গ্রামের লাজুক মেয়ে পর্ব-০৬

0
955

#গল্পঃ গ্রামের লাজুক মেয়ে ?
#লেখকঃ Md: Aslam Hossain Shovo
#পর্বঃ ৬…

√-~ আমি হেসে দিয়ে রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। অপেক্ষা করতে লাগলাম সকালের। দেখি ভাবি কত কত কথা শিখায় রিতুকে। ঘুমিয়ে পড়লাম ~

~ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ভাবি আমার পাশে বসে আমার মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। ভাবির কান্ড দেখে আমিতো অবাক, নিজের বউ হলেও হয়তো এমন যত্ন পাওয়া যায় না বউয়ের থেকে ? ~

আমিঃ ভাবি আপনি এখানে?

ভাবিঃ আর বলো না ভাই। রিতু তোমার বাথরুমে গোসল করতে গিয়েছে, আমার জোর করে এখানে বসিয়ে রাখছে। কেনো জানি তোমার রুমে আসতে ভয় পায় রিতু মনে হয়। তাই বসে ছিলাম, ভাবলাম দেবরের একটু মাথায় হাত বুলাই দেই, তাহলে একটু হলেও তার বউয়ের শূন্যতার কষ্ট তো কমবে হি হি ..

আমিঃ সত্যি ভাবি ভালোই লাগছিলো। ভাবি তোমার বোন কে একটু বের হতে বলো, আমার খুব জোর পেয়েছে কিন্তু ?

ভাবিঃ কি জোর পেয়েছে?

আমিঃ আরে ভাবি হিসু পেয়েছে খুব জোরে। তাড়াতাড়ি বলো বের হতে…

ভাবিঃ রিতু মাত্র গিয়েছে গোসল করতে..

আমিঃ যাক, এখুনি বের হতে বলো একটু..

ভাবিঃ ওকে।

~ ভাবি গিয়ে রিতুকে বললো, রিতু ভিতর থেকে বললো বুবু ৫ মিনিট লাগবে। আমিও অপেক্ষা করতে লাগলাম। ৫ মিনিট চলে গেলো, ১০ মিনিট চলে গেলো, আধাঘন্টা ও চলে গেলো কিন্তু বের হচ্ছে না। মনে হচ্ছে মাথায় রক্ত উঠে যাচ্ছে হিসুর চাপে, সেই রিতু ম্যাডাম শুধু ভিতর থেকে বলে আর ৫ মিনিট আর ৫ মিনিট। আমার তো অবস্থা খারাপ ? ~

ভাবিঃ এই শুভ, তুমি আমার সামনে তোমার কোথায় চেপে ধরে দাঁড়িয়ে আছো, ছি ছি ?

আমিঃ আগে আপনার বোনকে প্লিজ বের হতে বলুন, নাহলে কিন্তু ?

ভাবিঃ এই না না, আমি এখনি বলছি…

~ ভাবি গিয়ে বাথরুমের দরজায় শব্দ করে বলতে লাগলো, রিতু তাড়াতাড়ি বের হ তো, রিতু তাড়াতাড়ি বের হ.. আমি তো প্যান্ট চেপে ধরে রুমের চারকোনা দিয়ে ঘুরতে লাগলাম, কি মেয়েরে বাবা, আমি মনে হয় আজ মরেই যাবো মনে হচ্ছে।

প্রায় এক ঘন্টা পর দরজা খুলার শব্দ শুনে দৌড়ে গিয়ে দরজার সামনে গিয়ে দাড়ালাম। দরজা খুলা মাত্র আমি অবাক ?
হালকা হলুদ রংয়ের সাথে গোলাপি রঙের হালকা ছাপ দেওয়া থ্রি পিজ পড়ে, সাথে মাথায় ওড়না দিয়ে বের হয়েছে রিতু। দেখে মনে হচ্ছে হলুদ পরী… এতো সুন্দর লাগছে বলে বুঝানো মুসকিল। নতুন বউ বউ লাগছে তাকে..
আমি হা করে তার দিকে তাকিয়ে আছি, চোখ সরাতে পারছি না। আমার পাশ দিয়ে রিতু বের হয়ে এলো। আমি তখনো তাকিয়ে আছি তার দিকে ~

ভাবিঃ এই শুভ.. এখন বুঝি দেরি হচ্ছে না তোমার?

~ ভাবির কথাও খেয়ালও করি নাই, তখনো রিতুর দিকে তাকিয়ে আছি ~

ভাবিঃ ওই শুভ.. কি হচ্ছে এটা, রিতুর দিকে তাকিয়ে আছো কেনো ওভাবে?

