অত্যাচারী বউ পর্ব-০৩

0
1546

অত্যাচারী বউ
লেখকঃ আবু সাঈদ সরকার
পর্বঃ ৩

মায়াঃ আকাশ এই কথাটা বলবে সেটা আমি কল্পনাও করি নি…

আকাশঃ মায়া আমি জানি তুমি আমাকে সন্দেহ করছো….

মায়াঃ আকাশ জানলো কীভাবে আজব তো ( মনে মনে )

আকাশঃ মায়া আমি লক্ষ্য করেছি তুমি যখন আমার দিকে তাকিয়েছো তখন সন্দেহ ভরা চোখ নিয়ে আমি কী তোমায় ভালোবেসে ভুল কিছু করে ফেলেছি…

মায়াঃ আকাশ তুমি যেটা ভাবছো সেটা কিন্তু মোটেও আমি ভাবি নি আর আমি যদি তোমাকে ভালো নাই বাসতাম তাহলে তোমার সঙ্গে ডেট এ আসতাম না…

আকাশঃ আমি বিশ্বাস করতে পারছি না তুমি অনেকটা আগের থেকে চেনজ হয়ে গেছো আর এখন আগের মতো রাগ ও করো না…

আচ্ছা ছেলেটাকে কবে ডিভোর্স দিচ্ছো…

মায়াঃ ডিভোর্স এর কথাটা শুনে মনে হচ্ছিলো আমি আমার জীবন থেকে অনেক বড় কিছু একটা হারিয়ে ফেলতে যাচ্ছি…

মায়াঃ ছয় মাসের আগে সম্ভব না…

আকাশঃ ছয় মাস আমার পক্ষে সম্ভব না আমার একটা বন্ধু আছে সে ১০ দিনের মধ্যে ডিভোর্স পেপার রেডি করে নিয়ে আসবে তুমি ছেলেটাকে বলো যাতে কোন রকম ঝামেলা না করে.


মায়াঃ আচ্ছা বলেই বাসায় ফিরে আসলাম…

বাসায় ফিরে এসে মনে হচ্ছিলো তানিশা যা বলেছে সব মিথ্যা ও আকাশকে সহ্য করতে
পারে না বলে আমাদের যাতে ব্রেকআপ হয়ে যায় তাই এমনটা বলেছে…

কিন্তু সাঈদ গেলো কথায়….

সাঈদঃ মায়ার পছন্দের সব রকম খাবার বানিয়ে রুম এ নিয়ে আসলাম….

সাঈদঃ এই দেখুন আপনার পছন্দের সব রকমের খাবার নিজের হাতে বানিয়ে নিয়ে এসেছি খেয়ে বলুন কেমন হয়েছে….


মায়াঃ কই দেখি….

কয়েকটা খেয়ে বাহ অনেক ভালো বানিয়েছেন সব গুলো আমার জন্য

সাঈদঃ হ্যা…

মায়াঃ খাওয়া শেষ করে কথাটা বলবো নাকি বলবো না সেটাই ভাবছি তবুও বলেই ফেললাম…

শুনুন আগামী দশ দিনের মধ্যে আমাকে আপনার ডিভোর্স দিতে হবে…

সাঈদঃ কথাটা শুনে অনেকটা কষ্ট পেয়েছি আমার কোন ভুলের জন্য আমার লাইফটা এমনটা হয়ে গেছে….


সাঈদঃ ঠিক আছে….


মায়াঃ হুম তখনি আকাশের ফোন….

আকাশঃ হ্যালো মায়া…

মায়াঃ হুম বলো..

আকাশঃ কাল আমার বন্ধুর জন্ম দিন তোমাকে আসে হবে গাড়িতে বলতে চেয়েছিলাম তখন ভুলে গিয়েছিলাম…


মায়াঃ আচ্ছা.. ফোনটা কেটে দিয়ে….


বলে তো দিলাম কিন্তু যাবো কিভাবে বাবা জানলে তো মেরে ফেলবে এক কাজ করলে কেমন হয় সাঈদের সাথে গেলে তো বাবা কিছু বলবে না…


পরের দিন…

মায়াঃ এই যে একটু ভালো করে সেজে গুজে বাইরে আসুন

সাঈদঃ কেনো ..

