ডিভোর্স পর্ব :- ২৭ এবং শেষ

0
3437

গল্প :- ডিভোর্স
পর্ব :- ২৭ এবং শেষ
লেখকঃ আবু সাঈদ সরকার
.
.
মায়াঃ ধর্ষণ করবেন আমায়….?

সাঈদঃ তার থেকেও বেশি কিছু…

মায়াঃ মাথার মধ্যে যে কী ঘুরপাক খাচ্ছে আল্লাহই জানে কিন্তু থাপ্পড় গুলো খুব লেগেছে…


সাঈদঃ আসার সময় একটা কাচি কিনে নিয়ে এসেছি কাচি টা পকেট থেকে বেড় করতেই…


মায়াঃ কী করতে যাচ্ছেন আপনি…

সাঈদঃ সেটা নিজের চোখেই দেখতে পাবে এখন কাচি টা দিয়ে ওর সুন্দর চুল গুলো কুচি কুচি করে কেটে একবারে নেড়া করে দেওয়ার মতো…

মায়াঃ কী করলেন আপনি এটা এত বড় সর্বনাশ করতে পারলেন আমার…

সাঈদঃ তোমার পাপের এইটাই শাস্তি আজ থেকে দুই দিন এই চেয়ারে এই রকম ভাবেই বাধা থাকবা শুধু একবেলা পানি দিবো খেতে কেমন লাগে থাকতে সেটা এবার হারে হারে বুঝতে পারবা…


মায়াঃ ছেড়ে দিন আমাক না হলে এর ফল কিন্তু ভালো হবে না..

সাঈদঃ ভালো না হলেও চলবে টক ফলে অনেক ভিটামিন রয়েছে?

মায়াঃ একবার ছাড়া পাই এখান থেকে তোকে যদি কুচি কুচি করে কেটে কুকুর কে খাওয়াবো আমার এত সুন্দর চুল গুলো তুই নষ্ট করে দিলি না এবার দেখবি প্রতিশোধ কাকে বলে…( মনে মনে)


সাঈদঃ গোডাউন এর দরজাটা ভালো ভাবে বাইরে থেকে লাগিয়ে দিলাম ভিতর থেকে চিৎকার করলেও কেউ বাইরে থেকে শুনতে পাবে না কষ্ট কাকে বলে এবার হারে হারে টের পাবে…



সেখান থেকে বেড় হয়ে সোজা একটা হোটেলে এসে স্নেহার জন্য খিচুড়ি আর মুরগীর মাংস পেকেট করে নিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম বাসায় এসে ভিতর থেকে দরজাটা ভালো ভাবে লক করে দিলাম…


হঠাৎ মনে হলো আচ্ছা এভাবে মেয়েটাকে একলা রেখে আসাটা কী ঠিক হলো…


ধুর আমিও না কী যে ভাবছি যেমন কর্ম করবে তেমন ফল তো ভোগ করতেই হবে…


তার পর একটা প্লেটে খিচুড়ি টা ঢেলে রেখে দিলাম স্নেহার আবার খিচুড়ি খুব প্রিয়…




দেখতে দেখতে হয়ে গেছে এখনো স্নেহার ঘুম ভাঙ্গলো না মনে হয় ঔষধের কার্যকারিতা এখনো শেষ হয় নি…



অন্য দিকে..

মায়াঃ এই বালের মশা পালা বলছি…

এখানে মশা গুলো যেভাবে আমার শরীর থেকে রক্ত চুষে খাচ্ছে তাতে বলে হচ্ছে এখনি রক্ত শূন্যতায় মরে যাবো…

সারা শরীরটা মশার কামড়ে চুলকাচ্ছে কিন্তু কী করবো হাত পা সব বাধা…



চাইলেও কিছু করতে পারছি না সারা টা রাত এই মশা গুলো আজ মনের আনন্দে রক্ত খাবে…


সাঈদঃ স্নেহা এই স্নেহা…

স্নেহাঃ কী হলো ঘুমটা যেনো ভাঙ্গতেই চাইছে না…


সাঈদঃ ওঠো রাত হয়ে গেছে তো..

স্নেহাঃ আমি তো উঠতেই পারতেছি না ঘুম আসতেছে খুব..