~ ভাবির কথা শুনে রিতুও সাথে সাথে আমার দিকে তাকালো। চোখে চোখ পড়াতে দুই জনেই লজ্জা পেয়ে গিয়েছি। ভাবিকে এখন কি বলি যে উত্তরে বুঝতে পারছি না। একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললাম ~

আমিঃ না মানে, রিতু তো অনেক সুন্দর থ্রি পিজ পড়েছে। খুব সুন্দর লাগছে থ্রি পিজ টা..

ভাবিঃ আমার বোন বুঝি সুন্দরী না?

আমিঃ আপনার বোনতো একটা আস্ত পরী… (বুকে সাহস করে বলি দিলাম)

~ আমার কথা শুনে ভাবি হেসে দিলেও রিতু অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো। আমি বাথরুমে ঢুকে গেলাম ~

বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখি রিতু আমার আয়না নিয়ে আমার খাটের উপর বসে চুল আচড়াছে। আর ভাবি আমার খাটের ওপর পা দুলিয়ে শুয়ে আছে।

আমিঃ এই ভাবি, তুমি আমার খাটে শুইছো কেনো?

ভাবিঃ কোথায় তোমার খাটে শুইছি? আমি আমার বোনের খাটে শুয়েছি।

আমিঃ তোমার বোনের খাট মানে?

ভাবিঃ এই যে আমার রিতু বোনের খাট। তোমার সাথে রিতুর বিয়ে হলেই তো রিতুর খাট হয়ে যাবে (চোখ মেরে হাসি দিয়ে বললো)

~ মনে মনে বলি ভাবি আমার ওয়ান পিজ, এমন ভাবি থাকলে আর সিঙ্গেল থাকতে হবে না ~

রিতুঃ কি বলছো এগুলো বুবু? (ভাবির দিকে তাকিয়ে লাজুক একটা হাসি দিয়ে)

ভাবিঃ মজা করে বলছি। আর এই দেবরজী, আজ কিন্তু আমাদের ঘুরতে নিয়ে যাবে বিকালে ওকে…

আমিঃ আমাদের বলতে?

ভাবিঃ আমাকে,আমার ছোট দেবর কে, আমার ছোট ননদ কে, সাথে আমার বোন রিতু কে…

আমিঃ ওকে নিয়ে যাবো (খুশি হয়ে)

~ ভাবি ও রিতু রুম থেকে বের হয়ে গেলো। আমি ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে নিলাম। তারপর আমরা সবাই মিলে ক্যারাম খেললাম। খুব হাসাহাসি করে সময় যাচ্ছে। রিতুও সবার সাথে ফ্রী হয়ে আসছে প্রায়। আমার সাথেও কয়েকবার কথা বলছে এর মধ্যে।

দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে সবাই কে বললাম তৈরি হতে ঘুরতে যাওয়ার জন্য। ছোট ভাই বললো সে তার বন্ধুর বাসায় যাবে তাই আজ ঘুরতে যাবে না, বাকিরা সবাই তৈরি হচ্ছে সবাই সবার রুমে। আমি গিয়ে গাড়ি বের করলাম রাস্তায়। ভাবি, ছোট বোন ও রিতু বের হয়ে এলো রাস্তায় গাড়ির কাছে । রিতুকে সকালে হলুদ ড্রেসে হলুদ পরী লাগলেও এখন নীল ড্রেসে নীল পরী লাগছে, অবশ্য আমিও নীল পাঞ্জাবি পড়েছি। রিতু আমাকে দেখে হয়তো অবাক হয়েছে, তার জামার রংয়ের কালারের সাথে মিলে গিয়েছে আমার পাঞ্জাবীর রংয়ের কালার তাই হয়তো, নাহলে ওই ভাবে তাকিয়ে থাকতো না হয়তো।

সবাই কে গাড়িতে বসতে বললাম। আমি নিজে ড্রাইভিং করবো। ভাবি আমার ছোট বোন মায়ার হাত ধরে পিছনে বসতে লাগলো ও রিতুকে বললো,,, রিতু তুই সামনে শুভর সাথে বস, আমি আর আমার ননদ পিছনে বসবো ।
রিতু সামনে আসতে লজ্জা পাচ্ছে হয়তো, সে সামনে আসছে না। পিছনে বসার ইচ্ছা থাকলেও ভাবির মুখের উপর বলতেও পারছে না। এই সুযোগ মিস করা যায় না, আমি দৌড়ে গিয়ে সামনের দরজা খুলে দিয়ে বললাম, এখানে বসুন। রিতু আমার দিকে একবার তাকিয়ে সামনের সিটেই বসলো। আমি গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে বললাম, কোথায় যাবেন ভাবি? ভাবি বললো পদ্মা নদীর পাড়ে চলো। ভাবির কথা মত সেই উদ্দেশ্যের জন্য রওনা হলাম গাড়ি নিয়ে। গাড়ি চলছে ~

ভাবিঃ শুভ তোমায় একটা কথা বলি?