মায়াঃ আমার সঙ্গে আমার বন্ধুর বাসায় যেতে হবে..

সাঈদঃ আচ্ছা তার পর রেডি হয়ে নিলাম বাইরে এসে…


মায়াঃ এটা কী পড়েছেন…

সাঈদঃ এর থেকে ভালো কাপড় নেই…

মায়াঃ ও আসুন তার পর আকাশের বন্ধুর বাড়িতে চলে গেলাম কিন্তু সেখানে গিয়ে…

আকাশের বন্ধুঃ এই ছেলেটাকে কে নিয়ে এসেছে হ্যা ছিঃ শরীর থেকে দুগন্ধ বেড় হচ্ছে বাইরে বেড় করে দাও একে…

মায়াঃ কিছু বলতে পারলাম না আকাশের জন্য কেনো কিছু বললে আকাশ খারাপ ভাববে তবে এমন ব্যবহারের জন্য আমাকেই খারাপ লেগেছে….


সারা দিন সেখানেই কাটিয়ে যখন বাইরে বেড় হলাম তখন এমন দৃশ্যটা দেখতে হবে সেটা কখনো ভাবি নি…

মায়াঃ সাঈদ বাইরে বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে আমি ভেবেছিলাম হয়তো বাড়ি চলে গিয়েছে যখন জিজ্ঞেস করলাম কেনো আছো তখন যা বললো…

সাঈদঃ আপনি আমার সঙ্গে এসেছেন যদি এত রাতে একা যাওয়ার সময় কিছু হয়ে যায় তার থেকেও আপনি অন্য কারো আমার কাছে আমানত হিসাবে রয়েছেন…

মায়াঃ কথা গুলো শুনে নিজেকে ছোট্ট বলে হচ্ছিলো…

এই বৃষ্টিতে ভিজলে শরীর খারাপ হবে…

সাঈদঃ আমাদের মতো ছোট স্ট্যাটাশ এর লোকদের শরীর খারাপ করলেও কারো কিছু যায় আসে না..


মায়াঃ তার কথার কোনো উওর ছিলো না আমার কাছে….

রাতে খাষষওয়ার পর যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিষলো তখন আমার ভিতর ষষ বিশাল পাহাড় তৈরি হচ্ছিলো..

তখনি সাঈদ এর কথা মনে পড়লো চাঁদ এর সঙ্গে কষ্টের কথা গুলো শেয়ার করলে নাকি কষ্ট গুলো হালকা হয়ে যায় সেটা প্রমান করতে বেল কনিতে দাড়িয়ে সব কষ্টের কথা যখন চাঁদের সঙ্গে শেয়ার করলাম তখন নিজে থেকে সব কষ্ট গুলো মনে হচ্ছিলো চলে যাচ্ছে তখন মনে হচ্ছিলো পাগল সে নয় আসল পাগল তো আমি যাকে আমি কোনো দিন চিনতে পারি নি….

তার পর ঘুমিয়ে পড়ালম …

সকাল বেলা…

মায়াঃ আচ্ছা আমি আপনার সঙ্গে এত খারাপ ব্যবহার করি তাও আপনার আমাকে খারাপ লাগে না…

সাঈদঃ পৃথিবীতে কেউ সুন্দর হয় তুমি তাকে যত ভালোবাসবে তাকে বেশি সুন্দর মনে হবে ঠিক তেমনি আমি আপনার কথাটা গুলো সেভাবে কোন দিন নেই নি তাই খারাপ লাগার কোন প্রশ্নই উঠে না….

মায়াঃ তার মানে আপনি আমাকে ভালোবাসেন…


সাঈদঃ হয়তো হ্যা আবার না কেনো না পৃথিবীতে সবার কপালে ভালোবাসা জুটে না জন্মের পর মার আদর পাই নি বিয়ের পর যখন বউ এর আদর পাই নি তখন ভালোবাসা আসবে কোথা থেকে….


মায়াঃ কিছু বলার মুখ ছিলো আমার কাছে তাই নিজেই রুম থেকে বেড়িয়ে আসলাম না হলে এত বড় অন্যায় এর বোঝা আরো বড় যেতে থাকতো সত্যি তো আমি অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি…

আচ্ছা আমার আকাশের সঙ্গে বিয়ে হয়ে গেলে সাঈদ এর কী হবে….

চলবে…