়ে পরল।আমিও ঘুমিয়ে পরলাম।
in london
ছোটভাইয়াঃভাইয়া ভাইয়া তুমি কই??
বড়ভাইয়াঃকিরে কি হয়েছে?
ছোটভাইয়াঃআমাদের বনু মা হতে চলেছে।(খুশিয়ে হয়ে চিল্লিয়ে)
বড়ভাইয়াঃকি বলছিস!!!!!
ছোটভাইয়াঃহুম।
বড়ভাইয়াঃমেহেক রুশা কই তোমরা?
ভাইয়ার ডাক শুনে সবাই আসলো।
মেহেকঃকি হয়েছে?
বড়ভাইয়াঃতারাতারি সব কিছু গুছিয়ে নাও আমরা কালকেই বাংলাদেশে যাব।
রুশাঃকিন্তু হঠাৎ করে কেন?
ছোটভাইয়াঃআরে তোমরা মামি হবে…
রুশা আর মেহেকঃমানে!!!!!!!
ছোটভাইয়াঃমানে ফারিয়া মা হতে যাচ্ছে।
রুশা আর মেহেকঃকিইইইইইইইইইইই!!!!!!!!!
বড়ভাইয়াঃকি হলো এভাবে চিল্লাচ্ছো কেন??
রুশা আর মেহেকের মুখে ভয়ের ছাপ।
রুশাঃনা কিছু না।আমরা সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছি।
ছোটভাইয়াঃহুম যাও।
এই বলে ওরা নিজেদের রুমে চলে গেলো।
মেহেকঃকি হবে এবার!!ফারিয়ার যদি কিছু হয়ে যায়?ভাইয়া কি জানে ব্যাপারটা?
হায় আল্লাহ আমি এখন কি করবো।
রুশাঃকিচ্ছু করার নাই।শুধু আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে যাতে ফারিয়ার কিচ্ছু না হয়।
মেহেকঃ হুম।
in bangladesh
সকালে
আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি রুদ্র সোফায় বসে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে
আমিঃকি ব্যাপার! তুমি অফিসে যাও নাই??
রুদ্রঃও তুমি উঠে গেছ।চলো ফ্রেশ হয়ে নিবে?
আমিঃহুম যাচ্ছি কিন্তু তুমি অফিসে যাও নাই কেন?
রুদ্রঃআজ থেকে আমি আর অফিস যাবো না।অফিসের সব কাজ বাড়ীতে বসে করবো আর তোমাকে টাইম দিব।
আমি অবাক হয়ে বললাম
আমিঃকি বলছো কি!!!আমি কোন ছোট বাচ্চা না যে আমাকে দেখে রাখতে হবে!!!!
রুদ্রঃতোমাকে আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি।চুপচাপ আমি যা বলছি তাই কর।যাও ফ্রেশ হয়ে এসো।(ধমক দিয়ে)
আমি আর কোন কথা না বলে ফ্রেশ হয়ে আসলাম।
ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি রুদ্র আমার জন্য খাবার নিয়ে বসে আছে।
আমি অবাক হলেও কিছু বললাম না।কারন আমি বুঝতে পারছি যে রুদ্র কোন কারনে খুব বেশি রেগে আছে।তাই আমি আর কিছু না বলে রুদ্রের পাশে গিয়ে বসলাম।
রুদ্রঃদেখি হা কর…
আমি হা করলাম আর রুদ্র আমাকে খাইয়ে দিতে লাগলো।
আমিঃআর খাব না।
রুদ্রঃআর একটু পাখি।
আমিঃনা আমি আর খেলেই বমি করে দিব।
রুদ্রঃআচ্ছা আর খেতে হবে না।আর আজকে তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
আমিঃকি??
রুদ্রঃউহুম এখন না।সময় হলেই দেখবে….
আমিও আর কিছু বললাম না।
চলবে…………..