আমিঃ বলুন ভাবি।

ভাবিঃ আচ্ছা, আমার বোনকে তোমার কেমন লাগে?

আমিঃ খুব ভালো (মুচকি হাসি দিয়ে)

ভাবিঃ আচ্ছা রিতু,,, তোর কাছে একটা কথা জানতে চাই বলবি? (রিতুর দিকে তাকিয়ে)

রিতুঃ বলো বুবু, কি জানতে চাও..?

ভাবিঃ তোর কেমন ছেলে পছন্দ বলতো, আমরা সবাই শুনি..?

রিতুঃ বুবু ?

ভাবিঃ বল, লজ্জা কিসের, আমরা সবাই নিজেরাই তো। বল তুই, কেউ কিছু মনে করবে না।

আমিঃ বলুন আপনি, আমরাও একটু শুনি আপনার মনের স্বপ্ন বা ইচ্ছা.. (রিতুর দিকে তাকিয়ে)

রিতুঃ কি বলবো। আমার স্বামী হলেই হল..আরকি…

আমিঃ হা হা হা…

রিতুঃ আপনি হাসলেন কেনো?

আমিঃ আপনার কথা শুনে, হা হা..

রিতুঃ আমি এমন কি বললাম যে হাসি পেলো আপনার?

আমিঃ ওই যে বললেন স্বামী হলেই হল। নেশাখর, চরিত্রহীন হলেও চলবে বুঝি..?

রিতুঃ ? জিনা না, মোটেও না। এমন হলে ছেলে, আমি বিয়েই করবো না। ছেলের সুন্দর একটা মন হতে হবে, সুন্দর ব্যবহার থাকতে হবে, আমাকে খুব ভালোবাসবে, আমার যত্ন নিবে এমন হলে আমি বিয়ে করবো, নাহলে না।

আমিঃ আচ্ছা আপনি তার যত্ন নিবেন না?

রিতুঃ খুব খুব নিবো (লজ্জা পেয়ে)

ভাবিঃ আচ্ছা শুভ, তোমার কেমন মেয়ে পছন্দ?

আমিঃ খুব মায়াবী থাকবে, কেনো হিংসা অহংকার থাকবে না, লাজুক থাকবে, খুব মিষ্টি করে নরম ভাবে কথা বলবে, মুখ সব সময় হাসি থাকবে, আমাকে ছাড়া কেনো পুরুষের সাথে কথা তো দূরের কথা, কেনো পুরুষ কে ভাববেও না, আমাকে খুব ভালোবাসবে ও সংসারী মেয়ে হবে, এর চেয়ে বেশি কিছু চাই না… ?

রিতুঃ হা হা হা

আমিঃ হাসলেন কেনো?

রিতুঃ আপনার মনে হয় আর বিয়ে করা হলো না। বুবু তোমার দেবর আজীবন কুমার থেকে যাবে, কারন এমন মেয়ে কোথাও খুঁজে পাবে না.. হা হা..

ভাবিঃ কেনো পাবে না? তোর সাথে তো মিলে গিয়েছে রিতু। লাগলে তোকে আমার মেজো জা করে আনবো ☺

~ রিতুর মুখে আর কেনো কথা নেই, চুপ হয়ে গেলো। নদীর পাড়ে পৌঁছে সবাই নেমে গেলাম। সবাই কে বললাম কে কি খাবে সবাই, ফুচকা চটপটি নাকি হালিম। তারা সবাই বললো ফুচকা। আমি একটা জিনিস কিছুতে বুঝি না, ময়দা দিয়ে গোল গোল কি বলের মত বানায়, তার মধ্যে একটা আলু ভর্তা দিয়ে দেয়, তার মধ্যে আবার তেঁতুলের টক পানি, হয়ে গেলো ফুচকা… এই খাওয়ার জন্য মেয়েরা এতো পাগল কেনো যে হয়… তাদের ফুচকা দিয়ে আমি হালিম অডার দিলাম । আমি আবার লচ করতে রাজি নাই শুধু টক পানি খেয়ে ☺…

~ নদীর ধারের একটা টেবিলে বসে ফুচকা হালিম খাওয়া হচ্ছে..