সাঈদঃ উঠে চোখে মুখে পানি দিলেই দেখবে সব ঘুম চলে যাবে উঠো তার পর স্নেহাকে বিছানা থেকে তুলে ফ্রেশ করে নিয়ে এসে…


সাঈদঃ ঘুম টা গেছে…

স্নেহাঃ হুম.. আচ্ছা দুধ টা খাওয়ার পর এত ঘুম কেনো আসছিলো…


সাঈদঃ জানি না .. আচ্ছা হাত টা কী এখনো ব্যথা করতেছে…


স্নেহাঃ অল্প অল্প করতেছে কিন্তু তুমি সঙ্গে থাকলে এই ব্যথাটা আমার কাছে কিছুই না…


সাঈদঃ ?????? আচ্ছা আমি তোমার প্রিয় খিচুড়ি আর মুরগীর মাংস নিয়ে আসছি একটু বসো আমি নিয়ে আসতেছি নিচে এসে খিচুড়ির প্লেট টা উপরে নিয়ে আসলাম…


এনে স্নেহাকে খাইয়ে দিয়ে…

সাঈদঃ ডাক্তার যে ঔষধ গুলো লিখে দিচ্ছিলো সেগুলো খাইয়ে দিয়ে..

এখন আবার ঘুমানোর চেষ্টা করো…

স্নেহাঃ পারবো না…

সাঈদঃ কেনো..

স্নেহাঃ একটু আগে তো ঘুম থেকে উঠলাম..

সাঈদঃ আচ্ছা তাহলে চলো ছাদ থেকে ঘুরে আসি…

স্নেহাঃ হুম☺☺☺☺☺?☺??☺☺




অন্য দিকে…


স্নেহার মাঃ কাল সকাল বেলা মেয়েটাকে একবার দেখতে যাবো জানি না কী অবস্থায় আছে ..

স্নেহার বাবাঃ তুমি একলায় যাবে কেনো আমিও যাবো তোমার সঙ্গে…



পরের দিন..

সাঈদঃ সকাল বেলা আবার কে আসলো…

ধুর ভালো লাগে না যাচ্ছি বাবা এত বার কেউ কলিং বেল বাজায় নিচে এসে দরজাটা খুলতেই আপনারা…


স্নেহার মাঃ মেয়েটাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছিলো তাই চলে আসলাম৷

সাঈদঃ ওহ ভিতরে আসেন…


ভিতরে এসে…

স্নেহার বাবাঃ আমি অজান্তেই অনেক ভুল করে ফেলেছি আমাকে ক্ষমা দাও প্লিজ…


সাঈদঃ কী করছেন আপনি এটা…

স্নেহার বাবাঃ আমার একবার স্নেহার কথা বুঝা দরকার ছিলো সে দিন যদি ওর কথা একটি বার শুনতাম তাহলে ও হয়তো এভাবে পালিয়ে আসতো না..


সাঈদঃ যা হইছে তা তো অতীত আমরা অতীতকে ভুলে আবার নতুন করে সব কিছু শুরু করতে পারি না…


স্নেহার মাঃ আমারও সেটাই চাই কিন্তু মায়া পথের কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে…


সাঈদঃ সব কাটা মুছে যাবো শুধু মাএ সময়ের অপেক্ষা…



আচ্ছা আপনারা উপরে যান স্নেহা রুমেই আছে আমি একটু বাইরে যাবো…


বলেই চলে আসলাম তার পর সোজা গোডাউন এ এসে যা দেখলাম তাতে মনে হলো নাহ ছেড়ে দেই উচিত শিক্ষা পাইছে..

মশা তো দেখছি কামড়ায় ফুলিয়ে দিয়েছে…


হাতের পায়ের বাধন খুলে দিয়ে…


সাঈদঃ কাউকে দু দিন বেধে রাখলে তার কেমন লাগে সেটা তখনি বুঝা যায় যখন সেটা নিজের হয় একটা রাত কতটা কষ্টের গেছে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো…


মায়াঃ আমি ভুল করেছি প্লিজ ক্ষমা করে দিবেন আমি আসলে বুঝতেই পারি না আপনি কতটা কষ্ট পাইছেন আজ আমি সেটা বুঝতে পেরেছি আসলে আমি লোভে পড়ে এসব করেছি আমি আপনার গাড়ি টা আবার আপনাকে ফিরিয়ে দিবো..


সাঈদঃ নিজের ভুল বুঝতে পেরেছো এইটাই বড় কথা আমার লাগবে না গাড়িটা নিয়ে নাও ওটা আর সারা জীবনের মতো চলে যাও আমাদের জীবন থেকে…


বলেই চলে আসলাম…

তার পর সোজা বাসায় চলে আসলাম…

এর পর সকলের সঙ্গে মিলে নাস্তা করলাম এর পর আস্তে আস্তে স্নেহা সম্পুর্ন সুস্থ হয়ে গেলো আমরা নতুন করে আমাদের জীবনটা শুরু করলাম যেখানে আমরা দুজন ছাড়া আর কেউ নেই…


সমাপ্ত………