আমিঃ শুবশ্রী ভাবি আপনি এতো সুন্দরী কেনো গো..?

ভাবিঃ সত্যি তাই (মুচকি হাসি দিয়ে)

আমিঃ হুমম…আপনার চুল গুলো কিন্তু সেই ?

ভাবিঃ তাই গো দেবরজী.. (লজ্জায় গলে পড়ছে)

আমিঃ হুমম… আপনার মুখে কিন্তু একটা মায়া মায়া ভাব আছে ?

ভাবিঃ এই ভাইয়া প্লিজ চুপ করো তো লজ্জা পাচ্ছি (একটু ভাব নিয়ে)

~ ধুর, রিতু তো রিতুর মত খেয়ে যাচ্ছে, আমার কথায় পাত্তায় নেই। তাহলে অন্যের বউয়ের প্রশংসা করে লাভ কি,,, এর চেয়ে রিতুর প্রশংসা করি, কাজে আসবে ? ~

আমিঃ যানো ভাবি আমি যাকে পছন্দ করি তার চোখের ভ্রু কত চিকন, মনে হয় চিকন একটা ময়ুরের পাপড়ি ?

ভাবিঃ ওহহ (সাথে সাথে ভাবির মুখ কালো হয়ে গেলো)

~ রিতু মুখ চেপে হেসে দিলো। তারমানে কাজ হচ্ছে হি হি। হয়তো বুঝতে পারছে তার কথা বলছি। মনে মনে বলি, চালিয়ে যাও শুভ, কাজ হচ্ছে ? ~

আমিঃ জানো ভাবি, তার গায়ের রং টাও খুব ফর্সা। বাসর রাতে তো লজ্জা পাবো তাকে দেখে ?

~ রিতুর মুখ লাল হয়ে গেলো লজ্জায়। আর ভাবির মুখ আরো যেনো কালো হয়ে গেলো হিংসায় ~

আমিঃ আরো শুনবে ভাবি, তার চুল গুলো এতো এতো সুন্দর যে, মনে হয় একটাও উকুন ও নেই ?

ভাবিঃ হা হা হা ?

আমিঃ ভাবি তুমি হাসলে কেনো?

ভাবিঃ আরে পাগল, এই প্রথম কাউকে দেখলেন পছন্দের মানুষের মাথায় উকুন নেই বলে প্রশংসা করছে হা হা….

আমিঃ হিংসা হয় বুঝি, আমার হবু বউকে নিয়ে?

ভাবিঃ আরে না, নেও তুমি এবার আমার আরেকটু প্রশংসা করো তো, শুনতে ভালোই লাগে..☺

আমিঃ আপনি এতো মোটা এতো মোটা, আরেকটু হলে একটা ছোট হাতি হয়ে যাবেন হি হি…

ভাবিঃ ???

~ রিতু আমার কথা শুনে মুখ চেপে হেসে দিলো। কত সুন্দর হাসি। আরেকটু ভাবির দুর্নাম করি, তাহলে আরো হাসবে হা হা ~

আমিঃ আপনি শুধু সারাদিন খান আর খান। ভাইয়ার টাকা গুলো আপনি একাই ধংশ করে দিলেন ?

ভাবিঃ ???

আমিঃ আপনি এতো খান কিভাবে ভাবি? আপনার প্রশংসা না করে থাকতে পারলাম না হি হি…

ভাবিঃ ??? যাও তোমার আর প্রশংসা করতে হবে না। আরো দুই প্লেট ফুচকার অডার দেও আমার জন্য…

আমিঃ কি বলো ভাবি? এই না খেলে মাত্র…

ভাবিঃ এক প্লেটে কি হয় শুনি? আর আমার কয়টা বোন শুনি যে প্রতিবার এই ভাবে দেবরের টাকায় খেতে পারবো শুনি? অডার দেও বলছি, নাহলে কিন্তু ?

~ সালার ভাবির বোনের সাথে প্রেম করার শিক্ষা হয়ে গিয়েছে আমার। এখন তার সব কথা শুনতে হয়। দিলাম আবার সবার জন্য নতুন করে অডার।
একটা জিনিস বুঝতে পারলাম, মেয়েরা একজন আরেকজনের প্রশংসা শুনতে পারে না। ভাবির প্রশংসার সময় রিতু মন খারাপ ছিলো, আবার রিতুর প্রশংসার সময় ভাবির মন খারাপ ছিলো হা হা ~

খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই নদীর পাড়ে দিয়ে হাটছি। রিতু ও আমার ছোট বোন সামনে ও আমি আর ভাবি পিছনে পিছনে হাটছি ~

ভাবিঃ শুভ, তুমি কি সত্যি রিতুকে বিয়ে করবে? পরে আমার বোনকে কষ্ট দিবে না তো কেনো নতুন সুন্দরী মেয়ে পেলে?

আমিঃ ভাবি আপনি তো আমায় চিনেন, আমি কেমন ছেলে। আমি সব কষ্ট সহ্য করে হলেও কথা রাখার চেষ্টা করি ও কথা রাখি ইনশাআল্লাহ। কাউকে যে কেনোদিন ঠকাবো, এমন ছেলে আমি না। আর চরিত্র ও এতোটা খারাপ না যে আরেকজন কে পেয়ে প্রথম জনকে ভুলে যাবো। এমন হলে তো অনেক প্রেম করতাম এতো দিনে, আপনি তো জানেই আমি জীবনে প্রেম করি নাই।

ভাবিঃ সেটা ঠিক, তুমি তেমন খারাপ না। কিন্তু তুমি জানো না, রিতু খুব নরম মনের মেয়ে, একবার যদি ও তোমায় মন দেয়, আর তুমি ওর থেকে দূরে সরে গেলে ও হয়তো কষ্টে মরেই যাবো। আমিতো ওকে ছোট বেলা থেকে চিনি…

আমিঃ ওহহ। হুমম ভাবি। ৩ দিনে বুঝতে পারছি রিতু অনেক ভালো মেয়ে।

ভাবিঃ হুমম অনেক ভালো। কিন্তু ওর রাগের কথা তুমি জানো না, ওর প্রচুর রাগ… রাগ হলে হাতের কাছে যা থাকে সব ভেঙ্গে ফেলে, এমনকি সামনে কাউকে সামনে পেলে তারও মাথা ফাটায়।

আমিঃ ওরে বাবা রে ?

ভাবিঃ আরে ভয় পাচ্ছ নাকি? এমনি কিন্তু অনেক ভালোই। একবার যদি ভালোবাসা দিয়ে রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারো, তাহলে সুখের সংসার। আর রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে, ধরো তোমার কপাল আজীবনের জন্য পোড়লো আরকি ☺

আমিঃ না না, আমি অনেক অনেক ভালোবাসা দিয়ে রাগ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবো প্রমিস ☺

ভাবিঃ বেশি ভালোবাসা দিলেই ভালো।

আমিঃ হুমম তাতো দিবোই.. আচ্ছা ভাবি ভালোবাসা দেয় কি করে? ?

ভাবিঃ হা হা, তোমার আর প্রেম করতে হবে না ?

আমিঃ ভাবি মোটেও প্রথমেই বাঁধা দিবেন না কিন্তু। আগে বলুন প্রপোজ কিভাবে করে?

ভাবিঃ দাঁড়াও ১ মিনিট।

~ রিতুকে ভাবি জোরে ডাক দিলো “এই রিতু বলে”.. রিতু এদিকে ফিরে তাকালো…

ভাবি জোরে চিৎকার করে বললোঃ- রিতু তোকে না শুভ, অনেক অনেক অনেক ভালোবাসে ? প্রেম করবি নাকি শুভর সাথে…

~ কাম সারছে, পাগল ভাবি এটা কি করলো? ইজ্জত আমার শেষ ~

আমার ছোট বোন লাফাতে লাফাতে বলে উঠলোঃ আমি আজ আম্মু কে সব বলে দিবো বাসায় গিয়ে বলে দিলাম কিন্তু , তোমরা প্রেম করো না হুমম ?

~ বোনটাও আমার কত কুটনা, কথা পাওয়ার সাথে সাথে আম্মুর কাছে নালিশের হুমকি ~

ভাবি শুধু হা হা করে হাসতে লাগলো।

রিতু বেচারী আমার দিকে চোখ বড়ো বড়ো তাকিয়ে আছে… ?

আর আমি বেচারা চিপায় আটকে গিয়ে দেবদাস হয়ে সবার দিকে তাকিয়ে আছি ??
বুঝার চেষ্টা করি, কি হচ্ছে এটা…
…….. ~ গল্প চলবে ~

বিঃদ্রঃ পরের দৃশ্য কেমন হবে জানতে হলে পড়তে হবে আগামী পর্ব..